মেঘ আর বৃষ্টির কথোপকথন - ১

চশমাওয়ালি এর ছবি
লিখেছেন চশমাওয়ালি [অতিথি] (তারিখ: শুক্র, ২৪/০৭/২০০৯ - ৭:৩৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

নায়কের নাম মেঘ। ধরা যাক অনেকটা বাংলা সিনেমার আদর্শ নায়কের মত সে। ঢাকা ভার্সিটি কিংবা বুয়েটের কোন খটমটে সাবজেক্ট থেকে ভাল রেজাল্ট নিয়ে পাশ করে একটা মাল্টিন্যাশনালে কাজ করে এখন।

চোখে মোটা চশমা। দেখতে বেশ নম্র ভদ্র পুতুপুতু টাইপ। মনে হয় একটু ধর্মভীরু (শুধু শুক্রবারে নামাজ পড়ে); সবাই খুব ভাল ছেলে হিসেবে জানে ওকে। (যদিও আমার জানা মতে এই টাইপগুলা ভেজা বিড়াল ভেতর ভেতর খুব বদ হয়) যাই হোক মেঘ আসলে কেমন সেটা না হয় পরে জানব এবার নায়িকার পরিচয় দিই।

নায়িকা হল বৃষ্টি। সে মোটেই বাংলা কিংবা হিন্দি সিনেমার নায়িকাদের মত আদর্শ নারী না বরং একটু তাফালিং টাইপ। নর্থসাউথ কিংবা আইইউবি থেকে বের হয়ে ধরি এখন কোন একটা রং/সিমেন্ট/নির্মাণ কম্পানিতে কাজ করে। আদর্শ নারী না বল্লাম এই জন্যে যে সে স্কুলে থাকতে আলাদা আলাদা দু্ইটা, কলেজে একটা আর ইউনিভার্সিটিতে একসাথে দুইটা প্রেম করেছিল (আদর্শ নারীদের ক্ষেত্রে প্রেম একবারই হবে শুধু তার পতির সাথে)। অবশ্য এইটা কি আর বৃষ্টির দোষ; মায়াবতী মিষ্টি চেহারার মেয়েদের পিছে সব সময়ই কয়েকটা ছেলে লেগে থাকে আর এর মাঝে দুই একটা প্রেম হয়ে গেলে সেটা তেমন দূষণীয় কিছু হওয়া উচিত না।

তো বৃষ্টির ইউনি জীবনে মেঘের সাথে পরিচয়। মেঘ আপাতদৃষ্টিতে সহজ সরল মানুষ। সেইবার পি এলে রাত তিনটা পর্যন্ত ফাইট দিয়ে বিছানায় গেলে তার আর ঘুম আসে না। সে প্রথম বুঝতে পারে পাঁচটা মহাসাগরের বাইরেও আরেকটা মহা মহা সাগর আছে যেটার কথা কোন বইয়ে লেখা নাই।

এত বিতং এখন আর না দিই। একসাথে দুইখান প্রেম করতে করতে বৃষ্টি মনে হয় বোর্ড হয়ে গেছিল। ক্যামনে কী হইল আর মাঝখান থেকে মেঘ ঢুকে পড়ে নিউটনের তৃতীয় সূত্রকে আবারো প্রমান করল। ইয়ো আর ম্যাচো ম্যানদের ভীড়ে থাকা বৃষ্টি বুঝল তার আসলে পুতুপুতু ছেলে ভাল লাগে আর মেঘের কথা কি বলব - আদর্শ নারীদের কেমন লাগতে পারত জানার আগেই তো ওর আনকোরা হৃদয় ভালবাসার তীর এফোড় ওফোড় করে দিয়েছে।

ভূমিকা বেশি বড় হয়ে যাচ্ছে - সংক্ষেপ করি। এরপর উরাধুরা প্রেম করে বিয়ে করল ওরা। মানে প্রেম করল বৃষ্টি একাই; মেঘ খালি বেকুব হইল আর উপলব্ধি করল জীবনটা যে কত্ত আনন্দের হতে পারে।

এখন ওরা থাকে নিকেতন কিংবা বসুন্ধরায় ওদের ছোট্ট সাজানো সংসারে। আর স্বামী স্ত্রীর একান্ত কথা আমি কান পেতে শুনি পূর্ণেন্দু পত্রী ইস্টাইলে।

ওদের এলোমেলো সংলাপ নিয়েই এই মেঘ আর বৃষ্টির কথোপকথোন। পরিষ্কার মন নিয়ে পইড়েন। এগুলো স্রেফ ওদের দুজনের অর্থহীন কথাবার্তা। বেশি মানে খোজার দরকার নাই।

--------------------------------------------------------------------------

অ্যাই।
হু।
শোন না!
কী?
আরে শোন না!
বল।
আজকে থেকে তোমাকে আমি সুরেশ বলে ডাকব।
কিইই..?
হু, সুরেশ বলে ডাকব।
বৃষ্টি, তোমার কি মাথা খারাপ? কেন?
শোন আমাদের ক্লাসে সুরেশ বলে একটা হিন্দু ছেলে ছিল। আমার অনেক শখ ছিল ওর সাথে প্রেম করার। সেইটা তো হল না তাই ওর নাম ধরে তোমাকে ডাকব।
তুমি খুব টুইস্টেড কথা বল আজকাল। হিন্দু ছেলের সাথে প্রেম করার ইচ্ছা ছিল মানে কী? কী হত তা হলে?
কী হত জানো না সুরেশ?
না। হাসো কেন?
কেন হাসি বোঝ না সুরেশ?
ছিঃ বৃষ্টি তোমার মন এত নোংরা!
ও মা আমি আবার কি করলাম! হাসলেও কি দোষ?

কী এখন কথা বল না কেন সুরেশ?
অ্যাই সুরেশ!
সুউ..রেশ
চুপ কর।
কেন সুরেশ আমার কথা শুনতে না তোমার অনেক ভাল লাগে?
সুরেশ ফুরেশ এইগুলা কি শুরু করেছ!
সুরেশ তুমি কি জল খাবে?
স্টপ ইট।
আচ্ছা ঠিক আছে। সুরেশ তুমি কি পানি খাবে?
ওফ বুঝেছি তোমার কি হয়েছে। এইযে টিভি বন্ধ করলাম। এইদিকে আস।
হুমমম..
এইবার বল আমি কে?
তুমি সুরেশ।
এইবার?
সুর..
এখন?
আচ্ছা বাবা আচ্ছা। মেঘ..তুমি মেঘ।
এইতো ঠিক আছে। যাও এবার আমাকে এক কাপ চা দাও। খেলার আর মাত্র সাত ওভার বাকি।


মন্তব্য

রেনেট এর ছবি

খাইস্টা ট্যাগ দেখে ভিতরে ঢুকে খাইস্টামির কোন চিহ্ন না দেখে চরম হতাশ!

তবে কথপোকথনের শেষে ১ দেখতে পাচ্ছি। এটাই আশার কথা। আগে বাড়েন।
---------------------------------------------------------------------------
No one can save me
The damage is done

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

নিবিড় এর ছবি

আমিও রেনেট ভাইয়ের মত একি কথা বলতে চাই দেঁতো হাসি


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

মূলত পাঠক এর ছবি

কথোপকথনে মজা পেলাম। ভূমিকাটাও উপভোগ্য লাগলো।

শুধু শিরোনামে বানানটা একটু ঠিক করে দিলে ভালো হতো।

তানবীরা এর ছবি

পাঁচতারা। আমার জোশ লাগছে ঃ)
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

চশমাওয়ালি এর ছবি

@মূলত পাঠক - আমি খুব দুঃখিত বানানটার জন্যে। এফ এম রেডিওর আরজে টাইপ কথা বলি আর বাংলা লিখলে সাথে সাথে স্পেলিং চেকারে দিয়ে পোস্ট করে দেই। সেখানে ডিটেক্ট না করলে বুঝতেও পারিনা। খুব লজ্জ্বা পেলাম। এরপর থেকে আরো সতর্ক থাকব।

আমার মনে হয় এখনো এডিট করার পারমিশন নাই। বানান ঠিক করে সংরক্ষণ করলে রিপোস্ট হয়ে যাবে কিনা বুঝতে পারছি না। মডারেটররা কেউ কি সাহায্য করতে পারেন।

@তানবীরা আপু - অনেক ধন্যবাদ। আপনার হাতের এখন কী অবস্থা?

---------------------------------------------
ল্যাসিক করাতে ভয় পাই আর লেন্স ভাল লাগে না।

---------------------------------------------
ল্যাসিক করাতে ভয় পাই আর লেন্স ভাল লাগে না।

মূলত পাঠক এর ছবি

আরে দুঃখিত টুঃখিত হয়ে পড়বেন না। মডুরা এ বিষয়ে সাহায্য করেন, ওঁদের জানিয়ে দেখুন না।

আরো লিখুন, এমন চমৎকার লেখা পড়ার আগ্রহে রইলাম।

বেগুনী-মডু এর ছবি

শিরোনাম ও ট্যাগ শুধরে দেওয়া হল। বিলম্বের জন্য দুঃখিত।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

মাইন্ড করবেন না কিন্তু, তবে পোস্টের চেয়ে আপনার সিগনেচারটাই বেশী মজার লাগলো... !!!
কথোপকথন এমন জায়গায় শেষ করলেন যে বড় ?? ...
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!

অতিথি লেখক এর ছবি

আমারো একই কেইস! না ল্যাসিক, না চশমা। মাঝখান থেকে সব সুররিয়ালিস্টিক দেখি।

স্বপ্নহারা এর ছবি

ভাল লাগল বেশ! তবে আট্টু আগাইলে ভাল হইত...খাইছে
----------------------
হতাশাবাদীর হতাশাব্যঞ্জক হতশ্বাস!

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

রেনেটরে দিয়ে কিছু হবে না। খাইষ্টা বুঝতে খাইষ্টা মন লাগে। আমি তো জগৎ জুড়ে শুধু খাইষ্টার ভিড় দেখি। আমার দারুণ লেগেছে। দ্বিতীয় পাঁচটা আমি দাগালাম। আকর্ণবিস্তৃত যে হাসিগুলো দিয়েছিলাম কিছু জায়গায়, সেগুলো মন্তব্যে প্রকাশ করতে পারলাম না বলে নিজেরই দুঃখ রয়ে গেলো।

খাইষ্টাকথন আসুক আরও। কিছু প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন ছিলো, তবে সেগুলো করে আর কল্পনার মজা নষ্ট করলাম না। চোখ টিপি

অমিত আহমেদ এর ছবি
আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

অমিত আহমেদের সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত...

চশমাওয়ালি এর ছবি

বেগুনী মডু কে ধন্যবাদ বানান শুধরে দেওয়ার জন্যে। আমি তো প্রায় ঠিক করে ফেলেছিলাম জীবনে আর পর্ব ২ নামাব না - একেবারে শিরোনামে গলদ! ছি ছি!

@ইশতিয়াক রউফ ভাই, কি যে বলব আপনাকে - রেনেট ভাই আর নিবিড় ভাই এর মন্তব্য পড়ে আমি উত্তর দেবার ভাষা পাচ্ছিলাম না। খাইস্টা মন শুধু মাত্র আমার ব্যাপারটা মোটেই তেমন প্রীতিকর নয়। হাসি

---------------------------------------------
ল্যাসিক করাতে ভয় পাই আর লেন্স ভাল লাগে না।

---------------------------------------------
ল্যাসিক করাতে ভয় পাই আর লেন্স ভাল লাগে না।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

খুবই ভালো। চলুক। নিশ্চই পড়বো।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

খুব দারুণ লাগল। চলুক।

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

আপুনি...ফাটাফাটি... সেরোম হয়েছে।

আপনার আর আমার অবস্থা একই রকম, চশমাও ভাল লাগেনা লেন্স এক চোখেও দেখতে পারিনা, আর ল্যাসিককে পাই ভয়! আমাদের যে কি হবে... ইয়ে, মানে...

--------------------------------
কাঠবেড়ালি! তুমি মর! তুমি কচু খাও!!

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

সাত ওভার ফুরাতে তো এখনো অনেক বাকি! তা খেলায় কার জেতার সম্ভাবনা বেশি বলে আপনার মনে হয়!

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

এটা আগে পড়ি নাই ... দারূণ চলুক
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

আশফাক আহমেদ এর ছবি

চলে

-------------------------------------------------

ক্লাশভর্তি উজ্জ্বল সন্তান, ওরা জুড়ে দেবে ফুলস্কেফ সমস্ত কাগজ !
আমি বাজে ছেলে, আমি লাষ্ট বেঞ্চি, আমি পারবো না !
আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।