প্রথমেই যাঁরা "ঢাকা থেকে" সিরিজটা ধৈর্য্য ধরে পড়েছেন তাঁদের শুভেচ্ছা। এই সিরিজ লিখে শেষ করে প্রবাসে ফিরে আসার পরেও কেনো আরেকটা পর্ব লিখছি প্রথমেই তার কারণ দর্শানো দরকার।
প্রথমত, কিছু ছবি দেয়ার ইচ্ছে ছিলো কিন্তু ধীর গতির অন্তর্জাল আর ফ্লিকারের কোটা প্রায় ফুরিয়ে যাবার কারণে ঢাকায় থাকাবস্থায় দিতে পারিনি। দ্বিতীয়ত, কিছু টুকরো কথা লিখতে চেয়েও পরে আর সময়াভাবে লেখা হয়নি। এবং তৃতীয়ত, অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবেই আমার কাঙ্ক্ষিত ঢাকাবাস উদ্যোগের চেয়ে একটু বেশিই হয়ে গিয়েছিলো।
সে ঘটনা না হয় বলছি শেষে।
আমাদের নটর ডেম কলেজ
কলেজে শেষ গিয়েছিলাম উচ্চ-মাধ্যমিক সনদপত্র তুলতে। এরপর আর যাওয়া হয়নি। এতোদিন পরে, সেদিন গিয়েও কলেজকে ঠিক আগের মতোই লাগলো। মনে হলো যেমনটা রেখে গিয়েছিলাম ঠিক তেমনটাই আছে। তেমন কিছুই বদলায়নি। একই দালান, একই শিক্ষক-শিক্ষিকা, একই মাঠ-গাছ, ছাত্রদের মধ্যেও যেনো সেই পুরানো আমাদেরই ছাপ!
কলেজে গিয়েছিলাম বন্ধু তানজিনকে নিয়ে। আমরা একই গ্রুপে ছিলাম। দুই বন্ধু মিলে এক সময় কলেজে "ক্রাইম ক্লাব" তৈরি করে তুলকালাম করে রেখেছিলাম।
এতোদিন পরে শিক্ষকরা আমাদেরকে দেখলেই চিনে ফেলবেন সেই সম্ভাবনা কম। তাই আমরা চেষ্টাও করি না । আপন মনে পাঠাগার, ক্লাসরুম, ল্যাবরেটরি, মার্টিন হল, মাঠ, আর চিকিৎসালয় ঘুরে বেড়াই। কতো স্মৃতি জড়িয়ে আছে এই সব কিছু ঘিরে।
ওই যে ওই বেঞ্চ; ওটার তলায় চাদর বিছিয়ে কতোদিন শুয়ে শুয়ে মাসুদ রানা পড়েছি। আর ওই মার্টিন হলের জানালাটা; ওটার পাশে বসে লাগোয়া বাসার মেয়েটার বারান্দায় আসার জন্য মনে মনে অপেক্ষা করতাম। ওই গাছটা; ওটার তলে বসে কতো দিন ধুম আড্ডা চালাতাম।
স্মৃতিরা এভাবেই ক্ষণে ক্ষণে হানা দিয়ে যায়। আমরা ক্যাফেতে দুই কাপ চা আর "মাটন পেটিস" নিয়ে বসি। চায়ের দাম দুই থেকে পাঁচ আর মাটন পেটিসের দাম বারো থেকে বিশ টাকা হয়েছে। পার্থক্য বলতে শুধু এই। স্বাদ কিংবা পরিবেশনে কোনো ফারাক খুঁজে পাই না।
তবে নটরডেমে নতুন যে জিনিসটা দেখেছি তা হলো স্বচ্ছ ব্যাগ। স্বচ্ছ প্লাস্টিকের ব্যাগ। এই জিনিসটা মনে হয় কলেজ থেকেই ছাত্রদেরকে দেয়া হয়। কারণটা কী সেটা অবশ্য ঠিক বোধগম্য হয়নি।
আরেকটা মন খারাপ করা জিনিস। আমাদের সময়ে আমরা আড্ডা দিতাম মাইকেল আর রফিক মামুর টঙ ঘিরে। সেই টঙগুলো আর নেই! যেখানে রফিক মামুর পসরা ছিলো সেখানে শুধু খাঁ-খাঁ দেয়াল। আর মাইকেল মামুর টঙের উপরে গজিয়ে বসেছে পুলিশ ছাউনি।
নটরডেমের যা কিছু ছবি তুলেছি তা আছে নিচের ফ্লিকার সেটে। আরো কিছু ছবি তোলার ইচ্ছে ছিলো, কিন্তু তার আগেই ঝুম বৃষ্টি নেমে সব বরবাদ করে দিলো!
নটর ডেম কলেজের যতো ছবি
বৈদেশি
এ'বারে গুলশান-বনানীতে অসংখ্য বৈদেশি দেখেছি। ব্যাপারটা যে শুধুই আমার চোখে আলাদা করে লাগছে না সেটার প্রমান মিলেছে ভিক্ষুকদের আচরণে। একটা সময়ে ঢাকার ভিক্ষুকেরা ভাবতেন "সাদা চামড়া" মানেই ডলার। ব্যাপারটা যে আসলে তা নয়, সেটা দেখতে দেখতে মনে হয় তারাও বুঝে নিয়েছেন। তাই আগে বিদেশী দেখলেই ভিক্ষুকেরা সবাই যেমন ঝাঁপিয়ে পড়তেন এবার তেমনটা দেখিনি। বাচ্চা যারা রাস্তায় টাকার জন্য ত্যক্ত করে তারা সবার সাথে এমনই; নর্থ সাউথের সামনে গেলে এমন হাত টানাটানিতে আমারও পড়তে হয়।
বন্ধুদের কাছে জানলাম এরা কেউই পর্যটক নন। ব্যবসার, প্রধানত পোষাকশিল্প সংক্রান্ত ব্যবসার কাজে আসেন। এই সেক্টরটা কিভাবে ফুলে-ফেঁপে উঠছে এটা হয়তো তারই নিশানা। শুধু অতিথিই নয়; শুনলাম কোরিয়া এবং ভারতের আগত-বহিরাগতের ভিড়ে গুলশান-বনানী-উত্তরা নাকি জেরবার হয়ে আছে। পাকিস্তানী, শ্রীলংকান ব্যবসায়ীর সংখ্যাও নাকি কম নয়।
দুর্লভ এক খন্ড জলাশয়
অন্যান্যবার দেশে আসলে ধানমন্ডিতে তেমন যাওয়া না পড়লেও এবার খুব গিয়েছি। আলাদা ভাবে বলার কিছুই নেই। অন্যান্য এলাকার মতো এখানেও বিল্ডাররা পসরা সাজিয়ে বসেছে। অসংখ্য নতুন অ্যাপার্টমেন্ট। একতলা, দুইতলা বাড়ির খুব অভাব। আর আছে রেস্তোরা। দেশি-বিদেশি-পাঁচমিশালী রেস্তোরা।
ধানমন্ডিতে যেটা ভালো লেগেছে সেটা হলো ধানমন্ডি লেক। আগের চেয়ে অনেক সুন্দর হয়েছে। লেকের চারপাশ ঘিরে যে উদ্যান আছে তারও বেশ তদারকি হয় বোঝা গেলো। সুন্দর ইট সাজানো হাঁটা রাস্তা। সেই রাস্তা ভরে থাকে সব-বয়সী স্বাস্থ্য-সচেতন ঢাকাবাসীর পদচারণে। নতুন গাছ লাগানো হয়েছে অনেক। তার ফাঁকে ফাঁকে কুঁড়েঘর ধরণের ছোট্ট ছাউনি। সেগুলো, আর গাছ-বাগানের মাঝে দিয়ে উঁকি মারে জসীমউদ্দীদের কবিতা লেখা বোর্ড। ঢাকা জুড়ে এমন অনেকের কবিতাই দেখলাম। জসীমউদ্দীদের, নজরুলের। আচ্ছা, রবীন্দ্রনাথের কবিতা চোখে পড়লো না কেনো?
মিষ্টান্ন!
অমিত রাহীদ ভাই বলেছিলেন দেশে গিয়ে যা খাই তারই ছবি যেনো তুলে রাখি। সেটা ঠিক মতো করতে পারিনি বন্ধু-সমাজের উৎপাতে। ক্যামেরা বের করলেই তারা সমস্বরে রব তোলে, "ভাই! তুই তো বৈদেশি হয়া গেছস ভাই! খাওনের ছবি তুলস!"
তবে মা-খালাদের জোর করে হাতে ধরিয়ে দেয়া মিষ্টির পাত থেকে যা পেরেছি তুলে এনেছি।
নমুনা দেখাই।
শাড়ি, কিংবা মিশন ইমপসিবল!
আমার এক প্রবাসী বাঙালি বন্ধু শাড়ির ফরমায়েশ দিয়েছিলো। তার অনুরোধ শুনে মনে হয়, ভালোই। বৈদেশি মেয়ে বন্ধুদের জন্যও শাড়ি ভালো উপহার হতে পারে। একটানে পাঁচ-ছয়টা কিনে ফেলবোখন।
জীবনে কখনো একা শাড়ি কিনিনি। শাড়ি বিষয়ক কোনো ধারণাই নেই। তবুও আত্মবিশ্বাস ছিলো, এ আর এমন কী! তবে শাড়ির দোকানে গিয়ে বুঝলাম, এ আসলে কী! শত শত শাড়ি, তার নানান নাম-রঙ-কাপড় আর কাজের ধরণ। আমি তাব্দা খেয়ে দাঁড়িয়ে থাকি। দোকানীদের কথা শুনে আরো বিভ্রান্ত হই। তারা অজানা কোনো ভাষায় কী সব বলেন, কিচ্ছু বুঝি না। পাড়, ফসল, কটকা, আরো কী কী সব!
আমার মনে হয় আসলে দোকানের সমস্যা। এই দোকানটাই ভালো না। এভাবে আরো কয়েকটা দোকান ঘুরে ফেলি। এরপরে আর কোথাও না। এক টানে বাসায় চলে আসি। শাড়ি যারা কিনতে পারেন তাদের মেধা নিয়েও মনে একটা স্তুতি আসে - তারা বস!
পরদিন আবার যাই সাহস সঞ্চয় করে। এবার আর কোনো ঝামেলা না। আঙুল তুলে ফটাফট দেখাই, "এইটা, ওইটা, এইটাও আর ওইটা..."
পনেরো মিনিটে ঝামেলা শেষ!
আমাদের বুড়ো নিউ মার্কেট
ক্লাস নাইন-টেন আর কলেজে পড়াবস্থায় নিউ মার্কেটে অনেক আসতাম। চিত্রশিল্পীদের রঙ-ক্যানভাস-ইত্যাদি যেখানে বিক্রি হয়, ঠিক তার সামনের ফাঁকা জায়গাটাতে বসে আমরা আড্ডা পেটাতাম। পাশের গলিতেই চায়ের দোকান। সেখান থেকে কেউ না কেউ একটু পর-পর এসে "চা লাগবে কিনা" সেই খোঁজ নিয়ে যেতো। ওই জায়গা ঘিরেই আলুকাবুলি, আলুরদম, ছোলাবুট, চানাবুট, আর মুড়ি-চানাচুরওয়ালারা ঝাঁকা সাজিয়ে বসতেন। আড্ডা মারতে মারতে আমরা হাত তুলেই তাদের কাছ থেকে যা লাগার আনিয়ে নিতাম।
আগের সেই জেল্লা নেই। কোথাও কেউ বসে আর আড্ডা দেয় না। নিয়মও নেই শুনলাম। দোকান-পাটগুলো দেখে খুব ক্লান্ত আর বুড়ো বলে মনে হলো। আগে মানুষের ভিড়ে গম-গম করতো, সেই ভিড়টা নেই। নতুন বই কিনতে হলেও নিউ মার্কেট থেকে কিনতাম। সেই সব বইয়ের দোকানে গিয়েও হতাশ হই। কিচ্ছু নেই। তাক ভর্তি গৎ বাঁধা জনপ্রিয় লেখকদের বিক্রি না হওয়া পুরানো বই। নিউ মার্কেটে গিয়েছিলাম প্রধানত ফুচকা খেতে। ফুচকার সেই স্বাদও আর নেই। কেমন যেনো ম্যাড়মেড়ে সব! মনটা খারাপ হয়েছে।
আমাদের বুড়ো হয়ে যাওয়া নিউ মার্কেটের ছবির সেটটাও জুড়ে দেই, নাকি?
বুড়ো নিউ মার্কেটের যতো ছবি
সিলেটের ছবি
সিলেট ভ্রমনের পোস্টে ছবি দেইনি দেখে অনেকে অভিযোগ করেছিলেন। তাঁদের জন্য সিলেটের ছবির সেটটাও জুড়ে দিলাম।
সিলেট ভ্রমনের যতো ছবি
বিদায়ী আড্ডা
আমার বিদায় বেলায় আড্ডার আয়োজন করেছিলো শাহেনশাহ সিমন আর অতন্দ্র প্রহরী।
যেদিন রাতে রওয়ানা দেবো সেদিন সন্ধ্যায় বনানী স্টার কাবাবে। নজরুল ভাই-নুপুর-নিধি, গৌতম'দা, রায়হান আবীর, শেখ জলিল ভাই, শাহেনশাহ সিমন, এনকিদু, অতন্দ্র প্রহরী, শব্দশিল্পী, আনিস মাহমুদ ভাই, অয়ন, তারেক, আহমেদুর রশীদ টুটুল ভাই, সবজান্তা, স্বপ্নাহত, পরিবর্তনশীল, ও পান্থ রহমান রেজা; সবাইকে একসাথে, এক আড্ডা, এক খাবার টেবিলে পাবার সৌভাগ্যের চেয়ে বড় বিদায়ী উপহার আর কিছু হতে পারে না, সম্ভব নয়।
ধন্যবাদ!
আড্ডার কথা জানানো হয়েছিলো আরিফ জেবতিক ভাই, টুটুল চৌধুরী ভাই, জামাল ভাস্কর'দা-মৌসুম, অমি রহমান পিয়াল ভাইকেও। তবে তাঁদের অন্য জরুরী পরিকল্পনা থাকায় তাঁরা আর শেষে আসতে পারেননি। রণদীপম'দা, মুস্তাফিজ ভাই ও বিপ্লব'দার ব্যক্তিগত পরিকল্পনা ছিলো, আসতে পারননি তাঁরাও। মাহবুব লীলেন ভাই তখন ছিলেন সিলেটে। আর রাবাবের আমেরিকার ফ্লাইট ছিলো আমার ফ্লাইটের পর-পরই। তাই বোচকা-বুচকি সাইজ করার ঝামেলায় সেও আসতে পারলো না।
এবারের ভ্রমনে পিয়াল ভাই, ভাস্কর'দা-মৌসুম, আর রাবাবের সাথে দেখা না হবার আফসোসটা থেকে যাবে।
মন্তব্যে আড্ডার ছবি দিয়েছে শাহেনশাহ সিমন, সৌজন্যে নজু ভাই ও ভাবি নুপুর।
ধীর গতির বিদায়
বিদায় নেবার কথা ছিলো আড্ডার দিন রাতেই। অন্তত্য আমি তো তাই ভেবেছিলাম!
ইত্তিহাদ এয়ারওয়েজের রিপোর্টিং ছিলো ভোর তিনটায়। গিয়ে চেকিং-টেকিং করে উড়োজাহাজে উঠে বসেছি। কিন্তু বিমান আর ওড়ে না। জানা যায় প্রযুক্তিগত সমস্যা আছে। আমরা অপেক্ষা করতে থাকি। দু'ঘন্টা পর আমাদের নামিয়ে দেয়া হলো। এক ঘন্টা পরে আবার উড়োজাহাজে। এবারে কিন্তু আর সমস্যা হয় না। বিমান আস্তে আস্তে রানওয়ের দিকে যেতে থাকে। আস্তে আস্তে গতি বাড়তে থাকে। আমরা দাঁতে দাঁত চেপে থাকি। আমাদেরকে উত্তেজনার চরমে পৌঁছে দিয়ে উড়ান আবার থেমে যায়। ধীর গতিতে যেখানে ছিলো সেখানেই ফিরে আসে। আবার অপেক্ষা। প্রিয় ব্লগার ছোটভাই অতন্দ্র প্রহরী আসার সময় মাহমুদুল হক এর "কালো বরফ" উপহার দিয়েছিলো। অপেক্ষার সময় সেই বইটাই সঙ্গী হয়ে থাকে।
সারাদিন টো-টো করে ঘুরেছি। সারারাত ঘুম হয়নি। স্টার কাবাবে খাবার পরে আর কিছু খাওয়াও হয়নি। ক্লান্তি আর ক্ষুধায় সবার অবস্থাই মারাত্মক। আমাদের অবস্থা বুঝেই বুঝি এবার বিমান বসিয়ে রেখেই আমাদেরকে নাস্তা দেয়া হয়। আমরা বুভুক্ষের মতো খাই। সময় চলে যায়।
সাত ঘন্টা পরে আমাদের আবার বিমান থেকে নামিয়ে দিয়ে সব মিলিয়ে আট কি ন'ঘন্টা পরে নিশ্চিত ভাবে জানানো হয় যে "আজ আর সমস্যার সমাধান হবে না!"
আমাদের ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। কোথায়? হোটেলে। কোন হোটেল? কানাডা-আমেরিকা যাত্রীদের সোনারগাঁও হোটেলে। ইউরোপ যাত্রীদের হোটেল রেডিসন। আর আরব যাত্রীদের নিকটস্থ কোনো নাম না জানা হোটেলে। এই বৈষম্যের কারণটা আমার বেশ মনে ধরেছে। তাদের দাবি যারা বেশি দূরে যাবেন তাদের আরামটা নিশ্চই বেশি দরকার। তা বটে!
থাকি কাছেই, বনানীতে। তাই দাবি জানাই হোটেলে না আমি বাসায়ই যাবো। আমার মতো আরো কয়েকজনকে মেলে। ইত্তিহাদ আমাদের ফোন নাম্বার লিখে রেখে জানান, "দুই-তিন ঘন্টার নোটিশে বিমানবন্দরে আসতে হতে পারে? পারবেন?" পারবো, তবে তার মানে হলো বাসার কাছাকাছিই থাকতে হবে। দূরে কোথাও যাওয়া যাবে না।
বাবা ফোনে বিস্ময় নিয়ে বলেন, "তুই যাসনি?"
"না বাবা! এয়ারপোর্টে গাড়ি পাঠাও।"
বাসায় এসে ভরপেট ভাত খাই। মা মাথায় হাত বুলিয়ে দেন। বাবা আর অফিসে ফিরে যান না। আমি আরেকবার আমার বিছানায় মাথা নোয়াই। সকালে মা পাতে তাঁর হাতে বানানো পরটা তুলে দেন, গোসতো। বাবা পরম মমতা নিয়ে আমার খাওয়া দেখেন। তাঁদের এই ছেলের এসব অনর্থক কাজ তাঁরা আর অনেকদিন দেখতে পারবেন না। বিকেলেই ফ্লাইট!
© অমিত আহমেদ
মন্তব্য
hmm
হই মিঞা, আপনে না কইলেন এয়ারপোর্ট থাইক্কা বের হননাই! আপনেরে হাতে পাইয়া লই...
আগেও বলেছি, আপনার লেখা পড়ে ঢাকার অন্য একটা চিত্র দেখতে পাই। এবারে সেটা নয়, বরঞ্চ ফেরৎ যেয়ে স্মৃতির ঝাঁপি তুলে ধরাই মনে হলো।
নটরডেমের চা আর প্যাটিসের দাম ও বেড়ে গেলো! সব-ই বদলে যায়!
শেষের কয়টা লাইন পড়েতো কান্না কান্না লাগলো।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
অপু ভাই, আমাদের এই আবেগটাই আমাদের মারলো।
ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফ্লিকার | ইমেইল
গোশত দিয়া পরটা খাইছেন, কান্দনের কিছু তো পাইলাম না।
আবেগ মারলো আর কই?মারলে তো দ্যাশের পোলা দ্যাশেই থাকতো, বিদেশরে নিজের দ্যাশ কইতো না।
-------------------------------------------------------
আমি সেই অবহেলা, আমি সেই নতমুখ, নীরবে ফিরে চাওয়া, অভিমানী ভেজা চোখ।
আমি গোসতো দিয়ে আরাম করে পরটা খেয়েছি, কিন্তু আমার বাবা-মা? আর একটা দেশে না জন্মে "নিজের দেশ" বলার মধ্যেও তো একটা আবেগ কাজ করে।
ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফ্লিকার | ইমেইল
না অমিত ভাই, ব্যাগ কলেজ থেকে দেয়া হয় না। তবে ব্যাগ স্বচ্ছ হওয়া এখন বাধ্যতামূলক- কারণ হচ্ছে বোমা হামলা ক্রেজের সময় কলেজে বোম মারা হবে এই হুমকি দেয়া হয়েছিলো। সেটা এড়াতেই এই সমন জারি।
মিষ্টির ছবি বেশী বস হইসে- রোজার দিনে খিদা লাইগে গেলো।
... লেখার শেষাংশ চমৎকার বিষণ্ণ।
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!
শেষের প্যারাটা ............ অসাধারণ।
গেলি!
হুম
শেষ দিন আমাকেও বলা হয়েছিলো কিন্তু আসতে পারিনি
...........................
Every Picture Tells a Story
কেমন ঝরঝরে লেখা!
আড্ডার মতই মন ভালো করা লেখা !
---------------------------------
তবে যে ভারি ল্যাজ উঁচিয়ে পুটুস্ পাটুস্ চাও?!
---------------------------------
বাঁইচ্যা আছি
পুচ্ছে বেঁধেছি গুচ্ছ রজনীগন্ধা
- হুমম।
কলেজে আমিও গিয়েছিলাম অ-নে-ক দিন পর। ততোদিনে চেহারায় হয়তো সেই আমলের চটুলতা মিইয়ে গিয়ে একটু 'অন্যরকম' আভাস লেগে থাকবে। গিয়েছিলাম একা একাই। প্যান্টের পকেটে দুই হাত ঢুকিয়ে যখন প্যাঙ্গুইনের মতো হেলেদুলে হেঁটে যাচ্ছিলাম তখন আমাকে আশ্চর্য করে দিয়ে ভূঁইয়া স্যার তীক্ষ্ণ চোখে আমার দিকে তাকিয়েই উল্টো দিক থেকে আসতে লাগলেন। কাছে আসতে সালাম দিলাম, ভুঁইয়া স্যার আমাকে আরো চমকে দিয়ে বললেন, "কি, গ্রুপ সিক্স না?"
আমরা বের হওয়ার পর কলেজের রূপ বদলেছে বারো আনা। পুরনো রূপটাকে পেলাম না খুঁজে। ক্যান্টিনে ঢুকেছিলাম খাবার টেস্ট করতে। খেতে পারিনি। কেবল এক কাপ চা খেয়ে চলে এসেছি। মনে হয় খাবারের স্বাদ পাল্টে গেছে কিংবা পাল্টেছে আমার রসনার স্বাদ!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ঢাকাবাসের প্রতিটা মুহূর্ত এত সুন্দরভাবে মনের আর ক্যমেরার ফ্রেমে ধরে আনলেন। খুব ভাল লাগল।
শেষটায় চোখ ভিজে উঠল। উড়োজাহাজগুলো মাঝে মাঝে এমন সংবেদনশীল হতে পারে জানা ছিল না।
আবেগের কথা আর নাই বা বললাম, পুরা লেখাটাই তো আবেগে ভরা, অমিত! ভাগ্যিস ঢাকা থেকে পোস্টটা দাওনি। তাহলে নির্ঘাত আবেগের বশে কেঁদে ফেলতাম
শেষ দিনের ছবি
অমিত, শাড়ির পাড় আর ফলস একই জিনিস (ফসল না)।
ফ্লাইটের এই সব সমস্যায় অনেক সমইয় ভালো খানা - পিনা, শোনা হয়ে যায়। ভাগ্য থাকলে ফ্লাইট ওভার বুক থাকলেতো কথা নাই, ফার্স্ট ক্লাশ পাওয়া যায় ঃ)
লোভনীয় মিষ্টির ছবি সব।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
ভাইজান, মিষ্টির ছবি গুলি দেওয়ার জন্যে জানাই তেব্র দিক্কার, কতদিন খাইনাই, তারপরে দেখাইলেন ছবি, এখন তো লোল পইড়া সব ভাইসা জাইতেসে।
জটিল লেখা, ফটুক গুলাও ফাটাফাটি।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
ঢাকায় থাকি। যতদিন পারি থাকব। আপনার লেখা অনেক কথা মনে করিয়ে দিল। ধন্যবাদ।
---------------------------------------------------------------------------
The philosophers have only interpreted the world in various ways; the point, however, is to change it.
[MARX : Theses on Feuerbach]
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
শেষ দিনের আড্ডায় যাবার খুব ইচ্ছে ছিল কিন্তু পরীক্ষা দিয়ে বের হয়ে আর শক্তি ছিল না বাসে উঠার তাই হল না পরের বার আশা করি আর ভাল করে আড্ডা হবে
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
বাঃ, সিরিজের চমৎকার সমাপ্তি।
চমৎকার লেগেছে পুরো সিরিজটা।
আপনার সাথে দেখছি আমার দেখাই হল না!
বাংলাদেশ-কানাডা সচল বিনিময়ের পাল্লায় পড়ে আমি শহীদ হয়ে গেলাম!
--------------------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়...
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
আহারে... অমিতের হাসিমুখখানা আবার যে কবে দেখতে পাবো...
নানান ভ্যাজালে আরাম করে একটা আড্ডাও দেওয়া হইলো না
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ভালো লাগলো
ধানমন্ডির আর ছবি নেই ???
আরে.......... চলে গেছেন ভেবে এসএমএস -এর রিপ্লাইটা দিলামনা।
ভালো থাকবেন।
নতুন মন্তব্য করুন