আমি যখন থাকি না তখন আমার ঘর কেমন থাকে?
প্রতিবার ঘরে ফেরার সময় রাজশাহী -ঢাকা বাস টার্মিনালের মোড়ে নামার পরপরই বাকী রাস্তাটা মনে হয় ঘরটার কী অবস্থা? খাটের সাথেই প্রায় লাগোয়া যে ৯ ফুটে উঁচু বইয়ের সেলফে দুই সারিতে হাজার হাজার বই আছে সেগুলো কি আরও ধুলি ধূসরিত হয়ে উঠেছে আসন্ন যত্নের আশায়? কোন কোনটা কি স্থানচ্যুত হয়ে পড়ে গেছে আলগোছে?
সত্তর বছর বয়সে কি আমি নিজেকে হিমালয়ের কোন দুর্গম গুম্ফায় আবিস্কার করব? নাকি আদিপুরুষের ভিটে আফ্রিকার সাভানার কোন লালমাটির গোলাঘরে? নাকি ফিনল্যান্ডের বরফাচ্ছন্ন লাল কাঠের উষ্ণ কুড়েতে? পলিনেশিয়ার প্রবাল দ্বীপে? নাকি প্রিয় ভুখন্ড পেরুর কোন নাম না জানা গ্রামে? পদ্মাপারের রাজশাহীতে? জানি না। তাতে আদৌ কিছু যায় আসেও না হয়ত।
আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
সারায়েভো তখনও ঘুমে, আমরা চারজন হিম শীতল বাতাসের মাঝেই অটোম্যানদের তৈরি শতাব্দী প্রাচীন পাথর বিছানো রাস্তা মাড়াতে মাড়াতে দেখতে থাকলাম কয়েক বছর আগেই বোমায় প্রায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া এক মহানগরীতে। কাঠের পাল্লা দেওয়া দোকানগুলো খুলতে শুরু করেছে একে একে। সবুজ কাঠের ব্যবহার বেশি, আর মসজিদের সাদা পাথরের। ধুমায়িত কফির গন্ধ ও বহুল কাম্য উষ্ণতার খোঁজে সেধিয়ে গেলাম প্রাচীন শহর কেন্দ্রের কাছের এক ক্যাফেতে।