সুখী বেড়াল

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শুক্র, ১১/০৯/২০০৯ - ৬:৩৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

দক্ষিনমুখী এই জানালার পাশে অলস ভঙ্গিতে তিনি বসে থাকবেন, আরামকেদারায় গা এলিয়ে। একটা চাদর মূড়ি দিয়ে, চেয়ে থাকবেন উঠি উঠি সূর্যের পানে। যে সূর্য সারাদিনে তাকে ঘিরে তৈরী করবে, এক অমোঘ অর্ধবৃত্ত। তার নিস্পন্দ হাত পড়ে থাকবে হাতলের উপর, হেরে যাওয়া ক্লান্ত যুদ্ধফেরত সৈনিকের মতো।

বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় যে কোনো একদিন এই নিষ্কম্প হাত থেকে বিদ্যুত এর বেগে এক বর্শা ছুটে গিয়ে পানির অতল গহ্বর থেকে তুলে এনেছে এক জীবন এবং কুয়াশায় জেগে ওঠা নদীর বুকে পা রেখে প্রেমিকের দৃষ্টিতে চেয়ে থেকেছেন তিনি, দেখেছেন জীবনের ঝটপটানি থেকে ছুটে ছুটে আসা খন্ড বিখন্ড আলোকরশ্মি।
উপভোগ করেছেন জীবনের স্বাদ!

খুট খুট শব্দে উতকর্ন হয়ে মাথা ঘোরাবেন, সোজা হয়ে বসবেন। জোরে নিশ্বাস নি্যে; মৃদু হেসে, হাত রাখবেন পাশের চেয়ারে। তারপর, এক হাত আমার মাথা ছুয়ে, কাধে এসে স্থির হবে আর শ্বাস নিয়ে আদিম বটগাছের মৃদু গন্ধ পাবো আমি। মৃদু স্বরে শব্দহীন ভাষায় আবৃত্তি করবেন আদিম এক সুর আর চিড়বিড়ে আলোর ঢেউ উঠবে আর নামবে, উঠবে আর নামবে।

ভাবতে কষ্ট হয় যে কোনো একদিন এক চিত্রল গোঁখরোর সামনে, এক ষোড়শীর নতমুখ, আকাশের মতো বুকে চেপে ধরবার সাধ সত্ত্বেও মাঝে তুলেছেন জীবনের গম্ভীর স্তম্ভ এবং চেয়ে দেখেছেন অদ্ভুত সুন্দর স্বর্ণালী আঁকাবাঁকা রেখা, মানবীয় অহংকারে।
গেয়েছেন সভ্যতার জয়গান!

পেছন ফিরে তাকালেই দেখবো তিনি ফিরে গেছেন আগের অবস্থানে। নীরব, নিশ্চল আর নির্ণিমেষে চেয়ে আছেন, দেখছেন গাঢ় অন্ধকার!

অনেক অনেকদিন আগে গড়াগড়ি দিয়ে হাটাহাটি শেষ করে এক বাটি মুড়ি-মিছরি নিয়ে স্থির হয়ে বসেছি তার পাশে, সে অমোঘ আলোকবৃত্তের মাঝে। মুখ ফস্কে বেড়িয়ে গেছে,
“তুমি তো চোখে দ্যাখোনা, তবে সারাদিন কী দ্যাখো?”
তিনি মৃদু হেসে, মাথায় হাত বুলিয়ে বলেছিলেন,
“জীবন!”
বিজ্ঞের মতো মাথা নেড়ে, ছুড়ে দিয়েছিলাম বেড়ালটার দিকে একতাল ধারালো মিষ্টি মিছরি, কারন আমি জানি সময়ে সে চেঁটে পুঁটে মসৃন করবে “একতাল ধারালো মিষ্টি মিছরি”।
চেঁটে পুঁটে যাবে, চেঁটে পুঁটে যাবে, চেঁটে পুঁটে যাবে......। হায়! সুখী বেড়াল।

(মরকুটে ঘোড়া)


মন্তব্য

স্নিগ্ধা এর ছবি

মরকুটে ঘোড়া - এটা অণুগল্প?! এ তো দেখি কবিতার মতো শোনায়!

লেখার ভংি ভালো লাগলো! 'চেটেপুটে' তে চন্দ্রবিন্দু াছে নাকি?

মরকুটে ঘোড়া  এর ছবি

সেটাও প্রশ্ন বটে!
জীবনের মোটামুটি সব সাহস এক করতে হয়েছে এই লেখা প্রকাশ করতে। কারন এটা কবিতা নাকী অনুগল্প তা আমি নিজেই বুঝে উঠতে পারছি না।
কবিতা হলে এটা হবে আমার জীবনের লেখা প্রথম কবিতা আর প্রথম কবিতাতেই এই ধরনের অকবিতা টাইপ এর লেখা বের করে আমি নিজেই বিস্মিত! কিন্তু তারপরো লোভ সাম্লাতে পারিনি। এই যা বিপদ।

দুজনেই যখন প্রশ্ন তুলেছেন তখন চিন্তা করলাম দাবী করে ফেলি। করলাম।
"এটা কবিতা"।

নেই বোধহয়।
ডিয়ার মডু, কী করে সম্পাদনা করবো বললে কৃতজ্ঞ থাকবো।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

বস, আমার মত নাদান পাঠকের কাছে আপনার অণুগল্প একটু বেশি দুর্বোধ্য হয়ে গেছে...। এটা কবিতা হলেই মনে হয় বেশি ভালো লাগতো।
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!

মরকূটে ঘোড়া এর ছবি

উহহ। আমি নিজেও যে একটু ভুল করে ফেলিনি তা নয়! একটা রুপকের ব্যাবহার নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। দেয়ার পরে মনে হলো ঝামেলা বোধ হয় হয়ে গেছে! এখন মনে হচ্ছে ভুলটা থাকুক। প্রথম চেষ্টা থেকে কিছুনা শিখলে তো সমস্যা!

পরের বার থেকে আরো ভালো করে চেষ্টা করবো। এরচেয়ে সুবোধ্য হবে।

আর কে বললো এটা অনুগল্প?!!!
এটা কবিতা। আমার জীবনের লেখা প্রথম।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

বস, আমার মত নাদান পাঠকের কাছে আপনার অণুগল্প একটু বেশি দুর্বোধ্য হয়ে গেছে...। এটা কবিতা হলেই মনে হয় বেশি ভালো লাগতো।
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!

মূলত পাঠক এর ছবি

লেখার স্টাইল সুন্দর (যদিও বানান!), আমি মোদ্দা ব্যাপারটা বুঝলাম না যদিও। আশা আছে পরের বার ধরতে পারবো হয়তো। লিখতে থাকুন।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।