আমি তাকে চিনি না।

দুর্দান্ত এর ছবি
লিখেছেন দুর্দান্ত (তারিখ: বুধ, ২০/০১/২০১০ - ৯:৫৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

autoইতিহাস নিয়ে আমার উৎসাহের সুত্রপাত ঘটায় মহানবী। দাদীর কোলে বসে রাক্ষস খোক্কস, রাজকুমারী কঙ্কাবতী আর ডালিমকুমারের রূপকথা শুনতে শুনতে বুঝে গিয়েছিলাম, এগুলো গল্প। একই সময়ে দাদী যখন মহানবী আর তার পথে কাঁটা বিছানো বুড়ীর গল্প বলতেন, তখন বুঝে নিয়েছিলাম এগুলো ঘটনা; ডালিমকুমার কল্পনা আর মহানবী আসল। শৈশবে খালাদের সাথে হারমোনিয়ামে বসে 'তোরা দেখে যা আমিনা মায়ের কোলে' গাইতে গাইতে বা স্কুলের সহযপাঠ বইতে শিশু মহানবীর ভেড়া চড়ানোর আর তার আল-আমিন হবার গল্প পড়ে, জুমআ বা ঈদের নামাজে তার জীবনের গল্প শুনতে শুনতে মহানবীকে চিন পরিচিতির কেউ বলেই বলে মনে হত।

কৈশোরে মনে অনেক প্রশ্ন এল, জীবন নিয়ে বিশ্বাস নিয়ে। জানতে চাইলাম যে কিশোর মহানবীর জীবন কেমন ছিল? সেও কি আমার মত এমন প্রশ্নগুলোর মুখোমুখি হয়েছিল? হাতের কাছে যা পেলাম (বা পেলাম না) তাতে বিষয়টা আরো গোলমেলে হয়ে গেল। শিশু, কিশোর বা যুবা মহানবীর চাইতে ক্রমেই সে বদরাগী কাগু কিসিমের কেউ হয়ে যেতে থাকল। সে শৈশব থেকে এক লাফে ২৫ বছরের যুবক, তারপর আরেক লাফে ৪০ এর মাঝবয়েসী বনে যায়। প্রশ্ন থেকেই গেল, কে এই মহানবী? কি করতে চেয়েছিল সে? কেন?

ইতিহাসের কাউকে চেনা যায় সে সময়ের লিখিত দলিল আর প্রত্নতত্ব থেকে। মুসলমানের হাতে বোনাস হিসাবে আছে কোরান ও হাদীস। তারওপর আছে মহানবীর জীবনদর্শন ও তার দিকনির্দেশনা নিয়ে প্রচুর লেখা,পক্ষের-বিপক্ষের। এগুলো তার সমসাময়িক লেখা নয়। গুরুজনের কাছে, জুমআর খুতবায়, যা শুনেছি বা বইতে ইন্টারনেটে যতটুকু জেনেছি, তা একটি গতে বাঁধা; এতিম, নিরক্ষর, আল-আমিন, বিয়ে, নবুয়ত, মদিনা, যুদ্ধ, মক্কা, মৃত্যু। স্কুলের ইসলামিয়াত থেকে হাজার পাতার জীবনিগ্রন্থ, ঘটনা এক, পার্থক্য হল এই যে হাজার পাতার বইগুলোতে লেখকের অভিরুচির ওপর ভিত্তি করে একই ঘটনাকে সবিস্তারে বলা। ইসলামের ইতিহাসের মোটা মোটা বইগুলোতে গল্পটা জমে ওঠে মহানবীর মৃত্যুর পর থেকে।

গ্রীস, রোম, মিশর, পারস্য, মায়া এজটেক ইত্যাদি সভতার নিদর্শনগুলোকে প্রত্নতাত্বিক দিক থেকে খুঁটিয়ে দেখা হয়েছে। অনেক রহস্য থেকে গেছে, অনেক কিছু পরিস্কার করে জানা গেছে। এখনো জানা যাচ্ছে। এর অনেকটাই সেসময়ের লিখিত তথ্যের ওপর নির্ভরশীল। মহানবীর জীবন নিয়ে লেখালেখির শুরু হয় তার মৃত্যুর অনেক পরে। যারা এই লেখালেখি করছিল, তারা চার পাঁচ প্রজন্মের আগের ঘটনা নিয়ে লিখছিল। যাদের কাছ থেকে তারা এই তথ্যগুলো শুনেছিল, ধারনা করা যায়, তারা সবাই ধর্মপ্রান মুসলিম। যে শহরগুলোতে এই লেখাগুলো হচ্ছিল, সেখানে শুধুমাত্র রাজনৈতিক বিবেচনায় মহনবীর জীবনের নেতিবাচক সত্যের চাইতে ইতিবাচক প্রবচনের প্রতি দূর্বলতা দেখানো অস্বাভাবিক নয়। প্রত্নতাত্বিক প্রমান ছাড়া এই লেখাগুলোর সত্যতা অনেকেই মানবে না। আজকের পরিস্থিতিতে মক্কা-মদীনায় একটি প্রত্নতাত্বিক অভিজানের সম্ভাবনাকে ভদ্র বাংলায় সীমিত বলা চলে।

মহানবীরঅস্তিত্ব নিয়ে কিছু প্রশ্ন এই কিছুদিন আগেই তোলা হয়েছিল। তবে সে যে ছিল, তার পক্ষেও কিছু প্রত্নতাত্বিক প্রমান আছে। বিশেষ করে আর্মেনিয় খৃষ্টানদের লিখিত ইতিহাসে তাকে একেশ্বরবাদের প্রচারক হিসাবেই দেখা যায়, যদিও তারা মহানবীকে দেখায় একজন ভন্ড নবী হিসাবে। তলোয়ার হাতে ঘোড়ায় সওয়ার ধর্মপ্রচারককে তাদের হজম হয়নি। মদিনার সংবিধানকে মহানবীর সবচাইতে পুরাতন লিখিত দলিল হিসাবে দেখায় ইসলাম; এই দলিলের ৭৫০ সালের আগের কোন কপি এখনো পাওয়া যায়নি। ইসলামিক দুনিয়ার কাগজে কলমে, পয়সার ওপরে তার নাম আসতে শুরু করে ৬৮০ সাল থেকে, মানে তাঁর মৃত্যুর দুই প্রজন্ম পরে। মোদ্দা কথা হল এযাবত প্রতিষ্টিত মহানবীর সমসাময়িক দলিলগুলো তার অস্তিত্ব প্রমান করে, তার বেশী কিছু না।

অনেকে বলবে যে কোরানই তো মহানবীর জীবনের বড় ডকুমেন্টরি। সেখান থেকেই তো তার জীবন সম্বন্ধে ডিটেল জানা যায়। এর চেয়ে বেশী কিছুর প্রয়োজন কি? একথা যারা বলছে, তারা এটা বলে না যে ঐতিহাসিক দলিল হিসাবে কোরানের গ্রহনযোগ্যতা নিয়ে এখনো প্রশ্ন আছে। একমত না হতে পারার পেছনে কিছু কারন আছে। কোরানের আদীরূপকে যখন সংকলিত করা হচ্ছে সেসময়ে ঘটনার নায়ক উসমান ও তার প্রতিদ্বন্দী আলীর মধ্যের টানাপোড়েনের কোন প্রভাব যে সেই আদী-সংকলনে কি অন্তর্ভুক্ত হবে আর কি বাদ যাবে (যেমন শিয়াদের অতিরিক্ত দুটি সুরা), সেই সিদ্ধান্তে পড়েনি একথা কেউ কসম কেটে বলতে পারছে না। কোরানের বর্তমান লিখিতরূপ নিয়ে কিছু বড় অমিমাংসিত রহস্য রয়ে গেছে। আদীরূপের যের-যবর-পেশ-নক্তা হীন কোরানের বানীকে একাধিকভাবে ব্যাখ্যা করা যায়। আলেমরা দাবী করে যে হাফেজরা কোরানকে এতই ভাল করে মুখস্থ করে রেখেছিল যে যের-যবর-পেশ-নক্তা জুড়ে দেবার সময় খুব বেশী হেরফের হয়নি। আবার যের-যবর-পেশ-নক্তা ঢোকানোর সময়কার পরিস্থিতিটাও ঘোলাটে। কোরনের শুদ্ধ উচ্চারন নিয়ে আজও যে মতভেদ আছে তার ব্যাপ্তিতে প্রমান হয় যে আলেমরা নিজেরাও এখনো একঘাটে পানি খান না।

কোরানের ভাষার অস্পষ্টতা মহানবীকে চেনার কাজকে আরো কঠিন করে তোলে। কোন কথা কেন বলা হচ্ছে, কি কারনে বলা হচ্ছে, কি ঘটনার প্রেক্ষিতে বলা হচ্ছে, তার মর্মোদ্ধার করতে লাইনের পর লাইন (অনেক কাল পরে লেখা) তাফসিরের সরনাপন্ন হয়। সব রকমের তফসির দেশ, কাল, পাত্র ভেদে এক মাপে গ্রহনযোগ্য নয়। কিছু কিছু কথার ঠিক মানে বের করা যায়না। যেমন, আলিফ-লাম-মিম, ঘারানিক, হুর। ক্রিস্টফ লুক্সেনবার্গ এর বইটিতে এসব নিয়ে কিছু মজার তত্ব আছে। আল আজহারের প্রাক্তন প্রধান শাল্‌তুত ও কোরানের একটি দলছুট দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে কাজ করেছে।

কোরানে মহানবীকে তার সমসাময়িকদের চোখ দিয়ে আমি দেখতেই পাইনি, বরং তাকে দেখেছি তার নিজের চোখ দিয়েই দেখি। কোরানের মধ্য দিয়ে অনেকটা বিইং জন ম্যাল্কোভিচের মত তার মাথার ভিতরে চলে যাওয়া যায়। আল্লাহর কাছ থেকে মহানবি কি শুনল, কে তাকে নিয়ে কখন টিটকারি দিল, তখন কিভাবে প্রতিউত্তর দেয়া হল, সমর্থকদের কি বলে উতসাহ দেয়া হল, বিরোধীদের কি বলে নিরুতসাহীত করা হল - এসব কথা বেশে প্রাঞ্জল ভাষায় ও সবিস্তারে বলা হয়েছে। তবে সেখানে কিছু ঘটনার উল্লেখ হয়, কিন্তু ঘটনার বিবরন উহ্য। কিছু মতনৈক্যের কথা আসে, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে সে মতনৈক্যটি কোন ব্যক্তির কোন উক্তির সাথে, তার উল্লেখ নেই। সামর্থকদের বলা হয় বিশ্বাসী, আর বিরোধীদের বিশ্বাসী, পৌত্তলিক, মিথ্যাবাদী, অশিক্ষিত ইত্যাদি, তবে সবসময় এই বিরোধীদের নামধাম বলা হয়না। এতে করে একই লোক এক এক সময় বিশ্বাসী, আরেকসময় কাফের আবার তারপর আবার বিশ্বাসীদের দলে চলে যেতে পারে। এমন বিমূর্ততাকে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে কেউ কেউ বলেছেন যে কোরানে যাদের উল্লেখ করা হয়েছে, তাদের সবাই ইব্রাহিমী একেশ্বরবাদে বিশ্বাসী অথবা এই ধারনা ও এর পুরানের সাথে পরিচিত। তাই তাদের কাছে সবঘটনা বা ধারনাকে খোলাসা করে বলার কিছু নেই। সেই সময়ে এসব কথা এভাবে বলার রাজনৈতিক গুরুত্ব থাকতে পারে। আজকের রাজনৈতিকেরা যেমন 'এক্সিস অফ ইভিল'বা 'একটি বিশেষ মহল' - ইত্যাদি নাম ব্যাবহার করে। এই দলে কিন্তু মক্কার সেই তথাকথিত পৌত্তলিকেরাও পড়ে, কারন তারাও আল্লাহর আরাধনা করতো। পার্থক্য এই যে তারা বিশ্বাস করতো আল্লাহর রহমত পাবার জন্য কিছু সয়ায়ক দেবদেবীর আরাধনার প্রয়োজন আছে। ধর্মপ্রচারের শুরুর দিকে এই বিশ্বাসে মহানবীর সমর্থন ছিল, তার প্রমান কোরানের সেই কুখ্যাত শয়তানী আয়াতে পাওয়া যায়। কিছু কিছু আধুনিক ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখি যে মক্কার লোকেরা, বিশেষ করে কোরয়েশ বংশের লোকজন, ইহুদি বা খৃষ্টধর্মের কোন অবলুপ্ত শাখায় বিশ্বাসী ছিলেন। এবং তারা আল্লাহ-র আরাধনা করতো। সময়ের সাথে সাথে খৃষ্টানেরা যিশুকে খোদার সন্তান করে নিয়েছে, তেমনি কোরায়েশরাও তাদের খোদার কিছু দেবদেবীকে যোগ করে নিয়েছে। মহানবীকে আমরা বার বার এর বিরোধিতা করতে দেখি। আল্লাহ এক ও নিঃসন্তান, এটি প্রতিষ্ঠায় অনেকটা আগ্রহ দেয়া হয়েছে কোরানে।

মহানবীও আল্লাহর কথা বলছে, মক্কার লোকও আল্লাহ- য় বিশ্বাস করে, তাহলে ঘাপলাটা কোথায়? ঘপলা দুটি জায়গায়। মক্কার লোকেরা পথহারা খৃষ্টানদের মত খোদার ছেলেমেয়ে তৈরী করে ফেলেছে, আর ভাবতে শুরু করেছে যে খোদার এইসব ছেলেমেয়ে অখুশী হলে খোদার রহমত পাওয়া যাবে না। আরেকটা ঘাপলা হল পরকাল নিয়ে। পরকালের উঠলেই, কিছু লোক গলা খাঁকারি দিয়ে ওঠে, সন্দেহ ছড়ায়। অগত্যা একপর্যায়ে বলা হয়, পরকালে বিশ্বাস না করলে লুতের সময়ের মত বা মুসার সময়ের মত আজকে কালকের মধ্যেই দুনিয়া কেয়ামত ঘটে যাবে। দিন যায় সপ্তাহ যায়, কেয়ামত আসে না। তারপরের দিনগুলোর মজলিসে ট্যাটনা কিছু লোক আর গলা খাকারি দেয় না, ডাইরেক টিটকারি মেরে বসে। তখন কোরানে অবিশ্বাসীদের ঠান্ডা করতে তলোয়ার ধরার কথা নাজেল হয়, অবিশ্বাসীদের রক্তের বাজার দর চর চর করে কমে যায়। অস্পষ্টতা, ভাষান্তর বা এডিটোরিয়াল ঘাপলা যাই থাকুক, কোরানের মূল ভাষ্য বুলন্দ থাকে; আল্লাহ এক, পরকাল আছে, এই দুইতে যার সন্দেহ তার নাম মিছা।

স্বভাবতই ইসলামের ইতিহাসে কোরায়েশ বংশ আর মক্কাকে আরবদেশের ও তাবত দুনিয়ার কেন্দ্রে দেখানো হয়। কোরায়েশ বংশের লোকেরা বনেদী ব্যাবসায়ী, দিকে দিকে তারা সুপরিচিতি। মক্কার অবস্থান প্রাচীন বানিজ্যপথের চৌরাস্তায়। আসতে যেতে অ-মক্কীরা কোরায়েশদের ট্যাক্সো দেয়। বছরে একবার সারা আরবের লোকেরা সেখানের কাবাঘরে হজ করতে আসে। হজ এর হোলসেল ইন্ডেন্টর কোরায়েশ বংশ, তাদের কোথাও কোন শাখা নেই। এতসব হুলুস্থুল যেখানে ঘটছে, যাদের কেন্দ্র করে ঘটছে, সেই মক্কা আর মক্কার মানুষ নিয়ে সমসাময়িক সুপার পাওয়ার বাইজাইন্টাইন-সাসানিডদের লেখায় কিছু নেই। ফক্স নেটওয়ার্কে যেমন মধ্যপ্রাচ্য বলে কিছু নেই। তেমনি আরবী অন্তরীপের উত্তর ও দক্ষিন নিয়ে সেকালেরি এই দুই পরাশক্তি যতটা বকর বকর করেছে, আরবী অন্তরীপের মাধ্যভাগের বিশাল মরু এলাকা তারা স্পিক্টিনট। মক্কার কাবার মত শ'খানেক কুরবানগাহ আর ইবাদতখানা সারা আরবে ও পারস্যে ছড়ানো ছিল। আর কোরানের সব কথা যে মক্কা-মদীনা বাসীদের নিয়ে বলা হচ্ছে, তাও কিভাবে বলি? যেমন ধরুন কোরানে পৌত্তলিক কাফেরদের মাঝে মধ্যেই গম, আঙ্গুর আর জলপাই চাষী বলা হচ্ছে - যেগুলো কি না মক্কা-মদীনার মত জায়গায় হবার কথা না - সেগুলো গজাবে আরো উত্তরে, ভুমধ্যসাগরের তীরে। কোরানের ঘটনাকে ক্রস রেফার করার খুব বেশী উপায় নেই।

সে যাই হোক, কোরান থেকে মহানবীর সাথে আমার পরিচিত হওয়া হয় না। প্রশ্ন থেকেই যায়। কেন মহানবীর নতুন সমাজ প্রতিষ্ঠার ডাক দেবার প্রয়োজন হয়েছিল? শুধু ধর্মপ্রচারই যদি করতে হয়, তাহলে অচেনা এক ছোটশহর থেকে কেন? বড় বড় শহরে তার যাতায়ত ছিল। কি সেই এমন 'বড় কিছু' যার জন্য আরবের মানুষ তার পেছনে এসে দাঁড়াল?

কিছুটা হতাশ হয়ে হাদিস পড়া শুরু করি। কিন্তু খটকা লাগে। হাদিসের উদ্যেশ্য কি? মহানবীর জীবনের দলিল হওয়া নাকি ইসলামী আইনের ভিত্তি দেয়া? এর উত্তর নেই। হাদিসের বিশাল ব্যাপ্তিতে হাবুডুবু খাই। তাছাড়া আলেমদের মজলিশেও হাদিস নিয়ে কাজ এখনো চলছে। একই বিষয়ে হাদিসে-হাদিসে যে বিভেদ, তা এখনো মেটেনি, যেভাবে এগুচ্ছে, তাতে মেটার সম্ভাবিলিটি কম। খাঁটি হাদিসের চাইতে অমুক তমুক তমুক থেকে শোনা হাদিসের সংখ্যা বেশী। পাচ শব্দের হাদিসের আগে দশ লাইনের রেফারেন্স, সেখানে যাদের নাম লেখা, সেই ব্যাক্তিবর্গের নাম-আতা-পাতার ক্যাটালগ এখনোও আন্ডার কন্সট্রাক্সন। দা'এর চাইতে হাতল বড়। সরাসরি মহানবীর বানী, যেগুলোতে দ্বিমত নেই, এমন একটি অখন্ড ও সর্বসম্মত সংস্করন আমি পাইনি। তবে আশার কথা হল যে এ নিয়ে জোরেশোরে কাজ চলছে, পশ্চিমেও পূবেও। দেখি কোনদিকে যায়।

কোরান আর হাদিস কোনটাতেই মহানবীকে পুরোপুরি চেনায় না। অথবা আমার সীমাবদ্ধতায় চেনা হয়ে ওঠে না। ফাঁক থেকেই যায়। আশার আলো উস্কে যেত যদি জানতাম যে প্রত্নতত্ব থেকে সেই ফাঁক গুলো ক্রমে ক্রমে পুরন হয়ে যাবে। সৌদি আরবের বাইরে ইসলামের ইতিহাসে প্রত্নতত্বে যে কাজগুলো হয়েছে, বা হচ্ছে, তাতে ফাঁকগুলো আরো বড় হচ্ছে। প্রাক ইসলামী আরবদেশকে যতটা অন্ধকার, অসভ্য, বর্বর বলে মনে করা হয়, ইসলামের বাইরে ও ভেতরে, এখন দেখা যাচ্ছে যে অতটা অসভ্যতা সেখানে ছিল না।

মহানবীকে উপলক্ষ করে আজাইরা অনেক কিছুই জানা হয়ে যাচ্ছে।

কিন্তু তাকে আমি এখনো চিনি না।


মন্তব্য

হিমু এর ছবি
গৌতম এর ছবি

আপনার লেখাটা আমারও জানার আগ্রহ বাড়িয়ে দিলো। কোরান শরিফের বাংলা অনুবাদ পড়ার পর বেশ কিছু প্রশ্ন জেগেছিলো মনে- স্রেফ নামের কারণে কোনো বুজুর্গ ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করতে পারি নি। সে প্রশ্নগুলো আবার উস্কে দিলেন মনে।

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

শিক্ষাবিষয়ক সাইট ::: ফেসবুক

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

দুর্দান্ত এর ছবি

ধন্যবাদ। মনের প্রশ্ন গুলোকে মেরে ফেলবেন না। টুপি-দাড়ী হীন কোন নৃতত্বের লোককেও আপনার প্রশ্নগুলো করে দেখতে পারেন।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

অনেক অনেক চমৎকার একটা আলোচনা
বহুদিন আগে পড়া আমার একটা বাংলা কপিতে করা অনেকগুলো নোটের কথা মনে পড়ে গেলো
মিলে গেলো অনেক কিছুই
যোগও হলো অনেক

০২

আমার ব্যক্তিগত অবজারভেশন হলো বর্তমান মহাভারতে যেমন প্রচুর প্রক্ষিপ্ত চ্যাপ্টার রয়েছে
তেমনি কোরানেও রয়েছে প্রক্ষিপ্ত অনেক কিছু

০৩

কোরান পড়তে পড়তে একটা বড়ো প্রশ্ন আমার মাথায় জেগেছিল
তা হলো মোহাম্মদের মূল নাম কী?

তার নাম বলে প্রচলিত সবগুলোই মূলত উপাধী

এই একই প্রশ্ন কিন্তু করা যায় বৌদ্ধ সক্রেটিস এবং যীশুর ক্ষেত্রে
যীশুর নাম বলে যা যা প্রচলিত সেগুলোও সব উপাধী
গৌতম বুদ্ধেরও কোনো নিজস্ব নাম আমার জানামতে নেই
কোথাও তিনি পরিচিত মায়ের নামে কোথাও স্থানের নামে কোথাও কর্মের কারণে পাওয়া উপাধীতে

যতদূর জানি সক্রেটিস কথাটাও একটা বিশেষণ

০৪

বৌদ্ধ ঘরানার সাথে মোহাম্মদীয় ঘরানার যোগাগোগ কম থাকলেও গ্রিক ঘরানার সাথে মোহাম্মদীয় ঘরানার যোগাযোগ ছিল খুব পরিষ্কার

এবং সক্রেটিসের লাইফ ফর্মেটের সাথে মোহাম্মদের জীবনীর ফর্মেটের একটা সাদৃশ্য বরাবরই আমার কাছে পরিষ্কার মনে হয়

০৫

ইব্রাহিম বংশের সব নবীদেরই মূল নাম আছে এবং তাদের বিশেষণগুলো মূল নামের পরে যুক্ত (ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ...) শুধু ঈসা আর মোহাম্মদ ছাড়া

বিশেষণ দিয়ে নামকরণের ক্ষেত্রেও আমার কাছে এক ধরনের ঘরানা সাদৃশ্য আছে বলে মনে হয় (সক্রেটিস যীশু মোহাম্মদ)

হিমু এর ছবি
মাহবুব লীলেন এর ছবি

সিদ্ধি লাভ করার কারণে তিনি সিদ্ধার্থ

ওডিন এর ছবি

মনে হয় না লীলেনদা। তার নাম ছিলো সিদ্ধার্থ- সন্ন্যাসী হবার আগেই, আর বোধি (জ্ঞান) লাভ করেছিলেন বলে তার নাম হয়েছিলো বুদ্ধ।
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না

মাহবুব লীলেন এর ছবি

সিদ্ধার্থ তার আগের নাম ছিল না
তাকে ছোটবেলায় রেফার করা হয়েছে ...এর রাজপুত্র হিসেবে (যদ্দুর মনে পড়ে কপিলাবস্তুর রাজপুত্র। কপিলমুনিও তার আরেক নাম না?)

কিন্তু তার জীবনীকাররা তাকে ছোটবেলা থেকেই সম্বোধন করেন তার বড়োবেলার নামগুলো দিয়ে

হিমু এর ছবি

আমি মোটামুটি নিশ্চিত যে শাক্যবংশীয় কুমার সিদ্ধার্থই পরে বোধি লাভ করে বুদ্ধ হন। সিদ্ধার্থ নামের যে ব্যাখ্যা আপনি দিলেন, সেটাও একটু নড়বড়ে লেগেছে আমার কাছে, কারণ "সিদ্ধি" টার্মটা বৌদ্ধ ধর্মের কোনো জারগন হিসেবে শুনিনি। "বোধি" আর "নির্বাণ" এর মতো "সিদ্ধি" বুদ্ধের জীবনী বা শিক্ষার মধ্যে নেই। তবে আমি ভুল জেনে থাকলে ধরিয়ে দিন।

আমি আব্রাহাম ইরেইলির "জেম ইন দ্য লোটাস" পড়ে জেনেছি। সেখানে বুদ্ধ আর মহাবীরের ওপর বেশ বিস্তারিত লেখা আছে।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

ওডিন এর ছবি

লীলেনদা, কপিল নামের মুনির সাথে সিদ্ধার্থ এর কোন রিলেশন নাই, দুইজন আলাদা লোক। কপিল এক বদরাগী বুড়ো যে সগর রাজার ষাট হাজার ছেলেকে ভষ্ম করে ফেলেছিলো। আর সিদ্ধার্থ কে অবশ্য সবসময় কপিলাবস্তুর রাজপুত্র সিদ্ধার্থ বলেই রেফার করা হয়েছে। আমার কাছে এখন সেইরকম কোন বইপত্র নেই, নাহলে হয়ত আপনাকে পুরোপুরি নিশ্চিত হয়ে জানাতে পারতাম। হাসি

আর কপিল মুনির ব্যপারে একটা খুব ইন্টারেস্টিং ব্যপার হলো এই ভদ্রলোক নীরিশ্বরবাদ প্রচার করেছিলেন- সাঙ্খ্যদর্শনে। এই দর্শনটায় ঈশ্বরের অস্তিত্ব অস্বীকার করা হয়। ভদ্রলোক দাবী করেছিলেন প্রথমে কিছু না থাকলে দুম করে কোন কিছু এম্নে এম্নেই আইসা পড়ে না। সবকিছুই তার আগের কোন কিছুর থেকে এসেছে। যেমন দুধ থেকে দই- মুরগি থেকে আন্ডা- এইরকম সব চরম বিভ্রান্তিকর কথাবার্তা। আমি ব্যাটার কথাবার্তা শেষ পর্যন্ত কিছুই বুঝতে পারি নাই। চিন্তিত
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না

দুর্দান্ত এর ছবি

সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
---
যীশুর নাম বলে যা যা প্রচলিত সেগুলোও সব উপাধী
খৃষ্ট, ইহুদিদের রাজা, খোদার ছেলে - এগুলো জানি। আরো আছে নাকি?
---
গ্রিক ঘরানার সাথে মোহাম্মদীয় ঘরানার যোগাযোগ ছিল খুব পরিষ্কার

ছিল কি মশাই, বলুনে এখনো ভাল করেই আছে। ইউনানী দাওয়াখানা চেনেন তো। আমাদের দেশে এর প্রচলন কমে গিয়ে থাকবে, কিন্তু দুবাই, মরক্কো, মিশরে এমনকি দক্ষিন স্পেন বা সিসিলির একটু গ্রামের দিকে গেলে ইউনানী ঔষধ এর ওপর সবাই ভরসা করে। তারা একে ডাকও ইউনানি ঔষধ বলেই।

আরবেরা গ্রীকদের ইউনান বলে ডাকে, সম্ভবত তুর্কী গ্রীক ভাষাভাষী Ionian দের থেকেই এই নাম।
---
[i]ইব্রাহিম বংশের সব নবীদেরই মূল নাম আছে এবং তাদের বিশেষণগুলো মূল নামের পরে যুক্ত (ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ...)

এই নামগুলোও ইসলামেরই দেয়া। তবে ইব্রাহিমকে কেউ কেউ ব্যাবিলনের হামুরাবির সাথে মিলিয়ে দেখেতে চেয়েছেন।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আরবেরা গ্রীকদের ইউনান বলে ডাকে, সম্ভবত তুর্কী গ্রীক ভাষাভাষী Ionian দের থেকেই এই নাম।

ইলিয়াডে তুর্কি (ট্রয়) এর প্যারিজের বনবাসকালীন বনতরুণী প্রেমিকার নাম ছিল ইউননি

হতে পারে এটা একটা গোত্র। আবার এটার নাম বনজও হতে পারে
বনজ ওষুধ...

০২

ইউনানি শব্দ থেকেই সম্ভবত ভারতে যবন শব্দটা এসেছে

০৩

যীশুর নাম হিসেবে প্রধানত প্রচলিত যে দুটো নাম: যীশু (ত্রতা) এবং খ্রিস্ট (অভিষিক্ত)

বাকিগুলোতো পরিষ্কার বোঝাই যায়

দুর্দান্ত এর ছবি

ইউনানি শব্দ থেকেই সম্ভবত ভারতে যবন শব্দটা এসেছে
আমর মনে হয় ইউনানি থেকে যবন শব্দের উতপত্তির চাইতে, এই দুটি শব্দের উতস এক হবার সম্ভাবনা বেশী। এখানে দেখুন।

হিমু এর ছবি

যিশু অর্থ কী ত্রাতা? মাসীহ মানে ত্রাতা জানতাম। JESUS তো প্রপার নাউন।

মুহাম্মদ নামটা নিয়ে আমি বহু আগে একটা লেখায় প্রশ্ন তোলার কথা পড়েছিলাম। সেখানে যুক্তি ছিলো, আরবের ঐ অঞ্চলে সেই সময়ে মানুষের প্রচলিত নাম এমনটা ছিলো না, অতএব নিশ্চয়ই এটি একটি আরোপিত নাম, প্রকৃত নাম অন্য কিছু। এই যুক্তিটা আমার কাছে তেমন একটা গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি, কারণ এই একই কথা বলা যায় "লীলেন" বা "হিমু" নামটা নিয়েও।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

লাবন্য [অতিথি] এর ছবি

আমি কোথাও (সচলায়তনেও হতে পারে) পড়েছিলাম 'মুহম্মদ' হচ্ছে 'Mr.' এর প্রতিশব্দ।

-লাবন্য়-

ওডিন এর ছবি

খুবই ইন্টারেস্টিং। এরপরে এইবিষয়ে আরো লেখা আসবে আশা করি।
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না

দুর্দান্ত এর ছবি

ধন্যবাদ।
সাসানিডদের নিয়ে পড়ছি এখন, পরে কখনো এ নিয়ে পোস্ট দেবার ইচ্ছা আছে।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

লেখাটা সত্যি ইন্টারেস্টিং। অনেকগুলো পুরাতন প্রশ্ন আবার জেগে উঠলো, আর নতুন অসংখ্য প্রশ্ন যোগ হলো। কিন্তু উত্তর পাবো কী না জানি না।
অনেক ধন্যবাদ লেখাটার জন্য
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

দুর্দান্ত এর ছবি

আপনাকেও সময় করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

হরেকৃষ্ন এর ছবি

নামে দুর্দান্ত, আপনি লিখেছেনও দুর্দান্ত! পড়ার আগে পর্যন্ত ভাবতাম, মহানবীকে যতদূর জানার আমি তা জেনে গেছি। আপনার লেখা পড়ে মাথা আমার নুয়ে গেল। মহানবীকে উপলক্ষ করে আজাইরা অনেক কিছুই জানা র জন্যে উৎসুক হয়ে রইলাম।

দুর্দান্ত এর ছবি

পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আপনিও পড়া শুরু করুন। ৫-৭ শতাব্দীটাই অনেক ইন্টারেস্টিং - আরব থেকে ভারত পর্যন্ত অনেক কিছুই যুগপত ভাবে পালটে যাচ্ছিল।

বর্ষা এর ছবি

পছন্দের পোষ্টে রাখলাম।

********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।

********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।

দুর্দান্ত এর ছবি

ধন্যবাদ।

নৈষাদ এর ছবি

ইতিহাস এমনিতেই আমার খুব প্রইয় বিষয়। আপনার টপিকটা তো খুবই ইন্টারেস্টিং!!

যুধিষ্ঠির এর ছবি

চমৎকার একটা বিষয়ে দারুণ উপস্থাপনা। খুব ভালো লাগলো লেখা। প্রিয় পোস্টে চলে গেলো। আজাইরা বিষয় আর যা যা জানবেন, আমাদের জানিয়ে দিয়েন সময় করে।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

দুর্দান্ত

সিরাত এর ছবি

অতি অসাধারণ! সচলায়তনে এরকম লেখা আরো চাই!!

৫ দিয়া বাকি কথা।

দুর্দান্ত এর ছবি

তোমাকেই ধন্যবাদ, ইসলামের অন্তর্দ্বন্দ নিয়ে তোমার পোস্ট থেকে অনুপ্রানিত হয়েই কিন্তু এটা দিলাম।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

দুর্দান্ত লিখেছেন:
তবে আশার কথা হল যে এ নিয়ে জোড়দার কাজ চলছে

একদম "জোড়দার"। দেঁতো হাসি

পাঁচ দিলাম।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

সিরাত এর ছবি

পাঁচ দিয়ে আরাম পাচ্ছি না দুর্দান্ত ভাই। কি করা যায় বলেন তো? চোখ টিপি

ওসিরিস এর ছবি

গত কয়দিন ধরেই এ ব্যাপারে কিছুমিছু পড়াশোনার চেষ্টা করছিলাম। বালিশের পাশে এখনো ধর্ম বিষয়ক বেশ কিছু বই। এই পোস্টটা পড়ে আগ্রহ আরো বেড়ে গেলো।।

***********************************************
সিগনেচার কই??? আমি ভাই শিক্ষিৎ নই। চলবে টিপসই???

দুর্দান্ত এর ছবি

নৈষাদ, পান্ডবদা, শুভাবশীষ, সিরাত, মুর্শেদ - আপনাদের সবাইকে সময় নিয়ে পড়ার জন্য ও সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- খালি দেইখা নিলাম, কেডা কেডা নরকে ডাইরেক্ট অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিবে, খালি মুখ চেনা চিনা রাখলাম। কামে দিবে ভবিষ্যতে। চোখ টিপি
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

স্বাধীন এর ছবি

ইতিহাসের উপর আসলে কোন কথা নাই। দুর্দান্ত লেখা হয়েছে। এটার সিক্যুয়াল চাই। চালিয়ে যান।

কুবের [অতিথি] এর ছবি

পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।

সাঈদ আহমেদ এর ছবি

দুর্দান্ত (বিশেষ্য ও বিশেষণ)... পড়ে মনে হলো "কত অজানারে"!

পুনশ্চ: "ঘারানিক" এর অর্থ নিয়ে সম্ভবত দ্বিমত নেই, যা কিনা সারস আকৃতির পাখির বহুবচন। দ্বিমত আছে এর ব্যবহার নিয়ে। সুরা আন-নজমের ১৯-২০ আয়াতে ত্রিদেবীর নামোচ্চারনের পর যে স্তুতিমূলক আয়াত অনুসারীরা নবীর মুখে শুনেছিলেন (যা পরে বাতিল করা হয়), তা কিভাবে ঘটে ছিল, তা নিয়েই মুলত: ইসলামবিদদের মধ্যে দ্বন্দ্ব আছে।
এসব নিয়ে তো বাংলায় তেমন একটা লেখাই হয়না। আন-নজমের প্রথম একুশ আয়াতের বাংলা তাফসিরে মুলত: স্বর্গ-নরকের অবস্থান নিয়েই আলোচনা করা হয়, ত্রিদেবীর স্তুতি বিতর্কের কোন উল্লেখই নেই (দেখুন এই তাফসিরের ১৩০৫ পাতার মাঝামাঝি থেকে)।
-----------
"সে এক পাথর আছে কেবলি লাবণ্য ধরে"

-----------
চর্যাপদ

দুর্দান্ত এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। বাংলা তাফসিরে ভক্তি আনতে একটু কষ্ট হয়। আপনার দ্বিতীয় লিঙ্কটির ১৩৫ পাতার বাম-নিম্ন কোনের প্যারাটিকেই দেখুন। 'মৃত্তিকা খনন করে ভুগর্ভের অপর প্রান্তে যাবার প্রচেষ্টা'র কথা পড়ে মনে হল বাংলাদেশী ওলামায়ে মুফাস্‌সেরুন কমিউনিটি হাল জামানার হলিউডী ফিল্ম একটু বেশী গুরুত্ব দিয়ে দেখেন।

সাঈদ আহমেদ এর ছবি

জানতাম বিষয়টি ধরতে পারবেন হাসি

-----------
"সে এক পাথর আছে কেবলি লাবণ্য ধরে"

-----------
চর্যাপদ

শামীম [অতিথি] এর ছবি

Discerning the meaning of "gharāniq" is difficult ...... The Arabic word does generally mean a "crane" - appearing in the singular as ghirnīq, ghurnūq, ghirnawq and ghurnayq, and the word has cousin forms in other words for birds, including "raven, crow" and "eagle".

সুত্রঃ উইকিপিডিয়াঃ http://en.wikipedia.org/wiki/Satanic_verses#cite_ref-2

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

প্রিয়তে... সম্প্রতি ক্রুসেড নিয়ে হালকা নাড়াচাড়া করছি। এই সময় ইসলাম নিয়ে এমন একটা পোস্টে এবিষয়ে আগ্রহ বাড়ালো বহুগুণ।

_________________________________________

সেরিওজা

রানা মেহের এর ছবি

খুব আগ্রহ জাগানো লেখা
কোন জটিলতায় না গিয়ে সাধারণ কিন্তু জরূরী তথ্য পাওয়া গেলো অনেক
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।