আমাদের মা - আমাদের প্রথম ও প্রধান শিক্ষক - ৩

জোহরা ফেরদৌসী এর ছবি
লিখেছেন জোহরা ফেরদৌসী (তারিখ: রবি, ০৮/১১/২০০৯ - ১২:৩৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমাদের মা - আমাদের প্রথম ও প্রধান শিক্ষক - ৩
জোহরা ফেরদৌসী

পর্ব ১
পর্ব ২


আমাদের প্রথম ও প্রধান শিক্ষক

আমাদের সবক’টি ভাই বোনের হাতে খড়ি মার হাতে আদর্শলিপি ও রামচন্দ্র বসাকের বাল্যশিক্ষা দিয়ে। বাল্যশিক্ষার “সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি/ সারাদিন আমি যেন ভাল হয়ে চলি...র এই ছন্দোবদ্ধ শপথবাক্য দিয়ে আমাদের শিক্ষাজীবনের সূচনা। সকলের বর্ন পরিচয়, বানান করে পড়া, লেখা ও গুনতে শেখা সব মার পাঠশালায়। আমাদের কোন ভাই বোনই তৃতীয় শ্রেনীর আগে স্কুলে যায়নি। সবাইকে মা তৃতীয় শ্রেনীর উপযোগী করে স্কুলে পাঠাতেন। স্কুলে যাওয়ার পরেও প্রতিদিন স্কুলের হোম ওয়ার্কের বাইরে মার হোম ওয়ার্ক ছিল। প্রতিদিন দূ’পাতা বাংলা, ইংরেজী হাতের লেখা ও অন্ততঃ বিশটি অংক করতে হতো। সুন্দর হাতের লেখার ওপর খুব গুরুত্ব দিতেন, বলতেন, “হাতের লেখা হচ্ছে একজন মানুষের ব্যাক্তিত্বের প্রথম পরিচায়ক”। অংকের প্রতিও ছিল অসীম ভালবাসা। আমাদের দরিদ্র মা, বাবার সামর্থ্য ছিল না কখনো প্রাইভেট টিউটর রাখার। মাই আমাদের সকলের প্রথম ও প্রধান শিক্ষক ছিলেন। মা বলতেন, “ছেলে মেয়েদের মধ্যে শুধু বইয়ের প্রতি ভালবাসা জাগিয়ে দেয়াটাই মা বাবার কাজ। বই পড়ে শিশু মনে একবার কল্পনার জগৎটি জাগিয়ে তুলতে পারলে তাকে আর পড়ার জন্য তাগিদ দিতে হবে না।” তাই মা কখনো আমাদেরকে পাঠ্যবইয়ের বাইরের বই পড়তে নিষেধ করতেন না। বই পড়ার পাশাপাশি মা আমাদেরকে প্রতিদিন কিছু না কিছু লিখতে বলতেন। বলতেন, “পড়া ও লেখার মধ্য দিয়ে শিশু কিশোরদের কল্পনা শক্তির বিকাশ ঘটে, মানবিক বোধের উন্মেষ হয়”। কিশোরী এনা ফ্রান্কের ডাইরীর কথা বলে ছোটবেলায় আমাকে প্রতিদিন কিছু লিখতে বলতেন।

আমাদের ধর্মীয় শিক্ষার হাতেখড়িও মার হাতে। আমাদের সকলের ধর্মীয় শিক্ষার শুরু করতেন বিভিন্ন নবী, রাসুলদের জীবন থেকে গল্প দিয়ে। আমার স্মৃতিতে আছে নবীজির (সাঃ) সম্পর্কে প্রথম যে গল্পটি বলেছিলেন তা হল, একজন বৃদ্ধা তাঁর পথে প্রতিদিন কাঁটা বিছিয়ে রাখতো আর তিনি কিছুই বলতেন না। একদিন পথে কাঁটা না দেখে তিনি বৃদ্ধার খোঁজ নিতে তার বাড়ীতে গিয়ে দেখেন যে সে অসূস্থ। তখন তার সেবা করে নবীজি (সাঃ) তার মন জয় করে নিলেন। মানুষকে যে ভালবাসা দিয়েই জয় করা যায়, ঘৃনা দিয়ে নয় এই মূল্যবান শিক্ষাটি তিনি সবচেয়ে আগে আমাদের মধ্যে রোপন করতে চেয়েছেন। নবী (সাঃ) এর জীবনাদর্শ শিক্ষা দিতে গিয়ে সব সময় বলতেন, “তিনি এসেছিলেন সমস্ত সৃষ্টির প্রতি “রহমত” বা “দয়ার নিদর্শন” হয়ে। তাঁর অনুসারী হিসেবে আমাদের প্রথম দায়িত্বই হচ্ছে স্রষ্টার সকল সৃষ্টিকে ভালবাসা।” জানি না কেন মার মুখে শোনা নবীজীর (সাঃ) অসংখ্য উদ্ধৃতির মধ্যে একটি আমার মনে গেঁথে আছে চিরতরে। বলেছিলেন, “ধর্ম শুধু প্রার্থনা নয়। মানুষের সঙ্গে আচরনে একটি সহজ নিয়ম শুধু মনে রেখো । অন্যের কাছ থেকে তুমি নিজের জন্য যা প্রত্যাশা করো, ঠিক সেটাই তুমি আরেকজনকে দিতে চেষ্টা করো। অন্যের সূখে সূখী হওয়া, অন্যের দূঃখে দূঃখী হওয়াই প্রকৃত ধার্মিকের কাজ।”

সন্তানদের মধ্যে গভীর ধর্মবিশ্বাস রোপন করার সময় খুব সচেতন ছিলেন যেন আমরা সকল ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হই। নবীজীর (সাঃ) বিদায় হজ্বের বানী থেকে উদ্ধৃতি করে বলতেন, “ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করো না।” ধর্মের সাম্য, মৈত্রী ও মানবতার দিকটিকে বড় করে দেখতে বলতেন। মার একটি কথা খুব মনে পড়ে, “যেই মুহুর্তে তুমি একটিমাত্র সত্তাকে তোমার সৃষ্টিকর্তা মেনে নিচ্ছো, সেই মুহুর্ত থেকে পৃথিবীর সবাই তোমার কাছে সমান ও আপন পরিবার। সবার মঙ্গলই তোমার মঙ্গল।”

মা তাঁর আয়ত্তের মধ্যে যেটুকু পেরেছেন অন্য ধর্মগ্রন্থও পড়েছেন। মহাভারতের অনেক গল্পই তিনি ব্যবহার করেছেন আমাদের নৈতিকতা শিক্ষা দিতে। একটি গল্প অনেকবার তিনি বলেছেন। একবার বনের মধ্যে তৃষ্ণার্ত যূধীষ্ঠির নকুলকে জলের সন্ধানে পাঠালেন। নকুল নিকটবর্তী সরোবরে জল সংগ্রহ করতে উদ্যত হলে বকরূপী যক্ষ তাকে বারন করে বলে উঠল, “আমি এই সরোবরের অধিকারী। আমার প্রশ্নের সদূত্তর না দিয়ে জলপান করলে তুমি মৃত্যু বরন করবে।” নকুল সে কথায় কর্নপাত না করেই জলপান করলেন ও মৃত্যু বরন করলেন। নকুলের বিলম্ব দেখে যূধীষ্ঠির একে একে ভীম, অর্জূন ও সহদেবকে পাঠালেন। তারাও একই ভুল করলো। তখন যূধীষ্ঠির নিজে ভাইদের সন্ধানে সেই সরোবরের কাছে এসে যক্ষের দেখা পেলেন। যক্ষ তাকে জানালো তার ভাইদের পরিনতির কারন। তখন শোকার্ত যূধীষ্ঠিরকে যক্ষ বললেন “যদি তুমি আমার প্রশ্নের সদূত্তর দিতে পারো তাহলে তোমার একটি ভাইকে জীবন ফিরিয়ে দেব।” যক্ষের সঙ্গে যূধীষ্ঠিরের প্রশ্নোত্তরের অংশবিশেষ ছিল এরকম,

“সূর্য্যের মত উজ্জ্বল কি ?” - সত্য
“আকাশের চেয়ে উদার কে ?” - পিতা
“ধরিত্রীর চেয়ে সহনশীল কে ?” - মাতা
“বায়ূর চেয়ে দ্রুতগামী কি ?” - চিত্ত
“শ্রেষ্ঠ মানব কে ?” - যে ব্যক্তি অহিংস

যূধীষ্ঠিরের উত্তরে সন্তুষ্ট হয়ে যক্ষ বললেন, “কোন ভাইটিকে তুমি চাও ?” যূধীষ্ঠির তখন নকুলকে চাইলেন। যক্ষ আশ্চর্য্য হয়ে জানতে চাইলেন, “তুমি তোমার সহোদর ভীম, অর্জূনকে না চেয়ে সৎ ভাই নকুলকে চাও কেন ?” যূধীষ্ঠির উত্তর করলেন, “আমি সহোদর ও সৎ ভাইদের মধ্যে পার্থক্য করি না। তাছাড়া, আমার মায়ের তো আমি আছি। সৎ মায়েরও অন্ততঃ একটি সন্তান থাকুক”। যূধীষ্ঠিরের এই উত্তরে মুগ্ধ হয়ে যক্ষ বললেন, “প্রকৃতই তুমি ধর্মপুত্র যূধীষ্ঠির। তোমার সব ভাইদেরকেই ফিরিয়ে দিলাম”। এই গল্পের মধ্যে ন্যায়পরায়নতার যে সমূজ্জল শিক্ষা আছে মা তা আমাদের মধ্যে দেখতে চেয়েছেন। মহাভারতের আরও দূ’টো জায়গা মার খুব প্রিয় ছিল। প্রথমটি, কূরুক্ষেত্র যুদ্ধে যাওয়ার আগে এক শত কৌরব যখন মাতা গান্ধারীর কাছে আশীর্বাদ নিতে আসে। তখন গান্ধারী বলেন, “ধর্ম পক্ষ জয়ী হোক।” মা হয়েও সন্তানকে আশীর্বাদ করতে পারেননি, কারন তিনি জানতেন তারা পান্ডবদের বিরুদ্ধে অনৈতিক যুদ্ধে রত। দ্বিতীয়টি, মহা প্রস্থানের বর্ননা। কূরুক্ষেত্র যুদ্ধ জয়ের পরে রাজত্ব পেয়েও পঞ্চ পান্ডবদের যে উপলব্ধি তার আবেদন মার কাছে খুব শক্তিশালী মনে হয়েছিল। পার্থিব জীবনের অসারতার যে অনিবার্য্য উপলব্ধির কারনে পান্ডবরা সব কিছূ ত্যাগ করে মহা প্রস্থানের পথে যাত্রা করলেন সেই দর্শন মাকে খুব গভীরভাবে ছূঁয়েছিলো।

মা বাইবেল ও গীতার বাংলা অনুবাদ পড়েছিলেন। কূরুক্ষেত্র যুদ্ধক্ষেত্রে অর্জূন প্রতিপক্ষের দিকে তাকিয়ে অস্ত্র ধারন করতে অস্বীকার করেন। কারন, তারা সবাই ছিল তার আত্মীয়, স্বজন, সূহৃদ, শিক্ষাগুরু। তখন কর্ণ অর্জূনকে উদ্দেশ্য করে “আপন ইচ্ছার ওপরে ঈশ্বরের ইচ্ছাকে ধারন করার” যে সার্বজনীন উপদেশ দেন তাই গীতার মূল বানী। তাছাড়া, জাতীয় গন মাধ্যমগুলোতে সকল ধর্মগ্রন্থ (পবিত্র কোরান, গীতা, বাইবেল, ত্রিপিটক) থেকে অনূবাদ সহ যে পাঠ হতো, মা তা খুব মন দিয়ে শুনতেন। ত্রিপিটক পাঠের পরে, “জগতের সকল প্রানী সূখী হোক” এই প্রার্থনাটি মার খুব প্রিয় ছিল।

কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুমে অনেক কঠিন তত্ত্ব শিখেছি। কিন্তু, জীবনের যে আসল শিক্ষা তার পুরোটাই মার পাঠশালায় শেখা। মনে পড়ে, শৈশব, কৈশোরে এমনকি আরো বড় হয়ে মার কোন অনুশাসন মানতে না চাইলে বলে উঠতাম, “কেন তুমি এতো কড়া মা? অন্যদের মায়েরাতো এমন না?” মা তখন এই কথাটাই শুধু বলতেন, “নিজে মা হও আগে, তারপর আমাকে বুঝবে। এখন বুঝবে না”। মার এই কথা অমোঘ সত্যের মত ফলেছে আমার জীবনে। জীবনের এই পর্যায়ে যখন পেছনে তাকাই দেখি মার কাছেই সবচেয়ে বেশী শিখেছি। এই উপলব্ধি আমার তীব্র হয়েছে যখন নিজে মা হয়েছি। আমার সাত বছরের ছেলেকে যা কিছূই শেখাতে যাই, দেখি সবই আমার মার কাছে শেখা। নিরাভরন, অতি সাধারন মায়ের কাছে শেখা জ্ঞান দিয়েই আমরা ভাই বোনরা পৃথিবীর নানান দেশে জীবনের পথে হাঁটছি। আমাদের মধ্যে যেটুকু আলো সবটাই আমাদের মায়ের আপন হাতের কাজ এই বোধ থেকে মাকে নিয়ে এই কবিতাটি লিখেছিলাম গত বছর। মা সেটা পড়েছিলেনও।

মা

কখনও তোমাকে দেখিনি কোন দামী আভরণে
সিল্ক, তসর, মসলিন কিংবা জামদানীতে
কখনও কোন উৎসবেও তোমাকে দেখিনি
সাজাতে নিজের মুখ
রঙ্গীন প্রসাধনে;
কোন শ্রাবণে দেখিনি তোমার চুলে কদম কিংবা রঙ্গন।

বড় বেশী আটপৌরে তোমার জীবন
চোখ বুজলেই দেখতে পাই
গর্ভের ভারে উবু হয়ে,
নিকনো উঠোনে লেপে দিচ্ছো মাটির শেষ প্রলেপ
কখনও এক হাতে জড়িয়ে ধরে
ভারী জলের কলসের গলা,
আর অন্য হাতে আত্মজার ছোট্ট করতল
উঠে আসছ পুকুর ঘাটের গভীর থেকে,
কখনওবা ভেজা খড়ের ধোঁয়ায়
দম বন্ধ করে,
মাটির চুলোয় দিচ্ছ ফুঁ।

কখনও মাড়াওনি তুমি কলেজ কিংবা বিশ্ববিদালয়ের চৌকাঠ
কখনও নাওনি তুমি দর্শন অথবা কাব্যের পাঠ
কিন্তু সন্ধ্যা হলেই;
হারিকেনের ঝকমকে চিমনির আলোয়
বসিয়েছ তোমার পাঠশালা,
কি অপরূপ সহজিয়া ভঙ্গিমায় বুঝিয়ে দিয়েছ
মুহাম্মদ, যীশু, বিবেকানন্দ, গৌতম বুদ্ধ
রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, সুকান্ত, আর জীবনানন্দ।

রসুইঘরে হাতা- বেড়ি আর খুন্তির সঙ্গেই
কেটেছে তোমার একদম বর্ণহীন
শ্রমিকের জীবন।
জানি না কোথায় শিখলে তুমি
হীরক কাটা কারিগরের বোধিজ্ঞান,
কি নিপুণ দক্ষতায়
কেটেছ আত্মজদের মনন;
পৃথিবীর উদ্যানে ছড়ায় তারা আজ তোমার দ্যুতি।


(ক্রমশ)


মন্তব্য

বেগুনী-মডু এর ছবি

কাছাকাছি সময়ে অন্য একটি প্ল্যাটফর্মে প্রকাশিত হওয়ায় সিরিজটির প্রথম দুইটি পর্ব প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত হলো না।

পর্ব ১
পর্ব ২

সচলায়তন অতিথিদের কাছ থেকে অনন্য লেখা প্রত্যাশা করে। প্রকাশিত লেখা ৭২ ঘন্টা অতিবাহিত হওয়ার পূর্বে অন্য ব্লগে প্রকাশ করলেও তা অতিথি লেখকের নিজের ব্লগে সরিয়ে দেওয়া হয়। নীড়পাতার সৌন্দর্য রক্ষার্থে ২৪ ঘন্টায় প্রথম পাতায় একই লেখকের দুইয়ের বেশি লেখা প্রকাশও নিরুৎসাহিত করা হয়। আপনার সিরিজের অবশিষ্ট লেখাগুলো সেই অনুযায়ীই সচলায়তনে প্রকাশ করা হবে।

সচলায়তনে এটাই আপনার প্রথম লেখা হওয়ায় আপনার অবগতির জন্য নিয়মাবলি জানিয়ে দেওয়া হল। সচলায়তনে নিবন্ধনের অনুরোধ রইলো আপনার প্রতি। ধন্যবাদ।

জোহরা ফেরদৌসী  এর ছবি

সচলায়তনকে আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা । আমার মা সত্যিই একজন অসাধারন মানুষ ছিলেন । আমার অপরিনত লেখায় তার খুব সামান্যই উঠে এসেছে । তারপরেও আমার মাকে নিয়ে বলার এই ইচ্ছেটুকু পুরন করায় আমি অকৃত্রিম ধন্যবাদ জানাই সচলায়তনকে । শুভ হোক সবার ।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

মা কে ভালোবাসা...
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

জোহরা ফেরদৌসী  এর ছবি

সকল মায়ের জন্য রইলো অকৃত্রিম ভালবাসা ।

জোহরা ফেরদৌসী  এর ছবি

সকল মায়ের জন্য রইলো অকৃত্রিম ভালবাসা ।

ভুতুম এর ছবি

আপনার মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা থাকলো।

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।