District 9

আশরাফ মাহমুদ এর ছবি
লিখেছেন আশরাফ মাহমুদ (তারিখ: বিষ্যুদ, ২৮/০৭/২০১১ - ১১:৩২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


চিত্র ১:
১৭৬৯। হাইতি। এখানে মাটির রঙ আলকাতরা-কালো, তারচে' বেশি কালো এই ফসলি জমির শ্রমিকদের গায়ের রঙ। ওরা ৪৪ জন। একটানা কাজ করছে সেই উষা থেকে, যখন সূর্যের-ও চোখ খুলে নি, আর এখন সূর্যের ঘুমিয়ে পড়ার সময়। পাক্কা ১২ ঘণ্টা। শ্বাপদের মতো সর্তক চোখে তাকিয়ে আছে শ্বেতাঙ্গ মনিব। কাজে একটু এদিক ওদিক হলে চাবুকের বাড়ি, গরম শিকের ছ্যাঁকা। ওরা কাজ করে যায়, মাঝে মাঝে হাঁপিয়ে উঠলে উঁকিঝুঁকি মারে আশপাশে, দ্রুত লয়ে কথা বলে। ওরা কাজ করে যায়। নিয়তি। মানুষের অপমান। ঈশ্বরের নিস্পৃহতা। ওরা কাজ করে যায়। মার খায়। মরে যায়। বংশানুক্রমিক। হয়তো দিনের শেষে এক টুকরো রুটি ও জল মিলবে, ভাগ্য ভালো হলে মাংশ লেগে থাকা হাড়, সবজি-ভাজা। আর নিশাচর পাখির মতন থেকে থেকে ভেঙে যাওয়া ঘুম।

চিত্র ২:
আরো আগের কাহিনি। গ্রীক সভ্যতা! খ্রিস্টাব্দের দুই হাজার বছর আগের ব্রোঞ্জ যুগ অর্থ্যাৎ মাইনোয়ান যুগ। দাসপ্রথার সূচনা এখানেই। গ্রীক সভ্যতায় দাসপ্রথা ছিলো স্বাভাবিক। অ্যারিস্টটল-ও মনে করতেন দাসপ্রথা প্রাকৃতিক নিয়ম। তাইতো এথেন্সের ব্যবসায়ীরা এশিয়া মাইনর, সিরিয়া, মিসর, আরব দেশ থেকে দাস আনত। গ্রীকদের আভিজাত্যের প্রতীক স্থাপত্য নির্দশন, দালান, প্রাসাদ দাসশ্রমেরই ফসল।
রোম সভ্যতাও পিছিয়ে ছিলো না। শুধুমাত্র গ্রীক থেকে খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকে ১ লাখ ৫০ হাজার দাস নেয়া হয়েছিলো। কৃষি ও খনিজ- এই দুই ছিলো দাসদের শোষণের ক্ষেত্র। চলতো অমানুষিক নির্যাতন, বর্বর শাস্তি।

বস্তুত যেকোনো মানুষিক সভ্যতাতেই দাসশ্রমের অবদান রয়েছে। হয়তো এই কারণেই কার্ল মার্কস বলেছিলেন, "মানব সভ্যতার ইতিহাস মূলত শ্রেণীবৈষম্যের ইতিহাস।" কি সিন্দু সভ্যতা, কি বৌদ্ধযুগ- সর্বত্রই একই চিত্র- দাসপ্রথার শিকলে বন্দী মানুষদের পিষে পিষে যাওয়া।

চিত্র ৩:
দেয়ালে পিঠ থেকে গেলে আপনি কী করেন? বিদ্রোহ? সব ভেঙেচুরে চুরমার? অথবা নিয়তির হাতে নিজেকে সঁপে দেয়া? না, নিয়তি নয়, স্পার্টাকাস বিদ্রোহের ছুরিকায় উপড়ে ফেলতে চেয়েছিলো দাসপ্রথার মূল। গ্লাডিয়েটরদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে পালিয়ে অনুগামীদের নিয়ে যুদ্ধ করেন স্পার্টাকাস। বিদ্রোহে বেঁচে যাওয়া ছয় হাজার দাসকে ক্রুশবিদ্ধ করে হত্যা করলে-ও এই বিদ্রোহ ছিলো বড় ধরণের ধাক্কা।
ভলতেয়ারকে মনে আছে? সেই যে বলেছিলেন, "স্পার্টাকাসের বিদ্রোহ ইতিহাসের সবচেয়ে ন্যায়সঙ্গত যুদ্ধ, হয়তো একমাত্র ন্যায়সঙ্গত যুদ্ধ।"
বিদ্রোহ হয়েছিলো রোমান সভ্যতার সময়ে-ও। খ্রিস্টপূর্ব ১৪০ অব্দ থেকে খ্রিস্টপূর্ব ৭০ অব্দের ভেতরে। সিসিলির প্রথম যুদ্ধ, সিসিলির দ্বিতীয় যুদ্ধ, ইতালির বিভিন্ন অঞ্চলে ঘটে যাওয়া অভ্যুত্থান।

সবচেয়ে বড় মাপের ছিলো হাইতির দাস বিদ্রোহ (১৭৯১-১৮০৩) । ফরাসি বিপ্লব দ্বারা প্রভাবিত। বিদ্রোহীরা শ্বেতাঙ্গ ফরাসি মালিকদের হত্যা করে। বিদ্রোহের দুই পুরোধা ছিলেন ফ্রাঁসোয়া ডোমিনিক তুসাঁ এবং জ্যাঁ জ্যাক দেসালিনে। নেপোলিয়ন তুসাঁকে মারতে/গ্রেফতার করতে ২০ হাজার সৈন্য পাঠালে-ও বিদ্রোহীদের গেরিলা যুদ্ধের কারণে অবশেষে শান্তি চুক্তি করতে বাধ্য হয়। কিন্তু আলোচনার জন্য ডেকে তুঁসাকে গ্রেফতার করা হয় এবং ১৮০৩ সালের এপ্রিলে ফরাসি কারাগারে মারা যান তিনি। উঠে আসেন অন্য নায়ক দেসালিনে। রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে ১৮০৪ সালের ১ জানুয়ারি পত্তন হয় স্বাধীন হাইতির, দেসালিনের হাত ধরে (অর্ণব, ২০১০)।

চিত্র ৪:
হাইতি বিপ্লবের ফলাফল দেখে ব্রিটেন ১৮০৮ সালে আটলান্টিক হয়ে দাসব্যবসা বন্ধ করে এবং অবশেষে ১৮৩৪ সাল থেকে ১৮৩৮ সালের মাঝে পুরোপুরি রধ করে। ফরাসি করা করে আরো পরে- ১৮৪৮ সালে।

আমেরিকায় ১৮৬০ সালে দাস ছিলো ৪০ লাখ। মূলত দক্ষিণাংশের কৃষিনির্ভর রাজ্যগুলোতে বেশি। উত্তরাঞ্চলে দাসত্ববিরোধি আন্দোলনের ডাক দেন সমাজসংস্কারক উইলিয়াম গ্যারিসন, লেখক হ্যারিয়েট স্টো। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিঙ্কন দাসপ্রথাবিরোধি ছিলেন। অবশেষে ১৬৬৩ সালে গৃহযুদ্ধ বিধ্বস্ত আমেরিকা ১৩তম সংশোধনীর মাধ্যমে নিষিদ্ধ করে দাসপ্রথা।

আধুনিক যুগে সর্বশেষ দাসপ্রথা লুপ্ত করা হয় ১৯৬৩ সালে আরব আমিরাতে। কিন্তু দাসশ্রমের বিবমিষা এখনো মানবসভ্যতাকে রেহাই দেয় নি। দাসত্ববিরোধি আন্তর্জাতিক সংগঠন অ্যান্টি-স্লেইভেরি ইন্টারন্যাশনালের মতে জোরপূর্বক শ্রম দেয়া-ও দাসত্ব, এবং বর্তমানে বিশ্বে ২ কোটি ৭০ লক্ষ দাস রয়েছে (Benjamin, ২০১০)। তবে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার মতে জোরপূর্বক শ্রম দেয়া দাসত্ব নয়, সেই হিসেবে এখনো ১ কোটি ২০ লক্ষ মানুষ জোরপূর্বক শ্রম, দাসত্ব, ও সংশ্লিষ্ট প্রথা বন্দী।

ল্যাঙ্গস্টন হিউজের (Langston Hughes) I, Too, Sing America কবিতাটি মনে আছে?

আমি-ও গাই, আমেরিকা

আমি কালো ভাইটি।
যখন বণিকেরা আসে
তারা আমাকে রান্নাঘরে
খেতে পাঠিয়ে দেয়,
কিন্তু আমি হাসি,
ভালো খাই,
এবং সবল হয়ে উঠি।

আগামীকাল,
বণিকেরা আবার এলে
আমি টেবিলেই বসবো
কারো সাহসই হবে না
অতঃপর আমাকে বলতে,
"যা, ব্যাটা, পাকঘরে খা।"

অধিকন্তু,
ওরা দেখবে কতো শোভন আমি
এবং লজ্জিত হবে-

আমি-ও, আমেরিকা

I, too, sing America.

I am the darker brother.
They send me to eat in the kitchen
When company comes,
But I laugh,
And eat well,
And grow strong.

Tomorrow,
I'll be at the table
When company comes.
Nobody'll dare
Say to me,
"Eat in the kitchen,"
Then.

Besides,
They'll see how beautiful I am
And be ashamed--

I, too, am America.


দাসপ্রথা সম্পর্কে এই তথ্যসমূহ পুনরায় স্মরণ করার কারণ সাম্প্রতিক দেখা একটি চলচ্চিত্র। নীয়ল ব্লমকাম্প ও টেরি টাটসেল (Terri Tatchell) লিখিত, নীয়ল ব্লমকাম্প (Neill Blomkamp) পরিচালিত এবং পিটার জ্যাকসন ও ক্যারোলিন কুনিংহ্যাম প্রযোজিত ২০০৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ডিস্ট্রিক্ট ৯ (District 9)। শ্রেষ্ঠাংশে শার্লটো কপলি, জেইসন কোপ, ও ডেইভিড জেমস।

দাসপ্রথার কারণ অনেক। অর্থনৈতিক সুবিধাভোগ, শ্রমশক্তি, পণ্য গণ্য করা, অন্যকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা, যৌনসামগ্রী হিসেবে বিবেচনা করা, যুদ্ধ লুটতরাজের জন্য ব্যবহার করা ইত্যাদি। যেনো দাসপ্রথা মানুষের মজ্জাগত। আদিম গুহামানবরের জিনবৈশিষ্ট্য বহন করে চলছে আজকের আধুনিক মানুষেরা-ও। উত্তরাধুনিক মানুষেরা-ও কি বহন করবে?

যেদিন মানুষ অন্যকোনো গ্রহে কিংবা অসম্ভবের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে অন্য কোনো মহাবিশ্বে বসতি গড়বে, যেখানে হয়তো থাকবে মেইপল সিরাপের নদী, রবে ডানাঅলা মানুষী, তিনচক্ষুবিশিষ্ট দেবদৈত্য- সেখানে-ও কি মানুষ দাসপ্রথার চর্চা করবে? কেনো যেনো মনে হয় দখলদারিত্ব ও আধিপত্যবিস্তারের সাথে দাসপ্রথার সম্পর্ক খুবই নিবিড়। অন্যকে নিয়ন্ত্রণের আকাঙ্ক্ষাই তো ক্রমশ ধাবিত হয় দাসপ্রথার দিকে।

মনে করুন, উল্টোটা ঘটলো। ঘুরতে ঘুরতে ভিনগ্রহীপ্রাণীদের কোনো নভোযান পৃথিবীতে এসে পড়লো। যেখানে বাঘের ভয় সেখানে রাত হয় সত্যি প্রমাণ করে তারা আটকা পড়লো এখানে। তাদের রয়েছে প্রাযুক্তিক উৎকর্ষতা। দাঁতালের মতো লকলকে বের হয়ে পড়লো মানুষের লোভ, আর সেই আদিম সব মিম!


বুকের মাঝে নামলে এখনো প্রতিধ্বনি শুনবে,
কোন অভিন্ন কোরাসে গেয়ে ওঠে রোদপাখি ও সমুদ্রচিল;
ঢিল পড়ে টুপ করে শব্দ হওয়ার মতো জলে
কীভাবে জেগে ওঠে চুম্বনতৃষ্ণা, তোমার অ্যারোজেল-নরোম ঠোঁট!

হ্যাঁ, এখনো প্রতিধ্বনি শুনি, এখন সেই দাগ মুছে যায় নি; মনে আছে ১৯৪৮, কিংবা ১৯৭০ এর দিকে কেপটাউনের অবস্থা? আপার্টহাইট বা পৃথকীকরণ শুরু হয় দক্ষিণ আফ্রিকায় ১৯৪৮ সালে। চলে ১৯৯৪ পর্যন্ত। বর্ণবৈষম্যের চূড়ান্ত- প্রস্তাব করা হলো যে জাতিগত পার্থক্যই হবে আবাসন ব্যবস্থার ভিত্তি। সাদারা আইন করে আদিবাসী, কৃষ্ণাঙ্গ, এশীয়, বর্ণসংকর অর্থ্যাৎ বিভিন্ন জাতিতে ভাগ করে আবাসন, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকারকে খর্ব করে। ১৯৭০ সালের দিকে কেপটাউনে ৬০ হাজার অধিবাসীকে জোর করে স্থানান্তরিত করা হয় ডিস্ট্রিক্ট ছয় নামের একটি অঞ্চলে থেকে। ডিস্ট্রিক্ট নয় ছবিটির নামকরণ করা হয় এই ঘটনাকে স্মরণ করে, ২০০৫ সালে পরিচালক এই নামে একটি খুদে চলচ্চিত্র-ও নির্মাণ করেছিলো।

ডিস্ট্রিস্ট ছয়ে মানুষ মানুষকে গোলাম বানালে-ও, মানুষকে অবদমিত করলে-ও ডিস্ট্রিক্ট নয় চলচ্চিত্রটিতে মানুষেরা কব্জা করতে চায় ভিনগ্রহীদের, করায়ত্ত করতে চায় তাদের জৈবপ্রকৌশলী অস্ত্র, দখল নিতে চায় উৎকর্ষ প্রযুক্তির। শুরুটা আজ থেকে সত্তুর বছর পরের, মার্চ ১৯৮২। স্বাধীনতা মূর্তির নিউইয়র্ক কিংবা শহুরে বাতিঘর আইফেল টাওয়ারের প্যারিস নয়- ভিনগ্রহীদের মাতৃনভোযান আটকা পড়ে আফ্রিকার জোহানেসবার্গে। কাহিনির প্রস্তাবনার মাধ্যমেই পরিচালক স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়ে দিলেন বর্ণবাদের সেই ঘটনার দিকে।

সব সম্পর্কের শুরুটা হয় মানবীয়, সব সম্পর্কের শেষটা হয় ঐশ্বরিক- একা; ঠিক তেমনি প্রথম প্রথম স্থানীয় জনগণ ভিনগ্রহীদের লাল গালিচায় অভ্যর্থনায় না জানালে-ও সহ্য করে নিয়েছিলো। তিন মাসের মাঝেই মুদ্রার উল্টো পিঠ দেখা দিতে শুরু করে- স্থানীয়দের ভাষ্যমতে "প্রোন (prawn)" ভিনগ্রহীরা তাদের কাছে ঝামেলাস্বরূপ। বেজি-সাপের কামড়াকামড়ি কিংবা ছাত্রদল-ছাত্রলীগের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার মতো টোকাটুকি লাগতে শুরু করলো ভিনগ্রহী ও স্থানীয়দের মধ্যে।

আমাদের সরকার যেমন দমনে জলপাই হাঁটুদের ডাকে তেমনি দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার নিয়োগ করলো বহুজাতিক সংঘকে (Multinational United (MNU)), একটি ব্যক্তিমালিকাধীন সামরিক কোম্পানি- যেখানকার লাটবাবু হলেন ডির্ক মিশেলস। ঠিক করা হলো তার জামাই ওইকাস ভ্যান দ্অ মার্লি (Wikus van de Merwe (Sharlto Copley)) এলিয়েনদের শহরের বাইরের তৈরি করা ডিস্ট্রিক্ট দশে তাদের স্থানান্তরিত করার অভিযান পরিচালনা করবে।


নীরব নিথর এই শহরে নেইকো জোনাকির দীপাবলি
একাকি ক্ষত ছুঁয়ে চাঁদের কাছে কান্নার গল্প আমি বলি"
- তুমি নও / নিয়াজ আহমেদ অংশু

বেড়ালের খাবার খেয়ে পথশিশুদের মতো জীবন যাপন করা, নদীগর্ভে বাস্তু হারানো চাষীর মতো নিরুপায়, পরজীবী জীবাণুর মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ভিনগ্রহীরা চাঁদের কাছে তাদের দুঃখের গল্প না বললে-ও স্বপ্ন দেখে তাদের মাতৃনভোযান ঠিক হবে একদিন, রথে চড়ার মতো তারাও ফিরবে বাড়ি। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য গোপনে কাজ শুরু করে তিন ভিনগ্রহী ক্রিস্টোফার জনসন, তার পিচ্চি ছেলে ও এক বন্ধু। তারা পাতালঘরে বানাতে শুরু করে তরল জ্বালানি, কিন্তু ধরা পড়ে যায় সামরিক দলের কাছে, যখন বাড়ি বাড়ি তল্লাশি ও ছাড়পত্র বিলি করা হচ্ছিলো।


ওইকাস ভ্যান দ্অ মার্লি: এই উচ্ছেদপত্রে আপনার সই করা দরকার।

Wikus Van De Merwe: We need your signature on this eviction notice.

এলিয়েনদের খেদানোর এই অভিযান দেখে মনে হয় যেনো মানুষগুলো কর্নেলিয়া ডি ল্যাঞ্জ সিনড্রোমে আক্রান্ত- ব্যথা-বেদনা অনুভূতি লীন হয়ে গেছে। তবে হঠাৎ দুঘর্টনায় ভিনগ্রহীদের জ্বালানি এসে লেপ্টে যায় ওইকাসের মুখে, এবং তার দেহবিকৃতি শুরু হয়- ক্রমে সে হয়ে ওঠতে থাকে ভিনগ্রহীদের একজন। তার ডিএনয়ের কোডিং পাল্টে যেতে শুরু করে। ধান বা শস্য গুদামের মালিক, আড়তদার যেমন পণ্য গুদামে রেখে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে মুনাফা হাঁকাতে চায় তেমনি সামরিক সংস্থাটি-ও মার্লির এই দুরবস্থাকে কাজে লাগিয়ে পয়সা বানানোর ধান্দা শুরু করলো। জৈবপ্রকৌশল- অর্থাৎ ভিনগ্রহীদের অস্ত্রসমূহ কেবল তাদের সংস্পর্শেই কাজ করে, মার্লির ভেতরে জেগে ওঠা ভিনগ্রহী বৈশিষ্ট্যকে কাজে লাগানো যাবে জৈবপ্রকৌশল পরীক্ষায়, অস্ত্র তৈরিতে- আর কে না জানে অস্ত্র বেচাকেনা যৌনব্যবসার পরে পৃথিবীর আদিম ও লাভজনক ব্যবসা।

জলপাইদের শোষণের বিরুদ্ধে অতন্দ্র প্রহরী বিডিআররা বিদ্রোহ করে যেমন জেগে ওঠে তেমনি মার্লি-ও পালিয়ে গিয়ে জোট বাঁধে ক্রিস্টোফার ও তার দলের সাথে। সব সম্পর্কের মূল বিনিময়প্রথা- মার্লি সাহায্য করবে ক্রিস্টোফারদের স্বভূমে ফিরে যেতে, আর বিনিময়ে মার্লি ফিরে পাবে গতরোদের মতন আকর্ষণীয় শরীর।

কৈশোরের উপনায়ক মাসুদ রানা ও নারী সোহানাকে যেমন কবির চৌধুরি তাড়া করে চলে সেইরকম মার্লির পিছনে লাগে কূবাস ভেন্টার (ডেভিড জেমস), সামরিক সংস্থার পক্ষে অভিযানের মর্ষকামী অধিনায়ক। অবশেষে রূপকথার নায়ক-নায়িকারা যেমন "সুখেশান্তিতে বসবাস করিতে লাগলো" তেমনি তুমুল যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে প্রকৃত সারসের মতো উড়াল দেয় ভিনগ্রহীদের মাতৃনভোযান...


সূর্য নিভিয়ে তার চোখের আঁধারে হয়েছি চন্দ্র
একটি পাতার বাতাসে ভেসে থাকার আনন্দ
ভেল্টস্ম্যারৎস মন আমার...

বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর সামুদ্রিক শিকারি প্রাণী প্লিওসর, যে আজ কেবলি জীবাশ্ম। একদিন মানুষ-ও কি জীবাশ্ম হয়ে যাবে? কোনো দুরন্ত নভোযান ঘুরেফিরে পৃথিবীতে এসে খুঁজে পাবে একটি ফিঙে পাখির কঙ্কাল, শিশুর আঙুলের দাগ লেগে থাকা হাতমোজা, জবাফুলের বিস্তৃত বাগিচা অথবা ক্লিওপেট্রার মতন মায়াবী অথচ রমণীয় কোনো নারীর কাঠামো? পৃথিবীকে আবিষ্কারের এই সংবাদ সেই অভিযাত্রীগণ হয়তো হলোগ্রাফিক চিত্রে ধারণ করে পাঠাবে নিজ গ্রহের তথ্যকেন্দ্রে, কেউ বা ধারাভাষ্য দিবে নেপথ্যে, কেউ বা সাক্ষাৎকার নিবে প্রথম আলোর তুখোড় হলুদ সাংবাদিকের মতো করে নিষ্ঠা লয়ে। ডিস্ট্রিক্ট নয় চলচ্চিত্রের সূচনা অদ্ভুত স্বতন্ত্র, যেনো একটি প্রামাণ্যচিত্রের মতো করে ধারণ করা। বিভিন্নজনের সাক্ষাৎকার বক্তব্য ধারণ করা হচ্ছে আর মাঝে মাঝে স্মৃতিচারণে দেখানো হচ্ছে কাহিনি। প্রচলিত বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি কিংবা ভোরাট ছবির মতন সুড়সুড়ি দেয়া চলচ্চিত্র নয় এই ছায়াছবিটি। বক্তব্য, নির্মাণকাজ, চলচিত্রনৈপুণ্য চোখে পড়ার মতন। আর সেই কারণেই বসে এক বসায় শেষ না করে উঠতে ইচ্ছে করে না।

চলচ্চিত্রটির অন্যতম একটি সার্থকতা হলো ব্যক্তিগত বা বহুজাতিক কোম্পানীগুলোকে বাঁচানো বা কর্পোরেট দাসপ্রথার প্রতি সরকারের সমর্থনকে তুলে ধরা। সামরিক সংস্থার দায়িত্ব ছিলো এলিয়েনদেরকে রক্ষা করা, কিন্তু তারাই বাংলাদেশ পুলিশের মতো রক্ষক থেকে ভক্ষক হয়ে উঠে অর্থের লোভে, প্রযুক্তি ছিনিয়ে নিতে। ভিনগ্রহীদের ডিমগুলোকে ভেঙে ফেলা হতো অবলীলায়- অথচ "এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য ক’রে যাব আমি— নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার" এই মহৎ বাণী কেনো শুধুমাত্র মানবশিশুদের জন্য প্রযোজ্য হবে? (ছাড়পত্র, সুকান্ত ভট্টাচার্য) সব শিশুই শিশু, শিশু মাত্রই সৌন্দর্য।

চলচিত্রের মুল বাঁক অর্থাৎ মার্লির ভিনগ্রহীতে রূপান্তরিত হওয়ার সাথে এলিয়েন ছায়াছবির সাথে মিল খুঁজে পাওয়া যায়। এলিয়েন চলচ্চিত্রটিতে অভিযাত্রীদের একজনের আক্রমণের কারণে দেহবিকৃতি ঘটে ও পেটে এলিয়েন জন্মায়। কবিদের মাঝে কাজী নজরুলের ইসলামের মতো মহাত্মা আছেন, তেমনি আছে আল মাহমুদের মতো তোষামোদী সুবিধাবাদী জামাতী মৌলবাদী- এটি ব্যতিক্রম নয় ভবিষ্যত সমাজে-ও নয়। মার্লির মাঝে শিশুসুলভ সরলতা আছে, আবার নাইজেরিয়ান মাস্তানদের নেতার অপবিশ্বাসের কারণে মারা পড়ে নিরীহ ভিনগ্রহীরা। মাস্তান-নেতা অপবিশ্বাসী যে ভিনগ্রহীদের মাংস ভক্ষণ তাকে সারিয়ে তুলবে জরা থেকে। মার্লির স্ত্রীর চরিত্রটি বিকশিত হয় নি, যা-ও হয়েছে সেটুকু-ও কেমন মেকি মনে হয়। তবে মার্লি চরিত্র অসামান্য- পরিচালক দক্ষতার সাথে এমনভাবে পরিবেশন করেছেন যে কাহিনির বিস্তারণের সাথে সাথে দর্শকদের অনুভূতি পরিবর্তনের সাথে সাথে চরিত্রটি ফুটে উঠে পুরোপুরি, গল্পের একচেটিয়া নায়কের মতো নয়, বরং ক্রমশ নায়ক হয়ে ওঠা (Roeper, ২০০৯)।


Automated MNU Instructional Voice: [in MNU Humvee] When dealing with aliens, try to be polite, but firm. And always remember that a smile is cheaper than a bullet.

উক্তিটি শুনে কেনো জানি গরু মেরে জুতো দানের কথা মনে আসে। চলচ্চিত্রটির রাজনৈতিক বক্তব্য সূর্যালোকের মতন পরিষ্কার, স্বচ্ছ। আগ্রাসন কাম্য নয়, কখনো নয়। সেই আগ্রাসন ধর্ম অর্থ ক্ষমতায়ন প্রেম যা কিছুর জন্যই হয়ে থাকুক না কেনো। মানবসভ্যতা হিটলার কিংবা জর্জ বুশের জন্ম বারেবার চায় না। তবে নাইজেরিয়া সরকার ছায়াছবিটিতে নাইজেরিয়াকে নিচু করে দেখানোর প্রতি প্রতিবাদ জানিয়েছিলো ও এটির উপর বনধ্ জারি করে (Adigun, ২০০৯)। চলচ্চিত্র ধারণ করা হয়েছে চিয়াউইলো, সোউইটো ও অন্যান্য দক্ষিণ আফ্রিকান শহরে। এমনকি ১৯৭০ এর বিক্ষোভ স্থলের ধারেকাছেই।



Wikus van der Merwe: This is basically a guy, and there's 3 humans here, basically trying to make a warning, you know, saying "I kill 3 humans, watch out for me."

যেকোনো কল্পবৈজ্ঞানিক ছায়াছবির জন্য বড় উৎকর্ষতা হচ্ছে পরিমিত আকর্ষণীয় ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট বা রকমারি প্রতীতির ব্যবহার। ব্যক্তিগতভাবে, মানুষরূপী এলিয়েন ব্যবহার করাকে আমার কাছে অস্পষ্ট ঘোলাটে মনে হয়েছে, অন্য গ্রহের প্রাণীরা-ও কি মানুষের মতো হবে? রিচার্ড ডকিন্সের একটি ভবিষ্যদ্বাণী বা যৌক্তিক ধারণা যে সেইসব প্রাণীকে যদি বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন হতে হয় (মানুষের সমান বা মানুষের চেয়ে বেশি) তবে অবশ্যই বিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হবে, কারণ কেবল প্রাকৃতিক বিবর্তন জটিল বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন সৃষ্টির জন্য সহায়ক। কিন্তু সেইসব গ্রহের আবহাওয়া, প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য ও পরিবেশগত অন্যসব অবস্থা যদি পৃথিবীর মতো না হয়? এক্ষেত্রে আমার কাছে অবশ্য পরিচালকের বক্তব্য ভালো লেগেছে:

"দুর্ভাগ্যজনকভাবে, তাদেরকে দেখতে মানুষরূপী হওয়ার দরকার ছিলো কারণ আমাদের মনস্তত্ব আসলে এমন কোনো কিছুর প্রতি সহানুভূতির সৃষ্টি করে না যেটির মুখ বা কাঠামো দেখতে মানুষের মতো নয়। ধরুন, আপনি যদি দেখেন কোনো চার পাঅলা কোনো কিছু, তবে আপনার কুকুরের কথা মনে হয়: আমরা এভাবেই বেড়াজালে আটকে আছি..."


"Unfortunately, they had to be human-esque because our psychology doesn't allow us to really empathize with something unless it has a face and an anthropomorphic shape. Like if you see something that's four-legged, you think it's a dog; that's just how we're wired..." (Oldham, ২০০৯)।

চলচ্চিত্রের সংগীত ভালো, তবে শেষের দিকে একটু খাপছাড়া মনে হচ্ছিলো। সংগীতায়োজন করেছেন কানাডিয়ান স্বরলিপিকার ক্লিনটন শর্টার। তিন সপ্তাহ ধরে পরিশ্রম করে। আফ্রিকান সংগীতের আবেশ রয়েছে।


উইকি থেকে কিছু মজার ঘটনা জানলাম। সনি এন্টারটেইনমেন্ট বিজ্ঞাপনে "শুধুমাত্র মানুষদের জন্য" নীতি বেছে নিয়েছিলো। বিভিন্ন শহরের আনাচেকানাচে পোস্টার বিজ্ঞপ্তিতে "Humans Only" বার্তা। "অমানুষীয় কীর্তিকলাপ" রিপোর্ট করার জন্য শুল্কমুক্ত টেলিফোন নাম্বার-ও চালু করেছিলো। এমনকি অনলাইন ভিডিও গেম, কল্পিত চরিত্র ক্রিস্টোফার জনসনের লেখা ব্লগ চালু করেছিলো!

তথ্যসূত্র:
রশিদ অর্ণব, শানজিদ। দাসপ্রথা। সাপ্তাহিক ২০০০। ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১০। http://www.shaptahik-2000.com/2010/12/12/%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A5%E0%A6%BE/

Adigun, Bashir (September 19, 2009). "Nigerian officials: 'District 9' not welcome here". News from The Associated Press. Associated Press. Retrieved September 24, 2009.

Forced labour। International Labour Organization (ILO), Ilo.org। ২০১০। http://www.ilo.org/global/Themes/Forced_Labour/lang--en/index.htm

Oldham, Stuart (August 14, 2009). "Interview: Neill Blomkamp". Variety. Retrieved August 31, 2009.

Roeper, Richard। District 9, Richard Roeper & the Movies। ২০০৯। http://www.richardroeper.com/reviews/id/113/

Skinner, E. Benjamin। South Africa's New Slave Trade and the Campaign to Stop It। টাইম ম্যাগাজিন। ২০১০। http://www.time.com/time/magazine/article/0,9171,1952335,00.html


মন্তব্য

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

এই শ্রমসাধ্য অনেক তথ্যসমৃদ্ধ লেখাটির জন্য অনেক সাধুবাদ আশরাফ ভাই। চলুক চলুক

আশরাফ মাহমুদ এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে-ও। হাসি

বইখাতা এর ছবি

চলুক ভালো লেগেছে। District 9 দেখা হয়নি। দেখার আগ্রহ বোধ করছি।

আশরাফ মাহমুদ এর ছবি

দেখে ফেলেন। সময় বৃথা যাবে না।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

ডিস্ট্রিক্ট 9 আমার দেখা অন্যতম চরম সিনেমাগুলোর একটা। সিনেমাটা দেখাবার স্টাইলে বিরক্ত হয়ে কিছুদূর দেখে বাদ দিয়েছেন এমনো পরিচিত দুই একজনকে আমি অনেকটা জোর করে সিনেমাটা পুরোটা দেখিয়েছি, এবং তারা বলতে বাধ্য হয়েছেন, ইট'স ডিফ্রেন্ট। আমার নিজের কাছে ডকুমেন্টারি স্টাইলে শুট করবার আইডিয়াটাই বেশি দারুণ লেগেছে, মনে হয়েছে এইটাই একটা এলিয়েন-হিউম্যান সিনেমাকে বেশি গ্রহণযোগ্যতা দিয়েছে, রিয়ালিস্টিক করেছে। এই সিনেমা নিয়ে আমি বহুবার বহু জায়গায় একই ধরনের মন্তব্য করেছি, তবুও আপনার রিভিউ দেখে আরেকবার ফরমালি বলতে ইচ্ছা করছে যে, ব্যক্তিগতভাবে আমার মত হলো বর্তমান বিশ্ব রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে এটা একটা চরম ডার্ক সারকাস্টিক মুভি।

অভিনয়দক্ষতা, সিনেমাটোগ্রাফি, স্ক্রিন-প্লে, কাহিনি সব দিক থেকে দুর্দান্ত লেগেছে আমার। তবে আমার কাছে মনে হয় সবচেয়ে দারুণ লেগেছে গতানুগতিক এলিয়েনের হাতে মানুষের নির্যাতিত হবার বদলা মানুষের হাতেই আটকে পড়া ভিনগ্রহবাসীর নির্যাতন, নিপীড়ন, টেস্ট সাবজেক্টের শিকার হওয়ার ব্যাপারটা। আর শেষটা, সিনেমার শেষের টুইস্টগুলো...

(বাই দ্য ওয়ে, যদিও আমি গল্পে গল্পে বলেছি অনেককে, কিন্তু জানেন, আমি দেখেছিলাম ট্রেইনে, ল্যাপটপে, ইয়ার ফোন কানে নিয়ে, আর আমার পাশের অপরিচিত যাত্রী ভদ্রলোক পুরাটা সময় সাইলেন্ট ডিস্ট্রিক্ট 9 দেখে গেছেন আমার স্ক্রিনে চোখ রেখে!!!) অ্যাঁ

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

আশরাফ মাহমুদ এর ছবি

আমার-ও আপনার মতো অনুভূতি হয়ে ছিলো। সবাইরে নিয়া বসলাম, ডকুমেন্টারি-স্টাইলের কারণে উঠে উঠে যাবো ভাবতেই মন আটকে গেলো। হ্যাঁ, পরিচালক সাক্ষাৎকারে রাজনৈতিক মেসেজ থাকার কথা স্বীকার করেছেন, তবে যুদ্ধবিরোধী ব্যাপারটা দারুণ ফুটেছে। আমার একটা জিনিস ভালো লাগে নি- কালো নাইজেরিয়ানদের গুণ্ডা হিসেবে উপস্থাপন করা।

হা হা হা। উনি মনে হয় ছোটবেলায় বিনা টিকেটে কিংবা এক টিকেটে দুই সিনেমার দর্শক ছিলেন। হাসি

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

নারে ভাই... আমাদের দেশের অধিকাংশ গ্রোওন আপ মানুষেরও কিছু বেসিক সামাজিক নর্মস-এর অভাব আছে। অপরিচিত শুধু না, যে কারুরই ব্যক্তিগত পিসি স্ক্রিনের দিকে অনুমতি ব্যাতীত তাকিয়ে থাকাটা যে খুব দৃষ্টিকটু একটা ব্যাপার তা অনেক উচ্চ শিক্ষিত মানুষও বুঝেন না!

তবে তার চেয়েও বেশি এইটা আমাকে অবাক করে যে, উনি ডিস্ট্রিক্ট 9 এর মতন একটা সিনেমা ক্যাম্নে আওয়াজ ছাড়া পুরাটা দেখে ফেললেন!! খাইছে

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

আশরাফ মাহমুদ এর ছবি

ঠিক বলেছেন। তবে উনি মনে হয় আপনাকে-ও দেখছিলেন। খাইছে

হে হে। নির্বাক সিনেমা যুগের দর্শক তাহলে এখনো বিলুপ্ত হয় নি। দেঁতো হাসি

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

হা হা হা! একটা মেয়ে ল্যাপটপ খুলে বসছে দেখলে এমনিতেই সবাই দেখতে থাকে হাঁ করে। যদিও ট্রেইনে এসি চেয়ারে অনেকেই সাথে ল্যাপটপ রাখেন ইদানীং। হাসি

মুশকিল হলো সিনেমা দেখা না, জরুরি কাজ করছি, তখনো সবাই তাকিয়ে থেকে কী লিখছি, কেন লিখছি দেখতে চেষ্টা করতে থাকলে... মন খারাপ

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

আশরাফ মাহমুদ এর ছবি

হুম। ফুলের ঘ্রাণে পতঙ্গ তো আসবেই। খাইছে

কৌস্তুভ এর ছবি

হো হো হো

কৌস্তুভ এর ছবি

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

অসাধারণ এই লেখাটির জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। অনবদ্য ছবি এই ডিসট্রিক্ট ৯। ছবিটির ব্যকগ্রাউন্ড সহ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটটা ব্যাখ্যা করায় অমূল্য হয়ে উঠেছে আলোচনাটি।

আশরাফ মাহমুদ এর ছবি
বন্দনা এর ছবি

আপনার লেখা পড়ে সিনামাটা দেখার তীব্র ইচ্ছে অনুভব করছি। অনবদ্য একটা লেখা।

আশরাফ মাহমুদ এর ছবি
তারাপ কোয়াস এর ছবি

ছবিটির ব্যাকগ্রাউণ্ডের কথাটি জানতাম না। সাই ফাই মুভি হিসাবে বেশ ভাল লেগেছিলো আমার। চমৎকার এই রিভিউটির জন্য অনেক ধন্যবাদ আশরাফ ভাই।


love the life you live. live the life you love.

আশরাফ মাহমুদ এর ছবি

পাঠে আপনাকে-ও ধন্যবাদ, কোয়াস ভাই।

ফাহিম হাসান এর ছবি

দুর্দান্ত একটা রিভিউ। সভ্যতার ইতিহাস তো রক্ত আর ঘামেই লেখা।

আশরাফ মাহমুদ এর ছবি
তানিম এহসান এর ছবি

ডিসট্রিক্ট নাইন দেখতে হবে। অনবদ্য রিভিউ!!

আশরাফ মাহমুদ এর ছবি

ধন্যু ধন্যু, তানিম।

কৌস্তুভ এর ছবি

এত লম্বা আলোচনা পুরোটা পড়তে পারিনি, তবে যেটুকু পড়েছি সেটুকু আমাকে পরে আবার ফিরে আসতে বাধ্য করবে। সিনেমাটা দেখেছি, যাযাদির সাথে একমত।

আশরাফ মাহমুদ এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ, কৌস্তুভদা।

গেরিলা এর ছবি

সালগুলো উল্টেপাল্টে গেছে মনে হয়....দেখেন তো

আশরাফ মাহমুদ এর ছবি

আমার চোখে তো ধরা পড়ছে না। মন খারাপ

সজল এর ছবি

দুর্দান্ত রিভিউ। সিনেমাটা দেখা, ভালো লেগেছিলো।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

আশরাফ মাহমুদ এর ছবি

আসলেই দারুণ সিনেমা।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।