প্রসঙ্গঃ বিকৃত যৌন চিন্তা, চারা থেকে বৃক্ষ

মরুদ্যান এর ছবি
লিখেছেন মরুদ্যান [অতিথি] (তারিখ: শনি, ১৮/০৪/২০১৫ - ৩:০২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

অফিস থেকে বের হলাম তাড়াতাড়ি ডাক্তারের কাছে যাব বলে। ডার্লিং হারবার ব্রিজের উপর হাটতে হাটতে মাথায় অনেক কিছু ঘুরপাক খাচ্ছিল, নববর্ষের ঘটনা নিয়ে। এক বান্ধবী কে দেখলাম রাগ সম্বরণ করতে না পেরে ফেসবুকে অচেনা লোকজন (পড়ুন জানোয়ার) কে সমানে গালি দিয়ে যাচ্ছে। তাও যদি রাগ কমে। যে অবস্থা, যুক্তি তর্ক দিয়ে বুঝানোর মত ধৈর্য না আসলে দোষ দেয়া যায়না।

যৌনতায় বিকৃত রুচি বা পারভারশন ছেলেদের একদিনে গড়ে উঠে না। বীজ বপন হয় মূলত কৈশোরে, কারো কারো শৈশবে। তারপর আস্তে আস্তে ডালপালা গজায়। আমি যে প্যাটার্ন টার সাথে পরিচিত তার কথা বলি। কাছাকাছি বা সমবয়সী পুরুষেরা হয়তো রিলেট করতে পারবেন।

প্রথমে হাতে আসে একটা চটি বই। নিউজপ্রিন্ট, বাজে ছাপা, অস্পষ্ট কিছু নগ্ন নারীর ছবি। প্রথমেই যে কিশোরটি সব বুঝে তা না। কেন বাকি সবাই চটি পড়ে খিক খিক করে হাসে, হাত দিয়ে বিভিন্ন ইশারা ইংগিত করে বুঝতে পারেনা। নিজেকে মনে হয় বিরাট বোকাচো*। গালিটা আসলে দেয় বুঝদার বন্ধুরা। এরপর বুঝানোর দায়িত্ব নেয় কোন সমঝদার বন্ধু, ঘনিষ্ঠ বড় ভাই, এমনকি গৃহ শিক্ষক। এরকম ই এক শিক্ষক তার দুই ছাত্রকে একদা এভাবে বুঝিয়েছিল:

"রঙিলা ছবিতে উর্মিলার শরীর দেখে কোন অনুভূতি হয়?"

এক ছাত্র বলে না স্যার কিছুতো হয়না। আরেকজন চুপ। কান টান গরম হয়ে গেছে। তখন স্যার আবার জিজ্ঞেস করে "কিছু হয়না?"

"ভাল লাগে স্যার, বড় রা তো দেখতে দেয়না। তাই লুকায় দেখি।"

"শুধু ভাল লাগে? ওইটা একটু শক্ত হয়ে যায়না?"

পরের ডিটেইলে আর না যাই। এখানে বলে রাখি স্যার বুয়েটের ছাত্র, মেকা, বিম্পি নেতা, রেজাল্ট খারাপ ছিল না, পড়াতও ভাল। এভাবেই কিশোরের যৌন শিক্ষা শুরু। নিষিদ্ধ মজা আর বিকৃত ফ্যান্টাসিতে হাতে খড়ি। এদিকে সময়ের সাথে সাথে চটি সাপ্লাই বাড়ে। আসুন এবার চটিগুলাতে একটু তাকাই। কি আছে ভিতরে? বেশিরভাগ গল্প গুলো স্বামী-স্ত্রী বা প্রেমিক প্রেমিকা নিয়ে না বরং উলটো টা। বৌদি/ ভাবি-দেবর, ভাই-বোন, চাচি/ মামি/ খালা/ মা এর সাথে অবৈধ সম্পর্কের রগরগে কাহিনী। বলার অপেক্ষা রাখেনা বাস্তবতার সাথে এর হয়তো ১% ও মিল হয়না, কিন্তু কিশোর মনে এর প্রভাব অনেক। সে ভাবতে শুরু করে হয়তো চাইলে এরকম হওয়া আসলেই সম্ভব। এর সাথে যোগ হয় পর্ণ দেখা। আমাদের সময় কঠিন হলেও এখন পর্ণ পাওয়া কোন ব্যাপার ই না। চটি বা পর্ণে আরেকটা ব্যাপার আছে যেখানে প্রায়ই দেখানো হয় একটা মেয়ে বা নারী প্রথমে বাঁধা দিলেও পরে সে ধর্ষণ উপভোগ করা শুরু করে। আর তথাকথিত বাঙালি রক্ষণশীল পরিবারে যেহেতু এইসব ধর্ষণ টর্ষণ জাতীয় ব্যাপার নিয়ে টুঁ শব্দ করা হয়না, তাই ধর্ষণ ও হয়ে যায় শুধুই মজা।

দিন যায়, মাস যায়, বয়স বাড়ে চাহিদাও বাড়ে। এমন না যে এর মধ্যে ছেলে হুজুরের কাছে কুরান খতম দিচ্ছেনা, জুম্মায় যাচ্ছে না, রোজা রাখছে না, হিন্দু-খ্রিস্টান ঘৃণা করছেনা (আমি মুস্লিম তাই অভিজ্ঞতা মুসলিম সমাজের থেকে পাওয়া)। অবশ্যই কিছু কিছু ব্যতিক্রম থাকে, তবে খেয়াল করলে দেখা যায় এই ব্যতিক্রম ছেলেগুলোর পরিবার ও ব্যতিক্রম। প্রাথমিক শিক্ষা আর মূল্যবোধ গড়ার জন্য পরিবারের ভূমিকাই মুখ্য এটা স্বীকার না করে উপায় নেই। যাই হোক, চাহিদা বেড়ে গেছে, শুধু পড়ে, দেখে, জায়গায় হাত বুলিয়ে পোষায় না। বাস্তব অভিজ্ঞতার জন্য মনটা আঁকুপাঁকু করে। কিন্তু উপায় কি? গার্লফ্রেণ্ড আর কয়জনের থাকে? রূপোপজীবিনীর কাছে যাবে? ভাল শ্রেণীর কাছে যাওয়ার মত টাকা পয়সা হয়তো নেই, আবার একটু নিচের দিকের কাছে যাওয়াটাও রুচিতে কুলোয় না। পয়সা খরচ করে কি আর ফ্রীতে মজার মত মজা পাওয়া যায়? যাক, কুছপরোয়া নেই, চটি বইতেই সমাধান আছে। ঘরে কোন মেয়ে আত্মীয় থাকে? কোন কাজিন? থাকলে তার পিছনে ছোঁকছোঁক করা শুরু। যেমন বাথরুমে বা গোসলখানার দরজায় একটা সূক্ষ্ম ফুটা তৈরি করে নেয়া। আমার এক ক্লাসমেট ছিল যার শিকার তার আপন ফুফু। গভীর ঘুমের মধ্যে একটু আধটু হাতাহাতি করার সুযোগও পেয়েছিল সে।

আচ্ছা যদি এরকম কেউ না থাকে তবে? এরপরে তালিকায় চলে আসে কাজের মেয়ে বা মহিলা। কাজের মেয়েদের অসহায়ত্ব এখানে অনেক বড় ফ্যাক্টর। ধরা পড়লেও দোষ হয় মেয়েটার, বাসা থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়। লক্ষ্মী লক্ষ্মী ছেলেটার ভাগে জোটে বকা ঝকা, বড়জোর কয়েকটা চড় থাপ্পড়। একজন কে চিনতাম এস এস সি'র আগেই যার শিকার সংখ্যা তিন। যদিও তার দাবি ছিল সে কোন জোর জবস্তি করেনি, পটিয়েছে। সত্য না মিথ্যা বিশ্বাসের ভার পাঠকের উপর ছেড়ে দিলাম।

যারা নববর্ষের দিনে ভুভুজেলা বাজিয়ে বস্ত্র হরণ উৎসবে অংশ নিলো তাদের অনেকের পিছনের গল্পটাও হয়তো এমন। মেয়েদেরকে তারা শুধু মাল হিসাবেই ভেবেছে, ভাবে, ভাববে। দরজার ফুটো দিয়ে আস্তে আস্তে একটা শরীর নিরাভরণ হতে দেখার আনন্দ কে তারা সেলিব্রেট করে এবার নিজেরাই বস্ত্র হরণের মাধ্যমে। বেশি সাহসীরা নিজ হাতে করে, কম সাহসীরা চোখ দিয়ে করে।

সমাধান কি? শুধু ধর্ম যে সমাধান না সেটা মনে হয় নতুন করে বলার কিছু নাই। যারা এসব করে বা বুক ফুলিয়ে সমর্থন করে তাদের মধ্য ধর্ম হীনতার কোন লক্ষণ দেখিনা। অন্তত মুখে মুখে আর ফেসবুকে তারা খাঁটি ধার্মিক। ইহারা খাঁটি মুসলিম না বলে লাভ নাই, কারণ এই দোহাই দিয়ে আর এই শ্রেণীকে অবজ্ঞা করা যাচ্ছেনা। ধর্ম দিয়ে সমাধান করতে চাইলে (প্রকৃত/ সহিহ) ধর্মগুরুদের কার্যকর কোন রাস্তা বের করতে হবে, প্রচলিত রাস্তায় কাজ হচ্ছেনা। এর আরও বড় প্রমাণ মাদ্রাসা ছাত্ররাও কেলেঙ্কারির বাইরে না। ধর্ম চায় অবদমিত যৌনাকাঙ্ক্ষা, যার ফলাফল আমাদের সামনে। তাই পাপের শাস্তির ভয়ের পাশাপাশি আরেকটু বেশি কিছু জরুরী।

সামনের প্রজন্ম কে যদি সুস্থ দেখতে হয় পরিবারকে এগিয়ে আসতে হবে, যদিও তার জন্য সচেতন বাবা মা অনস্বীকার্য। আমার মতে এটা অনেক বড় একটা চ্যালেঞ্জ। ঘরে ঘরে যা দেখছি, আমি বড্ড হতাশ!

বাংলাদেশে আরেকটা ব্যাপার (যেটা আমাকেও অনেক ভুগিয়েছে) সেটা হল বালক বালিকা থেকে কিশোর কিশোরী পর্যায়ে উত্তরণের সাথে সাথে বাবা মায়েরা তাদের মেলামেশা কে সন্দেহের চোখে দেখা শুরু করেন। যেন একা চোখের আড়াল হলেই আজে বাজে কিছু করে ফেলবে। মেয়েদেরকে কোন কারণ ছাড়াই ছেলেদের সামনে নিষিদ্ধ গন্ধম ফল হিসাবে উপস্থাপন করা হয়। বন্ধুত্ব থেকে যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা বোধ তৈরি হতে পারত সেই সুযোগ টা নষ্ট করে দেয়া হয়।

কাপড় চোপড়ের পয়েন্ট এনে পোস্ট আর দীর্ঘায়ত করবোনা, অনেকে অনেক বার বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে প্রমাণ করেছেন যে এই যুক্তি কতটা খোঁড়া।

বিঃ দ্রঃ উপরে যে প্যাটার্ন টা দেখাতে চেয়েছি, সবই আশে পাশের এবং নিজের জীবন থেকে নেয়া, এবং অবশ্যই একমাত্র এবং অনন্য নয়।


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

"যৌন-অবদমন/বিকৃত-যৌন-চিন্তা থেকে যৌন সন্ত্রাস" এই থিয়রীটা শুনতে ভালো হলেও আমার মতে ভুল। ২ টা আলাদা জিনিসকে এখানে একত্রে গুলিয়ে ফেলা হচ্ছে:
এই ২টা জিনিস আলাদা :
১। তরুণ বয়সের যৌন বাসনা (স্বাভাবিক ব্যাপার)
২। সেই বাসনা মেটাতে অন্যায়, ভায়োলেন্স-এর সাহায্য নেয়া।
প্রবল আবদমিত যৌন বাসনা (এবং সেটা থেকে যৌন পার্ভারশন) সাধারণ ব্যাপার, বিশেষ করে বাংলাদেশের মত রক্ষণশীল সমাজে, কিন্তু সেটা মেটাতে গিয়ে আপনি যখন সন্ত্রাসের আশ্রয় নেন, তখন সেটা আপনার মূল্যবোধের সমস্যা, আপনার মানবিক-অধিকার-বোধ থেকে আপনার পশুসম-পাওয়ার-গেম এর বোধ বেশী শক্তিশালী, সেটাই বোঝা যায়। অবদমিত যৌন বাসনা নিয়ে ঘোরেন বাংলাদেশের অধিকাংশ তরুণ, কিন্তু সাথে তাদের অনেকের মনেই এই বোধটাও আছে যা চাইলেই চট করে কারো শরীরে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়া যায় না। যৌন সন্ত্রাস একটি পাওয়ার গেম বলেই বাংলাদেশে মধ্যবিত্ত বা উচ্চ-মধ্যবত্ত সমাজে অনেক গৃহকর্মী এর শিকার হন, যেটার কথা আপনিও বললেন। যে গার্মেন্টস শিল্প আমাদের অনেক নিম্নবিত্ত মেয়েকে অর্থনৈতিক ও কিছুটা মানবিক স্বাধীনতা দিয়েছে, সেটা দেখে আমাদের অনেক পাওয়ার-গেম ওয়ালা পুরুষ বিপন্ন বোধ করেন, তাই সেই মেয়েদেরকে তাদের "সঠিক জায়গা" বুঝিয়ে দিতে যৌন-সন্ত্রাস ঘটান, সেটার সাথে যৌন অবদমনের/যৌন-পারভার্শনের সম্পর্ক প্রায় শূন্য।

ধর্ষণ/যৌন সন্ত্রাসের সাথে যৌনতার সম্পর্ক যতটুকু, তার থেকে বেশী সম্পর্ক ভায়োলেন্স বা ক্ষমতা প্রদর্শনের।

এই বিষয়ে লেখার জন্য ধন্যবাদ, কথা হওয়াটা জরুরী।

-----যান্ত্রিক বাঙালি

আয়নামতি এর ছবি

চলুক

মরুদ্যান এর ছবি

অবদমিত যৌন বাসনা নিয়ে ঘোরেন বাংলাদেশের অধিকাংশ তরুণ, কিন্তু সাথে তাদের অনেকের মনেই এই বোধটাও আছে যা চাইলেই চট করে কারো শরীরে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়া যায় না।

// যাদের মনে বোধটা আছে তারা ঝাঁপিয়ে পড়েনা। কেউ কেউ ধর্মের কারণেও দ্বিধা বোধ করে। তবে এই বোধ টা প্রকৃতপক্ষে কয়জন মানুষের মধ‌্যে আসে সে হিসাবটাও জরুরী। সংখ্যাটা যে অনেক অনেক বেশি ফেসবুক ওড়না গ্রুপ গুলাতে ঢুঁ মারলে বুঝবেন। অল্প কিছু তরুণ খারাপ, বাকি সবাই বোধসম্পন্ন হলে ১৪ তারিখে মাত্র ৩ জন তরুণ এগিয়ে যেতনা, যেত ৩০০ জন, নিদেন পক্ষে ৩০ জন? ওই ১৪-১৫ জনের হাত ভাঙা ছবি দেখতাম। আর এটাও দেখতাম না যে মেয়ে পর্দা করেনাই কেন, সব মেয়ের দুষ বলে লোকে হাহাকার করতেসে।

এবার আসি অপরিণত বয়সে বিকৃত যৌনতার সাথে পরিচয় মনে কি লেভেলের প্রভাব ফেলতে পারে। একটা এক্সট্রিম কিন্তু সত্যি উদাহরণ দেই। এক কিশোর তার কৈশোর আর যৌবনে একটা বিশেষ স্বপ্নদোষ নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন, সে না চাইতেও মায়ের সাথে সহবাসের স্বপ্ন দেখে ঘুমের মধ্যে। এবং ঘুম ভাঙার পর সেটা নিয়ে তীব্র অপরাধবোধে ভুগে। তার কথামত সচেতন ভাবে কোন দিন ও সে তার মা কে নিয়ে ঘুণাক্ষরেও কোন ফ্যান্টাসি করেনাই। কিন্তু কোন একটা কারণে তার অবচেতন মন বারবার তার সামনে স্বপ্নটা নিয়ে আসে।

নিচে লহমাদা যা বলেছেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না থাকাটাও এই সব অপরাধকে তরান্বিত করে। অস্ট্রেলিয়া তে খুনের জন্যও সহজে যাবজ্জীবন দেয়না। সেখানে লেবানিজ এক গ্যাং রেপ লিডারকে ৫৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। পরে যদিও আপিল করে সেটা হয়েছে ৩৩ বছর। এরকম শাস্তি বেশ কয়েকজনের না হলে এসব অপরাধ থাম্বে না। আইন বানাইলেই হবেনা, প্রয়োগ থাকতে হবে।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

আয়নামতি এর ছবি

ইয়ে, মানে...

মরুদ্যান এর ছবি

বিব্রত?

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

ইয়ামেন এর ছবি

"বাংলাদেশে আরেকটা ব্যাপার (যেটা আমাকেও অনেক ভুগিয়েছে) সেটা হল বালক বালিকা থেকে কিশোর কিশোরী পর্যায়ে উত্তরণের সাথে সাথে বাবা মায়েরা তাদের মেলামেশা কে সন্দেহের চোখে দেখা শুরু করেন। যেন একা চোখের আড়াল হলেই আজে বাজে কিছু করে ফেলবে। মেয়েদেরকে কোন কারণ ছাড়াই ছেলেদের সামনে নিষিদ্ধ গন্ধম ফল হিসাবে উপস্থাপন করা হয়। বন্ধুত্ব থেকে যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা বোধ তৈরি হতে পারত সেই সুযোগ টা নষ্ট করে দেয়া হয়।"

এর সাথে আরেকটু যোগ করতে হয়, যেই পয়েন্টটা আমার এক পরিচিত আপু তার ফেসবুকে স্ট্যাটাসে খুব সুন্দর করে গুছিয়ে লিখেছিলেন। সেটা এখানে হুবহু তুলে দিলামঃ

"অনেক মায়েরাই মনে করে দেশের সকল মেয়ে ও মেয়ের মা তার ছেলেটাকে তার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়ার জন্যে জাল বিছিয়ে বসে আছে এবং মেয়েরা "খারাপ" এই মন্ত্রে দীক্ষিত করেন ছেলেকে নিজের অজান্তেই।"

কথাটা সত্যি, নিজের জীবনে অনেক বন্ধুদের মাকে দেখেছি, আমার মায়ের মধ্যেও মৃদু প্রবনতা দেখেছি এমন, যদিও প্রবল আকারে না। এটাও একটা কারন কেন আমাদের সমাজের ছেলেরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে নারীদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে বড় হয়ে উঠে না।

আর আমাদের সমাজে নারী-পুরুশের মেলামেশা বা সেক্স জিনিসটাকে ট্যাবু হিসেবে পরিবেশন করার পিছনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোরও হাত আছে। নিজের জীবন থেকে নেয়া উদহারন দেই। আমি ছোটবেলায় পড়েছি দেশের অনেক নামকরা এক ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে। ষষ্ঠ শ্রেনিতে যখন উঠলাম তখন স্কুলের প্রথম দিন সকালে ম্যাডাম আমাদের সবার কাছে জানতে চাইলেন আমরা সাথে নতুন বায়োলজি বইটা এনেছি কিনা, এবং বললেন আজকে যাতে আমরা যার যার বই তাঁর কাছে জমা রেখে যাই, কালকে ফিরত পাব। আমরা তাই করলাম। পরের দিন বই ফেরত পেলাম। এর কয়েকদিন পর এক সহপাঠী (যে কিনা প্রথম দিন অসুস্থতার জন্য ক্লাসে আসেনি) র কাছে টিফিন ব্রেকে আমরা শুনলাম আমাদের বায়োলজি বইতে নাকি মেয়েদের যৌনাঙ্গের ডায়াগ্রাম আছে। সবাই অতিউৎসাহী হয়ে নিজেদের বায়োলজি বই বের করে খুলে বসলাম, কিন্তু বিধি বাম কারো বইয়েই সেই পাতাগুলো নেই, খালি যেই সহপাঠী আমাদেরকে খবরটা দিল, তার বইতেই আছে। তখন আমরা বুঝলাম যে প্রথম দিন ম্যাডাম কি জন্য বইটা আমাদের কাছ থেকে রেখে দিয়েছিলেন। বলাই বাহুল্য, পরের কয়েকদিন সেই সহপাঠী সব ছেলেদের মধ্যে অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল!
এভাবেই মেয়েদের এবং সেক্স বস্তুটিকে একটু নিষিদ্ধ কৌতূহলের বস্তু হিসেবে পরিবেশন করা হয়। এসবের একটা এফেক্ট নিশ্চয় পড়ে।

--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...

মরুদ্যান এর ছবি

হ্যাঁ পড়ে। চলুক

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

আয়নামতি এর ছবি

কিঞ্চিৎ।
বাণী বসুর 'খারাপ ছেলে'র একখানা রিভিউ পড়েছিলাম।
সেখানে রিভু লেখক নিজে পুরুষ বলে লজ্জা প্রকাশ করে পুরুষজাতিকে কিছুটা ডলা দিয়েছিলেন।
আমার খুব বলতে ইচ্ছে করেছিল, পিতিমির সব পুরুষ তো আর খারাপ না।
এই ভালোর মধ্যে আমার বাবা আছেন, চাচা/মামা/ভাইয়া প্রিয় বন্ধুটাও সহ আরো অনেকে আছেন।
আপনার লেখাটা পড়ে ছেলেদের এই অচেনা জগৎ সম্পর্কে জেনে ভাবলাম মেয়েদের তো এমন খাটাশ মার্কা জগৎ
নেই। কিংবা কি জানি রে বাবা হয়ত আছে আমি মাথামোটা জানিনা। অজ্ঞতা কিছু সময়ে আর্শিবাদ বটে।
-----
আচ্ছা আপনি তো সিডনী থাকেন না তাহলে ডার্লিং ব্রীজে ঘোরাঘুরি কি জন্যে চিন্তিত
হেহেহে এমনি কৌতুহল হলো ট্যাক্সটুক্স চাইবো না।

মরুদ্যান এর ছবি

লেখাটা সরলীকরণ দোষে দুষ্ট মনে হতে পারে। কিন্তু আমি বলতে চাইনি যে সমগ্র পুরুষ জাতি এই রকম। জেনে আরো প্রীত হবেন যে শুরুটা অনেকের এরকম হলেও নিজ গুণে পরবর্তী তে পরিবর্তিত হয়েছেন। কিন্তু এই গল্পগুলা জানা জরুরী কারণ
দাওয়াই বানানোর জন্য রোগের প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে জানা দরকার।

আমি তো গত আড়াই বছর ধরে সিডনী! ক্যান মনে হইল এই কথা?

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

আয়নামতি এর ছবি

অবশ্যই রোগ সারাবার জন্য সমস্যার উৎসটা জানা জরুরী, এবং এ নিয়ে আলোচনা আরো বেশি বেশি হওয়া দরকার।
কিন্তু যাদের উদ্দেশ্যে আলোচনা তারা কতটুকু এসব পড়ে তা নিয়ে সন্দেহ আছে রে!
আবার পড়লেই 'কাল থেকে ঠিক মানুষ হবো তোমার কথা মত'র সম্ভাবনা কতটুকু সেটাও জানিনা।
তবে হাল ছাড়লে হবে না, দরকারে চাবকে ঠিক করতে হবে।
--------
দেখলেন তু কেমন জেনে গেলেম কই থাকেন শয়তানী হাসি সময়মত হামলা চালানো যাবে। ভাবীকে বলে রাখবেন ভালুমন্দ দুইটা রান্না করে রাখতে দেঁতো হাসি মজা করলাম রে! কোন একটা পোস্টে ইয়াসির আরাফাত ভাইয়ের সাথে আপনার কথোপকথন
পড়েছিলাম এবং ওটাতে পেজগি লেগেছে। সরি হা হাসি

মরুদ্যান এর ছবি

হ তা ঠিক, ওড়না বা বাঁশের কেল্লার লোকজন তো সচল পড়েনা। আম্রাই পড়ি আমরাই লিখি। ফেসবুক সেলিবিটি হয়ে যান, তাইলে সবাই পড়বে। চোখ টিপি

ভাবি লাগবেনা, রান্না আমিও পারি। আর ইয়াসির ভাই আমার আশে পাশেই থাকেন। নু প্রব্লেমো!

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

আয়নামতি এর ছবি

পোস্টটা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ, মন্তব্যের আলোচনায় চোখ রাখছি। জানার পরিধি বাড়ছে।
এরকম পোস্টে হালকা কথা বলাটা হয়ত ঠিক না।
কিন্তু এরকম একটা লক্ষি ভাইয়ার দাওয়াতে সাড়া না দেয়াটা কেমন জানি!
আপনি যখন রন্ধন পটিয়সি নিজেই দাবী করিলেন, তাহলে জিলাপির রেসিপি নিয়ে সচিত্র একটা পোস্ট দেন।
আশাদিকেও বলেছিলেম কথা রাখেনি পাষাণী মহিলা! ভাইয়া আমি তো ফেবুতে একাউন্ট খুলে ফেলেছি রে দেঁতো হাসি
অনেক ধন্যবাদ আন্তরিক মন্তব্যের জন্য।

মরুদ্যান এর ছবি

এতকিছু থাকতে জিলাপি(র প্যাঁচ)? আশাদি তো খালি কেক কুক বানায়। ফেবু একাউন্ট খুঁজুম কেমতে?

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

অতিথি লেখক এর ছবি

মেয়েদের এমন খাটাশ মার্কা জগৎ মনে হয় নেই, অন্তত আমার জানা মতেও। ভাগ্যিস নেই, সারাজীবন ধরে তাই ছেলেদের ‘মাল’ ভেবে যাওয়ার মতন অতিষ্ঠকর অভিজ্ঞতা আমাদের হয় না।

দেবদ্যুতি

মরুদ্যান এর ছবি

একদম নেই, তা না। কিন্তু এরকম ভয়ানক ভাবে নেই হয়তো।

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

অতিথি লেখক এর ছবি

খুব চমৎকারভাবে পুরো বিষয়টাকে উপস্থাপন করার জন্য ধন্যবাদ। এই সমাজের নষ্টের মূল এই সমাজ ব্যবস্থা নিজেই।পরিবার থেকেই সুস্থধারার বীজটা বপন করে দেওয়া উচিত।আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করলেই হয়ত এই ব্যামোর উপযুক্ত প্রতিষেধক তৈরি করতে পারব।
-নিশ্চুপ আগন্তুক

মরুদ্যান এর ছবি

মন্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা জানবেন।

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

আমি ছেলেদের বয়ঃসন্ধিকালের জটিলতা, পরিবারের সদস্যদের সাথে দূরত্ব, বন্ধুদের হাত ধরে নিষিদ্ধ জগতে প্রবেশ বা হাতছানি থেকে দূরে থাকা এসব নিয়ে একটা উপন্যাস লিখতে শুরু করেছি মাস দুয়েক আগে কিন্তু এই অভিজ্ঞতাগুলো আমার অজানা তাই সময় লাগছে। আমি মেয়েদেরটা জানি পূর্বাপর কিন্তু আমার ছেলের জন্য সবটুকু শিক্ষা আমি বা ওর বাবা নিজেরা দিতে চাই, ও যেন ভাল খারাপের পার্থক্য বুঝতে পারে। ভালকে জানার জন্য খারাপটাও জানা জরুরি, সেই সাথে জরুরি হলো খারাপের কতটুকু ও বর্জন করবে বা খারাপকে কাছে রেখেও ভাল থাকবে। আপনার ভাষাপ্রয়োগের দক্ষতা ভাল লাগলো। আমার ভেতরে অনেক শব্দের সংকোচ কাজ করছে লেখাটা লিখতে গিয়ে, তাই লেখাটা এগুচ্ছে না। ভাবছি ছেলেকে বড় করতে করতে যা যা ফেস করবো সব লিখে রাখবো, লাগুক সময়।
আপনার এই লেখাটা বুকমার্ক করে রাখলাম। আমার কাজে লাগবে নিশ্চিত।

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

মরুদ্যান এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

অতিথি লেখক এর ছবি

এমন অনেকেই আবার আছে-যারা হয়ত এমন কাজ করবেই না কখনও-সে হাত বা চোখ যাই দিয়ে হোক না কেন কিন্তু ছোটবেলার চটি বা তারপর পর্নের যে ফ্যান্টাসি তাদের মনে শিকড় গেড়ে বসেছে, তা থেকেও বের হতে পারে না সারাজীবন... এইসব জিনিসে আসক্তি একটা মানুষের মন নষ্ট করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট।

দেবদ্যুতি

মরুদ্যান এর ছবি

যান্ত্রিক বাঙালির কমেন্টের জবাবে একটা বাস্তব উদাহরণ দিয়েছি দেখে নিতে পারেন।

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

অতিথি লেখক এর ছবি

দেখলুম, আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

দেবদ্যুতি

এক লহমা এর ছবি

৫ তারা।
মরুদ্যান-এর এই লেখার সাথে আমাদের বয়স বাড়ার দিনগুলোর যে ছবি আমার পরিচিত তার প্রবল মিল।

সময়ের সাথে, মেয়েরা আরো অনেক সংখ্যায় বাইরের জগতে প্রবেশ করার সাথে সাথে, ছেলে-মেয়েদের পরস্পরের সাথে মেশামেশি বড়রা আরো সহজে মেনে নেওয়ার সাথে সাথে, এই কদর্যতা কমে আসার আসা ছিল। খানিকটা কমেওছে হয়ত। তবে, মেয়েদের অধিকার-কে পুরুষের অধিকারের সমান মনে করতে না পারার গোড়ার বদামীটার কারণে মেয়েদেরকে 'মাল' মনে করার ইতরামি মানসিকতা থেকে যতদিন ছেলেরা উঠে না আসছে ততদিন তাদের একটা বড় অংশ সুযোগ পেলেই এই নোংরামি করেই যাবে বা করায় মদত দিয়েই যাবে। এবং খলের কোনদিনই ছলের অভাব হবে না।

শাস্তির ব্যবস্থা থাকলে ভয়ের চোটে অনেকে কুকর্ম করার লোভটা সামলে নেয়। যেখানে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ভয় থাকে না, সেখানে ত বদমাশদের মজাই মজা। তখন আর লুকিয়ে-চুরিয়েও করতে লাগে না। প্রকাশ্যেই অত্যাচার চালানো যায়।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

মরুদ্যান এর ছবি

ধন্যবাদ লহমাদা। বাংলাদেশে এখন এক যুদ্ধাপরাধ ছাড়া কোন অপরাধের ই শাস্তি নিয়ে প্রশাসনের মাথা ব্যাথা নাই। তাও ভাল শেখের বেটির দৃঢ়তার কারণে এই সুদিন দেখা গেল। নাইলে ইহাও স্বপ্নই থাকিতো।

পুলিশ উকিল জজ ম্যাজিস্ট্রেট সব জায়গায় মৌন প্রত্যক্ষ পরোক্ষ মদদ দাতা লোক ভুরি ভুরি। কেম্নে কি হবে। আজকাল সিসি টিভি ক্যামেরারাও সিলেক্টিভ ফুটেজ তুলে। হায়!!!

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

মন মাঝি এর ছবি

আধুনিক ও প্রাচীণ রীতিনীতি দু'টোই একসাথে চালাতে গেলে এইরকম বিকৃতি মনে হয় দেখা দেবেই। দু'টোর একটাকে বেছে নিতে হবে। সবরকম নীতির চাপে বাস্তবতা তো হাওয়া হয়ে যাবে না। কিন্তু বাংলাদেশে কি প্রাচীণ নীতি সৎ ভাবে, প্রকাশ্যে / আনুষ্ঠানিক ভাবে বাদ দেয়া সম্ভব?

****************************************

মরুদ্যান এর ছবি

এখনও নয়। এমনকি হাল্কা পাতলা কিছু বলতে গেলেও অভিজিৎ দার মত পরিণতি হবে।

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার লেখাটা দেখার আগেই আরেকটা লেখা লিখে জমা দিয়েছি সচলে। মডু রা দেখাবেন কিনা জানি না।

তবে কথা শতভাগ সত্য যে এই যৌন বিকৃতি ও সুস্থ যৌন শিক্ষার অভাব আমাদের এই সামাজিক অবক্ষয়ের কারণ।

মরুদ্যান এর ছবি

চলুক

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

রিয়াজ এর ছবি

এখন সম্ভবত চটি বই নয়, কৈশোরেই মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানদের হাতে মোবাইল ফোন চলে আসায় মোবাইলে পর্নো দেখেই রুচিবিকৃতির উন্মেষ হয়। অন্তত, শহরে তাই দেখেছি।

চটি বা পর্নো আসলে রোগ নয়, উপসর্গ মাত্র। মূল রোগ সম্ভবত সম্ভবত মানুষকে লিঙ্গ দিয়ে মাপতে শেখানো, অপরাধীদের দায়মুক্তি আর সামাজিক প্রতিরোধ না থাকা।

-রিয়াজ

মরুদ্যান এর ছবি

আমার সময়ে ছিলনা। আজ থেকে প্রায় ১৭-১৮ বছর আগে যখন আমি প্রথম এই জগতের সাথে পরিচিত হই। আমি প্রচণ্ড বই পড়ুয়া ছিলাম, অন্য কিছুর জন্য তেমন সময় দিতাম না। এই কারণ টাই হয়তো আমাকে অনেক দেরি করিয়ে দিয়েছিল হাসি । আমার বন্ধুরা ততদিনে পি এইচ ডি করে ফেলেছে ।

চটি বা পর্ণ বন্ধ হবেনা। কিন্তু সেটার প্রভাব যাতে ভয়াবহ না হয় সেরকম কিছু করা জরুরী। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

তিথীডোর এর ছবি

ভাল লেখা। চলুক

এই ইস্যু নিয়ে তিক্ত তর্কাতর্কি করতে করতে ক্লান্ত! একটা খাটাশের ভিড্যু দিয়ে গেলাম, কাপড় চোপড়ের পয়েন্ট এনে যারা এ জাতীয় জারজদের সমর্থন করেন, তাদের জন্য : মুমিনা, বোরখা পরেও বাঁচবে না।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

মরুদ্যান এর ছবি

অন্তত একটাও যদি লাইনে আসতো!

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

মাসুদ সজীব এর ছবি

আমার এক বন্ধু ছিলো পাঁচ বেলা নামাজ পড়তো আর ঘরের বোবা কাজের মেয়ের সাথে জোর করে রাতে সহবাস করতো। বোবা একটা কাজের মেয়ের সাথে দিনের পর দিন চলেছে এমন পাষবিক নির্যাতন। সেই বন্ধুর মামাতো ভাই অসংখ্য শরীরতাত্ত্বিক সম্পর্কে জড়িয়েছে পরবাসী স্বামীদের স্ত্রীর সাথে।অবৈধ সম্পর্কের এমন অসংখ্য অভিজ্ঞতায় ভরা চারপাশ দিয়ে আমি বড় হয়েছি। শহরের তুলনায় গ্রামে এই সম্পর্ক বেশি।

এমন যৌনবিকৃতির জন্যে পারিবারিক শিক্ষা, মূল্যবোধের পাশাপাশি আরেকটি বড় কারন হলো বিনোদনের অভাব। বাঙালি পুরুষের জীবনে বিনোদন বলতে নারী, নারীর জীবনে প্রেম/বিবাহ। শিশু তথা নতুন প্রজন্ম কে বই পড়া, ঘুরতে যাওয়ার মতো বিশুদ্ধ বিনোদনগুলো তে নিজেকে নিবিষ্ট করতে না পারলে যৌনতাই একমাত্র বিনোদন হয়ে দাঁড়াবে তাদের কাছে আর তখন এমন ঘটনা দিন দিন বাড়তেই থাকবে। তাই সন্তান কে বই পড়তে, ঘুরতে, চিত্রকল্পে সহ নানান সংস্কৃতিক কাজে আগ্রহী করে তুলতে হবে। টেলিভিশন যত কম দেখানো যায় তত ভালো। টেলিভিশন মানুষের ক্রিয়েটিভিটি নষ্ট করে দেয়।

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

মরুদ্যান এর ছবি

গ্রামের ব্যাপারগুলা শুনেছি চাচাতো ভাইদের মুখে।কখনো থাকিনি তাই ধারণা কম।

এখন টিভির উপর যোগ হয়েছে ট্যাব আর মোবাইল।টিভির চেয়ে আরো খারাপ এগুলা।

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

মরুদ্যান এর ছবি

ডুপ্লি ঘ্যাচাং

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

ভালো লিখেছো ভাইয়া!

আরও অনেক কিছু বলার ছিলো, লিখতে পারছিনা। কথা হইলে কখনও বলবো নাহয়!

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

মরুদ্যান এর ছবি

লিখতে পারলিনা কেন? অনেক ব্যস্ত নাকি মাইগ্রেন?

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

অতিথি লেখক এর ছবি

অনেক ভালো একটা লেখা। পড়েছি আগেই সুযোগের অভাবে মন্তব্য করা হয়নি।

এই বিকৃতি আসলে অনেকটাই পারিবারিক শিক্ষার উপর নির্ভর করে। প্রাথমিক বা মাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠক্রমে যেহেতু যৌ্যনশিক্ষার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত নয় সেহেতু এক্ষেত্রে পরিবারকেই দ্বায়িত্বটা পালন করতে হবে। এবার সম্ভবত িবষয়টি পাঠক্রমের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল, কিন্তু মোল্লাদের হইহই আর গেল গেল রবে তা বহাল আছে কিনা জানি না। একইসাথে নিপীড়নরোধী কঠোর আইন ও তার প্রয়োগটা জরুরি।

স্বয়ম

মরুদ্যান এর ছবি

ধন্যবাদ স্বয়ম।

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

পুলাপানের নষ্ট হইবার জন্য বাপ মা সমাজ রাষ্ট্র সক্কলে দায়ী। কিছু কারণ উপরে আছে। তাও লেখলাম

১। খেলাধুলার জায়গা নাই
২। স্ত্রীজাতি মাত্রেই ট্যাবু
৩। প্রজনন অঙ্গ ভয়াবহ ট্যাবু
৪। যৌনতার পুরা সিলেবাস কাভার করে বন্ধুবান্ধবে আর কিছু বেলাইনের লুক
৫। ক্রিয়েটিভ কাজে উৎসাহ দেয় না বাসা থিকা (খালি কয় পড়ো, কেলাসে ফাষ্ট হৈতৈব)
৬। পড়ালেখায় কিঞ্চিৎ ভালো হইলে সাত খুন মাফ
৭। বাপেরা অফিস থিকা আইসা এত টায়ার্ড থাকেন যে পোলা কই যায়, কাগো লগে মিশে, কিরাম কথাবার্তা কয় কিচ্ছু জানার টাইম নাই। শিক্ষাদীক্ষার পুরা দায়িত্ব খালি মাস্টরগো।
৮। বউ আর পরিচারিকা পিটানী এখনও অনেক জায়গায় কমন, সম্মান তৈরি হৈব কৈত্থিকা?

লিস্টি বানাইতে থাকলে ইনফিনিটি হয়া যায়...........................................

মরুদ্যান এর ছবি

বুলেট পয়েন্টে একবারে সব কৈয়া দেওনের জন্য ধইন্যা।

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

এক লহমা এর ছবি

চলুক

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

মন মাঝি এর ছবি

এর সাথে আরেকটা যোগ দিতে পারেন হয়তোঃ

৯। ছেলেদের দায়িত্ব নিতে সক্ষমভাবে পুরোপুরি স্বাবলম্বী হতে দেরি হওয়া...

****************************************

মরুদ্যান এর ছবি

১০। সুস্থ বিনোদনের অভাব। পাড়ার খেলাঘর, ক্লাব, সাংস্কৃতিক সংঘ ইত্যাদি হারিয়ে যাওয়া।

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

নীড় সন্ধানী এর ছবি

আপনার পর্যবেক্ষণের সাথে আমি মোটামুটি একমত। এসব ঘটনার পেছনের সুত্রগুলোর উৎপত্তি ওখানেই। প্রাসঙ্গিক ভাবে মনে পড়লো গতকাল ফেসবুকে এক খবিসের ১০ মিনিটের ভিডিও নসিহত দেখার দুর্ভাগ্য হয়েছে। হাতের কাছে পেলে থাবড়িয়ে কানের পটকা ফাটিয়ে ফেলতাম। খবিসটার বক্তব্যের মূল অংশ ছিল আমরা কেন পহেলা বৈশাখ পালন করি, ওটা আমাদের কিছু না, হিন্দুদের সংস্কৃতি। পহেলা বৈশাখে তো মেয়েরা শরীর দেখিয়ে বেলেল্লাপনা করে। এই জাতীয় খবিস এদেশে প্রচুর। এরা এত কিছু থাকতে পহেলা বৈশাখে মেয়েদের শরীরে বেলেল্লাপনা খোঁজে, যে অনুষ্ঠানে মেয়েরা সবচেয়ে শালীন পোষাকে থাকে। বাংলাদেশের তরুণদের যৌনতা বিষয়ক যে কথাগুলো আসছে, আমার মনে হয় পহেলা বৈশাখের আক্রমণের ঘটনার কারণ তার চেয়ে অনেক গভীর, অনেক বেশী পরিকল্পিত। আমি প্রায় নিশ্চিত এখানে যৌনতার সমস্যার চেয়েও গুরুতর হলো সংস্কৃতি বিষয়ক সমস্যা। যারা বাঙালী সংস্কৃতি ঐতিহ্য ইত্যাদিকে মেনে নিতে পারে না, তারা মেয়েদের পোষাক শরীর ইত্যাদির ধুয়া তোলে। আর এই জাতীয় ঘটনাগুলোর শাস্তি না হওয়াটা সবচেয়ে মারাত্মক। এখনই ভয়ানক কোন শাস্তির দৃষ্টান্ত দাঁড় করাতে না পারলে আমাদের আরো দেখতে হবে এরকম ঘটনা।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

মরুদ্যান এর ছবি

আমি জানিনা, পরিকল্পিত রাজনৈতিক কোন পরিকল্পনার অংশ কিনা এই ঘটনা। কিন্তু ওড়না গলায় দেয়া/ ওড়না ছাড়া/ হিজাব ছাড়া চলা মানেই যে 'I am available' না এটা কে শিখাবে? শাড়ি নিয়ে অনেকের ফেটিশ আছে আমার জানামতে। একই মেয়ে সালোয়ার কামিজের চেয়ে শাড়ি পড়লে তাকে বেশি সেক্সি লাগে আর ***** মনে চায় এরকম কথা আড্ডায় হরহামেশা শুনেছি।

আমার মতে আকর্ষণীয় চেহারা, শরীর সৌষ্ঠবের অধিকারী মেয়েদের প্রতি ছেলেদের আকর্ষণ থাকবেই, সেটাই স্বাভাবিক, সেটা মানসিক হোক বা শারীরিক। অস্ট্রেলিয়া বিশেষ করে সিডনীর লোকজন বেশ সাহায্য ভাবাপন্ন (আমার অভিজ্ঞতা, অন্য কোন স্টেটে থাকিনাই), দয়ালু, আপনি একটু পড়ে গেলে ঠিক আছেন কিনা জিজ্ঞেস করার লোকের অভাব নাই। আমি যেখানে কাজ করি একি বিল্ডিংয়ে আরেকটা কোম্পানি আছে, যেখান সুন্দরী মেয়ে অনেক। অফিসের চারপাশে পাব আর ক্লাব। ফ্রাইডে নাইটে মাইক্রো ন্যানো সব রকম পোশাকে মেয়েরা আসে। অসি পুরুষেরা তাকায় না তা না, তাকায়, পাশের জন কে দেখায়, মনে মনে অনেক কিছু কামনাও করে। কিন্তু আজে বাজে ঘটনার নজির কম, কারণ শাস্তি আর সামাজিক বয়কট। যেখানে আমাদের দেশে পুরুষ মানে নদীর পানি আর মেয়ে মানে পুকুরের পানি এই জিনিস শিখানো হয়। পুকুরের পানি ময়লা হলে সেটার আর গ্রহণযোগ্যতা নাই, তাই "বাসায় থাক, সাবধানে থাক", "শেয়াল কুকুর ঘুরবেই, নিজেকে সাবধানে থাকতে হবে", এইসব সবক দেয়া হয়। উপরে মন মাঝি ভাইয়ের কথাটা ভাল্লাগসেঃ "আধুনিক ও প্রাচীন রীতিনীতি দু'টোই একসাথে চালাতে গেলে এইরকম বিকৃতি মনে হয় দেখা দেবেই। দু'টোর একটাকে বেছে নিতে হবে। সবরকম নীতির চাপে বাস্তবতা তো হাওয়া হয়ে যাবে না।"

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

মানুষের, শুধু মানুষের কেন প্রতিটি প্রাণীরই ক্ষুৎ-পিপাসা, বর্জ্য (মল-মুত্র) ত্যাগের মতো কাম বা যৌনতাও একটি প্রকৃতিপ্রদত্ত স্বাভাবিক কর্ম প্রবনতা। যৌনতা এক স্বতঃস্ফূর্ত স্বয়ংপ্রতীত অভিব্যক্তি।

অধিকাংশ প্রাণীর ক্ষেত্রে যৌনমিলনের একটি নির্দিষ্ট ঋতু আছে। মাত্র সেই নির্দিষ্ট ঋতুতেই তাদের মধ্যে যৌনাকাঙ্খা জাগ্রত হয় এবং সন্তানোৎপাদনের নিমিত্তই তারা যৌনমিলনে প্রবৃত্ত হয়। মনুষ্যজাতির ক্ষেত্রে রয়েছে তার ব্যতিক্রম। সম্বৎসরই মানুষের যৌনক্ষুধা বা যৌনাকাঙ্খা জাগ্রত থাকে। প্রাবল্যের রকমফের অবশ্য আছে।

আদিম মানুষের ক্ষুধা ও যৌনতা ভিন্ন অন্য কোন ধারনা ছিলোনা। ক্ষুধা ও যৌনতা উভয়ই প্রকৃতিদত্ত দুর্বার এক চাহিদা। ক্ষুধার যেমন নিবৃত্তি প্রয়োজন, যৌনতারও, অবদমন নয়।

সমাজতাত্ত্বিকেরা বলেন, যৌনতার ধারণা থেকেই জন্ম নিয়েছিল নীতি-নিয়মের সমাজ। যৌনতার ধারণাই জন্ম দিল শৃঙ্খলাবোধের। মানুষ সামাজিক জীব। সমাজে বসবাস করলে তাকে একটি বিন্যাসিত যৌনধারণার মধ্যেই থাকতে হবে। সামাজিক বিধি অনুযায়ী আবার বিপরীত লিঙ্গ হলেই তাদের মধ্যে যৌন সম্পর্ক হতে পারেনা।

বলপ্রয়োগ বা অশালীনতা অবশ্যই বর্জন করতে হবে। সামাজিক নিয়ম-রীতির মধ্যে বিরাজমান থেকেই তা সম্পাদন করতে হবে। আমি মনে করি, আমাদের ধর্মীয় ও সামাজিক রীতিতে পরিবর্তন প্রয়োজন। মানসিকতার পরিবর্তন প্রয়োজন।
ধন্যবাদ, একটি বস্তুনিষ্ঠ লেখার জন্যে। হাসি

মরুদ্যান এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য প্রৌঢ় দা।

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখকের সাথে সহমত।
আমি একজনের কথা জানি যে সহদরারকেও সুযোগবুঝে ছাড় দিত না মেয়েটি যখন ঘুমাত, ছোট মেয়েটি বুঝতো না প্রথমে, পরে বোঝার পরে আতঙ্কে থাকত, মায়ের কাছেও বলতে পারত না। এমনকি মেয়েটি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ত তখন ও এর থেকে রেহাই পায়নি।
-অতিথি

মরুদ্যান এর ছবি

মন খারাপ

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।