এম জির সাথে জীবন যুদ্ধ

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: মঙ্গল, ১৯/০৪/২০১১ - ৯:১৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মায়েস্থেনিয়া গ্রাভিচ (এম জি) অতি বিরল আমরন এক অসুখ, যার পরীক্ষিত কোন চিকিৎসা বা ঔষধ নেই; আছে কিছু পরীক্ষনীয় ঔষধ। ভয়াবহ সেই অসুখের সাথে যুদ্ধ এবং তা জয় করার সত্য গল্প।

দুই

বড় মেয়ে পরের সপ্তাহে আবার আমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেল। ডাক্তার এবার খুব মনোযোগ দিয়ে সিমটম গুলি শুনে আমাদেরকে বসিয়ে রেখেই তার নিজস্ব রুমের কম্পিউটারে প্রায় মিনিট দশেক কাটিয়ে অত্যান্ত গম্ভির মুখে ফিরে এলেন। অত্যান্ত সমবেদনার সুরে তিনি বললেন ‘আই এম স্যরি আসমা, আই এম সো স্যরি’। তার গলার স্বরে এমন কিছু ছিলো, যা আমাদেরকে ছুয়ে গেল, কিছুক্ষন সকলেই চুপ থাকলাম। ডাক্তারই মুখ খুললেন, তিনি আমাকে নিউরোলজিস্টের কাছে পাঠাতে চান। মেয়ের অনেক অনুরোধে কানাডিয়ান ডাক্তার নিজের সন্দেহটা একটু দ্বিধার সাথে বললেন এটা একটা অতি বিরল অসুখ, কিন্ত বার বার নিউরোলজিস্ট কনফার্ম এবং টেক কেয়ার কোরবে বলে আমাদের আশ্বস্ত করলেন। তার সেক্রেটারি স্পেসিয়ালিস্টের সাথে যত তাড়াতারি সম্ভব যোগাযোগ করে আমাদের জানাবে।

কোন এক অলৌকিক উপায়ে হয়ত ভালো হয়ে যাবো, এই কামনা করে সবাই ঠিক করলো, সবাই মিলে টরেন্টোতে আমাদের অতি প্রিয় বন্ধু বান্ধবের সাথে কিছু আনন্দময় সময় কাটানো হয়তো ভালোই হবে। সেখানে গিয়ে সবাই বুঝতে পারলো যে আমি আর ঠিক আমার নিয়ন্ত্রনে নেই। গভীর মমতায় মেরী আপা শুধান ‘আসমা তোমার কেমন লাগছে আমাকে বলবে, তোমার চেহারা দেখে কিন্তু খুব একটা বুঝতে পারছি না, চোখ লাল না, ফোলেওনি, আমাদের একটু বলবে প্লিজ?’ আমার তখন লাগছিল খুব খারাপ ধরনের ফ্লু হলে যেমন শুয়ে থাকলেও যেন মনে হয় কোন অতলে তলিয়ে যাচ্ছি, ভিতরে যেন কত জনমের ক্লান্তি, চোখে হটাৎ হটাৎ সর্ষেফুলের মত্ ফুলঝুরি, সবকিছুই ডেস্টর্টেড দেখছি, এবং মনে হচ্ছে একই জিনিস দুইবার অর্থাৎ ডাবল ভিষনের মতন লাগছে। টরেন্টোতে গিয়ে দেখি খাবার চাবাতে গিলতে খুব কস্ট হছে, এবং মুখ থেকে খাবার ঠোটের পাশ থেকে বেয়ে বেয়ে পড়ছে একদম বাচ্চাদের মত।

আগস্টের পচিশ তারিখে এলো সেই কাংখিত ফোনটি। নিউরোলজিস্ট ডাক্তার রাবোনোভিচ আমাকে দেখতে চান অক্টোবরের ছাব্বিশ তারিখে। মেয়ে এবং তাদের বাবা প্রতিদিন ডাক্তারের অফিসে পালাক্রমে ফোন করে খোজ নিতে লাগলো কেউ যদি এপোয়েনমেন্ট ক্যান্সেল করে তবে সেখানে যেন আমাকে নিউরোলজিস্ট একটিবার দেখেন। ক্রমাগত চেস্টায় সেপ্টেম্বরের ছয় তারিখে কুইন্সওয়ে কার্ল্টন হাস্পাতালের আউট পেসেন্ট ডিপার্টমেন্টে সকাল আটটায় আমাকে তিনি দেখতে রাজি হলেন। আমার স্বামি তার সকালের মিটিং ক্যান্সেল করে আমাকে নিয়ে গেলেন। গভীর মনোযোগে নিউরলোজিস্ট আমাকে দেখলেন, তক্ষনি আমার থেকে নার্স প্রচুর রক্ত নিল পরীক্ষা করার জন্য, এক্স-রে নিল, তিন দিন পরেই আরেক নিউরোলজিস্টের কাছে আমাকে পাঠালেন সেকেন্ড অপিনিওনের জন্য। একটি প্রেসক্রিপ্সন দিলেন, যেটা প্রথমে দুই দিন দৈনিক ষাট মি,গ্রামের একটি ট্যাবলেটের আধেক ট্যাবলেট, পরের সপ্তাহে দৈনিক দুইটা, তার পরের সপ্তাহে দিনে চারটা, এবং রাত্রে শোবার সময়ে একশ আশি মিলিগ্রামের ক্যাপ্সুল খেতে বললেন। প্রথম ডোজ ঔষধ খাওয়ার পর মনে হোল আমি সেই পুরাতন আমি, সবার পছন্দের খাবার রান্না করলাম, ঘর পরিস্কার করেই একদম মিইইয়ে গেলাম।

আমি তখন একনাগারে বরজোড় দুইঘন্টা সোফায় হেলান দিয়ে বসে থাকতে পারি। উইকডেতে সবাই একসাথে বাসা থেকে বেরিয়ে যায়, ছেলে ফেরে আগে, বাকিরা মোটা মুটি একই সাথে ঘরে ঢোকে। বাড়ীর রুটিন ছয়টায় ডিনার। বাড়ির কোন রুটিনেই ছন্দ পতন যাতে না হয় সেটা চেস্টা করতে লাগলাম। দেহটা অকেজো হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু মনটা এখনো ঠিক ঠাক আছে, মাথাটা এখোনো ঠিক্ ঠাক সিদ্ধান্ত নিতে পারছে দেখে স্বস্তির নিশ্বাষ ফেললাম। বসনিয়ান একটি ক্লিনিং লেডিকে সপ্তাহে একদিন ঘর দোর পরিস্কারের জন্য রেখে, উইক এন্ডে মেয়েদের সাথে এবং উইকডেতে ছেলেকে নিয়ে শুয়ে বসেই গেরস্থালির নিত্যদিনের রুটিন চালাতে লাগলাম।

অক্টোবরের প্রথম শনিবারে আমার বড় মেয়ে আমার মাথার কাছে বসে অনুরোধ করলো। ‘আম্মা আজকে আমার গাজুয়েশান ছেরোমনি, আপনি কি আসবেন প্লিজ’? আমি তাকে বললাম ‘অবস্যই আসবো মা’। আমার স্বামি অসহায় ভাবে সব ছেলে মেয়ের দিকে তাকালো, কিন্ত সবাই আমার অনুস্ঠানে যাবার পক্ষেই সায় দিল। সবাই মিলে সময় ক্যাল্কুলেট করে কার্ল্টন ইউনিভার্সসিটির ফিল্ড হাউজ, যেখানে কনভোকেশান হবে, সেই গেটের ঠিক পাসে রাস্তার স্টপ সাইনে আমার স্বামি মিনি ভ্যানটা পার্ক করলো আমাকে নামানোর জন্য। কিন্ত ঠিক তখন ফুটপাথে মিছিলের সামনে তিন জন ভদ্রলোক ট্রেডিশনাল স্কটিশ স্কার্ট্ বুট পরে একজন বিউগল, একজন ব্যাগপাইপ, আরেকজন রেকোর্ডার(বাশির মত) বাজাতে বাজাতে চলেছেন হ্যামিলনের সেই বংশিবাদকের মতন, তাদের অনুসরন করছে সব প্রফেসর, এবং তাদের পিছনে সুশৃংখল লাইনে কয়লা কালো গাউন ও হ্যাট মাথায় দিয়ে চলেছে প্রায় শ’তিনেক নতুন পাস করা ইঞ্জিনিয়ার। অপুর্ব মনকাড়া সেই দৃশ্য।

ফিল্ড হাউজে ঠিক ঢোকার মুখে একজন গ্রাজুয়েটদের নাম তালিকার, কনভোকেশানের সমুদয় তথ্যর একটি লাল রঙ্গের বই আমার হাতে ধরিয়ে দিল, ভিতরে গিয়ে প্রায় বারোশ অতিথির জন্য পাতানো চেয়ারের একটিতে বসলাম। স্পিচ চলাকালে আমি হাতের বইটায় আমার মেয়ের নামটা খুজতে লাগলাম। কম্পিউটার সায়েন্স ডিপার্টমেন্টে হাই ডিস্টংশান কলামে তার নামটা দেখলাম। পরের পাতায় দেখি স্পেশাল এওয়ার্ড কলামে হাইয়েস্ট জি পি এ পাওয়া স্টুডেন্টকে দেয়া হচ্ছে সিনেট ম্যাডেল, সেখানে দেখি আমার মেয়ের নামটা। বাবার মতই তার ব্যাচে সে ফার্স্ট!!! স্টেজে তখন সার্টিফিকেট দেয়া শুরু হয়ে গেছে। নাম ডাকার পর স্টুডেন্টরা লাইন করে একে একে একদিক দিয়ে স্টেজে উঠে হ্যান্ডসেক করে বিপুল করতালির সাথে সার্টিফিকেট নিয়ে কয়েক কদম এগিয়ে গ্রাড ছবির জন্য ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে একটু হেসে স্টেজের অপর প্রান্তের সিড়ি দিয়ে নেমে সুশৃংখল লাইনে নিজ আসনে ফিরে যাওয়া। আমার মনটি এত্ত ভালো হয়ে গেলো যে আমি বুঝতেও পারিনি সময় কিভাবে উড়ে চলে গেলো। প্রত্যকের জীবনে স্মরনীয় চমৎকার এই অনুসঠান আমাদের দেশের ইউনিভার্সিটিতে কেন যে হয়না প্রতিবছর!

ঠিক পরের সপ্তাহেই ডাক্তার রাবোনোভিচ আমাদের কনফার্ম করলেন যে মাইস্থেনিয়া গ্রাভিচ নামক একটি নিউরো-মাস্কুলার ডিসর্ডারে আক্রান্ত আমি। তিনি সহজ করে বুঝিয়ে বললেন ‘প্রতিটি শিশুই থাইমাস নামের একটি এপ্রিকট সাইজের গ্লান্ড (যেটা হার্ট, ফুস্ফুস, মেরুদন্ডের কাছে) নিয়ে জন্মায়, জন্মের কয়েক সপ্তাহের মধ্যে মানুষের ইম্যুইন সিস্টেম ডেভোলপ করে সেটা আকারে ছোট হয়ে দেহের ভিতরেই নিসক্রিয় হয়ে থাকে জীবনভর। কিন্ত প্রাপ্ত বয়স্কদের জীবনে হটাৎ যদি এই গ্লান্ড সক্রিয় হয়, তখন সেটা আবার আকারে বড় হয়ে যায় এবং এন্টিবডি প্রডিউস করে দেহের বডি সেল এবং নার্ভ সেলের মাঝে একটা বাধা হিসেবে কাজ করে। দেহের সুস্থ সেল গুলিকেও আক্রমন করে। ফলে মানুষের সচেতন নাড়াচাড়া, অংগ প্রত্যংগের সুনিয়ন্ত্রন, শ্বাষ-প্রশ্বাসে, সাংঘাতিক প্রভাব পড়ে। এটা খুবই বিরল এশিয়ান অসুখ, দশ লাখে একজনের হয়। এটা যেহেতু খুব বিরল, সেইহেতু এটা সম্পর্কে বিশেষ রিসার্স, তথ্য, সুনির্দিস্ট ছকবাধা চিকিৎসা পদ্ধতি, পরীক্ষিত ঔষধ এখনো অজানা। সবচেয়ে মুশকিল রোগির চেহারায় অসুখের কোন ছাপ পরেনা অর্থাৎ হটাৎ কেউ দেখলে বুঝতেই পারবেনা সে ঠিক কতটা অসুস্থ। দেখলে মনে হবে একদম ফ্রেস! শুধু গলার স্বরে কাছের লোকজন টের পাবে। এখন প্রথম কাজ হোল অপারেশন করে যত তাড়াতারি থাইমাস নির্মুল করা। তিনি আমাকে সিভিক হাস্পাতালের নিউরো সার্জন ডাক্তার ম্যাজিয়াকের কাছে পাঠালেন।

খুব কম বয়সেই নিউরোসার্জন, সুন্দরী ডাক্তার ম্যাজিয়াক প্রায় দেড় ঘন্টা ধরে অসীম ধৈর্য্য নিয়ে অপারেশানের পুর্বাপর করনীয় কাজের বিষদ বর্ননা দিলেন। ওপেন হার্ট সার্জারীর মতন রিবকেসটা কাটা হবে, সমুলে থাইমাস অপারেট করার জন্য অনেক সময় আরো কাটতে হয়। চার থেকে পাচ ঘন্টার অপারেশন টাইম। হিলিং কিন্ত হার্ট সার্জারী থেকে অনেক ধীরে ধীরে হয়ে থাকে, মাইস্থেনিয়ার জন্য। অপারেশানের আগে আমার রক্তের প্লাজমা (যেখানে এন্টিবডি) রিপ্লেস করতে হবে, অবশ্যই প্রচুর ব্লাড ওয়ার্ক করতে হবে, ব্রিদিং টেস্ট হবে। অপারেশনের পর হাস্পাতাল মাত্র পাচদিন রাখা হবে, কিন্ত বাসা হতে হবে রোগী-বান্ধব। অর্থাৎ বাসায় কে আমাকে দেখাশোনা করবে? আমার স্বামি একটি নামী হাইটেক কোম্পানীর সিস্টেম আর্কিটেক্ট, গেরস্থালির, কত ধানে কত চাল, একদম কিচ্ছু জানেনি এতদিন পর্যন্ত। তিন মেয়ে ইউনিভার্সিটির পড়াশোনার জগতেই চলাফেরা, ছেলে হাইস্কুলে গেলেও সবার ছোট! কিন্তু আমাকে অবাক করে অত্যান্ত দৃঢ়তার সাথে সে বললো ‘আমার ছেলেমেয়ে সহ আমরা টীম হিসেবে রোগীকে দেখাশোনা করবো’। ডিসেম্বরের উনিশ তারিখে হবে অপারেশান। তার আগে তিন দিন প্লাজমা রিপ্লেসমেন্ট, একদিন ব্রিদিং টেস্ট, একদিন প্রিএডমিশান, একদিন ব্লাড ওয়ার্ক, এই ছয় দিনের এপোয়েনমেন্ট করে বাসায় আসলাম।

চলবে----

আসমা খান অটোয়া


মন্তব্য

তাসনীম এর ছবি

আগ্রহ নিয়ে পড়ছি যুদ্ধজয়ের গল্প।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

আসমা খান, অটোয়া। এর ছবি

আগ্রহ নিয়ে পরছেন জেনে খুব ভালো লাগছে অনেক ধন্যবাদ।

অপছন্দনীয় এর ছবি

পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম। হাসি

রিসালাত বারী(অতিথি) এর ছবি

আপনার লেখা অত্যন্ত প্রাঞ্জল। আগ্রহ নিয়ে পরের পর্বের অপেক্ষেয় থাকলাম।

(প্রথম পর্বের লিঙ্কটা লেখার নিচে দিয়ে দিলে মনে হয় ভাল হতো। মন্তব্যের ঘরেও কোথাও দিয়ে দিতে পারেন।)

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আগ্রহ নিয়ে পড়ছি।
লেখার সঙ্গে টুকটাক রোগটির বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিয়ে দিলে বেশি ভালো লাগবে। কিছুটা যদিও দিয়েছেন, তারপরও বললাম।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

আয়নামতি1 এর ছবি

ভালো লাগছে আপনার যুদ্ধ জয়ের কাহিনী পড়ে। এপর্বে বিরল এ রোগ সম্পর্কে কিছুটা জানতে পারলাম। পরের পর্বের অপেক্ষায়। সে পর্যন্ত ভালো থাকুন, শুভেচ্ছা থাকলো।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

আপনার লেখা আরো প্রাঞ্জল, সাবলীল ও হৃদয়স্পর্শী হয়েছে। পরের পর্বের জন্য অপেক্ষা করছি। বিজয় কি পরবর্তী পর্বেই সূচিত?

তিন জন ভদ্রলোক ট্রেডিশনাল স্কটিশ স্কার্ট্ বুট পরে একজন বিউগল, একজন ব্যাগপাইপ, আরেকজন রেকোর্ডার(বাশির মত) বাজাতে বাজাতে চলেছেন হ্যামিলনের সেই বংশিবাদকের মতন, তাদের অনুসরন করছে সব প্রফেসর, এবং তাদের পিছনে সুশৃংখল লাইনে কয়লা কালো গাউন ও হ্যাট মাথায় দিয়ে চলেছে প্রায় শ’তিনেক নতুন পাস করা ইঞ্জিনিয়ার। অপুর্ব মনকাড়া সেই দৃশ্য।

মনকাড়া আপনার বর্ণনা।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

কৌস্তুভ এর ছবি

সিরিজের শেষটা যে হ্যাপি এন্ডিং সেটা শুনে নিশ্চিন্ত লাগছে। চলুক আপনার কলম।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

পড়ছি

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

শশাঙ্ক বরণ রায় এর ছবি

সাগ্রহে অপেক্ষা করছি পরের পর্বের...

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।