অতঃপর নিষিদ্ধ (দুই)

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শনি, ১৯/০১/২০০৮ - ১০:৪৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

প্রথম পর্ব

স্বর্ণালী কে নিয়ে আমার জীবন চলছে ভালই। আমার ভালোবাসা আমি তাকে পূর্ণ করতে চাই কিন্তু মনের সে ঘুণপোকা আমাকে প্রতি নিয়ত কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। একই প্রশ্ন ঘোরপাক খাচ্ছে মনে,'' আমিতো তৃপ্ত ওকে নিয়ে, ও কি তৃপ্ত?''

এখন কিছুটা অন্যরকম মনে হয় স্বর্ণালীকে। কেমন যেন দূরের কেউ। মাঝবয়সী জোছ্নায় আজ যেনো কোথায় মিলিয়ে যাচ্ছে আমার প্রতি তার ভালোবাসা। আমি টের পাচ্ছি কিন্তু প্রতিনিয়ত ভান করছি সব ভূলে থাকার, স্বীকার করছি তাতে এতটুকুও দমেনি আমার ভালোবাসা। ওর সামান্য অবহেলা আমাকে যেনো আরো ঠেলে দিচ্ছে তার প্রতি। কিন্তু মাঝ রাতে ওর মোবাইল যখন কেঁপে উঠে ওজানা সংকেতে, আমার ঠিকই ঘুম ভেঙ্গে যায়, অনুভব করি আলাপী যন্ত্র ওকে টানছে, স্বর্ণালী দূরে যাচ্ছে।

সন্দেহের বীজ ইতোমধ্যে বপন হয়ে গেছে আমার মধ্যে, কাজ শেষে রাতে বাড়ী ফিরে নিকোটিনের গন্ধ লাগে নাকে,অজানা ভয়ে কিছু বলিনা, কিন্তু মনের মধ্যে বপিত বীজ শাখা গজায়।
যে স্বর্ণালী আমার আমিতে ঘটিয়েছিলো আমুল পরিবর্তন আ যেনো সেই তাকেই বেশ অন্যরকম লাগছে প্রতি মুহুর্তে। আমি তবু আশায়, ভালোবাসায় কাছে টানতে চাই তাকে, কিন্তু সে যেনো অধরা।

ভালোবাসার উষ্ণতায় আমি পরাস্ত, স্বর্ণালী বিজিত ভঙ্গীতে পাশ ফিরে রয়। কি করছি আমি? আমার ভালোবাসা হারিয়ে যাচ্ছে কেন এভাবে? কি করার আছে আমার।

ছোটখাটো বিষয়েই এখন ওর মেজাজ তিরিক্ষি হয়ে উঠে, আমার অনেক অবুঝ আবদার আগে ওকে বিরক্ত করতো আর এখন রাগিয়ে দেয়, চিৎকার করে অভিসম্পাত করে সে, আমার এক অদ্বিতীয় ভালোবাসার ধন স্বর্ণালী।

টেলিফোনে ফিসফিস বেড়ে গেছে অনেকখানি, অপরিচিত কন্ঠ ওকে এখন বেশী আমুদ দেয়, ক্লান্ত আমি কান পেতে রই। ওর অপরিচিত হাসি চাপা দিতে বাড়িয়ে দেই টেলিভিশনের ভলিউম। তবু যেনো চাপা পড়েনা সে ধ্বণি, যা একদা ছিল শুধু আমার।

না জীবনটা আর ঠিক থাকলো না। না ঘাত প্রতিঘাতে স্বর্ণালী আমার কাছে মুক্তি চাইলো একসময়। আমি খুজেঁ পেলাম না আমার ঠিকানা। ভালোবাসার বন্ধন থেকে প্রচন্ড ভালোবাসি বলেই একসময় তাকে সত্যি মুক্ত করে দিলাম। আমি এখন একা।

আজ ১৫ বছর হয় মুক্ত স্বর্ণালী আমার থেকে দূরে, আর আমি আজও শুনছি,''হয়তো তোমার দেশে আজ এসেছে মাধবী রাতি, তুমি জোছনায় জাগিছো নিশি, সাথে লয়ে নতুন সাথী..''

নিজেকে নিয়ে নিজেই অবাক হই এখন। কত পরিবর্তন এই এক জীবনে। ভাবি, সবার জীবনেই কি এমন ঘটে? স্বর্ণালীর খোঁজ জানিনা, কেমন আছে আমার ভালোবাসার ধন। নিশ্চই ভালো। ভালো যে তাক থাকতেই হবে। ভালো থাকার জন্যইতো ও আমার ভালোবাসা থেকে মুক্তি চেয়েছিলো। আমি আজও একা আছি শুধুই আমাকে নিয়ে।

ও হ্যাঁ, আরো একজন আছে যে এখনো আমাকে প্রতি মুহুর্তে মনে করিয়ে দিচ্ছে স্বর্ণালীর কথা। যার উপস্থিতি এখনো আমাকে স্বাভাবিক রেখেছে, যার মধ্যে এখনো আমি স্বপ্ন দেখি, যার জন্য এখন নিজেকে একা ভাবতে গিয়েও ভাবতে পারিনা। ''রাহুল''...আমার আর এক ভালোবাসার ধন। স্বর্ণালীর রেখে (নাকি ফেলে বলবো) যাওয়া শেষ চিন্হ।

(চলবে)

...................প্রীয়ক


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।