তুমি তো মা কল্পতরু...

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: সোম, ২০/০৪/২০০৯ - ২:৫৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সারারাত জার্নি করে হিথ্রো বিমান বন্দরে যখন নামলাম স্থানীয় সময় ভোর পাঁচটা।
আমার এমনই কপাল সব সফরেই ঘটনা- দুর্ঘটনা দু'একটা লেগেই থাকে। এই ট্রিপেও তার কোন ব্যতিক্রম হলনা। অর্ডার দিয়েছিলাম মুসলিম মিল ,কিন্তু অজ্ঞাত কোন এক আমলাতান্ত্রিক জটিলয়তায় অতি উন্নত ব্রিটিশ এয়ার ওয়েজের সিস্টেম থেকে সেই অনুরোধ নাই হয়ে গেল, কেবিন ক্রু ভেটকি মেরে জানালো এই অনুরোধ সম্পক্কে তাদের বিন্দু মাত্র জানা নাই, সম্ভবত আমার বেআক্কেল ট্রাভেল এজেন্ট কোন পেচগি লাগাইয়াছে। মানতে পারলাম না , কারন আমার ই-টিকেটেও MOML ছাপ্পা দেয়া আছে। গরীব দেশের বাদাইম্যা মানুষ, খানা পিনা নিয়া বেশী চেতাচেতি করলে আবার আশ পাশের ভদ্র সহযাত্রীরা মাইন্ড খাইতে পারে তাই ইন্সট্যান্ট নুডলস আর ব্রেড রোল সহযোগে উদরের কিয়দংশ পুর্ন করিয়া খাটো কম্বলে নিজেকে ঢাকিয়া নিদ্রা যাইবার অভিপ্রায় করিলাম। ঘন্টা আধেক পরেই কানের কাছে সুন্দরী হোস্টেসের সুমধুর আওয়াজে মর্তে ফিরিতে বাধ্য হইলাম..." উড ইউ লাইক সাম ওয়াইন স্যার? অর এনি আদার ড্রিঙ্ক?।" কাচা ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ায় এমনিতেই বিরক্ত আর গেলোবার মায়ের কাছে ওয়াদা করে এসেছি কোনদিন রঙ্গীন পানি ছুইয়াও দেখবনা, বিদেশ বিভুঁয়ে যা মেনে চলা অনেক সময়ই কঠিন, আমার মত দুর্বল ইমানের লোকদের জন্য তো আরো কঠিন। মনে মনে ভাবলাম শালার হালাল খানা দিবানা আবার মদ খাওয়াইয়া মাতাল করার ধান্ধা...এই রকম জাত মারার চক্রান্তের প্রাতিবাদেই সিপাহী বিপ্লবের সুচনা...নিজের মধ্যে সিপাহী জোশ জেগে উঠল। উদরের অধিকাংশ এখনো অশান্ত আর এর মধ্যেই এমন অপচেষ্টা। চেতিয়া উঠিয়া শীতল গলায় তীব্র প্রতিবাদ জানাইলাম..." দেখ নাই মুসলিম খানা চাহিয়াও পাই নাই...এখন আবার মদ্য সাধিতেছ কেন? " । জবাবে ভদ্রমহিলা তার কন্টস্বর মাইনাস পঞ্চাশে নিয়া যা বলল তার খাস বাংলা করলে এই দাড়ায়...
" আরে মিয়া আমারে হাইকোর্ট দেখাইয়েন না...কত দেখছি মুসমিল মিল খাইয়া ঢেকুড় দিয়া উঠিয়াই মিত্যু সঞ্জিবনীর জন্য চিল্লা চিল্লি শুরু করে ...গত ট্রিপেই তো এক আরবী প্যাসেঞ্জার মাল খাইয়া এমন টাল হইয়া গেল যে তারে হুইল চেয়ারে করিয়া হাওয়াই জাহাজ হইতে জমিনে নাজেল করিতে হইল।"
আমি চোখে মুখে কঠিন থাবড়া খাইয়া ডেগচির মত চেহারা করিয়া সরি বলিয়া মুখ উলটা দিকে ঘুরাইয়া পুনরায় নিদ্রা যাইবার চেষ্টায় রত হইলাম।
কিন্ত ক্ষুধা পেটে ঘুম কি আর আসে। যাই হোক এপাশ ওপাশ করতে করতে আর লন্ডনে দেশী খাবারের মাস্তির কথা ভাবতে ভাবতে নৌকা ঘাটে ভিড়ল। এইবার আরেক যন্ত্রনা...ইমিগ্রেশন। পাস্পোর্টে পাঁচ বছরের মাল্টিপল এন্ট্রি বিজনেস ভিসা থাকলেও প্রতিবারই তারা দুই একটা খোঁচা মারা ( কখনো অপমান জনক- যেমন তোমার কাছে ক্যাশ কত আছে বা আমাগো সোনার দেশ থিকা কবে ভাগবা?) প্রশ্ন করিয়া মেজাজ খিঁচড়াইয়া দেয় আর আমিও বেল্লিকের মত ফান্দে পা দিয়া ত্যাড়া জবাব সহযোগে নিজের কপালে নিত্য নতুন দুর্ভোগের অবতারনা করি। একবার তো বুয়েনেস আইরেস এয়ার পোর্টে অপমানিত আমার তেড়া জবাবে খেপিয়া গিয়া আমারে প্রায় ঘন্টা তিনেক নাইজেরিয়ান ড্রাগ ডীলারদের সাথে এয়ার পোর্টের মধ্যেই বন্দি করে রাখল , সাংবাদিক টাংবাদিক এসে এক্কেবারে কেলেংকারী ( সে প্রসঙ্গে অন্য একদিন যাব)।
এবার খাস নিয়ত করে এসেছি যে যাই হোক কোন ঝগড়ায় যাবোনা, এমনকি ইমগ্রেশন অফিসার কাপড় খুলিয়া পশ্চাতদেশে হেরোইন লুকাইয়া আনিয়াছি কিনা পরীক্ষা করিয়া দেখিতে চাইলেও হাস্য মুখে তাহা মানিয়া লইব। অনেকদিন আগে লেখা এক বাঙ্গালী কবির রঙ্গাত্বক বিলাত তোষামদের একটা কবিতাও ইংরাজীতে ট্রান্সলেট করিয়া এ ফোর কাগজে ছাপাইয়া রীতিমত লেমিনেট করিয়া সঙ্গে আনিয়াছি, প্রয়োজনে গলায় ঝুলাইয়া লাইনে দাড়াবো-
"তুমি তো মা কল্পতরু
আমরা সবাই পোষা গরু
ভুষি পেলেই খুশী হব
ঘুষি খেলে মরেই যাব ।"

মনে হয় আমার হিয়ার মাঝে বিলাত প্রেমের সুগন্ধ অনুভব করেই কেউ কোন ঝামেলা করলনা। তিন মিনিটে ইমিগ্রেশন শেষ করে শীস দিয়ে ' গড শেভ দ্য কুইন' গাইতে গাইতে লাগেজের খোজে গেলাম। মোবাইল অন করতেই জানলাম যে কোম্পানীর দাওয়াতে আসছি তার এম ডি নিজেই পাঁচ নম্বর টার্মিনালের গেটে আমারে নিতে আসবে। কিছুটা নিরাপদ বোধ করলাম। একেই খুব ভোর আর বাইরে হাড় কাঁপানো ঠান্ডা। আগেরবার ভদ্রতা করে বলছিলাম... আরে না না এত ভোরে কষ্ট করে কেন আসবেন ...আমি একটা ট্যাক্সি নিয়ে হোটেলে চলে যাব, পরে এসে ওখান থেকে অফিসে নিয়ে যাবেন। ট্যাক্সি নিতে গিয়ে পড়লাম এক বুইড়া ইংরেজ বাটপারের খপ্পরে। আমারে ছাপানো একটা ভাড়ার লিস্ট দেখাইল, হিথ্রো থেকে হার্টফোর্ডশায়ার যেতে লাগবে বিরাশী পাউন্ড। আমিও মুরুব্বি ড্রাইভার এক পাও কবরে ...সে কি আর মিছে বলবে এই জাতীয় সরল বিশ্বাসে রাজী হয়ে গেলাম। পরে দেখলাম বুড়া রাস্তা ঘাট ই চিনেনা...এক ওকে জিজ্ঞাস করে চল্লিশ মিনিটের রাস্তা দেড় ঘন্টায় গেল। ভাড়া মিটিয়ে দেয়ার পরে জানলাম ন্যায্য কেরায়া হল মাত্র পঁচিশ থেকে ত্রিশ পাউন্ড। নিজের চুল ছিড়তে চাইলাম কিন্তু তাতে কোন লাভ হবেনা ভেবে খান্ত হলাম।
লাগেজ নিয়ে বাইরে আসতেই বিলাতী সাহেব হাত ধরে কড়া ঝাকুনি দিয়ে গাঁক গাঁক করে ওয়েল্কাম জানাল, যা বলল তার কিছু বুঝলাম কিছু হিব্রু মনে হল। অত বোঝার কাম নাই...ঠান্ডা থেকে বাঁচতে হুড়মুড়িয়ে তার গাড়িতে উঠে বসলাম। একেবারে লেটেস্ট মডেলের মার্সিডিজ, খুব পশ। আরামদায়ক সীটে গা ডাবিয়ে দিতে দিতে ভাবলাম...শালা আমাগোরে চাইর আনা বেশী দাম দিতে চাওনা.....কথায় কথায় প্রচ্ছন্ন হুমকি দেও দাম বাড়ালেই অর্ডার চায়নায় নিয়া যাইবা...আর প্রতি বছরই গাড়ীর মডেল পাল্টাও। আমাদের ফ্যাক্টরীর শ্রমিকেরা উদয়াস্ত পরিশ্রম করে সামান্য মজুরীতে আর তুমি বোরা বোরায় পুরা ফ্যামিলি নিয়া এক মাস ছুটি কাটাও...ন তুন নতুন প্রপার্টি কেন...আমরা আর কত কাল তোমাদের দাস হয়ে থাকব?
গাড়ী হাইওয়েতে উঠল। খাতির জমানোর জন্য সাহেব খাজুইরা আলাপ করতে লাগল। আমি হু হা দিয়ে কাজ সারতে লাগলাম। ইঊরোপে আসলেই আমার মন খারাপ হয়ে যায়...কোন ব্যাখ্যা ছাড়াই। কেউ ঠাইসা ধরে কারন জিজ্ঞাস করলে বলি ডিপ্রেসিং আবহাওয়ার কথা। এত কাজ হয়।
হঠাত সাহেব প্রসংগ পাল্টিয়ে বলল..." জানো কিছুদিন আগে বিবিসিতে একটা ডকুমেন্টারী দেখলাম...বাংলাদেশের বন্যা কবলিত মানুষের দুর্দশার উপর। তোমাদের দেশের মানুষ এত গরীব তা আমার ধারনায় ও ছিলনা (চেহারায় জোর করে আনা সহমর্মিতা)। এক পর্যায়ে দেখালাম কিছু ছেলে পেলে ক্ষুধার জ্বালায় কাগজ খাচ্ছে ( শালার বানানো কথা)। তুমি নিশ্চয়ই ঐ দেশের খুবই আপার ক্লাসের লোক।"
আমার একটা জন্মদোষ নিজের দেশের বদনামের কথা শুনলেই মাথায় রক্ত চড়ে যায়। আসার আগে নিজেরে যা শিখাইয়া পড়াইয়া আনছিলাম সব টেমস নদীতে বিসর্জন গেল। নিজে স্বার্থপর প্রবাসী হতে পারি কিন্তু আমার দেশের মানুষ সারা দুনিয়ার সেরা। এরা গরীব হউক বা মাটি খাইয়া থাকুক তাদের প্রতি তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করলেই তোমারে খাইছি ---সে তুমি যেই হও। আবাল সাহেব তো আর আমার মেক শিফট এই দেশ
প্রেমের কথা জানেনা...সে গিয়া পড়ল বাঘের খাচায়। আজ কে শালারে একটা শিক্ষা দিয়া দিমু...চুলায় যাক ব্যবসা বানিজ্য...আমার রাগের পারদ চড়তে লাগল।
তার দিকে তাকিয়ে ঠান্ডা গলায় বললাম..." একটু ভালো করে লক্ষ্য করলে দেখতে পেতে যে ওই গরীব মানুষদের কারো হাতেই রক্ত লেগে নেই।"
যেন খুব মজার একটা কথা বলছি , মেকী হেসে সে বলল " এর মানে কি?"
এবার আমার পালা...উত্তেজিত ভংগীতে বলতে লাগলাম..." তুমি যদি পৃথিবীর সব চেয়ে ধনী দেশগুলোর দিকে তাকাও...যেমন আম্রিকা, কানাডা, জার্মানী, ফ্রান্স, ইতালী, জাপান,ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া...দেখবে এদের সবার হাতেই নিরপরাধ মানুষের রক্ত লেগে আছে।"
থতমত ভংগীতে সে জানতে চাইল " তা কিভাবে?"
জ্বালাময়ী কন্ঠে আমার বক্তৃতা চলতে লাগল..." ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখবে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানী, ইতালী , জাপান এর সবাই জর জবর দস্তি করে অন্য দেশ দখল করে কলোনী বানিয়ে অমানবিক লুটপাট করেছে। আর সেই লুটপাটের টাকায় নিজ দেশের উন্নতি করেছে। কলোনাইজড দেশ গুলোর মানুষ কে মানুষের মর্যাদা দেয় নাই। প্রথম এক জোড়া কালো মানুষ সভ্য লন্ডনে এসেছিল খাচায় বন্দী জানোয়ারের মত, লোকজন পয়সা দিয়ে তাদের দেখতে গেছে। পরে মেডিক্যাল শাস্ত্রের গবেষনার নামে শত শত কালো মানুষকে গিনিপিগের মত ছিড়ে খুড়ে দেখে পরীক্ষা শেষে তাদের কুকুরের মত মেরে গন কবর দিয়েছে। কঙ্গোতে বিদেশী শক্তির দখলের পঁচিশ বছরের মধ্যে দেশটির জনসংখ্যা অর্ধেক নাই হয়ে গিয়েছিল। বেনামে পশ্চিমা দেশগুলোর আফ্রিকা লুন্ঠন আজো চলছে।
আর আম্রিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়ার কাহিনী তো আরো খারাপ, তারা কলোনী না বানিয়ে পুরা দেশটাকেই চর দখলেও মত জোর করে চির দিনের জন্য দখল করে নিয়েছে। আম্রিকা , কানাডায় রেড ইন্ডিয়ান আর অস্ট্রেলিয়া নিউজিল্যান্ডে এবরিজিনালদের পোকা মাকড়ের মত ধ্বংস করা হয়েছে। প্রতি রোববার গীর্জায় প্রার্থনার পর দল বেধে বন্দী আদিবাসীদের পিটিয়ে, ছুরি দিয়ে খুচিয়ে বা গুলি করে মারা হত। এই সব অত্যাচার আর লুট তরাজের জারজ সন্তান হল আজকের ধনী, সভ্য, কালচারড পশ্চিমা বিশ্ব। এই ধন-সম্পদ নিয়ে তোমাদের গর্ব করার কিছু নাই। গ র্ব করতে পারে আমার দেশের গরীব মানুষ যাদের পুর্ব পুরুষেরা কোন দিন অন্যের দেশ দখল করতে যায়নি বা অন্যের সম্পদ কুক্ষীগত করার জন্য ঘৃন্য ষড়যন্ত্র করেনি। তারা গরীব হতে পারে কিন্তু তাদের হাতে কোন র ক্ত লেগে নেই, তারা দু'বেলা দু'মুঠো খেয়ে রাতে শান্তিতে ঘুমাতে যেতে পারে।"
এ পর্যন্ত বলে একটু দম নিলাম , আবারো বয়ান শুরু করব এ অবস্থায় আমাকে থামিয়ে দিয়ে সে বলল..." গুডনেস মি মেট...ইউ টেক থিংস টু সিরিয়াসলি। আমিত ভালো উদ্দেশ্যি তোমার দেশের প্রসং তুললাম...আমি কিছু ডোনেশন দিতে চাই। তার আগে বল দেখি ব্রিটিশেরা কি তোমাদের দেশে ভালো কিছুই করেনি?"
আমি জবাব দিলাম..." ক রেছে। আমাদের চা খাওয়া শিখিয়েছে। চলোতো কোথাও থেমে একটু চা খেয়ে নেই...আমার মাথা ধরেছে ...ক্যাফেইন দরকার।"
বেচারা শুকনা মুখে একটা পেট্রোল পাম্পে গাড়ী থামিয়ে চা কিনতে গেল আর আমি গাড়ী থেকে নেমে একটু হেটে বাইরে গিয়ে একটা বিড়ি ধরালাম। মনে মনে ভাবছি আবেগের জন্যই বাংগালীর কিছু হলনা, দিলাম তো কাস্টোমাররে খ্যাপাইয়া, নিজের পায়ে কেউ শটগান দিয়া এভাবে গুল্লি করে?
ভেতো বাংগালী আর কবে ধুরন্ধর হয়ে মনের কথা পরের জানার বাইরে রাখতে শিখবে?
---------------------------------------
মামুন হক


মন্তব্য

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

' গড শেভ দ্য কুইন' গাইতে গাইতে

ধারণা করছি টাইপো, কিন্তু এই লাইনে এসে দমকা হাসি ঠেকাতে পারলাম না।

বাকি লেখা নিয়ে কী আর বলবো... দুর্দান্ত। লিখতে থাকুন।

অতিথি লেখক এর ছবি

ইশতিয়াক ভাই টাইপো না...আমি ইচ্ছা করেই God shave the queen গাইয়া জানা শুনা ইংরেজ দোস্তদের জ্বালাই। আমার জ্বালায় তারা অনেকেই জাতির পক্ষ হইতে ক্ষমা চাইছে, আমার ইতিহাসের ছবক থেকে বাচার জন্য। সব চেয়ে ক্ষেপে ফুটবল খেলায় ইংল্যান্ড গোল খাইলেই আমি যখন come on England কইয়া গগনবিদারী চিক্কুর দিয়া উঠি।
(মামুন)

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

হাহ হাহ হাহ... স্যালুট, ব্রাদার। এর বেশি কিছু বলার নাই। অসামান্য! এক কালের ঔপনিবেশিক শক্তিগুলোকে উত্তক্ত করার যে কী মজা, তা না জানলে বলে বোঝানো যাবে না। চালিয়ে যান। দেঁতো হাসি

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

আপনি আসলেই অসাধারণ লেখেন। এত সরল আপনার লেখার ভঙ্গি, এত অকপটে লিখতে পারেন যে হিংসা হচ্ছে আমার। আর যে বিষয় নিয়ে তর্ক এবং জ্বালাময়ী বক্তৃতা জুড়েছেন, তাতে তো রীতিমতো বিমুগ্ধ! নাঃ আপনার ভক্তই হয়ে গেলাম দেখছি!
---------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়...

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

অতিথি লেখক এর ছবি

লজ্জা দিলেন ভাই। আমার বউ বলে আমি নাকি OCD ( Obsessive compulsive disorder) তে ভুগী, কোন কিছু মাথায় ঢুকলে কম্ম্য সারা। এখন আমার মাথায় সচলায়তন ঢুকছে , দিনে বারো ঘন্টা লগ ইন করে বসে থাকি।
গত মাসে হাটুতে একটা জটিল অপারেশন ( ACL reconstruction) হয়েছে, একটু ভালো এখন কিন্তু কাজ কাম আর একদন ভালো লাগেনা। অফিসের লোকজনেরে বলছি এতদিন আমি দেখছি এখন তোমরা দেখ। তারাও কোন ভেজাল করেনা। এই সুযোগে আমি লেখালেখির ভেক ধরছি, ডরাইয়েন না , মাথায় যেগুলা গিজ গিজ কর তেছে সেগুলা লেখা হইয়া গেলেই আপনেগো আর জ্বালামু না হাসি

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

হা হা হা! সচলায়তনে শুরুর দিকে সবাইই আপনার ঐ OCD-তে ভোগে... সারাদিন সচলায়তন ছাড়া কিছুই ভাবে না! তারা সচলায়তনে হাঁটে, সচলায়তনে খায়, সচলায়তনে বিছানা পেতে শুয়ে থাকে এবং একসময় পাশবালিশ জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ে!
আমার আগের অফিসে আমি ছাড়া আরো একজন সচল ছিলেন সৈয়দ আকতারুজ্জামান, তাই শুনে মহামতি লীলেন বলেছিলেন, এক অফিসে দুইজন সচল? তাহলে তো এই অফিস ডুবতে বেশিদিন লাগবে না! শিগগির চাকরি চেঞ্জ করেন! হো হো হো
আর প্লিজ ভাই! আপনার হাঁটুজনিত "কাজকাম ভালো না লাগা" সিনড্রোম কাটতে না কাটতেই "গিজগিজ" করতে থাকা জিনিসগুলো নামিয়ে ফেলেন...
অফটপিক : মজার ব্যাপার হচ্ছে, আপনার লেখার এই কমেন্ট লিখতে লিখতেই সেই আকতারুজ্জামান প্রায় দুই মাস পর ফোন দিল আমাকে, সে নাকি গত সপ্তায় ঐ প্রতিষ্ঠানের চাকরি ছেড়ে দিয়েছে! হাসি
---------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়...

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

এমন করে বলতে তো হিম্মত লাগে। এমন হিম্মত দেখাতে মেনিমুখো সব বাঙালি পারে না। আপনি পেরেছেন। আপনাকে স্যালুট।

আকতার আহমেদ এর ছবি

আসলেই অসাধারণ লেখেন আপনি। একদম সাবলীল ভঙ্গিতে গল্প বলে যান...

অফটপিক: আচ্ছা আপনার মেইল ঠিকানায় সচলের কোন মেসেজ যায়নি এখনো (যেখানে আপনার নিবন্ধিত নাম আর পাসওয়ার্ড থাকার কথা)? কষ্ট করে একটু দেখবেন? নিবন্ধিত নামে লগইন করে পোষ্ট করলে এই লেখাগুলো আপনার ব্লগে প্রকাশিত হবে।
এইসব নিয়া আমার এত আগ্রহ ক্যা...?
তাইলে কই, আপনার কী লাভ কমুনা.. তয় পাঠক হিসেবে আমার লাভটা হইলো আপনার সব লেখা এক জায়গায় পাওয়া যাবে পড়ার জন্য, খোঁজাখুজি করা লাগবেনা হাসি
একটু দেখেন না বস...

বাউলিআনা [অতিথি] এর ছবি

১. সচলে স্বাগতম
২. এক কথায় মুগ্ধ

মামুন হক এর ছবি

বাচাইলেন আকতার ভাই, আমি এমন বেকুব ভাবছিলাম ঐ পাসোয়ার্ড বুঝি সচল হবার পরে ব্যবহার করতে হবে। এখন থিকা আমার আব ঝাব লেখা এক যায়গাতেই পাবেন।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- গড আইসা রানীমা'র দাড়ি কামানোর ঘটনায় ব্যাপক মজা পাইছি। ঈমানে কই। দেঁতো হাসি

ল্যাখতে থাকেন, আগেও একবার কইছি- আবারো কই। আর হ্যাঁ, হালাল-হারাম ক্যাচালে না গিয়া, ডাইরেক্ট কইয়া দিবেন, আমারে সীফুড দে অর মায়রে বাপ! খাইয়া অবশ্য পেট-পুট ফুইলা থাকবো কয়েক ঘন্টা, তয় ব্যাপার না। সেইরম টেস্টি খাওন, অন্ততঃ শুকনা রুটি আর কী না কী'র চাইতে! হাসি
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

মামুন হক এর ছবি

হ ভাই, ঠিকই কইছেন। এখন থিকা তাই করুম। তয় যেই পোড়ার দ্বীপ দেশে থাকি, সী-ফুড খাইতে খাইতে পেটেও মধ্যে চর পইরা যাওয়ার অবস্থা। তারপরেও নাই মামার থেকে ভালো।
আর লেখমু মানে, আপনেরা থামতে কইয়া মাতম শুরু না করা পর্যন্ত থামতাম না।
কিন্তু বুয়েনেস আইরেসের কিচ্ছাটা কেউ জানতে চাইলনা!
দেশ ভ্রমন সিরিজের জুৎসই একটা নাম ও দরকার।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- নাম দেনেঅলা বহুত পাবলিক আছে সচলায়তনে, আপনে নাম নিয়া পেরেশান না হৈয়া মূল লেখা শুরু করেন। লেখা শেষ হইলে নাম যোগাইবো ভূতে!

বুয়েনস আইরেস-এর কিচ্ছা জানতে চাইয়া লাভ আছে? আপনে যেইভাবে ইসলামিক ভ্রমনের কথাবার্তা কন, তাতে তো মনে হয় না আপনের লেখায় "আর্জেন্টাইন বীফ"-এর ফ্লেভার পাওয়া যাইবো! চোখ টিপি

তাও ইচ্ছা জানাই, অ মামুন ভাই- কন না আপনের সেই আর্জেনটাইন ললনা থুক্কু গরুর কাহিনী! দেঁতো হাসি
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

"তুমি তো মা কল্পতরু
আমরা সবাই পোষা গরু
ভুষি পেলেই খুশী হব
ঘুষি খেলে মরেই যাব ।"

মামুন হক, সচলায়তনে আপনার লেখার একজন গোপন অনুরাগী পাঠক আমি।
আপনার এবারের লেখায় উদ্ধৃত কবিতাংশটি ঊনবিংশ শতাব্দীর কবি ঈশ্বর গুপ্তের রচনা। তিনি লিখেছিলেন--
" তুমি মা কল্পতরু
আমরা সব পোষা গরু
শিখিনি শিং বাঁকানো
কেবল খাব খোল বিচিলি ঘাস।
যেন, রাঙা আমলা
তুলে মামলা
গামলা ভাঙে না।
আমরা ভূষি পেলেই খুশি হব
ঘুষি খেলে বাঁচব না।''

ভালো থাকবেন।[/i]

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

নিবিড় এর ছবি

দারুন লাগল আপনার লেখা আর তার বিষয় আশয় চলুক


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

মামুন হক এর ছবি

ভাইজান বিশ্বাস করেন আপনার মন্তব্য পড়ে পুরা তিন মিনিট মনিটরের দিকে বত্রিশ দাঁত বের করে তাকিয়ে ছিলাম। এত বড় কম্পলিমেন্ট আমি আমার জীবনেও পাইনি। কপাল ভালো বাসায় কেউ ছিলনা নয়ত ভুতে ধরেছে মনে করে জ্বীনের বাদশাকে খবর দিত। অনেক ধন্যবাদ কবিতাটি সংশোধন করে দেয়ার জন্য। আশির দশকে বাংলা ক্লাসে কাব্যপ্রেমী স্যারের কাছে কবিতাটি শুনেছিলাম, দুঃখজনক হল হয়ত আমাদের কাছে সহজ করে বলতে গিয়ে তিনি যেভাবে লিখেছি সেভাবেই বলেছিলেন। তাই মাথায় ঢুকে ছিল। এখন আপনার দয়ায় সত্যিকার ভার্সনটি জানলাম। আর নিশ্চিত না হয়ে উলটা পালটা উদ্ধৃতি দিবনা...কানে ধরছি।

শাহীন হাসান এর ছবি

তুমি তো মা কল্পতরু
আমরা সবাই পোষা গরু
ভুষি পেলেই খুশী হব
ঘুষি খেলে মরেই যাব ।"

ভাল-লাগলো আপনার লেখাটি ...।
....................................
বোধহয় কারও জন্ম হয় না, জন্ম হয় মৃত্যুর !

....................................
বোধহয় কারও জন্ম হয় না, জন্ম হয় মৃত্যুর !

সবুজ বাঘ এর ছবি

ভালো লেকছত রে। ডেরাইবর চুদানির পুলারে আরো এট্টু ডর দেহাইলে খারাপ হইতো না।

পলাশ দত্ত এর ছবি

মনে হচ্ছিলো সামনে বসে আড্ডা মারছেন। ভালো লাগছে।
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

অর্জুন মান্না [অতিথি] এর ছবি

আপনার মত স্টোরি-টেলার আমার খুব কম জানা।
খুব ভাল লাগল।

মূলত পাঠক এর ছবি

দুর্দ্ধর্ষ লেখা, আরো চাই, তাড়াতাড়ি !!

রানা মেহের এর ছবি

জটিল কঠিন আরো যা যা বিশেষন আছে
সেরকম লেখা
গড শেইভ দ্য কুইন একদম সেইরকম চোখ টিপি
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

আগেও কইসি, আবারও কই - খুব জমায়া গল্প কৈতারেন আপনে।
লেখালেখির ভেক ছাইড়েন না।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

সচল জাহিদ এর ছবি

মামুন ভাই, সামনে একটা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আছে, সেটা নিয়ে বেশ ঝামেলায় ছিলাম আর ছেলেটাকেও খুব মনে পড়তেছিল তাই আপনার লেখাটা পড়ব বলেও পড়া হয় নায়। আজকে এক বসায় পড়লাম, অসাধারন হয়েছে ভাইয়া। আপনার লেখায় কিছুটা মমতাজউদ্দিন আহমদ এর ধাঁচ আছে যা আমার কঠিন পছন্দ। আপনার মত সাহসী কিছু মানুষ থাকলে আমাদের নিজস্বতা কিছুটা হলেও বাড়বে। আসলে তোষামদি করে করে চরিত্র খারাপ হয়ে গেছে।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

মামুন হক এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। নটরডেম নিয়া লেখাটা কবে শুরু করবা?আমার অনেক গল্প জমে আছে।

সিরাত এর ছবি

ওই মিয়া আপনার ভ্রমনকাহিনী শুরু করেন না। আর্জেন্টিনা সম্পর্কে জানার খুবই ইচ্ছা!

লেখা ভাল লাগছে!

অতিথি লেখক এর ছবি

মনে মনে ভাবলাম শালার হালাল খানা দিবানা আবার মদ খাওয়াইয়া মাতাল করার ধান্ধা...এই রকম জাত মারার চক্রান্তের প্রাতিবাদেই সিপাহী বিপ্লবের সুচনা...নিজের মধ্যে সিপাহী জোশ জেগে উঠল। উদরের অধিকাংশ এখনো অশান্ত আর এর মধ্যেই এমন অপচেষ্টা।

চরম গুলি টাইপ লেখা টাই গুল্লি এবং উত্তম জাঝা! দিয়ে গেলাম।
এই যে বস, আপনার আগের লেখা গুলা একটু কষ্ট করে আপনার একাউন্টে নিয়া আসেন, আপনার কথুলা লেখা পড়ি নাই, আল্লাহই জানেন।
সাইফ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।