ব্যবহারিক কল্পবিজ্ঞান-১

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: রবি, ১১/০৭/২০১০ - ৪:০৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

যে কারনেই হোক লোডশেডিং এখন আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় অত্যাচার। আগেও ছিল। সমস্যটা এত বিশাল যে এটার কোন দ্রুত সমাধান সম্ভবত সম্ভব না। একটু ভিন্নকোণ থেকে দেখার জন্য আজকের পোস্ট।

এই মাসে খেয়াল করলাম, গত কয়েক মাস হল পকেটে যা আসছে, সব চলে যাচ্ছে। যেহেতু আমরা কেউই নিজের স্বার্থে দূর্নীতিবাজ না, ভেবে দেখলাম এখনই ব্যবস্থা না নিলে খুব শীঘ্রি পকেটেও লোডশেডিং শুরু হবে। সঞ্চয় বলতে কিছুই হচ্ছে না। হুট করেইতো এক সুন্দর সকাল থেকে বেশি বেশি ইনকাম করা সম্ভব না। শ্রম, সাধনা, ভাগ্য দিয়ে ক্যারিয়ার ল্যাডার অতিক্রম করে বা ইনোভেটিভ কিছু করে, তবেই না ইনকাম বাড়ানো যায়। তাই, যেটা এখনি করতে পারি তাহল খরচ কমানো।

মাসিক খরচের এক্সেলশিট থেকে একটা পাই চার্ট বানালাম। কোন কোন খাতে আমার সবচেয়ে খরচ হচ্ছে, এবং কাদের কাদের গা থেকে ফ্যাট ঘ্যাচাং করা যায় তাদের কেটেকুটে ঠিক করলাম। মূহুর্তেই সেটা একটা কঞ্জুস মানুষের এক্সেলশিটে পরিনত হয়ে গেল। একদমই আল্ট্রা-কিপটা অবস্থা। এবার আরেকবার সবগুলো এরিয়াকে একটা একটা করে নিয়ে ভেবে দেখলাম কাকে কাকে বর্তমান অগ্রগতি আর ভবিষ্যতের কথা ভেবে কতটুকু ইন্সেন্টিভ দেয়া যায়। অবশেষে এক্সেলশিটটার একটা হাইজিন চেহারা আসলো।

বিদ্যুতে আমাদের সরকার এই সহজ কন্সেপ্টটা ব্যবহার করেন কিনা আমার জানার উপায় নেই। তবে যদি এটাকে আরেকটু বর্ধিত করে জনগনের ওপর চাপাই, ব্যাপারটা কেমন দাঁড়ায় একটু দেখি। জানেনইতো যেকোন জিনিস জনগনের ওপর চাপানো খুব সহজ কাজ। যেমনঃ কর, দোষ, মাথাব্যাথা, ভোগান্তি, ইত্যাদি। আমি যেমনটা ভেবেছি, সেটা আমাদের দেশের জন্য কতটুকু বাস্তব সেটা নিয়ে খুব একটা কিছু বলব না। কারন আমাদের দেশের ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি সমস্যা, গরিব দেশ, ইত্যাদি। আগে কন্সেপ্টটার জন্ম দেই, পরে কাটাকুটি করে দেখবনে কতটুকু প্র্যাক্টিক্যাল। আর তাছাড়া কাটাকুটি করার লোকের অভাব থাকার কথাও না। ভাল কথা, এই কন্সেপ্ট কেউ কন্সিভ করে ফেলছে কিনা সেটাও আমার জানা নেই। অনেক ডিস্ক্লেইমার হল, এবার কাজের কথায় আসি।

একটা যন্ত্রের কথা কল্পনা করি যেটা বাসার রাউটারের সাথে RJ-45 দিয়ে কানেক্টেড থাকবে। অনেকগুলো সিরিয়াল পোর্ট থাকবে, যেগুলো দিয়ে বাসার অ্যাপ্লায়েন্সগুলো অন/অফ করা যেতে পারে। সিরিয়াল পোর্ট ছাড়া আর কোন এফিশিয়েন্ট কিছু থাকলে সেটা ব্যবহার করা যায়। ঘড়ির সময় দেখে আর লাইট সেন্সর ব্যবহার করে বাসার লাইটগুলো অন/অফ করা যাবে। ৩-অপশনের সুইচ ব্যবহার করা যায়। ৩য় অপশনটা থাকবে এটা বলার জন্য যে কল্পযন্ত্রের বুদ্ধি ব্যবহার করা হবে কিনা। নয়ত দেখা যাবে অসময়ে আপনার টয়লেটের লাইট অফ করে দিয়েছে। এইটুকু পর্যন্ত অনেকেই হয়ত ক্লাস প্রজেক্ট করে। কেউ কেউ ইন্টারনেট ভিত্তিক বানায় যেন আপনি অফিস থেকে আপনার বাসার যন্ত্রপাতি নিয়ন্ত্রন করতে পারেন।

কিন্তু চাইলেই সহজে এগুলোতে ইন্টেলিজেন্স দেয়া যায়। যেমন রাউটারের সাথে লাগানো থাকলে weather.com থেকে ফ্রী স্থানীয় আবহাওয়ার তথ্য পাওয়া যাবে। সবচেয়ে মজার বিষয় হল, চাইলে সরকার আপনার বাসার অ্যাপ্লায়েন্সগুলো দেশের স্বার্থে নিয়ন্ত্রন করতে পারবে। ধরে নিই, shorkar.com সাইটে একটু পর পর প্রোডাকশন এবং স্থানভিত্তিক পাওয়ার কন্সাম্পশন তথ্য আপডেট হতে থাকবে। কল্পযন্ত্র সেটা পড়বে এবং সরকারের বর্তমান রেকমেন্ডেশন অনুযায়ী ক্লাসিফাই করা অ্যাপ্লায়েন্সগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে অন/অফ হওয়ার সরকারী পরামর্শ পাবে। যেমনঃ শীতাতপযন্ত্র, বাতি, ইত্যাদি ক্লাসিফিকেশন অনুসারে। ডায়াগ্রাম অনুযায়ী সফটয়্যার আর হার্ডওয়্যার বানানো এখনই সম্ভব। কিন্তু সরকারী কিছু পেতে হলে আবহাওয়ার জায়গায় সরকারী তথ্য বসালেই একইভাবে কাজ করবে – যখন সরকার রেডি হবে। এইভাবে একসাথে সরকার আর সিটিজেন লোডশেডিংয়ের মোকাবেলা করতে পারে।

জ্ঞান/আইডিয়া লুকিয়ের রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ব্য নেই। কেউ যদি এই আইডিয়া ব্যবহার করে নিদেনপক্ষে ভাল ও ভিন্ন ধরনের একটা ক্লাস প্রজেক্ট করতে পারেন – আমি ধন্য হব।

তানজিম সাকীব


মন্তব্য

কালো-মডু এর ছবি

সচলায়তনের নীতিমালা অনুসারে, প্রথম পাতায় কোনো লেখকের একাধিক লেখা রাখা হয় না। আপনার এ লেখাটি আপনার নিজের ব্লগে প্রকাশিত হলো।

প্রথম পাতায় আপনার একটি লেখা প্রকাশিত অবস্থায় থাকলে, পরের লেখাটি প্রকাশের আগে অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন।

মামুন [অতিথি] এর ছবি

আমরা তো দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন জাতি। এ্যাপ্লায়েন্সের সাথে রাউটারের সংযোগ দেব, এমনটা আশা করছেন কি ভাবে?

অতিথি লেখক এর ছবি

জাস্ট একটা আইডিয়া। এক্সেপ্টেন্স নিয়ে চিন্তিত নই। হাসি

তানজিম সাকীব

কল্যাণF এর ছবি

আইডিয়া ভালু, বেশ ভালু।

দ্রোহী এর ছবি

আইডিয়া ভাল। ভবিষ্যতের হোম অ্যাপ্লায়েন্সগুলো এমনই হবে। রেফ্রিজারেটর নিজে থেকে বাজারের ফর্দ দোকানে পাঠাবে। মোশন সেনসিটিভ লাইটতো প্রতি বাড়ির সামনেই দেখি।

তবে বাংলাদেশে বসে এসব এক্ষুণি চিন্তা করে লাভ নেই। আরো ২০-৫০ বছর যাক, তখন না হয় দেখা যাবে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।