বাংলাদেশের গদ্য

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শুক্র, ০৯/০১/২০০৯ - ২:২১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

শিরোনামটাই বিভ্রান্তিকর। বাংলাদেশের গদ্য বলে আলাদা করে কিছু হয় কিনা। বাংলাদেশের মানুষের ভাষা বাংলা। সুতরাং, বাংলাদেশের মানুষ কর্তৃক লখিত গদ্য বাংলা গদ্যই হবে, বাংলাদেশের গদ্য না। আর বাংলা গদ্যতো লখিত হতে পারে পৃথিবীর যেকোন প্রান্তে বসবাসকারি বাংলা ভাষা-ভাষী মানুষের দ্বারা। তাহলে বাংলাদেশের গদ্য বলে আলাদা করে কি আসলেই কিছু হয়। পন্ডিতেরা কি বববেন জানিনা, তবে আমারতো মনে হয় , বাংলাদেশ নামক ভূখন্ডে বাসকারি মানুষ কর্তৃক লিখিত গদ্যের চেহারা একটু আলাদা রকম হতে বাধ্য; যে কারণে আমি এটাকে বলছি বাংলাদেশের গদ্য। কারণ আমার মনে হয় একটি ভূখন্ডের মানুষের ভাষার সঙ্গে সেই ভূখন্ডের মানুষের জীবনচর্যা, সেখানকার আবহাওয়া- জলবায়ুরও একটি সম্পর্ক থাকে। অবশ্য একথাটা মুখের ভাষার ক্ষেত্রে বেশি প্রযোজ্য। কিন্তু লিখিত ভাষার বেলায় কি হবে। প্রমথ চৌধুরি থেকেতো আমরা জানি যে, লেখাটাকে বেশি হৃদয়গ্রাহ্য করতে হলেলেখার ভাষাটাকে মখুএর ভাষার কাছাকাছি থাকতে হবে। এখনেই মুখের ভাষার কাছাকাছি থাকতে গেলেই ভূখন্ড থেকে ভূখন্ডে লিখিত গদ্যের চেহারা পাল্টে যেতে পারে। যেমন এখনকার পশ্চিমবঙ্গের গদ্য এবং বাংলাদেশের গদ্য। দুই ভূখন্ডের মানুষ যদিও একই ভাষায় লেখে কিন্তু পড়লেই বোঝা যাবে কোনটা বাংলাদেশের মানুষ লিখেছে আর কোনটা পশ্চিমবঙ্গের মানুষ লিখেছে।
এখানে হয়ত সবচেয়ে বর রহস্য তৈরি করতে পারে রবীন্দ্রনাথসহ ৪৭ পূর্ববর্তি বাংলা ভাষার সব দিকপাল গদ্যলেখকেরা। প্রশ্নটা অবধারিত-তারাঁ যে গদ্য লিখেছেন সেটা বাংলা গদ্য না পশ্চিমবঙ্গের গদ্য। আমি বলব বাংলা গদ্য। কেন? তখন বাংলাদেশ নামক ভূখন্ডের অস্তিত্ব ছিল না; সেটাতো একটা কারণই। তাছাড়া তখনতো এই বঙ্গের মানুষ শিক্ষা-দীক্ষায় অনে পিছিয়ে ছিল। নিজেদের কথা নিজেদের মত করে বল্বার ক্ষমতা কতজন প্ররজন করেছিল। তখন একটা ট্রেন্ড ছিল লেখার ভাষাটাকে হতে হবে কঠিন; সাধারণ মানুষের ধরা-ছোয়াঁর বাইরে। ব্রাত্যজনের জন্য লেখাপড়া জিনিষটা না। বঙ্কিমচন্দ্র মনে হয় প্রথম বলেন যে, রচনাকে শিল্পগুণ সম্পন্ন হতে হলে তাকে প্রাঞ্জল হতে হবে। তিনি এটা বলেছিলেন বাংলা গদ্যকে অযথা সংস্কৃতের প্রভাব মুক্ত করতে। এরপর লিখিত গদ্যকে মুখের ভাষার কাছাকাছি নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথ-প্রমথ চৌধুরীর অবদানতো আছেই। সুতরাং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গদ্য যখন প্রাঞ্জল হচ্ছিল , মুখের ভাষার কাছাছি হচ্ছিল তখন থেকেইতো পাল্টে যাচ্ছিল ভূখন্ড থেকে ভূখন্ডে গদ্যের চেহারা। তার আগে থেকে হয়ত নয়। তাই সেই সময়কার গদ্যকে আমি বাংলা গদ্য বলব, কোন বিশেষ অঞ্চলের গদ্য না; এখন যেমন বলছি।
বাংলাদেশের গদু যে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র কিছু সেটাতো এখন বিভিন্ন কমিউনিটি ব্লগে, ইদানিংকার জনপ্রিয় টি্ভি সিরিরিয়ালগুলোতে বা তরুণতর লেখকদের লেখায় চোখ বোলালেই বোঝা যাবে।
বি.দ্র. উপরে ছোট মুখে অনেক বড় কথা বলেছি। গোস্তাকি মাফ কইরেন।
(মহসীন রেজা)


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।