World Children’s Association

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বিষ্যুদ, ২৫/১২/২০০৮ - ১০:৩৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এটা একটা চুনোপুঁটি মাছের গল্প ...

...একদা এক চুনোপুঁটির কিছু বোয়ালদের সাথে যোগাযোগের সৌভাগ্য হয়েছিল। সেখানে ঘটনাক্রমে চুনোপুঁটিটি তার মনের কথাগুলো বলতে গিয়ে ‘প্রচন্ড হতাশ’ বলে আখ্যায়িত হয়েছিল, তবে বেশ জ্ঞানগর্ভ কিছু উপদেশও ছিল সেখানে। সেটা তার কাজেও লেগেছিল। সেজন্য সে ঐ গুনী বোয়ালের কাছে খুবই কৃতজ্ঞও বটে।

চুনোর দুঃখ ছিল যে, তার মত চুনোরা বেশ কষ্টে থাকে ঐ পুকুরে। তারা এমনিতেই ছোট, তারপরে আবার নানা ধরনের সামাজিক যন্ত্রনা, আর ভাল্লাগে না। বড়রা শুধু ছোটদের যন্ত্রনা দেয়। এমনিতেই পুকুরটি তার ভাল্লাগে না, তারপরে আবার পিতামাতারা সন্তানদের নিজেদের পুজারী করে রেখেছে। কত রকমের দায়িত্ব-কর্তব্য, ভক্তিশ্রদ্ধার নির্দেশ চুনো সন্তানদের প্রতি- তার কোন ইয়াত্তা নাই। তারপরেও আছে নানা রকমের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নির্যাতন এবং ‘সলিম বুঝ’।

যে পুকুরে তার জন্ম সে পুকুর তার ভাল্লাগে না। কিন্তু পুকুর পরিবর্তনের কোন সুযোগ নাই। এই পুকুর ছাড়তে হলে একেবারে মারাই যেতে হবে, জল ছেড়েই চলে যেতে হবে। তাই সে মনে মনে পণ করল যে এই পুকুরের চুনো সন্তানদের জন্য, তাদের অধিকারের জন্য, তাদের উপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর জন্য, ভবিষ্যত চুনো সন্তানদের উপর নির্যাতন ঠেকানোর জন্য সে একটা এ্যাসোসিয়েশন গড়বে। যে এ্যাসোসিয়েশন চুনো সন্তানদের স্বার্থে লড়ে যাবে।

অনেক কষ্ট করেও, জীবনের শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত লড়েও কাজটি সে করে যেতে পারল না, পুকুর ছেড়ে চলে গেল। কিন্তু সে একটা কাজ করে যেতে পেরেছিল। পুকুরের বেশ কিছু চুনো সন্তানদের মনে এই বিদ্রোহের বীজ বুনে দিতে পেরেছিল।

সেই বীজ একদিন চারা হয়ে দেখা দিল, পুকুরের এক কোনে একটি এ্যাসোসিয়েশন হল, নাম তার ‘বিশ্ব চুনোদের এ্যাসোসিয়েশন’।

এই এ্যাসোসিয়েশন ক্ষুদ্র পর্যায়ে চুনোদের স্বার্থে কাজ করে যেতে লাগল। ক্রমে এর কার্যপরিধি, পরিচিতি ও গ্রহনযোগ্যতা বাড়তে লাগল। এক পর্যায়ে তারা একটি আন্তর্জতিক মাছ-বাধিকার সংস্থার সাহায্য পেতে সমর্থ হল। তারা চুনো সন্তানদের উপর পিতামাতাদের অন্যায়, নির্যাতনের বিরুদ্ধে কাজ করে বেশ সফলতা অর্জন করল।

তারপর একদিন সত্যি সত্যিই ঐ এ্যাসোসিয়েশন বিশ্ব-রূপ লাভ করল। পুরো পুকুর জুড়ে তার কার্যক্রম বিস্তৃতি লাভ করল, প্রচুর সদস্য হলো এবং একটি পূর্ণাঙ্গ মাছ-বাধিকার সংস্থার মর্যার্দা পেল।

তারপর থেকে ঐ পুকুরে আর কোন চুনো সন্তানের উপর পিতামাতারা অন্যায় করতে পারে না, নির্যাতন করতে পারে না। ঐ এ্যাসোসিয়েশনের সক্রিয় আন্দোলনের মাধ্যমে সারা পুকুরের চুনো সন্তানদের জন্য অভিন্ন ‘বিশ্ব পিতামাতা ও সন্তান আইন’ নামে একটি আইনের জন্ম হল যেখানে পিতামাতার তুলনায় সন্তানকে ছোট করা হয় নি, সন্তানেরা পিতামাতার পূজারী থাকল না, সন্তানেরাও পিতামাতার সমান মর্যদায় আসীন হল। কারণ, চুনো সন্তানরা নিজে ‘জন্ম গ্রহন’ না, তাদেরকে ‘জন্মানো’ হয় পিতামাতার কোন এক বা একাধিক সাধ, শখ, স্বার্থ পূরনের জন্য। আর চুনো সন্তানরা নিঃস্বার্থভাবে তাদের পিতামাতার সাধ পূরণ করে চলে, কিন্তু কোন স্বীকৃতি পায় না।

আজ সেই চুনোটি নাই, তবে তার স্বপ্নের ‘এ্যাসোসিয়েশন’টি আছে... কাজ করে যাচ্ছে চুনো সন্তানদের পক্ষে। আর এটি চলতেই থাকল...

... নামহীন


মন্তব্য

লাল কমল [অতিথি] এর ছবি

হু ! ভাববার বিষয়!!!!!!!!!

নামহীন  [অতিথি] এর ছবি

ভেবে কিছু পেলে আমাকে জানেবেন, প্লিজ।

নামহীন

মাহবুব লীলেন এর ছবি

চমৎকার

নামহীন  [অতিথি] এর ছবি

থ্যাংকু!
আফসোস, ১ম পাতায় নাই।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।