গন্দম | সাত

অমিত আহমেদ এর ছবি
লিখেছেন অমিত আহমেদ (তারিখ: শুক্র, ২৬/১০/২০০৭ - ৮:৪১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

২৩ সেপ্টেম্বর, ২০০৬
সময়: বিকাল ৫:০০-৭:০০
চিলিস রেস্টুরেন্ট, ধানমন্ডি, ঢাকা

পান্থপথের মাথায় ছিমছাম রেস্তোরাটার এক কোনায় বসে ঈশিতা চুপচাপ রেস্তোরার কর্মচারীদের ব্যস্ততা আর ম্যানেজারের তদারকী দেখে।

আগামীকাল থেকে রমজান, তাই চিলিস এর প্রবেশদ্বারের পাশে একটা সাময়িক ইফতারি কাউন্টার খোলা হচ্ছে। ইফতারের মেনু আর বিশেষ আয়োজন গুলো অবশ্য ইতিমধ্যেই রঙিন ব্যানারে দৃষ্টিবান্ধব জায়গা গুলোতে টাঙানো হয়ে গেছে। সময় কাটাতে তেমনি এক ব্যানারের পদ গুলোতে চোখ বুলায় ইশিতা। ইফতারী এখন আর কেবল ছোলা-খুরমা-পিঁয়াজু-বেগুনীর মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। পাল্লা দিয়ে নানান দেশী বিদেশী মুখরোচক পদের মেলা বসে ইদানিং ঢাকার রেস্তোরা গুলোতে। বাসায় বানানো পদ গুলোর সাথে সাথেই খাদ্যরসিক বাঙালি মুসলমানের ইফতারীর পাতে উঠে আসে চাইনিজ স্প্রিংরোল, কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের শরমা। আচ্ছা, শরমা কি আসলেই মধ্যপ্রাচ্যের খাবার, নাকি তুর্কি? সজীবকে জিজ্ঞেস করতে হবে।

ওর সময় আসার কথা পাঁচটায়। যদিও জানা কথা ছেলেটা কক্ষনও সময় মত আসবে না। সজীবের অভ্যেস হলো সব সময় দশ-পনেরো মিনিট দেরি করে আসা। এই যে দেরি করে আসে সেটা নিয়ে ওর মনে কোন অপরাধ বোধও নেই। এসেই এমন ভাব করবে যেন দেরি করে আসাটাই স্বাভাবিক, ইশিতাই বরং আগে এসে দোষ করে ফেলেছে।

ইশিতা এসব ছোট খাট জিনিস নিয়ে অযথা অভিযোগ করে না। শান্ত ভাবে মেনে নেয়। ওর মধ্যে বাঙালি মেয়েদের অহেতুক মানিয়ে নেবার অভ্যেসটা (সজীব বলে বদ অভ্যাস) আছে। এটা ইশিতাও বুঝতে পারে। নিজেকে ওর কেন জানি ওর মা’র মতই মনে হয় - মনের মাঝে সংসার, সংসারের মানুষগুলোর প্রতি একটা অবোধ্য মমতা পুষে নিজেকে অন্যের চাহিদার মত বদলে নেয়া। এটা যে সে জোর করে করা তা কিন্তু না। আপনা থেকেই চলে আসে। বাবা-মা-ছোট বোনের খুঁটিনাটি মনে রাখা, মাকে রান্নায় সাহায্য, মেহমানদারী, হঠাৎ ভাল মন্দ কিছু রান্না এগুলো ইশিতার সহজাত। কাউকে বলে বা শিখিয়ে দিতে হয়নি। তাই বলে এসব কিন্তু লেখাপড়া বাদ দিয়ে নয়। ইশিতা বরাবরই ভাল ছাত্রী। সজীবের সাথে ওর এই একটা দিকে মিল, দু’জনেই লেখাপড়া নিয়ে খুব সিরিয়াস।

সজীবের সাথে প্রথম পরিচয়ের কথা মনে পড়ে যায় ইশিতার।
তখন সে সবে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ঢুকেছে।
এক বিকালে কলেজ গেটের উলটো দিকের সিড়িতে বসে নতুন পরিচিত ছেলে মেয়েদের সাথে আড্ডা দিচ্ছে, এমন সময় রিক্সা থেকে নেমে একটা লম্বা-ফর্সা ছেলে সরাসরি ওর দিকে হেঁটে আসলো!

ভিকারুন নিসার হইহুল্লোড় ছাত্রিদের দলে ইশিতা কখোনোই ছিল না। ক্লাস-বাসা-কোচিং, এই ছিল ওর দৈনন্দিন রুটিন। এর মাঝে প্রেম তো দূরের কথা, কোন ছেলের সাথে ওর বলার মত কোন বন্ধুত্বও গড়ে ওঠেনি। দেশের রেওয়াজ অনুযায়ী প্রেমের প্রস্তাব ইশিতাও পেয়েছে, কিন্তু সেগুলো ছিল মা আর ছোট বোনের সাথে হাসাহাসির একটা উপলক্ষ্য মাত্র।

মেলামেশার এই অনভিজ্ঞতার কারনে ছেলেদের সাথে কথা বলতে ওর এখোনো ভয় ভয় লাগে। ছেলেটা সটান ওর দিকেই আসছে দেখে ইশিতা মনেপ্রনেই ঘাবড়ে গেল। কি করবে আর কি বলবে সেটা ভেবে ঠিক করার আগেই ছেলেটা উম্মা নিয়ে বললো, “ওই শালা! এইটা ঢাকা মেডিকেলের মেইন গেট? মেডিকেলে পড়িস কোনটা কোন গেট চিনিস না?”

হতভম্ব ইশিতা কিছু বোঝার আগেই পাশে বসা জিল্লু বলল, “আমাদের জন্য এইটাই মেইন গেট। আমরা এখানে বসে রোজ আড্ডা দেই সেইটা তুই জানস না?”

দেখা গেল আড্ডার যারা আছে তারা প্রায় সবাই কম বেশি সজীব নামের ছেলেটাকে চেনে। ইশিতা পরে জেনেছে, ছেলেগুলো সবাই নটরডেম কলেজের, সজীবেরই ক্লাসমেট। সজীব প্রায়ই আড্ডা দিতে আসে ওদের সাথে। সে সূত্রে আড্ডার মেয়েগুলোও কম বেশী সবাই চেনে ওকে। সজীব আসার পর আড্ডাটা ওকে ঘিরেই আবর্তিত হতে থাকে। চুপচাপ বসে থাকতে থাকতে একসময় যেন সবার অজান্তেই ইশিতা আড্ডা থেকে পালিয়ে বাঁচে।

পরে মেয়েদের কাছ থেকেই শোনে ইশিতা - সজীব তিস্তা গ্রুপের মালিকের বড় ছেলে। এইচএসসিতে ঢাকায় সপ্তদশ হয়েও ভর্তি হয়েছে নর্থ সাউথে, কেননা বাবা চাচ্ছেন ও তাড়াতাড়ি বের হয়ে ব্যবসা ধরুক। সুদর্শন-টাকা আর টাকা-সুদর্শন, এই দুইয়ের মিশেলে সজীবকে নিয়ে একটা কল্পনা জল্পনা চলতো মেয়েদের আড্ডায়। কিন্তু সজীব অন্য ধাতুতে গড়া। মেয়েদেরকে ও পাত্তাই যেন দিত না।

“ওফ! বাইরে যে গরম পড়েছে না!” শয়তানটা কোন সময়ে যেন চলে এসেছে খেয়ালই করেনি ইশিতা! ধপাশ করে গদিওয়ালা চেয়ারে বসে সজীব, হাত তুলে বেয়ারাকে ডাকতে ডাকতে বলে “কি অর্ডার দাওনি এখোনো? যে প্রচন্ড ক্ষুধা লেগেছে না!”

মুদ্ধ হয়ে সজীবকে দেখে ইশিতা। এই ছেলেকে নিয়ে মেয়েদের মধ্যে কম চুলোচুলি হয়েছে! কলেজের কয়েকজন বান্ধবীর সাথে কথা বলাই বন্ধ হয়ে গেল! আগে যে গ্রুপের সাথে চলতো ইশিতা, সে গ্রুপ ভেঙে চৌচির হয়ে গেল। কে ভেবেছিল এ ছেলেটা ওর জন্য এমন পাগলামি করে বসবে! ইশিতা জানে সজীবের পাশে ও কিছুই না। কোনো দিক থেকেই পাল্লা দেবার ক্ষমতা ওর নেই।

দেখতে ইশিতা নেহায়তই সাদামাটা। অনেক মেয়েই বৈশিষ্টহীণ চেহারা পুষিয়ে নেয় দৈহিক আনুসাঙ্গিকতায়, সে রহস্যটাও ইশিতার অজানাই থেকে গেছে। ওর সাদামাটা পরিবারটারও কোন অতীত কিংবা বর্তমান গৌরব নেই। আর লেখাপড়ায় রাজীবকে পাল্লা দেবার কথা ভাবাটাও একটা বোকামী।

ইশিতার মাঝে মাঝে তাই খুব ভয় হয়। যেমনটা হয়েছিল প্রথম যখন সজীব ওকে বলে, ইশিতা, “তোমাকে আমার ভাল্লাগে!”

ও ভেবেছিল বড়লোকের ছেলের কোন নিষ্ঠুর খেলা বুঝি। হাবেভাবে বুঝিয়ে দিয়েছিল সজীবের মত ছেলেদের সাথে ভরসা পায় না ও। নাছোড়বান্দার মত পিছে লেগে ছিল সজীব কিন্তু কোন ভাবেই মানাতে পারেনি ইশিতাকে। সেই কাঠিন্য হুট করেই একদিন ভেঙে গেল একটা ঘটনার পর।

ঘটনাটা এরকম, অন্য দিনের মতই নর্থসাউথের ক্লাস শেষে আড্ডা মারতে এসেছে সজীব। কোন বিচিত্র কারনে সাথে ব্যাগ রাখে না ছেলেটা। একটা রুলটানা নোটবুক, আর দুই-তিনটা বই হাতে করেই ঘুড়ে বেড়ায়। সেদিন সিমেন্টের সিড়ির এক ধারে বই খাতা রেখে আড্ডা মারছিল সজীব, আড্ডা শেষে চলে যাবার পর দেখা গেল যাবার সময় সেই বই-খাতা যেখানে ছিল সেখানেই আছে, নিয়ে যেতে ভুলে গেছে সজীব। সজীবের বন্ধুরা ইতিমধ্যেই ইশিতার প্রতি সজীবের ব্যাপারটা ধরে ফেলেছে, তাই এক রকম জোর করেই ওরা খাতা বই ইশিতার হাতে তুলে দেয়।

নেহায়তই অবহেলায় জিনিসগুলো পড়ার টেবিলে তুলে রাখে ইশিতা, আগামীকাল ফিরিয়ে দিলেই হবে। কিন্তু পড়তে বসে সামনে বই খাতা গুলো দেখে একটা নিষিদ্ধ কৌতুহল জাগে ইশিতার। ধরবো না ধরবো না করতে করতে খাতাটা হাতে তুলে নেই ও। বিবিএর লেকচার মুক্তোর মত হাতের লেখায় নোট করেছে ছেলেটা। কয়েক পাতা উলটেই চমকে যায় ইশিতা। সমস্ত দেহের রক্ত যেন একছুটে চলে আসে মুখে। এত জোরে ধুকপুক করতে থাকে হৃৎপিন্ড, যেন খাঁচা ভেঙে বেরিয়ে আসবে। বারো লাইনের একটা কবিতা লিখেছে সজীব। কবিতার নাম “ইশিতা”! পাগলের মত পাতা উল্টাতে থাকে ও, খাতাটায় আরো ছয়টা কবিতা পাওয়া যায়, সবগুলোরই নাম “ইশিতা”। কি মনে করে বই গুলোর পাতাও উল্টাতে থাকে ও, বইয়ের মার্জিনের ফাঁকে আরো নয়টা কবিতা আবিষ্কৃত হয়। কবিতাগুলো পড়তে গিয়ে চোখে পানি চলে আসে ইশিতার - এত মিষ্টিও হতে পারে কোন কবিতা! সেই সারা রাত কাটে ইশিতার কবিতা পড়ে, একটার পর একটা, আবার প্রথম থেকে একটার পর একটা!

পরদিন স্বাভাবিক ভাবে খাতা-বই ফিরিয়ে দিলেও সেদিন থেকেই দুজনের সম্পর্ক একটা পরিনতি পেতে থাকে। ইশিতা যে ওর কবিতা পড়েছে সেটা সজীব একদমই সন্দেহ করেনি। এতদিন হয়ে গেছে ও কখনো ইশিতাকে কবিতা গুলো নিয়ে কিছু বলেনি। সজীব জানে না ইশিতা এখনো একটানে কবিতা গুলোর যে কোনটা মুখস্থ বলে দিতে পারে!

স্যুপ-টুপ আরো কি সব অর্ডার দিয়ে থিতু হয় ছেলেটা। ইশিতার দিকে তাকিয়ে বলে, “এই মাত্র রাজীবের সাথে ঝগড়া করে এলাম।”
“কেন? আবার কি হলো?”
“ও যে কি করে আমি বুঝতে পারি না! এনএসইউ তে যে প্রবেশনে আছে সেটা সে কাউকে কিছু বলেনি! প্রবেশনে থাকলে বাবা কিংবা মা’কে নিয়ে যেতে হয় অ্যাডভাইজিং এর সময়। সে কাকে না কাকে যেন বাবা সাজিয়ে নিয়ে গিয়েছে।”

খিল খিল করে হেসে উঠলো ইশিতা। অভিমান ভরা চোখে তাকালো সজীব, “এটা তোমার হাসির কথা মনে হলো? আজ দেখা হয়েছে এক স্যারের সাথে। উনি বললেন তোমার ভাইয়ের এই অবস্থা কেন! আমি তো পড়েছি আকাশ থেকে, বাসায় প্রবেশনের কথা কিচ্ছু বলেনি। আমাকেও না!”
“তোমরা ওকে একটু বেশি প্রশ্রয় দাও আসলে! শাসন তো কিচ্ছু করনা। ওর কি দোষ?”
“শাসন করি না কে বললো? মিথ্যা তো ও কখনো বলে না! এটা কেন করলো বুঝতে পারছি না!”
“দেখেছ! এটার কথাই বলছি। এখনো তুমি ওকে ডিফেন্ড করছো! ওকে নিয়ে কত গল্প চালু জান তুমি? মেয়ে নিয়ে?”
“ওকে নিয়ে যেসব কথা ছড়ানো হয় তার বেশির ভাগই গুজব। তুমি তো ওকে চেন! ওকে তোমার এমন মনে হয়েছে বলো?”
একটু হাসলো ইশিতা। রাজীবের সাথে বেশ কয়েকবারই দেখা হয়েছে ইশিতার। সত্যি কথা বলতে কি ছেলেটাকে ওর ভালই লেগেছে। বড় ভাইয়ের বান্ধবী তাই সারাক্ষণ ওকে তুষ্ট করার চেষ্টা। খুব ভদ্র ভাবে আপু আপু করেছে সারাটাক্ষণ। এর পরেও কেন জানি ওর মনে হয়েছে রাজীব ওকে বড় ভাইয়ের প্রেমিকা হিসেবে ঠিক মেনে নিতে পারেনি। ওর এই ইনট্যুশন কতটা সত্যি, আর কতটা শঙ্কা সেটা নিয়ে নিজেই নিশ্চিত হতে পারেনি বলে ও সজীবকে এ কথা কখনো বলেনি।

“যা রটে তা কিছুটা তো বটে! তুমি ওকে একটু বুঝিয়ে বল! ও তো তোমাকে খুব মানে। ওকে নিয়ে এসব শুনলে আমার খুব ভয় লাগে সজীব। যদি তুমিও ওর মত...”
“ধুর বোকা মেয়ে! তুই হচ্ছিস আমার বউ। কিসের সাথে কি!” আদর করে মাঝে মাঝে ইশিতাকে তুই আর বউ বলে ডাকে সজীব।

ইশিতা যে ওকে নিয়ে ভয়ে থাকে সেটা বোঝে সজীব। কারনটাও জানে। দুজনের সামাজিক ব্যাবধানটা কম নয়। ইশিতা মেয়েটা এমন নয় যে একজন প্রেমিকা গেলে আরেকজন আসবে। এ ধরনের মধ্যবিত্ত মেয়েরা কারো সাথে প্রেম করলে বিয়ে বাচ্চা পর্যন্ত কল্পনা করে রাখে। কোন কারনে সজীবের সাথে ওর সম্পর্কটা সামাজিক পরিনতি না পেলে মেয়েটা বোধহয় মারাই যাবে!

“তুমি আজ গাড়ি আনোনি না?” জিজ্ঞেস করে ইশিতা।
“না! তুমি বুঝলে কি করে?” অবাক হয়ে যায় সজীব।
“এসি গাড়িতে বসে বাইরে গরম না ঠান্ডা সেটা নিয়ে কেউ কখনো মাথা ঘামায়?”
“আরে...” সব গুলো দাঁত বের করে হাসে সজীব, “আমার বউ তো দেখি মিস মার্পলের ওস্তাদ!”

এত সামান্য একটা প্রশংসা এরপরও ইশিতার মুখটা ঝলমল করে ওঠে। মুগ্ধ হয়ে ইশিতাকে দেখে সজীব, ও যে কতটা অসাধারণ একতা মেয়ে, সেটা মেয়েটা জানেও না। মায়া মায়া মুখটার দিকে তাকিয়ে সজীবের মনে হয় ও পৃথিবীর সব চেয়ে ভাগ্যবান পুরুষ। হাত বাড়িয়ে ইশিতার হাত ধরে সজীব, ওর ইচ্ছে হয় মাঝের টেবিলটা এক ঘুষিতে উড়িয়ে দিয়ে মেয়েটাকে সবার সামনেই চকাশ করে একটা চুমু খেয়ে ফেলে!

৯ অক্টোবর, ২০০৬
সময়: বিকাল ৩:২০-৩:৫০
সিমেন্স সেন্টার, গুলশান, ঢাকা

রানা একটা জিনিস খুব মেনে চলে, সেটা হলো “কাজের সময় কাজ আর খেলার সময় খেলা”! বাবা সেই যে ছোট বেলায় কথাটা বলতেন, শুনতে শুনতে মাথায় ঢুকে গেছে। এখন সে চাইলেও হুট করে কাজে ফাঁকি দিতে পারে না। ওর সময় হিসেব করা থাকে, কাজের ফাঁকে দু’ঘন্টা পর পর চা-সিগারেটের ব্রেক। তাও এ ব্রেকটা সে তখনই নেয়, যখন বোঝে কাছের কোন ক্ষতি হবে না। এ সময়টা ও কয়েকজন জুনিয়র ছেলেকে নিয়ে নিচে নেমে যায়। চা-সিগারেট অফিসের ভেতরেও খাওয়া যায়, সে ব্যবস্থা যে নেই তা নয়, কিন্তু নিচের টং দোকানে চা খাওয়ার একটা আলাদা আবেদন আছে। ছাত্রজীবন থেকে সবে কর্মজীবনে ঢুকেছে, তাই এখনো সেই উদ্দাম ছাত্র-জীবনের জন্য মনটা কেমন যেন করে। টং দোকানের চা অনেকটা সেই দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো।

মাঝে মাঝে নিজে নিজেই ভাবে রানা, ছাত্রজীবনে কি এমন ছিল যার জন্য এখনো মন টানে? ও তো অন্যদের মত সারাদিন হইহুল্লোড় করেনি। সময় মত ক্লাস করেছে, অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিয়েছে, বেশী রাত করে বাসায় আসেনি, এসেই একটু বিশ্রাম নিয়ে আবার পড়তে বসেছে। এখন কাজে তবু একটা বাঁধা সময় আছে, সকাল থেকে বিকেল। ছাত্র জীবনে এমন ধরে দেয়া কোন সময় ছিল না।, যেটার সুযোগ নিয়ে বন্ধুদের অনেকেই ছেলেখেলায় ছাত্রজীবনটা পার করে এসেছে। কিন্তু রানা সেই অবসর সময়টাও কাটিয়েছে লেখাপড়া করে। ওর উপায়ও ছিল না অবশ্য।

বন্ধুদের সবার ডিগ্রীটা দরকার ছিল কেবল লোক দেখানোর জন্য। সবার বাবাই ব্যবসায়ী। ছেলে পাস করে পারিবারিক ব্যবসায় বসবে, নতুবা প্রভাব আছে কোন অফিসে বসিয়ে দেয়া হবে, এমনটাই পরিকল্পনা সবার। সেখানে ছা’পোষা সরকারী চাকুরে পরিবারের ছেলে হয়ে রানার ভাল ফলাফল করে ভাল চাকরী পাবার একটা পারিবারিক তাগিদ ছিল। এটা অবশ্য সে ভাল ভাবেই পূরণ করেছে - কারো সাহায্য ছাড়া, কেবল নিজের যোগ্যতায় সে এ চাকরীটা পেয়েছে, এবং সমবয়সী কারো থেকে কম কামাচ্ছে না।

তাই মাঝে মাঝে মনে হয়, অন্য বন্ধুদের কর্মজীবন নিয়ে আফসোস, ছাত্রজীবন নিয়ে রোমন্থন থাকতে পারে, ওর কেন! কি ছিল ছাত্রজীবনে যেটা এই কর্মজীবনে নেই? শূন্যস্থানটাই মুহূর্তেই নজরে পড়ে যায় - বন্ধু। ছাত্রজীবনটা কেটেছে প্রিয় বন্ধুদের সাথে, ভাবে রানা, সুখে দুখে সবাই সাথে ছিলাম, কাছে ছিলাম। যে বন্ধুত্ব এতদিন একসাথে কাটিয়ে, মান-অভিমানে আর পারস্পরিক নির্ভরশীলতায় গড়ে উঠেছে, সেটা কি কর্মজীবনে এই কয়দিনেই প্রতিস্থাপন করা সম্ভব! কর্মজীবনের কাঠ-পাথর জবাবদীহিতা, আর ঠুনকো রেশারেশীটাও অবশ্য সে সময় ছিল না।

তাই এখনো কাজ শেষে বন্ধুরা সবাই ছুটে যায় পুরানো আড্ডাখানায়। এ আড্ডা কতদিন থাকবে সেটাই ভাবনার বিষয়। বন্ধুরা অনেকেই বেকার, বাকিরা নতুন কাজে ঢুকেছে, কারোরই বিয়ে হয়নি। পরে যখন বিয়ে হবে, চাকরী কিংবা ব্যবসায় চাপ বাড়বে, পরিবারের দায়িত্ব কাঁধে চাপবে, তখনো কি এমন আড্ডা জমবে কাজ শেষে। হঠাৎ করেই মান্না দে’র কফি হাউস গানটার কথা মনে পড়ে গেল রানার।

দেয়ালের ধার থেকে থেকে মাথা বের করলো পিয়াল, “বস, ব্যস্ত নাকি?”
“নাহ! হাতের কাজ মোটামুটি শেষ।”
“রোজা আছেন?”
“না নাই, কেন?”
“তাইলে চলেন নিচে যাই। কবির, প্রবাল, রবিন, জুঁই সবাই নিচে ওয়েট করতেছে আপনার জন্য।”
“কেন? কিছু হইছে নাকি?”
“চলেন না! বলতেছি।”
“আরে কি ব্যাপারে সেটা বল আগে।”
“নওরীনের ব্যাপার বস।”
দপ করে রাগটা চাঁড়া দিয়ে উঠলো রানার, “আবার?”
“আবার!” ঘোষণা দেবার মত করে বললো পিয়াল।
“জুঁইকেও ডেকেছো? ও না নওরীনের বান্ধবী?”
“এইটাতে সেও ইনভলভড! চলেন বলতেছি সব।”

নওরীনদের গ্রুপে মোট ছয়জন একসাথে কাজ করে। পিয়াল, জুঁই, নওরীন, প্রবাল, রবিন আর রনি। এদের মধ্যে পিয়াল, জুঁই, নওরীন আর রনি আই.বি.এ. থেকে সদ্য পাশ করে সিমেন্সে ঢুকেছে। বাকি দুজনের মধ্যে প্রবাল এসেছে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আর রবিন বুয়েট থেকে।

নিচের ছোট্ট টং দোকানটাতে আগেই বসে আছে চার জন। রমজান মাস দেখে দোকানটা একটা হলুদ রঙের শামিয়ানা দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। শামিয়ানাটায় কালো কালিতে হাবিজাবি অনেক কিছু লেখা। বোঝাই যাচ্ছে দোকানদার দালানের মাঝে টাঙানো কোচিং সেন্টারের বিজ্ঞাপন নামিয়ে তার দোকানের আব্রু বানিয়েছে।

দোকানের আব্রু উঁচিয়ে ভেতরে ঢুকে বেঞ্চে বসে রানা। এসব হিপোক্রেসির দেখলে মেজাজটা গরম হয় ওর। ধর্ম কি জোর করে মানানোর বিষয়? যাঁরা রোজা রাখবেন তাঁরা রাখবেন, যাঁরা রখবেন না তাঁরা রাখবেন না। এতে এত রাখরাখ-ঢাকঢাক কেন?

চা সিগারেটের ফরমায়েশ দিয়ে ওদের ওদের দিকে তাকায় রানা, “বলো এবার, হয়েছে কি?”

“বস, আমাদের পার্টিটা গেল না রমজানের আগে দিয়ে?” অন্য কাউকে বলার সুযোগ না দিয়ে হুড়োহুড়ি করে বলে ফেললো প্রবাল।
“হুম!”
“সেটা নিয়ে নওরীন জাকির ভাইকে নালিশ করেছে। বলেছে আমরা নাকি সে পার্টিতে বেলেল্লাপনা করেছি!”
নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারলো না রানা “কি বললা?”
“বললাম সে বলেছে আমরা নাকি পার্টিতে বেলেল্লাপনা করেছি।”
“একজাক্টলি এই কথাটা বলেছে? বেলেল্লাপনা?”
“জ্বী ভাইয়া। সীমা আপা ছিলেন ওদের সাথে, উনার কাছ থেকে জুঁই শুনেছে।”
ব্যাপারটা এতই অবিশ্বাস্য যে সরাসরি জুঁইকেই জিজ্ঞেস করলো রানা, “জুঁই, কথা সত্যি?”
“জ্বী ভাইয়া!” রিনরিনে গলায় বলে জুঁই।
সিগারেটে একটা লম্বা টান দিয়ে মাথাটা হালকা করার চেষ্টা করলো রানা। এ কী শুরু হয়েছে এখানে! রাগে গাটা চিড়বিড়িয়ে উঠল রানার - মাগী, এইবার তোমার আর ছাড়ন নাই। বাটি চালান দেয়া হবে।

সিগারেটে আরেকটা টান দিয়ে জুঁইয়ের দিকে ফিরলো রানা, “জুঁই, নওরীন কি স্পেসিফিক কারো নাম বলেছে?”
“প্রবাল, পিয়াল, রবিন, আমার আর...”
“আর কার? আমার?”
মাথাটা নিচু করে ফেললো জুঁই, “জ্বী ভাইয়া!”

অবাক হলো না রানা। জুঁইয়ের নাম বললে ওর নামটাও সাথে আসার কথা।

“সুমন ভাইকে ছেড়ে এখন জাকির ভাইকে কথা লাগাচ্ছে না?” মুচকি হেসে চায়ে চুমুক দিল রানা।

“জ্বী ভাইয়া!” বললো পিয়াল, “কার কাছে কখন কোন কথা লাগাইতে হবে সে সেন্স মেয়ের ভালই আছে! সুমন ভাইকে বইলা তো লাভ নাই, উনি কি করছিলেন পার্টিতে মনে নাই?”

রানার ঠিকই মনে আছে। রমজানের আগে দিয়ে একটা ফ্যাশন শোর পৃষ্ঠপোষকতা করেছিল সিমেন্স। সেই শোতে সিমেন্সের অনেক চাকুরের সাথে অফিস থেকে থেকে সুমন ভাই, পিয়াল, নওরীন, জুঁই, প্রবাল, পিয়ালের সাথে রানাও গিয়েছিল। পাঁচ তারা হোটেলে চমকদার মানুষদের সমাহারে জমজমাট একটা শো হয়েছে। অনুষ্ঠান শেষে আয়োজক আর মডেলদের সাথে একটা প্রাইভেট ককটেল পার্টিও ছিল। সেখানে স্বাভাবিক ভাবেই পানীয় আর নারীর অবাধ মেলামেশা হয়েছে। রানা মেয়েদের সামনে সব সময় একটু লাজুক। সরাসরি গিয়ে কখনও কথা বলতে পারে না। প্রথম প্রথম অপরিচিত কারও সাথে কথা বলার সময়ও ওর সমস্যা হয়। কথা হারিয়ে ফেলে। কষ্টে মষ্টে কোন কথা বেরুলেও সেগুলোর পারস্পরিকতা থাকে না। যেটা অন্যপক্ষে হাস্যরসের কারন হলেও রানার লজ্জ্বার সীমাপরিসীমা থাকে না।

কিন্তু ঐদিন পার্টির আবহাওটা এমন ছিল যে সবাই কেমন যেন হয়ে গেল। বিবাহিত সুমন ভাই পর্যন্ত হাঁটুর বয়সী তাসমিয়া নামের নামেমাত্র শাড়ি পরা মডেল মেয়েটার সাথে যাচ্ছেতাই করলেন। রানার মদ্য জাতীয় পানীয়ে কোন আগ্রহ নেই, তবুও ওর লাগামটা কিভাবে যেন হাতছাড়া হয়ে গেল। প্রয়োজনের চেয়ে বেশীই স্মার্ট মডেল গুলোর সাথে উদ্বাহু নাচ চলছিলোই, এর চেয়ে বেশী দূর যাবার ইচ্ছে বা সাহস ছিল না রানার।

কি যে হয়ে গেল! এই জুঁই মেয়েটার সাথে রোজই প্রায় অফিসে দেখা হয়। কক্ষোনো কোন গোপন আকাঙ্ক্ষা মনে জাগেনি রানার। কিন্তু সেদিন...

“বস ভাবেন কি? একটা কিছু করেন!”
“সমস্যা কি জান? এসব সাইজ করার আসলে কোন সোজা উপায় নাই। সে আমাদের নামে উলটা পালটা লাগাচ্ছে, আমাদেরকেও লাগাতে হবে। কিন্তু সেটাতে আমরা ধরা খেয়ে যাব, কারন আমাদের অভিজ্ঞতা নাই। নওরীন ওর অভিজ্ঞতা দিয়ে সহজেই আমাদের তুলোধুনো করবে!”
“বস, এইটা কমপ্লেইন কইরা দেই?”
“কম্পলেইন করে লাভ নাই, কিচ্ছু হবে না, খামাখা পানি ঘোলা হবে!”
“তবু বস! আর কিছু না হইলেও সে বুঝবে যে আমরা চেইতা আছি। এখন তো খোলা মাঠে গোল দিতেছে!”
মুচকি হাসে রানা, পিয়াল ছেলেটার বলেছে খারাপ না, “আচ্ছা! কমপ্লেইন যদি করতেও হয় তবে সেটা করবা অন্য দিক থেকে।”
“কি রকম?”
“মেয়েটা তো সারাক্ষণ ফোনেই থাকে, এমনকি অফিসের সময়ও... তাই না? তোমাদের সাথে এক রুমে বসে, তোমাদেরও তো কাজে সমস্যা হয়... হয় না?”
চট করে ব্যাপারটা বুঝে ফেলে পিয়াল, “তার মানে আমরা কমপ্লেইন করবো ওর জন্য আমাদের কাজে সমস্যা হয়, কিন্তু বসেরা দেখবে সে অফিস আওয়ারে সে ফোনে ভ্যাজর ভ্যাজর করে, তাই তো?”
“রাইট!”
“ভাইয়া এইটা জোস! আমরা সবার সিগনেচার নিব, জুঁইয়েরও। নিয়ে একেবারে নওশাদ ভাইকে দেব।”
“আরে নাহ! ভুলেও না! নওশাদ ভাইকে না। এত উপরে গেলে ঘোড়া ডিঙায় ঘাস খাওয়া হবে। ব্যাপারটা ঠিক হবে না। কমপ্লেইন লেটারটা দিবা সুমন ভাইকে। এর আগে যাস্ট চামে উনাকে জানিয়ে দিতে হবে নওরীন জাকির ভাইকে উনার নামে কি বলেছে! এটা জুঁই বললেই ভাল হয়।”
“বওওওস!” লাফ দিয়ে চেয়ার থেকে উঠে পড়ে পিয়াল, “জট্টিল হবে কিন্তু! আই অ্যাম অন ইট! আমি লেটারটা লিখে দেখায় নিবো আপনাকে!”

উত্তর না দিয়ে আরেকটা সিগারেট নিলো রানা। মনটা খুঁতখুঁত করছে, এসব নোংরা চালাচালি একদম ভাল লাগেনা ওর!

[চলবে...] © অমিত আহমেদ


মন্তব্য

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

এতো দেরী করলে আবার প্রথম থেকে পড়া শুরু করতে হয়!

ইরতেজা এর ছবি

অমিত আহমেদ আমি প্রথম পর্ব থেকে পড়ব।

সুমন মাহবুব ভাই খালি তোমার প্রশংসা করে। রহস্যটা কি?ডাল মেয় কুছ কালা হ্যায়। তুমি সাবধানে থাকিও ওনার একজন শ্যালিকা নাকি ডিসেম্বরে ক্যানবেরা আসিতেছে শুনলাম। সুমন ভাই বলল তুমি নাকি মেলবোর্নেও আসতে পার । চলে এস খুব মজা হবে।

_____________________________
টুইটার

অমিত আহমেদ এর ছবি

শিমুল কি আর বলবো, আমি নিজেও ভুলে গিয়েছিলাম। গন্দমের আগের পর্ব গুলো দুইবার পড়ে মনে করেতে হয়েছে।

ইরতেজা ভাই, আসতেছি ক্যানবেরা। মেলবোর্ন এখনো সিওর না। যদিও "শালি" ধুসর গোধুলি ভাইয়ের টেরেটরি, আমার চান্স নিতে আপত্তি নাই চোখ টিপি গন্দম পড়ে শেষ হলে কেমন লাগলো জানাবেন।


ভালবাসি, ভালবাসি, ভালবাসি তোমায়!
ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল

হাসান মোরশেদ এর ছবি

খুব বেশী গ্যাপ দিলে আমার মতো সামান্য পাঠকের জন্য অসুবিধা হয় @অমিত ভায়া
-----------------------------------
মানুষ এখনো বালক,এখনো কেবলি সম্ভাবনা
ফুরোয়নি তার আয়ু

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

অমিত আহমেদ এর ছবি

হাসান ভাই এ কারনেই পাঠক হারিয়েছি। কার ঠেকা পড়েছে বলেন দুই মাস পর পর একটা করে পর্ব পড়ার? এছাড়া আমার জন্যও ট্র্যাক করতে সমস্যা হচ্ছে, উপন্যাসের বিন্যাস গিয়েছিলাম ভুলে। কাল অনেকক্ষণ খাতায় গন্দমের প্লট দেখলাম। সেখানেও সমস্যা। আমি কাটাকুটি, ছবি, একটা দুইটা শব্দ আর তারিখ দিয়ে বিমূর্ত নোট নেই। সেই নোট পরে নিজেই বুঝি না। তাই আর গ্যাপ রাখবো না। এক মাসের মধ্যে পুরো উপন্যাস নামিয়ে ফেলবো। আজ রাতেই পরের পর্ব আসবে।


ভালবাসি, ভালবাসি, ভালবাসি তোমায়!
ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল

হাসান মোরশেদ এর ছবি

ঠিক তাই । ডেটলাইন না দিয়ে করলে খালি পিছাবেই ।
অমিত আহমেদ এর 'গন্দম', পুতুলের 'শেরালী' ,আরিফের 'বাটালী'- বাহ এক সাথে তিন তিনটে উপন্যাস পেতে যাচ্ছে সচলায়তন ।

অভিনন্দন ।
-----------------------------------
মানুষ এখনো বালক,এখনো কেবলি সম্ভাবনা
ফুরোয়নি তার আয়ু

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

নজমুল আলবাব এর ছবি

অভিযোগটা সবাই করে ফেলেছে। আমারও সেটা। খুব বেশি দেরি হয়ে গেছে। এভাবে অপেক্ষায় থাকাটা বেশ কষ্টের।

ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

অমিত আহমেদ এর ছবি

এখন থেকে ১/২ দিন পর পর দেব। পাঠক থাকুক আর না থাকুক! এইমাত্র পরের পর্ব পোস্ট করতে গিয়ে ধরা খেয়েছি, ৩৬ ঘন্টায় দু'টো পোস্টের কোটা শেষ দেঁতো হাসি


ভালবাসি, ভালবাসি, ভালবাসি তোমায়!
ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।