হেমন্তের উত্তরবঙ্গ

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: মঙ্গল, ৩১/০১/২০১২ - ৪:৩৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

দ্বিতীয় পর্ব : বিষণ্ণ গোধূলি

রাতে ভালো ঘুম হওয়াতে ভোরেই উঠতে পারলাম। ০৭:৩৮ মিনিটে খালার বাসা থেকে রওয়ানা দিলাম এবং ১৬ মিনিটের মাথায় মহাসড়কে ফিরলাম। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক (N3)। বৃহস্পতিবারের শুরুটা ছিল কুয়াশাহীন ঝলমলে সকাল। কিছুক্ষণের মধ্যেই আব্দুল্লাপুরে পৌঁছে গেলাম। ওখানে রাস্তা দু’ভাগে ভাগ হয়ে মূল মহাসড়ক সোজা চলে গেছে ব্রহ্মপুত্রবিধৌত ময়মনসিংহে। বাঁদিকে সাপের মত এঁকেবেঁকে যে রাস্তাটা আশুলিয়া হয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে গিয়ে মিলেছে আমি সেটা ধরে হাঁটতে লাগলাম। বিদায় দিলাম N3-কে। বাঁদিকের রাস্তায় যাবার কারণে ঢাকাকে তখনো বিদায় দিতে পারিনি। আমি যদি সোজা সড়ক ধরে যেতাম তাহলে অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই (বড়জোর দুই মিনিট) ঢাকাকে পিছনে ফেলে গাজীপুরে ঢুকে পড়তে পারতাম। কিন্তু সোজাপথে গেলে সময় অনেক বেশি লাগবে বিধায় বাঁকা পথ ধরলাম।

বিশ্ব ইজতেমার ঐতিহাসিক মাঠকে ডানদিকে রেখে আমি হাঁটছিলাম ঢাকা-গাজীপুর সীমান্ত ধরে! সকাল নয়টার দিকে ভাতুলিয়া মৌজায় মিনিট ছয়েক বিশ্রাম নিলাম। কিছুক্ষণ পর রাস্তা আবার দু’ভাগ হয়ে গেল। একভাগ গেল গাবতলি হয়ে ধামরাইয়ের দিকে; আরেকভাগ সোজা আশুলিয়া। দুই রাস্তার মোহনাস্থলে (অথবা এক রাস্তার বিভাগস্থলে) একদল টহল পুলিস দেখলাম। ওদের কাছ থেকে পথঘাট সংক্রান্ত কিছু তথ্য জেনে নিলাম। ওরা বেশ আগ্রহভরে আমাকে সাহায্য করলো। বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী যেকোনো বাহিনীর (সামরিক ও বেসামরিক উভয়ই) তাদের নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে দায়িত্বহীনটার কমবেশি দুর্নাম থাকলেও এইসব কাজে সহায়তাদানে তারা বেশ দায়িত্ববান ও চটপটে। এর অবশ্য একটা কারণ থাকতে পারে। আমার মোটা মাথায় যতটুকু ধরে তা হল- ওরা প্রথমে হয়তো আমাকে ভ্রমণকারী ভাবে নাই। ওদের চিরশত্রু সাংবাদিক ভেবেছিলো। ভেবেছিলো আমি হয়তো ওদের সাথে আশুলিয়া-গাবতলিগামী চালকদের অন্তরঙ্গ করমর্দন স্মৃতিস্বরূপ নিয়ে যেতে এসেছি। কিন্তু পরে কথা বলে যখন জানতে পারলো আমি আসলে গোবেচারা টাইপের এক ভোঁদাই পাবলিক, যে কিনা এত বাস-ট্রেন থাকতে পায়ে হেঁটে ভ্রমণ করছে তখন তারা আমাকে অন্তরের অন্তস্তল থেকে সাহায্য করলো। যাই হোক ওদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আশুলিয়ার রাস্তা ধরলাম। গাবতলি রয়ে গেল আমার বাঁদিকে।

আশুলিয়ার এই সড়ক যে এতটা ভয়াবহ হবে তা আমার জানা ছিল না। সম্পূর্ণ নিস্পাদপ প্রান্তর। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে (সকাল ০৯:৫০ মিনিটে) সাভারে প্রবেশ করলাম। একে তো কোন গাছপালা নাই তার উপর স্বচ্ছ আকাশে গনগনে সূর্য। সাভারে এসে শরীরটা বেশ ভার ভারই লাগছিলো। তারপরও আমার মনটা খুব উৎফুল্ল ছিল। চারপাশের পরিবেশ যেন এক মায়াবী নিষ্ঠুরতা নিয়ে আমাকে স্বাগত জানাচ্ছিল। এই সড়কে সেদিন গাড়ি তেমন একটা চলছিল না। একারণে মাঝে মাঝেই আমি আমার পদধ্বনি (আসলে হওয়া উচিত জুতাধ্বনি) শুনতে পাচ্ছিলাম। ঐ মুহূর্তটা যে কতটা ...... কোন ভাষায় সেই বিমূর্ত ভাব বোঝাবো; কোন ধ্বনিতে এই পদধ্বনি ব্যাখ্যা করবো! বরং এর লিখিত রূপ ক্ষণিকের সেই মুহূর্তকালের জন্য অপমানজনক। যাহোক কিছুক্ষণ পরে একটা ছাউনি পেলাম বিশ্রাম নেবার জন্য। সুযোগটা হারালাম না।

ছাউনিবাসী আমি একা ছিলাম না। একেকজন একেক কাজে ব্যস্ত ছিল। কেউ ধোঁয়া ছাড়ছে তো কেউ সেটা টেনে নিচ্ছে। আসলে জায়গাটা ছিল বালু উত্তোলন ও ট্রাকে ভর্তিকরণের একটা স্থান। ওখানকার মানুষজনের হাবভাব রোবটিক। অবসর সময়ে তারা যে ধোঁয়া টেনে হাসি-তামাশা করছে তাও যেন তাদের বাধ্যতামূলক রুটিনওয়ার্ক। উপরন্তু কি কারণে যেন তারা আমাকে সন্দেহের চোখে দেখছিল। ১১ মিনিটের সুদীর্ঘ (!) বিশ্রাম শেষে ১০:৩৬ মিনিটে আবার রাস্তায় নামলাম। এর মিনিট দুয়েক পরে আশুলিয়া ব্রিজ পার হলাম। ইতোমধ্যেই পুরাতন বন্ধুরা এসে আমার সাথে যোগ দিলো- পায়ের নিচে পিচঢালা পথ আর মাথার উপরে গনগনে সূর্য। হাঁটতে হাঁটতে বেলা সাড়ে এগারটা নাগাদ জিরাবোর ইটখোলা বাসস্ট্যান্ডে এসে পৌঁছলাম। জিরাবোতে মিনিট দশেক জিরিয়ে নিয়ে আবার রওয়ানা হলাম। একটু আগেও রাস্তার দু’পাশ জুড়ে জনশূন্য প্রান্তর আর তুরাগের নিস্তরঙ্গ প্রবাহ ছিল। আশুলিয়া বাজারের পর থেকে (আস্তে আস্তে) অবস্থা এমন দাঁড়ালো যে মনে হচ্ছিলো আমি একটা গার্মেন্টসপল্লীতে এসে পড়েছি। দু’পাশে কেবল গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি। আমার সৌভাগ্য যে এই জায়গা দিয়ে আমাকে সকালবেলা যেতে হয়নি। তাহলেই খবর ছিল। গার্মেন্টস কর্মীদের ভিড়ে হাঁটতে হাঁটতে পথ ভুলে কখন যে ওদের সাথে কোন একটা গার্মেন্টসে ঢুকে যেতাম কে জানে!

ঠিক সাড়ে বারোটার সময় ফ্যান্টাসি কিংডম পার হলাম। বেলা দেড়টা নাগাদ বাইপাইল বাস স্টেশনে পৌঁছলাম। এখানে রাস্তা T-এর মত দু’ভাগ হয়ে গেছে। একভাগ গেছে বাঁদিকে সোজা স্মৃতিসৌধ বরাবর। আর আমি চলে গেলাম ডানদিকে আমার গন্তব্যপথে। পথে আশুলিয়া থানা পড়লো। এবার আর পুলিস ভাইদের বিরক্ত করলাম না। কারণ আমি নিজেই তখন মহাবিরক্ত। খালার বাসা থেকে বের হওয়ার পর এখন পর্যন্ত কত কিলোমিটার পথ হেঁটে এসেছি তা কিছুতেই বের করতে পারছিলাম না। পারবোই বা কেমন করে! রাস্তার ধারে যে কটা কিমি পোস্ট পেয়েছি তার কোনটাই সুলিখিত বা পাঠযোগ্য ছিল না। হয় কিছু লিখাই ছিল না নয়তো এমনভাবে ছিল যে তার থেকে পাঠোদ্ধার অসম্ভব। যারা গাড়িঘোড়ায় চেপে মহাসড়ক দাবড়ে বেড়ায় তাদের কাছে এই সিমেন্টের স্ল্যাবগুলোর খুব একটা গুরুত্ব আছে বলে মনে হয় না। তাদের নির্ভরতা গাড়ির স্পিডোমিটারের উপর। আর আমার স্পিডোমিটার হল সিমেন্টের এই নিরেট স্ল্যাবগুলো। এই হতাশার মধ্যেও একটা লক্ষ্য খুঁজে নিলাম। ঠিক করলাম খুঁজে বের করবো- কোন জায়গায় গিয়ে আমি প্রথম পাঠযোগ্য কিমি পোস্ট পাই। সেই লক্ষ্য মাথায় নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে সাভারের গণকবাড়ী এসে পৌঁছলাম।

গণকবাড়ীতে ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র (DEPZ) এবং আণবিক শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠান (AERE) অবস্থিত। এখানে এক লোকের সাথে হাঁটতে হাঁটতে কিছুক্ষণ কথা বললাম। বয়স ত্রিশ কি পঁয়ত্রিশ হবে। উনি DEPZ-এ চাকরি করেন। নামটা মনে নেই। লিখতেও পারিনি। ওনার কাছ থেকে জানলাম এটা পুরাতন DEPZ। আমি যে এরকম একা একা হাঁটছি এতে আমার মা-বাবার সম্মতি আছে কিনা জানতে চাইলেন। আমি অর্ধেক সত্য আর অর্ধেক মিথ্যা বললাম। আমার আম্মাই কেবল জানতেন যে আমি এভাবে যাচ্ছি। আম্মা কিন্তু আমাকে কোনো বাঁধা দেননি। খুশি হয়েই অনুমতি দেন। যাবার সময় আদর করে দেন। এই দীর্ঘ যাত্রার খরচ (দেড় হাজার টাকা) আমি নিজেই যোগাড় করেছিলাম। কিন্তু আম্মা তারপরেও আমাকে এক হাজার টাকা হাতে দিয়েছিলেন। থাক সেইসব সময়ের কথা। এগুলো আর কোনোদিন আমার জীবনে ফিরে আসবে না। আমি বরং রাস্তায় ফিরে আসি। অল্প কিছুদূর গিয়ে ডানদিকে একটা রাস্তা চলে গেল কাশিমপুর বরাবর। এখানেই অবস্থিত কাশিমপুর কারাগার। সব দুর্ধর্ষ অপরাধীদের এখানে রাখা হয়। ফাঁসি কার্যকরের জন্য নিয়োজিত জল্লাদ এই কাশিমপুর কারাগার থেকেই সবচেয়ে বেশি নেওয়া হয়। সাধারণত যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীদের জল্লাদ করা হয়। আর কেউ যদি একটা ফাঁসির হুকুম কার্যকর করে তবে তার দুই থেকে ছয় মাসের দণ্ড মউকুফ হয়ে যায়। আরেকটা কথা না বললেই নয়, যেকোনো ধরনের অপরাধীর ক্ষেত্রেই বছরের হিসাব ১২ মাসে হয় না, হয় ৯ মাসে। বেলা আড়াইটা নাগাদ চক্রপতি নামক স্থানে বিশ্রামের জন্য থামলাম।

অবশেষে তাকে পাওয়া গেল। গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে থাকতে একটা পাঠযোগ্য কিমি পোস্ট পেলাম। দুপুর তখন দুইটা বেজে চুয়াল্লিশ মিনিট। আগের কালে যখন এত উন্নত যন্ত্রপাতি ছিল না, যখন অভিযাত্রিকরা মাসের পর মাস যাত্রা করে দিগ্ দিগন্তের কোন ঠাহর করতে পারতো না; কিন্তু হঠাৎ করে কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যের অপ্রত্যাশিত আগমন তাদের মনদর্পণে যেরকম আলোড়ন তুলতো, প্রাণে চাঞ্চল্য আনতো আমারও ঠিক সেই রকম লাগছিলো। বাসা থেকে বের হবার ২৭ ঘণ্টা ১৮ মিনিট পর আমি আমার স্পিডোমিটার খুঁজে পেলাম। তিনটার কিছু পরে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (BKSP) ও ডাক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পার হলাম। বিকেএসপি-র কাছাকাছি এসে আমার মনটা খুব খারাপ হয়ে গেলো। আমার আজীবনের স্বপ্ন ছিল একটা কাঠামোবদ্ধ শৃঙ্খলাভিত্তিক জীবনযাপনে অভ্যস্ত হওয়া। কারও অলঙ্ঘ্য অনুশাসনে নিজেকে ইস্পাতদৃঢ় মানসিকতার একজনে রূপান্তরিত করা। যাই হোক আছে হয়তো কোন কারণ যেজন্য সেই স্বপ্নপূরণের পথে আর যেতে পারিনি। বিকাল চারটায় বারইপাড়ার হঠাৎ মার্কেটের (!) এক দোকানে বিশ্রাম নিতে বসলাম। এটা কোন মার্কেট না, ছোটোখাটো একটা বাজার। দোকানে তখন টেলিভিশন চলছিলো। আর উপস্থিত মানুষজন অত্যন্ত আগ্রহভরে Star Movies চ্যানেলে খুব চমৎকার একটা সিনেমা দেখছিল। আমি যারপরনাই বিস্মিত হলাম। ঢাকা থেকে এত দূরের একটা মফস্বলে অত্যন্ত সাধারণ কিছু মানুষ সাবটাইটেলবিহীন একটা ইংরেজি ছবি দেখছে এবং ছবিটি অত্যন্ত উন্নতমানের। ছবিটার নাম আমি আমার ক্রনিকলে টুকতে পারিনি। হঠাৎ মার্কেটের সেই হঠাৎ পাওয়া বিস্ময় নিয়ে বেলা সাড়ে চারটা নাগাদ সাভারকে বিদায় দিলাম এবং একই সাথে নন্দন পার্কের সম্ভাষণ পেলাম। ০৪:৫০ মিনিটে ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রি চোখে পড়লো। বেশ ভালো লাগলো এরকম সুবিশাল একটা দেশীয় কারখানা দেখে। এটাই ওয়ালটনের মূল কারখানা-ওখানকার সিকিউরিটি গার্ডের গর্বিত উত্তর।

বিকাল পাঁচটা নাগাদ চন্দ্রার মোড়ে এসে পৌঁছলাম। পাখি মারা গুলতির মতন রাস্তাটা তিনভাগে বিভক্ত। আসলে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক (N4)-এর সাথে আমার ফেলে আসা রাস্তা মিশেছে এই চন্দ্রার মোড়ে। কালিয়াকৈর বাইপাসকে ডানে রেখে সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে কালিয়াকৈর রেল ওভারপাসে উঠে এলাম। ওভারপাস হল রেললাইনের উপর নির্মিত ছোট্ট সেতু। সকালের সেই তেজ দেখানো সূর্য নিস্তেজ হয়ে অনেক আগেই ডুবে গিয়েছিলো। শুধু তার রেখে যাওয়া দীপ্তি-আভার ছিটেফোঁটা নিয়ে গোধূলিবেলা (The evening twilight) সেজেগুজে বসে ছিল। বিষণ্ণ সন্ধ্যার সেই গোধূলিলগ্নের সাঁজ আমাকে থমকে দিল। এত সুন্দর দৃশ্য আমার মনে হয় মানুষ খুব কমই দেখেছে। সৌন্দর্যের আতিশয্যে আমার কেবলই মনে হচ্ছিলো বেহেশত এর চাইতেও সুন্দর কিভাবে হতে পারে! আমার ইচ্ছা করছিলো যেকোনো উপায়ে সময়ের এই প্রবহমান ধারাকে থামিয়ে দিই। অনন্তকাল এই অসামান্য নৈসর্গিক সৌন্দর্যের মায়াবী জালে নিজেকে আটকে ফেলি। এক কথায় আমি spell-bound হয়ে গিয়েছিলাম। গোধূলির এই সময়টা ক্ষণস্থায়ী। পাছে আবার এটাকে হারিয়ে ফেলি সেই ভয়ে আমার ক্রনিকলে তেমন কিছুই লিখলাম না। লিখার দরকারও নাই। মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত আমার এই গোধূলিবেলার বিষণ্ণ সন্ধ্যাকে মনে থাকবে। মনে থাকবে ঠিক সেই ভাবে যেভাবে আমি তাকে দেখেছিলাম। কিছুক্ষণ পরে আমার নিচ দিয়ে উত্তরবঙ্গগামী একটা ট্রেন চলে গেলো। আমাকেও সামনে বাড়তে হল। রাতের আশ্রয়স্থল তো ঠিক করতে হবে। এখানে তো আর খালার বাসা নেই যে গন্তব্যের নিশ্চয়তায় নিশ্চিন্ত থাকবো।

ওভারপাস থেকে নেমে একটু পরেই একটা মসজিদ পেলাম। সেদিনের মত যাত্রাবিরতি করলাম গোয়ালবাথান বাইপাস জামে মসজিদে। মসজিদটা রাস্তা থেকে অনেক নিচে। রীতিমত হার্ডব্রেক করে করে নামতে হল। ওখানের ইমাম সাহেব যিনি ওনার সাথে কথা বললাম। আমার সমস্ত কথা শুনে উনি অত্যন্ত খুশি হলেন। আমাকে ওনার মেহমানই করে নিলেন। একসাথে রাতের খাবার খেলাম। তারপর বেশ কিছুক্ষণ গল্প-গুজব করলাম। ইমাম সাহেব বলতেই আমাদের অনেকের চোখেই ভেসে ওঠে মাদ্রাসাপড়ুয়া পশ্চাদপদ মানসিকতার আনস্মার্ট ব্যক্তি। কিন্তু এই আহমাদ ভাই মোটেও সেই রকম ছিলেন না। আমার জন্য তিনি যা করলেন তা সমাজের তথাকথিত উঁচুশ্রেণীর, আধুনিক শিক্ষায় দীক্ষিত স্মার্ট লোকেরাও করেন না। এই উপলব্ধি আমার অভিজ্ঞতালব্ধ। মসজিদটা নির্মাণাধীন ছিল বিধায় এর দরজায় কোন কবাট ছিল না। কিছু কিছু জানালারও একই দশা ছিল। তার উপর ছিল অচেনা জায়গায় অচেনা মশার উৎপাত। এরকম প্রতিকূল পরিবেশকে কিভাবে পোষ মানাতে হয় তার কৌশল (survival skills) আল্লাহ্‌ তায়ালার অশেষ রহমতে আমার ভালোই জানা ছিল। কিন্তু আহমাদ ভাইয়ের কারণে তার একটাও কাজে লাগাতে হয়নি। সারাদিনের ক্লান্তির হিসাব মিলিয়ে দেখলাম মোটামুটি ভালোই এগিয়েছি আজ। এখন ঘুমের হিসাব মেলানোর সময়।

বি: দ্র: এখানে বর্ণিত প্রতিটি ঘটনা সম্পূর্ণ সত্য।

---------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
নিঃসঙ্গ অভিযাত্রিক


মন্তব্য

নিঃসঙ্গ অভিযাত্রিক এর ছবি

প্রিয় ব্লগার বন্ধুগণ,
আমি লিখার সময় কিছু কাজ করতে পারছি না। যেমন লিখা Bold বা Italic করা। যাকে Bold বা Italic করতে চাই তার দুইপাশে সিকিউরিটি গার্ডের মতো কিছু অক্ষর বন্ধনীসহ হাজির হয়। কি করা যায় কেউ বলতে পারেন? আমি কাঁচা হাতের কিবোর্ডিস্ট তাই অভ্র ব্যবহার করি। এর কারণে কি কিছু হতে পারে?

মরুদ্যান এর ছবি

যাকে Bold বা Italic করতে চাই তার দুইপাশে সিকিউরিটি গার্ডের মতো কিছু অক্ষর বন্ধনীসহ হাজির হয়।

এখানে এই পদ্ধতিই অবলম্বন করতে হবে। এটা মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের মতন না, আপনি লিখার সময় বোল্ড হল কি না হল দেখতে পাবেন না। বোল্ড করার বাটন চেপে ঠিকঠাক হল কিনা দেখতে চাইলে প্রিভিউ চেপে দেখে নিন। প্রিভিউ দেখতে Shift+Alt+P অথবা চোখের ছবিওয়ালা বাটনা টা চাপুন।
এই পর্ব প্রথম পর্ব থেকে ভাল হয়েছে। পড়তে খারাপ লাগেনি। পথের মানুষ আর তাদের আচরণ-কাজের বৈচিত্র্য আরো বেশি করে আনুন।

তাপস শর্মা এর ছবি

যে অংশটুকু বোল্ড করতে চান সে অংশটার আগে [b] এবং পরে লিখতে হবে। একইভাবে ইটালিকের জন্য এবং , আন্ডারলাইনের জন্য এবং এর মাঝে লেখা ঢুকিয়ে দিন।
এবার আসি একের অধিক ইফেক্ট অর্থাৎ বোল্ড ইটালিক একসঙ্গে করা নিয়ে । এক্ষেত্রে সবগুলো ট্যাগ একসাথে লিখতে হবে ।
যেমন:
রংপুকুরের নাম কেন রংপুকুর হলো ।
দেখাবে, রংপুকুরের নাম কেন রংপুকুর হলো ।[/b]

তাছাড়া এই পোষ্টটি ঘুরে আসতে পারেন।

তৌফিক জোয়ার্দার এর ছবি

বেশ লাগছে পড়তে। লিখুন।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।