অ্যামেলিয়া

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বুধ, ২৩/০২/২০১১ - ১:৪১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

প্রকাশক জর্জ পাটনাম একজন বৈমানিকের আটলান্টিক অতিক্রমের অভিজ্ঞতার আলোকে লেখা বই প্রকাশ করবেন। যেহেতু সমস্ত পৃথিবীর মনোযোগ থাকবে তার দিকে, তাই তাকে হতে হবে আকর্ষনীয় একজন মহিলা, এবং অবশ্যই বৈমানিক। চ্যালেঞ্জ লুফে নেয় অ্যামেলিয়া। কিন্তু বাঁধ সাধে অতীত ইতিহাস, ইতোমধ্যে আটলান্টিক পাড়ি দিতে গিয়ে প্রান হারায় তিন জন মহিলা বৈমানিক। তাই অভিযানে সে স্বয়ং চালকের আসনটি পাবেনা, অভিযানের দায়িত্ব দক্ষ চালক বিল ও স্লিমের, তবে তাদের কমান্ডার হিসেবে থাকবে অ্যামেলিয়া প্যাসেঞ্জারের আসনে, আর লিপিবদ্ধ করবে তাদের ভ্রমন কাহিনী। প্রকাশকের অনুরোধে সেবার আটলান্টিক এভাবেই পাড়ি দিতে হয় তাকে। বিভিন্ন সময়ে একে একে অর্জন করে বিভিন্ন উচ্চতা ও গতিতে বিমান চালনার রেকর্ড। কিন্তু শৈশবে একদিন উড়ন্ত জাহাজ দেথে আর সপ্তম জন্মদিনে বাবার দেয়া একটা গ্লোব পেয়ে শুরু হয়েছিল যার স্বপ্ন দেখা তাকেতো উড়তে হবে আকাশে সত্যিকার অর্থেই, ছুঁতে হবে উচ্চতা ততটাই যেখানে আকাশ আর সাগর কে আলাদা করা যায়না। এবারে একাই যাবে সে। আত্ম প্রত্যয়ী অ্যামেলিয়া অতঃপর পেয়েও গেলো প্রথম মহিলা ট্রান্স-আটলান্টিক বৈমানিক এর খেতাব। আকাশ চষে বেড়াবার দৃপ্ততায় দানা বাঁধা স্বপ্নেরা তাকে ততদূর তাড়িয়ে বেড়ায় যতদূর অব্দি তাঁর গন্তব্য। আরো মুক্ত হওয়া চাই। পুরো পৃথিবী প্রদক্ষিন করতে হবে এবার। জুন, ১৯৩৭ । সে নিয়ে নিল তাঁর জীবনের সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ। সহযোগী বৈমানিক ফ্রেড নুনান কে সাথে নিয়ে মিয়ামী থেকে শুরু হয় তাঁর যাত্রা। ফেলে এসেছে গাম্বিয়া, মালি, পাকিস্তান, ইন্ডিয়া, ব্যাঙ্কক হাজার হাজার মাইল পথ। আর মাত্র তিন দিনের পথ উড়তে হবে তাঁকে, পৌছে যাবে ক্যালিফোর্নিয়া, বিশাল পরিক্রমের স্বপ্ন সত্যি হতে চলেছে। অধীর অপেক্ষায় আরেক প্রান্তে বসে আছে প্রিয়তম জর্জ। হঠাৎ শুরু হয় প্রতিকুল আবহাওয়া, ‘ইলেক্ট্রা’ তখন প্যাসিফিকে। ডিরেকশন ফাইন্ডারের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, জ্বালানীও শেষের পথে। প্যাসিফিকে পথ হারায় ইলেক্ট্রা।

১৯৩৭ এর ২ জুলাই তারিখে প্রশান্ত মহাসাগরের কোথাও হারিয়ে যায় অ্যামেলিয়া এ্যারহার্ট এবং তার সহযোগী ফ্রেড নুনান। স্মরনকালের সবচেয়ে বড় উদ্ধার তৎপরতা চালিয়েও সমাধান হয়নি ‘ইলেক্ট্রা’র অন্তর্ধান রহস্যের।

অ্যামেলিয়া এ্যারহার্ট এর প্রত্যয়ী ও স্মরনীয় জীবন এবং ভালোবাসার আলোকে সুসান বাটলার এর ‘ইস্ট টু দ্য ড্যন’ এবং মেরী লভেল এর ‘দ্য সাউন্ড অব উইংস’ বইয়ের কাহিনী অবলম্বনে মিরা নায়ার এর “অ্যামেলিয়া” একটি অনবদ্য চলচিত্র। শেষ থেকে শুরু হয় চলচিত্রের কাহিনী। আদ্যোপান্ত গল্পের অগ্রগতি এবং হিলারী সোয়াঙ্কের চিরাচরিত গভীর অভিনয় বিশেষ ভাবে লক্ষনীয়। জর্জ পাটনাম চরিত্রটি আপন সাতন্ত্র্য মন্ডিত। এবং সেই সাথে জিন ভিদাল, গোর, ফ্রেড নুনান, বিল, স্লিম চরিত্র গুলোর পরিস্ফুটনও বেশ সহজ ও স্বাভাবিক।

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, কাহিনীর ধারাবাহিকতা, সংলাপ, চিত্র ধারন সবমিলে মনে রাখার মতো একটি চলচিত্র।

--- নুশান


মন্তব্য

নীড় সন্ধানী এর ছবি

এই ছবিটার সবচেয়ে আকর্ষনীয় বিষয় হলো সত্যিকারের অ্যামেলিয়া'র ভিডিও ফুটেজ সংযোজন। ছবির বিশ্বাসযোগ্যতাকে ফুটিয়ে তুলেছে ওই ফুটেজগুলো। তবে পাপুয়া নিউগিনি থেকে উড়াল দেবার সত্যিকার একটা ভিডিও ফুটেজের জন্য আফসোস থেকে গেছে।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

অতিথি লেখক এর ছবি

সেটাই, ছবির শেষে ওই ফুটেজ গুলো একটা বড় প্রাপ্তি।

--- নুশান

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ছবিটা আমার কাছে ভালো লাগেনি। কেন? এটা না হয়েছে ডকুমেন্টারী, না হয়েছে ফিচার ফিল্ম। অভিনয়ের মান জঘন্য পর্যায়ের। চিত্রনাট্যও সুবিধার লাগেনি। শুধু শুধু টাকার শ্রাদ্ধ (৪০ মিলিয়ন ডলার)। মীরা নায়ার অ্যামেলিয়া এরহার্টকে হাইলাইট করতে চাইলে কাজটা অন্যভাবে করা যেত। আর অ্যামেলিয়ার সাহসিকতা দেখাতে চাইলে এই ১১১ মিনিটের লম্বা কাঁদুনী না গাইলেও চলতো।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

চিন্তিত

--- নুশান

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

বোন,
তোমার ঝরঝরে বর্ণনার প্রতিবেদন পড়ে ছবিটা দেখার ঔতসুক্য অনেক বেড়ে গেল।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

দেখতে হবে ........................।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।