খুনের গল্প

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শনি, ৩০/০৬/২০১২ - ৯:৪৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

প্রিয় পাঠক প্রথমেই পরিষ্কার করা ভালো, এটা কোন রহস‌্য গল্প না। শিরোনাম দেখে, আপনি যদি রহস‌্য গল্পের আশায় পৃষ্ঠা উল্টে থাকেন তবে, আমি দু:খিত। এ গল্পে খুন নিয়ে কোন রহস্য নেই এবং খুনী ও আমাদের পরিচিত। আসলে সত্য কথা বলতে খুনটি এখনও হয়নি। আর কিছুক্ষনের মধ্যেই আমরা খুনটি করতে যাচ্ছি।

আপনি নিষ্চয়ই এই মূহূর্তে চিন্তিত "আমরা" সর্বনামটি নিয়ে। এই সর্বনামটির পিছনে থাকা বিশেষ্যটিই কী আপনাকে কৌতূহলী করে তুলছে না, পাঠক? আমি আগেই কথা দিয়েছি এ গল্পে কোন রহস্য নেই। তাছাড়া, আপনার জানার পূর্ণ অধিকার আছে, "আমরা" অর্থ আমি এবং আপনি। জী আপনি এবং আমিই খুনটি করতে যাচ্ছি।

ভ্রু কুঁচকে নিশ্চয়ই এখন তীব্র আপত্তি জানাচ্ছেন আপনি কিংবা উল্টো আমাকেই পাগল ঠাউরাবেন। না, আপনি বরং আপনার নির্দোষিতার অন্য কোন অজুহাত খুজুন। আমি পাগল নই। আপনি নিষ্চয়ই বলবেন খুনের মত একটি ঘৃণ্য অপরাধে আপনি কখনোই জড়িত হতে পারেন না। প্রিয় পাঠক, উত্তেজিত হবেন না। আপনি ইতিমধ‌্যে ১৪০টির মত শব্দ পড়ে ফেলেছেন আর মাত্র ৩৫০ শব্দ এর মধ্যেই আমরা খুনটি করে ফেলতে পারবো। আপনি যতই আপত্তি জানান প্রিয় পাঠক আপনি খুনটি করতে যাচ্ছেন। সুতরাং আসুন আমরা পরিকল্পনা করি যাতে কাজটি নিখুত হয়।

আমাদের পদ্ধতিটি হবে খুব সাধারন। যাকে বলে জলবত তরলং। আমরা শুধুমাত্র দিনের পর দিন, খাবার না দিয়ে ধীরে ধীরে, একটু একটু করে হত্যা করবো মানুষটিকে। আস্তে আস্তে সে নির্জীব হয়ে আসবে আর আমরা তার আমাদের আরাধ্য খুনটি করে ফেলতে পারবো। আপনি নিষ্চয়ই বলতে চাইছেন এমন নিষ্টুরতা আপনার দ্বারা সম্ভবই না। ঠিক আছে আমরা অন্য একটি পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারি। আমরা একটি অসুস্থ মানুষকে ধীরে ধীরে চিকিৎসা না দিয়ে, একটি অস্বাথ্যকর পরিবেশে রেখে দিয়ে হত্যা করতে পারি। তবে এক্ষেত্রে তার যন্ত্রনাকাতর চিৎকারকে আপনার অগ্রাহ্য করতে হবে। এটাতেও আপনার আপত্তি। তাহলে শেষ অপশন, আমরা তাকে অপমান করে, তার মানসিক শক্তিকে ধ্বংস করে, তার আত্নবিশ্বাসকে ভেঙ্গে দিয়ে তাকে আত্নহননে বাধ্য করতে পারি। এবং এটি বেশ নিরাপদও আমাদের জন্য।

আপনি অধৈর্য্য হয়ে যাচ্ছেন; বলতে চাচ্ছেন কেন খুনটি করতে হবে? কারন পাঠক আপনি যদি খুনটি না করেন তাহলে আপনিই খুন হয়ে যাবেন। এবং আমি নিশ্চিত আপনি এটা চান না। তাছাড়া আপনি খুন করে আসছেন এতকাল ধরেই।

আপনি কী আবার আপত্তি জানাচ্ছেন? তাহলে আপনাকে মনে করিয়ে দেই,

আপনি যখন উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেয়েছিলেন আরো কয়েক হাজারজনকে হারিয়ে, তারপর সেই সুযোগ-বঞ্চিতদের কি হয়েছিলো? কি হয়েছিলো সেই যুবক-যুবতীদের? কোথায় হারিয়ে গেলো তারা? যারা হতাশার আঁধারে মাদক নিয়ে পড়ে থাকে অথবা সন্ত্রাসী হয়ে ঢের আগে মরে গেছে মানুষ হিসেবে তাদের জন্য কি করেছেন আপনি। আপনার কি কোন দোষ নেই? যে লোকগুলো বিদেশ-বিভূয়ে চাকরি করতে গিয়ে প্রান হারালো তাদের অধিকার কি কম ছিলো আপনার চেয়ে বেঁচে থাকার? রাস্তায় সড়ক দুর্ঘটনায় যারা হারিয়ে গেলো, তাতে আপনার কোন দায় নেই? কেনো সড়কগুলো চওড়া হয়না? কেনো যে শহরে দামী গাড়ির ভিড়ে রাস্তা আটকে যায়, সেখানে ব্যবসায়ীরা ট্যাক্স দেয়না। আপনি সঠিকভাবে জানেনতো কোথা থেকে আপনার খরচের টাকা আসে? আপনার বাবা, চাচা, মামা, ভাই কি করে? আপনার কি মনে পড়েনা কতবার আপনি চাকরির খাতিরে, সম্মানের স্বার্থে কিংবা ভয়ে অন্যায়কে মেনে নিয়ে প্রশস্ত করেছেন হাজারো মৃত্যুর পথ।

তারপরও আপনি বলতে চান মৃত্যুর এ মিছিলের দায়ভার আপনার নয়। তাহলে পাঠক আমাকে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করতেই হচ্ছে, আসলেই এটা এক রহস্য গল্প যার শেষটা এই অক্ষম লেখকের জানা নেই। আপনিই না হয় বলুন এ দায়ভার কার?
_____
আইলসা


মন্তব্য

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

আইলসা,
আপনের পারফর্মেন্স আপ ডাউন করে। এটা অতটা ভালো হয় নাই। কিন্তু আপনার লেখার হাত আছে বোঝা যায়। আইলসামি কমায়ে আরেকটু ভালো বিষয়ে লিখুন। আর মন্তব্যে অংশগ্রহণ করুন প্লিজ।

অতিথি লেখক এর ছবি

আসলে মুর্শেদ ভাই, আমি যদি আলসেমি ছাড়তে পারতাম তাইলে কি আর ইউনুস নুবেল পায়? যাক আমার মনে দু:খ নাই, দেশী লোক পাইছে। চেষ্টায় আছি আলসেমি ছাইড়া কিছু করার কিন্তু শুধু ঘুম পায় আর ঘুম পায়।

আসলে কোন লেখা দুই-তিন বার না লিখলে ভালো হয়না। এইটা গতকাল রাতে লেখার পর মনে বইছিলো বাংলা একাডেমী পুরস্কারই বুঝি পাইয়া যামু। সকালবেলা আবার পইড়া মনে হইতাছে বাক্যগুলো কেমন যানি কৃত্রিম আর শেষ অংশটা ঠিক মিশ খায় নাই।
বাই দ্য ওয়ে, আপনে আমার প্রথম লেখায় যে উৎসাহ দিছিলেন, সেইটা না পাইলে কিন্তু আমি আর লেখতামই না। আমি বাংলা একাডেমী পুরস্কারটা পাইলে আপনারে একবেলা নিরবে খাইয়া দিমুনে তার আগ পর্যন্ত শুকনা ধন্যবাদই নেন।
_______
আইলসা

নিলয় নন্দী এর ছবি

বর্তমানে আমার পারফর্মেন্সের যে অবস্থা তাতে আইলসার পদটা আমি নিতে রাজী আছি। ইয়ে, মানে...
@ আইলসা, আপনার গল্পের প্রথম অংশটুকু এডগার অ্যালান পো'র এ টেল টেল হার্ট গল্পটার কথা মনে করিয়ে দিল।
আরো লেখা চাই।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

চলুক

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

নূপুরকান্তি এর ছবি

গল্প মনে হলোনা তো!

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

চলুক

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

অতিথি লেখক এর ছবি

আমি_শাওন
ঘটনাটা এতই মামুলি যে পুরাই বিরক্তির উদ্রেক করল।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

মুর্শেদের সাথে একমত। যদিও লেখাটা একেবারে খারাপ না (কিভাবে খুন করা হবে সেসব বর্ণনা বাদে) তবুও উন্নত করা যেতো। কিংবা যা বলার ছিল তা ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা যেতো।

অতিথি লেখক এর ছবি

আরেকটু ভালো লেখা যেত

অতিথি লেখক এর ছবি

হবে।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

সম্ভাবনাময় শুরুর পর কেমন যেন হয়ে গেল। আশা করি পরের লেখাগুলো আরও গোছানো এবং পাঠকপ্রিয় হবে।

রু   এর ছবি

শুরুটা ভালো লেগেছে। কিন্তু ভালো লাগাটা শেষ পর্যন্ত থাকেনি। আপনার পরের লেখার অপেক্ষায় থাকলাম।

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

লিখতে থাকুন, একদিন দেখবেন এই আমরাই অনেক অনেক প্রশংসা করবো।

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

প্রথমটুকু দুর্দান্ত লাগলো।
আলসেমি না করে, প্রথম চার প্যারা ঠিক রেখে গল্পটাকে আবার লিখে দেখবেন, অন্য একটা পরিণতি দিয়ে?
হয়তো কিছুদিন পরে... হাসি

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

তদানিন্তন পাঁঠা এর ছবি

সহমত। চলুক

বাপ্পীহায়াত এর ছবি

লিখার টোনটা মনে হয় ধরতে পেরেছি যদিও প্রেসেন্টেশন ব্যাতিক্রমধর্মী

চালিয়ে জান আইলসা ভাই চলুক

আইলসা এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

এটাকে গল্প না বলে চিন্তাভাবনার প্রকাশ বা ব্লগর ব্লগর বলাই আমার কাছে বেশি সংগত মনে হয়েছে।

লেখার ধরণ ভালো লেগেছে।
কিন্তু শুরুর অংশটা বেশি বড় হয়ে গেছে।

যাই হোক আরও লিখুন, আরও ভাল কিছুর প্রত্যাশায় থাকলাম।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।