ভারতীয় পণ্য বর্জন কী ও কেন

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি
লিখেছেন অনিন্দ্য রহমান (তারিখ: রবি, ২৯/০১/২০১২ - ১১:৩৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

... একটা বিশেষ ধরণের বিরক্তি এই লেখা তৈরিতে উৎসাহী করেছে। এতে চলমান ভারতীয় পণ্য বর্জনের/ বয়কটের আহবানে প্রয়োজনীয় সতর্কতা ও এই ধরণের উদ্যোগের সামর্থ্য সম্পর্কে একধরণের মতামত দেয়া হয়েছে। বিচিত্র বিষয়ের অন্তর্ভুক্তি লেখাটাকে কিছুটা দীর্ঘ করে তুলবে।

১. দুশ্চিন্তা/উদ্বেগ/বিরক্তির প্রেক্ষাপট

ইন্ডিয়ার সমালোচনা হলেই পাকিস্তানপ্রেমীরা খুশিতে গদগদ হয়ে পড়েন। বলে, 'দেখালা? হুদাই খালি পাকিস্তানরে গালি দেও'। ভারতে উৎপাদিত পণ্য বয়কটের প্রসঙ্গ ওঠার পরেই দেখা যায় তারা আরো উত্তেজিত। ফেইসবুকে দেখলাম কেউ কেউ বলছে পাকিস্তানি রাজাকার যেমন আছে তেমন আছে ভারতীয় রাজাকার।

'রাজাকার?' 'হুঁ, তোমরা খালি পাকিস্তানপন্থী হৈলেই রাজাকার কও। আরে মিয়া পাকিস্তান ছাড়াও রাজাকার হয়' - তারা এইসব বলে। উদ্দেশ্য, প্রতিষ্ঠা করা 'রাজাকার' ধারণাটা 'একান্তই' (exclusively) পাকিস্তানী বিষয় না, রাজাকারি একটা খুবই সাধারণ বিষয়, সেটা পাকিস্তানের সাথে যুক্ত থাকতে পারে, ইন্ডিয়ার সাথে যুক্ত থাকতে পারে, চীন-জাপানের সাথেও যুক্ত থাকতে পারে! তারা এইভাবে রাজাকার শব্দটাকে পাকিস্তান শব্দের থেকে আলাদা করে ফেলতে পারে। আবার একই সাথে পাকিস্তান শব্দটাকেও মুক্ত করতে পারে রাজাকার শব্দের 'কবল' থেকে। অর্থাৎ দিনের শেষে তারা বলতে চায়, 'রাজাকারিতে গলদ থাকলেও থাকতে পারে পাকিস্তানের ধারণায় কোনো জন্মগত সমস্যা নাই'। আমরা বলতে চাই, 'পাকিস্তানের ধারণাটাই বেজন্মা'। এবং ঐ বেজন্মার সন্তানসন্ততির নাম রাজাকার। (অনুচ্ছেদ ৫ এই প্রসঙ্গে কিছুটা পাওয়া যাবে)

২. রাজাকার কী বস্তু? নব্যরাজাকার কী বস্তু?

সুতরাং ভারতীয় পণ্য-বর্জন বিষয়ে কথাবার্তায় ঢোকার আগে রাজাকার বিষয়ে সামান্য আলাপের প্রয়োজন। যারা, যে কারণেই হোক, 'রাজাকারে'র অর্থ জানে না, তাদের জানাই ১৯৭১ সালের পয়লা জুন 'ইস্ট পাকিস্তান রাজাকার অর্ডিনেন্স' নামের পূর্ব পাকিস্তান গভর্নর টিক্কা খানের জারি করা অধ্যাদেশের মাধ্যমে পাকিস্তানের গণহত্যাকারী ধর্ষক সেনাবাহিনীর বাম হাত হিসাবে আনুষ্ঠানিক ভাবে জন্ম হয় রাজাকার বাহিনীর। ১৯৭১ সালে ইসলামের নামে মানুষ মারা অমানুষ রাজাকার (এবং একই রকম বাহিনী আল বদর ও আল শামস) এর অমানুষ নেতাদের বিচার হচ্ছে বাংলাদেশে। এই বিচার এত দেরিতে হচ্ছে, কারণ রাজাকারদের পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া পাকিস্তানমনা অবৈধ সেনাশাসকেরা ও পাকিস্তানমনা 'গণতান্ত্রিক' সরকারগুলি দীর্ঘদিন স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষকে কবজা করে রেখেছিল। তারা রাজাকার শব্দের মানে আমাদের ভুলিয়ে দিতে চেয়েছিল। এবং এই ভুলিয়ে দেয়ার ভেতর দিয়ে গড়ে তুলেছিল নব্য-রাজাকারদের। নব্য-রাজাকার মানে তারা যারা রাজাকারদের গণহত্যাকে জায়েজ করার জন্য সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালায় (তথ্যসন্ত্রাস সহ)। তাই রাজাকার শব্দটার খুবই সুনির্দিষ্ট অর্থ আছে। সুতরাং 'ইন্ডিয়ান রাজাকার' শব্দদ্বয় ঐ সুনির্দিষ্ট অর্থ ঝাপসা করে দেয়া ছাড়া আর কোনো কাজে আসে না। এই যে 'ঝাপসা করে দেয়া' – এটা গণহত্যার সাফাই দেয়া বা গণহত্যা নাকোচ করা নব্যরাজাকারদের প্রিয় কাজ।

৩. ভারতীয় পণ্য-বর্জনের ডাকে রাজাকারদের এজেন্ডা

ভারতে উৎপাদিত পণ্য বয়কটের প্রসঙ্গ ওঠার সাথে সাথেই পাকিস্তানপন্থী রাজাকার ও নব্য-রাজাকারেরা (সংজ্ঞা ওপরে দেয়া আছে) তাদের প্রিয় কাজে দ্বিগুন উৎসাহে নেমেছে। নামুক। কিন্তু আমরা মনে করি, আমাদের সাধারণ বিষয়বুদ্ধি, কাণ্ডজ্ঞান এবং বিবেক আছে তারা ভারতের সমালোচনার সুযোগে পাকিস্তান (যেটা একটা মধ্যযুগীয় বর্বর ভূখণ্ড, এমনকি এখন আর একটা সার্বভৌম রাষ্ট্রও না) – এর প্রতি অন্ধ আনুগত্যকে মাথাচাড়া দেয়ার সুযোগ দেব না। ভারতের জায়গায় ভারত থাকুক, চীন-জাপান-সৌদি আরবের জায়গায় ঐসব রাষ্ট্র থাকুক। সবার সাথে আলাদা আলাদা বোঝাপড়া করার ক্ষমতাই আমাদের পরিণত হওয়ার প্রমাণ, নাকি?

তারপরও, ভারতের প্রসঙ্গ আসলেই পাকিস্তানকে টেনে আনা বা ভাইসি ভার্সা – এটা রাজাকার ও নব্য-রাজাকারদের অব্যর্থ লক্ষণ। ধরেন, আপনি বললেন, 'আফ্রিদিকে নিয়া এত নির্লজ্জ (যৌন উদ্দীপনাযুক্ত) মাতামাতি ক্যান'। রাজাকার ও নব্য রাজাকার বলবে, 'হ, আমরা হুদাই ইন্ডিয়ান-পাকিস্তানিদের নিয়া মাতামাতি করি, এইটা ঠিক্না।' আপনি বললেন 'যুদ্ধাপরাধিদের বিচার চাই'। রাজাকার ও নব্য রাজাকার বলবে, 'ঠিক ভাইয়া, দেশবিরোধি সকলের বিচার হওয়া দরকার, দেশের প্রচুর ভারতীয় আর পাকিস্তানী দালাল।' আমরা বলতে চাই, দুঃখিত, 'রাজাকার'দের বিচার বলতে আমরা 'রাজাকার'দেরই বিচার বুঝাই। দেশের যাবতীয় দুষ্ট লোকেদের বিচার করেন, কোনো সমস্যা নাই। কিন্তু দেশের যাবতীয় দুষ্ট লোকদের শত দুষ্টামি-নষ্টামির পরেও রাজাকার রাজাকারই থেকে যায়। ঠিক যেমন পৃথিবীর তাবৎ দেশের তাবৎ নষ্টামির পরও পাকিস্তান পাকিস্তানই থেকে যায়। পাকিস্তান ঐ নষ্টামির নাম যেটা আমাদের তিরিশ লক্ষ মানুষকে স্রেফ মেরে ফেলেছে। সুতরাং পাকিস্তানের সাথে এটাসেটা অনেক কিছু মিশিয়েও এই বিষয়টাকে হালকা করে তোলা যাবে না।

কারো কারো মগজ নাই। কারো কারো বিবেক নাই। কারো কারো কোনোটাই নাই। এই তিনপ্রকারের লোকেদেরই দেখা যায় পাকিস্তানের নষ্টামীর বৈধতা দিতে যেভাবেই হোক ভারতকে টেনে আনতে - লেখায়, বক্তৃতায় বা সাধারণ কথোপকথনে। একাত্তরে মানুষ হত্যা, ধর্ষণ আর লুটপাটের হোতাদের ধরে কাঠগড়ায় দাঁড়া করানোর পরে কমে এসেছিল নব্যরাজাকারদের গলার আওয়াজ। কমে আসলেও তারা তাদের অভ্যাস অনুযায়ী মিনমিন করে দুইরকম কথা ঠিকই বলে গেছে।

প্রথমত, 'স্বাধীন হয়া কি পাইলাম!' এর নাম আমরা দিতে পারি 'কী পাইলাম' বা 'ইয়ে-আজাদি-ঝুটা-হ্যায়' সিন্ড্রোম। মানে, পাকিস্তান 'ভেঙে' কী লাভ হল। লাভ? আপনি পৃথিবীর হিংস্রতম শোষক প্রতিষ্ঠানগুলির একটা পাকিসেনাবাহিনীর খপ্পর থেকে মুক্ত হয়েছেন। বালুচিস্তানের মানুষের মতো অস্ত্র হাতে নিজেদের স্বাধিকার রক্ষার আন্দোলন করতে হচ্ছে না। ওয়াজিরস্তানে যে শিশুরা আমেরিকান বোমার ভয়ে চিলেকোঠায় লুকিয়ে আছে, আপনার পুত্রকন্যারা তার চেয়ে নিরাপদে আছে। অথবা এইসব উদাহরণ বাদই দিলাম। মাঝে মাঝেই পত্রপত্রিকায় বিরাট বিরাট লেখকেরা বিষণ্ণ কলাম লেখেন। 'এই জন্য কি মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম?' নাহ, আপনার দেশের মানুষকে কুকুরের মতো গুলি করে, জীবন্ত পুড়িয়ে মেরে, ধর্ষণ করে মাটিতে মিশিয়ে দিচ্ছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আর তার সহযোগি রাজাকারেরা, আপনি তখন টাইম মেশিনে করে 'প্রিভিউ' করে নিতে চেয়েছিলেন ২০১২ সালে বাংলাদেশ কেমন হবে। কিন্তু সেটা যখন পারেন নাই, তখন ইনস্যুরেন্স কম্পানি বা ট্রাভেল এজেন্টের সাথে যেভাবে দরদাম করা হয় সেভাবে দরদাম করে যুদ্ধে নেমেছিলেন'। 'ওহ, স্যরি, আপনি মনে হয় যুদ্ধও করেন নাই'। তখন তারা মিনমিন করে বলবে, 'ইন্ডিয়া পাকিস্তান ভাঙছে'। 'জনাব, চব্বিশ বছর ধরে পাকিস্তান আমাদের শোষণ করেছে'। চব্বিশ বছর! তিরিশ লাখ লাশ! 'দাম দিয়ে কিনেছি বাংলা দাম দিয়ে কিনেছি বাংলা কারো দানে পাওয়া নয়'! তাদের আক্ষেপের কারণটা ধারণা করা যায়।

দ্বিতীয়ত, তারা মাঝে মাঝে বলে 'দেশে এত সমিস্যা, এইগুলার সমাধান নাই, খালি যুদ্ধাপরাধী যুদ্ধাপরাধী চিল্লায়'। এই কথা যারা বলে তাদের বাংলাদেশের প্রচলিত আইনেই ঘাড় ধরে জেলে ঢুকিয়ে দেয়া যায়। কিন্তু তার আগে তাদের নিজেদেরই ভাবতে বলি। চল্লিশ বছর ধরে দেশে ঐসব গণহত্যাকারি আর ধর্ষকদের বিচার হয় নাই। তাতে কি চল্লিশ বছর ধরে দেশে সমস্যার উদ্ভব বন্ধ ছিল? না, চল্লিশ বছর ধরে দেশের সব সমস্যার সমাধান হয় নাই। আমরা সেগুলির সমাধানেরও চেষ্টা করি। ভারতের আধিপত্যবাদী আগ্রাসন মোকাবেলা তারই অংশ। কেবল একটু অস্বস্তিতে এই জন্য হচ্ছে যে, যে রাজাকার শিরোমণি গোলাম আজমের গ্রেফতারের পর 'কী পাইলাম' আর 'দেশ এত সমিস্যা'র দল ঝিম মেরে ছিল, ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক আসার পরে, তারা আবার গা-ঝাড়া দিয়েছে। তারা মিছিলে ভীড়ে গিয়ে আওড়াচ্ছে নিজেদের নোংরা স্লোগান। সুতরাং এই প্রেক্ষিতে ভারতীয় পণ্য বয়কটের অর্থটা বারেবারে পরিস্কার করা প্রযোজন। বাকি আলোচনার উদ্দেশ্যটাও তাই।

৪. ভারতবিরোধিতা না ভারতবিদ্বেষ?

ভারতের উৎপাদিত পণ্য না কেনা একরকমের ভারতবিরোধিতা সন্দেহ নাই। কিন্তু একে ভারতবিদ্বেষের সাথে মিলিয়ে ফেলা যাচ্ছে না। বাংলাদেশে ভারতবিদ্বেষের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। বলে রাখা ভাল বাংলাদেশে, বাংলাদেশীদের মনে ভারতবিদ্বেষের পেছনে সাম্প্রদায়িক অন্ধতা ছাড়াও, ভারত-রাষ্ট্রের দ্বারা সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণগুলিকেও গোনায় ধরতে হবে। ভারতবিদ্বেষ ছড়ানো যদি সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক শক্তির বহু দশকের প্রকল্প হয়, তাহলে এটাও সত্য বহু দশক ধরে বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষকে ভাতে এবং উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষকে হাতে মেরে, বাংলাদেশের মানুষের মনে সীমাহীন বিতৃষ্ণার জন্ম দিয়েছে ভারতও। অনুল্লেখ্য না, সাম্প্রাদায়িক ভারতবিদ্বেষ (যার গোড়ায় হিন্দুবিদ্বেষ) বাংলাদেশের মানুষের কোনো কাজে আসে নাই। বরং ভারতকে আরো সম্প্রসারিত হওয়া সুযোগটাই করে দিয়েছে। একটু ইতিহাসের দিকে তাকাই।

৫. ভারতবিরোধিতার ঐতিহাসিক ভিত্তি

ঐতিহাসিক পূর্ববঙ্গ যে ঐতিহাসিক পশ্চিমবঙ্গের চেয়ে ভিন্ন সে ধারণাটা ভিত্তি পায় ১৯০৫ সালের জুলাইতে বঙ্গভঙ্গের মাধ্যমে। 'বঙ্গভঙ্গ' ব্রিশিক উপনিবেশবাদীদের ছক ছিল সন্দেহ নাই, কিন্তু ছয় বছরের মাথায় সেটা রদ করা পরও, বাংলা বিভাজনের ধারণাটা এবং দেশ কখনো স্বাধীন হলে ভারতের পূর্বাঞ্চলে স্বতন্ত্র রাষ্ট্র গঠনের ধারণাটা এই দেশের মানুষের মাথায় জায়গা করে নেয়।

লাহোরে ১৯৪০ সালে মুসলিম লিগের সাধারণ সভায় যে 'লাহোর প্রস্তাব' আনা হয় তাতেও ভারতবর্ষের দুই প্রান্তে মুসলমান অধ্যুষিত অঞ্চলগুলিতে 'একাধিক' রাষ্ট্র গঠনের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের বর্ণবাদী ভূস্বামী শ্রেণীর আধিপত্যের হাত থেকে পূর্ববাঙলার ধর্মবর্ণনির্বিশেষ মানুষের মুক্তিলাভের আকাঙক্ষাকে ব্যবহার করে পশ্চিমপাকিস্তানের পুঁজিপতি শ্রেণী লাহোর প্রস্তাবের মূল কাঠামোকে নষ্ট করে জন্ম দেয় পাকিস্তানের। সুতরাং পূর্ববঙ্গের মানুষের স্বরাজের খোয়াবকে আশ্রয় করে পাকিস্তানের ধারণা প্রতিষ্ঠা পেলেও, পশ্চিম পাকিস্তানের পুঁজিপতি শ্রেণী তাদের শোষণের অবারিত সুযোগ উন্মুক্ত রাখার লক্ষ্যে 'লাহোর প্রস্তাবে'র মূল কাঠামো নষ্ট করে ফেলে।

পূর্ব ও পশ্চিমে দুই স্বতন্ত্র রাষ্ট্র গঠনের সুযোগ রুদ্ধ করে পূর্ববঙ্গকে পশ্চিম পাকিস্তানের হিন্টারল্যান্ডে পরিণত করেই প্রতিষ্ঠিত হয় একক পাকিস্তান। ১৯৪৭ সালের ১৪ই আগস্ট এই একক পাকিস্তানের জন্মে পুরোপুরি ছিনতাই হয়ে যায় আমারদের স্বাধীনতার প্রথম সুযোগ। দ্বিজাতিত্ত্বের নোংরা খোঁয়াড়ে প্রায়-স্বেচ্ছায় ঢুকে আমরা হারিয়ে সেই সুযোগ।

এই আক্ষেপ আরও তীব্র হয় যখন দেখতে পাই কাশ্মীর, হায়দ্রাবাদ, মনিপুর, নাগাল্যান্ড, বালুচিস্তানের মতো অঞ্চলগুলিকে ভারতবর্ষের দুই বড় রাষ্ট্র ইন্ডিয়া এবং পাকিস্তান কীভাবে ধাপে ধাপে গ্রাস করেছে। বহুজাতির উপর নিপিড়ীন চালিয়ে একক রাষ্ট্র হিসাবে শক্তিমান হয়ে উঠার এই প্রক্রিয়ার চরমতম উদাহরণ ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী বাহিনীর দ্বারা বাঙালি-নিধন। যদিও ১৯৭১ এর আগ পর্যন্ত আমাদের স্বাধীনতার আকাঙক্ষাকে দমিয়ে রাখতে, সামরিক আধিপত্যের মতোই কৃত্রিম ভারতবিদ্বেষ ছিল দারুণ এক দাওয়াই।

৬. ভারতবিদ্বেষ

৬.১ শুরু

বাংলাদেশের মানুষ ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত পাকিস্তানী সামরিক জান্তার চাপিয়ে দেয়া ভারতবিদ্বেষের বোঝা বহন করেছে। আজকে আমরা ভুলে গেছি অনেকটাই, ভারতবিদ্বেষ ছড়ানোর প্রাথমিক উদ্দেশ্যটা ছিল শোষণ। আমাদের ভারতবিদ্বেষী করে তুলে টিকে থাকার চেষ্টা করেছে শোষক রাষ্ট্র পাকিস্তান। যখন একটা অস্বাভাবিক রাষ্ট্র পরস্পর মিলহীন, সম্পর্কহীন, সাংস্কৃতিক ভাবে বিচ্ছিন্ন একাধিক অঞ্চলকে শোষণের পরম্পরায় একীভূত করে রাখতে চায় – তখন ঐ রাষ্ট্রের খুব দরকার হয়ে পড়ে এমন এক বাইরের শত্রুর যা ঐ 'মিলহীন, সম্পর্কহীন, সাংস্কৃতিক ভাবে বিচ্ছিন্ন একাধিক অঞ্চলকে' কমন শত্রুর ভিত্তিতে এক করে রাখবে (১৯৪৭ থেকে আজ পর্যন্ত ভারতও এই একই পদ্ধতি আঁকড়ে ধরে আছে)।

১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানে মানুষের উপর বেশুমার সামরিক খরচ, ইসলামাবাদে রাজধানী নির্মাণ ইত্যাদি বোঝা চাপিয়ে দেয়া গেছে এই 'যুক্তি'তে যে ভারত নামক শত্রুর হাত থেকে রক্ষা পেতে এসবের প্রয়োজন আছে। যদিও ১৯৬৫ সালের ভারত পাকিস্তান যুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানকে একরকম অরক্ষিত করে রেখেছিল পশ্চিমের শোষকেরা। সুতরাং পাকিস্তান-আমলের ভারতবিদ্বেষকে আদর্শিক জায়গা থেকে, 'কওমী' জায়গা থেকে দেখার সুযোগ নাই। এই ভারত বিদ্বেষ যা হিন্দু বনাম মুসলমানের কপট যুদ্ধের উপর ভিত্তি করে টিকে ছিল সেই ভিত্তিটাও ভেঙে পড়তে খুব বেশি সময় লাগে না।

ভারত হিন্দু, পাকিস্তান মুসলমান – দ্বিজাতিতত্ত্বের এই তো ভিত্তি? কিন্তু তখনকার পশ্চিম পাকিস্তানের শোষকরা মানতে চাইত না তখনকার পূর্বপাকিস্তানের মুসলমানেরা তাদের 'সমান মুসলমান'। কারণ? জাতিধর্ম নির্বিশেষ পুর্বপাকিস্তানের মানুষের সাথে সাথে অনেকটা ভাষায় এবং খাদ্যাভ্যাসে মিল রয়েছে 'হিন্দু সংখ্যাগরীষ্ঠ' ভারতীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের। আর, তখনকার পূর্ব পাকিস্তানে হিন্দু-মুসলমানের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং সাংস্কৃতিক ঐক্যও তাদের মনে ভীতির জন্ম দেয়। হিন্দুদের সাথে মিলেমিশে থাকলে মুসলমান কীভাবে 'শুদ্ধ' মুসলমান থাকে – এমন সঙ্কীর্ণতা থেকেও তারা পূর্ব পাকিস্তানের মুসলমানদের আরো 'মুসলমান' করে তোলার চেষ্টায় সাম্প্রদায়িকতার বীজ বুনে চলে পূর্ব-পাকিস্তানে। কিন্তু মদ আর নারীলোভী (প্রথাগত ইসলামে এই দুইই নিষিদ্ধ) পাকিস্তানের জেনারেলদের কাছে 'ইসলাম' কেবল নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখার একটা হাতিয়ারমাত্র ছিল। ১৯৭১ সালে সামরিক ইসলাম ও পাকিস্তানী জেনারেল উভয়ের হাত থেকে সাময়িক মুক্তিলাভ করে বাঙালি।

৬.২ বাংলাদেশে ভারতবিদ্বেষ

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে আবারও পাকিস্তানী মডেলের সামরিক শাসন কায়েম হয় বাংলাদেশে। পাকিস্তানপন্থী ধর্মান্ধ সাম্প্রাদায়িক অবৈধ সামরিক শাসকেরা বাংলাদেশে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে ভারতবিদ্বেষ ছড়ানোর চেষ্টা করে। এই ভারতবিদ্বেষও আমাদের কোনো কাজে আসে নাই। বরং আমাদের প্রচুর ক্ষতি করেছে। কারণ ধর্মান্ধ ভারতবিদ্বেষে মেতে থেকে আমাদের বিশাল অংশ এতটাই অন্ধ ছিল যে, এর ফাঁকে আমাদের কী ধরণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে সেটা আমরা ধারণাও করতে পারি নাই।

কথিত শীতল/স্নায়ুযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে পাকিস্তান এবং পাকিস্তানের বড় ভাই চীনের আনুকুল্য পেতে তীব্র ভারতবিদ্বেষ লালনের শুরু। জিয়ার আমলে এবং তার পরেও বিএনপির স্লোগান ছিল 'রুশ-ভারতের দালাল নিপাত যাক'। ১৯৭৯ এ আফগানিস্তানে সোভিয়েত আগ্রাসনের পর, এই অঞ্চলের নিজেকে যোগ্যতম মার্কিন দাস হিসেবে প্রমাণের প্রতিযোগিতায় নাম লিখিয়েছিল দুই স্বৈরাচারই। ('রুশ-ভারতের দালাল নিপাত যাক' – এই শ্লোগানের এটাও একটা প্রেক্ষাপট)। জিয়া এবং এরশাদ দুইই রাজাকারদের পুনর্বাসন করেছে, তাদের জন্য উন্মুক্ত করেছে বাংলাদেশের রাজনীতি। জিয়া ও এরশাদের জন্য নিজেদের রাজনৈতিক শক্তি অর্জনে সুতরাং ভারতবিদ্বেষের জরুরি ভূমিকা ছিল।

জিয়ার আমলে অজস্র মুক্তিযোদ্ধা অফিসারদের নির্বিচারে হত্যা করা করা হয়। পাকিস্তান ফেরতরা সামরিক-বেসামরিক প্রশাসনে জাঁকিয়ে বসে (অসামরিক প্রতিষ্ঠানে সামরিক পদস্থদের নিয়োগের ধারা বাংলাদেশে এখনও বলবৎ)। এরশাদ জিয়ার ধারাবাহিকতাই রক্ষার করেন কেবল। ভারত যেমন ফারাক্কা বাঁধ দিয়ে তাদের এই কাজ সহজ করে দিয়েছে, তেমনি দক্ষিণ তালপট্টির মতো পানি ফুঁড়ে উঠে আসা ইস্যু জিয়া-এরশাদের এইসব অপকর্মের নায্যতা তৈরিতে ব্যবহৃত হয়েছে।

১৯৯০ এ তাদের ইতিহাসে প্রথমবার বৈধ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা বিএনপি পূর্বসূরিদের পথ থেকে সরে আসে নাই। নিজেদের ভারতবিরোধী হিসাবে প্রতিষ্ঠা করে অন্তরালে ভারতের বাণিজ্যিক স্বার্থকেই রক্ষা করেছে। আবার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ভারতপ্রেমী হিসাবে প্রচার করে তারা রাজনৈতিক ফায়দার চেষ্টা করেছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং মৌলবাদী রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবিতে ১৯৯২ সালে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গঠন হলে, 'রাজাকার' 'গালি'র সমতুল্য হিসেবে 'ভারতীয় দালাল' গালিকে গড়ে তোলা হয়। 'ভারতীয় দালাল' গালি সৃষ্টির উদ্দেশ্য ভারত-রাষ্ট্রের প্রতি অনুগত কোনো ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা না, বরং যুদ্ধাপরাধের গণদাবির স্রেফ একটা 'পাল্টা' বা 'প্রত্যুত্তর' দেয়া। সুতরাং এই পেক্ষাপট মাথায় রাখলে, 'ইন্ডিয়ান রাজাকার' আর 'ভারতীয় দালাল' এই গালিগুলির অর্থ নির্দোষ থাকে না, এবং মূল প্রসঙ্গ থেকে দূরে সরিয়ে দেয়।

বিএনপি ও জামাত-বিএনপির দুই আমলে বাংলাদেশের সাবমেরিন কেবল লাইনে যুক্ত না হওয়া, অটেকসই ভারতীয় গাড়ি আনার অবারিত সুযোগ করে দেয়ার মতো বিষয়গুলি ভারতের বাণিজ্যিক সম্প্রসারণকেই সামর্থ্য যুগিয়েছে। অন্যদিকে আওয়ামীলীগকে 'ভারতপ্রেমী' হিসাবে প্রচার করা হলে, আওয়ামীলীগ সেই প্রচারের বিরুদ্ধে খুব বেশি যুক্তি সরবরাহ করতে পারে নাই। ১৯৯৬ এর আওয়ামীলীগ সরকারের সময় গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি (আংশিক বাস্তাবায়িত) এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের স্বায়ত্বশাসনকামী মানুষের সাথে 'শান্তিচুক্তি'র (আংশিক বাস্তবায়িত) মাধ্যমে আঞ্চলিক পানি-রাজনীতির ক্ষেত্রে এবং চরমপন্থী-লালনের ক্ষেত্রে ভারতীয় আধিপত্য সামান্য প্রতিহত হয়। কিন্তু পরের সময়গুলিতে আওয়ামীলীগ সরকারের মন্ত্রীদের কেউ কেউ এবং সংসদীয় গণতন্ত্রের গায়ে কালো দাগ হয়ে থাকা প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টারা ক্রমাগত নির্লজ্জ ভারততোষণে নিজেদের ভারতীয় আগ্রাসনবান্ধব বলে প্রমাণ করেছেন। বিএনপি-জামাত ও তত্ত্বাবধায়কের মোড়কে অবৈধ সেনা সরকারের সময় ভারতের অনুকূলে তিলে তিলে ধ্বংস করে দেয়া পাট-খাতের প্রতি আওয়ামীলীগের ঔদাসীন্য অন্য দলগুলিতে থেকে তাদের অপর রাজনৈতিক শক্তিগুলি থেকে কম-ভারতবান্ধব হওয়ার প্রমাণ দাখিল করে না।

৭. ভারতবিদ্বেষ না ভারতীয় পণ্য বর্জন?

বাংলাদেশ রাষ্ট্রের উদ্ভব এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক শক্তগুলির পরম্পরা বিচার করলে 'ভারতবিদ্বেষে'র ধারণাটাকে কোনোভাবেই লাভজনক বলে প্রমাণ করা কঠিন। এবং জাতীয় আর্থ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিশেষভাবে ক্ষতিকর বলে চিহ্নিত করা সহজ। ঠিক এই প্রেক্ষাপটেই ভারতবিদ্বেষের গোঁয়ার্তুমি থেকে আমরা একটা পরিণত, কার্যকর, প্রয়োজনীয় ভারত-প্রতিরোধিতার দিকে এগুতে পারি। আমরা ১৯৬৫ সালেও নাই (ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের বছর)। ১৯৭৭ সালেও নাই (জিয়াউর রহমানের ক্ষমতা দখলের বছর)। ২০০২ সালেও নাই (এই বছর আদমজী জুট মিল বন্ধ করে দেয়া হয়)।

২০১২ সালে এসে, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এর আচরণের সাপেক্ষে ভারতীয় পণ্য বয়কটের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিএসএফের বাড়তে থাকা হত্যা-নিপীড়নের জবাবে আরও অনেকগুলি পদক্ষেপের এটা একটা মাত্র। অবশ্যই নিজেদের সরকারকে, নিজেদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও চাপ দিয়ে যেতে হবে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানে। পাশপাশি চলবে এই মুহূর্তেই প্রয়োগ করা যায় এমন এক 'হাতিয়ারে'র প্রয়োগ। সেই হাতিয়ারের নাম 'ক্রয়ক্ষমতা'।

৭. কনজিউমার অ্যাক্টিভিজম বা ভোক্তার প্রতিবাদ

বাংলাদেশের মানুষ যারা ভারতে উৎপাদিত পণ্যের ক্রেতা তারা সেই পণ্য না কেনার মাধ্যমে ভারতীয় সরকারকে একটা সহজ বার্তা পৌঁছাতে চায়: ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর আচরণ এতই বর্বর যে আমরা ঐ বাহিনী যে দেশের সরকারের অধীন সে দেশে উৎপাদিত কোনো কিছু কিনতেই তীব্র বিতৃষ্ণা বোধ করি।

একটা উদাহরণ দেয়া যায়। আমরা একটা বাজার থেকে নিয়মিত জিনিসপত্র কিনি। কিন্তু আমাদের ঐ বাজারে যেতে হয় জান হাতে নিয়ে। কারণ বাজার করতে করতে গুলি খাওয়ার একটা সম্ভাবনা আছে। এরকম হলে আমরা সেই বাজারে যাব কি? যাব না। ভারতীয় পণ্যের ক্ষেত্রে মোটা দাগে বিষয়টা এমনই। আমরা সহজে বুঝতে পারি না, কারণ আমাদের মধ্যে যারা ঐসব পণ্য ভোগ করি আর যারা বাজারের গিয়ে গুলি খায় – তারা আলাদা।

হিমু লিখেছেন:

'সারা দেশ জুড়ে আমরা একটি নির্দিষ্ট দিনে ভারতের পণ্য-সেবা-ফূর্তি বর্জন করে হাবিবুর রহমান নামে ঐ গরীব লোকটা, যে আপনার পাতে পরিবেশনের জন্যে গরু আনতে দারাপুত্রপরিবার ফেলে প্রাণ হাতে করে সীমান্ত টপকে ভারতে গিয়েছিলো, তাকে নগ্ন করে পশুর মতো পেটানোর প্রতিবাদ জানাতে পারি।'

হাবিবুরদের প্রতি সংহতি জানাতে গিয়ে, এটাও যেন খেয়াল রাখি, যে তিরিশ লাখ মানুষ নিজেদের অস্তিত্বের বিনিময়ে আমাদের ভারতবর্ষের সম্ভবত একমাত্র স্বাভাবিক রাষ্ট্র উপহার দিয়ে গেছে – তারা যেন অপমানিত না হয়। সুতরাং জরুরি হচ্ছে, সতর্ক থাকা, পাকিস্তানবাদ, পাকিস্তানবাদী রাজাকার ও ছদ্মরাজাকারদের যেন শক্তি না যোগায় এই বয়কট।

৮. আখেরে লাভ?

একটা লাভ তো এই যে ভারতবিদ্বেষের জাদুটোনা থেকে মুক্ত হয়ে আমরা সত্যিকারের দুনিয়ায় সত্যিকারের ভোক্তা-প্রতিরোধের একটা সূচনা করতে পারি।

এই প্রতিরোধে, বাংলাদেশে তাদের মোট রপ্তানির শতকরা এক-দেড় ভাগ রপ্তানি করা ভারত টলে যাবে না।যদিও সীমান্ত চোরাচালানের অবকাঠামো অনুমোদন করে ভারত-রাষ্ট্র নিজেদের বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের কর-অবকাশের সুযোগ করে দেয়। পরোক্ষ পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যায় বিশাল ফেনসিডিল বাণিজ্যে। আর বন্দুক ধরিয়ে দিয়ে বেতনের বাইরে 'করে খাওয়া'র দারুণ সুযোগ করে দেয় নিজেদের সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে। তারপরও, মাত্রাবিচারে এই প্রতিরোধ হয়ত, ভারতীয় বাণিজ্যতন্ত্রের তাৎক্ষণিক মাথাব্যাথার কারণ হবে না। কিন্তু ভারত থেকে নিজেদের মোট আমদানির শতকরা পনের ভাগ আমদানি করা বাংলাদেশের জন্য এটা ছোট বিষয় না। পণ্য কোথাও না কোথাও উৎপাদিত হয়, আসমান থেকে পড়ে না, অন্তত এই সচেতনতা আমাদের বাংলাদেশী পণ্যের প্রতি মনোযোগি হতে তো শেখাবে।

হ্যাঁ, শেষ বিচারে, মুক্তবাজারের এই বিশ্বে, ভারতীয় পণ্য না কেনার বিষয়টা তো 'নিছক' ভোক্তার প্রতিবাদই থেকে যায়। হ্যাঁ, অবশ্যই আমাদের এরচেয়ে অনেক বেশি কিছু করার দরকার আছে। শুধু ভারত কেন, চীন বা অন্য দেশের সাথেও আমাদের আমদানি রপ্তানির ফারাক কমাতে হবে। আর হ্যাঁ, এটাও ঠিক, দেশীয় শিল্পকে গড়ে তোলার প্রয়োজন হয়ত এখন সব থেকে বেশি। প্রয়োজন 'স্বদেশী' পণ্যের মান ও পরিমাণ দুইয়েরই বৃদ্ধি। সম্পদের বৃদ্ধি, সুষম বণ্টন … আরো অনেক অনেক কিছুই করার আছে।

কিন্তু ভাইবোনেরা, এই মুহূর্তে আমরা স্রেফ জান হাতে নিয়ে বাজার করতে অনিচ্ছুক তো হতেই পারি। সুতরাং এখনকার জন্য স্রেফ এটাই করে দেখাই না।

রাজাকার ও নব্যরাজাকারদের কোলে না তুলেও এই কাজ খুব একটা কঠিন হবে না।


মন্তব্য

guest writer এর ছবি

অসম্ভব বিশ্লেষণধর্মী ও ভাবাবেগ বর্জিত একটি চমৎকার লেখা।
হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে শুভেচ্ছা।

pupei এর ছবি

েপাক্ত হইেছ

চরম উদাস এর ছবি

এই লেখাটা ঠিক এইসময় খুব দরকার ছিলো গুরু গুরু

সাই দ এর ছবি

অসাধারণ গুরু গুরু

সাবেকা এর ছবি

লেখাটা খুবই যুক্তিযুক্ত এবং তথ্যবহুল । অসংখ্য ধন্যবাদ লেখাটির জন্য । একজন পাঠক হিসেবে আমার ব্যক্তিগত মত হচ্ছে আমরা যা কিছুই করিনা কেন পাকী রাজাকারেরা যেন কোনভাবেই এটাকে পুঁজি করে মাঠে নামতে না পারে । এই সাবধানতা আমাদের ভীষণই দরকার । আশা করি আপনার এ লেখা তাদের সে উল্লাসে কিছুটা কাঁটা হয়ে বিঁধবে হাসি

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

এই যুগে বাজারই ঈশ্বর। বড় আকারে পণ্য বর্জন অনেক বড় প্রতিবাদ। বিশেষ ধন্যবাদ পালটা স্লোগানে মূল উদ্দেশ্য ঘোলা করার উদাহরণগুলোর জন্য। লেখাটা খুবই ভালো লাগলো। সময়োপযোগী, কার্যকর, সঠিক।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

'ঈশ্বরে'র সকল ধারণাসমেত বাজার বিদ্যমান। অবশ্যই। বাজার ঞলিবারল ঈশ্বর। কিন্তু সেইটা মূল প্রসঙ্গ না। মূল প্রসঙ্গটা আপনি যথার্থই ধরছেন --- বাজে লোকদের প্রশয় দিলে উদ্দেশ্যবিচ্যুতির আশঙ্কা থাকে। এই লেখা সেই আশঙ্কার ফল।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

সঞ্জয় কুমার চৌধুরী এর ছবি

চলুক Share দিলাম.

সৃষ্টিছাড়া এর ছবি

চলুক চলুক

ফাহিম হাসান এর ছবি

লেখাটার দরকার ছিল, অনিন্দ্যদা। ছড়িয়ে দিচ্ছি সাধ্যমত।

আমার দুই পয়সা -

০১

তারা মাঝে মাঝে বলে 'দেশে এত সমিস্যা, এইগুলার সমাধান নাই, খালি যুদ্ধাপরাধী যুদ্ধাপরাধী চিল্লায়'।

এই ধরনের অজুহাতের বিপক্ষে আরেকটা শক্ত যুক্তি হচ্ছে - সামাজিক বা রাজনৈতিক সমস্যা কখনো প্রতিস্থাপন যোগ্য নয়। তাই একটা সমস্যাকে এড়িয়ে অন্য সমস্যার সুরাহা করা আসলে কোন সমাধানই নয়।

নাগরিক ও রাষ্ট্রজীবনের সব সমস্যাকে গুরুত্ব অনুযায়ী সাজানো দরকার। প্রশ্নটা তাই এবার "প্রায়োরাটাইজেশান" - এর। গুরুত্ব ও প্রভাব অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আমি তালিকার সবচেয়ে উপরের দিকে রাখব।ছাগু বাদে সবাই তাই রাখবে। দেঁতো হাসি

০২

পোস্টের ফরম্যাটিংটা আরেকটু বদলানো যায় না?

যেমন - পয়েন্ট গুলোকে বোল্ড করে দিলে চট করে খুঁজে পেতে সুবিধা হয়। ৩ নং পয়েন্টটা আরেকটু ভাঙ্গা উচিত। বড় পোস্ট, কিন্তু এটা স্ক্যান করার মত না, বিটুইন দা লাইনও পড়তে হয়। তাই ভেঙ্গে লিখলে,ইটালিক বা বোল্ড করে পয়েন্ট দিলে চোখের আরাম।

-----

আরো কিছু কথা আস্তে আস্তে যোগ করছি।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

০১ ... অগ্রাধিকারের প্রশ্ন তো আছেই। একমত। কিন্তু অগ্রাধিকারের সাবজেক্টিভ জাজমেন্টে কেউ যদি না যাইতে চায় তাইলেও যু্দ্ধাপরাধীদের বিচার আর অন্য যেকোনো সমস্যার সমাধান মিউচুয়ালি এক্সক্লুসিভ না, কোনো পরিস্থিতিতেই না।

০২ ... ফরম্যাটিং হালকা বদলাইলাম।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

কানাবাবা এর ছবি

অনেকাংশেই একমত, একটা ব্যাপারে জিজ্ঞাসা, আমাদের যারা বলছিলেন সীমান্তে এসব একটু আধটু হয়েই থাকে তাদেরকে সম্মানিত পদে রেখে, প্রতিবাদ কি যথাযথ হবে? কিংবা মন্ত্রনালয় (পররাষ্ট্র কিংবা স্বরাষ্ট্র) এর মাধ্যমে প্রস্তাবিত সমস্যা সমাধানের জন্য পদধারী মানুষগুলো কি সঠিক আছে? এর যাচাই কে করবে।
আমরা সমস্যা জিইয়ে রাখতে যেমন চাই না। নতুন সমস্যাতে পরতেও চাই না। বের হবার সঠিক উপায় জানতে চাই।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

নির্বাচনে যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দেন। প্রার্থী পছন্দ না হৈলে নিজেই দাঁড়াইতে হবে। নির্বাচিত প্রার্থী মন মতন কাজ না করলে, সিভিল প্রতিবাদের জায়গা আছে। সিভিল প্রতিবাদে কাজ না হৈলে প্রত্যক্ষ সংঘাতের পথ আছে। প্রত্যক্ষ সংঘাত শেষে আবার নির্বাচন হবে। নির্বাচনে যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দেন। প্রার্থী পছন্দ না হৈলে ...


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

১৯৭১ সালে সামরিক ইসলাম ও পাকিস্তানী জেনারেল উভয়ের হাত থেকে সাময়িক মুক্তিলাভ করে বাঙালি।

১৯৭১-এর পাকিস্তানের কর্মকাণ্ডের ভেতরে 'সামরিক ইসলামের' অস্তিত্ববান হওয়া আপনার টেক্সটে পরিষ্কার লাগে নাই। এই ফ্রেইজটা আনার আগে আরেকটু প্রেক্ষাপট দিতে পারতেন। সামরিক ইসলামের রূপ ও ভয়াবহতা মাত্রায় ও আচার-আচরণে ভিন্ন গোছের বলেই মনে হয়। আর সামরিক ইসলামের পেছনে ঐতিহাসিকভাবে একটা আদর্শিক অবস্থান দেখতে পাওয়া যায়। জাতীয় অবস্থান না। পাকিস্তানের আচরণ তার চেয়ে বেশি রেসিস্ট গোছের। বিস্তারিত বললে হয়তো আরেকটু বোঝা যাইতো কীভাবে মিলটা দেখতেছেন।

হাবিবুরদের প্রতি সংহতি জানাতে গিয়ে, এটাও যেন খেয়াল রাখি, যে তিরিশ লাখ মানুষ নিজেদের অস্তিত্বের বিনিময়ে আমাদের ভারতবর্ষের সম্ভবত একমাত্র স্বাভাবিক রাষ্ট্র উপহার দিয়ে গেছে – তারা যেন অপমানিত না হয়।

ভালো বলছেন কথাটা। এইটা আমার মনের কথা।

ভবিষ্যত নিয়ে আমার কিছু ভাবনা।

মানুষ ধীরে ধীরে সচেতন হয়ে উঠবে বলেই আশা রাখি। এই আন্দোলন একদিন সফল হবে এই আশা আছে। তা এই আন্দোলনটায় ভাটা পড়বে তখনই যখন কোনো একটা সরকার এসে বলবে, ধন্যবাদ এই আন্দোলনের জন্যে, এখন থেকে আপনাদের এই দাবির দেখভাল আমরা করবো, আপনাদের হয়ে আমরাই ভারতবিরোধিতা বজায় রাখবো, সম্পদের বৃদ্ধি ঘটাবো, দেশের সকল সম্পদ এক হাতে লয়ে অন্য হাতে বেটে বেটে সুষম বন্টন করবো। তখন এই আন্দোলনটা এলিট শাসকশ্রেণী আবার ছিনতাই করে নিবে। পাঁচশজনের একটা শাসকগোষ্ঠীরে ভারতের পক্ষে কিনে গোলাম বানিয়ে দেয়া সহজ, গোটা জাতিকে কিনে নেয়া সহজ না। সুতরাং এই আন্দোলন গণমানুষের মধ্যেই জিইয়ে রাখতে হবে। কোনো 'সদিচ্ছাপূর্ণ' শাসকের হাতে ছেড়ে দেয়া যাবে না। সরকার তার নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র দিয়ে বাইরের পণ্য আগমনে যতোখুশি চিবি দিক। দেশের ভেতরে সম্পদ বৃদ্ধির জন্য দেশের মানুষকে ব্যবসায় উৎসাহী করতে হবে। বাজারকে দেশের উদ্যোক্তাদের জন্য অনুকূল করে তুলতে হবে। সাথে কোনো কর্পোরেট গোষ্ঠির মনোপলি এবং অবৈধ যৌথচুক্তি ঠেকানোর জন্য এন্টিট্রাস্ট আইন করে চিবি দিতে হবে। সরকার সেটুকু করতে পারবে না, কিন্তু সকল সম্পদ নিজের করতলগত করে একা একা পাঁচশজনের একটা গোষ্ঠি দিয়ে সারা দেশের সম্পদ বৃদ্ধি ঘটায়ে ফেলবে, সেটা বিশ্বাস্য না। ব্যবসা করবে মানুষ, সরকার সেটা নিশ্চিত করবে যে দেশের মানুষ ব্যবসা করতে পারছে। এর বদলে সরকার নিজেই ব্যবসা করা শুরু করে দিলে হবে না।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

অবশ্যই ১৯৭১ এর আচরণ কার্যকলাপ পরিধি রেইসিস্ট। কিন্তু পাকিস্তানের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া মানে পাকিস্তানের কাঠামোগত বৈশিষ্ট্যগুলার থেকে মুক্তি পওয়া, সামরিক ইসলামের একটা ভ্যারিয়েশন তার অন্তর্গত মনে করি।

বাদ বাকি বিষয়ে আপনার নিজস্ব মন্তব্য দেয়ার জন্য ধন্যবাদ জানাই।

আপনার রাজনৈতিক 'বিশ্বাস' আমার থেকে এতটাই দূরবর্তী যে প্রায়শই অর্থপূর্ণ মতবিনিময় অসম্ভাব্য হয়া উঠে। সুতরাং সেই চেষ্টায় না যাই।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

আপনার রাজনৈতিক 'বিশ্বাস' আমার থেকে এতটাই দূরবর্তী যে প্রায়শই অর্থপূর্ণ মতবিনিময় অসম্ভাব্য হয়া উঠে। সুতরাং সেই চেষ্টায় না যাই।

এই মন্তব্যটা দুঃখজনক। মানে আমার অন্তরে দুঃখের জন্ম দিয়েছে। তাই আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত হলাম। আমি কোনো রাজনৈতিক 'বিশ্বাসে' বিনাশর্তে সাব্সক্রাইব করি নাই। আমি স্কেপ্টিক। সকল একক ক্ষমতার হেজামোনি, যেমন ঈশ্বরীয় বা রাষ্ট্রীয় হেজামোনি, এগুলোকে আমি সন্দেহের চোখে দেখি। একক ক্ষমতার বিরোধিতায় দৃঢ়তা পোষণ করি। কিন্তু নিজে একটা সমাধান প্রস্তাব করার ক্ষেত্রে খুব প্রত্যয় অনুভব করি না। কারণ সম্ভবত প্রায় সকল সমাধানের মধ্যেই পরিশেষে একটা দীর্ঘায়িত মিথ্যার বয়ান থাকে। কিছু দেখা যায়, কিছু দেখতে দেরি হয়। কিন্তু যুক্তিপূর্ণ কথা কখনো অগ্রাহ্য করেছি এমন মনে পড়ে না। আপনার সাথে মতবিনিময় অর্থপূর্ণ হওয়ার অসম্ভাব্যতা দেখা দিয়েছে তেমনও মনে পড়ে না। বাদানুবাদের টেক্সটে তেমন পাই নাই। আপনি মনে মনে সেটা পেয়েছেন দেখে দুঃখ পেলাম। বক্তব্যের অসঙ্গতি নির্ণয়ে অবস্থান জানা প্রয়োজনীয় নয়। যখন মানুষের অবস্থান জানা (?) হয়ে যায়, সেখানেই বাদানুবাদের মৃত্যু ঘটে বটে। বাদানুবাদের এই হত্যার সূচনা যুক্তির ত্রুটিতে ঘটে না, বক্তব্যের অসঙ্গতিতেও ঘটে না, ঘটে ব্যক্তির অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত ধারণা পোষণের অভিপ্রায়ে। আপনি যদি আমার ব্যাপারে 'আপনার অনুমিত অবস্থান' ব্যতিরেকে মতবিনিময়ে আগ্রহী থাকেন, সেক্ষেত্রে আমাকে অনাগ্রহী পাবেন না, সেইটা জানবেন। অন্যের অবস্থানের ব্যাপারে অনুমিতি আমার কাছে মতবিনিময়ের কোনো অন্তরায় না। এবং আমার বক্তব্য আপনাকে আপনার রাজনৈতিক 'বিশ্বাস' সহকারে স্বাভাবিক বাদানুবাদের উপায়ে আঘাত দিয়ে থাকলে আমি পুনর্বার আন্তরিকভাবে দুঃখিত। সেক্ষেত্রে ভবিষ্যতে আপনাকে এভাবে আঘাত না দিয়ে বক্তব্য রাখার চেষ্টা করবো।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

হায় হায় ... দুঃখ পাইয়েননা। 'বিশ্বাস' শব্দ এত দুঃখদায়ক হৈলে এমন শব্দ ব্যবহার করতাম না, কসম। বিশ্বাস বলতে অনাস্থার একটা বিশেষ গভীর পর্যায় বুঝাইছি। আপনার সাথে তর্ক ভাল্লাগে। ভালো লাগার এক পর্যায়ে খোঁচানোর প্রবৃত্তি ফ্রয়েডীয়। মাইন্ড খাইয়েন না। আর অর্থপূর্ণতার অভাব বলতে 'কমন ভোকাবুলারির' অভাব বুঝাইছিলাম। মানে প্যাঁচ খায়া গেছে।

৫ নম্বর পয়েন্টে আপনের মত কী?


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

হাসি

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

৫ নম্বর পয়েন্টে আপনের মত কী?

আপনার এই প্রশ্নটা খেয়াল করি নাই। ঐতিহাসিক পূর্ববঙ্গের সাথে পশ্চিমবঙ্গের পার্থক্যটা এনে ভালো করেছেন। এই অংশটা একটু কম এসেছে যদিও। ঐতিহাসিক পূর্ববঙ্গের সাথে পশ্চিমবঙ্গের পার্থক্যটা বঙ্গভঙ্গে প্রথম নিজেকে রাজনৈতিকভাবে উপস্থাপন করলেও এবং এর ফলে ধারণাটা একটা নাড়া দিলেও এর একটা যুগপৎ উৎপত্তি কিন্তু একটা জাতিগত দ্বন্দ্বে। পূর্ববঙ্গ মুসলমানের আর পশ্চিমবঙ্গ হিন্দুর বাস, এই পরিচয়। এই পরিচয় কে প্রদান করেছে, সেটা ঘেঁটে দেখার বিষয়। সে সময়কার পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুরা দেখি বলেন যে এর দায় পূর্ববঙ্গের। তারাই নিজেদেরকে মুসলমান ও আলাদা হিসেবে উপস্থাপন করে অখণ্ডিত বঙ্গে ভাঙন ধরাতে চেয়েছে। আবার সে সময়কার মুসলমান সমাজ দেখা যায় দোষারোপটা করেন পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুদের প্রতি। তারা বলেন যে - আমরা মুসলমান বটে, কিন্তু তার কারণে যোগ্যতায় একটা জাতিগত পার্থক্য পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুরাই নির্দেশ করেন। প্রতিষ্ঠিত ব্যবসা চাকরিতে গেলে তারাই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় তোমরা মুসলমান, আমরা হিন্দু। তোমরা আমরা আলাদা। অর্থাৎ একদল পৃথকত্বের অভিযোগ তুলছে। আরেকজন শোষণের অভিযোগ করছে। একদল বলছে এই পৃথকত্ব বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, অন্যদল বলছে এই শোষণের নিস্তার হবে পৃথক শাসনে। তো এই প্রেক্ষাপটটা এই ঐতিহাসিক পার্থক্যে গুরুত্বপূর্ণ। ওদের উপায়ে নয়, নিজেদের উপায়, এই ধারণার উৎপত্তি পূর্ববঙ্গে অনেকটাই এই প্রেক্ষাপটে। সেটাও ভারতবিরোধিতার আদিসূত্র।

তা পূর্ববঙ্গের নিজস্ব আত্মপরিচয় গঠনটাকে বিশ্রী ভারতবিদ্বেষ রূপ প্রদান করে পাকিস্তান নামক নাপাক রাষ্ট্র। আর জাতিগত শোষণকেও তারা রাষ্ট্রীয় রূপ দান করে। সেই ভারতবিদ্বেষের কঙ্কালকে আমরা এখনো বহন করছি। যে কারণে নিজস্ব আত্মপরিচয় গঠনে মনোযোগ দেওয়া হয় নি। বিদ্বেষ নিজেকে একটা ছদ্মপ্রবোধ দেয় যে তুমি তো জানই তুমি কে। একটা ঋণাত্মক উপায়ে পরিচয় নির্মাণ। এতে পরিচয় আসলে মোটেই তৈরি হয় না, বরং ক্ষতি হয়। এর বিপরীতে তৈরি হয়েছে তাই ভারতের সাথে নিঃশর্ত মৈত্রী, যেটা আত্মপরিচয়কে বিলিয়ে দেয়।

আমরা সম্ভবত তাই নিজস্ব পরিচয়টাই পুনর্সন্ধান করছি। আমাদের নিজস্ব পরিচয় গঠনে ভারতবিরোধিতা কোনো মৌলিক সূত্র হিসেবে নয়, তবে স্বাভাবিক উপপাদ্য হিসেবে মনে হয় আসে।

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

তো আমাদের এই পরিচয় নির্মাণে আমরা নিজেদেরকে ধর্মীয় সত্তা হিসেবে উপস্থাপন না করার চেষ্টার মাধ্যমে সত্যিই ভারতবর্ষের সম্ভবত একমাত্র স্বাভাবিক রাষ্ট্রে রূপলাভ করেছি। তাই এদেশ ’পাক’ই-স্তান না, এদেশ 'হিন্দু'স্তানও না।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

পরিচয় নির্মাণে আমরা নিজেদেরকে ধর্মীয় সত্তা হিসেবে উপস্থাপন না করার চেষ্টার মাধ্যমে সত্যিই ভারতবর্ষের সম্ভবত একমাত্র স্বাভাবিক রাষ্ট্রে রূপলাভ করেছি। --- এইটুকই বলার ছিল। ধন্যবাদ।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

পঞ্চক এর ছবি

চলুক

মূর্তালা রামাত এর ছবি

আমার মতে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ক্ষেত্রে একটা জিনিস মাথায় রাখা দরকার সেটা হলো পণ্যগুলোর রিপ্লেসমেন্ট আমাদেরআছে কীনা। যেমন ভারতীয় টিভি চ্যানেল বর্জন করে মানুষ বাংলাদেশি টিভি কেন দেখতে চাইবে-আমাদের টিভিগুলো কীআবজাব দেখায় তা আরিফ জেবতিক ভাইয়ের পোস্টে ভালভাবে দেয়া আছে।আমরা যোই চেষ্টা করি না কেন সঠিক রিপ্লেসমেন্ট নিশ্চিত করতে না পারলে ভারতীয় পণ্য বর্জন একটা লোক দেখানো ফ্যাশনই হয়ে থাকবে।
লেখা বিশ্লেষণমূলক হওয়াতে ভাল লেগেছে.....

মূর্তালা রামাত

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

ভারতবিদ্বেষ এর ব্যাপারে সতর্কতা পোষণের জন্য ধন্যবাদ জানাই। যখন বিদ্বেষ মিশবে, তখনই আন্দোলনটার সদিচ্ছার মৃত্যু ঘটবে।

তদানিন্তন পাঁঠা এর ছবি

মানুষের চিন্তার এবং বোঝার কতো রকমফের থাকতে পারে তা আজকে বুঝছি। এই যে পাকিস্তানি রাজাকার / ইন্ডিয়ার রাজাকার এর ব্যাপারটা এই ভাবে দেখা সম্ভব তা মাথাতেই আসেনি আগে। আমিও এমন একটা লেখা ফেসবুকে শেয়ার করেছিলাম আরেক বন্ধুর খোমাপাতা থেকে তাৎক্ষনিক ভাল লাগায়। এখন বুঝতে পারছি কাজটা ঠিক করিনাই। ভবিষ্যতে আরও সাবধান হতে হবে। ধন্যবাদ এই লেখাটার জন্য। আপনি লেখাটা না লিখলে হয়তো বুঝতেই পারতাম না যে নিজের অজান্তেই পাকিস্তানের গান গাচ্ছি। মন খারাপ

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

৮-নং পয়েন্টের দ্বিতীয় আর তৃতীয় অনুচ্ছেদের ব্যাপারে বলি।

পরিসংখ্যান বলে বাংলাদেশ এখন সবচেয়ে বেশি আমদানী করে গণচীন থেকে। ভারত থেকে আমদানী ১১%-এর মতো। কিন্তু সেটা হচ্ছে অনুমোদিত আমদানী - ব্যাংকে ঋণপত্র খুলে, কাস্টমসের শুল্ক-কর দিয়ে আমদানী। এখানে চোরাচালানে কী পরিমাণ পণ্য আসছে সেটার হিসেব নেই। বাংলাদেশে দুটো দেশ থেকে চোরাচালানে পণ্য আসে - ভারত আর মায়ানমার। বোধগম্য কারণেই মায়ানমার থেকে আসা পণ্যের পরিমাণ ভারত থেকে আসা পণ্যের তুলনায় অনেক কম। ধারণা করা হয় ভারত থেকে চোরাচালানে আসা পণ্যের পরিমাণ অনুমোদিত আমদানীর কয়েকগুণ। এই চোরাচালানের কতগুলো সরাসরি ইমপ্যাক্ট আছে -

১. চোরাচালানের ফলে বাংলাদেশ সরকারের সরাসরি রাজস্ব ক্ষতি হয় কয়েক হাজার কোটি টাকার সমান।
২. সমমানের অন্য দেশের পণ্যের মূল্য কম হলেও তাদের বেলায় কাস্টমসের শুল্ক-কর এবং ব্যাংকের চার্জ পরিশোধ করতে হয় বলে তার কস্টিং বেড়ে যায়। ফলে অন্য দেশের পণ্য চোরাচালানে আসা ভারতীয় পণ্যের সাথে অসম প্রতিযোগিতায় পড়ে। দেশের মানুষ ঠিক দামে ঠিক জিনিসটা পায় না।
৩. দেশে উৎপাদিত যে পণ্যের কস্টিং অনুমোদিত উপায়ে আমদানীকৃত ভারতীয় পণ্যের সমান বা কিছু কম সেগুলোর চেয়ে চোরাচালানে আসা ভারতীয় পণ্যের কস্টিং কম বলে এক্ষেত্রে দেশীয় পণ্য বাজারে মার খায় এবং দেশীয় শিল্পের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ে।
৪. অবৈধ পণ্য যেমন, মাদক, অস্ত্র ইত্যাদি চোরাচালানকৃত অন্য পণ্যের সাথে বা সরাসরি বাংলাদেশে চলে এসে সরাসরি বাংলাদেশের ক্ষতি করে।
৫. চোরাচালানকৃত পণ্য ফেরত দেবার উপায় থাকে না বলে ভারতে ক্ষতিকর বলে ঘোষিত বা মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য চোরাচালানে বাংলাদেশে চলে আসতে পারে যা সরাসরি বাংলাদেশের ক্ষতি করে।

সীমান্তে চোরাচালানের এই অবাধ ব্যবস্থার জন্য উভয় দেশের দায় আছে। এই দায়টা সমান নয় এবং এর উদ্দেশ্যও এক নয়। শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসাবে ভারতের দায়িত্ব ছিল ভারতের ভূমি থেকে এই চোরাচালান কঠোর ভাবে দমন করা। কারণ, চোরাচালানে ভারতেরও রাজস্ব ক্ষতি হয়। তাছাড়া চোরাচালানে ভারত থেকে বাংলাদেশে পাঠানো পণ্যের মূল্য স্বাভাবিক উপায়ে পরিশোধের সুযোগ নেই বলে সেটা মাদক বা অস্ত্রের বিনিময়ে পরিশোধিত হবার সম্ভাবনা থাকে যেটা ভারতের জন্য ক্ষতিকর। সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করে অনুপ্রবেশ ঠেকানোর রাজনৈতিক পদক্ষেপের চেয়ে ভারতের জন্য চোরাচালান ঠেকানোটা জরুরী। বাংলাদেশ থেকে চোরাচালানে যে সব পণ্য ভারতে যায় তার একটা বড় অংশ হচ্ছে আমদানী করা পণ্য। বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে আমদানী করা পণ্য ভারতে চোরাচালান হলে বাংলাদেশের ক্ষতিটা ব্যাখ্যার দরকার পড়ে না, কিন্তু এক্ষেত্রেও ভারতের ক্ষতি আছে। কারণ, ঐ পণ্যটির অনুরূপ পণ্য যা ভারতে উৎপাদিত হয় তার কস্টিং বেশি বলে এই চোরাচালান ভারতের শিল্পের জন্য ক্ষতিকর। আপাতদৃষ্টিতে চোরাচালানের মাধ্যমে বাংলাদেশে ভারতীয় পণ্যের বাজার সম্প্রসারণটা সত্য হলেও ভারতের পক্ষ থেকে এক্ষেত্রে তাদের অপরচুনিটি কস্ট আর সার্বিক ঝুঁকি কতোটা হিসেব করা হয় সেটা নিয়ে সন্দেহ আছে।

বাংলাদেশের কোন সরকারই সীমান্তে চোরাচালান রোধে বড় ধরনের কোন পদক্ষেপ নেয়নি, এক্ষেত্রে এক ধরনের উদাসীনতা কাজ করে। এর ফলে চোরাচালানের এই বিশাল বাণিজ্য গড়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে। বিজিবি ও কোস্টগার্ডকে শক্তিশালী করে গড়ে না তুললে এটা ঠেকানো সম্ভব নয়। এই বিষয়গুলোতে ভারতপ্রেমী বলে পরিচিত ও ভারতবিরোধী বলে পরিচিত উভয় গ্রুপের অবস্থান একই প্রকারের। এই ব্যাপারটা বন্ধের জন্য আমাদের দিক থেকে সামাজিক সচেতনতার দরকার আছে। নানা বিষয়ে নাগরিক আন্দোলনের সাথে এই বিষয়টিকে যুক্ত করার প্রয়োজন আছে।

ভারতের সাথে বাণিজ্যের ব্যাপারে বাংলাদেশের ভূমিকা মূলত ক্রেতার। দরাদরির ক্ষেত্রে ক্রেতার অবস্থান সুবিধাজনক হবার কথা হলেও এই ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভূমিকা নতজানু। আর এই সুযোগটা ভারত নেয়। একই অবস্থা চোরাচালানের ক্ষেত্রেও। আজকে বাংলাদেশ সরকার চোরাচালানে ভারতীয় পণ্য অনুপ্রবেশ শতকরা পঞ্চাশ ভাগও যদি কমাতে পারে তাহলে অনুমোদিত বাণিজ্যেও এর স্পষ্ট প্রভাব চোখে পড়বে।

আমদানী-রফতানীর ফারাক কমানোর মতো জরুরী ব্যাপারে কর্তাদের মনোভাব কেমন সেটা বোঝার জন্য একটা গল্প বলি।

সরকারী চাকুরীর জন্য মৌখিক পরীক্ষা দিতে এক প্রার্থী ভাইভা বোর্ডের মুখোমুখি হয়েছেন। ভাইভা বোর্ডে উচ্চ পদস্থ সরকারী কর্মকর্তারা আছেন। প্রশ্ন করা হল, “আপনাকে যদি কোন একটা দেশে এই দেশের অ্যাম্বাসাডর বানিয়ে পাঠানো হয় তাহলে আপনি কী কী বিশেষ পদক্ষেপ নেবেন”। উত্তরে পরীক্ষার্থী ঐ দেশে তার নিজের দেশের মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ খোঁজা, বাণিজ্য ঘাটতি থাকলে তা কমানো, আর তা না থাকলে রফতানী বাড়ানোর কথা বললেন। বোর্ডের এক কর্তা জানালেন, তার এই উত্তর ঠিক হয়নি। তার মতে অ্যাম্বাসাডর হিসেবে তার প্রথম ও প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে, আগের সরকার বিদেশে দেশের ভাবমূর্তির যে ক্ষতি করেছে সেটা পুনরুদ্ধার করার জন্য বর্তমান সরকার কী কী উন্নয়নের পরিকল্পনা করেছে সেটা ঐ দেশের সরকার ও মানুষকে বোঝানো।

এটা প্রশাসনের সার্বিক চিত্র না, তবু এটাও বাস্তবতা।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

সীমান্তের রাজনৈতিক অর্থ এবং অর্থনৈতিক অর্থ আলাদা আবার সংযুক্ত। আপনার মন্তব্যে সংযুক্তির বিষয়টার ইশারা পাওয়া যায়।

রাষ্ট্রের রাজনৈতিক আর অর্থনৈতিক কার্যাবলীর সংযুক্তিটা সীমান্তের রাজনৈতিক আর অর্থনৈতিক অর্থের সমন্বয় থাকার বিষয়টার চেয়ে পরিস্কার। রাষ্ট্রের যেকোন 'দূতের' দায়িত্ব এই সংযুক্তির উপরেই দাঁড়ায়া থাকে। আবার 'ভাবমূর্তি'কে বিনিয়োগের সাথে যুক্ত করে দেখার রেওয়াজ আছে। সুতরাং কখনো কখনো হয়ত, ভাবমূর্তি পরিচ্ছন্নকরণ দূতিয়ালির অংশ হইতেই পারে। তবে বাংলাদেশে এইসব পেশাদারিত্বের অভাবটা প্রকট, আপনি সঠিকভাবে চিহ্নিত করছেন।

আরেকটা প্রসঙ্গ, আমরা মনে হয় 'ঘুষ' (অর্থাৎ প্রশাসনিক ভীতিপ্রদর্শনপূর্বক অর্থ আদায়) এর একটা সরকার-অনুমোদিত রাজনীতি আছে। কেবলই রাজস্বের চিন্তা সরকারগুলি সবসময় হয়ত করে না।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

সাজ্জাদ সাজিদ এর ছবি

চমৎকার বিশ্লেষণ। চলুকচলুক

মাহবুব ময়ূখ রিশাদ এর ছবি

চলুক

------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !

সুলতান এর ছবি

আপনার লেখাটা চিন্তার অনেকগুলো দিক খুলে দিলো যা আগে কখনো মাথায় আসে নাই। ধন্যবাদ লেখটার জন্য।

সাফি এর ছবি

চলুক

লেখাটা জরুরী ছিলো। ফেসবুকে ইদানিং বিভিন্ন গ্রুপে দেখি অনেক বিচ্ছিন্ন ঘটনার ছবি বিএসেএফের কুকীর্তির ছবি বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আখেরে সেই কর্মকান্ড এই প্রতিবাদের উদ্দেশ্যকেই বাধাগ্রস্থ করে।

ক্লান্ত পথিক এর ছবি

দীর্ঘলেখা পরতে কষ্ট হইছে।
পুরা লেখাজুরে পাকিস্তান রাষ্ট বিদ্বেষ চরমভাবে পরিলক্ষিত। হওয়াটাই স্বাভাবিক এবং উচিতও।
রাজাকার নিপাত যাক। নব্য কী আদি বিচার চাই।
ভারতকে সুযোগ করে দেয়ার জন্য আমদের রাজনীতিবিদরা দায়ী- সহমত। নিজেদের সমালোচনা নিঃসন্দেহে উত্তম মানসিকতার পরিচয় বহন করে।
বিকল্প পণ্য বিষয়ে কেবল একটাই কথা- চাহিদা থাকলে সরবরাহ থাকবেই তা বৈধ পথেই হোক আর অবৈধ পথেই হোকনা কেন। চাহিদা তৈরি করার দায়িত্ব আমাদের সবার। টেলিটক কেন এত সুযোগ পাওয়ার পরও কাস্টমার তৈরি করতে ব্যর্থ? এয়ারটেল, গ্রামীন কিংবা বাংলালিংক কে সুযোগ করে দেয়ার জন্য আমরাই কি দায়ী না?
কিন্তু ভারত নিয়ে শুধু কয়েকটা বাক্যব্যায় তাদের আগ্রাসনকে আড়াল করার প্রয়াস বলেই মনে হয়।
তারপরও ধন্যবাদ।

হিমু এর ছবি

ঠিক কয়টা বাক্য ব্যয় করলে ভারতের আগ্রাসন উন্মোচিত হবে? একটা সংখ্যা দাগিয়ে দেন।

ক্লান্ত পথিক এর ছবি

যেই কয়টা ব্যবহার করলে ভারতের খারাপ রূপটাও উন্মোচিতো হতো সেই কয়টা...

হিমু এর ছবি

ভারতের খারাপ রূপ উন্মোচন করে একটা কমেন্ট দেন দেখি।

guesr_writer rajkonya এর ছবি

জট্টিল লেখা। ধন্যবাদ।

আশফিক অনিক এর ছবি

হাবিবুরদের প্রতি সংহতি জানাতে গিয়ে, এটাও যেন খেয়াল রাখি, যে তিরিশ লাখ মানুষ নিজেদের অস্তিত্বের বিনিময়ে আমাদের ভারতবর্ষের সম্ভবত একমাত্র স্বাভাবিক রাষ্ট্র উপহার দিয়ে গেছে – তারা যেন অপমানিত না হয়। সুতরাং জরুরি হচ্ছে, সতর্ক থাকা, পাকিস্তানবাদ, পাকিস্তানবাদী রাজাকার ও ছদ্মরাজাকারদের যেন শক্তি না যোগায় এই বয়কট।

একেবারে মনের কথা!

হ্যাঁ, শেষ বিচারে, মুক্তবাজারের এই বিশ্বে, ভারতীয় পণ্য না কেনার বিষয়টা তো 'নিছক' ভোক্তার প্রতিবাদই থেকে যায়। হ্যাঁ, অবশ্যই আমাদের এরচেয়ে অনেক বেশি কিছু করার দরকার আছে। শুধু ভারত কেন, চীন বা অন্য দেশের সাথেও আমাদের আমদানি রপ্তানির ফারাক কমাতে হবে। আর হ্যাঁ, এটাও ঠিক, দেশীয় শিল্পকে গড়ে তোলার প্রয়োজন হয়ত এখন সব থেকে বেশি। প্রয়োজন 'স্বদেশী' পণ্যের মান ও পরিমাণ দুইয়েরই বৃদ্ধি। সম্পদের বৃদ্ধি, সুষম বণ্টন … আরো অনেক অনেক কিছুই করার আছে।

কিন্তু ভাইবোনেরা, এই মুহূর্তে আমরা স্রেফ জান হাতে নিয়ে বাজার করতে অনিচ্ছুক তো হতেই পারি। সুতরাং এখনকার জন্য স্রেফ এটাই করে দেখাই না।

রাজাকার ও নব্যরাজাকারদের কোলে না তুলেও এই কাজ খুব একটা কঠিন হবে না।

সহমত না হয়ে উপায় কি?

খুব ভালো লাগলো লেখাটা। একেবারে সময়োপযোগী!

উচ্ছলা এর ছবি

তিনবার পড়েছি।
প্রতিবারই লেখকের চিন্তার বিষয়বস্তু এবং চিন্তা প্রকাশের শৈলী সমানভাবে ভাল লেগেছে।

হাপিত্যেশ এর ছবি

আমি পাকিস্তান বিদ্বেষী - কারন আমার দেশের জন্ম ইতিহাস, আমার দেশের রক্তমূল্য আমি জানি।

আমি যখন ভারতের আচরন দেখি, আমার বুকের মধ্যে অক্ষম ক্রোধ জ্বালা ধরায়। আমি অত সভ্য নই বলেই, তীব্র ঘৃণায় আমি ভারতবিদ্বেষী হয়ে উঠি।

এই লেখা পড়ে জানলাম ভারতবিরোধী হলেও বিদ্বেষী হওয়া যাবে না। সীমান্তে হত্যা, নগ্ন করে নির্যাতন, ফারাক্কা, টিপাইমুখ - ভারত ঠিক আর কতটা নীচে নামলে ভারত বিদ্বেষী হওয়া শোভন হবে?

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

অবশ্যই। যে কারও বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ধারণ করার 'অধিকার' আপনার থাকতে পারে।

আমার বক্তব্য সামান্য। ভারতীয় পণ্য বর্জনের সূত্র বাংলাদেশে বহুকাল ধরে চলে আসা গণতন্ত্র হত্যাকারী সামরিক স্বৈরাচারদের নিজেদের সুবিধা আদায়ে বানানো ভারতবিদ্বেষের সঙ্গে যুক্ত না। এইটা ভারত-প্রতিরোধ।

আর পাকিস্তানের প্রতি বিদ্বেষ ধারণ করার চেয়েও জরুরি, পাকিস্তানের সংজ্ঞার সাথে যুক্ত যে ধর্মব্যবসায় এবং ঘৃণ্য সামরিক নিপীড়ন সেইটাকে চিহ্নিত করা।

আপনার ক্রোধকে ক্ষমতা প্রদান করেন। চিহ্নিত করেন ধর্মব্যবসায়, সামরিক নিপীড়ন এবং সাম্রাজ্যবাদকে।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

তৌফিক জোয়ার্দার এর ছবি

নিজের অনেকগুলো নামেলাতে পারা সমীকরণের জট খুলে গেল আপনার লেখায়- কৃতজ্ঞতা তার জন্য। সাধ্য থাকলে সবাইকে এটা পড়াতাম। আপাতত শেয়ার দিলাম।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

পাকিস্তানের সবকিছুই বর্জন করে ৩০ লাখ শহীদের আত্মাকে স্বস্তি দেয়া আমাদের যেমন নৈতিক দায়িত্ব, তেমনি ভারত বা চীন বা অন্য কোন দেশের যে কোন অপ্রয়োজনীয় বস্তু ক্রয় করা থেকে বিরত থাকা আমাদের অর্থনীতির মেরুদন্ডের জন্য খুবই দরকারী।

মনে রাখবেন, আমরা যে কোন বিদেশী পণ্য ক্রয় করি তিনটি আয় দিয়ে।

১. প্রবাসী বাংলাদেশীদের পাঠানো রক্ত ঘাম বিক্রি করে আসা ডলার
২. ৪০ লাখ দরিদ্র শ্রমিকের আয়ে অর্জিত গার্মেন্টস আর অন্যন্য রপ্তানী পন্য থেকে আসা ডলার
৩. বৈদেশিক সাহায্য/ঋন/দান/অনুদান/ভিক্ষা

আর আজকের বিশেষ করে ভারত বিরোধীতার মেসেজ হলো বাংলাদেশ ভারতের বিশাল অংকের পন্য দ্রব্যের ভোক্তা। ভোক্তার প্রতি বিক্রেতার যেরকম সম্মানজনক আচরণ থাকা উচিত, ভারত তা করছে না। বরং ভোক্তাকে ভারত চরম অপমান আর নাজেহাল করে যাচ্ছে। ভোক্তাদের পক্ষ থেকে ভারতের মোড়লিপনার একটি ছোট্ট চপোটাঘাত এই প্রতিবাদ। ভারতের সাথে আমাদের বানিজ্য বৈষম্য তিন বিলিয়ন ডলারের বেশী। এই ব্যবধানটা কমিয়ে আনা জরুরী। সরকার এই ব্যবধান কমিয়ে আনতে কি করবে তা আমরা জানি না। কিন্তু আমরা আমাদের অবস্থান থেকে সচেতন থাকি সেটাই জরুরী।

তবে পাকিস্তান বিরোধীতার সাথে ভারত বিরোধীতার পার্থক্যটা বোঝা কেন দরকার সেই উত্তরের জন্য যেতে হবে ১৯৭১ সালে। আর যারা ১৯৭১ সালের কোন বিশেষত্ব খুজে পান না, কিংবা ১৯৭১ আর ২০১২ মাত্র দুটি সাল মনে করেন, তাদের এই পোষ্ট পড়া নিরেট সময় নষ্ট।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

গত কয়েক বছরে এইড ডিপেন্ডেন্সি কিছু কমছে মনে হয়। প্রবাসী শ্রমিক এবং গার্মেন্টস সহ অন্যান্য রপ্তানিপণ্যের শ্রমিকশোষণ জারি আছে। বিলাসী ভোগ্যপণ্যে ঠিক কত শতাংশ বিদেশী মুদ্রা খরচ হয় এইটা জানতে পারলে ভাল হইত। কেন্দ্রীয় ব্যাংক কিছুদিন পরপরই বিলাসী/অনুৎপাদনশীল খাতে আমদানী কমানোর চেষ্টা করে। সফল হয় না।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

এর চেয়ে ভালো হতে পারত না গুরু গুরু

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

guest_writer এর ছবি

সময়ুপযগী লেখা...... ভাল লাগল...।। নীল শাপলা

দ্রোহী এর ছবি

কী যে চমৎকার গোছানো একটা লেখা!

চিলতে রোদ এর ছবি

অনার্য দা'র সাথে সুর মিলিয়ে বলতে চাই...

এর চেয়ে ভালো হতে পারত না

গুরু গুরু

খুব দরকার ছিল এই লেখাটির...

Mahdi hassan এর ছবি

Good analysis! But missing the current and future existential threat of BD and that is from India. Just check history how many times we tried to get rid off Delhi’s ruling. I strongly agree that Pakistan was an abnormal state but it also true we needed some time to get full freedom. There was a great chance India would invade just after 47 if BD was alone then most probably we would go through a long struggle for freedom, example like Hydrabad, Sikim , Panjab and definitely Kashmir still in front of us . One single point missed in most of our analysis related to 71 war that for the first time in several centuries BD got a substantial population who were trained for fighting (our Mukti Bahini), they not only defeat the Paki forces but also work as a leverage if India had different intention. I just notice it when I saw US forces finally moved out from Iraq, there was always a threat of insurgency so the coast of war increase a lot which is unsustainable even for a economy like US. So if Indian army stayed for a longer time then they had to face the similar kind of insurgency, as there were some sign of it as we know several reports related to major jalil's struggle against Indian army. In 71 we win two war one against Pakistan and 2nd one was untold that was end of India’s military adventure in BD. As you mentioned that we are the only normal nation in this part of the world that also a great headache for both Paki and Indi, as our success may inspire other nations under their wing. I think we always have existential threats for several thousand years which may related to something prehistoric Aryan (later Semitic(Arabs)) invasion in Dravidian India; in some way it still exists. I think except Srilanka we are the only independent Dravidian(with some mixed up!!) nation on earth.

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

"ভারতীয় মিলিটারি অ্যাডভেঞ্চারের" কোনো সম্ভাবনা থেকে থাকলে বঙ্গবন্ধু সরকার অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে এই বিষয়টার নিষ্পত্তি করে গেছেন। সার্বভৌমত্ব "রক্ষা" করার যে "সামরিক" মডেল পাওয়া যায়, সেটা থেকে দূরে সরে আসার সময় হইছে বলে মনে করি, "সভ্য" পৃথিবীর। "সার্বভৌমত্বের" ধারণাও বদলায় গেছে গ্লোবালাইজড পুঁজির জামানায়। সুতরাং বদলাইছে প্রতিরোধের সূত্রও।

নৃতাত্ত্বিক বিষয়াদি নিয়া আপনি বাংলায় একটা লেখা দিতে পারেন। বাংলাদেশের নৃতাত্ত্বিক "ঐক্যে" মঙ্গলয়েড অংশও আছে।

পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

arif এর ছবি

একথা ঠিক যে রাজাকার রা ভারত বিদ্বেশে আসল রাজাকারডের লুকাতে গিয়ে নব্য রাজাকার নাম নিতে পারে। কিনতু যারা বেশরমের মত ভারতের দালালি করে, তাদের আপনি কি নামে ডাকবেন? স্বধিকার এর জন‌্যেই ত আমরা যুদ্ধ করেছি। সেই একই চেতনা দিয়ে দেখলে ভারতের চেহারা খুব এক্টা ভাল বলে ত কিছু দেখায় না। আমার মতে যেখানেই বাংলাদেশের স্বার্থ লুন্ঠিত হচ্চে, সেখানেই বিদ্বেষী হব, তা পাকিস্তান হোক আর ভারত। আর রাজাকারেরা ভারত বিদ্বেষে আমাদের সাথে যোগ দিলেই তাদের অপকররম মাফ হয়ে যাবে না।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

যেকোনো সাম্রাজ্যবাদী বর্ণবাদী শ্রেণীবাদী শক্তির বিরুদ্ধেই বিদ্বেষ ধারণ করার অধিকার আপনার আছে। আমি কেবল বলতে চাইছি, বিদ্বেষ আর প্রতিরোধের রাস্তা সর্বদা এক না। এবং পাকিস্তান আর ভারতবিদ্বেষের কনটেক্সট আলাদা। রাজাকার লেজে চিনা যায়। আমি অন্যান্য বিষয়ের সাথে "লেজ" নিয়াও সামান্য লেখলাম আর কি ...
ধন্যবাদ।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

মশিউর রহমান এর ছবি

ভারত আমাদের স্বাধীনতার সময় অনেক সাহায্য করেছে, লাখে লাখে রেফুজিদের সেখানে রেখেছে, আমাদের প্রবাশী সরকারের সব কাজে কোনো স্বারথ ছাড়াই সাহায্য করেছে, এটা কেউ মিথ্যা বলবে না, আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের তারাই প্রথমে অস্ত্র না দিলে হয়তো আমরা আজকে এই দেশ পেতামনা, এটা হয়তো ভারত স্বাষীত কাশ্মীর বা পাকিস্তান শ্বাষীত বেলুচিস্তান হোত, কিন্ত তাই বলে এভাবে আমাদের জনগনকে গুলি করাটা কোনো সভ্য নিয়মে পড়েনা, আপনি জানেন যে আমরা যখনি ভারতের সাথে কোন চুক্তি করি তারা নানা সংসদের নিয়ম কানুনের দোহাই দিয়ে তা আটকে রাখে, মুজিব ইন্দিরা চুক্তি একটি, এখন যে সিমানা নিয়ে গন্ডগোল আর ছিটমহলের যে নিদারুন অবস্থা তা এই চুক্তি বাস্তবায়নের না হওয়ার ফল, আর ফারাক্কা ব্যারাজ তো আমাদের প্রতি তাদের ভালোবাসার ভয়ঙ্কর উদাহরন, আর তিস্তা থেকে তিতাস, সব জায়গায় আমরা তাদের বেড়াজালে বন্দি, আমাদের পাকিস্তান পন্থী বা ভারত পন্থী না হয়ে অনেক যুক্তিবাদী হওয়া দরকার, আপনি জানেন অনেক প্রয়জনের সময় আমাদের পন্যের দরকার হলে ভারত তা আসতে দেয়না যদিও এল সি আগেই খোলা হয়ে থাকে, এটা বিশ্ব বানিজ্য আইনের বরখেলাফ, আর তাদের বন্য সীমান্ত বাহিণীর আচরন একটু বেশী বাড়াবাড়ি হলেও কথা ছিলো, এইভাবে আমাদের অপমান আর গুলি করার নজির অন্য সীমান্তে পাবেননা, আমাদের প্রতিবাদ করতে হবে, আপনার মত অতি যুক্তি বাদী হয়ে বসে থাকলে আমরা খুব বেশী আগাতে পারবে না, শেখ হাসিনা তার শাষন আমল শেষ করে ফেলছে প্রায়, কিন্ত বাজে ধরনের আইনজ়িবীদের দিয়ে যে মামলা করছে রাজাকারদের তাতে আমার ভয় হচ্ছে যে হয়তো মামলা শেষ করতে পারবেনা আর হলেও আপীল আদালতে গিয়ে অই পশুরা ছাড়া পেয়ে যাবে, তাই পাকিস্তান আর ৭১ সালের ভয়াবহ অত্যাচারের বিরোধী হতে গিয়ে আপনি দয়া করে ভারত পন্থী হবেন না দয়া করে, আপনার মত যুক্তিবাদীদের আরো বাংলাদেশ পন্থী হতে হবে।আমাদের দেশের বেশীরভাগ অবুঝ লোকদের মত আপনিও আওয়ামী বা বি এন পি শিবিরে ভাগ না হয়ে আমাদের ঘুমন্ত জাতির ঘুম ভাঙ্গান আর এই ভারতীয় অপমানের অন্য কোন কারযকর পনথা বের করুন যাতে ভারত বুঝতে পারে যে আমরা একেবারে ফেলনা না, জাতি হিসাবে আমরা সম্নান পাওয়ার যোগ্য,

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

যুক্তিহীনতা কোনো কাজে আসে না। আমার পোস্টের প্রধান বক্তব্য এইটাই।

"আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের তারাই প্রথমে অস্ত্র না দিলে হয়তো আমরা আজকে এই দেশ পেতামনা।"
---- আপনার এই কথাটা চরম যুক্তিহীন একটা কথা।

অন্য প্রসঙ্গে,

ইন্দিরা মুজিব চুক্তি প্রধানত স্থল সীমান্ত বিষয়ক চুক্তি। এই চু্ক্তির বাস্তবায়ন বেশির ভাগ সীমানাসংক্রান্ত সমস্যার সমাধান দিতে পারত। ৭৫ এ মুজিব হত্যার পর আর দুই অবৈধ সেনাশাসক জিয়া এবং এরশাদ (উভয়ই ভারতবিরোধি রাজনীতি করে আসছে) এই চুক্তি বাস্তবায়নে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখাইতে পারে না। গতবছরই কেবল তিন বিঘা করিডোর ২৪ ঘণ্টা খুলে দেয়া হইছে।

যাই হোক, আপনার কেন মনে হইল আমি যথেষ্ট বাংলাদেশপন্থী না? দেশের বেশীরভাগ লোককে আমি অবুঝ মনে করি না আপনার মতো। তাদের রাজনীতি করার, রাজনীতিক দল সমর্থনের অধিকার আছে। রাজনীতির মাধ্যমেই দেশের সমস্যার সবচেলে ভাল সমাধান সম্ভব। এবং রাজনীতির মাধ্যমেই সেইটা হবে। ধন্যবাদ।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।