মনিকা - টাহির এবং ছোট্ট একটি দেশের গল্প

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি
লিখেছেন আনোয়ার সাদাত শিমুল (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৫/০৭/২০০৭ - ১০:৪০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মনিকা পেট্রা প্রথমবার থাইল্যান্ড এসেছিল বছর পনেরো আগে। তখনও ব্যাংককের রাস্তাগুলো এতো প্রশস্ত হয়নি, ফ্লাইওভারগুলো বিস্তৃত হবে শোনা যাচ্ছে কেবল। সেবার শখের বশে বন্ধুর রেস্টুরেন্টে এক সন্ধ্যায় গান গেয়ে মনিকাকে নতুনভাবে ভাবতে হয়েছিল। নিজের কন্ঠশৈলীকে পেশা হিসেবে নেয়ার ভাবনা আগে কখনো আসেনি। থাইল্যান্ডে গান গেয়ে উপার্জনের প্রস্তাবটা হাল্কাচ্ছলে নিলেও জার্মানীর তুলনার স্বল্প খরচে জীবন-যাপন, অনুকূল আবহাওয়া - সব মিলিয়ে 'মন্দ কী' চিন্তাটা মনিকাকে আর দেশে ফেরায়নি। সন্ধ্যায় গান গাওয়ার পাশাপাশি দিনেও কিছু একটা করার চিন্তা জাগে মনে। এখানে ওখানে কাজ করে। বছর কয়েকের মধ্যে নিজে ছোটোখাটো একটা রেস্টুরেন্টও দেয়।

চল্লিশ পেরুনো মনিকার স্থায়ী সংসার করা হয়নি, যেমনটা করা হয় না ইউরোপ-এমেরিকার অনেক মানুষের। ফ্লায়িং বাটারফ্লাই হয়ে ফ্রিডম টু লিভ উপভোগ খুব আহামারী কিছু নয়। সুতরাং, গিভ অ্যান্ড টেকের একঘেঁয়ে ঐ গল্প থাক আপাতত:।

অর্ধ শতক বয়সের কাছে এসে মনিকার সাথে পরিচয় হয় পাকিস্তানি টাহির আহমাডের। টাহির আহমাড ভবঘুরে মানুষ। স্রোতে ভাসতে ভাসতে থাইল্যান্ডে। মনিকার রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়ে আলাপ জমে। টাহিরের জীবন-কাহিনী মনিকাকে স্পর্শ করে। এক সন্ধ্যায় টাহিরের হু হু কান্নায় মনিকা এলোমেলো হয়ে যায়। পেটান শরীর, শক্ত চোয়ালের এমন সুদর্শন পুরুষ কখন কাঁদে, কেনো কাঁদে? মনিকা টাহিরের কাঁধে হাত রাখে, সান্ত্বনা দেয়। টাহিরের প্রতিক্রিয়া ক্যামন যেনো বেমানান, ঠিক অন্য সব পুরুষের মতো নয়। টাহির যেনো কোনো একটা জায়গায় অন্যরকম। মনিকার মনে হয় এমন নির্বিষ পুরুষের উপর আস্থা রাখা যায় অনায়াসে। ঘনিষ্টতার ধাপগুলো পেরুতে সময় লেগেছে বেশ, কারণ টাহিরের 'আই অ্যাম মুসলিম, ক্যান নট - - -' বারবার বাঁধা দিয়েছে। জীবনে পোড় খাওয়া মনিকার কাছে এ বাধাটা ভালো লেগেছে বেশ। এবং এ ভালো লাগা স্থায়ী হয়েছে পরের বছরে বিয়ে, সংসার, দুজনে রেস্টুরেন্ট চালানো, ইকুয়্যাল শেয়ার। তবুও মাঝে মাঝে অনেক ব্যাপারে মনিকার অসহ্য লেগে উঠে। দুজনে মিলে কাজ করলেও টাহির পর্ক-স্টেক ছোঁবে না, পর্ক পরিবেশন করা থালা-বাসন ধোবে না, পারলে দুই আঙুলে নাক চেপে ধরে। রামাদান এলে টাহির সারাদিন কিছু খায় না। ক্লান্ত থাকে। একটু কাজ করে হাঁফিয়ে উঠে। তখন সব কাজ মনিকাকেই করতে হয়। সন্ধ্যার একটু আগে টাহির কোথায় ব্রেকফাস্ট করতে যায়, ফিরে এসে ঢকঢক কয়েক পেগ। মনিকা জিজ্ঞেস করে - 'ইজ ইট অ্যালাউড ইন ইসলাম'। টাহিরের ব্যাখ্যা - 'রামাদানে সারাদিন কিছু খাওয়া যাবে না, কিন্তু রাতে সমস্যা নেই'। একমাস রামাদানের পর টাহির তিন দিন শরাবে-শরাব ছিল। এটা নাকি রামাদান শেষের সেলিব্রেশন।

মনিকা টের পায়, টাহিরের যে সব সংস্কার দেখে মুগ্ধতা জেগেছিল সেগুলো নিতান্তই মোহ। এবং সে মোহ ভাঙতে খুব বেশী সময় আর লাগবে না। সম্পর্কের এ টানাপড়েন ঘনীভূত হওয়ার আগেই টাহির চম্পট। ব্যাংক একাউন্ট খালি, মনিকার জুয়েলারী বক্স খালি। পাকিস্তান এয়ারলাইন্সে চড়ে টাহির তখন করাচী। মনিকা আর রেস্টুরেন্ট চালাতে পারেনি। একটা অফিসে পাবলিক রিলেশন অফিসারের চাকরী নিয়েছে।

আরো পরে:
একদিন ঐ অফিসে জয়েন করে বাংলাদেশের এক ছেলে। বয়সের হিসেবে মনিকার অর্ধেকেরও কম। মনিকার ভাসাভাসা মনে পড়ে কোথায় যেনো জেনেছিল - বাংলাদেশ পাকিস্তান একসাথে ছিলো কিংবা আছে এখনো। টাহিরের কথা মনে পড়ে। বাংলাদেশের ছেলেটা টাহিরের মতো সুদর্শন নয়, টিপিক্যাল ইন্ডিয়ান চেহারাও নয়। খানিকটা চুপচাপ। মনিকা খুব বেশী কথা আগায় না। বাংলাদেশের ছেলেটা মাঝে মাঝে ফোনে বাংলায় কথা বলে। কিছু শব্দ মনিকার কানে আলপিনের মতো বিঁধে - "আচ্ছা আচ্ছা, জ্বী", টাহিরও বলতো অমন। ক'দিন আগে লবিতে কাকে যেনো 'সেলামালাকুম' বলছিল ছেলেটি। টাহিরও অনেককে ফোনে 'সেলামালাকুম' বলতো। একটা শংকা মনিকার মনে ভর করে। বাংলাদেশী ছেলেটির উপস্থিতি 'আনকমফোর্ট্যাবল' লাগে। মনিকা অফিস থেকে বেরোবার আগে নিজের ড্রয়ার দুবার চেক করে। তেমন কিছু নেই, তবুও 'বর্ন টু রাইড' এর ডিভিডিটা খোয়া গেলে মনিকা নিজেকে ক্ষমা করতে পারবে না।
ধীরে ধীরে সময় গড়ায়।
কফি ব্রেকে গল্প হয় কৈশোর পেরোনো ছেলেটার সাথে। উন্মোচিত হয় টাহির-গল্প।
পাকিস্তান প্রসংগ আসতেই মনিকা জানে এক নতুন কাহিনী।
সেভেন্টি ওয়ান, সেভেন্টি ওয়ান, সেভেন্টি ওয়ান। মনিকা স্মৃতি হাতড়ায়, কোথায় ছিল সে ঐসময়! পৃথিবীর ছোট্ট একটি দেশে যুদ্ধ হলো, এতো লোক মারা গেলো। মনিকা একদিনও জানলো না?
সংখ্যাটা কতো? থ্রি মিলিয়ন?
মানে তিন এর সাথে ছয়টা শুন্য বসাতে হবে?
ফিফটি টু-তে ল্যাঙ্গুয়েজ নিয়েও কিলিং? মাই গড!
মনিকা টের পায় - বাংলাদেশের মানুষগুলো ইন্ডিয়ান কিংবা পাকিস্তানীদের থেকে আলাদা। গুগল ঘেঁটে করাপশন, পপুলেশন, পলিটিক্যাল কনফ্লিক্ট কিংবা এক্সট্রিম পোভার্টির পাশাপাশি পাওয়া গেলো এক সংগ্রামী ইতিহাসের কথা। মনিকা খেয়াল করেছে - সেভেন্টি ওয়ানের কথা বলতে গিয়ে সেদিন ছেলেটার চোখ-মুখ কেমন অন্যরকম হয়ে উঠেছিল। এ প্রত্যয়ে তো পলেস্তারা লাগানো কিছু নেই!

ছত্রিশ বছর খুব আহামারি সময় নয়।
ইতিহাসের হাত ধরে বাংলাদেশ এগুবে নিশ্চয়।


মন্তব্য

দৃশা এর ছবি

ইতিহাসের হাত ধরে বাংলাদেশ এগুবে নিশ্চয়...নিশ্চয়...সাথে আমাদেরও আগাতে হবে...যাতে আর একটা ইতিহাসের সৃষ্টি হয়...
সতন্ত্র ইতিহাস...(স্টিল ব লিখতে পারছি না)
আইচ্ছা পোলাডা আপনে নাতো...কিরাম কিরাম জানি লাগে।

দৃশা

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

দৃশা: ধন্যবাদ।
যুক্ত 'ব' লেখার জন্য ফোনেটিকে (+b) দিতে হবে। স্ব (s+b), শ্ব(sh+b)এরকম। ট্রাই করে দেখেন।

দৃশা এর ছবি

উহু ...ইটস নট ওয়ার্কিং...বুঝলাম না ব্যপারটা...কোন কোন গুলাতে নিজে থেকেই আসে...বিরক্তিকর...
মেঘ বলেছে যাব যাব র কোন ভাল ভার্সন আছে আপনার কাছে?...আমার কাছে যেটা আছে বেশ পুরানো...আর অত ভাল না...থাক্লে লিংকটা একটু দেন।
আর থ্যাংক্স...বহুদিন পর কোন নতুন লেখা পরলাম আপনার।

দৃশা

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

আমি অডিও ক্যাসেটে শুনেছিলাম দেশে। এখন নেই। স্যরি। পেলে জানাবো।

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

এমন আচমকা শেষ হলো কেন?

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

ধন্যবাদ, জুবায়ের ভাই। একজন ভিনদেশীর বাংলাদেশ চেনার গল্পেই থাকতে চেয়েছি। আর এগুতে চাইনি কিংবা পরিনি। এটুকুই।

অচেনা এর ছবি

হ্যা শিমুল নাতো খাইছে

-------------------------------------------------

যত বড়ো হোক ইন্দ্রধনু সে সুদূর আকাশে আঁকা,
আমি ভালোবাসি মোর ধরণীর প্রজাপতিটির পাখা॥

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

অচেনা, সবই কী অচেনা? ওটা শিমুল না হলেও কী অচেনা?

সৌরভ এর ছবি

হুমম।
শিমুলীয় তুলিতে আঁকা অনন্য বাংলাদেশের মুখ।

------ooo0------
বিবর্ণ আকাশ এবং আমি ...


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

নিঘাত তিথি এর ছবি

শুরু থেকেই মনে হচ্ছিলো কোন রিপোর্ট পড়ছি । ব্যাপারটা হয়েছে গল্পের মত করে লেখা কোন বাস্তব অথবা বাস্তবের মত করে কোন গল্প।

--তিথি

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

নিঘাত তিথি এর ছবি

দৃশা, অভ্র ব্যবহার করেন না কি? ওটা দিয়েই অনেক সহজে লেখা যায় আমার মনে হয়। যদি অভ্র দিয়ে লিখে থাকেন তাহলে যেকোন অক্ষরের সাথে w দিলে সেটা ব-এর কাজ করবে।

--তিথি

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

আরিফ জেবতিক এর ছবি

ছত্রিশ বছর খুব আহামারি সময় নয়।
ইতিহাসের হাত ধরে বাংলাদেশ এগুবে নিশ্চয়।

-----------------------------------
কিস্তিমাতের যুদ্ধ শেষে,সাদাকালো ঘুটিগুলো এক বাক্সেই ফেরত যাবে...

দৃশা এর ছবি

থ্যাংক্স তিথি...আসলেই কাজে দিল...আগে কইলেন না কেন?

যাক বানান ভুলের অপবাদ থেইক্কা এখন কিঞ্চিত মুক্তি পামু।

দৃশা

নিঘাত তিথি এর ছবি

আপনাকে স্বাগতম দৃশা। হাসি

--তিথি

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

নজমুল আলবাব এর ছবি

আরামবোধ হচ্ছে...

মাশীদ এর ছবি

বাহ্!
ভাল লাগল।

আমি সবসময় ভাবি, আমরা যারা বাইরে থাকি, আমাদের দায়িত্ব দেশের অ্যাম্ব্যাসেডার হয়ে কাজ করা। সিঙ্গাপুরে দেখেছি বাংলাদেশী শ্রমিকরা বেশ একটা খারাপ ইমেজ দিয়ে যাচ্ছে আমাদের দেশের। খুব খাটে ওরা, জীবনও কষ্টের। কিন্তু ঐ যে, কিছু দিকে আমাদের 'দেশী' মনোভাব থেকেই যায়, যেগুলোর মূলে আছে অশিক্ষা আর বহুবছরের বাজে অভ্যাস। অন্য কোন দেশীদের তেমন একটা দেখিনি হা করে অভদ্রের মত কারো দিকে তাকিয়ে থাকতে বা যেখানে-সেখানে থুতু-ময়লা ফেলতে নির্বিকারে। এত দেশী থাকতে যখন দেখি বাংলাদেশী ওয়ার্কারগুলোরই ফিলিপিনো আর ইন্দোনেশিয়ান মেইডদের নিয়ে বাজে রেপুটেশান, আর সেটার কিছুটা ছায়া কোন না কোন ভাবে আমাদেরও গায়ে এসে পড়ে - তখন খুব খারাপ লাগে। খুব চেষ্টা করি আমার পক্ষে যতটা সম্ভব, যত জনকে সম্ভব, দেশের একটা ভাল ইমেজ দেবার। কিন্তু 'খারাপ'টার পরিমাণ মাঝে মাঝে খুব বেশিই বড় লাগে। মনে হয়, কবে আমরাও প্রতিদিনের বেসিক ভব্যতাটাটুকু জীবনেরই একটা অংশ মনে করব? আমাদেরও তো ছিল ভীষণ উজ্জ্বল ইতিহাস! আমার কমেন্টটা হয়ত অপ্রাসংগিক হয়ে গেল। কিন্তু ঐ যে শেষ লাইনটা...ইতিহাসের হাত ধরে বাংলাদেশ এগুবে নিশ্চয়ই...আমি খুব অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি সেই দিনের। এখনো আমাদের,as a whole, অনেক পথ বাকি।


ভাল আছি, ভাল থেকো।


ভাল আছি, ভাল থেকো।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

মাশীদাপু:
মোটেও অপ্রাসঙ্গিক হয়নি। নেহায়েত ব্যক্তিগত ডায়েরী না লিখতে ভিন্ন স্টাইলে বলতে চেয়েছি, এবং সেটা আপনার বক্তব্যের সাথে সমান্তরালই। আমি এখানে যে শহরে থাকি, পাতায়া, ব্যাংকক থেকে ১৪৫ কিলোমিটার দূরে। এখানে বাঙালী আছে প্রায় দু'শর মতো। মোটামুটি সবাই ব্যবসা করছে। বলতে পারি বাঙালীদের ইমেজ ভালোই। এখনো তেমন খারাপ কিছু ঘটেনি। সে তুলনায় বার্মিজ, কম্বোডিয়ান, ভিয়েতনামিজ আছে অনেক, অবৈধভাবে। তাদের নিয়ে নানা অভিযোগ।
তবে সমস্যা আছে আরেক জায়গায়।
কেনো জানি, অন্যরা বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া-পাকিস্তানকে এক রকমভাবে দেখে। চেহারার গঠন কিংবা ভাষাগত মিলের কারণে হতে পারে। কারো ব্যক্তিগত জীবনে যদি এ তিন দেশের কোনো একটি নিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতা থাকে, তবে সেটা বাকীদের উপর অ্যাপ্লাই করা হয়। যেমন, এক ট্যাক্সিঅলা একবার আমাকে নিবে না। বললো, তুমি ইন্ডিয়ান তোমাকে নেবো না। আমি বললাম, আমি ইন্ডিয়ান না, বাংলাদেশী। তখন সে নিলো। আলাপে আলাপে জানলাম, ২/৩বার ইন্ডিয়ান প্যাসেঞ্জারের সাথে ভাড়া নিয়ে গন্ডগোল হয়েছে, তাই সে ইন্ডিয়ান দেখলে অ্যাভয়েড করে। আর আমার লেখার মনিকা'র যে ঘটনা - ওখানে বাংলাদেশী ছেলেটিকে প্রথম দিকে বেশ ডাউন প্লে করা হয়েছিল। কারণ, মনিকার টাহির অভিজ্ঞতা।

মাশীদ এর ছবি

হ্যাঁ, আমি তোমার ভিউ পয়েন্ট বুঝতে পেরেছি। অন্য দেশীদের জন্য আমাদের হয়রানি একদমই ঠিক নয়। আমার ব্যক্তিগত হয়রানি নিজের দেশীদের কারণেই হয়েছে। দেশী ভাইদের কিছু 'ইতিহাস' এর কারণে আমাদেরকেও এক কাতারে ফেলে দেয়া হয়েছে। অনেক ক্যাবওয়ালাই খুব অবাক চোখে আমাকে দেখেছে, বাংলাদেশী আর কোন মেয়ে আগে দেখেনি বলে আর লোকেদের মুখে শুনে এসেছে আমাদের দেশী মেয়েরা পড়া-চাকরি থেকে দূরে থাকে বলে। এদিক দিয়ে আমার কথাটা কিছুটা হয়তো অপ্রাসংগিক বা প্রাসংগিক, কারণ তুমি অন্য দেশীদের কারণে সবাইকে টাইপিফাই (শব্দটা জানি কি?) করার কথা বলেছ আর আমি বলেছি আমাদেরই কয়েকজনের কারণে বাকিদের একই রকম এক কাতারে ফেলে দেয়ার কথা।

তোমার অনেক লেখা সামহোয়্যারে পড়ব পড়ব বলে পড়া হয়নি। নাহ্! এবার না পড়লেই নয় হাসি !


ভাল আছি, ভাল থেকো।


ভাল আছি, ভাল থেকো।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

সহমত।
সামহয়্যারের লেখাগুলো এখন আমি নিজেই পড়তে যাবো। নিজের লেখা নিজে পড়া। হা হা হা। ওখানে 'পাকমন পেয়ার' নিয়ে উৎপাতে আমি তিতিবিরক্ত হয়ে উঠছিলাম। তবে একটা ব্যাপার ভালো ছিল, হাবিজাবির মধ্যে নিজের লেখাটা টুপ করে ছেড়ে দিতাম। সচলায়তনে ঐ ব্যাপার নেই। সবাই বিগবস টাইপ। ভেবে চিন্তে লিখতে হয়!
ভালো থাকবেন।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

সৌরভ, নিঘাত তিথি, আরিফ ভাই এবং নজমুল ভাইকে অনেক ধন্যবাদ, পড়ার জন্য এবং মন্তব্য করার জন্য।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

ওইটা আসলে শিমুল...হাসি
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

সৌরভ এর ছবি

বদ্দাচৌ দেখি দিনদিন ঈশ্বরসম সবজান্তা হয়ে যাচ্ছেন!
শিমুল, ঠেলা সামলান এখন।

------ooo0------
বিবর্ণ আকাশ এবং আমি ...


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

সৌরভ:
ভেবে দেখেন, বাংলা ব্লগার ক'জন। হিসাব আছে?
কিন্তু, বদ্দা? ওয়ান অ্যান্ড ওনলি! ইউনিক।।
আর ঈশ্বর (চন্দ্র ) মারা গেছে না?

সুমন চৌধুরী এর ছবি

তাই নাকি? ঈশ্বরের কুলখানিতে বোরহানি কেমন হইছিল?
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

আহ! আমার প্রিয় খাবার বোরহানি - - -।
না বদ্দা, বোরহানী দেয় নাই, মিলাদের পরে জিলাপি দিয়া শেষ।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

'নো আই'ম নট ইন্ডিয়ান,আই'ম নট পাকি, আই'ম ফ্রম বাংলাদেশ, আই'ম নট সো স্মার্ট লাইক দেম বাট নট এ ক্রিমিনাল লাইক দোস এসওয়েল'

সময় এখন নিজেদের আলাদা করে চিহ্নিত করানোর । বাংলাদেশীদের যে প্রজন্ম এইসব দেশে স্থায়ী হয়ে গেছে তারা এটা করতে পারবেনা, তার মিশে গেছে, পাকি কিংবা কালো আফ্রিকানদের সংস্কৃতি তারা আত্নীকরন করে নিয়েছে । 'আমি যে আমি,অন্য কেউ নই' এই বোধটা এদের নেই ।
কিন্তু আমরা যারা বাংলাদেশের আলো-হাওয়া শরীরে নিয়ে এসেছি তারা অনেকেই এই কাজটা করছি । খুব ধীরে হলেও কিন্তু-বাংলাদেশের না হোক,বাংলাদেশীদের একটা ভালো ইমেজ তৈরী হতে যাচ্ছে ।

শিমুলকে ধন্যবাদ । যথারীতি মুগ্ধতা ।

-----------------------------------
'পড়ে রইলাম বিধির বামে,ভুল হলো মোর মুল সাধনে'

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

'নো আই'ম নট ইন্ডিয়ান,আই'ম নট পাকি, আই'ম ফ্রম বাংলাদেশ, আই'ম নট সো স্মার্ট লাইক দেম বাট নট এ ক্রিমিনাল লাইক দোস এসওয়েল'
দারুণ কথা।
'আমরা' যখন 'আমাদের' হারিয়ে ফেলছি, তখন খুব অসহায় মনে হয়। বাংলাদেশের ভালো ইমেজ আমাদেরই তৈরী করতে হবে নিজেদের ইতিহাস ঐতিহ্যকে ভর করে। ইন্ডিয়ান-পাকিদের ছায়াতলে নয়। নেভার।

মন্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা!

ঝরাপাতা এর ছবি

উড়ে গেল দীর্ঘশ্বাস, আরেক পরত জমা হলো অবরুদ্ধ আবেগ, রঙিন স্বপ্নগুলো আরো রঙিন হয়ে উঠলো অনাগত দিনের প্রতীক্ষায়। দারুন শিমুল। গল্পটার শেষ যে এভাবে হবে বুঝতেই পারিনি।
_______________________________________
রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।


বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

ঝরা:
গল্প হয় নি তো!
গল্পকথা হয়েছে। এরকম কথাগুলো হঠাৎ করেই বোধ হয় শেষ হয়ে যায়। নাহ, শেষ হয় কি?
আসলে চলতে থাকে।
তাই না?

ঝরাপাতা এর ছবি

আচ্ছা মানলাম। শিরোনামটা খালি গ্যাঞ্জাম লাগাইয়া দেয়। গল্প হোক, গল্পকথা হোক উপাদেয় হয়েছে।
_______________________________________
রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।


বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।

তারেক এর ছবি

আমাদের মত করে দেশকে ভালবাসতে আর কয় জন পারে? আমাদের মত করে মায়ের ভাষাকে ভালবাসতে আর কয় দেশের মানুষ জানে? এই কয়টা জায়গায় আমি হিমালয়চূড়া, আর কাউকে ছাড় দিতে রাজি নই।
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

পড়ার জন্য সবিশেষ ধন্যবাদ।
দেশপ্রেমের ব্যাখ্যা কিংবা অনুভবের তীব্রতা ব্যাখ্যা করা যায় কিনা তা বলতে পারবো না। তবে আমার মনে হয়, দেশে কিংবা বিদেশে যেখানেই আমরা থাকি দেশপ্রেম কখনো কমে না।
ব্যক্তিগত অভিমত হলো, বিদেশে আসলে বিবিধ প্রয়োজনে বলতে হয় - আমি বাংলাদেশের মানুষ। বিশেষ করে বাংলাদেশ কোথায়, দেশের মানুষগুলো কেমন, ইতিহাস কিংবা সংস্কৃতির কথা প্রায়ই চলে আসে অবধারিতভাবে।বাংলাদেশ যে ইন্ডিয়া কিংবা পাকিস্তানের অংশ নয় সেটাও বলতে হয় মাঝে মধ্যে।দেশে থাকলে - নানা কারণে এতবার কাউকে বলা লাগে না, আমি বাংলাদেশের মানুষ, এতো জায়গায় লিখতে (হয়তো) হয় না - ন্যাশনালিটি: বাংলাদেশী। তাই বলে কী দেশপ্রেম কম থাকে? কখনোই না।
তাই বলি, দেশপ্রেমে আবেগ তো থাকবেই - দেশে কিংবা প্রবাসে।

আবারও ধন্যবাদ।

দ্রোহী এর ছবি

খুব সাধারণ গল্প কিন্তু শিমুলের কলমে লেখা তাই পড়তে অনবদ্য।
__________
কি মাঝি? ডরাইলা?

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

দ্রোহী মহোদয়, শুকরিয়া।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।