একাকী আমি-শেষাংশ

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শনি, ২১/০৩/২০০৯ - ১০:৩৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আগের সামান্য অংশ
[আকাশটা একটু আগেও রৌদ্রোজ্জ্বল ছিলো। ঝুপ করে আলোটা সাতসকালেই মিইয়ে গেলো,নীল আকাশটা এখন দেখাচ্ছে ঠিক
সাদাটে মোমের মতো............
যন্ত্রণাটা বাড়ছে আবার টের পাচ্ছি। তির তির করে ছড়িয়ে পড়ছে পায়ের গোড়ালী অব্দি। আজকাল হাঁটতে বড় কষ্ট হয়। আমি কি ফুরিয়ে যাচ্ছি দিন দিন! ভাবলেই কষ্টরা কুন্ডলী পাকিয়ে মেঘের আকার নেয়। ভাবলেই ঝাপসা হয়ে ওঠে চারপাশ। সচলায়তন, তারিখ: শুক্র, ২০০৯-০৩-২০]

শেষাংশ
দিনের এ সময়টা বড় একা লাগে। পা ঘষটে ঘষটে কম্পিউটারের সামনে যাই। চেয়ারে বসে দম নিই,কম্পিউটার অন করি,ঢুকে পড়ি অরকুটে।সারি সারি স্ক্র্যাপ দেখে আমার আনন্দ হয়। আমার প্রোফাইল ছবিটি এতই হাসিমুখে সবার দিকে তাকিয়ে যে বন্ধুরা আমাকে অগ্রাহ্য করতে পারেন না। খুজেঁ খুজেঁ দেখি কে কতটা যত্ন করে আমার কুশল জিজ্ঞেস করেন। চোখ আটকে যায় কবিতা থেকে কোট করা একটি স্ক্র্যাপে । কবিতার প্রতিটি লাইনে আমি মোহাবিষ্ট হই। ভুলে যাই আমি প্রায় চলৎশক্তিহীন। জয় গোস্বামীর কবিতার চারটে লাইন আমার সাময়িক রোগমুক্তি ঘটায়,ভুলে যাই যত কষ্ট। সুখী সুখী মনে সবার সাথে আমিও কুশল বিনিময় করি।

তারপর জি মেলে ঢুকে পড়ি। তিতলির মেল এল কি!এত ব্যস্ত থাকে মেয়েটা যে একটা মেল পাঠাতেই অনেক দেরী করে ফেলে আর আমি ওর এই মেলের জন্য অপেক্ষা করে চলি দিন রাত। কই ! কই নাতো ! আজো তো নেই মেল। ফোন তো কখনই করার সময় সে পায় না।জি মেল থেকে বেরিয়ে পরি। অর্কুট খোলা পাতার মতন পড়ে থাকে। আবার উঠে আস্তে আস্তে বারান্দায় এসে বসি।তিতলির কি আমার কথা একটিবারও মনে পড়ে না? তিতলি রে বল তো মা, ব্যস্ততা না আমার সম্পর্কে তোর উদাসিনতা কোনটি তোকে ভুলিয়ে দিলো আমার কথা?

মৈনাক তোমার কথা প্রায় মনে পড়ে এখন জানো। যখন আমাকে হাত বাড়ালেই পেতে তখন যদি হারিয়ে ফেলো সে ভয়ে তুমি কখনো কাছেই এলে না, আবার যখন এলে আমার কাছে তখন তিতলির জন্য আমি কোনদিকে ফিরে তাকাবার সময় পেলাম না। তিতলির জন্য কবিতা পড়তে ভুলে গেলাম,তিতলির বড় হবার স্বপ্ন দেখতে গিয়ে নিজের স্বপ্ন দেখা ভুলে গেলাম।তিতলি আজ সব পেয়েছে মৈনাক। শুধু আমি একা পড়ে আছি নির্জীব জীবনে, আমার এই একাকীত্বে পৃথিবীর কোথাও কারো কিছু আজ আর আসে যায় না! শুধু আমি নিজেই নিজের কাছে হারাই,ফুরিয়ে যাই দিন দিন।

আকাশে এখন সাদা দুটুকরো তুলো তুলো মেঘ। টবে রাখা তিনটি গাছ গলাগলি বেঁধে রোদের সাথে গল্প করছে। ওদের সাথে সাথে আমিও বসে রোদ দেখি, মেঘ দেখি, রাস্তা থেকে মমতাজের গান ভেসে আসে আর আমি সূতোয় কাটা ঘুড়ির মতো শুধু এদিক ওদিক করি মেঘের সাথে উড়তে পারি না ।

মেঘের কথকতা


মন্তব্য

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

বাহ্, দারুণ। আর চা-বিরতির পর যে লেখার বাকিটুকু নিয়ে ফিরেছেন, তার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

নিয়মিত লিখুন।

নিবিড় এর ছবি

ভাল হয়ে উঠুন তাড়াতাড়ি চলুক


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

কথা ঠিক, চা-বিরতি আর নিয়েন না যেনো !!!

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ সবাইকে। নিবিড় আমি সুস্থ আছি।
মেঘের কথকতা

শ্যাজা এর ছবি

আগেরটুকু পড়া হয়নি, একসাথে পড়লাম। একসাথে পড়লে আরও ভাল লাগতো..

...অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা...

মেঘের কথকতা [অতিথি] এর ছবি

আমার লেখা পড়ার জন্য সামরানকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
মেঘের কথকতা

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।