ক্যালিডোস্কোপ - ৩

এক লহমা এর ছবি
লিখেছেন এক লহমা [অতিথি] (তারিখ: শনি, ২২/০২/২০১৪ - ৬:৩৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এইমাত্র আইঅভ্র নামিয়ে নিয়ে চালু করা হয়ে গেল। লিখতে থাকি এখন।

আমার বই-খাতায় অ্যালার্জি। আক্ষরিক অর্থেই। পুরান-নুতন যে কোন বই কয়েক পাতা নাড়াচাড়া করলেই চোখ চুলকান, জল ভরে আসা শুরু হয়ে যায়। এদিকে পড়ার সময় অক্ষররা, সংখ্যারা স্থান পরিবর্তন করে ফেলে। ফলে একই লাইন ফিরে ফিরে পড়তে হয়। এত ঝকমারি গল্প বই পড়ার জন্য সওয়া যায়, কাজের বই পড়ার জন্য নয়। ওদিকে হাতের লেখা খারাপ এবং লেখার গতি ইচ্ছের সাথে মিলেমিশে চলেনা। ফলে লেখা জট পাকিয়ে যায়। ফলে লেখা-পড়া আমার পক্ষে দিন দিন দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছিল। গিন্নীর হাত ধরে মার্কিন মুলুকে চলে আসার কয়েক সপ্তাহর মধ্যে হাতে এল কম্পিউটার। পড়ার জন্য সিলভার প্ল্যাটার, আজকের ডিভিডির মাতামহী। লেখার জন্য - আদিযুগ চলছে তখন, ডস। আহা! আমায় আর পায় কে, আর কাগজ খুলে হেঁচে কেশে মরতে হবে না! তার পর পেয়ে গেলাম জানালা-৩, দশমিক কত যেন। সেটা খুব অল্প সময়ের জন্য। আমায় ফেলে বস চলে গেলেন অন্য যায়গায়। নূতন বস সন্ধান দিলেন কোণায় কামড় খাওয়া আপেলের। ওরে না! এ কি জিনিস! দিনে রাতে ম্যাক বাজিয়ে চোস্ত পোস্ট-ডক হয়ে গেলাম। তারপর এল ১৯৯৫। উইন্ডোজ ৯৫ ওয়ালা পি সি। এবং এল নেটস্কেপ। খাড়া লাফ - যুগান্তর ঘটে গেল। কিন্তু এত সবের মধ্যে একটা দুঃখ বাজতে থাকত সর্বদাই। কম্পিউটারে বাংলা লেখা সহজ হচ্ছে না। যা সফটঅয়্যার পাই, কিনে ফেলি, কত যে ডলার গেল, সুবিধা হয় না, লিখে সুখ হয় না।

দিন কাটে, দিনের নিয়মে। হঠাৎ একদিন কতগুলো দুর্বোধ্য শব্দ সংমিশ্রণের সাথে ঠোক্কর খেলাম - ওমিক্রন, ল্যাব, অভ্র, কীবোর্ড! কি আছে জীবনে ভাব নিয়ে নামিয়ে ফেললাম, চালু করে দিলাম। অনুযোগ-অপ্রাপ্তির দিন শেষ হয়ে গেল। জাদুকর-এর নাম দেখলাম মেহদী হাসান। আমরা যারা বাংলায় লেখালেখি করতে ভালবাসি, বিশেষ করে ইন্টারনেট-এ, আমার মনে হয় আমাদের জীবনে পরিষ্কার দুটি অধ্যায় - অভ্র ব্যবহার করতে শুরু করার আগে এবং পরে, ভাষা উন্মুক্ত হওয়ার আগে এবং পরে।

বেশ চলে যাচ্ছিল। ধাক্কা খেলাম বছর দেড়েক আগে। পি সি ছেড়ে ম্যাকে ফিরেছি, অভ্র নেই। পাগল পাগল লাগতে রইল। খোঁজ নিয়ে দেখি বাংলাদেশের আর এক জাদুকর এস, এম, রাইয়ান কবির উপায় করে রেখেছেন - অঙ্কুর। আঃ, প্রাণ বাঁচল! অনেক ধন্যবাদ জনাব রাইয়ান কবির!

আজ থেকে অবশ্য আবার ফিরে এলাম অভ্রতে। আবারো ধন্যবাদ মেহদী আর তার দলকে।

এদিকে অন্যান্য কিছু কাণ্ড ঘটে চলেছিল। ডিজিটাল ক্যামেরা নিয়ে জোর আদিখ্যেতা চালু করে দিয়েছিলাম। ছবি তুলে যাচ্ছিলাম চুটিয়ে। কিন্তু লোকজনকে দেখাতে না পারলে কিসের কি! ঢুকে গেলাম ফ্লিকার জগতে। ধীরে ধীরে বুঝতে পারলাম এ বিদ্যের লোক আমি নই। আমার সে বোধ নেই, ধৈর্য্য ও নেই। তবে, একটা বিশেষ লাভ হল। কিছু মানুষের সাথে পরিচয় হল, ভাই-বোন-দাদা-দিদি-বন্ধু , বেশীই বাংলাদেশের তাঁরা, বাকি পৃথিবীর-ও আছেন, সারা পৃথিবী জুড়েই বাস তাঁদের। মুগ্ধ হলাম, এত গুণী ও হয়, এত আপন, আপ্লুত হলাম। সেখানে ডাক্তার ফটোগ্রাফার বন্ধু আফতাব-এর সূত্র ধরে এক আড্ডায় হঠাৎ দেখি এক পরিচিত নাম - ডাঃ মেহেদী হাসান খান। অত্যন্ত প্রিয় এবং সম্মানিত মানুষ সে। আরো গভীর ভাবে সেখানে চিনলাম তাকে।

এদিকে ফ্লিকার থেকে আস্তে আস্তে সরে আসছি। প্রিয় বন্ধুদের পোস্টে মাঝে মঝে যাই, একটা-দুটো মন্তব্য রেখে আসি। এমনি এক দিন, প্রিয় বন্ধু সাজন-এর এক ছবিতে মন্তব্যর জন্য ইন্টারনেটে জীবনানন্দর কবিতা খুঁজতে খুঁজতে এসে হাজির হলাম এক আশ্চর্য পোস্ট -এ। পোস্ট দিয়েছেন তারেক অণু। ছবিব্লগ। জীবনানন্দর কবিতার সাথে। স্তব্ধ হয়ে বসে রইলাম।

ফ্লিকার-এ থাকার দিনগুলোতে আমার একটা উদ্ভুটে অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল, কোন ছবি ভাল লাগলে সেই ভাল লাগা থেকে একটা কবিতা বা কবিতার মত কিছু লিখে ফেলা। তারেক অণুর এই পোস্ট দেখেও লিখে ফেললাম একটি কবিতা। কিন্তু সেটা আর মন্তব্যের ঘরে বসাতে পারি না। শেষে সাজনই আমার নাম উল্লেখ করে পোস্ট করে দিল। এদিকে ওই পোস্ট-এ আকৃষ্ট হয়ে আমি গোটা সাইট-টিই একটু ভাল করে দেখতে শুরু করলাম। আর চমকে গেলাম। মেহদী। ডাঃ মেহদী হাসান খান। এক আশ্চর্য ছবিব্লগ পোস্ট করেছে। প্রজন্মবার্তা, শাহবাগ। মেহদী যেখানে এমন পোষ্ট দেয়, সে জায়গাকে আমি পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারি। কি সাইট এটি? সচলায়তন।

পরদিন পরম আবেগে ঘুরে বেড়ালাম সাইট জুড়ে। মনে হল এরই সন্ধানে ছিলাম আমি। তারপর ক'টা দিন মাঝে মাঝে ঘুরে বেড়ালাম সাইট জুড়ে। শেষে এক দিন আর দেরী না করে নিবন্ধন সেরে ফেললাম। এর পরে পরেই একদিন যে লেখা পড়ে মন্তব্য করলাম সে লেখা আর আমাকে সচলায়তন থেকে দূরে থাকতে দিলনা। জোহরা-দিদির মায়াঝরা লেখা থেকে শুরু করে সেই যে বকবক করতে শুরু করলাম, আর থামা হল না।

তারেক অণুর পাখির নামকরণ নিয়ে লেখায় মন্তব্য করতে গিয়ে আবার এক নূতন অভিজ্ঞতা হল। মুর্শেদ-ভাইয়ের বাংলা ওয়েব টুলস। অসাধারণ কাজ। ধন্যবাদ জানানোর ভাষা নেই।

ভেবেছিলাম মন্তব্য করেই চালিয়ে যেতে পারব। সেটাও হল না। আয়নামতিদিদি এমন তাড়া লাগাল যে, যা থাকে কপালে বলে একটা অনুবাদ নামিয়ে বসলাম। অবধারিত ভাবেই ফেল্টু কাজ হল। কিন্তু, সাক্ষী-মশাই, নজরুল-ভাই, পাণ্ডব-দা, মর্ম, প্রোফেসর সাহেব, জনাব আব্দুল্লাহ, আশালতা-দি, আর বায়নামতিদি ত বটেনই সবাই হাল না ছাড়ার পক্ষে রায় দিয়ে বসলেন। ফলে, ইতিমধ্যেই ব্লগ পাতার ক্রমিক সংখ্যা ৩-এ ঢুকে গেছে। ঈশপের গল্প সিরিজে অণুগল্পগুলির সংখ্যা ৮০-তে পৌঁছে গেছে। বিশ্বাস হতে চায় না!

এবার একটা মজার কথা দিয়ে আজকের পর্ব গুটিয়ে আনি। ছোটবেলায় নানা লোক নানা স্বপ্ন দেখে। বয়স বাড়ে, স্বপ্নরা কমে যায়, মিলিয়ে যায়, আসেনা বিশেষ আর - নূতন করে। মাঝে মাঝে একটা-দুটো। সচলায়তনে লেখা শুরু করে আমি একটা স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলাম, একদিন পোস্টে একটা মন্তব্য আসবে, বিশেষ একটা, আমার ই-মেল চেক করতে বলে। আসতে দেখেছি কারো কারো। কিন্তু আমার আর সে স্বপ্ন আর পূরণ হয়নি। ঘন ঘন ই-মেল চেক করার অভ্যাস আমার। ফলে সেই মন্তব্যটা আর আসার সুযোগ-ই পায় নি। বিনা মন্তব্যেই একদিন জানতে পেরে গেছিলাম প্রিয় সচলায়তনে একটি পাতায় এবার লেখা হবে

সচল হলেন:
March 22, 2013

কিন্তু এসেছিলাম ২০ ফেব্রুয়ারী। পরের দু'দিন কেটে গিয়েছিল এক অপূর্ব উন্মোচনে। বর্ষপূর্তির অনেক ভালোবাসা সচলায়তন!


মন্তব্য

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

আমার মনে হয় সচলায়তনের প্রতি এই আবেগ সবারই কম বেশি সমান। হাসি
এটা একটা অদ্ভুত জায়গা, অদ্ভুত সব মানুষদের এখানে আনাগোনা।
অসাধারণ মেধাবী, তুখোড় লিখিয়ে, ছবি তুলিয়ে সব মানুষ, যাদের দেশপ্রেম দেখলে মুগ্ধ হতে হয়। যাদের জ্ঞানের গভীরতা দেখলে স্তব্ধ হয়ে বসে থাকতে হয়। এটা আমার ভীষণ গর্ব যে আমি সচলায়তন পরিবারের খুব ক্ষুদ্র হলেও একজন সদস্য।

কার কোন লেখায় আর কোন কাজে মুগ্ধতা, ভাললাগা, ভালবাসা জানাব বুঝে পাইনা।
তোমার এই লেখার মাধ্যমেই প্রিয় মুর্শেদ ভাই, মেহদী ভাই আর রাইয়ান কবির ভাইকে আর একবার স্যালুট ঠুকে যাই। গুরু গুরু
বাংলা ভাষার জগতে, বাংলা সাহিত্যের জগতে যারা এত বিশাল পরিবর্তন এনেছেন সকলেই সচলের। দারুন ব্যপার, তাই না? হাততালি

সচল হলেন:
March 22, 2013

ইয়ে দাদাভাই এখনও তো মার্চ আসেনাই। এক মাস আগেই কি তোমাকে বর্ষপূর্তির অভিনন্দন জানাব? চিন্তিত

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

এক লহমা এর ছবি

এইটা বাদ পড়ে গিয়েছিল
"কিন্তু এসেছিলাম ২০ ফেব্রুয়ারী। পরের দু'দিন কেটে গিয়েছিল এক অপূর্ব উন্মোচনে।" খাইছে
এই বর্ষপূর্তি হচ্ছে সেই প্রথম দেখার বর্ষপূর্তি! সেই অনুভব বর্ণনা করা কঠিন! কারণ যেমন তুমি বলেছ, এত গুণীর সমাহারে এবং তাঁদের সম্মলিত প্রত্যয়ে সচলায়তন এক অনন্য সৃষ্টি!
এইবার অনেক আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- নাও সফিনাজদিদি হাসি

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক
সহমত

মাসুদ সজীব

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রিয় তারেক অণু দার হাত ধরে সচলে আমার আসা, তারেক অণুদার মতোই দিনের পর দিন আমাকে অসংখ্য ভালোলাগা আর বিস্ময় উপহার দিয়ে চলেছে সচলায়তন। সচলায়তন এমন একটি জায়গা যেখানে আসলে আমি বুক ভরে নি:শ্বাস নিতে পারি, ইচ্ছে মতো মনের কথা বলতে পারি অথচ আমার চারপাশে ভীষন বদ্ধ পরিবেশ। আর সবাইকে ভীষন ভীষন আপন মনে হয়। কত বিচিত্র অভিজ্ঞতা আর জানার যে শেষ নেই তা সচলে না আসলে ঠিক অনুধাবন করতে পারতাম কিনা সন্দেহ। বই পড়ার অভ্যেস ছিলো বেশ আগে থেকেই, কিন্তু এত ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ের লেখা আমি আগে পড়িনি, এতোটা মুগ্ধতা আমায় আর কিছু করতে পারেনি যা করেছে সচল। গত কয়েক বছরের মাঝে আমার শ্রেষ্ঠ পাওয়া হলো সচলায়তন।

আমি অবশ্য কোনদিন মেইল চেক করিনি সচল হলাম কি হলাম না, আমার পড়তেই ভালোলাগে। পাঠক হিসাবে থাকতে পারাটাও আমার কাছে অনেক আনন্দের। তাই এই ভালোলাগার ঠিকানাতে আসার পর থেকে খুব সম্ভব একদিনও আমি সচলে না এসে থাকতে পারিনি, খুব সম্ভব কোন লেখাই আমি মিস করে যাই নি দেঁতো হাসি । আসলে গত একবছর সচল আমার অফিস, সচলি আমার বাসা বাড়ি হয়ে গেছে (আমি ফাঁকিবাজ নই কিন্তু অফিসে হাজিরা দেওয়া ছাড়া তেমন কোন কাজ নেই ) লইজ্জা লাগে । তাই সব পোষ্টেই আমার কম বেশি মন্তব্য আছে চোখ টিপি এবং ভবিষতেও থাকবে আশা করি।

সচলের অনেকের লেখা, মন্তব্য আমি মিস করি, উনারা বোধহয় আমার মতো বেকার চাকরীজীবী নন হাসি । সময় বোধহয় খুব কম পান তাই আসেন না নিয়মিত তারপরও দাবি জানিয়ে চাই তাদের কে নিয়মিত দেখতে চাই। নীড় দা, সাক্ষী দা, মইনুল রাজু ভাই, ইশতিয়াক রউফ ভাই, শিমুল ভাই সহ আরো অনেক প্রিয় নাম আছে যারা অতিথি পাখির মতো এসে মুগ্ধতা ছড়িয়ে চলে যান। আশা করি উনারা আরেকটু বেশি সচল হবেন, আমাদের কে সচল রাখবেন। বর্ষপূর্তিতে আপনাকে শুভেচ্ছা।

মাসুদ সজীব

রকিবুল ইসলাম কমল এর ছবি

বাংলা লেখার সফট্ওয়্যার গুলোর এবং সচলায়তনের নেপথ্যের মানুষ গুলো নিয়ে মুগ্ধতা আমার কোনোদিনই কাটবে না।

এক লহমা এর ছবি

চলুক আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

চলুক

এক লহমা এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক এর ছবি

এতটুকুন জায়গার ভেতর অনেকগুলো বছরের গল্প ঠেঁসে ভরে দিলেন। পড়েও ফেললাম এক লহমা য়।

ইতিমধ্যেই ব্লগ পাতার ক্রমিক সংখ্যা ৩-এ ঢুকে গেছে।

এটা বাড়তেই থাকুক।

শুভেচ্ছা হাসি

[মেঘলা মানুষ]

(আমিও মাঝে মাঝে মেইলে ঢুকে sachalayatan লিখে সার্চ করে আসি। আজ সর্বশেষ করেছি প্রায় ঘন্টা তিনেক আগে)

এক লহমা এর ছবি

"পড়েও ফেললাম এক লহমা য়।" - মজার হয়েছে হাসি
হাসি আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-
এসে যাবে, সেই ই-মেইল! হাসি

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

১৯৮৭ সালের কথা, পিসি'র তখন প্রাগৈতিহাসিক কাল। পিসি চালু করে প্রথমে ডস এর একটি ফ্লপি ডিস্ক ঢুকিয়ে মিনিট দুয়েকের অপেক্ষা। তারপর ওয়ার্ডষ্টার, লোটাস ১২৩, ডিবেজ, প্যাস্কাল বা বেসিকের একটি ডিস্ক ঢুকিয়ে তদনুসারে কাজ। আর সময় সুযোগ মত ডিগার, প্যাকমান বা ক্যাট গেম খেলা, এই করে দিন কেটে যাচ্ছিল। এমনি সময় একদিন অকস্মাৎ হাতে এল একটি ডিস্ক, তাতে ট্যাগ লাগানো- বাংলা সফ্টঅয়্যার। উত্তেজনায় প্রায় দম আটকে এলো, তবে দুঃখের বিষয় কয়েকদিন অনেক খাটাখাটুনি করেও সেটা চালানো গেল না। গভীর দুঃখবোধ নিয়ে এরপর অনেক দিন কেটে গেছে। পরে অনুমান করেছি সেটা হয়তো ছিল শহীদ ভাইয়ের "শহীদ লিপি", পিসিতে যিনি প্রথম বাংলা প্রচলনের প্রয়াস পেয়েছিলেন। এরপর মোস্তফা জব্বারের প্রচেষ্টায়( সে যে ভাবেই হোক) কম্পিউটারে বাংলা লেখার ব্যবস্থা একটা ভিত্তি পেয়েছে। মোস্তফা জব্বারের মত আরো অনেকেই বানিজ্যিক ভাবে বাংলা ফন্ট প্রচলনের চেষ্টা করেছেন, সেসবের ব্যবসায়িক সাফল্য মিশ্র, কিন্তু বাংলা ব্যবহারের প্লাবন, বিশেষ করে অনলাইনে, যেন গতি পাচ্ছিল না। অভ্রের অব্যবসায়ীক আগমনের পর সেই গতি এসেছে, ত্বড়িৎ গতিতে বাংলা ছড়িয়েছে অন্তর্জালে। প্রানের ভাষা বাংলার বন্ধন মুক্তিতে যাঁরা ভুমিকা রেখেছেন, তাঁদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও সাধুবাদ।

এক লহমা এর ছবি

চলুক
প্রায় এক-ই অভিজ্ঞতা আমাদের সব! হাসি

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

রাইয়ান কবির না, নামটা সম্ভবত রাইয়ান কামাল হবে। এই ব্যক্তি অভ্র টিমেরও একজন।
আর মেহদীর নামের আগে ডঃ/ডাঃ কোনটা বসার কথা?

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

এক লহমা এর ছবি

অঙ্কুর-এর রাইয়ান-এর নিজের পরিচয়-পাতা থেকে কবির-ই পেলাম যে!
আর মেহদীর ডঃ --> ডাঃ ঠিক করে দিয়েছি। অনেক ধন্যবাদ, নজু-ভাই! হাসি

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

তাহলে রাইয়ান কবির আর রাইয়ান কামাল ভিন্ন মানুষ। আর রাইয়ান কবির এনকিদু নন

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

এক লহমা এর ছবি

ঠিক। ও বেলা এই নিয়ে একটা মন্তব্য দিয়েছি আর লেখাতেও সম্পাদনা করেছি মানে লেখা থেকে এনকিদু সংক্রান্ত বাক্যটি বাদ দিয়ে দিয়েছি।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

গান্ধর্বী এর ছবি

এক লহমায় পড়ে ফেললুম দাদা হাততালি

সাক্ষী-মশাই, নজরুল-ভাই, পাণ্ডব-দা, মর্ম, প্রোফেসর সাহেব, জনাব আব্দুল্লাহ, আশালতা-দি, আর বায়নামতিদি ত বটেনই সবাই হাল না ছাড়ার পক্ষে রায় দিয়ে বসলেন। ফলে, ইতিমধ্যেই ব্লগ পাতার ক্রমিক সংখ্যা ৩-এ ঢুকে গেছে। ঈশপের গল্প সিরিজে অণুগল্পগুলির সংখ্যা ৮০-তে পৌঁছে গেছে। বিশ্বাস হতে চায় না!

কুঁড়েমি পুরোপুরি কেটে যাক, ব্লগ পাতার সংখ্যা আরো বাড়ুক হাসি

সচলায়তনে লেখা শুরু করে আমি একটা স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলাম, একদিন পোস্টে একটা মন্তব্য আসবে, বিশেষ একটা, আমার ই-মেল চেক করতে বলে। আসতে দেখেছি কারো কারো। কিন্তু আমার আর সে স্বপ্ন আর পূরণ হয়নি। ঘন ঘন ই-মেল চেক করার অভ্যাস আমার। ফলে সেই মন্তব্যটা আর আসার সুযোগ-ই পায় নি। বিনা মন্তব্যেই একদিন জানতে পেরে গেছিলাম প্রিয় সচলায়তনে একটি পাতায় এবার লেখা হবে

সব অতিথি লেখকের মনে বুঝি এই স্বপ্ন থাকে, আমারও ছিল! প্রতিদিন একবার করে সচলে ঢুঁ না মারলেই নয়! যেদিন মেইলটা পেলাম সেদিন খুশিতে তাই দশ-বারোখানা হয়ে গেছিলাম।

বর্ষপূর্তির অভিনন্দন হাসি

------------------------------------------

'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)

এক লহমা এর ছবি

"এক লহমায় পড়ে ফেললুম" - হাঃ হাঃ হাঃ হাঃ, চমৎকার হয়েছে এটা। চলুক
"কুঁড়েমি পুরোপুরি কেটে যাক" - তাইত, কুঁড়ে লোক যে কি করে! মন খারাপ
"খুশিতে তাই দশ-বারোখানা হয়ে গেছিলাম" - দেঁতো হাসি
অনেক আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- গান্ধর্বী!

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

এক লহমা এর ছবি

রাইয়ান কবির / কামাল / এনকিদু --> ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছিল। পাণ্ডবদা ঠিক করে দিয়েছেন আর একটি লেখায়। আমার লেখা থেকে এই সংক্রান্ত বাক্যটি তাই তুলে নিলাম।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

কী ক্যালিডোস্কোপ দেখালেন দাদা!!! এক ঝটকা মেরে ঘুরিয়ে নিয়ে আনলেন স্মৃতির পাতা থেকে!! মনে আছে তো - আপনার, আমার, সাক্ষী দাদার, সাফিনাজ দিদির, গান্ধর্বীর, সাগর রহমানের পথ চলা মোটামুটি কাছাকাছি সময়ের!!!

____________________________

এক লহমা এর ছবি

হাঃ হাঃ হাঃ হাঃ!
হ্যাঁ, প্রোফেসর সাহেব, আমরা একসঙ্গে পথ হাঁটছি! হাসি

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

আয়নামতি এর ছবি

সেই পটরপটর করা লুক্টার ব্লগপাতার সংখ্যা মাত্র তিন কেনু হবে? আরো বেশি নয় কেনু কেনু কেনু!
'পটরপটর' বলেছিলাম বলে তুমি মনে হয় তখন মনে কস্টই পেয়েছিলে দাদাই!
এখনো জমে নেই তো মনের কোণে বিষন্ন একটুকরো মেঘ? ভুলে যেও পিলিজ! আমি এট্টু পাগলাজগাই আছি রে!
অভিনন্দন থাকলো দাদাই বর্ষপূর্তিতে লেখা -গুড়- হয়েছে
সচলভর্তি এক একটা অভিশাপ! ভুলভুলাইয়ার মত একবার এখানে পা রাখলে আর ফেরা যায় না।
অভিশাপ সকল সচলদের প্রতি অনেক কৃতজ্ঞতা, শুভেচ্ছা।
'রানা মেহের' নামের এক অভিশাপের তীরে আমি প্রথম আক্রান্ত এবং বাকি ইতিহাস তো এখন চোখের সামনেই দেঁতো হাসি

এক লহমা এর ছবি

আমি ও তো বলি, "কেনু কেনু কেনু"! হাসি
না রে দিদি, আমার মজাই লেগেছিল। এখনো সেই মজাটা পুরোই মনে আছে। হা হা!
আহ্লাদের সহিত অভিনন্দন গৃহীত হইল। এই নাও, অনেক আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- হাসি
হ্যাঁঃ, এই অভিশাপরা জীবনটা একদম ঝাঁঝরা করে দিল! এদের ভালোবেসে এই যে আটকে গেছি, সহজে আর ছাড়ান-কাটান আছে বলে মনে হচ্ছে না!

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

হাততালি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

এক লহমা এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- হাসি

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

এক লহমা এর ছবি

ডুপ্লি

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক এর ছবি

গুরু গুরু হাততালি

দেবদ্যুতি

এক লহমা এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- হাসি

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।