জলজ ইন্দ্রজাল: গাঁন্ধার ছুঁয়ে ঋষভ

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: সোম, ২৯/০৭/২০১৩ - ১০:৪১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

অসময়ের বর্ষায় ঘাসের বুকে সমুদ্রের জন্ম হলো। আদি-অন্ত:হীন দিকচক্রবালের কুহক মেশানো বৃষ্টিতে- রহস্যময়তার অনুপস্থিতি, চোখে লাগে।ঝির ঝির জলপতনের মৃদু-মন্দ শব্দ টিনের ধাতব পিঠ ঘেষে, প্রতিধ্বণিত হচ্ছে সিংহনাদে-একটানা সুরেলা। জন্মোন্মুখ বিটপীর অর্ধমৃত শেকড়গুলোর সর্বাঙ্গে হোলি উতসবের দামামা-শুষে নেই জীবনরস; অযাচিত পাওয়া দাক্ষিণ্যে অকৃতি অধমের দৃপ্ত শৃঙ্গার অঙ্গীকারাবদ্ধ তব পারিপার্শ্বিক মায়াময় আবেশ সৃষ্টির মহোতসবে।

একফালি সাদাতে চাঁতাল (পুরো সবুজ মাঠটাকে বেষ্টন করে আছে অনেকটা নবজাতকের উতকন্ঠিত জননীর দৃঢ়তায়) টুকরো টুকরো জল ধারনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আবিল। কাক-চক্ষুর দু’চুমুক হবেও বা। গাছ নড়ে না, বরং অযাচিত এই প্রানোতসবের আঁধার হিসাবে শুষ্ক বাঁকল মাঁখে মেঘের আদর, স্নেহ-চুম্বনের ভেঁজা ভেঁজা শ্বেতি-চিহ্ন ঘোষনা করে বিনম্র নিকিতা। সবুজ আরো গাঢ় হয়; অনিচ্ছায় জুঁড়ে থাকা ধূলোর চাদর খসিয়ে দেয় ব্রীড়াহীন জনবঁধুর পেশাগত দক্ষতায় জলজ স্রোতে; মেখে মেখে। গাছের গোছল- বাহ! নাম না জানা, ছোট-বড়, অশক্ত-দৃঢ়, পাকদন্ডী-বিশাখী সকল গাছের প্রাপ্তি আজ প্রাকৃতিক হাম্মাম। একটেরে চোখে অবশ্য পরিচয়হীনতার স্পষ্ট আমেজ। একগোঁছা সবুজ, নানা ভঙ্গীমায় পেছন উল্টে পোঁতা আছে আঁকা-বাঁকা লম্বা লাঠির মাথায়- যার ঐ প্রান্ত অতল মাটি ধর্ষণ করে গভীরে গিয়ে। মাটি ও নারী জন্ম দেয় দু’ভাবেই: আদরে অথবা ধর্ষণে।

আজও হয়নি; একদিন জল ডুব ডুব জল খেলায়, বৃক্ষের সঙ্গীতে আমার সুরের ঐকতান- নীরবেই স্থাপিত হবে; সেই মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায় গাল-চাঁপা হাতের প্রতিরূপে কলম নি:সঙ্গ ঘুরে ঘুরে কাঁদে---ধীরে ধীরে চুপসে যায় প্রত্যাশার সবজে-বেগুনি ফুলগুলো (অনেকটা পথের ধারের সক্কালের পারিজাতের মতো-রোদের দীপ্তি যাদের লাজ ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে-মিশিয়ে দেয় মাটির সাথে; তবু, আবার উঁকি দেয় প্রতি ভোরেই)। কাঁলচে-লাল বললেই, যথার্থতা পেতো বোধহয়; তবে আশার কথা হচ্ছে, আকার মিলিয়ে শূন্যতার দিকে অনিরুদ্ধ পথ চলা-গন্তব্য অনিকেত প্রান্তর। প্যাঁচানো নীল নকশায় স্পাইডারম্যান সুলভ লাফ-ধাঁপ তেমন গুরুত্ব পায় না। আজ অবধি জানা হলো না, সেই প্রাচীর ভাঙ্গার মৌলিক গান। চারপাশের ছোট হয়ে যাওয়া বৃত্তের শিকড় খুলে প্রথিত হয় জীবনের দেয়ালীতে। কাঁচপোকার জোনাকী খেলায় কামবোধ থাকে না। টুক-টুক শব্দে মিহি ধূলোর কাজল ছেটানো, ঘুঁনে খাওয়া আসবাবের অসহায় অনঢ় অবস্থানের- দেদীপ্যমান রৌদ্র খেলায় অবিরাম ভাঙ্গা মীড় এখন আর পুলকিত করে না মনকে। শেষ মেইল-ট্রেইন আসার অপেক্ষায় অলস বসে থাকা, বিড়ি-ফোঁকা কুঁজো পয়েন্টসম্যান-এর ডাঁটিভাঙ্গা চশমার পুরু কাঁচের আড়ালে, কুয়াশামাখা অণির্বান চোখ- নূতন কোন আলোকে বরণ করতে অনিচ্ছুক-বড্ড মেদুর।
তুলনাবিহীন তুলনায় স্বার্থক দীর্ঘশ্বাসে কোন গন্ধ নেই-একটুও না। আবিল হয়ে ওঠা ইস্পাত কঠিন জড়তার মাঝে জং ধরে থাকা পিস্টনগুলোতে গ্রীজ দেয়া যেতে পারে হয়তো, কবে কী আর হবে তাতে নতুন করে?
শ্রাবণ মেঘের অঝর বর্ষণ। মাঠের ফসল কাঁটা হলে ক্ষয়াটে ক্ষেতের বীভতসরূপের দোসর শুধু সাপের পেটে যাওয়ার অপেক্ষায় প্রহর গোনা কুনো ব্যাঙগুলো। জীবনপ্রাপ্তি যেখানে দাক্ষিণ্য আর অনর্গল প্রচেষ্টায় জোনাকী ধরা কেবল কালক্ষেপনের জটিল ধারাবাহিকতার মঞ্চায়ন; বড্ড একপেশে, সুরহীন। হাঁ করে থাকা অ্যানাকোন্ডার পেটের ভেতর হয়তো বা এসিডে ঝলসে আর্তনাদ করে যেতে হবে, তারপর? একঘেয়ে এই জীবন থেকে অন্তত মুক্তি মিলবে! বড্ড বেহিসেবি, অযাচিত, অপ্রয়োজনীয় এই সমস্যা বিলাস। নার্ভে খোঁচা দেয়া ব্যাসন, অলস জীবন-পুঁজি, দ্বিধাহীন ঘুমের অপলাপ। এর মাঝেই উঁকি দেয়, না মেলানো হিসেবগুলো; স্বপ্ন হয়ে। বুকে বাঁজে; কিন্তু, পাঁজরের হাড়ের নীচে ঢক্-ঢক্ করতে থাকা কিম্ভুত মাংসপিন্ড কিংবা বিবিধ বেলুনগুলোর মোচাকৃতি সমষ্টি কেবলি হতাশা বাড়ায়।

বিদ্রোহের অধিকার আজ দ্রোহীর মজ্জাগত আঁকুতি। কুক্ষিগত এই স্বতস্ফূর্ত অভিনয় ক্রমশ মাতাল করে জীবন রোষের মাদকতায়। আজকের সুদূর ক্লান্ত চোখ কাল অবশ্য খুঁজে পাবে ঝলমলে রঙ, তৃপ্তি পেতে পারে নূতন কোন আকর্ষনের ভেঁড়চালে;হয়তোবা।নাগরদোলার ওপর-নীচ কতক্ষণ? মূল এঞ্জিন কী প্রভু তোমার হাতেই?? কেন তবে এই অ-ঋণ অকারণের অকারণ!!
এইসব দিন-রাত্রি; পার করে আসা ষড়-ঋতুর পোঁ ধরা ধূসর কুঞ্চিত স্মৃতিসম্ভার, আর মধুরতা খুঁজে পায় না। অণির্বান এ পথ চলার শেষটা কেমন? এমনই; সাদা-কালো তবুও লালায় জড়ানো।
চুষে যাই, চেঁটে খাই- জিভহীণ কন্ঠতাপে বারংবার।
স্বপ্নীল ধূসর সমন্যামবিউলিসট


মন্তব্য

তিথীডোর এর ছবি

নাহ, আজকে কপাল-ই খারাপ, নুতন লেখা বেশি.. টাইপো আরো বেশি!
গাঁন্ধার, আঁকুতি, বাঁজে, চাঁতাল, ভেঁজা ভেঁজা, জনবঁধুর, ঘুঁনে, ধাঁপ, বাঁকল, মাঁখে, কাঁলচে....--- এত চন্দ্রবিন্দুর ছড়াছড়ি কেন!? ইয়ে, মানে... চিন্তিত

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

অতিথি লেখক এর ছবি

ইয়ে, মানে... , আসলে তরতর করে পড়া যাবে এমনভাবে লিখিনি মেবি:O, খুব বৃষ্টিতে- ঝুম দৃষ্টিতে- একা একা হলে ; আর বানান কি ভুল এগুলো? হতে পারে- আমার র/ড়, চন্দ্রবিন্দু বেড়াছেড়া লাগে। (স্বপ্নীল সমন্যামবিউলিস্ট)

আয়নামতি এর ছবি

বলিহারি সব কঠ্ঠিন কঠ্ঠিন শব্দের ব্যবহার! আমার মত আকাঠ পাঠকের জন্য এ পোস্ট না ইয়ে, মানে...

অতিথি লেখক এর ছবি

দুচার লাইন করে পড়লে ভাল হতো না! মন খারাপ (স্বপ্নীল সমন্যামবিউলিস্ট)

মালাকাইটের ঝাপি এর ছবি

মন খারাপ
এত কঠিন কেন ?
কিন্তু পড়ে হালছি দেঁতো হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

গুরু গুরু , অনেক ছোট কিন্তু! মনের ভাবনা সবসময় সরল হয় না, মাঝে মাঝে কঠিন হয় বৈকি। (স্বপ্নীল সমন্যামবিউলস্ট)

রকিবুল ইসলাম কমল এর ছবি

তোমার ভাষা বোঝার আশা দিয়েছি জলাঞ্জলি॥ ♩ ♪ ♫ ♬ ইয়ে, মানে...

অতিথি লেখক এর ছবি

অ্যাঁ (স্বপ্নীল সমন্যামবিউলিস্ট)

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

গদ্য না পদ্য? মাইরি বলছি, ঠিকঠাক জায়গামতো এন্টার দিলে জব্বর একটা কবিতা হয়ে যাবে।

আপনার শব্দচয়ন খুব ভালো লাগছে, এক্কেবারে সত্যিই স্বপ্নীল। তবে টাইপো ---- খাইছে

এবার একটা বোকার মত প্রশ্ন : অন্তর্নিহিত অর্থটা কী? নিজেকে রামবোকা মনে হচ্ছে কারণ তিনবার আগাগোড়া পড়েও একটা অদ্ভূত ভালোলাগা ছাড়া আর কিছু বুঝতে পারিনি!!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।