আমার কৈফিয়ত

আরশাদ রহমান এর ছবি
লিখেছেন আরশাদ রহমান (তারিখ: শুক্র, ১১/১২/২০০৯ - ১০:৩৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আজ সকালে ঠিক করেছি আমার কৈফিয়ত মার্কা একটা পোস্ট যে করেই হোক লিখবো। আসলে অনেক দিন ধরেই ভাবছি যেকোনো ভাবেই হোক আমাকে সময় করতেই হবে কিন্তু কোনো ভাবেই সময় করে উঠতে পারছিলামনা। ব্লগে আমার আনাগুনা এমনিতেই সীমিত ছিল কিন্ত বছর দুয়েক আগে থেকে মনে হচ্ছে আমার মত ব্যাস্ত আর কেউ নেই! ব্লগে আমার শুরু জুবায়ের ভাইয়ের অনুপ্রেরণায়। আমাদের যখন আড্ডা হতো, যখন বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনার ঝর উঠতো তখন অনেক সময় আমি মুদ্রাদোষ বসে বলতাম "মেজাজ খারাপ লাগে" আর জুবায়ের ভাই বলতো মেজাজ খারাপ না করে কাগজে কলমে তা প্রকাশ করো। কোনো একদিন প্রথমআলোতে কোনো একটা লেখা পড়ে আমি যখন বলছিলাম মেজাজ খারাপ লাগে তখন উনি বললেন তুমি বরং ব্লগে মেজাজ খারাপটা প্রকাশ করো তাতে মেজাজ আর এতো খারাপ হবেনা। সেই থেকে প্রথমে বাঁধ ভাঙ্গার আওয়াজ এ তারপর সচলায়তনে। আজ জুবায়ের ভাই নেই ভাবতে কেমন যেন কস্ট হয়। জুবায়ের ভাইয়ের সাথে আমার পরিচয় যতদূর মনেপড়ে তিরানব্বই এর দিকে। পরিচয় শাহীন আপার (জুবায়ের ভাই এর বউ) মাধ্যমে। তারপর পুরো পরিবারটার সাথেই একটা মধুর সম্পর্ক গড়ে উঠে। অন্য সময় নাহয় তা নিয়ে লিখা যাবে আজ জুবায়ের প্রসংগ আসলো আমার ব্লগে শুরু নিয়ে।

শুরুতে যখনই সুযোগ পেয়েছি আবোলতাবোল যা কিছু একটা হোকনা কেনো পোস্ট করার চেস্টা করেছি। অনেক ভালো ভালো লেখা পড়েছি। তারপর দেখা গেছে পোস্ট করার সময় না পেলেও অন্যদেরটা পড়েছি। কিনতু এখন এমন অবস্থা যে ব্লগে ঢোকারই সময় পাইনা। এতো ব্যাস্ততার শুরুটা একটা সুসংবাদ দিয়ে। কিন্ত কিছুদিনের মধ্যেই সুসংবাদটা বেড়ে অনেক গুন হয়ে আমাদের মাথা খারাপ অবস্থা। অল্পকথায় শুধু কৈফিয়ত আকারেই এই পোস্টে লিখবো। ভবিষ্যতে বিস্তারিত লিখব আশাকরি।

আমার বউ এর ডাকতার আমাদেরকে বললো যে আমাদের জন্য সুখবর আছে। আমরা দুজনেই (আমি এবং আমার বউ) খুশী মনে বাসায় আসলাম। আমরা ঠিক করলাম যেহেতু প্রথম সন্তান তাই আরো কিছুদিন পরেই নাহয় সবাইকে জানাবো। কিছুদিন পর ডাকতার আমাদের অবাক করে লাটারী জেতার মতো একটা সংবাদ দিলো। সুসংবাদ বেড়ে কয়েকগুন কিন্ত তার সাথে কি কি সমস্যা হতে পারে তা জেনে আমাদের অবস্থা তখন খুবি বেহাল। প্রতি সপ্তাহে অন্তত দু একবার যেতে হয় সব ঠিকঠাক আছে কিনা চেক করাতে। ফলোআপ এর পর ফলোআপ। কাজ বাসা ডাকতার সব কিছু মিলিয়ে কিযে এটকা অবস্থা তা বলার বাইরে। প্রচন্ড মানসিক চাঁপে আর সময়ের অভাবে ব্লগে ঢোকা প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠে। ডাকতার এর সাথে আমাদের দুজনেরই অন্তত সপ্তাহে একবার আলোচনা হতো মা এবং শিশুদের অবস্থা নিয়ে। আলোচনায় কোনো এক সময় ডাকতার সিলেক্টিভ রিডাকসন এর কথাও তুললো। আমাদের দুজনেকে কখনো এমন সমস্যার সামনে দাঁড়াতে হয়নি। আলোচনা, চিন্তা, হতাশা এবং অসহায়তাতো আর ডাকতার এর রুমেই সীমাবদ্ধ থাকেনা প্রতিটি মুহূর্তেই আমাদের চলছে নিজের সাথে যুক্তিতর্ক যাতে সঠিক সিদ্ধান্তটা আমরা নিতে পারি। বিস্তারিত এখন নাই বললাম। ফলোআপ এর এক পর্যায়ে আমারা ডাকতার কে বললাম আমরা কোনো রকম সিলেক্টিভ রিডাকসনের কথা ভাবছিনা। আমরা যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত আছি! আমাদের সৌভাগ্য তাঁর মত একজন ডাকতার এর জন্যই আমরা সিদ্ধান্তটা আসলে নিতে পেরেছি।

যাইহোক সিদ্ধান্ত নেয়ার পরে আমারা প্রিয়জনদেরকে আনন্দের সংবাদটা জানালাম। জুবায়ের ভাইকেও জানালাম যে আসলেই এই কারণে ব্লগে ঢোকার সময় পাইনা। তারপর একদিন একটি নয় দুটি নয় তিন তিনটি শিশু যাদুকর আমাদের ঘরে এলো! সব বাঁধা পেরিয়ে মা এবং তিন শিশুই সুস্থ্য। তিনজনকে নিয়ে আমাদের আনন্দের যেমন সীমা রইলানা তেমননি সব কিছু সামলাতে আমাদের অবস্থাযে কি তা বলতে গেলে আরব্য রজণীর কিস্সার চেয়েও বেশি সময় লেগে যাবে। এখন নাহয় কৈফিয়ত হিসাবে শুধু মাত্র জানালাম এই জন্যেই ব্লগে আমার পদচারণা নাই বললেই চলে।

হিমিকা, মিহিকা আর নির্ঝর এর বিশ মাস হলো। কিভাবে বিশ মাস পার হলো তা ভাবার সময়টাও পাইনি। দাদা-দাদী, নানা-নানীর সাথে ওদের কে এখনো সামনা সামনি পরিচয় করানো হয়নি। তবে খুব শিঘ্রি দেখা হবে। দেশে রওনা হচ্ছি আগামীকাল, কে জানে হয়তো কোনো ব্লগারের সাথে দেখা হয়েও যেতে পারে। এই পোস্টটা না দিয়ে যেতে নিজেকে খুব অপরাধী মনে হচ্ছিল। সবার শুভ কামনা করছি!


মন্তব্য

দ্রোহী এর ছবি

আরেএএএএএএএ.....

বহু বহুদিন পর! কেমনাছেন?

আরশাদ রহমান এর ছবি

অনেক খুশী....... আনেক busy হাসি

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ত্রিঅভিনন্দন। আমার তো একটা সামলাতেই জান শেষ... তিনজনকে সামলাতে আপনাদের অবস্থা কী হয় বুঝতে পারছি। ঢাকায় আসলে আশাকরি যোগাযোগ হবে...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

আরশাদ রহমান এর ছবি

ধন্যবাদ নজরুল ভাই...... আশাকরি দেখা হবে।

হিমু এর ছবি

আপনার এই পোস্টে আসলে মাইনাস ছাড়া আর কিছুই দেবার নাই। পিচ্চিদের ছবিছাড়া এই পোস্ট নিতান্তই অসম্পূর্ণ কৈফিয়তপত্র হয়েছে। এই পোস্ট বাতিল বলে ঘোষণা করা হৌক! ছবি চাই দেতে হবে!



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

আরশাদ রহমান এর ছবি

ভাই আমি কোনো দিনও ছবি সাঁটাইনি কোনো পোস্ট এ। দেখা যাবে কোনো ছবি খুঁজে পেলেও তা লোড করতে খবর হয়ে যাবে হাসি আর আধা ঘন্টা অনলাইনে আছি। এর মধ্যে পারলে ছবি দিব তানহলে ঢাকেয় গিয়ে অবশ্যই হাসি

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

অভিনন্দন হাসি
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

মেহবুবা জুবায়ের এর ছবি

আরশাদ আমি জানিনা তুমি এই মন্তব্য পরবে কিনা। তুমি ঢাকায় যাচ্ছ, আর ডোরা এখন ঢাকায়। গত ১০ই ডিসেম্বর ও ঢাকায় গেছে। পারলে ওর সাথে অবশ্যই দেখা করো। ও বানানীতে ওর ফুপুর বাসায় আছে। ফোন নাম্বারটা ইমেলে পাঠিয়ে দিবো।
তিন পিচ্চি নিয়ে খুবই ব্যস্ত জানি। তারপরও এতটাই কী ব্যস্ত যে দেশে যাবার আগে একটা ফোন পর্যন্ত করা গেলো না? সচলে না এলে কী করে জানতাম, বলো? তুমি জানো, আমি অভিযোগ করছি না। ভালো থাকো এবং সবাইকে নিয়ে নিরাপদে দেশে পৌঁছাও।

--------------------------------------------------------------------------------

আরশাদ রহমান এর ছবি

শাহীন আপা, আমি সচলয়াতনেই জানতে পারলাম ডোরা ঢাকায়। দুঃখিত আপনাকে আনেক দিন কল দেয়া হয়নি। আজকে যাবার আগে আপনাকে অবশ্যই কল দিব ভেবেছিলাম কিন্তু তার আগেই আপনিই কল দিলেন। ব্যস্ততার কথা কি আর বলবো শাহীন আপা, নাওয়া খাওয়ার সময় পাইনা ঠিক মত হাসি সত্যি সত্যি বলছি। মাঝে মাঝে মনে হয় সব কিছু একি স্বাদের কোনরকমে গলাদিয়ে নামে শুধু হাসি সব কিছুতেই তাড়াহুড়া। আশাকরি ডোরার সাথে দেখা হবে। একটু পরে রওয়ানা হবো। কিভাবে তিন জনকে সমালাবো মনে হলে জ্বর আসে হাসি

দময়ন্তী এর ছবি

আরিব্বাস! দারুণ তো!
আপনাকে তিনগুণ অভিনন্দন৷
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

আরশাদ রহমান এর ছবি

ধন্যবাদ!! হাসি
দাদা-দাদী নানা-নানীর সাথে পিচ্চিরা মহা আনন্দে।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

আপনার তিনটা বাবুর জন্যে অনেক অনেক আদর রইল।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।