পর্ব ১: আন-ওয়ান্টেড

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শুক্র, ০৫/০৬/২০০৯ - ৮:১৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এক
এই শহরে নতুন এসেছি। কেন এসেছি জানি না। আসার যে খুব একটা ইচ্ছা ছিল, তাও না। আবার পরানো জায়গাটাকেও যে খুব ভালোবাসতাম, তাও না। পুরানো জায়গাটাতে যে আমি আর থাকছি না, এটাও কেউ খেয়াল করছে বলে মনে হয় না। আবার নতুন জায়গাটাতেও আমি থাকছি, তা আশেপাশের কেউ খেয়াল করছে বলে মনে হয় না। যাহোক, আমার তাতে থোড়াই কেয়ার।

নিজেকে মাঝে মাঝে ধোপার কুকুর বলে মনে হয়। না ঘরের, না ঘাটের। কেউ আমাকে ফোন করে না, আমিও কাউকে করি না। ফোনটা কাজ করে কিনা, তাও বলতে পারবো না। শেষ কবে ফোনে হ্যালো বলেছি, তাও মনে করতে পারছি না।

বাবা-মা, আত্নীয় স্বজন আছে যে যার মত। আগে মাঝে মধ্যে টাকা পয়সা চেয়ে ফোনটোন করতো, আমার অনাগ্রহ টের পেয়ে এখন তাও করে না।

আচ্ছা, আমি যে বেঁচে আছি, এটা কে কে জানে? বেঁচে তো নাও থাকতে পারতাম! আশ্চর্য, আমি যেন বেঁচে থেকেও মৃত! কিংবা মৃত মানুষের চেয়েও বেশী অনাকাংখিত। মৃতদের তবু তার কাছের মানুষেরা বছরে একবার হলেও স্মরণ করে। আমাকে বেঁচে থাকতেই কেউ স্মরণ করে না, মরে গেলে যে কি করবে, ঢের জানা আছে।

মাঝে মাঝে মনে হয়, থাক, কি হবে এসব ভেবে? থাকুক, যে যার মত। আমিও থাকি আমার মত।

কিন্তু মাঝে মাঝেই আমার মাথাটা খারাপ হয়ে যায়। মনে হয়, ঐ যে বারে বসে বসে সেই লোকটা আয়েশ করে বিয়ারের গ্লাসে চুমুক দিচ্ছে, তাকে ঠেশে ধরি দেয়ালের সাথে। জিজ্ঞেস করি, আমাকে দেখতে পাও না? আমি কেমন আছি জানতে চাইলে কি ক্ষতিটা হয় তোমার?

নতুন শহরে তাই আমি আর আন-ওয়ান্টেড হয়ে থাকতে চাই না। হতে চাই মোস্ট ওয়ান্টেড। এর জন্য যদি খুন করতে হয়, তাও করব।
তবুও যেন শহরের প্রতিটা লোক আমার নাম জানে।

আমি হবো শহরের মোস্ট ওয়ান্টেড পারসন।

(চলবে)

অদৃশ্য মানব
(aminirjhor@gmail.com)


মন্তব্য

সাইফ এর ছবি

একদম মনের কথাগুলো বললেন, অতিথি, ভোটাইতে পারি না, নাহলে ব্যালট পেপারের নিচে চাপা দিতাম আপনাকে। খুব ভালো লাগলো লেখাটা

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালো লেগেছে শুনে খুশি হলাম।

অদৃশ্য মানব

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

দ্যাটস দ্য স্পিরিট। হাসি

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

অতিথি লেখক এর ছবি

হুমমম

সেপাই [অতিথি] এর ছবি

ধ্বংস করা সহজ, বন্ধুত্ব করাও। আর সহজ কাজ গুলো করে কি লাভ, যা সবাই পারে? তার চেয়ে বরং আপনার একাকিত্বকে কাজে লাগান, ধ্যান শুরু করুন, নিজেকে তৈরি করুন একটা গর্ভে, নতুন কোন সৃষ্টির, যার মা-বাবা দুটাই আপনি হবেন। আর আপনার সেই সন্তানই আপনার অস্তিত্ব পৃথিবীময় চিৎকার করে ঘোষণা করে দেবে।
বিঃদ্রঃ কোন কিছুই গুরুত্বপূর্ণ না যতক্ষণ না আপনি সেটাকে গুরুত্বপূর্ণ ভাবেন।

অতিথি লেখক এর ছবি

কথা সত্য

অদৃশ্য মানব

মূলত পাঠক এর ছবি

লেখার স্টাইল ভালো লাগলো, কিন্তু এতো স্বল্প পরিসরে লিখলে পাঠকের মন ভরে না যে!

অতিথি লেখক এর ছবি

চেষ্টা করব বড় করার। পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

অদৃশ্য মানব

নিবিড় এর ছবি

শুরুটা ভাল লেগেছে চলুক
পর্ব গুলো আর বড় করলে ভাল হয়।


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ, নিবিড় ভাই। চেষ্টা থাকবে বড় করার।

অদৃশ্য মানব

মাহবুব লীলেন এর ছবি

বাহ

মানুষ আজ পর্যন্ত যত চেষ্টা করেছে তার বেশিরভাগই করেছে নিজেকে অস্তিত্ববান প্রমাণ করার জন্য আর অন্যের চোকে আঙ্গুল দিয়ে বলার জন্য- দেখ। দেখে রাখ্ এইটা আমি

অতিথি লেখক এর ছবি

জ্বি।

অদৃশ্য মানব

অনার্য্য সঙ্গীত [অতিথি] এর ছবি

সাধু সাধু...

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ

আহমেদুর রশীদ এর ছবি

গ্রেট ফিলিংস।

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ

অদৃশ্য মানব

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।