রিকসা রিলোডেড ( শেষ পর্ব )

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: সোম, ১৯/০৭/২০১০ - ১২:১২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

- অনন্ত আত্মা

আমার জীবনের দীর্ঘতম রিকসা ভ্রমনের অভিজ্ঞতা হয়েছিল নোয়াখালী জেলার প্রত্যন্ত একটা গ্রামে। বন্ধু ফিরোজের বড় ভাইয়ের বিয়েতে আমরা তিন বন্ধু এসেছিলাম ফেনীতে। অনুষ্ঠান শেষে রিপন বলল,
‘আমার এক ছাত্রের বাড়ী এই কাছাকাছি’র একটা জায়গায়; চল কালকে সকালে একটা ঘুন্না দিয়া আসি।’
‘নো প্রবলেম ফ্যামিলি’র সদস্য বলে আমি কিছু বললাম না। সকাল বেলা ফেনী থেকে প্রায় এক ঘন্টার বাস ভ্রমন শেষে সেনবাগ নামক স্থানে এসে নামলাম; সেখান থেকে টেম্পোতে করে প্রায় চল্লিশ মিনিটের রাস্তা একটা বাজারে এসে পৌছালাম, পথে টেম্পোর যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে আরো ত্রিশ মিনিট দেরি হল। এই বাজার থেকে রিকসায় করে যেতে হবে রিপনের সেই ছাত্রের বাড়ী লেইম্যায় ( ভদ্র ভাষায় লেমুয়া )। এর মধ্যে কামরুল আবার গরম হয়ে গেছে রিপনের কাছাকাছি’র নমুনা দেখে। যাইহোক, রিকসা খোঁজা শুরু করলাম, কিন্তু কোন রিকসাই এত দূর যেতে চায় না। অতঃপর পোমায়-পামায় দুইটা রিকসা বহু কষ্টে ঠিক করলাম, ভাড়া দিতে হবে একুনে দেড়শো টাকা।
রিপন যেহেতু এই ভ্রমনের হোতা তাই গরম কামরুলকে রিপনের রিকসায় উঠিয়ে দিয়ে আমি আর ফিরোজ অন্য রিকসায় রওনা হলাম। এরপর শুরু হল অসীমের পথে আমাদের যাত্রা, চলছি তো চলছিই আর থামা-থামি নাই। প্রায় দুই ঘন্টা চলার পরে রিকসাওয়ালাকে জিজ্ঞেস করলাম –
- ভাই আর কদ্দুর?
- এইত আইসা পড়ছি।
- আর কতক্ষণ লাগবে?
রিকসাওয়ালা আমাদের আশ্বস্ত করে –
- বেশীক্ষণ না, ঐ যে তাল গাছ গুলান দেখেন?
বহু কষ্টে চোখ-টোখ কুঁচকে দিগন্তের দিকে তিন-চারটি তাল গাছ আবিস্কার করলাম।
- ও তাইলে ঐ তাল গাছের ঐখানেই আমরা নামবো?
- আরে না, ঐ যে তাল গাছগুলান দেখা যায়, তার পাশ দিয়া আমরা যামু।
ফিরোজ আর আমি একজন আরেক জনের দিকে তাকাই; ভাগ্যিস এখানে কামরুল নাই, থাকলে এই কথা শোনার পর এখানে নেমেই উল্টো দিকে হাঁটা শুরু করত।

এক-একজন মানুষের রিকসা ভাড়া করার পদ্ধতি এক-এক রকম। কেউ নরম, কেউ গরম আবার কেউ বা চরম। বন্ধু রিপন রিকসা ভাড়া করত এভাবে –
- এই দুষ্টু যাবে?
আমার এলাকার এক ছোট ভাইকে একদিন বাসস্ট্যান্ডে লক্ষ্য করছিলাম, ও রিকসা ভাড়া করছিলঃ
- ঐ যাবি?
রিকসাওয়ালা বলল –
- না ভাই যামু না।
- এইডা দেখসস (ওর হাতে একটা লাইটার ছিল, রিকসাওয়ালাকে সেটা দেখিয়ে) এক্কেরে .... ভিতরে ঢুকায়ে লাইট জ্বালায় দিমু।

এই জাতীয় গরম প্যাসেঞ্জারদের রিকসাওয়ালারা নিতে চায় না। তাই রিকসা ভাড়া করতে গেলে আমি নরম নীতিই অনুসরণ করি।
- এই যে ভাই যাবেন?
রিকসাওয়ালা যেতে না চাইলে –
- চলেন না যাই, দুইজনে গল্প করতে করতে যাওয়া যাবে।
রিকসাওয়ালা আবাক হয়ে বলে –
- আপনেতো এল্লা (একলা ), আর একজন কই?
- আরে আপনে আর আমি, দুইজনে গল্প করতে করতে যাব। চলেন, চলেন নাও ভাসায়া দ্যান।

তবে নরম, গরম যাই হন; রিকসায় উঠতে গেলে সব সময়ই রিকসাওয়ালাদের সাথে ভাড়া নিয়ে দর-দাম করেই ওঠা উচিত। কেননা দরা-দরি না করলে কিছু রিকসাওয়ালা মনে করে ‘মনে হয় ঠইকা গেলাম’, যে কারনে ভাড়া মিটানোর সময় প্রায়শই এ জাতীয় রিকসাওয়ালারা গ্যাঞ্জামের চেষ্টা করে।
একবার, এক রিকসাওয়ালা যা ভাড়া চেয়েছে তার উপর কোন কথা না বলে রিকসায় উঠে গিয়েছি; তো নামার সময় রিকসাওয়ালা বলছে –
- ভাই আর দুইডা টেকা দেন।
আমার বিস্মিত জিজ্ঞাসা –
- কেন?
- ভাই ভুলে কম ভাড়া চায়া হালাইছি, আসল ভাড়া বার টেকা। দুইডাইত মোডে টেকা, দেন না, কি আর হইব আপনার।
আমি বললাম-
- আরে মিয়া দুই টাকার বহুত দাম, ৯৮ টাকার লগে দুই টাকা যোগ না করলে জীবনে কি ১০০ টাকা হইত? দুই টাকারে কি এত সস্তা মনে কর?
এই চাঁপাবাজির পরে রিকসাওয়ালা ঐ দিন আর কিছু না বলে চলে গিয়েছিল।

আমার রিকসা বিষয়ক গবেষণাধর্মী (!?!) এবং শিক্ষামূলক (?!?) এই সিরিজ (দুই লাইন ল্যাখনের ক্ষ্যামতা নাই আবার কয় সিরিজ ) শেষ করছি আরেকটি গল্প দিয়ে।
বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসায় ফিরতে রিকসাওয়ালাদের যেই ঠিকানা বলি, সেটা হচ্ছে আমার এলাকার মসজিদের ঠিকানা। মসজিদটা আমাদের বাসার কাছেই (বন্ধু রিপনের সেই কাছে না, সত্যি সত্যিই কাছে), মসজিদ থেকে কিছুটা এগিয়ে দিতে রিকসাওয়ালারা সাধারণত আপত্তি করে না। কিন্তু একদিন এক রিকসাওয়ালা সেই কাজটিই করল –
- কইলেন মসজিদ, হের বাদে এত দূর নিয়া আইলেন?
কি কারনে সেই দিন মেজাজ খিঁচরে ছিল তাই গরম হয়েই বললাম –
- মসজিদ কইলে কি মসজিদেই নামতে হইব রে? মুখে দাড়ি দেইখা কি মনে করছস মসজিদে নাইমা ইমামতি শুরু করুম?
রিকসাওয়ালা আর কোন কথা না বাড়িয়ে চলে গিয়েছিল; চাঁপাবাজি যে আসলেই কোন কোন সময় কার্যকর তা আরেকবার প্রমাণিত হল

onnajagat@yahoo.com


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

এই "গবেষণাধর্মী (!?!) এবং শিক্ষামূলক (?!?)" নিবন্ধখানা আরো ২-এক পর্ব কন্টিনিউ করা যায় না? ভালোই লাগছিলো কিন্তু...দেখেন না, স্ম্‌তি খুঁড়ে-টুড়ে আরো দু-এক দান লেখা যায় কিনা?

অতিথি লেখক এর ছবি

আপাতত, তেমন হট্ কিছু মনে পড়ছে না, তাই নিবন্ধ খানা শেষ করতে হচ্ছে। নতুন কিছু মনে পড়লেই আবার, again, ফিরে, পুনরায় নতুন করে শুরু করব। লেখা পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

অনন্ত আত্মা

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- আমার নিজেরও ব্যাপক কিছু কাহিনি আছে রিকশা চালকদের সঙ্গে। তাঁদেরকে কখনো পাইলট, হুজুর, সম্রাট, মহারাজ, জাঁহাপনা— ইত্যাদি নানা রকম নামে সম্বোধন করে বলেছি, "লন যাই। ইরম করেন ক্যা!"

একবার পূজার দাওয়াতে পুরান ঢাকায় যাবো। তো রিকশা খুঁজতে খুঁজতে বাংলাদেশ ব্যাংকের এখানে চলে এসেছি। কেউই রাজী হয় না, কোনো ঝাড়ফুঁকেও কাজ হচ্ছে না!

তো এক কেতাদুরস্ত রিকশা চালক দেখে তাঁর সাথে আলাপ জুড়ে দিলাম রাস্তায় দাঁড়িয়েই।
- আরে, কী খবর!
- (ডানে বামে তাকিয়ে) আমারে কন মামা?
- তো আর কারে, আছেন কেমন?
- জ্বি, আল্লায় রাখছে ভালোই।
- বালবাচ্চা ভালো আছে? পরিবার?
- (একটু লজ্জা পেয়ে হেসে) মামায় যে কী কন! বিয়া করি নাই।
- আরে বাহ্, আপনের আর আমার মধ্যে তো দেখি অনেক মিল। আমিও বিয়া করি নাই হেহ হেহ হেহ...

এইবার তিনজনে মিলেই হাসি খিক খিক করে। আশেপাশের রিকশা চালকেরা হা করে তাকিয়ে থাকে। বুঝে না কী হচ্ছে এখানে। মাঞ্জামোঞ্জা মারা দুই আদম এক রিকশাঅলার লগে কীয়ের আলাপ করে!

এক চোট হাসাহাসির পর ছাড়লাম আসল শর।
- তা, যাইবেন নি?
- কই যাইবেন মামা?
- আরে আর কইয়েন না। যামু দাওয়াত খাইতে। দেরি হয়া গেছে। ইচ্ছা করতাছে দৌড়াইয়াই যাইগা। তাত্তাড়ি যাওন যাইবো।
- আরে খালি কন মামা কই যাইবেন। পঙ্খিরাজের লাগান উড়ায়া লয়া যামু গা!
- কাছে আসেন, লোকেশন বুঝায়া দেই।

তিনি কাছে আসেন। আমি তাঁর সিঁথি কাটা চুলকে ঢাকার ম্যাপ বানিয়ে লোকেশন বুঝাই-
- বুঝলেন, এইখানে আছি আমরা। তারপর এই যে এইদিকে সামনে গেলে মনে করেন ইত্তেফাক মোড়। এদিক দিয়া আরেকটু সামনে গেলে টিকাটুলীর মোড় পার হয়া বলধা গার্ডেন। (এইবার মাথায় এলোপাথারি আঙুল চালিয়ে) বাকিটা এই ম্যাপে দেখান যাইবো না। ফিল্ডে গিয়া দেখাইতে হইবো।
- পুরান ঢাকায় যাইবেন মামা?
(ব্যাটা এতোক্ষণ চুপ করে ছিলো। মনে হয় চুলে আঙুল চালানোতে মজাই পাইছে- এইটা আশরাফের মন্তব্য।)
- হ গো মামা। দাওয়াতে যামু। কিন্তু কেহ আমারে পুরান ঢাকায় লইয়া গেলো না। আমারে পুরান ঢাকায় যাইতে দেওয়া হচ্ছে না। এর জন্য দায়ী কে? দায়ী এই বর্তমান সরকার! (মুখটা একটু কালো করে)
- কী কন মামা। কেউ লইয়া যায় নাই, আমি লয়া যামু। উডেন খালি। আর কইয়া দিয়েন কোন মোড়ের পর কোন মোড়ের দিকে যাইতে হইবো!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাবছিলাম অ আ'র লেখা নিয়ে দু কলম লিখব। তো ধুগোদার মন্তব্য পড়ে সেদিকে আর যাচ্চিনে! সাধু সাধু ‍‍!!!! কী যে ভাল লাগল কী বলব‍!
জহিরুল ইসলাম নাদিম

অতিথি লেখক এর ছবি

মূল কাহিনী হল নরম কথা, কথা নরম হইলে সব হয়। আগেকার পাবলিকরা কইত কথায় চিড়া ভিজে না, কথায় আসলে সব ভিজে; দেখেন না, আজকালকার পোলাপানরা ফোনে কথা কইয়াই সব কিছু ভিজাইয়া ফালায়। সো.. কথা ডাস ম্যাটার..
যাই হোক, ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য আর আপনার গল্পের জন্যও।

অনন্ত আত্মা

ধুসর গোধূলি এর ছবি

নরম-গরম, কোনো কথায়ই অনেক সময় চিড়া ভিজে নারে ভাই। সিলেটে একবার কাহিনি ঘটলো, রিকশা চালককে ভাই, বেরাদর, মামু, চাচা, খালু, ফুফা সব ডেকেও যখন রাজী করানো যাচ্ছিলো না, তখন পাইলট, ক্যাপ্টেন, সারেং, অ্যাস্ট্রোনট ডেকেও লাভ হয় নি। লাভ হয় নি রিকশার সামনে দুইহাত প্রসারিত করে ব্যারিকেড দিয়েও। সাথে বন্ধুর ছোটবোন থাকাতে প্রাণ খুলে গালাগালিও করতে পারছিলাম না আমরা তিন বন্ধু। এক পর্যায়ে ঠিক করেছিলাম ধরে ধরে সবার চাক্কার পাম ছেড়ে দিবো!

আমার এক বন্ধু ছিলো, ছিলো মানে এখনও আছে। এই ব্যাটা কোনো কথার ধার ধারতো না। কোনো রিকশা চালক কোথাও যেতে রাজী না হলেও হুড়মুড়িয়ে রিকশায় উঠে বসতো। আর নামতো না। বলতো, "কোনো একদিকে তো যাইবেন, ঐদিকেই যামু আইজকা আপনের লগে!"
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

অতিথি লেখক এর ছবি

একেই বলে সি, ও, পি, এ, এল; নো ওয়ে আউট।

অনন্ত আত্মা

অতিথি লেখক এর ছবি

ধুগোদা, আপনাকে স্যালুট। আপনি পারেনও বটে

নীড় সন্ধানী এর ছবি

‍‌রিকশা নিয়ে আমারো একটা গবেষণাধর্মী লেখা লিখতে ইচ্ছে করতেছে। শেষের গল্পটা হুবহু মিলে গেছে।

-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

অতিথি লেখক এর ছবি

আসলে এসব আমাদের রোজকার ঘটনাগুলোরই বিত্তান্ত, তাই মিল তো খুঁজে পাবেনই, বরংচ মিল না পেলেই বোঝা যেত যে আমি চাঁপার সৎব্যবহার করছি।
লেখা পড়ার আর মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।

অনন্ত আত্মা

বাউলিয়ানা এর ছবি

আপনে রিকসা নিয়া লেমুয়া গেছিলেন! সারছে!

আশেপাশের লন্ডন বাজার না জানি কি একটা এলাকায় আমার যাইতে একদিন আর আসতে একদিন মোট সাত দিন গায়ের ব্যাথায় অবস্থা কেরাসিন আছিল!

সে কষ্টের কথা মনে হইলে এখনও মনে কয় নিজের নিজের হাত নিজে কামড়াই, কোন দুঃখে যে রিকসা নিয়া রওনা দিছিলাম!

অতিথি লেখক এর ছবি

লেইম্যা কিন্তু আমার জানা মতে ঐ এলাকায় দুইটা আছে। একটা চিটাগাং রুটে আর একটা নোয়াখালী রুটে। তবে আপনার গায়ে যেহেতু ব্যাথা হইছে তাইলে আমি যেই লেইম্যায় গেছিলাম আপনেও সেই লেইম্যারই হানি খায়া আইছেন।
ভাল থাকবেন আর কামড়া-কামড়ি করিয়েন না, লোকে ভুল বুঝতে পারে।

অনন্ত আত্মা

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

খুব ভালো লাগলো লেখাটা। বিশেষ করে বিকসাওয়ালাদের সাথে ডায়ালগ-গুলো চমৎকার। সিরিজ ছোট হওয়াই ভালো, তাতে মজা থাকে বেশী।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ অসংখ্য।

অনন্ত আত্মা

অতিথি লেখক এর ছবি

চমৎকার
___________
ত্রিমাত্রিক কবি

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ।

অনন্ত আত্মা

অতিথি লেখক এর ছবি

"মসজিদ কইলে কি মসজিদেই নামতে হইব রে? মুখে দাড়ি দেইখা কি মনে করছস মসজিদে নাইমা ইমামতি শুরু করুম?"
চরম মজা পাইছি... হাসি

হিমাগ্নি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।