মেয়েদের উচ্চশিক্ষাঃ আর্থিক টানাপোড়েন বনাম পারিপার্শ্বিকতা

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৬/০৬/২০১১ - ১০:৫২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কেস স্টাডি ১ঃ মিনা ঘরের বড় মেয়ে। পিতা পেশায় কৃষক। এক ভাই মধ্যপ্রাচ্যে থাকায় আর্থিক অবস্থা নিম্ন-মধ্যবিত্ত থেকে উত্তরণের পথে। ঘরে আছে আরও ছোট দুই বোন। আর্থিক টানাটানির মধ্যে বসবাস হলেও পরিবারটি শিক্ষানুরাগী । বড় ভাই উচ্চমাধ্যমিক পাশ। মিনাও মাধ্যমিকে প্রথমবার খারাপ করলেও পরেরবার প্রথম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয়। এরপর উচ্চমাধ্যমিকের গণ্ডি পার হয়ে ডিগ্রী পরীক্ষায়ও রেকর্ড সংখ্যক নাম্বার নিয়ে পুরো থানায় শীর্ষস্থান দখল করে। তারপরও এই পথের পদে পদে বাধা ছিল-
প্রথমত, মিনাদের বাড়িতে তার আগে আর কোন মেয়ে ডিগ্রিতো দূরের কথা, মাধ্যমিকের গণ্ডিও পেরোতে পারেনি। তাই মুরব্বীদের ভয় ছিল মেয়েদের এত লেখাপড়ার কি দরকার। শেষে না আবার বিয়ে দিতে সমস্যা হয়।
দ্বিতীয়ত, মিনা দেখতে "ততটা ভালো" না হওয়ায় তার জন্য তথাকথিত "সুপাত্র" ও কম আসতো। তাই অচিরেই তার কপালে আইবুড়ো অপবাদ জুটে গেল।
তৃতীয়ত, মিনার আরও দুটো ছোটবোন গ্রাম্য "বিবাহযোগ্যা" হয়ে ওঠায় তার পরিবারও বড় কন্যাকে যেকোনো প্রকারে পাত্রস্থ করার জন্য ওঠেপড়ে লাগল ।
অপরদিকে মিনার খুব ইচ্ছা ছিল মাস্টার্স শেষ করে স্কুলশিক্ষক হবার। কিন্তু বড় মেয়ে হবার অপরাধে যথারীতি নিজের ইচ্ছাকে গলাটিপে মেরে পারিপার্শ্বিকতার চাপে তার নিজের চেয়ে কম যোগ্যতাসম্পন্ন এক মাদ্রাসা শিক্ষকের ঘরণী হতে হল। শুধু তাই নয়, বছরখানেকের মধ্যে তার ছোট দুইবোনকেও কলেজের পড়ায় ইস্তফা দিয়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হল।

কেস স্টাডি ২ঃ শারমিন ছোটবেলা থেকেই খানিকটা তোতলা। বাবা নেই। এক ভাইয়ের তরকারির ব্যাবসা আরেকভাইয়ের মুরগীর খামার,সংসার মোটামুটি চলছে। ঘরে মা ও ছোট বোন। মামা-খালাদের দিক থেকে সামাজিক মর্যাদাও বেশ দাপুটে।
শারমিন দেখতে ভালই। কিন্তু একে তোতলার “খুত” তার উপর বাপমরা মেয়ে, এইসব ঘরে “ভদ্রসন্তান”দের পাত্র হিসাবে আনাগোনা একটু কমই হয়। ফলাফল, উচ্চমাধ্যমিক পাশের পর লেখাপড়া বন্ধ করে এখন"চুলা ঠেলার" অপেক্ষায় থাকা।
উপরের দুটো ঘটনা-ই আমার গ্রামের। প্রথমজন আমার সহপাঠী, পরেরজন প্রতিবেশী। এটা শুধু আমার গ্রামেরই নয়, পুরো বাংলাদেশেরই গ্রামগুলোর চিত্র। সাধারণত মেয়েদের শিক্ষার ক্ষেত্রে আমরা দারিদ্র্যকেই প্রধান বাধা হিসাবে জানি। উপরন্তু মেয়ে বলেই ভাবা হয় “এত পড়ে আর কি হবে। দুদিন পরেই তো যেতে হবে পরের বাড়ি, যথারীতি ঠেলতে হবে পাতিল-হাঁড়ি”। তার উপর বিয়ের সময় এত খরচ। তাই বুড়ো বয়সে অন্তত মা-বাপকে দেখবে এই স্বপ্নে বিভোর হয়ে ছেলেদেরকে কষ্ট করে লেখাপড়া করানো হলেও “বাজে খরচ” বলে মেয়েদের বেলায় সেটাও জোটে না। উপরি হিসাবে বিয়ের বাজারে “শিক্ষিত” ছেলের দরদামের বিষয়টাতো আছেই।
কিন্তু উপরের দুটো ক্ষেত্রেই দারিদ্র্যের চাইতেও পারিপার্শ্বিকতাই মুল বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মেয়েদের উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের প্রশ্নে নিম্নবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তের ঘরে দারিদ্র্য আজো প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়ালেও মধ্যবিত্তের ঘরে বাধাটা যতটা না আর্থিক তার চেয়েও বেশি সামাজিক। শহরাঞ্চলে এই পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও গ্রামাঞ্চল রয়ে গেছে এখনো সেই তিমিরেই। সমাজের মানসিক দীনতাই এখানে বড় বাধা। আর্থিক সংগতি থাকার পরও মেয়েদের উচ্চশিক্ষা এখানে থেমে যায় সমাজবদ্ধতার অপরাধে।
এই সমাজবদ্ধতা থেকে উত্তরণের আদৌ কি কোন পথ নেই??????????

নির্ঝরা শ্রাবণ


মন্তব্য

কৌস্তুভ এর ছবি

মেয়েদের বেশি লেখাপড়া করে কী হবে? তাদের তো কেবল ভালো ঘরণী, ভালো মা হওয়া প্রয়োজন...

আজকাল বরং মেয়েরাই বাপ-মাকে বেশি দেখে...

guest_writer এর ছবি

খুবই সত্য কথা! একমত!

তবে, এখনকার গ্রামের মানুষও কিন্তু বেশ সচেতন হয়ে যাচ্ছে এবং আশা করা যায় যে খুব শীঘ্রই এই অবস্থা থেকে উঠে আসা যাবে।

==============
আমি জানি না।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

শহরেও যে খুব ভালো অবস্থা তা না
পরিত্রানের উপায় আছে। মানুষকে শিক্ষিত হতে হবে, সার্টিফিকেটধারী না

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

guest_writer এর ছবি

মানুষকে শিক্ষিত হতে হবে, সার্টিফিকেটধারী না

একমত!

আরও সহজ করে বলতে চাইলে বলা যায়, অন্য কিছু না, শুধু সচেতন হলেই হবে।

==========
আমি জানি না

guest_writer এর ছবি

ধন্যবাদ নজরুল ভাই,
"মানুষকে শিক্ষিত হতে হবে, সার্টিফিকেটধারী না" - মানছি, তবে আমি মনে করি সবার আগে সচেতন হওয়াটায় দরকার ।

নির্ঝরা শ্রাবণ

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

শিক্ষিত হওয়ার মধ্যে সচেতনতাও আছে

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

guest_writer এর ছবি

ধন্যবাদ কৌস্তুভ,
"আজকাল বরং মেয়েরাই বাপ-মাকে বেশি দেখে..." এই সত্যটা সবাই জানে, কিন্তু মানছে কয়জনে
বিশেষ করে গ্রামের একজন কৃষক পিতাকে আপনি কি করে বোঝাবেন- যার কাছে কন্যা মানেই দায়.........

নির্ঝরা শ্রাবণ

অপছন্দনীয় এর ছবি

খালি গ্রামকে বলছেন কেন? শহুরে তথাকথিত উচ্চশিক্ষিতরা কম কীসে?

ফ্যামিলিসুদ্ধ তথাকথিত উচ্চশিক্ষিতকে বলতে শুনেছি পরিবারে মেয়েদের যোগ্যতা ছেলেদের চেয়ে কম হতে হয়, নামের পিছে পিএইচডি লাগানো অশিক্ষিতকে বলতে দেখেছি মেয়েদের কাজ বাসার ভেতরে, সেটার জন্য বেশি শিক্ষার দরকার নেই - কয়টা শুনতে চান?

গ্রাম বরং একদিক দিয়ে ভালো, মুখে প্রগতির বুলি আউড়ে কাজে উল্টোটা করে না। শহুরে ভন্ডগুলো তো সেই দিকেও কম নয়। ফ্যামিলি ভায়োলেন্সের বিরুদ্ধে সেমিনার শেষ করে এসে বউকে ধরে পেটায় এরকম পশুও আছে তাদের মধ্যে - আমি নিজেই দেখেছি।

নারীর প্রাপ্য সম্মান যদি দিত্রে চান তো বহু কিছু ঠিক করতে হবে। পানির বদলে নিজের পা ব্যবহার করে সমাজের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত ধুতে হবে, ধর্ম পালটে হয় আধুনিক করতে হবে নয় ছুঁড়ে ডাস্টবিনে ফেলে দিতে হবে, কতগুলো করবেন?

কৌস্তুভ এর ছবি

বৌয়ের যোগ্যতা স্বামীর থেকে বেশি হলে ছেলেটির ইগো প্রবলেম হয়। এ নিয়ে তো 'অভিমান' বলে সিনেমাও হয়েছে। আর এই প্রবলেমের দায়টাও কিন্তু মেয়েটার উপরেই পড়ে।

লোকে যে 'বিশেষ সম্মানিত' আদ্যিকালের বইগুলোর রেফারেন্স দিয়ে এধরনের আচরণকে যুক্তিযুক্ত দেখিয়ে থাকে, সেগুলোও বর্জন করতে হবে। সেটাই সব নয়, কিন্তু একটা প্রয়োজনীয় ধাপ।

অপছন্দনীয় এর ছবি

এহহে, ধর্মানুভূতিতে ক্যাঁৎ করে আঘাত দিয়ে বসলেন তো ইয়ে, মানে...

guest_writer এর ছবি

অপছন্দনীয় কে ধন্যবাদ ।

পানির বদলে নিজের পা ব্যবহার করে সমাজের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত ধুতে হবে, ধর্ম পালটে হয় আধুনিক করতে হবে নয় ছুঁড়ে ডাস্টবিনে ফেলে দিতে হবে, কতগুলো করবেন?

তাই তো প্রশ্ন এ থেকে উত্তরণের কোনও পথ-ই কি নেই...............

নির্ঝরা শ্রাবণ

অপছন্দনীয় এর ছবি

উপায় আছে, তবে আমার সাথে অনেকের মতামত মিলবে না। আমি মনে করি মিষ্টি কথায় সচেতনতা জাগানোর দিন শেষ। যেহেতু এইসব সার্টিফিকেটধারী প্রাণী সভ্য সমাজে প্রচলিত ভাষার চেয়ে প্রস্তরযুগের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ ভালো বোঝে, কাজেই ঘরে, বাইরে, অফিসে, পার্টিতে যেখানেই পাওয়া যাক পেছনে নিজের জুতোর ছাপটা এঁকে দিলে খুব তাড়াতাড়ি সচেতনতার প্রয়োজন বুঝে যাবে। যে যেরকম তার জন্য সেরকম ভাষাই দরকার।

নাম দেবো না এর ছবি

মাহবুব মুর্শেদের ব্লগে নিজের কাহিনী কিছুটা লিখেছি। একটা উচ্চতর প্রফেশনাল ডিগ্রী-তে এনরোল করেছিলাম অনেকগুলা টাকা দিয়ে পড়াশোনার সর্বোচ্চ পাঠ চুকিয়েও। কিছু ব্যাক্তিগত ঘটনার তিক্ততার পর ক্যারিয়ার আর পড়াশোনায় মনোযোগ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজের মত জীবনযাপন শুরু করলাম অনেকটা, সেটা নিয়ে মায়ের সাথে প্রচন্ড ঝগড়া হয়েছিলো। মা তীব্র প্রতিবাদ করে জানিয়েছিলেন আমার এইসব ডিগ্রির জন্যেই তিনি আমার জন্য কাউকে খুঁজে পাচ্ছেন না। কাঙ্খিত 'সুপাত্রে'রা ক্রমাগত আমার জীবন থেকে সরে যাচ্ছে। হাসি মায়ের ধারনা অমূলক নয়। আমি এখন প্রচন্ড একা। ব্যাক্তি স্বাধীনতা খোয়াইনি, কিন্তু একাকিত্ব-কে সাথী করে নিয়েছি। আমি জানি অনেকের চোখে আমি নারী হিসেবে অসফল। কিন্তু কি করা যাবে!

অপছন্দনীয় এর ছবি

ব্যক্তিস্বাধীনতার বোধ, এবং সেটাকে ধরে রাখার ইচ্ছে যাঁর আছে, তিনি প্রচলিত ধারণায় 'নারী হিসেবে' সফল হোন বা না-ই হোন, মানুষ হিসেবে নিঃসন্দেহে পুরোপুরি সফল। শুভকামনা থাকলো আপনার জন্য।

guest_writer এর ছবি

ধন্যবাদ,মাহবুব মুর্শেদের ব্লগে আপনার লেখা পড়েছি। আপনি লিখেছেন-

মা তীব্র প্রতিবাদ করে জানিয়েছিলেন আমার এইসব ডিগ্রির জন্যেই তিনি আমার জন্য কাউকে খুঁজে পাচ্ছেন না। কাঙ্খিত 'সুপাত্রে'রা ক্রমাগত আমার জীবন থেকে সরে যাচ্ছে।

আপনার মায়ের কষ্টটা বুঝি। এই সমাজ এখনো কোন মেয়েকে একা থাকার অধিকার দেয়নি। তাই তাঁকেও তো প্রতিনিয়ত প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়।

আমি এখন প্রচন্ড একা। ব্যাক্তি স্বাধীনতা খোয়াইনি, কিন্তু একাকিত্ব-কে সাথী করে নিয়েছি।

আপনি আর দশজনের মত টিকে থাকা ও মেনে নেয়ার সংস্কৃতি ভেঙ্গে আপনার স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখতে পেরেছেন, এখানেই তো আপনার সাফল্য.........শুধু একজন নারী হিসাবে নয়, একজন মানুষ হিসাবেও

ভালো থাকবেন।

নির্ঝরা শ্রাবণ

বইখাতা এর ছবি

চাপিয়ে দেয়া সিদ্ধান্ত মেনে না নেবার আর নিজের ভাল লাগা, মন্দ লাগাকে গুরুত্ব দেবার মানসিকতা থাকলে মেয়েদেরকে বেশিরভাগ পরিবারেই অনেকরকম যুদ্ধ করতে হয়। এর ফলাফল হয় দুই রকমঃ একসময় ক্লান্ত হয়ে রণে ভঙ্গ দিয়ে সবকিছু মেনে নেয়া; নিজের মতামত, পছন্দ, অপছন্দ, ইচ্ছাকে ভুলে যাবার চেষ্টা করে ভাল আছি বা সুখে আছি টাইপ ভাব দেখানো। আর আরেকটা হলো সবসময়েই যুদ্ধ চালিয়ে যেতে যেতে ধীরে ধীরে একা হয়ে যাওয়া। এর মধ্যে কে কোনটা বেছে নেবে তা নির্ভর করে অনেক কিছুর ওপর। ...যাই হোক না কেন...জীবন তো একটাই। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।

আরেকটা কথা বলতে ভুলে গেছি। ......আমরা যারা মোটামুটি স্বাবলম্বী তারা এই দুইটা অপশন থেকে হয়তো নিজের ইচ্ছায় একটা বেছে নিতে পারি। কিন্তু দুঃখের ব্যাপার কি জানেন, আমাদের দেশের বেশিরভাগ মেয়ের কিন্তু এই সুযোগটা নেই। তাদেরকে যেকোনো কিছু মেনে নিতে বাধ্য হতে হয়।

mohaOtit এর ছবি

কিন্তু একে তোতলার "খুত" তার ওপর বাপ মরা মেয়ে, এইসব ঘরে "ভদ্রসন্তান"দের পাত্র হিসেবে আনাগোনা একটু কমই হয়

আমার মন্তব্যে আপনারা অনেকে রুষ্ট হবেন জানি, তবুও বলি। বাবা মা ছেলের/মেয়ের জন‌্যে যখন পাত্রী/পাত্র দেখেন (অ্যারেন্জড ‌ম্যারেজের কথা বলছি), তখন শারীরিক/ মানসিক খুতগুলোকে কি উপেক্ষা করে যাবেন? যদি একটি তোতলা ছেলে/মেয়ে কে কেউ এটুকু খুতের জন্য পছন্দ না করেন তাহলে কি ভন্ডামি/অভদ্রতা হবে?
আমার মন্তব্যের জন্য দু:খিত, নৈতিকতার কথা বলতে/শুনতে আমাদের সবার ভালো লাগলেও বাস্তবতা বড়ই নির্মম। আপনি বুকে হাত দিয়ে বলুনতো, আপনার ভাই/বোন/ছেলে/মেয়ের জন্য সেরকম পাত্র/পাত্রী পছন্দ করবেন?
-----------------অতিথি

অপছন্দনীয় এর ছবি

রেসিজম কাকে বলে জানেন? না জানলে জেনে রাখুন, যে বৈশিষ্ট্যগুলোর জন্য মানুষ নিজে দায়ী নয়, সেগুলো দিয়ে তাকে কোনভাবে আলাদা করাকে রেসিজম বলে।

আপনার প্রশ্নের উত্তর, আমার ভাই বোন ছেলে মেয়ে নেই, কাজেই নিজেকে দিয়েই বলি, হ্যাঁ করবো। নিজে যাঁকে পছন্দ করেছিলাম তাঁর এমন অনেক ব্যাপার ছিলো যেটা জানলে তথাকথিত বাস্তববাদীরা লেজ তুলে পালাবে, আমি পালাইনি। নির্মম বাস্তবতার নিরিখেও আমি রেসিস্ট নই, আপনি কী সেটা আপনিই ভালো জানবেন।

নৈতিকতার কচকচানি না করে এত বাস্তবতার জের টানলেন, বুঝলাম আপনি বেশ বাস্তববাদী। এবার আপনাকে আমি একটা প্রশ্ন করি, মধ্যযুগে যে লোক যৌনদাসী কিনতে স্লেভ মার্কেটে যেত, আর তারপরে শরীর মেপে একজনকে কিনে নিয়ে আসতো, তার সাথে আপনার ভাষায় 'বাস্তববাদীদের' দৃষ্টিভঙ্গীর পার্থক্য কোথায়?

mohaOtit এর ছবি

রেসিজম কাকে বলে জানি। নিজে শারীরিকভাবে খানিকটা সীমাবদ্ধ বলে জানালার এপাশ থেকে দেখার অভিগ্গতা আছে। আমি বেশ বাস্তববাদী নই আসলে, আমাকে নিয়ে আমর বউকে কি যন্ত্রনার মধ‌্যদিয়ে যেতে হয়েছে সেটা দেখেছি বলেই মন্ত‌ব্যটা করা।

মধ্যযুগে যে লোক যৌনদাসী কিনতে স্লেভ মার্কেটে যেত, আর তারপরে শরীর মেপে একজনকে কিনে নিয়ে আসতো, তার সাথে আপনার ভাষায় 'বাস্তববাদীদের' দৃষ্টিভঙ্গীর পার্থক্য কোথায়?

আমার মন্তব্যের পাত্র/পাত্রী খোজা বাবা মায়ের সাথে স্লেভ মার্কেটের কাস্টমারের পার্থক্য নিয়ে প্রশ্নটা করলেন? এই দুই শ্রেনীর মধ্যে কোন মাপকাঠিতেই তুলনা হয়না, তাই মন্তব্য করতে চাইনা।

অপছন্দনীয় এর ছবি

হ্যাঁ করলাম। কোন মাপকাঠিতেই তুলনা হয় না কেন? একজনের সুশীল খোসা আছে আরেকজনের নেই বলে? নাকি একজন সোজাসুজি নোংরামি করে আর আরেকজন বিয়ের নামক এক 'পবিত্র'(!) ধর্মীয় এবং সামাজিক বন্ধনের নামে নোংরামি করে বলে?

আপনার বাস্তববাদীরাও শরীর মেপে মানুষ বিচার করে, সে যুগের স্লেভ মার্কেটের ক্রেতারাও তাই করতো - পার্থক্যটা কোথায়? মাপকাঠিই বা আলাদা হলো কী দিয়ে? নাকি আজকে স্লেভ মার্কেটের কাস্টমারের মত আচরণ করলেও তাকে 'অভিজাত ভদ্রলোক সুতরাং আলাদা' বলতে হবে?

জানালার উলটো দিকের অভিজ্ঞতা বলেন? সে অভিজ্ঞতা আমারও আছে। রেসিজম কাকে বলে যদি জেনে থাকেন, তাহলে রেসিস্ট কাকে বলে সেটাও নিশ্চয় জানেন। অনেকে শুনেছি রেসিস্ট হিসেবে গর্ববোধও করেন।

mohaOtit এর ছবি

আপনার কথার ভাষা আমার পছন্দ হয়নি, দু:খিত। আমি প্রমান করে দিতে পারব আপনিও রেসিস্ট। কিন্তু আপনার সাথে তর্কে যেতে চাইনা । ধন্যবাদ।

অপছন্দনীয় এর ছবি

আপনি একা নন, আমার কথা বলার ভাষা, ভঙ্গী কিংবা ধরন কারোই পছন্দ হওয়ার কোন কারণ নেই। ভাষা নিয়ে আপত্তি না থাকলেও আপনার মন্তব্য যে বিশেষ মনোভাব প্রকাশ করে সেটাও আমারও পছন্দ হয়নি, সেই জন্যই উত্তর দিয়েছিলাম।

আমাকে রেসিস্ট প্রমাণ করে দেয়ার অনুরোধ থাকলো, তবে অনুরোধটা রাখবেন কিনা সেটা সম্পূর্ণভাবেই আপনার ইচ্ছা।

আপনাকেও ধন্যবাদ।

guest_writer এর ছবি

আমি কারও কোন মন্তব্যের জবাব দিতে পারছিনা।এম্নিতে মন্তব্য আকারে প্রকাশ করা যাচ্ছে। কিন্তু নির্দিষ্ট কারও মন্তব্যের নিচে আমার মন্তব্য প্রকাশ করতে চাইলে সেটা কিভাবে করবো ? দয়া করে কেও একটু সাহায্য করুন।
এ ব্যাপারে

এ দুইবার মেইল করেও কোন জবাব পাইনি।

নির্ঝরা শ্রাবণ

কৌস্তুভ এর ছবি

কোনো মন্তব্যের নিচে বাঁদিকে যে 'জবাব' লেখাটা আছে তাতে ক্লিক করুন। জবাব দেওয়ার জন্য একটা বক্স খুলবে।

কামরুল শিবলী এর ছবি

কোন উচ্চ শিক্ষিত মেয়ের সাথে কি নিম্ন বা কম শিক্ষিত ছেলের বিয়ে হতে পারে না যেখানে প্রায় শতভাগ শিক্ষিত ছেলে শুধুমাত্র শিক্ষারে অপ্রাধান্য দিয়ে এই বন্ধনে আবন্ধ হচ্ছে? সম অধীকারের পর্যায়ে এটা যদি না পড়ে তাহলে সম-অধীকার কথাটা কোন কম্পানীর "লয়াল কর্মচারি" মতই কিছু একটা।

guest_writer এর ছবি

ধন্যবাদ,

কোন উচ্চ শিক্ষিত মেয়ের সাথে কি নিম্ন বা কম শিক্ষিত ছেলের বিয়ে হতে পারে না

না বিয়ে হতে কন দোষ নেই যদি ছেলেটা তার স্ত্রীর বেশি যোগ্যতাসম্পন্ন হওয়াটাকে মেনে নিতে পারে। কিন্তু ৯৯.৯৯% ক্ষেত্রেই ছেলেরা সেটা পারেনা, তা তথাকথিত শিক্ষিতই বলুন বা অশিক্ষিত।
টাটকা উদাহরণ হিসাবে রুমানা মঞ্জুরের ঘটনাটাই দেখুন............

নির্ঝরা শ্রাবণ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।