পায়ে এসে ঠেকে অদৃশ্য মৌলকণা-- কুয়াশার হাড়গোড়

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শুক্র, ০৯/১১/২০০৭ - ১০:৩৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

.

গুহাজাত অন্ধকারের একটা মাঝারি টুকরো হামাগুড়ি দিয়ে এসে সদর রাস্তায় পড়তেই, বায়ুসমুদ্রে বিরাজিত শুষ্ক কণাসমূহ, স্পঞ্জের মতো শুষে নিয়ে গোটা পৃথিবীটাকে গাবগাছের ছায়ার মতো কালো করে দিল, মেঘের আড়ালে যৌবনের অমিত তেজে সে তখন খেলছিল, একাদোক্কা, সখিগণ সহযোগে, তবু স্বপ্ন গোপন করে বাহ্য উন্মাদনায় যদিও সে হাসছিল, প্রকৃতপক্ষে তার তখন অস্তিত্ব জুড়ে বেরিয়ে পড়ার তাগিদ, বাড়ি বাড়ি ফেরি করে আলো বেচাকেনা, পায়ের নিচে তিলধারী সে, সুর ভাজতে জানে, তার সুরের মদিরা গন্ধে তেপান্তরের ঘাসে মূর্ছিত হয়ে কতজন বুকে বিঁধায়েছে বেদনার শল্য... কেউ সিফিলিস... কেউ ট্রাম... সে জানে, তাই আদিখ্যেতা রেখে, থুতনিতে হাত ঠেকিয়ে বরফ চূড়ায় বসে যায় ভাবনাব্যাপদেশে, সখিগণ দৌড়ে গিয়ে জাপটে ধরে রূপার কলস... গায়ে মাখে নিমপাতা ছেঁচা রস... বেলফুল... অতঃপর সার বেঁধে নদীমুখো হাঁটা দেয় তারা, সঙ্গে সাম্বা নাচ নেচে সে হাঁটে, জল ছোঁয়, দিগ্বলয়ে হৈচৈ পড়ে যায় আলোর নাচনে, পাতায় পাতায় বিকিরিত রশ্মিরাজি অস্পর্শনীয় মায়াবী সুতোয় হাজারটা প্রতিফলন এঁকে, শব্দিত-স্পন্দিত প্রাণের চোখে-মুখে তড়াক করে ছুড়ে দেয় প্রীতম সম্মোহন, অতঃপর সখিগণের কলরবা ঢেউ জলের নিয়মে দিগ্বিদিকে ছড়াতে শুরু করলে, স্নানের পাট চুকিয়ে সে শাদা শাড়িতে মোড়িত হয়ে পা রাখে নিজস্ব গ্রাফে, আর পৃথিবীর সব অন্ধকার গাবগাছই তখন চালতা গাছের মতো সুন্দরী হয়ে যায়...

উন্মূল নুঁড়িপাথরে ঝঙ্কার উঠিয়ে কিছুপথ হাঁটা হলে পায়ের কাছে দূত পাঠায় মেঘের দুহিতা, কালো কঙ্কন পরা অমিত বিক্রমী বলীয়ান-যে তার মহিয়সী, কেশ ভারানতা, পথের পাশে লভ্য আপনার ছায়ামাঝে প্রত্যাদিষ্ট সে, অতঃপর যাবতীয় বিভারাজি ত্রস্ত লুকায়ে ফেলে এবং গীত হবে যে সুরীয় আবেশ, তার চরণকলাদের রেওয়াজের জলঝর্ণায় ধুয়ে নিয়ে যাপন করে অবসর কাল, আর তুন্দ্রায় তখন ভরাবৃষ্টি, সে বৃষ্টিময়ী, তার চিরকাল ভরাবৃষ্টিকে গানের নিচে শয্যা পেতে বাসের মতো সুখের লাগে...

পাখিগণ নীড় থেকে গলা বাড়িয়ে দেখে ক্রমদৃশ্যমান ভেজা ও বিষণ্ন নিসর্গকে, যেনো সমুদ্রের তলদেশ থেকে পুনর্জন্ম প্রাপ্ত হচ্ছে ধরা, দৃশ্যাহতির এ পর্যায়ে অদ্ভুত এক আবাহনে প্রত্যেকের স্নায়ুর নদীতে অন্যরকম এক পুলক ছলকে ওঠে, আর তারা স্ব-স্ব দরজায় দাঁড়িয়ে কোরাসে গেয়ে ওঠে স্বাগতম...

সে হাঁটে, তার পায়ে এসে ঠেকে অদৃশ্য মৌলকণা, কুয়াশার হাড়গোড়, তবু শাদা, আহা শাদার আতিশয্যে ম্রিয়মাণ হয়ে যায় সব বাধা, তার কেননা জীবনই যৌবন, মুখিয়ে আছে যারা নিচে থেকে চাতকের প্রায়, তারা জানে, কত অনিয়ম তিতিক্ষার পর মেলে এই যৈবতি কন্যার মন...

কন্যা বর দিলে ফুল ফোটে, শাপ দিলে হুল, সেই-ই মাটি দেয় আগুন দেয়, টিপে-গড়ে তাপে-পুড়ে সোহাগী পুতুল, দেবী সেই-ই স্তন্যদাত্রী, লালন-পালন তার, সেই-ই যুগিয়ে যায় যাবতীয় খোরপোশ, সেবার মানস...

সমস্ত সৌরভ দিয়ে দেবী আমাকে ভালোবাসে, তার অপরিমেয় প্রেমের প্রবাহ আমার বিষণ্ন তালুক-এ বয়ে আনে উর্বরা পলি, আমি চাষে মত্ত হই, চাষী...

মুজিব মেহদী


মন্তব্য

??? এর ছবি

ছবিটা দেখা যাচ্ছে না যে.... লেখা আরাম লাগল।
..............................................................
শুশুকের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সাঁতরে এসেছি কুমীরে-ভরা নদী!

মুজিব মেহদী এর ছবি

'ছবি'তে গিয়ে লিংক পেস্ট করে দিয়েছিলাম। শামসুর রাহমানের ছবিটাও এভাবেই দিয়েছিলাম, তখন তো ঠিক হলো। এবার হলো না কেন বুঝলাম না। এবারের ছবিটা অবশ্য সাইজে বড়ো ছিল।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

কন্যা বর দিলে ফুল ফোটে, শাপ দিলে হুল, সেই-ই মাটি দেয় আগুন দেয়, টিপে-গড়ে তাপে-পুড়ে সোহাগী পুতুল, দেবী সেই-ই স্তন্যদাত্রী, লালন-পালন তার, সেই-ই যুগিয়ে যায় যাবতীয় খোরপোশ, সেবার মানস...

নিজের কম্পিউটার থেকে ছবি যোগ করতে হলেঃ
১। রচনা* নামের যে প্যাডে আমরা লিখি তার ঠিক নীচে( লেখার সাজ লিংকের উপরে) একটা আইকন আছে, সেটাতে ক্লিক করুন
২।নতুন জানালা খুলবে । সেই জানালায় 'আপলোড'বোতাম পাবেন । বোতামে টিপ দেন ।
৩। শিরোনাম*কিছু একটা লিখুন(আমি প্রায়ই . দিয়ে দেই) । ব্রাউজ এ গিয়ে ছবির পথ দেখিয়ে দিন ।

৪।প্রিভিউ দেখতে পারেন অথবা সংরক্ষন করুন

৫।জানালা বদলাবে । এলাইনমেন্টতালিকায় গিয়ে লেফট/রাইট/সেন্টার অপশন ঠিক করুন । insertবোতামে টিপ দিন

৬। রচনা*প্যাডে যেখানে আপনি মুল লেখা লিখছিলেন,সেখানে কিছু কোড ইন্সার্ট হলো( কারসার যেখানে থাকবে,কোদ সেখানেই যাবে। ছবি যদি লেখার শুরুতেই রাখতে চান,কারসার শুরুতে রাখুন অথবা অন্য কোথাও কোড ইনসার্ট হলে-কাট করে শুরুতে পেষ্ট করে দিন)

৭।কোডে width ও height প্যারামিটার বদলে দিন । সর্ব্বোচচ 320,320 । 300,300দিলেই যথেষ্ট বড় দেখায় ।

বেশী ঝামেলা মনে হচ্ছে? একবার করে দেখেন । অভ্যস্ত হয়ে গেলে এটাই বেষ্ট । width,height,Alignment নিয়ে কাজ করা যায় ।

-----------------------------------------
'প্রিয়তম পাতাগুলো ঝরে যাবে মনে ও রাখবেনা
আমি কে ছিলাম,কি ছিলাম--কেন আমি
সংসারী না হয়ে খুব রাগ করে হয়েছি সন্ন্যাসী
হয়েছি হিরন দাহ,হয়েছি বিজন ব্যথা,হয়েছি আগুন'

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

মুজিব মেহদী এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ। এই টিউটোরিয়ালটা কাজে দেবে মনে হচ্ছে।

মুজিব মেহদী এর ছবি

দারুণ। হঠাৎই ছবিটা উদয় হলো। মডারেটরদের কাজ নিশ্চয়ই। আমি খুশি।

ছবিটার খবরও জানিয়ে দেয়া যায়। এটি
Brigid - the Celtic Goddess of Poetry, Healing & Childbirth

সৌরভ এর ছবি

সাধু সাধু।


আমি ও আমার স্বপ্নেরা লুকোচুরি খেলি


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।