পাকিস্তান: তুমি কার?

আনু-আল হক এর ছবি
লিখেছেন আনু-আল হক [অতিথি] (তারিখ: রবি, ৩০/১১/২০১৪ - ৫:৫৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এটা তো মনে হয় সত্য যে, ভৌগোলিক নৈকট্য ছাড়া পাকিস্তান কীভাবে দক্ষিণ-পুর্ব এশিয়ার তথা একককালের ভারতীয় উপমহাদেশের অন্তর্ভুক্ত, এটা ভেবে বুদ্ধিমান মানুষ মাত্রই দোটানায় পড়ে যান। ব্যতিক্রম নিশ্চয়ই আছে; যেমন আমি বুদ্ধিমান না-হয়েও দোটানায় পড়ে যাই। ব্যতিক্রম আরো আছে; তবে সেই ব্যতিক্রম গোষ্ঠী তো আরবদেরকেও নিজেদের খুব কাছের বলে মনে করে। এই শেষ পদের প্রাণীদের নিয়ে আলোচনায় যাওয়া গুরুর নিষেধ।

আমি ইতিহাসবিদ নই, নৃবিজ্ঞানী বা সমাজবিজ্ঞানীও নই (অবশ্য, ধইরা নেয়ার কারণ নাই যে, আমি এই কয়টি বিষয় ছাড়া বাকি সবই জানি)। ফলে, এককালের হরপ্পা-মোহেঞ্জোদারো সভ্যতা কীভাবে কালের বিবর্তনে পুরোদস্তুর অ-সভ্যতায় পর্যবসিত হলো সেটা নিয়ে বটিকা দেয়ার আমি কেউ না। তবে, ধর্মের আছর আছে বইলা সন্দ করা নেহাতই ভিত্তিহীন নয় বোধয়।

পাকিস্তানের সংস্কৃতি কেন ঠিক দক্ষিন-পুর্ব এশিয়ার সঙ্গে যায় না, এই প্রশ্ন করাটা ঐতিহাসিক বা নৃতাত্ত্বিকভাবে সঠিক কি-না আমি নিশ্চিত নই। কারণ, পাকিস্তান ঐতিহাসিক এবং নৃতাত্ত্বিকভাবে মধ্য-এশিয়া বা পশ্চিম এশিয়ার মুসলিমদের সঙ্গে অনেক বেশি নিকট বলে জানাচ্ছেন গবেষকরা। ফলে, জোর করে দক্ষিণ-পুর্ব এশিয়ায় সেঁটে দিলেও, ল্যাঞ্জা ইজ আ ভেরি টাফ থিং টু হাইড। (রাগ করার কিছু নাই; ল্যাঞ্জা থাকলে বাইর হবেই। লুকাইতে যাওয়ার দরকার কী!) তো, তারা তাদের 'কেবলা' ঠিক করে নিসে। সাংস্কৃতিকভাবে তারা ক্রমশই মধ্য-এশিয়া এবং পশ্চিম এশিয়ার সংস্কৃতির কাছাকাছি হচ্ছে।

আর সে-কারণেই, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিভাগীয় সদর দপ্তরগুলোয় পাকিস্তানকে সাউথ এশিয়ার অন্তর্গত না দেখে বরং ইস্টার্ন মেডিটেরানিয়ান অঞ্চলের অন্তর্গত দেখে আমি ঠিক অবাক হইনি। কারণ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় সংস্কৃতি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ বিষয়। যারা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিভাগীয় অঞ্চলের মানচিত্র তৈরি করেছিলেন, তারা অবশ্যই সেটি বিবেচনা করেছেন। পাকিস্তান ছাড়া, তাদের ইস্টার্ন মেডিটেরানিয়ান অঞ্চলের তালিকাভুক্ত দেশসমূহের কয়েকটি হচ্ছে-- আফগানিস্তান, ইরান, ইরাক, মিশর, লিবিয়া, লেবানন, সৌদি আরব, সুদান, সোমালিয়া...

পাকিস্তানীদের সঙ্গে যারা খুব নৈকট্য অনুভব করেন, তাদের এই লং-ডিসট্যান্স প্রেম দেখে আমি মাননীয় স্পিকার হইয়া যাই। আমার আবার লং-ডিসট্যান্সে ঠিক পোষায় না!


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক
ভারতবর্ষ তো আসলে ঠিক দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্তর্ভুক্ত না। তবে পাকিস্তান যে ঐতিহাসিক, নৃতাত্ত্বিক, এবং সাংস্কৃতিকভাবে দক্ষিণ এশিয়ার তুলনায় মধ্য এবং পশ্চিম এশিয়ার নিকটবর্তী, সে প্রসঙ্গে একমত।

http://en.wikipedia.org/wiki/Southeast_Asia

Emran

আনু-আল হক এর ছবি

ঠিক। আমি দক্ষিণ এশিয়া লেখতে চাইছিলাম; কিন্তু দক্ষিণ-পুর্বই লেখলাম কারণ এইটা বেশি পরিচিত। তাছাড়া, এই জায়গার অনেক হ্যাপা: আসিয়ান, মেরিটাইম কাবজাব। যাই হোক, তথ্যগত ভুল ধরিয়ে দেয়ার জন্য আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- দেঁতো হাসি

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

হিমু এর ছবি

বাংলাদেশের উচিত অবিলম্বে ভারত, মিয়ানমার, নেপাল ও ভূটানকে নিয়ে একটি কার্যকর অর্থনৈতিক জোট বা সংগঠন তৈরি করে নিজেদের অর্থনৈতিক বিষয়গুলোর আঞ্চলিক সমাধান খোঁজা। সার্কে পাকিস্তানের ভেটোর কারণে আঞ্চলিক যোগাযোগের চুক্তি হয়নি। কারণ হিসাবে বলা হয়েছে তারা প্রস্তুত না। তারা নিজেদের পাছায় দুইদিন পর পর এই কাঠি সেই কাঠি গুঁজে রেখে সারাজীবন অপ্রস্তুত হয়ে থাকবে, আর সেটার মাশুল এই অঞ্চলের বাকিরা দেবে, তা তো হতে পারে না।

অতিথি লেখক এর ছবি

বাংলাদেশেই তো ভারতবিরোধিতা ব্যাপক; এই দুই দেশের মধ্যে মতানৈক্যের কারণে ট্রান্স-এশিয়ান হাইওয়ের পরিকল্পনা কেতাবেই থেকে গেলো (যদিও এটা একমাত্র কারণ না)। সার্কের মধ্যে ভারত-পাকিস্তান থাকার পরেও তা অকার্যকর, কারণ এই দুই দেশের কেউই সার্ককে গুরুত্ব দেয়নি। সমস্যার বহুপাক্ষিক আঞ্চলিক সমাধানের বদলে এই দুই দেশই দ্বিপাক্ষিক সমাধানের ব্যাপারে বেশী আগ্রহী। আর এধরণের আঞ্চলিক জোট কার্যকর হয় যখন অংশীদার দেশগুলি অর্থনৈতিক দিক থেকে মোটের ওপর সমপর্যায়ে থাকে (আসিয়ানের কথা বলা যায়)। কিন্তু সার্কের সমস্ত সদস্যের অর্থনীতি একত্র করলেও তা ভারতের অর্থনীতির চেয়ে ছোট হবে। আর ক্ষুদ্র প্রতিবেশির প্রতি ঐতিহাসিকভাবে ভারতের আচরণ প্রভুত্বসুলভ। সুতরাং আরেকটা জোট করলেও সেটার কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ থেকেই যায়।

Emran

আনু-আল হক এর ছবি

ছোট\বড় অর্থনীতি বলতে কি আপনি অ্যাবসল্যুট আকারের কথা বলছেন? সেক্ষেত্রে ভারত তো অনেক অনেক বড়ই, এবং একই কারণে তাদের আচরণ প্রভুত্বসুলভ (সেটা সর্বত্রই, এবং প্রায় অবশ্যম্ভাবী)। আমার তো মনে হয়, এরকম জোটের ক্ষেত্রে অ্যাবসল্যুট সাইজের চেয়ে জরুরি হচ্ছে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, ফরেন রিজার্ভ, জিডিপি ই্ত্যাদি। এমনকি জিডিপিতে ব্যাপক ফাঁরাক থাকার পরও একই ইউনিয়েনে থাকতে পারে (যেমন: ইয়োরোপিয়ান ইউনিয়নে ৮০, ৪০০ ইয়োরো জিডিপির ইনার লন্ডন থেকে শুরু করে ৮,৪০০ ইউরো জিডিপি’র রোমানিয়া আছে)। আর জোটভুক্ত দেশের একটির প্রভুত্বসুলভ আচরণের কারণে জোট অকার্যকরী হলে ইইউ সবার আগে ধ্বংস হতো জার্মানী আর যুক্তরাজ্যের মাতবরীর কারণে। অতএব, ভারতের সম্ভাব্য দাদাগিরি’র কারণে জোটে না-যাওয়াও ভারতবিরোধিতারই একটি অংশ বললে কি খুব ভুল বলা হবে?

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

অতিথি লেখক এর ছবি

ইইউতে যুক্তরাজ্য যোগ দিয়েছে ১৯৮০র দশকে। ঐতিহাসিক কারণে যুক্তরাজ্য সবসময়েই ঐক্যবদ্ধ ইউরোপের প্রতি সন্দিহান। আর ইইউ মনে হয় ভাল উদাহরণ না, কারণ এই জোট টিকে আছে মূলত দুটো কারনেঃ (১) সদস্য দেশগুলির মধ্যে অবাধ যাতায়াতের সুযোগ, এবং (২) দুর্বল অর্থনীতির দেশগুলির প্রতি জার্মান সরকারের ভর্তুকি (যেটা জার্মানি নিজের স্বার্থেই করে)। বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান - এই দেশগুলি অলরেডি ভারতের বাজার; নতুন জোট করলেও সেই পরিস্থিতির পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু? আর হিমু ভাই যে জোটের কথা বলেছেন, বিমসটেকের (http://en.wikipedia.org/wiki/Bay_of_Bengal_Initiative_for_Multi-Sectoral_Technical_and_Economic_Cooperation) আওতায় সেই জোট কিন্তু অলরেডি বর্তমান। এই বিমসটেক থেকে বাংলাদেশ/নেপাল/ ভুটান/শ্রীলঙ্কা/মিয়ানমার কতটুকু উপকৃত হয়েছে? আমি এধরণের জোটের বিরোধী নই; বিশেষতঃ জোট করলে যদি সদস্য দেশগুলির মধ্যে অবাধ যাতায়াতের সুযোগ পাওয়া যায়, সেটা অবশ্যই ইতিবাচক পদক্ষেপ।

Emran

অতিথি লেখক এর ছবি

আগের মন্তব্যে ভুল বলেছিলাম; ১৯৮০র দশকে নয়, যুক্তরাজ্য ইইউতে যোগ দেয় ১৯৭৩ সালে।

Emran

আনু-আল হক এর ছবি

(১) ওকে, এমরান ভাই, ইইউ ভালো না হলে অন্য কোনো ভালো উদাহরণ (সম্ভবত, আসিয়ান, যা আপনি আগের মন্তব্যে উল্লেখ করেছেন) দিয়ে আরেকটু বিশদ বলুন প্লিজ, কী কী কারণে সেটা ইইউ থেকে আলাদা, বা সফল বা আমাদের আলোচ্য জোটের সঙ্গে কোন কোন দিক থেকে আলাদা ইত্যাদি। আমি এই বিষয়ে একদমই জানি না; ফলে আপনার আলোচনা থেকে জানতে পারবো।

(২) ইইউ টিকে থাকার যে-দুটো কারণ আপনি বলেছেন, সেগুলোর কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র দেবেন প্লিজ?

(৩) বিসমটেকের বিষয়ে আমি জানি না। এর ফলে, বাংলাদেশ/নেপাল/ভুটান/শ্রীলঙ্কা/মিয়ানমার কতটুকু উপকৃত হয়েছে (বা হয়নি), সে-বিষয়েও আপনি কিছুটা বললে ভালো হয়। যেমন, কতোটা সম্ভাবনাময় ছিলো, বা হতে পারতো কিন্তু হয়নি। না-হলে সেটা কেন হয়নি ইত্যাদি। সেটা কি ভারতের বাজার সম্প্রসারণে কোনো ভূমিকা রেখেছিলো কি না, সেসবও আসতে পারে আলোচনায়।

(৪) সার্ক হাইওয়ে হলে সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে তো অবাধ যাতায়াতের সুযোগ বাড়বে বলে মনে হয়, যা আপনি সমর্থন করবেন। কিন্তু, সেটা কি ভারতের বাজারের উপর কোনো প্রভাব ফেলবে?

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

অতিথি লেখক এর ছবি

(১) ইইউ আঞ্চলিক ইন্টিগ্রেশনের প্রধানতম উদাহরণ, কিন্তু সেই মডেল আমাদের দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির জন্য কাজ করবে কিনা, সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত নই। কারন এ ধরণের ইন্টিগ্রেশন সফল হওয়ার পূর্ব শর্ত হল জাতীয় স্বার্থের বদলে আঞ্চলিক স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে হবে। ইইউ সদস্য দেশগুলি সেটা করতে পেরেছে (তাও পুরোপুরি হয়নি, কারণ নিজস্ব অর্থনৈতিক নীতি প্রণয়নের অধিকার সদস্য দেশগুলি সংরক্ষণ করে, যেটা ইউরোজোন সঙ্কটের জন্ম দিয়েছে)। দক্ষিণ এশিয়ার ক্ষেত্রে "জাতীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে আঞ্চলিক স্বার্থ" নীতি কাজ করার সম্ভাবনা কতটুকু? সার্কের উদাহরণ দেখলে তো মনে হয় সেই সম্ভাবনা সীমিত। এই লিঙ্কে গেলে (http://www.adb.org/publications/asean-economic-community-and-european-experience) আসিয়ান এবং ইইউর তুলনামূলক আলোচনা পাবেন।

(২) আপনি Eurozone crisis german bailout দিয়ে সার্চ করলে আরও লিঙ্ক পাবেন, আপাততঃ দুটো এখানে দিলাম।
http://www.investopedia.com/financial-edge/1112/will-germanys-bailout-save-europe.aspx

http://pinpointpolitics.co.uk/constructing-the-eurozone-crisis-a-tale-of-piigs-debt-and-austerity/

(৩) বিমসটেক থেকে বাংলাদেশ আদৌ উপকৃত হয়েছে কিনা, সে ব্যাপারে বিশদ কোন তথ্য পেলাম না। আপনি আমাকে যে প্রশ্ন করছেন, আমার আগের মন্তব্যে এই প্রশ্ন আমি নিজেই তুলেছিলাম।

(৪) অবাধ যাতায়াতের সুযোগ পেলে ভারতের বাজারের ওপর কোন প্রভাব পড়বে কিনা, সেটা নির্ভর করে (ক) রাস্তা উন্মুক্ত করার পাশাপাশি ভারত সরকার তাদের বাজার উন্মুক্ত করবে কিনা, এবং (খ) ভারতের বাজার উন্মুক্ত হলে এই নতুন সুযোগের সদ্ব্যবহার করার পরিকল্পনা এবং প্রস্তুতি ক্ষুদ্র প্রতিবেশী দেশগুলির (বাংলাদেশ/নেপাল/ভুটান/শ্রীলঙ্কা/মিয়ানমার) আছে কিনা - তার ওপর।

Emran

আনু-আল হক এর ছবি

একদম। পাকিস্তান যখন বলছিলো, তারা প্রস্তুত না, আমি তো বেশ খুশিই হইসিলাম। যাক, এইবার এদেরকে বাদ দেয়ার একটা মোক্ষম অজুহাত পাওয়া গেল। পাকিস্তান বোমা বানাবে, না হাইওয়ে বানানোর জন্য প্রস্তুত হবে! এদেরকে এই হাইওয়েতে রাখলে নিয়মিত হারে ওই হাইওয়েতে বোমা হামলা হবে।

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

এক লহমা এর ছবি

চলুক

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

ভালো পয়েন্ট।

পাকিদের যেটুকু এই অংশের (দক্ষিণ এশিয়া) সাথে কিছুটা মিশ খায় সেইটা হইল তাদের ভাষা (উর্দু আর হিন্দী কাছাকাছি), কিন্তু সেইটারেও তারা যতটুকু পারে মুসলমানি করাইছে। তাদের ভাষা শুনতে হিন্দীর মতো দেখতে আরবীর মতো। ইসলাম কি হিন্দু মুস্লিম ভাষার এই বিবাহ সাপোর্ট করে?

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

আনু-আল হক এর ছবি

দুঃখজনকভাবে এই দুই ভাষার কোনোটাই না-জানার কারণে একটু গুগলাইলাম। আসলেই তো, উর্দু দেখা যাচ্ছে খাৎনা করা হিন্দি। ইসলাম হিন্দু-মুসলমানের বিবাহ ছাপুট করে তো। ইসলাম শান্তির ধর্ম, ছাপুট করবে না কেন। তবে, সামান্য শর্ত-- হিন্দুকে কনভার্ট করে মুসলমান হতে হবে, নাইলে ডান হাতের অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকতে পারবে। এইটাই বা কম কীসে একজন মালাউনের জন্য! পিথীমির সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্মের সঙ্গে যেকোনোভাবে সংশ্লিষ্ট থাকাটাই তো গর্বের বিষয়!

ভাষাগত নৈকট্যের বিষয়ে আরকেটু বলি। পর্তুগালের অফিসিয়াল ভাষা পর্তুগিজ (এ আর নতুন কী!), কিন্তু এটি ব্রাজিল এবং মোজাম্বিকেরও অফিসিয়াল ভাষা। তিনটা তিন মহাদেশে। সাংস্কৃতিকভাবে ঠিক কাছাকাছি নয় বলে ধারণা করা যায়। অন্যান্য আরো ভাষার ক্ষেত্রেও একই কথা বলা যায়। অতএব, শুধু ভাষা দিয়ে গেঁথে দিলে সেই ভালোবাসা, থেকে যাবে শুধু ভাসাভাসা খাইছে

বি.দ্র. এখানে ভাষা বলতে শুধু মুখের ভাষা বোঝানো হচ্ছে, শরীরী ভাষা আপাতত উহ্য! চোখ টিপি

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

এক লহমা এর ছবি

চলুক

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক এর ছবি

দেখেছি কত গমে কত ময়দা। পোলিও কর্মী কে গুম করা সেই দোজখিস্থান এর কথা বলা হচ্ছে তো? আরো ৭১ আরো ডিসেম্বর অপেক্ষা করছে ওদের জন্য
ট্রোল

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

ইতিহাসের নানা যুগে দ্রাবির, এরিয়ান, আলপাইন, শক, হুন, গ্রীক, ইরানী, আরব, তুর্কী, মোগল, পাঠান, যারাই যখন ভারতবর্ষে তাসরিফ ফরমাইয়াছেন, পাক ভূমি পাকিস্তানেই প্রথম তাদের কদম মোবারকের ছাপ পড়েছে। এই সকল অভিযাত্রীদের মধ্যে স্বভাবতই পুরুষের সংখ্যা ছিল অধিক, নারীর সংখ্যা নগণ্য। সুতরাং স্বাভাবিক জীবধর্ম অনুযায়ী প্রথমে একপ্রস্থ মিশ্রণ ঘটেছে, তারপর যেই যখন এসেছে, তাদেরও মিশ্রণের প্রাথমিক দায়িত্বটা পাকীরাই পালন করেছে। তাই সত্যি সত্যি বৃহত্তর ভারতীয় জাতিগুলোর মধ্যে দেহগত ভাবে তাদের মধ্যেই আদি ভারতীয় সংশ্লেষ সবচেয়ে কম। উপরোক্ত সকল জাতির জেনেটিক উত্তরাধিকার তারাই সবচেয়ে সার্থকতার সাথে বহন করে চলেছে, মাশায়াল্লাহ! তবে এই বিচারে এটা নির্ণয় করা খুবই মুশকিল যে, পাকি তুমি কার।
পাকীদের ভাষা কি? সহজ উত্তর- পাঞ্জাবীদের পাঞ্জাবী, বালুচদের বালুচি, সিন্ধুর সিন্ধী, পাখতুনদের পশতু। তবে এ সবই মাতৃভাষা। কিন্তু তাদের রক্তের মেজর স্টেক হোল্ডারদের মধ্যে মাতৃভূমি বা মাতৃভাষার চেয়ে পিতৃভূমি এবং পিতৃভাষার গুরুত্ব বেশী, সেই হিসাবে তাদের ভাষা হওয়া উচিৎ ছিল সংস্কৃত কিংবা তুর্কী, নয়তো আরবী। তা না হয়ে পিতৃভাষা হয়েছে হিন্দি। উর্দু আসলে মোগল সৈনিকদের জবানে হিন্দি ভাষা, সংগত কারনেই তার মধ্যে ফার্সি, তুর্কী আর আরবী শব্দরাজী একটু বেশী পরিমানে রয়েছে, আর লেখার জন্য ধার করা হয়েছে আরবী অক্ষরমালা। সুতরাং এই বিচারে এটা নির্ণয় করা খুব একটা মুশকিল নয় যে, পাকি তুমি কার- পাকী তুমি অপকৃষ্ট ভারতীয়।
পাকীদের সংস্কৃতি কি? তাদের লোকজ সংস্কৃতি ভারতীয় সংস্কৃতিরই ধারক এবং বাহক, যেমন- ভাংড়া গান উভয় পাঞ্জাবেই সমান জনপ্রিয়। কিন্তু ধর্মীয় সংস্কৃতিতে রয়েছে ব্যাপক গ্যাঞ্জাম। শিয়া সুন্নি কাদিয়ানী ধারার প্রধান গ্যাঞ্জাম তো আছেই, প্রধান ধারাগুলোর মধ্যেও আছে হানাফি, শাফিই, বেরেলভি, দেওবন্দি, সুফিবাদি, ওয়াহাবি, ইসমাইলি, তাবলীগী আরও নানারকম জেহাদি গিয়াঞ্জাম। সুতরাং এই বিচারে এটা নির্ণয় করা খুব মুশকিল যে, পাকি তুমি কার, নির্ণয়ে একটু এদিক ওদিক হলেই শির নিকাল দেগা।

এক লহমা এর ছবি

চলুক

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

আনু-আল হক এর ছবি

চলুক

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।