ঘুরে এলাম মুসান্দাম

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: মঙ্গল, ২৬/০৮/২০১৪ - ৯:৩৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আরব উপদ্বীপের উত্তর-পূর্ব অংশে ওমানের একটি প্রদেশ মুসান্দাম । হাযার পর্বতমালার শুরু এখানেই, এর একপাশে পারস্য উপসাগর আরেক পাশে ওমান উপসাগর। মূল ওমান ভুখন্ড থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাত দ্বারা বিচ্ছিন্ন মুসান্দাম উপদ্বীপের মাধ্যমে বিশ্বের জ্বালানি তেল পরিবহনের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হরমুজ প্রণালীর উপর ওমান তথা এই অঞ্চলের বাকি আরব দেশগুলো নজরদারি করে (কেতাবি ভাষায় এটা geopolitically strategic location)। সামরিক ও বানিজ্যিক কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ হবার পাশাপাশি মুসান্দাম পাহাড়, সমুদ্র আর সাদা বালির সৌন্দর্যের এক অসাধারণ লীলাভূমি। আর এখানের নীল্ সবুজ সমুদ্রে নাকি প্রচুর ডলফিনের দেখা মিলে। তাই এক শীতের সকালে আমরা কয়েকজন বেরিয়ে গেলাম মুসান্দাম ঘুরে আসার জন্য।

আমাদের ডেরা থেকে ওমান বর্ডার প্রায় ১৫০ কি/মি. - তাই একটু সকাল সকাল রওনা দিতে হবে। বাঙালির লেট লতিফ বদনাম ঘুচিয়ে দেয়ার চেষ্টাতেই মনে হয় সবাই আমরা ভোর ৬টায় যার যার গাড়ি নিয়ে রেডি হয়ে গেলাম। হালকা ঝিরি ঝিরি বৃষ্টির মধ্যে আমরা খালি হাইওয়েতে গাড়ি ছুটালাম ১৪০ কি.মি. এ - মাঝখানে নাস্তার জন্য একটা কাফেটেরিয়া (আসলে টঙ্গের দোকান, খালি পাকা দেয়াল বলে কাফেটেরিয়া নাম) থেকে কিমা পরোটা ডিমভাজি নিয়ে নিলাম। এই দুবাই বা মধ্যপ্রাচ্যে থাকার একটা সুবিধা হচ্ছে হালাল হারাম নিয়ে চিন্তা করতে হয় না আর দেশী খাবার দাবার মোটামুটি সহজলভ্য ভারতীয়দের কল্যাণে। যা হোক সে নিয়ে আরেক দিন বক বক করা যাবে।



মরুভূমির বুক চিরে বৃষ্টি-সিক্ত মহাসড়ক - জানালার কাঁচ নামিয়ে সোঁদা গন্ধওয়ালা ভেজা বালি দেখতে দেখতে আমরা ঘন্টা দু'য়েকের মধ্যে বর্ডার এ পৌছে গেলাম। যেহেতু আমরা সবাই দুবাইয়ের ভিসাধারী, ওমানে তাই অন এরাইভাল ভিসা পাওয়া যায়। একে একে আমাদের সবার ভিসা হয়ে গেল - তবে গোল বাধলো একটা গাড়ির ইন্সুরেন্স নিয়ে। মন্টুদার গাড়ির ইন্সুরেন্স ওমানে অচল - তবে এখন উপায়?

কুচ পরোয়া নেই, টুরিস্টদের জন্য এরা সব ব্যবস্থাই করে রেখেছে। বর্ডার ইমিগ্রেশন অফিসারই দেখিয়ে দিলেন ওমান ইন্সুরান্সের বুথ। ৩০ দিরহামের বদলে দশ মিনিটেই এক মাসের ইন্সুরেন্স হয়ে গেল (যদিও দরকার ছিল এক দিনের - কিন্তু সর্বনিম্ন এক মাসেরটাই পাওয়া যায়)। ধীরে ধীরে বর্ডার চেকপোস্ট পাড়ি দিয়ে আমরা ঢুকে পড়লাম মুসান্দাম উপদ্বীপে - আর আল্লাহর ইচ্ছায় তখন মেঘ কেটে গিয়ে আলো ঝলমলে হয়ে উঠলো চারিদিক। একটা ছোট পাহাড় পেরুতেই উদ্ভাসিত হয়ে উঠলো এক অসাধারণ দৃশ্য - এক পাশে পারস্য উপসাগর ঢেউ ভেঙ্গে পড়ছে, আরেক পাশে চুনাপাথরের আঁকাবাঁকা পাহাড়, মাঝখানে মসৃন পিচঢালা মহাসড়ক। মাঝে মাঝে পথ উঠে গেছে পাহাড়ের মাথায়, আবার কখনো বাঁক খেয়ে নেমে গেছে উপত্যকার মাঝে।



যারা ড্রাইভ করতে ভালবাসেন তাদের জন্য এ এক মহা আনন্দের রাস্তা - কখনো জোরে, কখনো বা আস্তে, কখনো আঁক তো কখনো বাঁক - ট্রাফিকের চিন্তা নেই, স্পিড ক্যামেরার বালাই নেই। এক পাশে সমুদ্র, আরেক পাশে পাহাড়, সাথে যদি চলে সান্টানা আর গানস এন্ড রোজেস এর গান - সেই ড্রাইভ যে চরম উপভোগ্য হবে তা আর বলতে হয়! উপরি হিসাবে আছে বন্ধুদের (দূর প্রবাসে এরাই আপনজন) সীমাহীন আড্ডা।

আধা ঘন্টার মত উঁচু নিচু পথ চলার পর আমরা চা খাওয়ার জন্য একটা ছোট সৈকতে থামলাম। এক পাশে সাগরের হালকা ঢেউ ভেঙ্গে পড়ছে, পিছনে পাহাড়ের ছায়ায় মৃদুমন্দ বাতাসে চায়ের আড্ডা জমে উঠলো অনেক। পিছনের পাহাড়টা ন্যাড়া না হয়ে যদি একটু সবুজ সজীব হতো তবে আড্ডা আরো জমতো। কিন্তু সুন্দর পরিবেশ আর বন্ধুদের সাহচর্যে ন্যাড়া পাহাড়ও উতরে গেল। চুনাপাথরের এই পাহাড়গুলো ন্যাড়া হলেও বেশ ঢেউ খেলানো, মাঝে মাঝে বিভিন্ন শেডের প্যাটার্নও দেখা যায়। চোখ সয়ে গেলে পাহাড়ের এই সারিগুলোকেও মন্দ লাগে না।

একটু পর আমরা জেলে নৌকার একটা ছোট পোতাশ্রয় পেলাম। ইংরেজিতে একটা কথা আছে picturesque - এর বাংলা মনে হয় ছবির মত - দূরে পাহাড়ের গা বেয়ে রাস্তা নেমে এসেছে, কিছু ছোট ছোট নৌকা দুলছে, মাছ ধরার জাল, দিগন্ত বিস্তৃত সুনীল জলরাশি যাতে চড়ে বেড়াচ্ছে ছোট বড় জাহাজের সারি। ক্যামেরার চোখে তো আর সব ধরা পড়ে না (পড়ুন ধরতে পারি না) - তাই স্মৃতির খাতায় তাকে ধরে রাখলাম - আপনাদের সাথে তার একটু খানিই শেয়ার করতে পারলাম বলে দু:খিত। চারপাশ বেশ নিঝুম, কেবল সাগরের ঢেউ ভাঙ্গার শব্দ - এমন জায়গায় ঘন্টার পর ঘন্টা খালি সাগরের হাওয়া খেয়েই বসে থাকা যায়। কিন্তু সে তো আর হবার নয়, নৌ ভ্রমন আর ডলফিন দর্শনে যে যেতে হবে !

দশ মিনিট ড্রাইভের পরই আমরা পৌছে গেলাম খাসাব বন্দরে - ছোট মাছ ধরা বন্দর, বড় জাহাজ এখানে ভিড়ে না। কিন্তু ছোট ছোট ট্রলার বা আমাদের দেশী বজরা জাতীয় নৌকা যাকে বলে ধাউ অনেক আছে, এর চালকরাই মাঝি কাম গাইড কাম লাইফ গার্ড। কত টাকায় রফা হয়েছিল তা আর মনে নেই, তবে জলদিই আমরা নিজেদের একটা ধাউ এর গলুইয়ের উপর পেলাম। বসার চমত্কার ব্যবস্থা - মোটা কার্পেটের উপর নরম বালিশে বেশ আয়েশ করেই বসা যায়। এর সাথে তাজা ফল, জুস, চা, আর পানি রাখা আছে - যত খুশি নিয়ে নাও। দুপুরের খাবারও ওদের তরফ থেকে, পরে আরেকটা ধাউ এসে দিয়ে যাবে। বেশ খাসা ব্যবস্থা - মনটা বেশ ফুরফুরে হয়ে উঠেছে। আমি যে সাঁতার পারি না আর একটু পরেই যে মাঝ সমুদ্রে যেতে হবে সেটার দিকে কোনো ভ্রুক্ষেপই নেই !



যাই হোক আমাদের ভ্রমন শুরু হলো - পারস্য উপসাগরের নীল পানি কেটে আমরা ছোট ছোট পাথুরে দ্বীপ পাশ কাটিয়ে এগোতে শুরু করলাম। এর মধ্যে শুরু হয়ে গেছে ফটোসেশন - কেউ টাইটানিক স্টাইলে, কেউ আবার জীবনসংগীর সাথে ফিল্মি স্টাইলে, আর আমরা যারা ব্যাচলর তারা বাঁদর স্টাইলে ইচ্ছে মত তুলতে থাকলাম। এর মধ্যেই এসে পড়ল যাদের দেখার জন্য এত দূর ছুটে আসা - ডলফিনের একটি ঝাঁক। আমাদের গাইড কাম মাঝি ভাঙ্গা হিন্দিতে যা বলল তার মানে এই দাড়ালো যে এই ডলফিনরা খাবারের লোভে জাহাজের আশে পাশে ঘুরে। ক্যামারাওয়ালারা তখন ঝাপিয়ে পড়েছে ডলফিনের ছবি নিতে। ডলফিনের দলটিও বেশ কায়দা কসরত করে ধাউ এর আশেপাশে ঘুরে বেড়াতে লাগলো, মানুষকে এরা আর ভয় পায় না এখন।


ডলফিনের দল বেশ খানিকক্ষণ ঝাপাঝাপি করে ডুব দিল - আর আমাদের ধাউ এগিয়ে চলল ছোট এক জেলে গ্রামের দিকে। সেখানে এগোতেই দেখলাম পানির রং নীল্ থেকে বদলে আস্তে আস্তে স্বচ্ছ সবুজাভ হয়ে উঠলো। এক পর্যায়ে ধাউ থেমে এলে সমুদ্রের তলদেশ পরিষ্কার দেখা যাচ্ছিল, তাতে নানা জাতের মাছ ভেসে বেড়াচ্ছে, মাঝে মাঝে দেখা যাচ্ছে কোরালের সারি । মুসান্দাম যে কেন স্নর্কেলিং-এর জন্যও বিখ্যাত তা এখন পরিস্কার বুঝতে পারলাম। আমার কতিপয় বন্ধু ঝাপিয়ে পড়লেন ওই পান্না-স্বচ্ছ পানির মাঝে। আমি ভাই সাঁতারই জানিনা আবার স্নর্কেলিং - তাই বসে বসে পরিস্কার পানির ভিতর মাছের ঝাঁক দেখায় মন দিলাম। এর মধ্যে লাঞ্চও চলে এসছে - তাই পেট পূজায় ব্যস্ত হয়ে পরলাম। আসলেই সাগরের খোলা হাওয়ায় খিদে বেশ চনমনে হয়ে উঠে। লাঞ্চের ব্যবস্থাও মন্দ নয় - মসলাদার বিরিয়ানি অথবা স্যান্ডুইচ। ভেতো বাঙালি তাই বিরিয়ানি দিয়েই আয়েশ করে সেরে নিলাম।


ছোটবেলায় তিন গোয়েন্দার একটা বই পড়েছিলাম "জলদস্যুর দ্বীপ" যেখানে তিন গোয়েন্দা ক্যারিবিয়ান অভিযানে যায় - সবুজ পানি, পাথুরে জেটি আর পাহাড়ের গায়ে ছোট জেলেদের দ্বীপ দেখে সেই গল্পের কথাই মনে পড়ছিল। গল্পের পটভূমি ওয়েস্ট ইন্ডিজ না হয়ে ওমানের মুসান্দাম হলেও উতরে যেত - কারণ এক সময় এই অঞ্চলেও জলদস্যুদের অনেক বিচরণ ছিল যাদের তাড়াতে ব্রিটিশ ফ্লোটিলা ব্যস্ত ছিল অনেক দিন। এখন অবশ্য উনারা ইরানকে ঠেকাতেই ব্যস্ত।

খাওয়া দাওয়া আর সাঁতারের পর আমরা গা এলিয়ে দিলাম পড়ন্ত বিকেলের রোদে আর আমাদের ধাউ ফিরে চলল বন্দরের দিকে। খাসাব বন্দরে ফিরে আমরা আমাদের ফিরতি পথ ধরলাম। পারস্য উপসাগরের বুকে রক্তিম সূর্যটাকে ডুবতে দেখতে দেখতে আমরা সীমানা পেরিয়ে ফিরে এলাম আবার আমিরাতে - পাহাড় আর সাগরের প্রতি মানুষের যে অমোঘ আকর্ষণ তা প্রবলভাবে অনুভূত হলো মনের মাঝে। মনে মনে বললাম আবার দেখা হবে বন্ধু - দেখা আবার হয়েছিল এক বর্ষণমুখর দিনে, সে গল্প পরের বার।

এই ন্যাড়া পাহাড় আর নাক বোঁচা ডলফিনের গল্প হয়ত অনেকেরই পানসে লাগবে। কিন্তু আমরা যারা সবুজের দেশের মানুষ এই মরুভূমি আর কনক্রিটের জঙ্গলে পরে আছি, তাদের কাছে ওই পাহাড় আর সমুদ্রই একটুখানি বৈচিত্রের মরুদ্যান। তাই কেউ হতাশ হলে দুঃখিত - এর চেয়ে বেশি মরু অঞ্চল অফার করে না হাসি

মরুচারী


মন্তব্য

মরুদ্যান এর ছবি

ভাল লেগেছে।

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- লইজ্জা লাগে

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

চমৎকার লাগলো। মধ্যপ্রাচ্যে এই দেশটি সম্পর্কে আমার আগ্রহ সীমাহীন। সুযোগ পেলে যাওয়ার ইচ্ছেও আছে। লেখা ও ছবি মিলিয়ে ভাল লাগল। ওমান নিয়ে আরো কি লিখবেন? ভালোই হয় কিন্তু।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ, আরো দুয়েকটি অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখার ইচ্ছে আছে, সময় করে উঠলেই লিখে ফেলবো।

মাসুদ সজীব এর ছবি

চলুক
প্রথম লেখার চেয়ে এই লেখা অনেক বেশি ভালো এবং আনন্দদায়ক হয়ে ওঠেছে। চলুক ঘুরাঘুরি, আমরাও সাথে আছি হাসি

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

ঘুরাঘুরি জারি থাকুক, সাথে থাকুক লেখালেখি।

মরূদেশের এরকম ভ্রমণের কথা এর আগে পড়িনি, তাই ভালো লাগলো। সবুজ দেখে অভ্যস্ত চোখে রুক্ষ পাহাড় কেমন যেন নাঙ্গা লাগলো। কিন্তু তারপরও - এরও একটা আলাদা সৌন্দর্য আছে।

____________________________

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ প্রফেসর সাহেব - একটু বৈচিত্রের স্বাদ দিতেই তো প্রচেষ্টা। আর ঠিকই বলেছেন, চোখ সয়ে এলে নাঙ্গা পাহাড়েরও এক আলাদা সৌন্দয্য আছে।

মরুচারী

এক লহমা এর ছবি

এবারের লেখা, ছবি দুইই অনেক মনোগ্রাহী লেগেছে। হাসি
কয়েকটি ছবি মুগ্ধ করেছে। পরের লেখায় ছবিগুলিকে ক্রমিক সংখ্যা দিয়ে চিহ্নিত করে দিলে মন্তব্যে সেগুলির বিষয়ে কারো লিখতে ইচ্ছে হলে তার পক্ষে ছবিগুলির উল্লেখ সহজ হবে।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে, টিপসটা মনে রাখব।
কোন কোন ছবিগুলো মনে ধরেছে জানতে পারলে ভালো লাগত।

মরুচারী

অতিথি লেখক এর ছবি

সুন্দর, কিন্তু গাছপালা আর সবুজের অভাব বড্ড চোখে লাগে।

- সীমান্ত রায়

অতিথি লেখক এর ছবি

এর চেয়ে বেশি মরু অঞ্চল অফার করে না হাসি

কি আর করব সীমান্তদা, ইউরোপ আম্রিকায় তো যেতে পারলাম না, তাই কামলা খাটতে এই মরু দেশেই আসতে হলো :চ

Ibn Hafiz এর ছবি

ভালো লাগলো। তবে ইরানীদের সরব উপস্থিতি থাকায় ঐখানে আমার এখনো যাওয়া হয়নি।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।