মানুষের সাথে পেঙ্গুইনের একমাত্র সম্পর্ক এই সেদিন অবধিও ছিল কেবলই খাদ্য-খাদকের সম্পর্ক! জেলে, নাবিক ও অভিযাত্রীরা যখনই পেঙ্গুইনদের আবাসে গিয়েছেন তখনই তাদের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মেরে জাহাজ ভর্তি করেছেন সমুদ্রযাত্রার রসদ হিসেবে, সেই সাথে বাক্স ভর্তি করে এনেছেন পেঙ্গুইনদের ডিমও!
গত শীতের এক ধলপহরে ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে হিমে জবুথবু হয়ে থৈ থৈ সবুজ নলবনের মাঝ দিয়ে বয়ে চলা লেচুয়ামারা খালের স্বচ্ছ জলের উপর দিয়ে আলগোছে চলেছি আমাদের পাখি রিং করার দল নিয়ে। দুই বিলের মধ্যে সংযোগ রক্ষাকারী এই সরু খালে জল এতই টলটলে যে নিচে ঝাঝিদামের জগত, মাছের অপূর্ব উপস্থিতি এমনকি তলদেশ পর্যন্ত দেখা যায় এক নিমিষে। আর কিছুটা স্রোত আছে বলে জোঁক নেই এখানে।
কোনখানে এক নারী ছিলেন, বয়স ৩০ ঘেঁষা। মানুষ তাকে প্রশ্ন করে- এখনো সন্তান হল না? তার একেকদিনের উত্তর একেক রকম হয়, কিন্তু তাদের সবসময়ের সাথী হয় জোর করে আনা হাসি।
“না, এখনো নয়”- মৃদু হাসতে হাসতে হতাশা ঢেকে বলা তার উত্তর!
যাবার আগে মানুষেরা বলা যায় “সারা জীবনের জন্য অপেক্ষা কর না। সময় এগিয়ে আসছে, জানো তো?”
তারা বিদায় নেয়। মহিলা তাঁর হাসি ধরে রাখেন। আর একাকী, সে কাঁদে।
১৮৭৬ সালে প্রকাশিত W W Hunter-এর A Statistical Account of Bengal এর মালদহ, রংপুর এবং দিনাজপুরের ভলিউম থেকে রংপুরের বন্যপ্রাণী অংশটি অনুবাদ করা হল।
স্তন্যপায়ী প্রাণী-
চারিদিকে মৃত্যুর চেয়েও হিম এক নীরবতা। বিশাল বিস্তীর্ণ ধবধবে সাদা করাল এক জগতে ডানা মেলে আছে যে শূন্যতা তাকে ভেদ করার সাহস কারো নেই, এমনকি সূর্যের আলোও তা পারে না বছরের অর্ধেক সময় জুড়ে, সেখানে টিমটিমে জীবন এবং প্রদীপ্ত আশার প্রদীপ জ্বালিয়ে রোজনামচা লিখে চলেছেন এক সিংহপুরুষ। এক যুগ ধরে চালিয়ে আসা অভিযানের পর অভিযানের লক্ষ্য অবশেষে পূরণ হয়েছে তাই, কিছুদিন আগেই সঙ্গীদের নিয়ে এক ভয়ংকর বরফ মহাদেশের বিশে
ভোর চারটা, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬- সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওড়ের গোলাবাড়িতে নোঙর করা মাদারশিপ থেকে আমাদের ছোট্ট নৌকা খাল দিয়ে ঢুঁকে পড়েছে লেচুয়ামারা বিলে, পশ্চিম দিগন্তে বিশাল এক মরচেরঙা চাঁদ, তার ভুতুড়ে কম্পমান ছায়া পড়েছে হাওড়ের আঁধার জলে। তখন কাকচক্ষু জল এতই কালো যে মনে হচ্ছে আমরা যেন শূন্যে ভেসে পাড়ি দিচ্ছি কাঠের নৌকায়, আমাদের গন্তব্য বুঝি ঐ দূরের চাঁদ, যা আজ নেমে এসেছে হাওড়ের কাছাকাছি। দূরে যেখান
‘প্যাঁচা হচ্ছে একই সঙ্গে মানুষের সবচেয়ে পরিচিত এবং অপরিচিত পাখি। যে কোন মানুষকে এমনকি শিশুকে বললেও কোনরকম দ্বিধা ছাড়া একটি প্যাঁচা এঁকে দিতে পারবে কিন্তু যদি বলা হয় শেষ কবে বুনো প্যাঁচা দেখেছে তখন সেটি মনে করতে পারবে না, কারণ হয়ত সে কোনদিনই প্রকৃতিতে প্যাঁচা দেখেই নি।’ – এইই ছিল ‘দ্য ন্যাকেড এপ’ খ্যাত বিখ্যাত জীবতত্ত্ববিদ ডেসমণ্ড মরিস রচিত ‘প্যাঁচা’ বইটির প্রথম লাইন।
লাওয়াছড়ার বনের এক সরু ঝিরির দুই ধারে নিরব বসে আছি আমরা, আমরা বলতে মানবসঙ্গী কেবল বন্ধু সায়েম চৌধুরী যে ৪০ গজ দূরে ঝিরিটি যেখানে বাক নিয়ে বনের গহনে সেধিয়ে গেছে সেই কোণে বসে অধীর আগ্রহে প্রতীক্ষা করছে এক বিরল পাখির, যার নাম লম্বাঠোঁট-দামা। অত্যন্ত লাজুক আমাদের এই পালকওয়ালা বন্ধুটি, টানা কয়েক ঘণ্টা মূর্তির মত নট নড়নচড়ন অবস্থা থাকলে হয়ত আমাদের কৃপা করে সে বেরোতেও পারে ঝিরির জলের আশেপাশে খাবারের সন্ধান