ইতিহাসের পায়জামা: দিমু নাকি টান?

আনু-আল হক এর ছবি
লিখেছেন আনু-আল হক [অতিথি] (তারিখ: শনি, ২৫/১০/২০১৪ - ৫:০৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ফেসবুকের কল্যাণে যত বালছাল সব ছেলিব্রেটি; মুশকিল হইতেসে অ-বালছাল ছেলিব্রেটিও আছেন। ফলে, ছেলিব্রেটি মাত্রই বালছাল এইটা নিশ্চয় করে বলা যাইতেসে না। সম্ভবত, এই বিষয়টারে অত্যন্ত নাজুক করে ছাড়বে প্রকৃত বালছালগুলা। পরে, ভালো লুকজন এইটা ছাইড়া যাবে, এবং প্রকৃত বালছালগুলার জয় হইবে, যেমন হইছে আমাদের দেশের রাজনীতি, সিনেমা, সাহিত্যসহ প্রায় সকল মাধ্যমে।

এই বালছালগুলার একটা বিষয় খুব মিল- ইচ্ছামতো নিজের বাজনা বাজায়, লজ্জ্বা বিষয়টার কণামাত্রও অবশিষ্ট নাই। নিজে একটা পাদ দিলেও সেইটা সমসাময়িক অন্যান্য পাদের চাইতে কতোটা সুগন্ধযুক্ত, সেইটা নিয়া একটা পোস্ট দিয়া দিবে। আর তাদের উম্মতবাহিনীও সেইরাম; যা দিবে তাতেই ‘লাইক’। যেমন নাঙ্গা পয়গম্বর, তেমন উম্মত দিগম্বর!

ঘটনা এইখানে থাইমা থাকলে কিছুই বলার ছিলো না। মুশকিল হইতেসে, এইটা প্রকৃত সত্যের চাইতেও সবল হইয়া উঠতেসে। দুই-একটা ঘটনার একটু বিস্তার করি। এক মাদারবোর্ডের ওয়ালে গেলে খালি নিজের ঢোল: ধুনফুনমার্কা কবিতা, বালছালমার্কা সিনেমা এইসব। সেইটা খুব-একটা দোষের কিছু না। অনেকেই লাইক দেয় শুধুই বিটলামী করে পঁচানোর জন্য, কিন্তু সে নিজে সেইটাও বোঝে না। সমস্যা আরো বড় এই কারণে যে, সে মাঝমধ্যে গগনবিদারী স্টেটাস দেয় যুদ্ধাপরাধ, মুক্তিযুদ্ধ এইসব নিয়া। এমনটাই অধিকার নিয়া বলে যে, মনে হবে ইহার মতো একাত্তরের চেতনাধারী আর দুইটা নাই। এইবার একটু ‘টান’ দেই। না গাঞ্জায় না, উনার পায়জামার ফিতা ধইরা। তার আগে ইতিহাসের একটু ইতিহাস দেয়া দরকার।

যুদ্ধাপরাধ বিষয়ে উনার অবস্থান পরিষ্কার। যেমন, উনি কেবল দুইটামাত্র পরিস্থিতিতে ট্রাইবুনালের সমালোচনা করেন: যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি হইলে, আর না হইলে। তবে উনি নিতান্ত ভদ্রলোক; ভদ্রলোকের এক কথা। তিনিও তাই উভয়ক্ষেত্রেই একটাই অভিযোগ আনেন: রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
গোআ’র মৃত্যুতে তিনি স্টেটাস নিয়ে হাজির হওয়ার আগেই তাঁর কোনো এক উম্মত নাকি তাঁর কাছ থেকে জ্ঞান আহরণের উদ্দেশে উনারে কিছু বলার আহ্বান জানাইসিলেন। তিনি লিখলেন, তিনি লজ্জ্বা পাচ্ছেন কারণ গোআকে তিনি/তাঁরা ফাঁসিতে ঝুলাইতে পারেন নাই।

আহারে এর চাইতে একাত্তরমুখী আর কেম্নে হওয়া যায়? এইবার একটু টান দেই? যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে সারা দুনিয়ায় যখন সমাবেশ হইতেসিলো, তখন ইনারেও ডাকা হইসিলো। উনি যেহেতু সিনমা জগতের নিতান্ত বিস্ময়, উনারে বলা হইসিলো যদি অন্তত ভিড্যু করা যায়। উনি তখন ভীষণ ব্যস্ত। আসলেনই না। ধারণা করা হইসিলো, নিম্নমাপের এইসব কাজে উনার মতো উচ্চমাপের পরিচালককে ডাকা সঙ্গত হয় নাই। পরে অবশ্য সত্যি সত্যিই বালছালমার্কা একটা স্থানীয় অনুষ্ঠানের ক্যামেরাম্যান হিসাবে উনারে দেখা গেছে।

শুধু চোপার জোরে এই মহান কবি এবং চিত্রপরিচালক একদিন মুক্তিযোদ্ধাও হইয়া যাইতে পারে, যেমন কেলাশ পাইবে পড়া পিশাচ আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় গেরিলা পরিকল্পনা করতে গিয়া পাকবাহিনীর হাতে ধরা পড়সিলো, এবং ১৪ বছর বয়সে (জন্ম: ১৯৫৮) ১৯৭২ সালে আওয়ামী লীগ অফিসে তাঁর সাক্ষাত পাইসিলেন এপার বাংলার গান্ধী মক্সুদ! [ইনার প্রসঙ্গে আমার এক বন্ধু একবার বলসিলেন, গান্ধী দুই প্রকার-- লাস্ট নেইম (যথা: মহাত্মা গান্ধী) এবং ফার্স্ট নেইম (যথা: গান্ধী পোকা)]

একাত্তর-পরবর্তীকালে অনেক মাদারবোর্ডই কিন্তু জ্ঞানপাপোশ হইয়া গেছেন। ইনাদের অনেকের টিকিটাও দেখা যায় না একাত্তরের ইতিহাসে আতশকাঁচ ফালাইলে। এরাই কিন্তু পরে ‘রিকন্সিলিয়েশন’ থিউরি দেন, পাছে পায়াজামার ফিতায় টান লাইগা যায়।


মন্তব্য

হিমু এর ছবি

চিঞ্ছি মনে হয়।

আনু-আল হক এর ছবি

আমারও মনে হয় আপনি ধরতে পারসেন চোখ টিপি এই অঞ্চলে এইরাম কম্বিনেশন দুইটা নাই খাইছে

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

নজমুল আলবাব এর ছবি

চলুক

সরাসরি নাম বলে দিতে পারতেন। পয়েন্ট করে বলার সময় এখন। রাখঢাকের কি দরকার আর।

আপনার নামের কম্বিনেশনটা মজা অাছে। শয়তানী হাসি আনু আছে, হকও বিদ্যমান। দেঁতো হাসি

আনু-আল হক এর ছবি

নামের কম্বিনেশন ব্যুৎপত্তিগতভাবে আলাদা হলেও দুই জ্ঞানপাপোশের অংশবিশেষ বিদ্যমান খাইছে তবে সেটা শুধু নামেই, চিন্তায় বা কাজে ওই দুইজনের ধারেকাছেও থাকতে চাই না।

আর রাখঢাকের সত্যিই এখন দরকার নাই। কিন্তু, এই মাদারবোর্ডের নাম নিলে আরো বিখ্যাত হইয়া যাবে; সে নিজেও চায় এইটাই। আর সে-কারণেই ওর উদ্দেশ্য সফল হইতে দিমু না। চোখ টিপি

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

অনুপম ত্রিবেদি এর ছবি

পেশবুখ ছেলেবেটিদের খুব ভয় খাই। উহাদের কিছু কইলে উম্মতগন অত্যন্ত কাম-ঘাম-বীর্যের সহিত 'রে-রে' বলে পাকড়ে আসেন।

আপনার লেখাটি উপাদেয়। তবে অপু ভাইয়ের মতো আমিও বলি - রাখঢাক না রেখে দেদারসে নামটি বলে ফেলেন।

==========================================================
ফ্লিকারফেসবুক500 PX

আনু-আল হক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

আয়নামতি এর ছবি

ধ্যাৎ! আমার মত যারা ফেবুর সেলিব্রেটিদের চিনে না তাদের মুখ পানে চাহিয়া হলেও নামখানা বলে দেয়া উচিৎ কিন্তু।
একটু আন্দাজ করি চিন্তিত ইনি কী বাংলার মাজিদ মাজিদি???

আনু-আল হক এর ছবি

কাছাকাছি; মাজিদ মাজিদির পা-চাটা শিষ্য। তবে ইনি আবার এক-আধারে অনেক কিছু, মাজিদ-হুমায়ূন-সুনীল-অভিন্যাতা। কত বড় আধার, বোঝেন তাইলে!

ইনি নিজের ওয়ালে নিজে কোব্তে পোস্টাইয়া সেটার নিচে আবার নিজের নামখানি সনতারিখসহ টাইপ করে দেন, পাছে কেউ এটা দখল করে পুরস্কার ইত্যাদি পেয়ে যান!!!

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

হেহে তেনার খবর কী? আমি তো বোলোক।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

আনু-আল হক এর ছবি

তিনি স-শরীরে ভালু আছেন নিশ্চয়ই। স্ক্রীনশট লাগলে বইলেন চোখ টিপি

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

নীড় সন্ধানী এর ছবি

তারে বিখ্যাত হইতে দিয়েন না। কিন্তুক আমারে নামটা মেসেজে জানান। আমি এখনো ধর্তারি নাই কেডা খাইছে

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

আনু-আল হক এর ছবি

পাার্সোনাল মেসেজ পাঠান যায় নাকি? তাইলে বলা যাইতো

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

মিজান, পিষে ফ্যালো
জ্ঞানপাপোশ শব্দটা পছন্দ হইছে শয়তানী হাসি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

আনু-আল হক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

অতিথি লেখক এর ছবি

আমি কেন 'ব্রাত্য' হয়ে ওই নাম বলতে যাব...
অনুপম

অভিমন্যু . এর ছবি

চিন্তিত

________________________
সেই চক্রবুহ্যে আজও বন্দী হয়ে আছি

রিক্তা এর ছবি

(Y)। আমার এখন ঘরপোড়া গরুর সিঁদুরে মেঘ দেখার মত অবস্থা। কাউকে ফেইসবুকে আরেকজনের স্ট্যাটাস শেয়ার করতে দেখলেই আমার এখন "নাঙ্গা পয়গম্বর, তেমন উম্মত দিগম্বর" এর ভয় হয়। নাম জানতে চাই না, মাথার র‍্যামে জায়গা নাই। তবে কিছু ফেইসবুক সেলিব্রেটী আর বেকুব ফলোয়ারের বৈশিষ্ঠ্য তালিকা বানায়ে ফেলতে পারলে মন্দ হয় না। লিস্ট মিলায়ে আনফলো/আনফ্রেন্ড করা যেতো

--------------------------------
হে প্রগাঢ় পিতামহী, আজো চমৎকার?
আমিও তোমার মত বুড়ো হব – বুড়ি চাঁদটারে আমি করে দেব বেনোজলে পার
আমরা দুজনে মিলে শূন্য করে চলে যাব জীবনের প্রচুর ভাঁড়ার ।

আনু-আল হক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

আমার তো মনে হয়, পরীক্ষিত সেলিব্রেটি ছাড়া বাকি সবক’টারেই আনফলো করা দরকার। খুব বস কেউ না হইলে, ’ফলো’ অপশন খোলা রাখাই তো আমার কাছে পাকনামী বা হামবড়াভাব মনে হয়।

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

মরুদ্যান এর ছবি

প্রোফাইলটা ঘুইরা আসলাম, ২ খানা কোবতেও পড়লাম। আহা কি ভাষা কি তার মাধুর্য! খাইছে

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

আনু-আল হক এর ছবি

আপনে সত্যিই চিনতে পারসেন এই মহাকবিরে??? চিন্তিত

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

তিথীডোর এর ছবি

ফলো করার মতো মানুষ ফেসবুকে একজনরেই মনে হয়-- মেহদী হাসান খান। এই লোকটার জন্যেই খাতা-কলম ছাড়াও বাংলায় লিখতে পারি।

পাবলিকলি ঘরের ত্যানা বা সুশীল চেতনা শেয়ার করে লাইক টুকানো আর কোন পাবলিকরেই বড়-একটা সাধু মনে হয়নি। আমি মানুষটা খ্রাপ।
ফেসবুকে ফেম কুড়াতে সবচেয়ে হট ইস্যু পেম আর নারী চরিত্রের বিশ্লেষণ ফাঁদা স্ট্যাটাস, সেলিব্রিটি খেতাব পেতে চাওয়া চিড়িয়ারা সচরাচর সেটা মিস করে না।
আর আপামর বাঙালি খুব সম্ভবত ভোগে নেতৃত্বহীনতা কিংবা বিনোদনশূন্যতায়, সেজন্য বাদাম হুসাইনকে ফলো করে ১৫৯, ৩৫১ জন মানুষ। হিপনোটিজম ব্যবসায়ীর খুল্লামখুল্লা ব্রেকাপের পেছনের সত্যতা যাচাই নিয়ে তার উম্মতদের রাতের ঘুম হারাম হয়ে যায়। নারী পীর [নাকি পীরনী? চোখ টিপি ] দের কথা আর না বলি। কেউ গায়ের রঙ নিয়ে সিমপ্যাথি কুড়ানোর কিচ্ছা লেখে, আধ-হিজাবী কেউ আবার ঢেকেঢুকে পেমশিক্ষার বয়ান দেন।

অনলাইন পৃথিবী প্রকৃতই আনন্দময়। দেঁতো হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

অ্যাঁ সারাদিন ছেলেবেটি-গো দেয়ালে পইড়া থাকেন বুঝি? চিন্তিত

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

তিথীডোর এর ছবি

আমি মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনার ছাত্রী তো, দ্যাশ ও দশের সব কিসিমের পটেনশিয়াল লুকজন টুকটাক নজরে রাখি। হে হে।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

হুমমমম

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

আনু-আল হক এর ছবি

হাহাহা আবার সেই প্রাগৈতিহাসিক নুসরাত আর সমসাময়িক ’হুডিকাহিনী’???? চোখ টিপি
নুসরাত তো সচলেও হানা দিসিলো, কিন্তুক বদ্পুলাপানের কারণে পত্রপাঠ বিদায় নিতে হইসে দেঁতো হাসি

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।