গাড়ি কেনা

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: মঙ্গল, ২৪/০৮/২০১০ - ৯:২১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

লিন্ডা আমেরিকান স্টাইলে স্কার্ট পড়া। উচ্চতা মাঝারি। গায়ের বর্ণ দেখে তার জাতীয়তা বলা কঠিন। যে সময়ে তার আসার কথা তার আগেই এসেছিল। ঝেং তাকে অভ্যর্থনা জানালো সে আসার পর। তার তর সইছিল কীনা বলা কঠিন। আর লিন্ডা কথা বলার পর বোঝা গেল, সে ন্যাটিভ নয়। গাড়িতে ওঠার পর ফোনে কারো সাথে কথা বলল স্প্যানিশে। ঝেং এর বন্ধু ডাল্টন পুরো ব্যাপারটা ম্যানেজ করছিল। ঝেং যেহেতু তখনও গাড়ি চালানো রপ্ত করতে পারেনি, তাই সে-ই গাড়ি চালাচ্ছিল। গাড়িটি মন্দ নয়, তবে কিছুটা পুরনো। গাড়ি ঘুরানোর সময় কিছু শব্দ করছিল, যা ভাল গাড়ির লক্ষণ নয়। পরীক্ষা-চালনা শেষে ওরা বসল স্টার বাক্স-এ দামাদামির জন্য।

স্টার বাক্স-এ লোকজন পড়াশুনাও করে চা-কফি পানের পাশাপাশি। তবে তা বেশীরভাগ ক্ষেত্রে সাহিত্য বা আর্টসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। বলা যায়, আড্ডার জন্য ভালো। ওরা তিনজন এসেছে দাম স্থির করার জন্য; হাতে কফি নিয়ে টেবিলে বসে এ কাজ মন্দ নয়। লিন্ডা চার হাজার দিয়ে দাম শুরু করে; ঝেং আগে থেকে মনস্থির করেছিল, সে তিন হাজার দুইশত বলবে। কিন্তু সে কেন যেন স্থিরকৃত দামের চেয়ে দুইশত বেশী বলে ফেলে। ডাল্টন তার বিরক্তি চেপে রেখেছিল এই ভেবে, সে নিযে গাড়ি কিনছে না। লিন্ডা কথা চালার ফাঁকে তার চা শেষ করে ফেলে; অন্য দুইজনের তখনও সময় দরকার।

গাড়ি কেনার ব্যাপারটা বাস্তব না স্বপ্ন এ রকম একটা দ্বিধা নিয়ে ঝেং ঘুম থেকে ওঠে ডাল্টনের দরজায় টোকা দেয়। সে লিন্ডার কথা বলে। ডাল্টন হাসে। ঘোর থেকে বেরিয়ে বাস্তবের দরোজায় আসতে ঝেং এর লাগে কিছু সময়। খাবার টেবিলে ডাল্টন মজা করে, “আহ্‌ লিন্ডা, ওহ্‌ লিন্ডা”। ঝেং মনে মনে তার পিন্ডি চটকায়। কিন্তু লিন্ডা তার মাথায় বসবাসের জায়গা পেয়ে যায়। এরপর এক বছর মাঝে মাঝেই ডাল্টনের দরজায় টোকা পড়ে।

একদিন ওরা দু’জন স্টার বাক্স-এ যায়, কেন যেন সুন্দর চকচকে একটা দিন ঝড়ো হয়ে যায়। কফি হাতে চেয়ারে বসা ঝেং তার সামনের কাঁচের ভিতর দিয়ে দেখে বিস্ময়ে, সেই মেয়েটি একটা সাদা গাড়ি থেকে নামছে, প্রচন্ড বাতাসে তার চুল আর কাপড় উড়িয়ে নিতে চাইছে। ওর প্রচন্ড ইচ্ছা করছে বাইরে গিয়ে মেয়েটিকে হাত ধরে ভিতরে নিরাপদে নিয়ে আসতে। তবে তার কল্পিত ডাল্টনের অট্টহাসি ভিতরের ইচ্ছেটাকে চুপসে দিয়েছে। সেই ঝড়ো বাতাসের মধ্যেই মেয়েটি ভিতরে এসে তাদের পাশের টেবিলে বসে চায়ের অর্ডার দেয়। ইতিমধ্যে দু’জন ভারী মানুষ ভিতরে ঢুকে পড়ে। কাউন্টারে তারা কিছু একটা নিয়ে হৈ চৈ শুরু করে। তারপর শোনা যায় কয়েকটা গুলির শব্দ।

তারপর অনেক দিন পার হয়ে গেছে। ঝেং ফিরে গেছে তার নিজ দেশে। তার বয়স এখন ৭০। সে যাকে বিয়ে করেছিল তার নামও লিন্ডা। লিন্ডা দু’বছর আগে গত হয়েছে। ছেলেমেয়েরাও কাছে নেই। এখন বাগান করে তার অবসর জীবন কাটছে। কী মনে করে একদিন সে ডাল্টনকে লেখে এটা জানতে চেয়ে যে, স্টার বাক্স-এর কোন ঘটনা আদৌ সত্য ছিল কিনা। উত্তরে সে যা লেখে তার একটা অংশ এ রকম, “তুমি যখন হাসপাতালের বিছানায় জ্ঞান ফিরে কথা বলছ, তখন লোকাল ট্রিবিঊনে খবর ছেপেছে, স্টার বাক্স-এ গোলাগুলি, একজন নিহত, দুইজন আহত। নিহতের নাম লিন্ডা। সে তার গাড়ি বিক্রির প্রাথমিক আলাপের জন্য সেখানে গিয়েছিল”। ঝেং পুরো পত্রটি পড়ার পর স্তব্ধ হয়ে যায়। সে নিজে কখনো কি হাসপাতালে ছিল? তাই, পরে ভাবে, এই বুড়ো বয়সেও ডাল্টনের মস্করা করার অভ্যাসটা শেষ হয়ে যায় নি।

দূরের তেপান্তর
dur.prithibir.tepantorএটgmail.com


মন্তব্য

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

বুঝলাম না। মন খারাপ

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

অতিথি লেখক এর ছবি

দুঃখিত। গল্পের গতি মসৃণ হয়নি। আরো ঘষামাজা মনে হয় দরকার ছিল।

দূরের তেপান্তর

অতিথি লেখক এর ছবি

ঘটনার কোনও যোগসূত্র খুঁজে পেলাম না। একটু ক্লিয়ার করবেন কি?

রাতঃস্মরণীয়

অতিথি লেখক এর ছবি

স্বপ্ন আর বাস্তব কাকতালের সাথে মিশে গেছে হয় তো।

দূরের তেপান্তর

প্রখর-রোদ্দুর এর ছবি

ভাই ঘটনার প্যাচ বেশি লেগে গেছে বুঝে উঠতে পারছি না ।
দুঃখ প্রকাশ মন খারাপ

অতিথি লেখক এর ছবি

আমিও দুঃখ প্রকাশ করছি। গল্পের ব্যাপ্তি ছোট হওয়ায় সমস্যাটা চোখে পড়ছে।

দূরের তেপান্তর

অতিথি লেখক এর ছবি

ওস্তাদের মাইর শেষ রাইতে... পড়ে এই কথাটাই মনে হলো!

--- থাবা বাবা!

অতিথি লেখক এর ছবি

তাই নাকি!

দূরের তেপান্তর

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

তাড়াহুড়া করার তো কোনো দরকার ছিলনা। একটা কাজ করলে কেমন হয়, আপনি গল্পটা ঠিক যে আকারে লিখলে ঘটনা পাঠকের কাছে পরিষ্কার হয় অমন আকারে লিখে মডারেটরদের বরাবর মেইল করে দিয়ে বলুন এই গল্পটার সংশোধিতরূপ হচ্ছে ওটা। আমি ঠিক নিশ্চিত না এভাবে সম্পাদনা করা যায় কিনা, তবু চেষ্টা করতে অসুবিধা কোথায়। মাঝে আপনার লাভ হবে এই যে ঠিক গল্পটা তাতে লেখা হয়ে যাবে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার মতামতের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। চেষ্টা করে দেখি, তবে আমি ভয়াবহ রকম আলসে।

দূরের তেপান্তর

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

লেখালেখিতে আলসেমি করলে মনে হবে আপনি কোনরকমে একটা কিছু লিখেই খালাস হতে চান, যেটা পাঠকদের প্রতি কিছুটা দাম্ভিক মনোভাবের প্রকাশ। গল্পটা সুন্দর করে এডিট করে আবার পাঠিয়ে দিতে অনুরোধ করছি। আমার মনে হয় গল্পটা সুপাঠ্য হলে ভালোই লাগবে।

অতিথি লেখক এর ছবি

একটি বিশেষ দিকে আলোকপাত করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
এখন গল্পটির সংশোধিতরূপটিই পোষ্টে দেখা যাচ্ছে।

দূরের তেপান্তর

prantorbuet এর ছবি

আপনি কি final destination এর থীমে লিখতে চাচ্ছিলেন? আরেকটু বিস্তারিত লিখলে ভাল হত।

অতিথি লেখক এর ছবি

না, এটি ঐ গল্প বা সিনেমার থিমে নয়। কিছুটা বাস্তবতা, অনেকখানি কল্পনার মিশ্রণ। আর এটি যদি হরর গল্পের মত দেখায় তাহলে তা আমার ব্যর্থতা, কারণ তা লেখতে চাই নি।
লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

দূরের তেপান্তর

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।