ছাত্রী সমাচার-ঝড় ছিলোনা দুটি চোখের পাতায়...

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: সোম, ০১/০২/২০১০ - ১১:২৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

একদিন সন্ধ্যায় এক ক্লাসমেট খবর দিলো গুলশানে একটা টিউশনি করবো কিনা। ছাত্রীর সাথে এক ঘন্টা ইংরেজীতে কথা বলতে হবে। গাড়ি এসে নিয়ে যাবে এবং পড়ানো শেষে পোঁছেও দিয়ে যাবে। আমাকে ঘন্টা হিসাবে ৫০০ টাকা করে দেয়া হবে! অতি লোভনীয় অফার, আমি সাথে সাথে লুফে নিলাম।

ছাত্রীর বাড়ি গিয়ে আমার মুখ হা হয়ে গেলো। বাড়ি তো না যেনো প্রাসাদ। বসবার ঘর তো না যেনো পাঁচতারা হোটেলের লবি। ছাত্রী এলে দেখলাম ছাত্রী তো না এক খালাম্মা! ছাত্রীর বয়স ৫৫।
খালাম্মা আমাকে প্রথমেই বলে নিলেন উনি অনেক পার্টি তে যান যেখানে ইংলিশ বলতে হয়। ইংরেজি উনার মুখে আসতে চায়না, খুব কঠিণ লাগে। আমি অভয় দিয়ে বললাম মাসতিনেক আমার সাথে গল্প করলে অবস্থার পরিবর্তন হবে। (তিন মাসের জন্য এমন জটিল টিউশনি বহাল রাখার মতলব আরকি!)

আমাদের কথোপকথন রেকর্ড করে রাখা হতো। খালাম্মা পরে বাজিয়ে শুনতেন। আবার কাবিল কাউকে শুনিয়ে আমাকে ও বাজিয়ে নিতেন! একদিন রেকর্ড রিইওয়াইন্ড করতে গিয়ে ত্রাহি চিতকার বেজে উঠলো ক্যাসেট থেকে। ঘটনা কী? খালাম্মা লাজুক হেসে বললেন উনি একটু আধটু গান করেন! আমি সেই গান শুনলাম। খালাম্মা জানতে চাইলেন কেমন লাগলো। আমি বললাম অসাধারণ! (বলা বাহুল্য...)। তারপর আমতা আমতা করে বললাম-'ঝড় ছিলোনা চোখের পাতায়' এটা বোধহয় ভুল। চোখের পাতায় তো ঝড় থাকেনা, থাকে ঘুম অথাবা আইশ্যাডো! খালাম্মা তাড়াতাড়ি খাতা এগিয়ে দিয়ে বললেন গানটা ঠিক করে লিখে দিতে।

এরপর কি হলো সহজেই অনুমেয়। ইংলিশ শেখা বাদ হয়ে গেলো। খালাম্মার গান শুনে পাঁচশ টাকা ব্যাগে ভরে হলে ফিরি..বন্ধুরা যখন জানতে চায় আমার ছাত্র সম্পর্কে তখন ঝামেলায় পড়ি। ছাত্র কোন ক্লাসে, কোন স্কুলে পড়ে বা আমি কী সাবজেক্ট পড়াই এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে পারতামনা ঠিকমতো।মাঝে মাঝে পার্টি থাকলে খালাম্মা কিছু ট্রান্সেশানের কাজ করাতেন আমাকে দিয়ে। যেমন- আমরা এবার হজ্বে যচ্ছি, আমাদের নতুন প্রোজেক্ট এর কাজ প্রায় শেষ, এইসব গুজব কারা ছড়ায় জানিনা আমরা খুব ভালো আছি, আমার হাজব্যান্ড খুব চমতকার লোক ইত্যাদি!!
এগুলো মুখস্থ করে দিব্যি পার্টি চালিয়ে দিতেন।

উনি খুব লোনলি ছিলেন। ছেলেমেয়েরা দেশের বাইরে থাকতো। স্বামী অতি বিতর্কিত, অতি ব্যস্ত এক ব্যবসায়ী। উনার জন্য আমার মায়া লাগতো। আমরা অসম বয়সী বন্ধু হয়ে গিয়েছিলাম তবে ওই সাধের টিউশনি বেশিদিন করা হয়নি আমার।

গত বছর দেখলাম আমার সেই খালাম্মা ছাত্রীর গানের অ্যালবাম বেরিয়েছে। সাহস করে অ্যালবামটা কেনা হয়নি এখনো।

[XXXXXXXXXXXXXXX] ।

নাহিদ খান


[XXXXXXXXXXXXXXX] মডারেটেড।
-সচলায়তন মডারেশন


মন্তব্য

হিমু এর ছবি

ভাইজান, আপনার অ্যাকাউন্ট সম্ভবত সক্রিয়। আপনি নিজের অ্যাকাউন্ট থেকেই তো লিখতে পারেন।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

রেনেট এর ছবি

নাহিদ আপাকে ভাই বলবেন না। তাহলে রানাভাই রাগ করবেন।
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

রাফি এর ছবি

ঠিক হিমু ভাই,
রেনেট আপু কিন্তু সত্যি বলেছেন।। হুমম...।

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

হিমু এর ছবি
ধুসর গোধূলি এর ছবি

- গলা টিপে দিবে না শুধু, টিপে দিয়ে ধরে রাখবে। "প্রেস এন্ড হোল্ড আনটিল ডেথ!"

ক্যারাটে ফার্স্ট ডেন চ্যাম্পিয়ন। ইয়েলো বেল্ট হোল্ডার। কই আছোস? ঘাড়ের পরে এক চপ খাইলে নিজের হবু পরিবারের নাম শুদ্ধা ভুইলা যাবি।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

হিমু এর ছবি

ইয়েলো বেল্ট আর ফার্স্ট ডানের মাঝে তিন-চারটা বেল্টের কী হবে?



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

দ্রোহী এর ছবি

যদ্দূর মনে পড়ে নাহিদ খান আপাই!!!!!!!!!!! ভাই কবে হয়ে গেলেন? অভিনন্দন নাহিদ ভাইয়া।

অমিত আহমেদ এর ছবি

ছাত্রীর পরিচয় প্রকাশ করার দরকার ছিলো না।


ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফ্লিকার | ইমেইল

শশাঙ্ক বরণ রায় এর ছবি

নাম, পরিচয় প্রকাশ করার বিষয়টি ভাল লাগল না। লেখাটাকে সম্পূর্ণ করতে তথ্যটির উল্লেখ কি খুব প্রয়োজনীয় ছিল? মডারেশনের পরও যে তথ্য রয়েছে তা থেকে ব্যক্তিটিকে চেনা যাচ্ছে। একান্তই ব্যক্তিগত মত, কিছু মনে করবেন না আশাকরি।

ওয়াইল্ড-স্কোপ [অতিথি] এর ছবি

নাম, পরিচয় প্রকাশ করার বিষয়টি ভাল লাগল না। লেখাটাকে সম্পূর্ণ করতে তথ্যটির উল্লেখ কি খুব প্রয়োজনীয় ছিল? মডারেশনের পরও যে তথ্য রয়েছে তা থেকে ব্যক্তিটিকে চেনা যাচ্ছে।

আমার ধারণা ছিল সচলের নীতিমালা অনুযায়ী কোনো পোস্টে ব্যক্তিগত আক্রমণ নিরুত্সাহিত করা হয় - এই পোস্টে সেই আক্রমনের নিন্দা জানিয়ে গেলাম এবং মডুদের এই পোস্ট সরিয়ে দেবার বিনীত আবেদন জানালাম

দুর্দান্ত এর ছবি

বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতে মেদসাঁ সঁ ফঁতিয়ের একটা খন্ডকালীন চাকরি পেয়েছিলাম। প্রকল্প লিয়াজোঁ অফিসার। কাজে যোগদানের দশ মিনিটের মধ্যেই পরিস্কার হয়ে গিয়েছিল যে প্রকল্পের লোকেরা ঢাকার রাস্তার গালাগালি-খিস্তি আমার চাইতে ভাল উচ্চারনে আওড়াতে পারে। আর নোয়াখালী-সন্দ্বীপের উপকূলীয়দের, মানে যাদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে সেই প্রকল্প, সেখানের লোকেদের কথা আমিই তো ঠিক বুঝতাম না, তাদেরকে কি বোঝাবো? তবুও চালিয়ে গেছি। দলটির সপ্তাহিক বিনোদন ছিল শুক্রবারে বাংলা সিনামা - ঢাকায় থাকলে বালাকা, নোয়াখালিতে থাকলে বি টি ভি। সেখানে আমার বাঁধা চাকরি ছিল ফিস-ফিস করে সিনামার ধারাবিবরনী দেয়া।

শুনতে অনেক কষ্টের কাজ মনে হচ্ছে, তবে শুধু দেশের উন্নয়নের কথা মনে রেখে ছাত্রী নার্সদের সেই দলটির দেয়া সব কষ্ট আমি পিঠ পেতে নিয়েছি। কাউকে না কাউকে তো কিছুটা ত্যাগস্বীকার করতেই হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

কিয়ের মধ্যে কি কন? বুঝলাম না ?!?

দুর্দান্ত এর ছবি

এত তাড়া কিসের? আপনার আরেকটু বয়স বাড়ুক, একটা মেরুদন্ড গজাক, নিজের ও জন্মদাতার পরিচয় জানুন, তারপর দেখবেন সবকিছু জলবত তরলং।

সোহাগ [অতিথি] এর ছবি

ছাত্রীর পরিচয় গোপন থাকাই শোভন ছিল।সচল মডারেশন তো কঠোর বলেই জানতাম!

অতিথি লেখক এর ছবি

পরিচয়টা জানা খুব সহজ হয়েগেছে।এটা মনে হয় ঠিক হয়নি। ওনি যদি সচলায়তনে আসতেন তাহলে আপনার খবর ছিলো----(হাহাহাহাহা) মান হানি (যদিও মান আছে বলে জানা নেই) মামলা করে দিতো, আর জানেন তো ওনাদের মানের মূল্য কত? মাইন্ড কইরেন না একটু মজা করলাম। ধন্যবাদ লেখাটা ভালো লেগেছে।

দলছুট।

আশফাক আহমেদ এর ছবি

মজাই লাগলো

-------------------------------------------------

ক্লাশভর্তি উজ্জ্বল সন্তান, ওরা জুড়ে দেবে ফুলস্কেফ সমস্ত কাগজ !
আমি বাজে ছেলে, আমি লাষ্ট বেঞ্চি, আমি পারবো না !
আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।