জীবন ও মৃত্যুর গল্প

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: রবি, ২৪/১০/২০১০ - ৮:৪১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১.
কালুগাজী মনে মনে কি কি সব যেন ভাবে আর খ্যাক খ্যাক করে হাসে। নিভে যাওয়া বিড়ির টুকরার দিকে উদাস চোখে তাকায়। জীবন এই রকমই। আজ বড় বেশি দার্শনিক হয়ে উঠতে চায় যেন মন। জেলে কেটে যাওয়া এতগুলো বছরে অনেকখানি দূর্বল হয়ে এসেছে বোধ , কিছুটা ফিকে হয়েছে এতকালের অমিত সাহস। তাই বলে এরকম কাপুরুষের মত
খুন হতে হবে! কালুগাজী নিজে কথনো খুন করতে ভয় পায়নি। ফরেস্ট অফিসারের চোখে চোখ রেখে কোপ দিয়েছিল গলায়। কল্লাটা ধড় থেকে আলাদা হয়ে গেলে ছিটকে আসা রক্তে সে অন্ধ হয়ে গিয়েছিল প্রায়। সারা শরীরে লেগে থাকা সে রক্ত মুছার গরজও অনূভব করেনি কালু। সদর রাস্তা ধরে বীরদর্পে হেটে চলে গিয়েছিল। এইসব বেজন্মাগুলারে সে ভাল করেই চেনে। খোলামাঠে তার
মুখোমুখি হলে মুতে প্যান্ট ভেজাবে শুয়োরগুলো। এখন এসেছে হাত পা বেধে তাকে ফাসিতে ঝুলাতে। এই সব কাপুরুষে ভরে আছে লোকালয়। গায়ে উর্দি চাপিয়ে সরকারী পয়সায় ফূর্তিকর আর
গায়ে গতরে টসটসে বউদের পেট ভরে বাচ্ছা বিয়াও বছর বছর। এই ভেড়া গুলোর মাঝে সে বাঘ হয়ে রাজত্ব করেছে বছরের পর বছর। শেষ বার মইল্লা চোরার বিশ্বাসঘাতকতায় ধরা পড়ল আর
এখনতো সোজা ফাসির দড়ির মুখে। অথচ মরতে ভয় পায়না কালুকাজী বরং মৃত্যুকে সে আদুরে বেড়ালের মত সারা জীবন বুকে পুষেছে। কেবল মইল্লার চেহারাটা মনে পড়লে বিতৃঞ্চায় মুখের বলি রেখা গুলো আরো বিভত্‍স হয়। ছিচকে চোর ছিল শালা। কেবল তার দূরদৃষ্টি আর সাহস দেখে তাকে একদূর তুলে নিয়ে এসেছে কালু। মইল্লার নজর যে তার বউয়ের দিকে তা বেশ বুঝতে পারে কালু। তাদের গোপন প্রণয় ও অজানা নয় তার। ভাতারখাগী মাগীটাকেও একবার শেষ দেখার স্বাধ জাগে। টসটসে বেলুম্বুর মত ঠোটের নোনা স্বাদ আর শরীরময় রহস্যের স্মৃতি আরেকবার তার পৌরুষকে জাগাতে চায়। কিন্তু মাগীটা শেষ দেখা দেখতেও আসবেনা জানে সে। পোয়াতী - বাচ্ছা হবে কদিনপর সে খবর কালু পেয়েছে। ছেলেটা নিশ্চয় তার মতই বীর্যবান হবে - এই সব ছাই-পাস ই ভাবে কালু আর ফ্যাক ফ্যাক করে হাসে। অনাগত সন্তানের নিষ্পাপ মুখ ছাড়া এই
পৃথিবীতে এমন আর কিছুই থাকে না যা কালুর অহমকে একটুকু দূর্বল করতে পারে।

২.
নবজাতকের সূতীব্র চিত্‍কারে অম্লান ভোর আসে। সে শব্দ কানে পৌছানোর আগেই ফাঁসি হয়ে যায় কালুর। নূপুংসক দড়ির একপ্রান্তে ঝুলে থাকে ছফুট দীর্ঘ অসীম আগুন। মইল্লার কোলে তখন ফুটফুটে সদ্যোজাত শিশু। তার সবল দেহ সৌষ্টবের দিকে তাকিয়ে মইল্লা ভাবে - এই পোলা বড় হইলে নির্ঘাত বড় অফিসার হইবো। রহিমা বিবির চোখে তখন নির্জলা খুশি ; দূর ভবিষ্যতের সুখস্বপ্ন।

সমুদ্র সন্তান


মন্তব্য

মাহবুব লীলেন এর ছবি

কোথায় যেন কী একটা কিছু ইনফরমেশন বাদ পড়ে গেছে
ধর্তে ধর্তেও ধরতে পারলাম না

অদ্রোহ এর ছবি

বানান-প্রমাদ আধিক্যে পড়তে বেশ খাবি খেতে হল, শেষমেশ খারাপ লাগলনাতো।

--------------------------------------------

আজি দুঃখের রাতে সুখের স্রোতে ভাসাও ধরণী
তোমার অভয় বাজে হৃদয় মাঝে হৃদয় হরণী।

--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।

অতিথি লেখক এর ছবি

বানানের ব্যাপারটা কোনভাবেই শুধরাইতে পারি নারে ভাই। কি করতাম। আমার হয় না। নিজ গুনে মাফ কইরা দিয়েন

অতিথি লেখক এর ছবি

বানানের ব্যাপারটা কোনভাবেই শুধরাইতে পারি নারে ভাই। কি করতাম। আমার হয় না। নিজ গুনে মাফ কইরা দিয়েন

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।