এলান কোয়াটারমেইন ও আয়েশা

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শনি, ০৬/০৮/২০১১ - ৯:২৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

জীবনে কতকিছুই যে ইছা করত তার সীমা নেই। এই বুড়ো(!) বয়সে এসে একটা পূর্ণ করতে চেস্টা করছি তা হলো একটি ভালো মানের বই উপহার দেয়া।তাও অনুবাদ করে। এখন পাঠক খুজে পাই না । আপনাদের কাছেই আমার এই নিবেদন।
আমার প্রিয় একটা বই এর সম্পূর্ণ অনুবাদ করছি। যা আপনাদের পছন্দ হবে বলে আশা করছি। আপনাদের পরিচিত সলোমনের গুপ্তধন এর নায়ক এলান কোয়াটারমেইন এর আরো একটি বই। আপনাদের সমালোচনা আমাকে ভালো করতে উৎসাহ দিবে।

হাসান মামুন

এলান কোয়াটারমেইন ও আয়েশা

হেনরী রাইডার হ্যাগারড
-------------------------

“প্রয়াত এলান কোইয়াটারমেইন এর চিঠি”

আমার সেই বন্ধু ,
যার হাতে এই পান্ডুলিপি গিয়ে পড়বে,আমার ধারনা সে সম্পরকে আপনাকে আমার কিছু বলার আছে।

অনেক কাল আগে আমি এই পান্ডুলিপির মাঝে কিছু বিভিন্ন ঘটনার ইতিহাস লিখে রেখেছি। এই ঘটনা এতই বিশদ ভাবে লেখা যে তা , এদের মোটামুটি ভাবে সম্পূর্ণ বলা যেতে পারে। আমি এই কাজ করেছি আমার সন্তুষ্টির জন্য। আপনারা নিশ্চয় খেয়াল করেছেন যে আমাদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে কিভাবে আমাদের স্মৃতিশক্তি কমতে থাকে? আমাদের যৌবনের অভিজ্ঞতা আর সেই সময়ের দেখা বিভিন্ন ঘটনা আমরা প্রায় নিখুত ভাবে মনে রাখতে পারি । কিন্তু মাঝবয়সের সৃতি আমাদের মনের অগোচরে চলে গিয়ে প্রায় ঝাপসা হয়ে আসে। ঠিক ধূসর আর অস্পষ্ট কুয়াশায় ঢেকে যাওয়া নিচু সমতল ভূমির মতন।বহুদূরের বয়সন্ধি আর প্রথম যৌবনের পাহাড় আর সমতল ভূমি এখনো সৃতির রোদে ঝলমল করে। ঠিক তেমন এ ঝলমল করে চোখের পলকে কেটে যাওয়া মুহূর্তগুলো আর বর্তমান বাস্তবতার উপর আমরা দাঁড়িয়ে থাকি। কিন্তু এর মাঝের উপত্যকা কুয়াশায় ঢাকা পড়ে যায়। তা এমনই প্রবল যে , অতীত এর চমকে দেয়ার মত কোন ঘটনার প্রতীক তাও হারিয়ে যায় এই বিভ্রান্তিকর কুয়াশায়।

এই সমস্ত ঘটনা বিস্তারিত গুছিয়ে রাকার কারন হল এই সত্যগুলোর যথাযথ উপলব্ধি । যদিও অনেক কিছুই বাদ পড়ে গিয়েছে। এইসব ঘটনা হল আমার সাথে আয়েশা বা হিয়া অথবা সে যাকে মানতেই হবে নামক এক অসাধারন বিস্ময়কর ও জমকালো মহিলার সাথে আমার কিছু সময় কাটানোর কাহিনী। যদিও প্রচরনার কথা ভেবে আমি এসব করিনি । আমি চেয়েছিলাম সব কিছু ভুলে যাওয়ার আগে লিখে রাখতে, যেন বাধক্যর কোন এক বিকেলে বসে মনোযোগ সহকারে পড়তে পারি, অবশ্য ততদিন বাঁচব বলেই আমার ধারনা।

অবশ্যই , সেই সময় আমি একেবারেই চাইনি যে আমার মৃত্যুর পর এসব কিছু পৃথিবীর সামনে প্রকাশিত হোক, কারন এই ঘটনাগুলো বা এর অনেকগুলো এতই অস্বাভাবিক যে আমি ভীত ছিলাম লোকে হাসবে আর আমার সততা আর সৃতিশক্তি কে দোষারোপ করবে। অবশ্য জানিয়ে রাখা ভালো যে, এই বিষয়ে আমি একটা প্রতিজ্ঞা করেছিলাম আর সর্বদা আপ্রান চেষ্টা করেছি সেই প্রতিজ্ঞা পালন করার জন্য এবং অপর এর গোপনীয়তাকে রক্ষা করার জন্য। সেই কারনেই আমি প্রস্তাব করছিলাম , যদি আমি অবহেলা করি বা ধংস করতে ভুলে যাই তাহলে যেন আমার উইল কার্যকর করার ভারপ্রাপ্ত ব্যাক্তিকে যেন সেই কাজ করতে বলা হয়। তা ছাড়াও আমি যাই লিখে থাকি না কেন সেই গুলো যদি আমার নৈমিত্তিক কথোপকথন বা বা অন্য কিছুই হোক তাও যেন ধংস করা হয়। আমার ইচ্ছা ছিল আমার জীবনের এইসব কথা থাকুক আমার একান্তই ব্যাক্তিগত, যা কেবল আমিই জানব। আরে সেই কারনেই এই সকল সম্পর্কে কাউকে আঁচও পেতে দেইনি, এমন কি আপনাকেও না ,যাকে আমি অনেক কিছু বলেছি।
যাই হোক,আমার জীবনের চলার পথের এই বর্ণনার নানা ঘটনা যতটুকু সম্ভব নির্ভুলভাবে ও সহজভাবে লিখে রাখার চেস্টা করেছি। এইসব ঘটনার মাঝে এমন কিছু ঘটনা ছিলো যেগুলো কোনদিন ভুলবার নয়, কারন এরা এমন কিছু সমস্যার কথা মনে করিয়ে দিতযে , সে গুলো আমি কখনোই ভাবতাম না তা বলতে পারি না বা বলা যাই সব সময়ই সেগুলো মানের ভিতর ঘুরপাক কাটত।
আয়েশার এমন অনেক কথা বা গল্প কখনো কখনো আমার মনে পড়তো , আমি তক্ষুনি তা গুছিয়ে লিখে পাণ্ডুলিপিতে তুলে ফেলতাম। এইসব নোটের মাঝে আপনি আয়েশার মুখ থেকে আমার শোনা কোর নগরীর ইতিহাস যা আমি বাদ দিয়ে ফেলেছিলাম। যদিও এইসব উল্লেখযোগ্য ঘটনার অনেক কিছুই আমার মন থেকে মুছে গিয়েছিলো । ঠিক অযত্নে ফেলে রাখা ছবির মত, যাতে মানুস গুলোকে চেনা গেলেও তা ভীষণ অস্পষ্ট।

সত্যি কথা বলতে কি এই ঘটনাতে আমার ভাবমূর্তি যেভাবে ক্ষুণ্ণ হয়েছে তা আমার জন্য ভীষণ লজ্জাজনক। এমন হবে জানলেও আমার সততা আমাকে ঠিক যা ঘটেছে ঠিক তেমনি ভাবে লিখে রাখতে বাধ্য করেছে। আমি কন কিছু যোগ অ করিনি বা কোন কিছু বাদও দেইনি। তা করতে গিয়ে আমি ভীষণ ভহাবে প্রতারিত হয়েছি। এই অভাবনীয় মহিলা , যার সাথে আমার কোর নামক নগরীর ধংসাবশেস এ দেখা হয়েছিলো, সে এক মোহনীয় শক্তি দিয়ে যে ভাবে আমার সকল ইন্দ্রিয় দখল করেছিল তা আমার কাছে পুরোপুরি অবাস্তব বলে মনে হয়েছিলো।
যেমন ধরুন সে আমাকে এক স্লেচ্ছদেবীর সাথে সাক্ষাৎ সংক্রান্ত হাস্যকর কাহিনী বলেছিল। আবার পরমুহূর্তে সে এইগুলোকে সমর্থন করতো আবার নিজেই এগুলোর বিরোধিতা করত। সে বলত তার এই জীবন আমাদের মরণশীল জীবন পেরিয়ে শত শত বছর পুরোনো যা ইউক্লিড এর মতে অসম্ভব আবার সে এক অতি মানবীয় শক্তি দারা পরিচালিত হবার ভান করতো যা আরো অসম্ভব। এর পর অত্যন্ত চালাকির সাথে সম্মোহনী বিদ্যা বা সংবেদনশীল শক্তির সাহায্যে সে আমাকে পৃথিবীর বাইরে “হল অব হেজেস” এ নিয়ে যাওয়ার ভান করত। এমন কিছু দেখানোর ভান করত যা আমি কেন কোন মানুষ তা কখন এ দেখেনি, এমনকি আম্পামস্লোগপোকাস যে কাঠুরে আম্পামস্লোগপোকাস নামে পরিচিত আর হান্স নামক এর হটেনটট , যারা আমার ভ্রমন এর সঙ্গি ছিলো ।কিছু অস্বাভাবিক ঘটনাও ছিলো যেমন দানব আকৃতির ট্রলদের সাথে যুদ্ধে যখন পরাজিত বা কোন উপায় না পাওয়ার সময় তার আবির্ভাব এর কথা। মোটের উপর কিছু বাদ দিলে আমার যেভাবে প্রতারিত হয়েছিলাম তা অনেকেই এই অবস্থায় পড়লে প্রতারিত হবে, যে অবস্থায় জীবনের অনেক সময় অনেকেই পরতে হয়। নিজের জ্ঞান বা বিবেক তা নিজের মাঝে সীমাবদ্ধ রাখতে বলবে এতাই স্বাভাবিক বা যুক্তি সঙ্গত।
এই সব ঘটনা আমার মনের ভিতর আর আমার আলমারির ভিতর যেখানে আমার কাগজ পত্র লুকনো থাকে সেখানেই ছিলো। একদিন ক্যাপ্টেন গুড বিকেল বেলায় একটা বই নিয়ে হাজির হলেন আর আমাকে পড়তে বললেন । ক্যাপ্টেন গুড একজন অলীক কল্পনা প্রবন ব্যাক্তি । আমার মাঝে মাঝে মনে হত তিনি অতিরিক্ত গল্প উপন্যাস এর ভক্ত।
যখন বুঝতে পারলাম তা একটি উপন্যাস, আমি তাকে সাফ মানা করে দিলাম। কারন আমি মোটেই রোমাঞ্ছপ্রিয় নই আর সত্য বলতে কি আমার জীবনের কঠোর বাস্তবটাই ছিলো আমার জীবনের এক মাত্র আগ্রহের বিষয় তা যেমনই হোকনা কেন।
হ্যা আমাকে স্বীকার করতেই হবে আমি পড়তে ভালোবাসি, সেটা আমার পছন্দের এলাকায় সীমাবদ্ধ। আমি বাইবেল পড়ি , বিশেষ করে ওল্ড সেস্টমেন্ট। আমি এগুলো পড়ি কারন এগুলোর শিক্ষা আর অনুবাদকের রাজকীয় ভাষার জন্য যা আমাকে মনে করিয়ে দিত আয়েশার সুরেলা এর্যাআবিক কথার জন্য, যা আমি অতি বাজে ভাবে আমার পাণ্ডুলিপি তে উপস্থাপন করেছি। আমি কবিতাও পড়ি সেক্সপিয়ার এর। অন্যদিকে প্রাচিন সাহিত্যও পড়তাম। এর অনেক কবিতাই আমার মুখস্ত্য আছে। আর বর্তমান ঘটনা জানতে চাইলে পত্রিকা পেলেই আমার চলে যায়।
তাছাড়া আরো একটি জিনিস আমি পড়ি তা হলো প্রাচীন মিসর সংক্রান্ত যা কিছু আমার হাতে পড়ুক না কেন। এই একটি দেশ আর এর ইতিহাস নিয়ে আমার অন্যরকম আগ্রহ রয়েছে। এই আগ্রহের বীজ মুলত এমন কিছু ঘটনা বা স্বপ্ন যা এখানে বলার বিষয় নয়। মাঝে মাঝে আমি গ্রীক বা ল্যাতিন লেখকের অনুবাদ পড়ি। আমার স্বল্প শিক্ষা বা জ্ঞানে এর অনুবাদ পরেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়। কিন্তু আধুনিক গল্প বা উপন্যাসে আমার কনো আগ্রহ নেই। মাঝে মাঝে ট্রেন এ কথাযেতে হতে তা উল্টে পাল্টে। দেখি আর এই সব আজগুবি কবি প্রতিভা আমাকে বেশ মজা দেয়।
যাই হোক গুড আমাকে এই উপন্যাস পড়ার জন্য যত জোর করতে থাকলো আর আমার জেদ ততই বারতে থাকলো যে আমি তা করব না। কিন্তু ক্যাপ্টেন গুড এর মত নাছর বান্দা ব্যাক্তি আর নেই। তাই রাত ১০টার সময় চলে যাওয়ার সময় বইতাকে এমন ভাবে রেখে গেলেন যে যেন ওটাকে অগ্রায্য করা সম্ভব নয়। ফলে হটাৎ আমার চোখ ছলে গেল বইয়ের মলাট এর উপর এক ডিম্বাকার যায়গায় প্রাচীন মিসরের কিছু সাংকেতিক নকসায় ।তার পর দেখলাম তার শিরোনাম আর তার নিছে আমার সেই বন্ধুর নাম। এসব দেখে আমার কৌতূহল জাগলো বিশেষ করে ভীষণ সংক্ষেপিত শিরোনাম। শিরোনামে একটি শব্দই ছিল “সে(SHE)”
বইটা আমার হাতে তুলে নিতেই প্রথম যে জিনিসটার দিকে চোখ গেল তা হল অবগুণ্ঠনে ঢাকা এক মহিলার ছবি, আর মনে করিয়ে দিল এমনি অবগুণ্ঠনে ঢাকা এর মহিলার কথা যার সাথে আমার সাক্ষাৎ এর সৌভাগ্য হয়েছিলো। ছবি থেকে চোখ সরিয়ে ছাপার অক্ষরে তাকাতেই একতা শব্দ যেন লাফিয়ে এসে আমার সামনে দাঁড়ালো তা হল কোর নগরী। সারা জগত এ অবগুণ্ঠনে ঢাকা মহিলা অনেকেই আছেন জানি কিন্তু কোর নগরীও কি দুটো আছে?
আমি বইয়ের প্রথম পাতায় গিয়ে পড়তে শুরু করে দিলাম, সেটা ছিল শরত কালের কথা যখন ৬ টার আগে সূর্য উঠে না। যখন আমি পড়া শেষ করালাম বা বলা যায় ঝড়ের মত পড়ে শেষ করালাম রোদ ভালো মত উঠে গিয়েছে।
ওহঃ এর থেকে আমার কি বোঝা উচিত? সেই বইয়ে বুড়ো বেলালির কথা যে মিস্টার হোলি ক্যা বলেছিলো যে বহু প্রজন্ম ধরে সেখানে সাদা মানুষ এর পা পড়েনি? হয়ত সে এ কথা গুলো বলেছিল সব কিছু ঠিকঠাক রাখতে। আবার আমাই সেই বিষন্য মানুষ খেকো আমহাগ্যার গুলো সামনে তার সেই মুখোমুখি উপস্থাপন দেখলাম। এখানে যার নাম ‘সে যাকে মানতেই হবে’।এই দুই এর অর্থ ওড়ায় একই । অন্তত সুন্দরী , রহস্যময়ী, সদা পরিবর্তনশীল , আর উদ্যত আয়েশার ক্ষেত্রেত বটেই।
তাছাড়া সেই হেঁয়ালি ভরা মানুষটিকে নিয়ে আমার সীমাবদ্ধ অভিজ্ঞতার ফাকফোকর ভর্তি করে দিয়েছিলো ইতিহাস। ইনি ছিলেন আধা দেব সুলভ ( যদিও তার কর্মকাণ্ড ছিলো বেশ অসৎ আর অনৈতিক)কিন্তু সম্পূর্ণ রুপে নারী। এটা ঠিক যে সে যে ভাবে আমার সামনে প্রকাশিত হত তারথেকে অনেক ভালো এবন আলাদা রুপে সে এখানে প্রকাশ পেয়েছে। তা সর্তেও তার চারিত্রিক কাঠামো একই। অথবা বলা উচিৎ চরিত্রগুলো , কারন তাকে দেখে মনে হত একটা শরীরে অনেক রুপ। সে আমাকে নিজের সম্পর্কে বলেছিলো “এক নয় অনেক, আর এখানে নয় সর্বত্র”

এছাড়াও আমি এখানে পেলাম ক্যালিক্রাতিস এর কাহিনী ,এ সম্পর্কে আমার দারনা ছিলো আমাকে চমকে দেয়ার জন্য ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে তৈরি করা একটি গল্প। হতে পারে সে আমাকে ঠকিয়েছিল কিন্তু ক্যালিক্রাতিস এর হত্যার কাহিনী বলার সময় সে একদম উৎসাহী ছিল না। নিজের যৌবন সম্পর্কে অসতর্কতার জন্য অদৃষ্ট তাকে আবদ্ধ করেছিলো এই সুপুরুষ মানুষটির সাথে। সে অপেক্ষা করতে বাধ্য হয়েছিলো এবং সে অপেক্ষা করেছিলও , অন্তত প্রথম দিকে। অবশ্য শেষের দিকে আমাদের বিদায় এর সময় সে তার হৃদয় উজাড় করে আমাকে বলেছিলো সে শুধু তাকেই ভালোবাসতো এবং সে কোন এক ঐশ্বরিক আদেশ দ্রারা এ কাজে নিযুক্ত হয়েছিলো।

এখনে আমি আরো অনেক কিছু পেলাম যা আমি কিছুই জানতাম না। যেমন “অনন্ত জীবনের আগুনের ধারা” যার উপহার ছিল অনন্ত অনিশ্চিত অস্তিত্ত্য । যদিও আমার মনে আছে রেযু নামক সেই ট্রল দৈত্যর কথা যাকে আম্পামস্লোগপোকাস হত্যা করেছিল। আয়েশা আমাকে বলেছিল সে জীবন পেয়ালার কথা। সে নাকি সেখানথেকে পান ও করেছিলো। আরেকটু বিচক্ষণতার সাথে তার সামনে নতজানু হলে আর তার অলৌকিক আত্তভিমানক্যা সসম্মান দেখালে হয়ত আমিও তা থেকে পান করতে পেতাম।
আর সব শেষে পেলাম তার মৃত্যুর কাহিনী যা পড়তে পড়তে আমার চোখে পানি এসে গিয়েছিলো। হ্যাঁ আমি স্বীকার করছি আমি কাঁদলাম। যদিও আমার মনে হয় সে আবার ফিরে আসবে , আমাদের শেষ সাক্ষাৎ এ তার মায়াবিদ্যা আর স্লেসউক্তিতে বিরক্ত হয়ে বলেছিলাম তার এত ক্ষমতা সত্তেও অদৃষ্ট তার জন্য তার সবচে ভয়ংকর শাস্তি তুলে রাখবে। এ কথা শুনে সে ভয়ে কুকড়ে গিয়েছিলো কেন তা আজ বুঝতে পারছি। হয়ত সেদিন কোন অদৃশ্য শক্তি তাকে বলেছিলো যে আমার এ কঠোর কথা কোন এলোমেলো কথা ছিলো না। যদিও সে জানতো না কোথায় , কখন আর কিভাবে সেই আঘাত পেতে চলেছে।

আমি অবাক হলেও নিজেকে সামলে নিলাম আবন বইটি বন্ধ করলাম। তার পর সিধান্ত নিলাম আমার প্রতিজ্ঞা অনুযাই আয়েশা এবন তার সাথে আমার সকল ঘটনা চরম নিরবতার সাথে সংরক্ষণ করব আর দ্বিতীয়ত এই পাণ্ডুলিপি আমি কোন দিন ধ্বংস করবনা । যা আগে পৃথিবীর সামনে প্রকাশিত হয়েছে তাতে আমার আর এমন করার কোন অধিকার নেই। এটা আমার কাছেই পড়ে থাকবে আর কোনদিন প্রকাশিত হলে হবে। যা অদৃষ্ট আছে এগুলোর তাই হোক এগুলোর। আর কোন কথা না বলে গুডস কে তার বই ফেরত দিয়ে আমি একটি কিনে নিব।

আর একটা কথা আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে প্রকৃত আয়েশাকে আমি খুব অল্পই চিনতে পেরেছিলাম। সে তার অজস্র ছলচাতুরি দারা আমাকে এমন ভাবে বোকা বানাতো যে তার আসল চরিত্রের গভীরতা কখনঐ বুঝিনি। হয়তো দোষটা আমারই ছিল কারন প্রথম থেকেই তার প্রতি আস্থার অভাব ছিলো। আর সেও চাইত আমার প্রতি এমন আচরণ করতে।হয়তো তার গোপনীয়তা বজায় রাখার কোন ব্যাক্তিগত কারন ছিলো। আমার সামনে নিজেকে যেভাবে প্রকাশ করত তার চাইতে অনেক আলাদা ভাবে নিজেকে প্রকাশ করত মিস্টার হোলী , লিও এবং কালিক্রাতিচ এর সামনে।

ঠিক যতটা চাইত আর আমার যতটা জানা উচিত বলে সে মনে করত, ঠিক তততাই আমাকে বলত।

এলান কোয়াটারমেইন
দ্যা গ্রাঙ্গে
ইয়র্কসায়ার


মন্তব্য

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

আর কঠিন! জলদি পরের পর্ব গুলো ছাড়ুন! হাসি

হাসান মামুন এর ছবি

হাসি ধন্যবাদ। আরো দ্রুত করার চেষ্টা করব।

অপছন্দনীয় এর ছবি

এটা কি She and Allan এর অনুবাদ?

অ্যালান কোয়াটারমেইন সিরিজের কয়েকটা পড়েছি মনে হয়, আয়েশার She সিরিজেরও দুইটা পড়েছি - এটা বোধহয় ওই দুই সিরিজ মিলিয়ে বানানো?

অনুবাদ ভালো লাগছে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত কেমন লাগবে কে জানে, আয়েশার আশপাশে লিওকে চিন্তা করেই অভ্যস্ত কিনা...

হাসান মামুন এর ছবি

জী মোটামুটি ঠিক ধরেছেন।
একটু ব্যতিক্রম হলেও আমার ধারনা সবচেয়ে ভালো এইবইটি। বিশেষ করে এলান কোয়াটারমেইন আর আয়েশা। ২জন একসাথে, মজাই আলাদা।

রাগিব এর ছবি

এই বইটার অনুবাদ কি সেবা প্রকাশনী থেকে "শী" এবং "রিটার্ন অফ শী" নামে বের হয়েছিলো আশির দশকে?

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

অপছন্দনীয় এর ছবি

না মনে হয়। হ্যাগার্ড সম্ভবত শী আর রিটার্ন অফ শীর আয়েশা আর অ্যালান কোয়াটারমেইন সিরিজের অ্যালানকে একসাথে করে এইটা লিখেছিলেন।

হাসান মামুন এর ছবি

এই বইটি অন্য একটি বই। বলাযেতে পারে SHE সিরিজ এর শেষ বই।

তানিম এহসান এর ছবি

হ্যাগার্ডের আয়েশাকে নিয়ে লেখা অনেকগুলো অনুবাদই ছাপা হয়েছিলো সেবা থেকে। এটা পড়ে মনে হলো যে আগের বইগুলোর পরে লেখা এটা, কারন এখানে অনেকগুলো লেখার কিছু কিছু সূত্র দেয়া আছে। সবগুলোই গোগ্রাসে গিলেছিলাম, এখানেও অপেক্ষায় থাকলাম হাসি

হাসান মামুন এর ছবি

আমি আসলে আম্পনাদের জন্যই অনুবাদ করছি যারা অনুবাদ পছন্দ করেন। সেবা আসলে অনেক সংক্ষেপিত করে অনুবাদ করে। আমি পাঠকদের জন্য মুল বইটি অনুবাদ করছি ৫০০ পাতার, মুল ভাব সহ চাল্লু

তারেক অণু এর ছবি

দারুন, পরের পর্ব গুলো জলদি... অণু

হাসান মামুন এর ছবি

গুল্লি গতিতে কাজ আগাইতাছে

শোয়েব মাহমুদ সোহাগ এর ছবি

চলুক। কাজে আবার বিরতি দিয়েন না। ইটা রাইখ্যা গেলাম... পাইতা বসলাম!

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

পাঁচতারা দিলাম, কারণ এলান আমার খুবই প্রিয় একজন চরিত্র এবং এই বইটা আমার অপঠিত।

কিছু বিষয়ের দিকে মনোযোগ আকর্ষণ করিঃ

১। যুক্তবর্ণে আপনি বেশ কিছু বানানে অসতর্ক ছিলেন। "আম্পামস্লোগপোকাস" নয়, নামটি "আমস্লোপোগাস"। "ওল্ড টেস্টামেন্ট" কে আপনি লিখেছেন "ওল্ড স্টেটমেন্ট"...

২। অনুচ্ছেদগুলোর মাঝে ফাঁক না দিলে চোখে চাপ পড়ে। পড়তে কষ্ট হয়।

... আর টুকিটাকি বানান যা ভুল, ওগুলো নিয়মিত লিখলেই কেটে যাবে।

অতএব, অনুবাদের পরের পর্বের প্রত্যাশায় রইলাম। হাসি

হাসান মামুন এর ছবি

আসলে বহুদিন যাবত বাঙলা না লিখায় এই অবস্থা। আমি আপনার মতামত গুরুত্ব সহকারে নিলাম। পরবর্তী অংশে এসব খেয়াল রাখা হবে। অসংখ আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- আপনাকে মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

পরের পর্বের অপেক্ষায়

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

হাসান মামুন এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

EverGreen Rubel এর ছবি

অনেক দিন পর কিছু পরে নিজের ভিতর অন্য রকম অনুভুতি অনুভব করছি.......

কীর্তিনাশা এর ছবি

চমৎকার উদ্যোগ চলুক

সাথে আছি।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

অপছন্দনীয় এর ছবি

ওহ বলতে ভুলে গেছিলাম, অনুবাদ চলুক হাসি

কল্যাণF এর ছবি

তাড়াতাড়ী বস...প্লীজ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।