বিজয় ব্যবহারকারীরা কেন অভ্র ব্যবহার শুরু করবেন

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: মঙ্গল, ০৭/০৯/২০১০ - ৯:১৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কম্পিউটারে বাংলা লিখার সফটওয়্যার বিজয় ব্যবহারকারীদের উদ্দেশ্যে অভ্র কীবোর্ড সফটওয়্যার ব্যবহারের আহবান জানিয়ে এখানে কিছু যুক্তি উপস্থাপন করা হয়েছে। যেমনঃ কীবোর্ড লেয়াউট সম্পাদনের মাধ্যমে অভ্র দিয়ে বিজয় লেয়াউট ব্যবহার; বিজয়ের লাইসেন্স, পোর্টেবিলিটি ও বিবিধ সমস্যা; অভ্র'র লিনাক্স, ফোরাম ও ইউনিকোড সুবিধা; ইত্যাদি। এ থেকে বোঝা যায়, বিজয় সফটওয়্যার ছেড়ে অভ্র ব্যবহার করা যৌক্তিক।

অভ্র কীবোর্ড
যে কোনো ব্যক্তির পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে যে কোনো সফটওয়্যার ব্যবহার করার। এতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। যারা অভ্র কীবোর্ড সফটওয়্যার ব্যবহার করে, তারা এটি ব্যবহার করে খুব সন্তুষ্ট। বিনামূল্যে এত ভালো সফটওয়্যার ব্যবহারের জন্যে অভ্র টিমের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বরূপ অভ্র'র প্রচার করা হয়। কেননা, ঐ ব্যক্তি পরিপূর্ণ মানুষ নয় যতক্ষণ পর্যন্ত সে নিজের জন্যে যা ভালো মনে করে, তা অন্য মানুষের জন্যে ভালো মনে না করে। তাই অভ্র কীবোর্ড সফটওয়্যারের গুণাবলী ও বিজয় সফটওয়্যারের ত্রুটি উল্লেখ করে, অভ্র ব্যবহারের অনুরোধ রাখা।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ আপনি যদি ম্যাক অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করেন বা প্রিন্ট মিডিয়াতে কাজ করেন, তবে এই লেখাটি আপনার জন্যে নয়।

কীবোর্ড লেয়াউট স্বাধীনতা
অভ্র দিয়ে ইচ্ছে মত যে কোনো কীবোর্ড লেয়াউট বানানো ও সাজানো যায়। অভ্র'র কীবোর্ড সফটওয়্যারের সাথে দেয়া 'Keyboard Layout Editor' প্রোগ্রাম দিয়ে যে কোনো custom কীবোর্ড লেয়াউট নিজের ইচ্ছে মত বানানো যায়। এমনকি, যে কীবোর্ড লেয়াউটগুলো বর্তমানে কম্পিউটারে আছে (যেমনঃ বর্ণনা, প্রভাত, জাতীয় ইত্যাদি), সেগুলোকে পুনোর্বিন্যাস করা যায়। এই সব custom কীবোর্ড লেয়াউট গুলোকে ইচ্ছে মাফিক নাম দিয়ে সংরক্ষণ করে, যে কোনো কম্পিউটারের সাথে কপি/শেয়ার করে ব্যবহার করা যায়। তাই, অভ্র দিয়ে কীবোর্ডের বোতামগুলোতে বাংলা অক্ষরকে বিন্যাস ও পুনোবিন্যাস করা কোনো ঘটনাই না। এমন কি অভ্র কিবোর্ড সফটওয়্যার দিয়ে বিদেশী ভাষার কীবোর্ড লেয়াউট পর্যন্ত বানানো যায়। যেমনঃ জাপানী।

অভ্র দিয়ে বিজয় লেয়াউট
যেহেতু অভ্র দিয়ে যে কোনো কীবোর্ড লেয়াউট ব্যবহার করা যায়, তাই বিজয় সফটওয়্যারের সাথে যে বিজয় কীবোর্ড লেয়াউট থাকে সেটাও অভ্র দিয়ে ব্যবহার করা যায়। তার জন্যে প্রয়োজন, কীবোর্ডের বোতাম গুলোতে বাংলা অক্ষরগুলোকে এমন ভাবে সাজানো যেটা বিজয় কীবোর্ড লেয়াউটের সাথে পুরোপুরি মিলে যায়। অভ্র’র সাথে দেয়া 'Keyboard Layout Editor' প্রোগ্রাম দিয়ে তা অতি সহজে করা যায়। এরপর, এভাবে তৈরী কীবোর্ড লেয়াউটকে নতুন নাম দিয়ে উইন্ডজের ‘C:\Program Files\Avro Keyboard\Keyboard Layouts' ফোল্ডারে সংরক্ষণ করা হলে, তা অভ্র দিয়ে ব্যবহার উপযোগী হয়ে যাবে। এখান থেকে এরকম একটি বিজয় কীবোর্ড লেয়াউট ডাউনলোড করা যাবে।
অনেকে ইউনিবিজয় কীবোর্ড লেয়াউটের কথা জানেন। এটি অভ্র’র তৈরী করা একটি লেয়াউট যা বিজয়ের সাথে শুধু ৮টি কী’তে পার্থক্য রয়েছে। বাস্তব উদাহরণ থেকে দেখা গেছে, যারা বিজয় সফটওয়্যার ছেড়ে অভ্র ব্যবহার শুরু করেছেন, তারা খুব সহজেই ইউনিবিজয় কীবোর্ড লেয়াউট ব্যবহার করতে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন। ইউনিবিজয় কীবোর্ড লেয়াউট ডাউনলোড করে, উপরে উল্লেখিত ফোল্ডারে স্থাপন করে ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে দেখা যাচ্ছে, বিজয় সফটওয়্যার ব্যবহারকারীদের জন্যে অভ্র দিয়ে লিখা শুরু করতে কোনো ঝামেলা নেই। তাদের অভ্যস্ত লেয়াউট দিয়েই অভ্র সফটওয়্যারের সাহায্যে বাংলা টাইপ করা যায়।

লাইসেন্স
অভ্র হচ্ছে একটি ফ্রীওয়্যার বা ফ্রী সফটওয়্যার। অর্থাৎ, এটাকে ইচ্ছে মত ব্যবহার ও বিতরণ করা যায় বিনামূল্যে। অপর দিকে বিজয় হচ্ছে, ইউলা (EULA-End User License Agreement) লাইসেন্সের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। যার শর্ত হচ্ছে – বিজয় সফটওয়্যারের একটি কপি শুধু একটি কম্পিউটারে ব্যবহার করা যাবে। এই বিজয় সফটওয়্যার বন্ধুদের সাথে কপি করে শেয়ার করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কোনো ব্যক্তি যদি তার ডেস্কটপ ও লেপটপ, এই দুটি কম্পিউটারে বিজয় সফটওয়্যার ব্যবহার করতে চায়, তবে তার দুটি লাইসেন্স কিনতে হবে। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনে জাতীয় পরিচয় পত্রের তথ্য ভান্ডার তৈরীর জন্যে ব্যবহৃত লেপটপগুলোতে বিজয় সফটওয়্যার ব্যবহার করার জন্যে ৫ কোটি টাকা লাইসেন্স ফী দাবী করা হয়েছিল। নির্বাচন কমিশন যদি নিজেরা বাংলা টাইপ করার এরকম একটা সফটওয়্যার তৈরী করত, তবে ৫ লাখ টাকাও খরচ হবার কথা না। ওমিক্রন ল্যাবের পক্ষ থেকে মেহদী হাসান খান অভ্র সফটওয়্যারকে সেখানে বিনামূল্যে ব্যবহার করতে দেন।
কোনোভাবে যদি বিজয় সফটওয়্যারের ইন্সটলার সিডিটি (যেমনঃ স্ক্র্যচ পড়ার কারণে) পড়া না যায়, তবে বিজয় কোম্পানি ব্যবহারকারীকে আর একটি সফটওয়্যার সিডি দিবে না। বা কোনো বন্ধু থেকে কপি করে বিজয় সফটওয়্যার ব্যবহার করা যাবে না। কোনো ওয়েব সাইট থেকেও এটা ডাউনলোড করা যায় না। কোনো ব্যক্তি যদি তার বাংলাদেশে ব্যবহৃত বিজয়ের লাইসেন্স কপি আমেরিকাতে নিয়ে যায় এবং সেখানের অফিস ও বাসার কম্পিউটারে ব্যবহার করতে চায়, সেটা লাইসেন্স মোতাবেক-অনৈতিক। তার জন্যে অবশ্যই আলাদা এবং নতুন করে দুটি লাইসেন্স কিনতে হবে। নয়ত, ব্যবহারকারী কপিরাইট লংঘনের দায়ে অভিযুক্ত হবে। এটি একটি বড় ব্যপার। কেননা, এই অভিযোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার ভালো উপায় (অভ্র ব্যবহার) থাকার পরও যদি কেউ কপিরাইট লংঘন করে তবে সেটা অমার্জনীয় বলা যায়।

পোর্টেবল
অভ্র’র standard edition কে ডেস্কটপ/লেপটপ কম্পিউটারে ইন্সটল করে ব্যবহার করা যায়। আবার portable edition কে ইন্সটল না করে ব্যবহার করা যায়- USB থেকে। এই পোর্টেবল ভার্সনের সাথে বাংলা ফন্টও দেয়া আছে। অর্থাৎ, যে কোনো কম্পিউটারে যে কোনো সময়ে অভ্র কীবোর্ড সফটওয়্যার ব্যবহারে কোনো অসুবিধা নেই। বিজয় ব্যবহার করলে এই সুবিধা নেই। সাইবার ক্যফেতে গেলে বা অন্যদের কম্পিউটারে, যদি বিজয় ইন্সটল করা না থাকে তবে বাংলা লিখা সম্ভব না। অন্য কারো লাইসেন্স করা কপি সেখানে ইন্সটল করা যাবে না, কারণ সেটা বিজয় লাইসেন্সে অনুমোদিত নয়।
বিজয় সফটওয়্যারের পক্ষ থেকে পোর্টেবল ভার্সন বের করার কোনো সম্ভাবনা নেই। কারন, প্রোপ্রাইটরি সফটওয়্যারের মূলনীতি হচ্ছে, প্রত্যেকটি কম্পিউটারের জন্যে আলাদা লাইসেন্স ফী। তাই একবার বিজয় পোর্টেবল ভার্সন কিনে সেটা যে কোনো কম্পিউটারে ব্যবহার করা কল্পনাও করা যায় না।

ইউনিকোড
অভ্র কীবোর্ড সফটওয়্যার প্রথম থেকে ইউনিকোডের উপর প্রতিষ্ঠিত। তাই এটি দিয়ে স্বাচ্ছন্দের সাথে ইউনিকোডে বাংলা লিখা যায়। ফলে, ইমেইলে, ওয়েবপেজে অভ্র দিয়ে বাংলা লিখতে কোনো সমস্যা হয় না বললেই চলে। বিজয় প্রথম থেকে আসকির উপর নির্ভরশীল। পরবর্তীতে ইউনিকোড সমর্থন যুক্ত করা হলেও ইমেইলে, ওয়েবপেজে বিজয় দিয়ে বাংলা লিখতে কিছু সমস্যা দেখা যায়।

ফ্রী আপগ্রেড
অভ্র কীবোর্ড সফটওয়্যার যেমন ফ্রী, তেমনি এর যে কোনো নতুন ভার্সনও ফ্রী। কিন্তু, বিজয় সফটওয়্যারের কোনো আপগ্রেড করতে হলে তার জন্যে অবশ্যই টাকা খরচ করতে হয়।

বিজয় সমস্যা
বিজয় সফটওয়্যারের অনেক ত্রুটি সুবিধিত। যেমনঃ প্রোগ্রাম বন্ধ হয়ে যাওয়া, অক্ষর (বিশেষ করে যুক্তাক্ষর) ভেংগে যাওয়া, উইন্ডজের সাথে বা অন্য এপ্লিকেশন প্রোগ্রামের সাথে সাংঘর্ষিক আচরণ ইত্যাদি।

ফোরাম
অভ্র’র রয়েছে একটি শক্তিশালী ব্যবহার গোষ্টি যারা অমিক্রণ ল্যাবের ফোরামের মাধ্যমে যোগাযোগ করে থাকে। সেখানে যে কোনো ব্যবহারকারী তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরতে পারে। কখনো কিছু জানার থাকলে, তা প্রশ্ন করতে পারে। অমিক্রণ ল্যাবের সাম্প্রতিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবগত থাকতে পারে। অভ্র কীবোর্ডের উন্নয়ন/পরিবর্তন/পরিবর্ধনের জন্যে নতুন ফিচারের পরামর্শ দিতে পারে। বিজয়ের ক্ষেত্রে এরকম কিছু নেই।

লিনাক্স
অভ্র কীবোর্ড সফটওয়্যারের লিনাক্স ভার্সন রয়েছে। অর্থাৎ, লিনাক্স বেজড যে সব অপারেটিং সিস্টেম রয়েছে (যেমনঃ লিনাক্স-মিন্ট, ডেবিয়ান, উবুন্তু ইত্যাদি), সেগুলোতে অভ্র কীবোর্ড ব্যবহার করা যায় অনায়াসে। বিজয় কীবোর্ডের কোনো লিনাক্স ভার্সন নেই।

উপরের আলোচনা থেকে দেখা যায়, বাংলা টাইপ করার জন্য অভ্র কীবোর্ড সফটওয়্যার অতুলনীয়। তাই আসুন একে ছড়িয়ে দেই সবার মাঝে।

আনোয়ারুল আজিম
azimcs এট জিমেইল ডট কম

-------
এই ব্লগটি অভ্র কীবোর্ড সফটওয়্যার দিয়ে লেখা। অভ্র হোক সর্বত্র।


মন্তব্য

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

চলুক

সাফি এর ছবি

কি-বোর্ড লেআউট এডিটরটা একটা জটিল উদ্যোগ। দেখি কাগু এখন কারে মামলার ভয় দেখায়।

সাহাদাত উদরাজী [অতিথি] এর ছবি

আজিম ভাই,
সালাম নিবেন। বেশ সুন্দর বলেছেন। কাগু এখন ভাল মুডে আছেন বলে মনে হয়।কাগু এখন মিনিস্টার হতে চান বলে মনে হচ্ছে।

অতিথি লেখক এর ছবি

ওয়া আলাইকুমুস সালাম উদরাজী ভাই। ধন্যবাদ।

সোহাগ [অতিথি] এর ছবি

এখানে অভ্রের জন্য আরেকটি বিজয় লেআউট আছে। এটি সম্পূর্ণ বিজয় লেআউটের মত। বিজয় ব্যবহারকারীরা ব্যবহার করে দেখতে পারেন।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ। ডাউনলোড লিংকটা ওমিক্রন ল্যাবের ফোরাম না হলে ভালো। কি দরকার ঝুঁকি রাখার।
-আনোয়ারুল আজিম

অভ্রনীল এর ছবি

১।
এই লেখাটিতে বিভিন্ন কিলেয়াউট ডাউনলোড করার জন্য গুগলসাইটের যে লিংক ব্যবহার করা হয়েছে, সেটার সাথে নিশ্চয়ই অমিক্রন ল্যাবের কোন সংযোগ নেই? যদি সংযোগ না থেকে থাকে তাহলে সাইটের অ্যড্রেসে এবং সাইটের হেডারে Avro Keyboard উল্লেখ করায় এগুলোকে অভ্র'র ডেভেলপার দ্বারা চালিত সাইট বলে ভুল হয়। দয়া করে বিষয়টি একটু দেখবেন।

২।

অভ্র কীবোর্ড সফটওয়্যারের লিনাক্স ভার্সন রয়েছে।

সঠিক তথ্যটা হবে "অভ্র ফনেটিক" এর লিনাক্স ভার্সন আছে। অভ্র বলতে বেশিরভাগ লোক "ফনেটিক" বুঝলেও অনেকেই বুঝেন "সকল কি লেয়াউট সমৃদ্ধ সম্পূর্ণ অভ্র" সফটওয়্যারটিকে। উবুন্টুতে বাই ডিফল্ট ইউনিজয়, প্রভাত ও ন্যাশনাল কিবোর্ড দেয়া থাকে। তাই সেসবের জন্য আলাদাভাবে সফটওয়্যার ইন্সটলেশনের দরকার পড়েনা।

৩।
সমস্যা হচ্ছে লোকজন অনেকক্ষেত্রেই অভ্র কিংবা পোর্টেবল অভ্রকে বিজয়ের বিকল্প হিসেবে দেখেনা। এদের মধ্যে আছে সরকারী চাকুরে আর প্রোফেশনাল টাইপিস্টরা। এদের মাঝে বিজয় কী ভয়ানক রকমের মূল গেড়ে বসেছে সেটা জানতে চাইলে এই টপিকটা পড়ে দেখতে পারেন। সরকারী অফিস আদালতে ও প্রিন্টিং মিডিয়ায় বিজয়কে রিপ্লেস করতে না পারলে অভ্র ছড়িয়ে দেয়াটা খুব কঠিন হবে।

_______________
.:: উবুন্টু ও মিন্টকে ছড়িয়ে দিন সবার মাঝে! ::.

অতিথি লেখক এর ছবি

১)

এই লেখাটিতে বিভিন্ন কিলেয়াউট ডাউনলোড করার জন্য গুগলসাইটের যে লিংক ব্যবহার করা হয়েছে, সেটার সাথে নিশ্চয়ই অমিক্রন ল্যাবের কোন সংযোগ নেই? যদি সংযোগ না থেকে থাকে তাহলে সাইটের অ্যড্রেসে এবং সাইটের হেডারে Avro Keyboard উল্লেখ করায় এগুলোকে অভ্র'র ডেভেলপার দ্বারা চালিত সাইট বলে ভুল হয়। দয়া করে বিষয়টি একটু দেখবেন।

-নিবন্ধে দেয়া গুগল সাইটের ডাউনলোড লিংকগুলোর সাথে ওমিক্রন ল্যাব বা অভ্র ডেভেলপারদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। এটি ব্যবহারকারী দ্বারা তৈরী সাইট। গুগল সাইটটির ওয়েব এড্রেসে ও হেডারে Avro Keyboard থাকার জন্যে দুঃখিত। এ ব্যপারটি ধরিয়ে দেয়ার জন্যে আপনাকে ধন্যবাদ।
অথিতি লেখক হিসেবে মূল নিবন্ধ সম্পাদনের উপায় না থাকায়, সেখানে ঠিক করা গেলো না বলে দুঃখিত। এখানে নতুন ডাউনলোড লিংক।
বিজয় কীবোর্ড লেয়াউট
ইউনিবিজয় কীবোর্ড লেয়াউট

২)

সঠিক তথ্যটা হবে "অভ্র ফনেটিক" এর লিনাক্স ভার্সন আছে। অভ্র বলতে বেশিরভাগ লোক "ফনেটিক" বুঝলেও অনেকেই বুঝেন "সকল কি লেয়াউট সমৃদ্ধ সম্পূর্ণ অভ্র" সফটওয়্যারটিকে। উবুন্টুতে বাই ডিফল্ট ইউনিজয়, প্রভাত ও ন্যাশনাল কিবোর্ড দেয়া থাকে। তাই সেসবের জন্য আলাদাভাবে সফটওয়্যার ইন্সটলেশনের দরকার পড়েনা।

-লিনাক্স ও উবুন্তুতে অভ্র ও বাংলার ব্যবহার বিশদভাবে উল্লেখ করে দেয়ার জন্যে ধন্যবাদ। বিজয়ের সাথে অভ্রকে তুলনা করতে নিবন্ধে এই পয়েন্টটির উল্লেখ হয়েছিল।

৩)

সমস্যা হচ্ছে লোকজন অনেকক্ষেত্রেই অভ্র কিংবা পোর্টেবল অভ্রকে বিজয়ের বিকল্প হিসেবে দেখেনা। এদের মধ্যে আছে সরকারী চাকুরে আর প্রোফেশনাল টাইপিস্টরা। এদের মাঝে বিজয় কী ভয়ানক রকমের মূল গেড়ে বসেছে সেটা জানতে চাইলে এই টপিকটা পড়ে দেখতে পারেন। সরকারী অফিস আদালতে ও প্রিন্টিং মিডিয়ায় বিজয়কে রিপ্লেস করতে না পারলে অভ্র ছড়িয়ে দেয়াটা খুব কঠিন হবে।

-তার জন্যে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাই। অভ্র'র প্রচার-প্রসার সংক্রান্ত আলোচনা -"অভ্র-বিজয় সমঝোতা পরবর্তী উপাখ্যান"

শিপলু এর ছবি

খুব ভাল কাজ করেছেন আজিম ভাই।
তবে বিজয়ের পরিবর্তে অভ্রর সাথে সাথে প্রভাতের নামটাও বলা জরুরী বলে আমি মনে করি।
কারণ অভ্রতে একটা শব্দ লিখতে হলে কয়েকটা অক্ষর বেশি টাইপ করতে হয়, কারণ এটা ফিক্সড লেআউট না।
কিন্তু প্রভাত ফিক্সড লেআউট। তাই বেশি টাইপ করতে হয় না। আর দুটোই ফনেটিক এবং ইউনিকোড।
প্রভাত টাকে একটু হাইলাইট করা উচিৎ বলেই আমার মনে হয়।

রোমেল চৌধুরী [অতিথি] এর ছবি

বাহ, চমৎকার তো! আমিতো বাংলা লেখার জন্য অভ্র ছাড়া আপাততঃ আর কিছুই ব্যবহার করছি না, এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম। বানানের নির্ভুলতা পরীক্ষার বিষয়টি কি এতে আছে? না থাকলে কি জুড়ে দেয়া সম্ভব? তাহলে তো আর কোন চিন্তাই থাকত না! মাথা পাতলা করে ঘিলুর পুরোটাকে কল্পনার ডানা মেলার কাজে ব্যবহার করা যেত।
এমন কাজের একটি লেখা উফার দেয়ার জন্য শুধু ধন্যবাদ নয়, অকুন্ঠ কৃতজ্ঞতা!

guest write rajkonya এর ছবি

আমিতো বাংলা লেখার জন্য অভ্র ছাড়া আপাততঃ আর কিছুই ব্যবহার করছি না, এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম।

যেদিন থেকে অভ্র ব্যবহার করছি, সেদিন থেকে আমিও এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, অভ্র ছাড়া আর কিছুই। আরে অভ্র থাকলে আর কিছু লাগে নাকি!

বিপ্লব কুমার কর্মকার এর ছবি

ভালো লেখা

অতিথি লেখক এর ছবি

লে-আউট নিজে বানানো যায়, ব্যাপারটা জানা ছিল না। ধন্যবাদ পোস্টের জন্য। হাসি

- মুক্ত বয়ান

রণদীপম বসু এর ছবি

চলুক----

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

নাগা সন্যাসী [অতিথি] এর ছবি

দারুন।

অতিথি লেখক এর ছবি

আমাদের উচিত 'অভ্র'-কে সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া। অনেক কম্পিউটার-কম্পোজ এর দোকানে এখনও 'অভ্র' ব্যবহার করে না। তাই প্রিন্ট নেওয়ার সময় ঝামেলা হয়।

"ভাষা হউক উন্মুক্ত"- শ্লোগানটি অসাথারণ......

গুঞ্জন চৌধুরী এর ছবি

আমার কাছে মনে হয় কম্পিউটারে লিখতে পারাটা কলম-পেন্সিল দিয়ে লিখতে পারার মতোই একটা ব্যাপার, আরো একটু মোটা দাগে চিন্তা করলে, কথা বলতে শেখার মতো একটা ব্যাপার। একটা মানুষ কথা বলতে না পারলে তার মত প্রকাশ করতে পারে না, মনের কথা কাউকে জানাতে পারে না। প্রকৃতির নিয়মেই সে সেই ভাষা শেখে, যে ভাষার পরিবেশ-প্রতিবেশে তার জন্ম হয়। পড়া ও লেখার ব্যাপারটাও তাই। যে ভাষায় আমরা সবচেয়ে ভালোভাবে, গড়গড় করে কথা বলতে পারি, সেই ভাষার বর্ণমালাই আগে শিখি। যে কারণে আমরা বাঙালীরা সবার আগে বাংলা বর্ণমালা শিখি, তারপর ইংরেজি আরবী ইত্যাদির প্রতি মনযোগী হই। আর বর্তমান যুগে কম্পিউটার ও তথ্য-প্রযুক্তি এতটাই সহজলভ্য হয়ে গেছে যে, কম্পিউটার কীবোর্ড ব্যবহার করে টাইপ করতে পারাটা আসলে কাগজ-কলম ব্যবহার করতে পারার মতোই সাধারণ ব্যাপার। এটা না পারাটাই বরং একটা অযোগ্যতা। তো, এই যে আমরা বাঙালীরা জন্মের পর থেকেই বাংলা ভাষাটা শিখছি, এক-দেড় বছর বয়স থেকে এই ভাষায় কথা বলে আসছি, এর জন্যে কি আমরা বাঙলা ভাষার আবিষ্কারকদেরকে কোনো লাইসেন্স ফি দিচ্ছি? পৃথিবীর কোনো দেশের কোনো ভাষাভাষীই কি তা দিচ্ছে? বাংলা বর্ণমালা যাঁদের আবিষ্কার, বিরামচিহ্নসহ অন্যান্য ব্যাকরণ যাঁদের আবিষ্কার, তাঁরা কি তাঁদের এই অসামান্য আবিষ্কারকে কোনো কপিরাইট আইনের দ্বারা সংরক্ষিত করে রেখেছেন? জ্যামিতি, ত্রিকোণমিতি, সরল-সুদকষা-ঐকিক নিয়ম-লাভক্ষতি ইত্যাদি অংকসহ ব্যবহারিক বিজ্ঞানের কোনো একটি আবিষ্কারই কি কপিরাইট আইনের দ্বারা ব্যবহার-সংরক্ষিত করা আছে? ইংলিশ কীবোর্ডটি যে পৃথিবীর সমস্ত দেশেই ব্যবহৃত হচ্ছে, তার জন্য কে কাকে লাইসেন্স ফি দিচ্ছে? লিখন-পদ্ধতি ব্যবহারের অধিকার সীমাবদ্ধ করে রাখাটা তো একরকম ভাষাচর্চাকে দমিয়ে রাখার মতোই ঘৃণ্য কাজ। "বিজয় এণ্ড কোং" তো পশ্চিম-পাকিস্তানী ঘৃণ্য রাজনীতিকদের মতোই ঘৃণ্য অপতৎপরতা চালাচ্ছে বছরের পর বছর জুড়ে!

কিছু সফটওয়্যার-এর ব্যবহার হয়ে থাকে সাধারণত লাভজনক কর্মকাণ্ডে, যেমন এডোবি-র তৈরি ডিজাইনিং সফটওয়্যার, ম্যাক্স, মায়া ইত্যাদি নানান রোজগেরে সফটওয়্যার। সেগুলোর প্রস্তুতকারক তাদের সফটওয়্যারের প্রতিটি কপি'র জন্য দাম ধরবেন - এটা মানতে আমার কোনো আপত্তি নেই, কেননা পাঁচ হাজার টাকায় সফটওয়্যার কিনে প্রথম দিন ব্যবহার করেই সেই পাঁচ হাজার টাকা রোজগার করে নেয়ার মতো যথেষ্ট ব্যবস্থা সেসব সফটওয়্যারে দেয়া থাকে। কোনো ছুতার তার হাতুড়ি বাটালী অন্য ছুতারকে ব্যবহার করতে দেয়না, সেই দৃষ্টিকোণ থেকে এগুলোর অহস্তান্তরযোগ্যতাও মেনে নেয়া যায়। কিন্তু বাড়ির উঠানে আঁক কাটার জন্যও যদি ভূমি অফিসে ট্যাক্সো দিয়ে আসতে হয় - সেটা মানা যায় কি?

... এতই যদি তোমাদের বিদ্যা আর এতই যদি সেই বিদ্যা বেচে খাওয়ার পাঁয়তারা, তো নন-প্রফিটেবল লেখালেখির সফটওয়্যার বেচে পকেট না ভরে বরং এডোবি, থ্রি ডি ম্যাক্স, মায়া, নুয়েন্ডো এইসব প্রফিটেবল সফটওয়্যারের নিজস্ব ভার্সন বানিয়ে দেখাও না, কেমন পারো! সেই বিদ্যে নেই পেটে (বিজয়-ও জব্বার কাগু'র নিজের কীর্তি নয়, সেই রহস্যও এখন আর কারো কাছে অজানা নাই!), পারো কেবল ভিখিরির পাত থেকে দানা খুঁটে খেতে!

অভ্র'র সাথে আছি শুরু থেকে, যদিও বারো বছর আগে বিজয়-লেআউটের মাধ্যমেই বাংলা টাইপিং শিখেছিলাম বলে আজো সেই লেআউটটাই ব্যবহার করে যেতে বাধ্য হই বলে কিঞ্চিৎ ব্যথিত হই। আবার সান্তনা দেই এই ভেবে যে, যার কাছে শিখেছিলাম 'সবার উপরে মানুষ সত্য' সেই ব্যক্তিটিই যদি মানুষকে অধপাতে ঠেলে দেয়, তাই বলে তো আর আমার শেখা চিরন্তন সত্যটা রাতারাতি মিথ্যা হয়ে যাবে না!

গৌতম এর ছবি

প্রায় বছর দুয়েক আগে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম- বিজয় ব্যবহার করবো না। তখন থেকে আর বিজয় ব্যবহার করি নি। অফিসের অ্যাডমিনিস্ট্রেটরকে বলে বিজয় আনইনস্টল করে অভ্র ইনস্টল করেছি। তারপরও ব্যক্তিগত ল্যাপটপে তারও বছরখানে বিজয় ইনস্টল করা ছিল- বাই চান্স যদি কাজে লাগে- একবারের জন্যও লাগে নি। তারপর বছরখানেক আগে বিজয় আনইনস্টল করে ফেলেছি। এখন পর্যন্ত আর ব্যবহার করি নি।

দুঃখ একটাই- বিজয় শব্দটাই একজন ব্যবসায়ীর পণ্যের সাথে লেগে গেল!

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।