কুকুর

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বিষ্যুদ, ২১/০৪/২০১১ - ৮:৫৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

নতুন কেনা লেক্সাসের নরম চামড়ায় হেলান দিয়ে মুচকি হাসির সাথে একটা তৃপ্তির শ্বাস ছাড়ে নুমায়ের মাহমেদ। সুমি আনাদিল খান, না! হট বেইব, হট নেইম! মাগী দামী গাড়ি আর দামী রেস্টোরান্ট পছন্দ করে,গতির পেছনে ছোটে। সেই গতি নুমায়ের দিতে পারে এখন, কিন্তু আনাদিলের জন্য আর কতটাই বা বরাদ্দ রাখা যায় তার মহামূল্যবান সময়ের? সাময়িক বিনোদন, ছুঁড়ে ফেলে দাও একটু পরেই, এমন কত খানম-চৌধুরানী পেছন পেছন ঘুরবে! হুজুরে আ'লা জেনারেলদের মত একখানা হারেম খুলে ফেললে মন্দ হতো না।হুজুরেরা বাঙালি জেনানাদের নিয়ে হারেম করেছিলেন বাহুবলে, আর এখন করা যাবে অর্থবলে। ধরে আনতে হবেনা, নিজেই ধরা দেবে, টাকায় কি না হয়! বড় হুজুর গুল-এ-মাল আজমের দূরদর্শী পরিকল্পনার তারিফ না করে পারা যায় না, দুনিয়াটা পাল্টে যাচ্ছে হে, তরবারির যুগ নেই, এখন মসনদ হাসিল করতে মগজের জোর চাই। আর চাই নুমায়ের মাহমেদের মত তরুণ তুর্কি, জামায়াত-এ-ইসলামীর নতুন যুগের ধারালো তরবারি, সয়ফুল মুলক।

বড় হুজুরের যোগ্য উত্তরসূরী একদিন হবেই, এ বিশ্বাস নুমায়েরের আছে। আছে যে সেটা ছোট হুজুর আতিউর রহমান বাতেনী আর আলী হাসান জিহাদী ভালই বুঝেছিলেন, নয়তো এই বয়সেই এত বড় দায়িত্ব দেয়া হতো না তাকে। মাওলানা বাতেনী ছাহেবকে নিরাশ করেনি সে, যেখানে জোট সহযোগী বড় নেতারাও সব দৌড়ের উপর বনবাসে, সেখানে প্রকাশ্যে শিবিরনেতা হয়েও এই ঘোর কলিকালে খোদ ঢাকার বুকে লেক্সাস দাবড়ে বেড়াচ্ছে, পাশে আধুনিকা জেনানা নিয়ে। আহ, বেটি মাল একখান, আঁটোসাঁটো জামায় যখন স্কোয়াশ খেলে না, ভেতরটা উথালাপাথাল করে তার আনাদিলের দেহের ঢেউয়ের সাথে। আবারো মুচকি হাসে মাহমেদ, শালীরে যে কবে খাবো! অনেক কষ্টে এই হালফ্যাশানের হাইসোসাইটি ব্যবসায়িক হাসিখানা রপ্ত করেছে সে, জাতে ওঠার ফসল, ক্ষমতাবানের হাসি।

সামনে একটা রিকশা হঠাৎ মোড় ঘুরতেই কড়া একটা ব্রেকের সাথে হাসিটা মিলিয়ে যায় নুমায়ের মাহমেদের। আরেকটু হলেই গেছিলো খানকির পোলা, সাথে তাকেও নিয়েছিল। জানালা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে খেঁকিয়ে ওঠে, ঐ চুতমারানি, দেখস না? রিকশাওয়ালা নির্বিকার ভঙ্গিতে মোড় ঘুরে চলে যায়, ভাব দেখে নুমায়েরের ইচ্ছা করে গাড়িটা ঘুরিয়ে চাপা দিয়ে দিই হারামজাদাকে। নানাজান একদিন বলছিলেন,এই কুত্তার বাচ্চা ইতরগুলার জন্যই পাকিস্তানটা রাখা গেল না, শুওরগুলার জানের মায়া নাই, একটা করে থ্রি-নট-থ্রি আর আনারসের মত গ্রেনেড নিয়ে পান্ঞ্জাবীদের ট্যাঙ্কের সামনে লাফ দিয়ে পড়লো। আরে ব্যাটা, কি হলো, হ্যাঁ, কি হলো? সব মরলি, জ্বলে গেলি, ঘরের বউ নিয়া ফূর্তি করলো খানবাবারা, আর এখন লুলা হয়ে বেঁচে থাকিস আর মাঝে মাঝে টিভিতে চেহারা দেখায়া ভিক্ষা চাস। মাঝ দিয়া সোনার পাকিস্তান দুই টুকরা করলি, মালাউন গুলা এই যে সময় সময় আমাদের মুসলমান পাঞ্জাবী ভাইদের হুমকি দেয়, দুই দিক থেকে ঘেরাও করে রাখলে কি এইটা পারতো? শেখ মুজিবরে তো হুজুর ইয়াহিয়া আর ভুট্টো কব্জায় নিয়াই ফেলছিল, ঢাকা শহরটারে একটা ভাল ছ্যাঁচা দিয়ে ২৫ তারিখেই শেষ কইরা ফেলছিল, অথচ কি বদনসীব, কুত্তাগুলা পোষ মানলো না। বড় হুজুর দেশছাড়া হইলেন, বলতে বলতে চোখ মুছেছিলেন নানাজান, আর মইনুদ্দিন, কি শানদার লেড়কা ছিল, জওয়ান উমরে দেশছাড়া হলো, আর ফিরতেই পারলো না। জিন্দাদিল ঈমানদার ছিল লেড়কা, কত কাফেরকে যে জাহান্নামে পাঠালো, আর কোরবান করলো নিজের জওয়ানি, আহা! নানাজান আবার চোখ মুছেছিলেন, হাফেজি রুমালে।

সেই স্বর্ণযুগের কথা ভেবে একটু আনমনা হয়ে যায় নুমায়ের। এখন তো তার বয়স মইনুদ্দিনের মতই। কই খুবসুরত পাকিস্তানি লেড়কি নিয়া ঘুরবে, বদলে কিনা কালা বাঙ্গালি লাগায়াই খুশি থাকতে হচ্ছে, শালার! অবশ্য বড় হুজুর বলেন, মালে গণিমত লাগাইতে কোন সমস্যা নাই, হুজুররাও সেই আমলে লাগাইতেন। যখন ক্ষমতা হাতে আসবে তখন পাকিস্তানি হিন্দুস্তানি আমরিকি সবরকমের আপেল আঙুর খাওয়া যাবে, আপাতত কচি কচি বাঙালি মালেও খারাপ যাচ্ছে না। পরেরবার দুবাই গেলে ঠিক করেছে ২-১টা আরব চেষ্টা করে দেখবে, খোদার কুদরতে পয়সাকড়ি তো কম হচ্ছে না, বেহেশতে কবে হুর পাবে এই আশায় দুনিয়ার হুরীদের ছেড়ে দেয়া ঠিক না, মালসামানা নিয়ে তো কবরে যাবে না! কবর নিয়ে চিন্তার সময় অবশ্য এখন নুমায়ের মাহমেদের নেই। দেশে ইসলামী শাসন কায়েম করতে তার যে অক্লান্ত চেষ্টা, তাতে ছোটখাটো দোষত্রুটি মাফ হবেই, খোদা তো করুণাময়। কাফের-মুনাফেক খতম করা, আর যারা বিপথগামী তাদের কোরবানী করা ইসলামের আদেশ। কূটনীতি রাজ্যশাসনেরই অংশ, যুদ্ধে নামলে কি অত ভাবলে চলে? আর খোদা যে তাদের সাথেই আছেন এ ব্যাপারে তার মনে কোন সন্দেহ নেই, কাফেরের সহযোগী শেখ মুজিব ঝাড়ে-বংশে শেষ হয়ে গেল, আর খোদার কি কুদরত, গণ্ডগোলের সময় কাফেরের সেনানী যে জিয়া, সেই জিয়ার হাত দিয়েই খোদার সেনাদের দেশে ফেরা শুরু হলো। কাফেরের আদালতেও তো প্রমাণ হলো, বড় হুজুর নির্দোষ, ইসলামী আদর্শের সৈনিক। জাহান্নামের ইমাম ঐ মহিলা একটা ঘোঁট পাকানোর চেষ্টা করেছিল বটে, কিন্তু খোদার মার দেখ, ক্যান্সারে ভুগে কেমন মরলো, শেষদিকে জবানও বন্ধ হয়ে গেছিলো। খোদার দুশমনদের কি হয়, দেখ সবাই!

ঐ মহিলার কথা তার মনে নেই বেশি, তার তখন গেন্দাকাল। এসব শোনা তার পরিবারের কাছে, বরাবরই তারা ইসলামের এবং পাকিস্তানের নিবেদিত সেবক ছিল। তার নানাজান "হাত মে বিড়ি মু মে পান, লড়কে লেঙ্গে পাকিস্তান" স্লোগান দিয়ে বড় হয়েছেন, ইসলামের এই পুণ্যভূমি টুকরা হয়ে যাওয়ার দুঃখ জীবনের শেষদিন পর্যন্ত ভুলতে পারেননি। নুমায়েরের এসব সস্তা আবেগ কম, ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম এই বাংলার বুকেই সম্ভব, পাকিস্তানের মুসলিম ভাইবেরাদরদের সাথে এক আসমানী সেতু গড়ে তোলা যাবে এখান থেকেই, নতুন পাকিস্তান বানানোর চেয়ে এ অনেক সোজা। বড় হুজুরও সে কথাই বলতেন, অনেক গোঁয়ারের মত পাকিস্তানে জীবনটা শেষ না করে এদেশের আদালত থেকেই নাগরিকত্ব নিয়েছেন, নেতৃত্ব তুলে দিয়েছেন অপেক্ষাকৃত তরুণ বাতেনী আর জিহাদী ছাহেবদের হাতে। নিজের ছেলেকে বানিয়েছেন বীর সৈনিক, নাতিনাতনিদের করেছেন আরো বেশি আধুনিক, মডারেট ইসলামের ধ্বজা তুলে তারা ধর্মে জিরাফে দু'দিকেই বেশ চালিয়ে যাচ্ছে। বড় হুজুরের নাতনিটাও বেশ ছিল রে, আর্কি বিল্ডিংয়ের সামনে দিয়ে যখন বডিফিটিং জামার সাথে হিজাব মিলিয়ে হাঁটা দিত, দিলে যে কেমন ধাক্কা লাগতো, ভেবে জিভ চাটে নুমায়ের। কিন্তু ওদিকে চোখ দিলে চোখ কানা হয়ে যাবে, এটা সে ভালই বোঝে। যাকগে, বেঈমান হওয়া ঠিক না, যা পাচ্ছে, খোদা কি শোকর, কম কি? বাতেনী হুজুর বলতেন, ধৈর্য্য ধরো, কোরানে বলা হয়েছে, ফা সবরুন জামিল। তা মাওলানা বাতেনীর ধৈর্য্য আছে ঠিকই, আর আছে মগজ। বলতেন, যুদ্ধে মাঝে মাঝে পিছাতে হয়, গা ঢাকাও দিতে হয়, ওতে লজ্জার কিছু নেই, শেষমেশ যুদ্ধে জেতাই বড় কথা। দরকারে ধূর্ত হবে শেয়ালের মত, হিংস্র হবে নেকড়ের মত, পাকিস্তান গেছে তো কি হয়েছে, আমাদের রাজ হবে এখানেই, ইসলাম আমাদের ভালবাসা, আমাদের জীবন, এর জন্য কঠিন পথে যাওয়া অন্যায় কিছু না, জিহাদে শত্রুকে ছলে-বলে-কৌশলে নিধন করতে হুকুম আছে।

বল জিনিসটার উপর এখন বাতেনী হুজুরের ভরসা কম, দুনিয়া পাল্টে গেছে, খোদ নাসারাদের সর্দার আমরিকিরাই যেখানে চাণক্যনীতিতে বিশ্বাসী, সেখানে মার খাওয়া মুসলিম ভাইদের নিয়ে ও লাইনে না যাওয়ারই সিদ্ধান্ত ছিল হুজুরদের। বড় হুজুরের বিশ্বাস, ভুখা নাঙ্গা মানুষের দিল হলো পেটে, ওখানে টান দাও, সিধে হয়ে যাবে। মিসকিনের জাতের সামনে ভাত ছড়াও দু'টো, আদর্শ ভুলে যাবে, কুকুরের মত পা চাটবে। আদতে হয়েছেও তাই, সেই যে, গণ্ডগোলের সুযোগে আমাদের ৯৩ হাজার ভাইকে পাকড়াও করে ফেললো মালুর দালাল মুক্তিগুলা, কিন্তু বড় হুজুর পবিত্রভূমিতে গিয়ে কি যে কলকাঠি নাড়া দিলেন, আর জোব্বাওয়ালা বাদশাহ হুজুররা কি যে করলেন, শেখের বাচ্চা বাপ বাপ বলে ছেড়ে দিল সব্বাইকে। আর তারপরে? হুঁ হুঁ বাবা, তারপরেই না ভাত ছড়ানো শুরু হলো, এতিমখানা, লঙ্গরখানা, মাদরাসা, ভুখা মানুষের দরদী বন্ধু জামাত-ই-ইসলাম। হুজুররা ভয় পেয়েছিলেন, ভাইবেরাদররা চলে গেলে তাদের কচুকাটা করে ফেলবে মালাউনের দোসরগুলা। কিন্তু খোদা কি মর্জি,শেখের ব্যাটারা ব্যস্ত হয়ে গেল লুটপাটে, আর সেই সুযোগে হুজুররা আস্তে আস্তে গুমচুপ করে ঢুকে গেলেন এখানে ওখানে। টাকা, বড় ক্ষমতা টাকার, আর সাথে ধর্ম, পেট আর দিল দু'জায়গাতেই জুড়ে বসতে একেবারে জব্বর মাসআ'লা। মিসকিনের জাতের স্মরণশক্তি বড়ই কম, পেটে দু'টো দানা পড়লে আর মা-বোনের ইজ্জতের খবর থাকে না। হুজুরের পরের পরিকল্পনা বেশ বড়ই ছিল, বাদশাহী সাহায্য দিয়ে বড়সড় কয়েকটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বাগানো, সে-ও হয়ে গেছে কিভাবে যেন, পাবলিক ধর্মও মানতে চায় ওদিকে পয়সাটার দিকেও বড় নজর, কাজেই ইসলামী একটা ব্যাংক খুললে যে ফকিরের দল ঝাঁপিয়ে পড়ে ইহকাল পরকাল দু'টোই হাসিল করতে চাইবে, সে আর সন্দেহ কি? এরপরে দু'একখানা হাসপাতাল, ব্যস, হয়ে গেল, দিলও দখল হয়ে গেল ভুখা ইনসানের,হাতের রক্ত ধুয়ে ফেলা কতই না আসান!

কাফেরের রক্ত ঝরানো পুণ্যের কাজ, সেকথা নানাজান অবশ্য বলেছিলেন। কাফেরের সহযোগীও জাহান্নামী, আর মুমিনের কর্তব্য হলো তাদের জাহান্নামের রাস্তাটা দেখিয়ে দেয়া। অথচ লোকে ভুল বুঝলো, "রাজাকার" মানে যে সহযোগী, সেকথা ভুলে গিয়ে লোকে কিনা এটাকে বলে গালি। দিকগে, গালিতে কি হয়? কাফের যোদ্ধারা সব জাহান্নামে, কোথায় সেই শেখের বাচ্চা, কোথায় জিয়া, কোথায় সেই খালেদ মোশাররফ আর তাহের, কি বেইজ্জতি মরণ, খোদা তার দুশমনদের এভাবেই ঝাঁঝরা করে দেন, হুংকার দিয়ে বলেছিলেন ছোট হুজুর, যেদিন মন্ত্রী হলেন। কাফেররা সব মরেছে নিজেরা কাটাকাটি করে, খোদার কি কুদরত দেখো, শেখের বেটি মাথায় হিজাব তুলে তার লোকরে পাঠায় বড় হুজুরের কাছে দোয়া মাঙতে, আর ম্যাডাম খোঁড়া পা নিয়ে দৌড়ান বাদশাহ হুজুরের দাওয়াতে। এসব গল্প নুমায়ের শুনেছে বড় ভাইদের কাছে, তখন থেকেই সে ছোট হুজুরের গুণমুগ্ধ, কি বুদ্ধি লোকটার! দিব্যি মন্ত্রী হয়ে বাংলাদেশের পতাকা লাগিয়ে ঘুরলো, সে নাকি গণ্ডগোলের সময় পাকিস্তানী ভাইদের পেয়ারা দোসর ছিল। কোন বালটা করলো হুজুরের? মন্ত্রী হয়েই তো মজলিশে শূরার নামে কতগুলো এনজিও আর কারখানা করে ফেললেন; টাকা, বুঝলে নুমায়ের, টাকাই সব, দেখো মিসকিনের দল কিভাবে পা চাটে!

মনে রেখেছে নুমায়ের সে কথা। ছোট হুজুরের মতই হতে হবে তাকে, হয়তোবা আরো বড়। হুজুররা লোক চিনেছিলেন, ছেলেটার বংশের ধারা আছে, একেবারে ভাই-বোন-দুলহা সহ জামায়াতের সেবায়েত, আদর্শ আছে, আছে ক্ষুরের মত ধারালো মগজ। হুজুরদের অনুগত থেকেছে সে, পুরস্কারও পেয়েছে হাতেনাতে। ঠাণ্ডা মাথায় রাজনীতি করেছে, বড় কোন গোলমালে জড়ায়নি কখনো, মহাশত্রুও বলবে না নুমায়ের কখনো ক্ষমতা দেখিয়েছে। বিপক্ষ দলেও তার ভক্ত কম নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন জনপ্রিয় ব্যক্তি হিসেবেই তার পরিচিতি। বাড়তি ক্ষমতা না দেখিয়ে পরিস্কার ভাবমূর্তি গড়ে তুলেছে, সুফল পাচ্ছে এখন, ব্যবসাজীবনে। কোচিং সেন্টার থেকে শুরু, তার ব্যবসায়িক দক্ষতার পরিচয় পেয়ে হুজুরে আ'লা বাতেনী ধরিয়ে দিলেন এক গুরুদায়িত্ব, পানশীর নামের এক বিরাট প্রতিষ্ঠানের ভার তাকেই নিতে হবে। ভয় ছিল, শঙ্কা ছিল, মজলিসে শূরার আপত্তিও ছিল, এইটুকু ছেলে, পারবে কি? পেরেছে, দেখিয়ে দিয়েছে তার কি ক্ষমতা, হুজুরের মান রেখেছে সে। পানশীর এখন প্রতিষ্ঠিত, জমির ব্যবসা থেকে এখন তার হাত লম্বা হয়েছে দাতব্য সংস্থা, শিক্ষালয়, আইটি ব্যবসা পর্যন্ত, সাম্রাজ্য গড়ে তোলার দিকে এগোচ্ছে, এই বয়সেই। এখনো পুরানো কিছু লোক বেঁচে আছে, জামায়াতের সিল থাকলে ব্যবসার জন্য এখনো মাঝে মাঝে ঝামেলা, পানশীরের গা থেকে এই ছাপ্পড় সফলভাবে মুছে ফেলেছে সে, স্বয়ং শেখের ভাতিজা তার কোম্পানির আইনি উপদেষ্টা, কার বাবার সাধ্য এখানে জামাতের গন্ধ খোঁজে? ধূর্ত হাসি খেলে যায় তার ঠোঁটে, এবার স্বাধীনতা দিবসে কেমন খেলটা দেখালো বলো তো, শেখের ভাষণ আর দু'টো মুক্তির ছবির সাথে বেয়নেটের কোলাজ করে যা একখানা জোশিলা বিজ্ঞাপন হলো না, তার নিজেরই একেকসময় নিজেকে মুক্তি মুক্তি বোধ হচ্ছিলো, ডিজাইনার দোস্তটাকে একদিন ভাল করে মাল খাওয়ায়া দিতে হবে। নানা পেশার বন্ধুবান্ধবের কমতি নেই তার, দরকারে অদরকারে তাদের জন্য করেও কম না। সময় অসময়ে টাকা ছড়ানো, ফূর্তির উপকরণ সরবরাহ, যা যা দরকার সবই তার হাতের মুঠোয়। নিজে যেমন ডাগর ডাগর হুরপরী নিয়ে ঘোরে, দরকারে ব্যবসায়িক কাজে বা বন্ধুমহলে সরবরাহেও আপত্তি নেই, হুজুর বলেছেন, ব্যবসা করতে গেলে ওসব জায়েজ, তাছাড়া পুরুষমানুষ তো বাঘের মতই, হরিণ শিকার না করলে চলবে?

হরিণের কথায় আবার সুমি আনাদিলের কথা মনে পড়ে যায় তার। আহা, হরিণের মতই টানা টানা চোখ, যদিও মাল হিসেবে অত কচি না, গত সপ্তাহে যে দু'টো ছিল ওগুলো আরো ভাল। যদিও মাঝে মাঝে ঝানু মেয়েরও দরকার আছে, মজা অন্যরকম। ফুরফুরে হাওয়ায় গুন গুন করে গেয়ে ওঠে নুমায়ের, বিধি ডাগর আঁখি, যদি দিয়েছিলে, হু হু হু হু। হুম, সে সংস্কৃতিবান ছেলে, গানবাজনা নিয়ে সংস্কার নেই, সামী ইউসুফ তো চলেই, শিলা কি জওয়ানিতেও সমস্যা নেই,পয়লা বৈশাখে পেঁচিয়ে শাড়ি পরা বাঙালি নারী দেখলেও তার পৌরুষ চনমন করে, মেলায় গিয়ে ঢোলের তালে রঙ খেলতেও তার মোটেই আপত্তি নেই।। আর দেশকে কি সে ভালোবাসে না? খুব বাসে, এই দেশ পাকিস্তান হবে না, সেটা সে জানে, জানে বলেই নানাজানের মত আফসোস করে না, বরং পাকিস্তানের গন্ধ গা থেকে পুরো ধুয়ে ফেলতে সে বদ্ধপরিকর। সে তো শুধু পাকিস্তানি ভাইদের সাথে আমাদের দিলের খাতির করাতে চায়, আর চায় ইসলামের সেবা করতে, এজন্য পাকিস্তানের খেলায় যেমন দলেবলে আফ্রিদির ছক্কায় নাচে, ওভাবে তামিমের সাথেও নাচে মাথায় লাল-সবুজ ব্যান্ড পরে। বদ পোলাপান অবশ্য বলে এ হলো তার উপহাস, এক হারামজাদা সেদিন বলছিলো, দ্যাখ, এই লাল-সবুজের উল্লাসে নুমায়ের দেখাচ্ছে এভাবেই তোদের মা-বোনের রক্তে রাঙানো জামায় আমরা উৎসব করেছি।ওসব বাজে কথায় সে পাত্তা দেয় না। ওইরকম বড় বড় কথা যারা বলে, তারা ওর বালটাও ছিঁড়তে পারবে না, ক্ষমতায় নেই, তাতেই তো শেখের ভাতিজা এসে হাতে পুরস্কার তুলে দেয়, ক্ষমতায় একবার যাই, দেখবো হোগার কাপড় তুলে তোরা কই যাস, দাঁতে দাঁত চাপে নুমায়ের, স্টিয়ারিংয়েও আঙুল শক্ত হয় একটুখানি। ঐ যে ফটিক, ম্যাডামের চ্যালা ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের অবিসংবাদিত নেতা তখন, ক্যাফের সামনে দিয়ে হেঁটে গেলেই চ্যালাচামুণ্ডার ভিড় জমতো। সে এখন ব্যর্থ নেতা, নুমায়ের যখন সাম্রাজ্য গড়ায় ব্যস্ত আর বুদ্ধিজীবি মাগীদের নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরায়, ফটিক তখন ফেসবুকে নিজের রাজনৈতিক জীবনের স্মৃতিচারণ করে দুধের বাচ্চাদের পটানোর চেষ্টায় রত। এখনো পাস করেই বের হতে পারলো না, কেরদানি করতে গিয়েছিল তার সাথে, খাও এখন মারা, নিজের দলেই জায়গা পাও না। ব্যাটার কপালও খারাপ, ম্যাডামের পার্টি ধরা খেয়ে গেল, সাথে ফটিকও, সবাই কি আর নুমায়ের হয়ে গা থেকে কাদা ঝেড়ে ফেলতে পারে রে ফটিক্যা, খেক খেক করে নিজের মনেই হাসে সে। সুজিত চক্কোত্তির কপাল ভাল যে শেখের বেটি ক্ষমতায়, নাইলে শালা মালুর খবর ছিল। নুমায়েরের সাথে অবশ্য খাতির ছিল তার, এখনো সেটা সে বজায় রাখে, আর সুজিত ধান্দাবাজ লোক, শিবির নেতার কাছ থেকেও সে কলাটা মুলাটা পায়, ভবিষ্যতে নুমায়ের যদি ক্ষমতায় চলেও যায়, মারা না খাওয়ার ব্যবস্থাটাও হয়ে যাচ্ছে।

আআআআহহহহহহ, ক্ষমতা, ক্ষমতা, ক্ষমতা। তখন থেকেই এই একটা শব্দ মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। নজর উঁচু তার, টাকাপয়সা বড় ব্যাপার না, ক্ষমতাই আসল। হুজুরদের চল্লিশ বছরের সাধনা, বাংলার মসনদ। মীর জাফর আলী খাঁ পেরেছিলেন, জামায়াত-ই-ইসলামীও পারবে। তিতুমীর আর সূর্যসেনরা আজীবন মারা খেয়েছে, ভবিষ্যতেও খাবে। ক্ষমতা আর টাকার খেলা বড়ই কুটিল, সাপের মত বিশ্বাসঘাতকতা এখানে জায়েজ, হুজুরে আ'লা দের কাছ থেকে এই ছোবল মারা বিদ্যা ভালই রপ্ত করেছে সে। ক্ষমতা এলে টাকা, সুন্দরী, গাড়ি, বাড়ি, দুবাই, লন্ডন, প্যারিস! হুজুররা যা পারেননি, তাকে তা পারতে হবে, একদল সুশিক্ষিত তরুণ-তরুনী আছে তার সাথে। ফটাফট ইংরেজী বলা, মডারেট ইসলামিস্ট, কথায় কথায় কোরান হাদীস আর আলেমদের রেফারেন্স দেয়া আধুনিক ছেলেমেয়ে, অর্ধশিক্ষিত বাঙালির চোখে ধুলো দিতে কি আর লাগে? ম্যাডামের ঘাড়ে আগেই চেপে বসেছে তারা, এখন ঢুকছে শেখের দলেও।অনলাইনে অপারেশনে আছে কয়েকটা গ্রুপ, আছে বিশ্ববিদ্যালয় আর সরকারের মাঝে, আছে দেশের বাইরে, আছে নাসারাদের দেশগুলোতেও। আছে সংবাদপত্র, মালাউন কবি-সাংবাদিকরাও পাত্তি পেয়ে বিদগ্ধ লেখার বন্যা বইয়ে যায় সেখানে, স্বাধীনতার পক্ষের বুদ্ধিজীবিরা অলংকৃত করে এখন নয়া আসমান টিভির টকশো।সিনা উঁচানো হলদে টিশার্ট পরে তাদের হিজাবী জেনানারা যখন গোলাপ ফুল হাতে রাস্তায় চাঁদা তোলে এতিম-গরিবের জন্য, কার সাধ্য চোখ ফেরায়? আধুনিক ছাঁটের দাঁড়ি আর সাজুগুজু পর্দানশীন খুবসুরত আওরাত দিয়ে নয়া আসমান চ্যানেল তো বিপ্লবই করে দিচ্ছে, কে বলে তারা দেশকে পিছিয়ে দিচ্ছে? এগিয়ে তো যেতে হবে এভাবেই, অতীত হলো ভূত, ঝেড়ে ফেলতে হবে, আধুনিক শিবিরের হাত ধরেই নয়া বাংলার জন্ম হবে।এবার কেউ ঠেকাতে পারবে না, সেই দিন আর দূরে নয়, যখন নুমায়ের মাহমেদ হবে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে। মন্ত্রী? হয়তোবা। এমনকি প্রধানমন্ত্রী? কেন নয়? না, এবার আর ভুল হবে না, মাথামোটা পাকিরা যা পারেনি, তারা তা পারবে। বোকাচোদা পাবলিক বাধা দেবে না, বোঝার ক্ষমতাই নেই এদের। কয়েকটা ঘাড়ত্যাড়া কুকুর যদি বাধা দেয়ও, দরকারে নাহয় সে আরেকবার মইনুদ্দিন আর বাতেনী হুজুরের পথ ধরবে, পিষে ফেলবে ওদের ঐ রাস্তা পার হতে থাকা কুকুরটার মতই, সবার অজান্তে, যেমন পিষে ফেলেছিল ঐ কাফেরদের ১৪ই ডিসেম্বরে। ভাবতে ভাবতে উত্তেজিত হয়ে ওঠে শিবির নেতা, এক্সেলারেটরে পায়ের চাপ বেড়ে যায়, রাস্তা পার হতে থাকা আতঙ্কিত কুকুরটার দিকে লেক্সাস ছুটিয়ে দিতে দিতে জ্বলজ্বল করে ওঠে তার চোখ, হেডলাইটের আলোয় জ্বলে ওঠা হাড় জিরজিরে কুকুরটার চোখে চোখ রেখে হা হা করে হেসে ওঠে নুমায়ের মাহমেদ, এয়ারপোর্ট রোডের খোলা রাস্তায় শঙ্কিত বাতাস হাহাকার করে ওঠে হায়েনার হুঙ্কারে।

[রাফি সাঈদ]


মন্তব্য

দুর্দান্ত এর ছবি

পরেরবার দুবাই গেলে ঠিক করেছে ২-১টা আরব চেষ্টা করে দেখবে

- এইটা বেশ মজার হয়েছে। যাকাতগ্রহিতা যাকাতদাতার মেয়েদের সাথে সেই যাকাতের টাকা দিয়েই সহবাস কেনার স্বপ্নে মশগুল।

খোদা কি মর্জি

- সুন্নি সৌদি প্রতিপালিত জামাতি নাক এই 'খোদা' শব্দটিতে একটু ইরানী-শিয়া গন্ধ পায়, তাই ডিস্কো জামাতিরা যথাসম্ভব এই শব্দটিকে আল্লাহ দিয়ে প্রতিস্থাপন করে। গত দশকে 'আল্লাহ-হাফেজ' বলে একটা কিম্ভুত বিদায়সম্ভাসনের উদ্ভব এই ধারার অন্তর্গত।

একজন জামাতি কি তিতুমীর আর সূর্যসেনকে একই কাতারে ফেলবে, এমনকি মনে মনেও?

rafi saeed এর ছবি

এখানে সম্ভবত লিখতে গিয়ে নিজের মনের কথাটুকু চলে এসেছে, ভুলটা ধরিয়ে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ। তবে ডিস্কো হুজুররা মনে হয় আর হুজুর থাকতে চাইছে না, একটু আগেই নয়া আসমান টিভিতে দেখি রিপোর্টারদের ঘোমটা উধাও, আস্তে আস্তে এভাবেই এরা মিশে যাবে।

অপরিচিত আবির এর ছবি

নুমায়ের আহমেদকে সম্ভবত চিনতে পারলাম, আমাগো হলের পাব্লিক ছিল...

rafi saeed এর ছবি

চেপে যান, সব বলতে হয় না।

যুদ্ধবাজ এর ছবি

জুবায়ের আহমেদ, আইপি ০২ ব্যাচ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়।

rafi saeed এর ছবি

বিশ্বাস করুন, নুমায়ের একজন প্রতীক, এমন শত শত ছড়িয়ে আছে।

মঈন হাসান এর ছবি

লেখককে অসংখ্য ধন্যবাদ। হাততালি

rafi saeed এর ছবি

পাঠককেও। হাসি

অতিথি ১ এর ছবি

বড় হুজুরের নাতনীকি এখন বুয়েটে পড়ছে নাকি? শেষ দেখেছিলাম যখন তখন স্কুলে পড়ত ।

পড়াচোর

rafi saeed এর ছবি

বাহ, আপনি দেখি পুণ‌্যবান, একেবারে বাচ্চাকালেই দেবদূত দর্শন করেছেন। বড় হুজুর বুদ্ধি রাখেন, এই সমাজে সবাইকে মিশিয়ে দিয়েছেন, তার ছেলেকে অপসারণ করাতে ক'দিন আগে যে হাহাকারটা হলো!

সাফি এর ছবি

ভালই লেগেছে পড়ে।

rafi saeed এর ছবি

ধন্যবাদ। হাসি

ঈগল এর ছবি

চলুক

লেখা ভালো লেগেছে| শুরুতে বেশি বড় বলে পড়িনি।

নুমায়ের থেকে সুজিত সবগুলোকেই চিনি। দুজনের তো গলাগলি ভাব। যদিও নুমায়ের এর গলাটা খুবই চিকন খাইছে

দুনিয়াটা কনফিউজিং হয়ে যাচ্ছে দিন দিন। সবাই খালি স্বার্থ দেখে। আর আওয়ামীলীগ তো জামাতিপনায় জামাতকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে দিনকেদিন মন খারাপ সেদিন দেখলাম সংখ্যালঘুদের জমি দখল এর ৯০% ই হয়েছে আওয়ামীলীগ আমলে নেতাদের হাতে। তবে নুমায়ের এর নারীপ্রীতির অভ্যাসটা জানতাম না। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে এখন আর বিশ্বাস করতে পারি না মন খারাপ

rafi saeed এর ছবি

রাজনীতিবিদরা সবাই খালাতো ভাই, একজনের ছেলের সাথে আরেকজনের মেয়ের তো হরহামেশাই বিয়ে দিয়ে সব রাস্তা সাফ করে রাখে, লোকমুখে শোনা যায় একসাথে ক্লাব-পার্টিও চলে হরদম। পুরুষ যখন, কিন্ঞ্চিৎ আলুর দোষ তো থাকবেই, আর জামাত ধীরে ধীরে ধর্মীয় খোলস থেকে বের হয়ে আসছে, এটাই সবচেয়ে বিপজ্জনক দিক। পানশীরের পরিচালক যখন সরকারী পক্ষের হাত থেকে শ্রেষ্ঠ তরুণ উদ্যোক্তার পুরস্কার নেয়, তখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার একটা বড়সড় গাধার মুলা ছাড়া আর কিছু মনে হয় না।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

খ্বামার ভালুই পাইলুম।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

rafi saeed এর ছবি

হাসি

এখনো নামহীন এর ছবি

অস্থির।

rafi saeed এর ছবি

সময়টাই তো অস্থির।

পাঠক 1729 এর ছবি

দূর্দান্ত... হাসি

আরেকজন এর ছবি

গুরু গুরু

কল্যাণF এর ছবি

বাঘের বাচ্চা

প্রতিক এর ছবি

আম জনতার জন্য বেশ চক্ষু উন্মোচন মুলক লেখা...ভাল মেরেছেন...আপনার মতো হাত পাকাতে হবে এভাবে সাঙ্কেতিক লেখার জন্য।

কোলাকুলি

প্রতিক

ফেরদৌস এর ছবি

ধর শালা রাজাকারের বাচ্চা রাজাকার!!! কস্কি মমিন!

মেঘা এর ছবি

স্যাটায়ার লেখা। কথার মধ্যেও কিছু না বলা কথা আছে। লাইনের মধ্যে স্পষ্ট ইঙ্গিত আছে অন্য কিছুর। ভালো লিখেছেন ভাইয়া। ফেসবুকে শেয়ার দিলাম।

sraboni এর ছবি

খুব ভাল লিখেছেন। ভাল লাগল। আপনার লেখা পড়ে ক্যাম্পাস জীবনের একটি ঘটনা মনে পড়ে গেল। সেবার সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার মাঝেই মারামারি হলো দু'দলের মাঝে। বি.এন.পি, আওয়ামী লীগ, ছাত্র ইউনিয়ন, সাধারণ ছাত্র একদিকে আর ছাত্র শিবির অন্য দিকে। অভিযান- শিবির খতম করো। কি ভয়ানক মারামারি হয়েছিল যে বলার মত না। শিবির বাইরে থেকে ক্যাডার বাহিনী নিয়ে লাঠি সোটা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে সাধারণ ছাত্রদের উপরে। আমার ক্লাসের এমন অনেক ছেলেকে সেদিন দেখেছি শিবিরের সেই মার মার কাট কাট অভিযানে। যাদের আমি ভাবতাম ক্লাসের সবচেয়ে নির্বিরোধী মানুষ হিসেবে। বিস্ময় আরো বাড়ল যখন দেখলাম আমার ক্লাসেরই এক ছেলে মার খাচ্ছে তার শিবির বন্ধুর হাতে। সেই মারামারিতে শিবিরের একশ এর মত কর্মী আহত হয়। সাধারণ ছাত্রের হিসাব নাই বা বলি। সমস্যা কি জানেন? আমরা সব বুঝছি, সব দেখছি। কিন্তু কিছু করতে পারছি না পড়ে পড়ে মার খাওয়া ছাড়া।

ধন্যবাদ।

সীমানা এর ছবি

খুবই দরকারী লেখা। এই নুমায়েররাই এখন সমাজের বিশাল বড় কর্তা। রিয়েল এস্টেটের ব্যবসায়ী। শালার!

অপ্রস্তুত লেনিন এর ছবি

অসাধারণ।

অতিথি লেখক এর ছবি

অসাধারণ ! দুর্দান্ত !

তালেব মাষ্টার

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।