আঁধারে শূণ্যতা

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৫/০৪/২০১২ - ২:৫৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

জোসেফকে ধাক্কা মেরে নিচে ফেলে দিলাম আমি।

১৪ তলা বিল্ডিং এর উঁচু ছাদ থেকে একজন মানুষ কিভাবে নিচে পড়ে তা দেখতে ইচ্ছে করেছিল খুব কিন্তু আমার হাইট ফোবিয়া আছে। নিচে না তাকিয়ে পাশের গ্লাসটা তুলে নিয়ে চুমুক দিলাম আমি। ছাদের রেলিংটায় পা ঝুলিয়ে বসে পড়ে আকাশের দোল পূর্ণিমার চাঁদ দেখতে দেখতে হাসি পেয়ে গেলো। আমি বোকার মত অপেক্ষা করছি জোসেফ ফিরে আসার, ও নিচে পড়ে গিয়ে নিশ্চয়ই থেঁতলে গেছে তবুও আসবে জো। তারচে আজ কি দিবস তা নিয়ে ভেবে কিছুটা সময় কাটানো যাক কিন্তু তার আগে হঠাত্‍ বিকট শব্দে সেলফোন বেজে উঠলো। এখন পকেট থেকে সেলফোন বের করতে যাওয়ার মানেই ১৪ তলার নিচে পড়তে হবে আমাকে। কি দরকার একবারে জীবনটাকে শেষ করার? আব্বু কল করেছে জানি, তার কল রিসিভ না করলেও চলবে আপাতত, সে দূরের একজন।

আব্বু, লোকটার কথা মনে পড়লেই আমার নিজেকে খুব দুঃখী লাগে। আম্মুর সাথে ঝামেলা করে রুকাইয়া আন্টিকে বিয়ে করে আমাদের রেখে চলে গেলো। লোকটা চলে যাওয়ার পর আমি ভেঙে পড়ি, বাবা থেকেও নেই এই কষ্টটা আমাকে তাড়া করতো... এখনো ভালোবাসে আমাকে আব্বু... সিগারেটের প্যাকেটের দিকে হাত বাড়ালাম। বেনসনের দাম ৮ টাকা হয়ে গেছে, আর কত যে বাড়বে!

হু, আম্মুটাও বিয়ে করে ফেললো কয়েকদিনের মাঝে, দাঁত চেপে মেনে নিয়েছিলাম সব কারণ এছাড়া আর উপায় ছিলোনা। বিয়ের ঠিক ১মাস পর গভীর রাতে অগোচরে আমার রুমে আম্মুর নতুন হাজব্যাণ্ড আসলো..... আমার চিত্‍কারে আম্মু এসে আমাকে বলে আমি নাকি তার নিউ হাবিকে শরীর দেখিয়ে এট্রাক্ট করতে চাই, নইলে কি তার হাজব্যাণ্ড আমার রুমে আসবে কেনো। হাঃ হাঃ হাঃ কি অদ্ভুত কথা! নিজের জন্ম দেয়া মেয়েকে এই কথা বলতে পেরেছিলো আমার মা! হাঃ হাঃ হাঃ!

নাহ্! আজকাল এলকোহল পেটে সইছে না হাসতে গিয়ে বমি হয়ে গেলো। মুখ মুছে তাকিয়ে দেখি জোসেফ দাড়িয়ে আছে সামনে,

- আজ কি ৯ পেগের উপরে খেয়ে ফেলছিস?

- উফ! জো আবার আসছিস? এত জ্বালাচ্ছিস ক্যান আমাকে?

- ৯ পেগের বেশি? মিক্সড নাকি র?

- র খেয়েছি। তুই বারবার ফিরে আসিস ক্যান?

- তোকে ভালোবাসি তাই।

আমি সামলাতে পারলাম না চিত্‍কার করে গাইতে লাগলাম,

"So if you love me let me go
And run away before I know
My heart is just too dark to care
I can't destroy what isn't there

Deliver me into my fate
If I'm alone I cannot hate
I don't deserve to have you
My smile was taken long ago
If I can change I hope I never know"

আমি হাসতে লাগলাম, জোসেফ আমার সামনে হাটু মুড়ে বসে চোখ মুছিয়ে দিল। তখন আমি খেয়াল করলাম আমি আসলে কাঁদছি কিন্তু সেটা হাসির মত শোনাচ্ছে। আমি ৪৭% এলকোহলের হুইস্কির গ্লাসটা শরীরের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে ছুড়ে মারলাম জোসেফের মুখের দিকে, কাঁচ ওর চামড়া কেটে বসে গেলো। আমি ওর দিকে আর না তাকিয়ে হাত পা ছড়িয়ে ছাদে শুয়ে রইলাম, আমার চিন্তা এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে....।

আম্মুর আজেবাজে কথা শোনার পর আমি ঐদিনই রাতে বাসা ছেড়ে আমার নামে লিখে দেয়া ফ্ল্যাটে উঠে এসেছিলাম কাঁদতে কাঁদতে। সব জেনে আব্বু সুলেমান চাচাকে পাঠিয়ে দিয়েছিলো আমার ফ্ল্যাটে। ধীরে ধীরে পাল্টে গেলো জীবন, ভার্সিটি আর বিশাল এক ফ্ল্যাটের মাঝে আমি একটা ছোট গণ্ডীতে বাস আমার। দিনরাত মেটাল গান, কাটাকাটি, সিগারেট, তেতো স্বাদের সোনালী তরলে ভেসে চলছিলাম আমি। আমি এমন একটা লাইফ লিড করছিলাম যেটাকে মূলত লাইফ বলা যায় না কি বলে তাও জানিনা।

ভার্সিটির সবাই যখন লুতুপুতু প্রেমের অভিনয়ে ব্যস্ত তখন জোসেফের সাথে পরিচয়, দারুণ বন্ধুত্বের সম্পর্ক। জোসেফ কিছুটা বিচ্ছিরি রকমের ভালো ছেলের মতন। জীবনে সিগারেটে টান দেয়নি, বাপ মায়ের একমাত্র আদরের লুতুপুতু ব্রিলিয়ান্ট ছেলে।

আমি প্রায়ই বলতাম ক্লাসের সবাইকে, ওর মা যে আদর করে দেখা যাবে জোসেফের ব্যাকপেক খুললে এখনো ফিডার পাওয়া যাবে। আমার মত ভালোবাসাহীনতায় বেঁচে থাকা মেয়ের মাথায় ঢুকতো না ভার্সিটি পড়ুয়া একটা ছেলে কি করে বাপ মায়ের এত আদরের হতে পারে এখনো। কিন্তু এই অদ্ভুত ছেলেটা যে কি করে আমার জীবনে জড়িয়ে গেলো জানলাম না। জো আমার ফ্ল্যাটে আসতো, সামনে বসে আমার সিগারেটের ধোয়া সহ্য করতো, ড্রিংকস করার পর পাগলামি দেখতো। ব্লেড দিয়ে হাত কাটতাম, ও যত্ন করে কাটা হাত ফার্স্ট এইড করে দিত। ও প্রায়ই আমাকে সময় দিতো যাতে আমার সোনালী তরল গেলার মাত্রা কমে। অতিরিক্ত ভালো ছেলের মত আমার কাছ থেকে দূরে দূরে থাকতো....

আমি ওর কারণে সব ছেড়ে দিলাম। তাই বলে কেউ যদি ভাবে আমাদের প্রেম সেটা ভুল কারণ ভালোবাসায় আমরা কেউ বিশ্বাস করতাম না। কিন্তু অনুভূতি তো কিছু না কিছু ছিলই যেটাকে কোন শব্দে বন্দী করা যায় না।

জো এর একটা একোস্টিক গিটার ছিল, আমি চোখে মুগ্ধতা নিয়ে ছয়টি তারে ওর আঙুল চালানো দেখতাম। ও আমাকে শিখিয়েছে জীবন কি...... আমরা সব ধর্মী ছিলাম। ফ্যামিলি থেকে আমি মুসলিম আর জোসেফ ক্রিশ্চান। কিন্তু জোসেফ নামায পড়তে মসজিদে যেতো, প্রতিটা পূজায় ও আমাকে শাড়ি কিনে দিতো। সারাজীবন জিন্স ফতুয়া পড়া আমি সেই শাড়ি, শাঁখা আর সিঁদুর পড়ে মন্দিরে মন্দিরে ঘুরতাম। সবচে মজা হতো ক্রিসমাসে, জো আর আমি বাপের টাকা দিয়ে হিউজ গিফট কিনতাম। দুজনে সান্তাক্লজের ড্রেস পরে গভীর রাতে রাস্তায় ঘুমন্ত পথশিশুদের পাশে গিফট চুপিচুপি রেখে আসতাম। ভাবতে খুব ভালো লাগতো যে এই ছোট ছোট বাচ্চাগুলো সকালে ঘুম থেকে উঠে কতটা অবাক হবে! আমি জেনেছিলাম যদি কেউ সত্যিকার অর্থে মানুষের প্রতি ভালোবাসা রাখে সেটাই সব কিছুর উর্ধ্বে, সেই ভালোবাসায় কোন ধর্ম থাকেনা কোন বর্ণ থাকেনা। জো আমাকে রাতের ঢাকা ঘুরিয়ে শিখিয়েছিল যে জীবনটা আমার একার না সেটা সবার জন্য তারচে বড় ব্যাপার আমার থেকে দুঃখী অনেকে আছে।

চুলে হাতের স্পর্শ পেলাম,

- দিয়া

- উমম্.....কথা বলিসনা ভাবছি আমি।

- চুলে হাত বুলিয়ে দিব? ভালো লাগবে তোর।

- না ছাদের দরজা লাগিয়ে দে সুলেমান চাচা খবর নিতে আসতে পারে। তার আগে প্যাকেট থেকে একটা সিগারেট।

- অলরেডি ২ প্যাকেট শেষ। আরো খাবি?

- আজকে পুরা পিনিকে চলে যাব, কিচ্ছু মানবোনা।

- আজ আর না প্লিজ।

- ধুরররর শালা! দূরে গিয়া মর!

ও হ্যা যা বলছিলাম আর কি, আমরা বৌদ্ধদের পূর্ণিমা রাতে প্যাগোডায় গিয়ে ফানুস উড়াতাম, ব্যাপারটা আমার অনেক প্রিয় ছিল। ঐটা ছিল মাঘী পূর্ণিমায় ফানুস উড়িয়ে কিছুটা ঝোঁকের বশেই জোসেফকে বললাম মাওয়ায় পদ্মার চরে ইলিশ ভাজা খাবো, কিছু দোকান ২৪ ঘন্টা খোলা থাকে। জো কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে রাজি হয়ে গেলো। আমরা সেই মাঘের শীতে কুয়াশায় এক পিক আপ ভ্যানে উঠে পড়লাম রাত ৩টার দিকে, এটাও আমার জোরাজুরিতে।

মাছভাজা খেয়ে চরে দুজন বসে রইলাম যতদূর চোখ যায় মরভূমির মত অথচ সামনেই নদী, জোছনায় ভেসে যাচ্ছে চারিদিক। আমি জোসেফের গায়ে হেলান দিয়ে বললাম, একটু উষ্ণতা দিবি?

সেই শুরু...আমাদের ২জনের প্রথম চুমু। ইশ কি ফিলিংস! মনে পড়লে কেমন লাগে যেনো। কি পরিমাণ পাগলামি যে আমি করেছিলাম জো আমার জায়গায় থাকলে আরো আর্টিস্টিক ভাবে বর্ণনা করতো। অনেস্টলি আমি চাইছিলাম আরো কিছু কিন্তু ভদ্র ছেলে জো দুঠোঁটের মাঝেই উষ্ণতাটুকু সীমাবদ্ধ রেখে দিল।

আমি জো এর প্রতি অভ্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম, ভার্সিটির সবাই আমাদের কাপল ভাবতো কিন্তু আমরা আমাদের সম্পর্ককে কোন ঠুনকো প্রেমের সাথে তুলনা করতে চাইতাম না। জোসেফের আমার কাছ থেকে দূরে থাকার কারণটা জানতাম আমি শরীরসর্বস্ব ভালোবাসায় যথেষ্ট ঘৃণা করতো জো। আমার আর জোসেফের সম্পর্কের ৩ বছর কেটে যাওয়ার পর আমি বুঝেছিলাম একটা সম্পর্কের সবচে বড় ভিত্তি শ্রদ্ধা, রেসপেক্ট। যত ছোট অথবা বড় যাই হোক একে অন্যের প্রতি রেসপেক্ট খুব প্রয়োজন যেটা আমার বাপ মায়ের মাঝে বিন্দুমাত্র ছিলো না, যে কারণে আজ আমি ব্রোকেন ফ্যামিলির মেয়ে।

চোখ জ্বালা করছে, উঠে বসলাম আমি যেকোন মুহূর্তে ঝুপ করে পানি পড়তে পারে। চারপাশে কত উচু উচু বাড়ি, চাঁদটা পশ্চিমে হেলে পড়েছে। জোসেফ থাকলে গিটার নিয়ে চিত্‍কার করে গাইতো, 'সব থেকে উচু ফ্ল্যাট বাড়িটার সব থেকে উচু ছাদ. . . . .তোমায় দিলাম আজ'।

আব্বু আমার ফ্ল্যাটে আসলো। আমি তার অনুরোধ ফেরাতে পারিনি, তার সাথে গিয়েছিলাম। জো শুনে খুশি হয়েছিল খুব যদিও আমাদের ভার্সিটির পিকনিকে যাওয়ার কথা ছিল সেন্টমার্টিনে। বললো যতদিন ওরা পিকনিকে থাকবে ততদিন আমি যেন আব্বুর কাছে থাকি। ঐ বাসায় আমার স্টেপ মম রুকাইয়া আন্টি, দুটি সত্‍ ভাইবোন কিন্তু তাদের আচরণে মনে হলোনা। রুকাইয়া আন্টি আমার মত বুড়ি একটা মেয়েকে খাইয়ে দিত, আহনাফ আর আনিশা এই ২জন দিয়াপু বলতে পাগল। আমার বাচ্চাকাচ্চা ব্যাপারটা খুব পছন্দের, প্রতিরাতে আমার এই দুই ভাইবোন গা ঘেষে ঘুমাতো।

জো খুব এনজয় করছিলো পিকনিকে, আমাকে জানালো সমুদ্র এলাকায় নেটওয়ার্ক পাওয়া যাবেনা আমি যেনো টেনশন না করি। আমি খুশি ছিলাম ওর ছেলেমানুষি ভালো থাকাতে।

এদিকে আমিও খুব ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম। ব্যাপারটা তখন ঘটলো যখন আমি ৮ দিন পর ভার্সিটিতে গেলাম। আমি তাকিয়ে ছিলাম অবাক হয়ে, প্রচণ্ড শুন্যতা নিয়ে আমার চারপাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম আমি। যে আমি ভালোবাসায় বিশ্বাস করতাম না সে আমি সেদিন অনুভব করি আমি জোসেফ কে কি অসম্ভব পরিমাণে ভালোবাসি...

ভার্সিটি জুড়ে শোক আর সেই শোকের মাঝে আমি দিশেহারার মত জোসেফের লাশ খুঁজছিলাম। চোরাবালিতে ডুবে যাওয়া আমার জো এর লাশ যেটা ফিরে আসেনি।

আমি এতটাই অপয়া যে আমার সবচে কাছের মানুষটাকে দেখার সৌভাগ্য নিয়ে আমি আসিনি, তার মৃতদেহ সেই চোরাবালিতে ডুবে ছিল। আমি কাঁদতে পারিনি শুধু ওর ব্যাকপেকটা নিয়ে বসে ছিলাম।

আমি পানিতে মুখ ডুবিয়ে অনুভব করতে চাইতাম চোরাবালিতে ডুবে যাওয়ার সময় জো এর অনুভূতি, আমি বুঝতে চাইতাম ওর কতটুকু কষ্ট হয়েছিলো, সেটা কি আমি ওকে হারিয়ে যে কষ্ট পাচ্ছি তারচে বেশি? আমি ফিরে এসেছি আমার সেই পুরানো জীবনে যেখানে শুধু আমি আর আমার.....

জোসেফ ওর একোস্টিক গিটার নিয়ে আমার পাশে বসলো। এত জোছনার আলো চারিদিকে অথচ আমি আবছা ভাবে ওর মুখ দেখি। ও ছয়টি তার আঙুল চালিয়ে গাইতে থাকে,

"জানি তুই জোছনা রাতে চুপটি বসে থাকবি না
জানি তুই একলা বসে কাঁদবিনা
জানি তুই অন্ধকারে বদ্ধঘরের একটি কোণে নিঃস্ব হয়ে জেগে থাকবিনা

জানি তোর কষ্টগুলো অশ্রু হয়ে ঝরবে শুধু
স্বপ্ন হয়ে গান গাইবেনা
চিড়ে ধরা ভালোবাসা একলা পড়ে রইবে জানি
মেঘেদের দল ছুটে চলবে না...."

জোসেফ আবেগ দিয়ে আমার জন্যে গাইতে থাকে

আর

পৃথিবীর সব দ্রব্য মিলিত হয় এক জলে যে জল আমি অনুভব করি আমার চিবুকে গড়ানো অশ্রুধারায়।

দূর্বা জাহান
durba.ghash@ জিমেইল ডট কম


মন্তব্য

মেঘা এর ছবি

কষ্টকর!!!

দেবাশিস্‌ এর ছবি

শিরোনামেই ভুল বেশ দৃষ্টিকটু লাগে। শূণ্যতাকে কি শূন্যতা করে দেওয়া যায় না???

দূর্বা জাহান এর ছবি

হ্যাঁ এটা বেশ বড় একটা ভুল হয়ে গেছে, পুরো লেখাটা ভীষন অস্থিরতায় লেখা । আমি বানানের ব্যাপারে যথেষ্ট সতর্ক তবুও হাত ফসকে হয়ে গেছে বলতে পারেন ।

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

অস্থিরতা কেটে যাবে আশা করি।
লেখাটা ভীষণ ভীষণ ছুঁয়ে গেলো, কষ্ট তৈরি করে দিলো ভেতরে।
শেষ দেখায় হাসিখুশি প্রাণবন্ত আমার এক বন্ধু ফিরেছিলো পুলিশের মারপিট খাবার পর পানিতে ডোবা লাশ হয়ে।
আপনার স্বতস্ফুর্ত লেখা আবারো পড়ার জন্য আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় থাকলাম। চলুক

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

তিথীডোর এর ছবি

শিরোনামেই ভুল বেশ দৃষ্টিকটু লাগে

তা ঠিক।
আশা করি, পরবর্তীতে আর এমন হবে না। লেখা চলুক। হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

cresida এর ছবি

"ন" ও "ণ" এর ব্যবহার আমার মতে একান্ত লেখকের ব‌্যাপার। খুব একটা ভুল ধরা যায় না।

ক্রেসিডা।

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

একটু ভিন্ন মত পোষণ করছি। ন এবং ণ এর ব্যবহার এর জন্য ণ-ত্ব বিধান আছে, বাংলা একাডেমী প্রণীত। এটা লেখকের একান্ত ব্যাপার নয়।

দূর্বা জাহান এর ছবি

আপনার সাথে সহমত, অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী ।

তিথীডোর এর ছবি

ন এবং ণ এর ব্যবহার এর জন্য ণ-ত্ব বিধান আছে, বাংলা একাডেমী প্রণীত। এটা লেখকের একান্ত ব্যাপার নয়।

চলুক

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

দূর্বা জাহান এর ছবি

ক্রেসিডা, ব্লগে ব্যাপারটা খুব সহজ হতে পারে । আমাদের একটা পাবলিশিং হাউজ আছে ঐখানে কম্পোজটা আমি প্রায় দেখি । সেখানে এমন একটা শব্দ যদি ভুল হয় তাহলে আবার দেখতে হয়,ন আর ণ এর ব্যাপারটা আসলেই খুব গুরত্বপূর্ণ । ব্লগে দেখে হয়তো একটু ছাড় পাচ্ছি কিন্তু কাগজে এই ছাড়টুকু দেয়া হয়না. . . .ধন্যবাদ আপনাকে

cresida এর ছবি

আমি আবার রুদ্র মোহাম্মদ শহীদুল্লার ফ্যান কিনা। উনি সযত্নে সকল প্লেসে শুধুই "ন" ব্যবহার করেছেন। একটা বানান লেখকের একটু অন্যভাবে লেখার অধিকারে বিশ্বাসী আমি। এজ লং এজ ইট কনভে সাম সেন্স।

ক্রেসিডা

নীড় সন্ধানী এর ছবি

অসাধারণ একটা লেখা। এক নিঃশ্বাসে পড়লাম। প্রতিটা ছত্র বেদনায় পরিপূর্ণ করার সমস্ত কৃতিত্বের লেখকের। এই লেখার হাত সচল থাকুক সচলায়তনে।

"So if you love me let me go
And run away before I know

এই গানটা কার?

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

প্রখর-রোদ্দুর এর ছবি

@নীড় সন্ধানী - OLIVIA NEWTON-JOHN - IF YOU LOVE ME >>> Song title

লেখা আরো চলুক।
এমন হাজার জীবনের ঘটনা সেই সাথে নিজেদের ঘটনা গুলো জড়িয়ে গড়িয়ে জীবনের পাতা ভরে সময়ের আবর্তে আনন্দ-অশ্রুর কালি দিয়ে।

দূর্বা জাহান এর ছবি

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ প্রখর রোদ্দুর হাসি

তাপস শর্মা এর ছবি

অসাধারণ। চলুক অসম্ভব সুন্দর একটা গল্প। দুর্দান্ত গতি এবং টানটান ভাষা দুটোই সম পরিমাণে বিদ্যমান।

ভীষণ ভালো লেগেছে। আরও অনেক অনেক লিখুন, সচল চত্বরে আপনাকে স্বাগতম।

দূর্বা জাহান এর ছবি

আমি আজ অনেক খুঁজে বের করে দেখলাম, মন্তব্য দেখে ভীষন ভালো লাগলো । আপনাদের প্রশংসায় হয়তো আরো ভালো লেখা আসতে পারে ।

আপনাকে ধন্যবাদ হাসি

প্রখর-রোদ্দুর এর ছবি

দুঃখিত গানটি SLIPKNOT এর Snuff

লিঙ্ক দিতে পারছিনা মন্তব্য আটকে দিচ্ছে।

অরফিয়াস এর ছবি

মন খারাপ

অদ্ভুত কষ্টের অনুভূতিতে ছেয়ে গেলো মন|

আমার এক বন্ধু পদ্মার চরে গিয়ে ডুবে গিয়েছিলো, ওকে একদিন পরে পাওয়া যায়, যেদিন দেখতে গিয়েছিলাম ওকে, ওর প্রেয়সীর কান্না দেখে সামনে যেতে পারিনি। এই অনুভূতি বোঝানোর নয়|

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

পদ্ম পাতার ছদ্মনাম এর ছবি

প্রথমদিকে কিছুটা ‘গর্ভধারিণী’ এর মতো লাগলো......
ভালো হয়েছে। চলুক
সত্য হলে সমবেদনা জানানোর ভাষা জানা নেই। শ্রদ্ধা
শুধু গল্প হলে বলবো কারো জীবন যেন এমন না হয়।

দূর্বা জাহান এর ছবি

এটা কারোই কাম্য নয় যে কারো জীবনে এটা সত্য হোক মন খারাপ

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

চমৎকার লেখেন আপনি। কাহিনীতে নতুনত্ব আছে বলব না। টিপিক্যাল অনেক প্রেমের গল্প বোধহয় এরকম হয়। কিন্তু সেটার কথা বলছি না। বলছি আপনার লেখনীর কথা, লেখায় হাহাকার ফুটিয়ে তোলার মত একটা ব্যপার আছে। ভাল্লাগছে।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

দূর্বা জাহান এর ছবি

হ্যাঁ গল্পটা একটু টিপিক্যাল, লেখা দিয়ে সেটা নতুন করতে চেয়েছি এই আর কি । আপনাকে ধন্যবাদ হাসি

তানিম এহসান এর ছবি

ভালো লাগলো। অস্থির বিষাদ, শেষ হল সূচনায়...

দূর্বা জাহান এর ছবি

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ হাসি

পথিক পরাণ এর ছবি

পুরোটা গল্পে অনেকরকম কষ্ট ছড়িয়ে দিয়েছেন নিপুনভাবে। আপনার লেখনীর প্রশংসা করতেই হয়---

আরও লেখা আসুক।

দূর্বা জাহান এর ছবি

বিষাদগ্রস্ত একটি লেখা, চেষ্টা করেছি প্রত্যেকটা শব্দে বিষাদ গেথে তার বুনন চালাতে । আপনাকে অনেক ধন্যবাদ হাসি

ঝরাপাতা এর ছবি

অসাধারণ! দারুন একটা গল্প পড়লাম।


বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।

দূর্বা জাহান এর ছবি

সাধারণ গল্পকে একটু বিভিন্ন কথা দিয়ে চেষ্টা করেছি অন্যভাবে উপস্থাপন করতে । আপনার প্রশংসা পড়ে মনে হলো সফল হয়েছি, ধন্যবাদ হাসি

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

খুব ভাল লাগল লেখাটা। চলুক

নিয়মিত লিখবেন এই আশায় থাকলাম।

ইয়াসির এর ছবি

ভালো লেগেছে চলুক

দূর্বা জাহান এর ছবি

এই লেখাটা সচলে পাঠানো ২য় লেখা ছিলো, এর পরে আর ২টা লেখা দিয়েছিলাম । হয়তো লেখা ছেড়ে দেয়াই হবে, ধন্যবাদ আপনাকে হাসি

মেঘা এর ছবি

শেষ পর্যন্ত লেখা ছেড়েই দিলি দূর্বা! এতো চমৎকার একটা লেখা এটা বার বার পড়লেও প্রথমবারের মত কষ্ট হয়!

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

দূর্বা জাহান এর ছবি

হুম মেঘাপু লেখা তো ছেড়েই দিয়েছি । তুমি তো ঠেলে ধাক্কিয়ে তবুও বলেছো । লেখার হাত তো সবার থাকেনা, এটা প্রকৃতিপ্রদত্ত ব্যাপার । আমারো নাই, তাই টানাহেচড়া করতে চাইনি মন খারাপ
এটা কিন্তু আমারো প্রিয় লেখা, এখনো পর্যন্ত হাবিজাবি যাই লিখেছি এটা তার মাঝে সেরা । সেই স্লিপনট, সেই স্নাফ! \m/

কল্যাণ এর ছবি

গল্পটা ভালো লাগেনি। পুরোন প্লট এবং কাঁচা লেখা মনে হয়েছে। এই গল্পের চরিত্র দিয়া ধনী বাবা মায়ের মেয়ে। ৯ পেগ ৪৭% র এল্কোহল বা প্যাকেট প্যাকেট দামি সিগারেট শেষ করা বা মাঝ রাতে চরে বসে ইলিশ মাছ ভাজি খাওয়া রাফ জীবনযাপন পদ্ধতির ইঙ্গিত হলেও সচ্ছল জীবনের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা আর ইচ্ছে মত খরচ করা সেই সাথে চলাফেরার স্বাধীনতারও ইঙ্গিত দেয়। দিয়ার দুঃখ প্রকাশের পদ্ধতিগুলো পড়ে সব মিলিয়ে দুঃখ বিলাস বলেই মনে হচ্ছে।

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

দূর্বা জাহান এর ছবি

আমারো মনে হয় আমার লেখা কাঁচা, প্লট ও তেমন ভালো নয় । তবে এখন আমার বয়স ১৮, আর ৫বছর পর আমার লেখায় দূর্দান্ত মাত্রা পাবে এটা আমি বিশ্বাস করি ।

আর গল্পে আমি রাফ জীবনযাপনের ইঙ্গিত দেইনি, আমি দেখিয়েছি তাদের স্বাধীনতাটুকু । অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতার চিত্র পুরো লেখাতে স্পষ্ট ভাবে ফুটে এসেছে । মদ, সিগারেট, দিয়ার নিজের নামে লিখে দেয়া ফ্ল্যাট, পথশিশুদের জন্য হিউজ গিফট কেনার মাঝেই ।

আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল দুঃখবিলাসী মেয়েকে নিয়ে গল্প লেখা যাবেনা নাকি? লেখাটা মাত্রাতিরিক্ত রকমের বিচ্ছিরি হলে সচলায়তনে আসতো না সেটা আমার চেয়ে আপনিই ভাল জানেন, আমি তো এখানকার অতিথি মাত্র!

যাইহোক, আপনার মূল্যবান মতামতের জন্য অনেক ধন্যবাদ, আর আমি দুঃখিত একটু কড়া কথাই বলেছি যেটা দরকার ছিল ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।