মিসকীন সম্প্রদায়......

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বুধ, ১৫/১০/২০০৮ - ২:৩৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমার দাদা ছিলেন পলিগ্যামিস্ট। তবে একই সময় তার দুই বউ বর্তমান ছিলেন না। প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর তার ছোট বোনকে বিয়ে করেছিলেন। শিক্ষিত মানুষ ছিলেন না, তাই সন্তানদের শিক্ষার জন্য চিন্তাই করেন নি।

তাই বড় হয়ে তার সন্তানেরা বিশেষত ছেলেরা চট্টগ্রামের অন্যতম সাধারন উপায়টি বেছে নিল। তারা মরুর তপ্ত বুককে বেছে নিল। আমার ছোট চাচা যিনি দাদুর দ্বিতীয় পক্ষের, তিনি নিজেতো গেলেন, কয়েক বছর পর নিয়ে গেলেন তার ছোট আরো দুই ভাইকে। তাদের সুবাদে প্রায়ই জানা হয় মধ্যপ্রাচ্যের দেশের সংস্কৃতি, মানুষের প্রকৃতি। প্রথম প্রথম এটা যেনে থমকে যেতাম যে, তারা বাংলাদেশিদের মানুষ মনে করে না, মনে করে তার থেকেও নিচের কিছু। এই ব্যাপারটা তারা "মিসকীন" শব্দ দিয়ে বুঝায়।

সাপ্তাহিক যায়যায়দিনের সুবাদে জানতে পারি, ইরাকী কালচারে কথা। সেখানে নারীদের বিয়ের সময় যেভাবে অপমান করা হয় তার কোন তুলনা নেই। ব্যাপারটা এরকম, মেয়েদের যৌনাঙ্গে এক বিশেষ ধরনের পর্দা রয়েছে যা ফেটে গেলে রক্তপাত হয়। ইরাকীরা এটা ধরেই নেয় যে এই কেবল বিয়ের পর স্বামীর মাধ্যমে এই ঘটনাটি ঘটবে এবং এটি কনের বিশুদ্ধতার লক্ষন। বিয়ের পরদিন সকালে তাই বরের বাড়ির ছাদে একটা লাল কাপড় ঝুলতে দেখা যায়। ইরাকী সমাজে এর গুরুত্ব এত বেশি যে অনেক মেয়েকেই শুধুমাত্র একরাতের সংসার জীবনের অভিজ্ঞতা পেতে হয়। কতটা বেদনাদায়ক আর অপমানজনক এই সংস্কৃতি........ অথচ চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে, নানা কারনে এই পর্দা ফেটে যেতে পারে....

২০০৩ সনের আমেরিকান আগ্রাসনের পর বাগদাদে মার্কিন সৈন্যরা ঢুকে পড়লে একরকম খুশীই হয় ইরাকীরা। সৈন্যরা অনেকটা সাদর সম্ভাষন পায় তাদের কাছ থেকে। আর যখন বাংলাদেশি একজন এনজিও কর্মী যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশটিতে কাজকরার জন্য বাগদাদ পৌছে, তখন ইরাকীদের অর্ভথ্না ছিল "মিসকীন!!" বাংলাদেশী কাল চামড়ার তুলনায় তারা মার্কিন সাদা চামড়াই বেশি পছন্দ করে, হোক তারা তাদের বারোটা বাজিয়ে ছাড়চে....

বর্হিবিশ্বে বাংলাদেশের এই ইমেজের জন্য আমরাই দায়ী। কারন ভিক্ষাবৃত্তির যে স্বভাব ও ঐতিহ্য আমাদের রয়েছে তা সহজেই মুছবার নয়। প্রবাসী বাংলাদেশিরা এক্ষেত্রে ইন্টাফেসের ভুমিকা রাখতে পারেন, বুদ্ধিমান আচরনের মাধ্যেম। আর আমাদের এই ভিক্ষাবৃত্তির আচরন ছাড়তে হবে, দানগ্রহীতা থেকে পার্টনারের ভুমিকায় আসেত হবে।


মন্তব্য

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

অতিথির নাম জানতে ইচ্ছে হচ্ছে।
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

অতিথি লেখক এর ছবি

অধমের নাম ছোটন।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

অতিথি আমাদের মূল ভাবের পাশাপাশি খানিকটা সেক্স জ্ঞানও দান করেছেন। পলিগ্যামিষ্ট, পর্দা ইত্যাদি বিষয়ে বিষদ আলোকপাত করেছেন। আপনাকে সুপার জাঝা।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

মিসকীন বিষয়ক বেশ কয়েকটা পোস্ট কয়েকদিনে পড়া হলো। যে দেশে আমরা যেটা বেশি করে পাঠাই তারা তো আমাদের সম্পর্কে এর থেকে বেশী কিছু ভাবতে পারবেনা।

মিসকীন শব্দের আভিধানিক মানে হলো গরীব লোক। সে অর্থে কিন্তু তারা হয়তো ঠিকই আছে তবে আমার মনে হয় তারা শব্দটাকে তুচ্ছার্থে ব্যবহার করে যা কারোই ভালো লাগেন। ওদের কথায় কী বা এসে যায়?

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- গালিভারের তুলনায় সাড়ে ছয়ফুটি মানুষ লিলিপুট হলেও একটা পিঁপড়ার তুলায় কিন্তু একজন তিনফুটি মানুষও আকাশচুম্বী!
- অতএব, আমরা মিসকিন না। একটাই সমস্যা আমাদের, সেটা হলো খাইছ্লত। আর মাথামোটা আরবরা আমাদের কী বললো সেটা নিয়ে চিন্তার বেইল নাই। তাদের পেটটা আর চেটটা ছাড়া আর কোনো কিছু আছে বলে আমার বিশ্বাস হয় না। যার একটার প্রমাণ আপনার লেখার মধ্যেই দিয়েছেন ইতোমধ্যে।

খাইছ্লতটা বদলাইতে পারলেই আমাদের সব হবে, সবকিছু। এইটা একটা গ্যারান্টী!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

ফারুক হাসান এর ছবি

দিনের সেরা কমেন্ট। জাঝা

অতিথি লেখক এর ছবি

কথা সত্য।

কীর্তিনাশা এর ছবি

ধুগো ভাই'র সাথে ঐক্যমত্য প্রকাশ করিলাম।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

ঠিক ।
আচরন বদলানোটা খুব জরুরী ।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

যুধিষ্ঠির এর ছবি

Polygamist: (noun) someone who is married to two or more people at the same time

Polygamy : marriage in which a spouse of either sex may have more than one mate at the same time

যদিও আপনার লেখার মূল বক্তব্যের জন্য ব্যপারটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, তবুও না বলে পারছি না, বিশেষত: যখন আপনি লেখাটা শুরুই করেছেন এই কথাটা বলে। শুধু প্রথম স্ত্রী মারা যাবার পর দ্বিতীয় বিয়ে করার কারণে আপনার দাদাকে বোধহয় পলিগ্যামিস্ট বলা ঠিক না।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।