Shooting an Elephant : একটি হাতির মৃত্যু

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: রবি, ০১/০২/২০১৫ - ৯:১৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মূল - জর্জ ওরওয়েল
অনুবাদ - পদব্রজী
অনুবাদের পিছনের গপ্প - একটা আ্যসাইনমেন্ট হিসেবে হাত দেয়া হয়েছিলো এই অনুাবাদে। তারপর অনেক সময় আর বড় ভাইয়ের বিস্তর সাহায্য নিয়ে কর্ম সমাধা হয়েছে। অনুবাদের প্রসঙ্গ ওঠা মাত্র Shooting an Elephant এর কথাই মাথায় আসে আমার দুটি কারনে। প্রথমবার পড়ার সময়ের ভালোলাগা আর ওরওয়েলের নান্দনিক বাচনভঙ্গি। আর বাংলায় প্রতিটি বাক্যের ভাব ফুটিয়ে তুলতে গিয়ে অনুবাদের প্রতিটি মুহূর্ত নিজে খু্ব উপভোগ করেছি।

নিম্নাঞ্চলে, মুলমেইনে প্রচুর মানুষ আমাকে ঘৃণা করত যেটা আসলে আমার জীবনের একমাত্র সময় যখন আমি এতটা ঘৃণিত হবার মতো যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ছিলাম। আমি ছিলাম শহরটির সাব-ডিভিশনাল পুলিশ কর্মকর্তা এবং সেখানে, তুচ্ছ ও উদ্দেশ্যহীন ধরণের হলেও, ইউরোপ-বিদ্বেষ ছিল প্রবল। রায়ট শুরু করার মতো স্পর্ধা কারো ছিল না, কিন্তু যদি কোনো ইউরোপীয় নারী একা বাজার দিয়ে হেঁটে যেত তবে কেউ না কেউ তার পোশাকে পানের পিক ফেলতই। পুলিশ কর্মকর্তা হওয়ায় আমি এসবের একটা নিশ্চিত লক্ষ্যবস্তু ছিলাম এবং কোনো বিপদের সম্ভাবনা না থাকলে তাতে জর্জরিতও হতাম। যখন ফুটবল খেলার সময় কোনো ক্ষীপ্র বার্মিজ আমাকে ল্যাং মারত আর রেফারি (আরেক বার্মিজ) অন্য দিকে তাকিয়ে থাকত, তখন দর্শকরা উৎকট হাসিতে ফেটে পড়ত। এমনটা একাধিকবার ঘটেছে। শেষ পর্যন্ত দুটি বিষয় আমাকে সবচেয়ে বেশি বিচলিত করত: সর্বত্র দেখতে পাওয়া যুবকদের বিদ্রুপমাখা হলদে মুখ আর যখন নিরাপদ দূরত্বে থাকতাম তখন শুনতে পাওয়া নিন্দা-টিটকারি। সবার চেয়ে খারাপ ছিল তরুণ বৌদ্ধ পুরোহিতরা। শহরে তারা কয়েক হাজারের মতো ছিল এবং তাদের কারুরই বোধহয় রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে ইউরোপীয়দের ব্যঙ্গ করা ছাড়া করার মতো আর কিছু ছিল না।

এ সবকিছুই ছিল খুব হতবুদ্ধিকর আর অস্বস্তিকর। কারণ ততদিনে আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলাম যে সম্রাজ্যবাদ একটা অশুভ জিনিস এবং যত তাড়াতাড়ি আমি চাকরিটা ছুঁড়ে ফেলে বেরিয়ে যেতে পারি ততই মঙ্গল। আদর্শিকভাবে—এবং গোপনে, অবশ্যই—আমি পুরোপুরিই ছিলাম বার্মিজদের পক্ষে আর শোষক অর্থাৎ ব্রিটিশদের বিপক্ষে। আর চাকরিটার কথা বললে বলতে হয়, আমি এটাকে এতই ঘৃণা করতাম যে ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না। এরকম চাকরিতে সম্রাজ্যের নোংরা কাজগুলো খুব কাছে থেকে দেখা যায়। জেলখানার পুঁতিগন্ধময় খাঁচাগুলোতে গাদাগাদি করে থাকা হতভাগ্য কয়েদিরা; বহুদিনের হাজতবাসীদের বিবর্ণ, আতঙ্কিত মুখগুলো; নির্মম বেত্রাঘাতে জর্জরিতদের ক্ষতবিক্ষত পশ্চাদ্দেহ—এই সব একটা অসহনীয় অপরাধবোধে আমাকে নিষ্পেষিত করত। কিন্তু আমি কোনোকিছুর তল খুঁজে পাচ্ছিলাম না। আমি ছিলাম তরুণ ও কুশিক্ষিত এবং প্রাচ্যের প্রত্যেক ইংরেজের উপর যে চরম নৈঃশব্দ্য চাপিয়ে দেয়া হতো তার মধ্যেই আমাকে নিজের সমস্যাগুলো নিয়ে ভাবতে হয়েছিল। আমি এমনকি এটাও জানতাম না যে ব্রিটিশ রাজত্ব মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে, এবং আরও কম জানতাম এই ব্যাপারটা যে, এই সম্রাজ্য তার স্থান দখল করতে আসা নবীন সম্রাজ্যগুলোর চেয়ে অনেকগুণ ভাল। আমি কেবল জানতাম, যে সম্রাজ্যের হয়ে আমি কাজ করছি তার প্রতি ঘৃণা এবং শয়তানসুলভ ক্ষুদে জানোয়ার যারা আমার চাকরি অসম্ভব করে তুলেছিল তাদের প্রতি ক্রোধ এই দুয়ের মধ্যে আমি আটকে ছিলাম। আমার মনের একাংশ ভাবত ব্রিটিশ রাজ একটা অখণ্ডনীয় স্বৈরতন্ত্র, যুগ থেকে যুগান্তরে ভূম্যবলুণ্ঠিত মানুষের কণ্ঠরোধী একটা শক্তি; আরেকাংশ ভাবত পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আনন্দ হতে পারে কোনো বৌদ্ধ ভিক্ষুর অহম্ বেয়েনেট আঘাতে গুড়িয়ে দেয়া। এরকম অনুভূতি সম্রাজ্যবাদের সাধারণ উপজাত; যেকোনো অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান কর্মকর্তাকে জিজ্ঞেস করুন, যদি কাউকে কর্মাবসরে পান।

একদিন এমন কিছু ঘটেছিল যা একদিক দিয়ে বেশ আলোকপ্রসারী। এমনিতে ঘটনাটি ছিল খুব ছোটো, কিন্তু সম্রাজ্যবাদের আসল প্রকৃতি বা কোনো স্বৈরাচারী সরকারের কাজ করার আসল অভিপ্রায় সম্পর্কে আমি আগে যা জানতাম এই ঘটনা তার চেয়ে স্পষ্ট ধারণা দিয়েছিল। একদিন খুব সকালে শহরের অন্যপ্রান্তের এক পুলিশ স্টেশনের সাব-ইন্সপেক্টর আমাকে টেলিফোনে জানায় যে একটা হাতি বাজার লণ্ডভণ্ড করছে। আমি কি দয়াকরে এই ব্যাপারে কিছু করতে পারি? আমি জানতাম না আমার কী করার আছে, কিন্তু দেখতে চাচ্ছিলাম আসলে কী ঘটছে এবং টাট্টুঘোড়ায় চেপে রওনা হলাম। সাথে আমার বন্দুক নিলাম, একটা পুরনো ৪৪ উইনচেস্টার যা একটা হাতি মারার জন্য বড্ড ছোটো, কিন্তু ভেবেছিলাম এর শব্দটা আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য যথেষ্ট। পথিমধ্যে অনেক বার্মিজ আমাকে থামিয়ে হাতিটার কাণ্ডকীর্তি বলছিল। হাতিটা অবশ্যই বুনো ছিল না; একটা পোষমানা হাতিই হঠাৎ উন্মত্ত হয়ে গিয়েছিল। প্রজননঋতু চলাকালীন সময়ে সব হাতিই এমন উন্মত্ত হয়ে উঠে এবং এসময়ে পোষমানা হাতিদেরকেও সাধারণত বেঁধে রাখা হয় যেমনটা এর ক্ষেত্রেও করা হয়েছিল, কিন্তু আগের রাতে হাতিটা তার শিকল ভেঙে পালিয়ে যায়। হাতির মাহুত—এমন দশায় তাকে নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা একমাত্র যার আছে—তাকে ধরার জন্য বেরিয়েছিল, কিন্তু ভুল দিকে যাওয়ার কারণে সে এখন হাতিটা থেকে বারো ঘণ্টার দূরত্বে, এবং সকালবেলা হাতিটা হঠাৎ আবার শহরে এসে উপস্থিত হয়েছে। বার্মিজদের কোনো অস্ত্র ছিল না এবং তারা এর কাছে খুব অসহায়ই ছিল। এটা ইতিমধ্যে কারো কারো বাঁশের কুঁড়েঘর ভেঙেছে, একটা গরু মেরেছে এবং কিছু ফলের দোকান ভাঙচুর করে পণ্য গলঃধকরণও করেছে; এছাড়া যাত্রাপথে এর সাথে নগরের ময়লার গাড়ির দেখা হয় যার চালক তাকে দেখে এক লাফে বেরিয়ে ভোঁ-দৌড় দেয়, আর সে গাড়িটাকে উল্টে যারপরনাই হেনস্থা করে।

বার্মিজ সাব-ইন্সপেক্টর এবং কয়েকজন ভারতীয় কনস্টেবল তাদের আস্তানায় আমার জন্য অপেক্ষা করছিল যেখানেও হাতিটাকে দেখা গিয়েছে। আস্তানাটির খুব ভগ্নদশা—একটা খাঁড়া পাহাড়ের গায়ে ছড়ানো ছিটানো কিছু নোংরা, তালপাতার ছাউনি দেয়া বাঁশের কুঁড়ে। মনে আছে সকালটা ছিল মেঘলা, গুমোট; বৃষ্টি হওয়ার আগে যেমনটা হয়। হাতিটা কোথায় গেছে তা আমরা মানুষজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে চাইছিলাম, কিন্তু যথারীতি সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পেতে ব্যর্থ হই। প্রাচ্যের ব্যাপারটাই এরকম; একটা ঘটনা দূর থেকে সবসময় যথেষ্ট স্পষ্টই মনে হয়, কিন্তু যত কাছে যাবেন ততই অস্পষ্ট হতে থাকে। কেউ যদি বলে এইদিকে গেছে, কেউ বলে ঐদিকে, কেউ আবার দাবী করে বসে এমন কোনো হাতির কথাই শুনেনি। আমি প্রায় মনস্থিরই করে ফেলেছিলাম যে পুরোটা একটা ডাহামিথ্যা, কিন্তু তখনই একটু দূরে চিৎকার-চেঁচামেচি শুনতে পেলাম। একটা বিচলিত তীক্ষ্ণ চিৎকার শুনলাম, “বাচ্চারা, এখান থেকে সরো! এক্ষনি!” এবং দেখলাম একটা ঘরের পিছন থেকে এক বৃদ্ধা একটা কঞ্চি হাতে একদল নগ্ন বাচ্চাকে প্রবলভাবে তাড়া করতে করতে বেরিয়ে এল। তার পিছনে আরো কিছু মহিলা আক্রোশের সাথে আফসোস করতে করতে আসছিল; বুঝাই যাচ্ছে যে বাচ্চারা এমন কিছু দেখে ফেলেছে যা তাদের দেখা উচিত ছিল না। আমি বাড়িটার পিছনে গিয়ে দেখলাম একটি লোকের মৃতদেহ মাটিতে থেতলে পড়ে আছে। লোকটি ছিল ভারতীয়, এক দ্রাবিড় কুলি, প্রায় নগ্ন, এবং খুব বেশিক্ষণ হয়নি যে মারা গেছে। মানুষজন বলল হাতিটা বাড়ির এককোণ থেকে এসে হঠাৎ তার উপর হামলে পড়ে, তাকে শুঁড় দিয়ে পেঁচিয়ে ধরে এবং পিঠে পা দিয়ে চেপে ধরে মাটিতে পুঁতে ফেলে। বর্ষাকাল হওয়ায় মাটি ছিল নরম, এবং তার মুখের চাপে মাটিতে প্রায় এক ফুট গভীর ও কয়েক গজ লম্বা একটা গর্ত সৃষ্টি হয়েছিল। সে উপুড় হয়ে শুয়েছিল; তার হাত দুটি ছিল ক্রুশবিদ্ধের মতো এবং তার ঘাড় ভয়ংকরভাবে মচকে যাওয়ায় মাথাটি একপাশে কাত হয়ে ছিল। তার মুখভর্তি কাঁদা, চোখদুটি হাট করে খোলা, বের হয়ে থাকা দাঁতগুলোতে একটা অসহনীয় যাতনার ছাপ। (এপ্রসঙ্গে বলে রাখি, আমাকে কখনো বলতে আসবেন না যে মৃতদেরকে দেখতে প্রশান্ত লাগে। আমি যেসব মৃতদেহ দেখেছি তার অধিকাংশই আমার কাছে নারকীয় লেগেছে।) মানুষ যত সূক্ষ্ণভাবে খরগোশের চামড়া ছাড়ায় সেই বিরাট জানোয়ারের পায়ের ঘষায় লোকটির পিঠের চামড়া সেভাবেই উঠে গিয়েছিল। মরা লোকটিকে দেখামাত্রই আমি এক আর্দালিকে কাছেই থাকা আমার এক বন্ধুর বাসায় একটা হাতিমারা বন্দুক আনতে পাঠাই। টাট্টু ঘোড়াটাকে আগেই পাঠিয়ে দিয়েছিলাম, কারণ হাতির গন্ধ পেয়ে তার আতঙ্কে উন্মাদ হয়ে আমাকে পিঠ থেকে ফেলে দেয়ার সম্ভাবনা ছিল।

আর্দালি কয়েক মিনিটের মধ্যেই একটি বন্দুক এবং পাঁচটি কার্তুজ নিয়ে ফিরে এল, এবং এরমধ্যে কয়েকজন বার্মিজ এসে আমাদের বলল যে তারা হাতিটাকে মাত্র কয়েকশ’ গজ দূরে একটা ধানক্ষেতে দেখেছে। আমি যখন সেদিকে এগোতে শুরু করলাম তখন বাস্তবিকই এলাকাটির সব মানুষ বাড়ি থেকে দলে দলে বেরিয়ে আমাকে অনুরসণ করতে শুরু করে। বন্দুকটা দেখে তারা সবাই উত্তেজিত ভাবে উচ্চস্বরে বলাবলি করতে লাগল যে আমি হাতিটাকে গুলি করতে যাচ্ছি। যখন হাতিটা তাদের বাড়িঘরে তাণ্ডব চালাচ্ছিল কেবল তখন তারা এতটা আগ্রহ দেখায়নি, কিন্তু এখন যখন তাকে গুলি করা হচ্ছে তখন ব্যাপারটাই আলাদা। সবাই বেশ মজা পাচ্ছিল, যেমনটা কোনো ইংরেজদের ভিড়েও দেখা যেত; তাছাড়া তারা মাংসটাও চাচ্ছিল। এটা আমাকে কিছুটা অস্বস্তিতে ফেলে দেয়। হাতিটাকে গুলি করার কোনো ইচ্ছা আমার ছিল না—বন্দুকটা আনিয়েছিলাম কেবলই প্রয়োজনে আত্মরক্ষার জন্য—এবং কারো পিছনে এত মানুষ থাকাটা তার স্নায়ুর উপর সবসময়ই চাপ ফেলতে বাধ্য। কাঁধে বন্দুক নিয়ে পাহাড় বেয়ে নামতে থাকার সময় নিজেকে বোকা বোকা মনে হচ্ছিল আর আমাকে দেখাচ্ছিলও বোকার মতো, এবং পিছে পিছে ধাক্কাধাক্কি করে ধাবমান মানুষের সংখ্যা কেবল বাড়ছিলই। পাদদেশে, কুঁড়েঘরগুলো থেকে দূরে একটা পাকা সড়ক এবং তার ওপারে প্রায় হাজার গজ চওড়া একটা কর্দমাক্ত, পতিত ধানি জমি, এখনো লাঙল পড়েনি তবে বর্ষার প্রথম বৃষ্টির পানি জমে আছে এবং এখানে সেখানে আগাছা। হাতিটা রাস্তা থেকে আট গজ দূরে দাঁড়িয়ে ছিল, তার বামদিকটা আমাদের দিকে। এত লোকের সমাগমে সে বিন্দুমাত্রও ভ্রুক্ষেপ করেনি। সে গুচ্ছ গুচ্ছ ঘাস তুলে সেগুলো হাঁটুতে বাড়ি দিয়ে পরিষ্কার করে মুখে পুরছিল।

আমি রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে যাই। হাতিটাকে দেখামাত্রই শতভাগ নিশ্চিতভাবে জানতাম যে তাকে গুলি করা উচিত হবে না। একটা শ্রমিক হাতিকে গুলি করাটা খুব গুরুতর ব্যাপার—একে তুলনা দেয়া চলে খুব বড় ও ব্যয়বহুল কোনো মেশিন ধ্বংস করার সাথে—এবং এড়ানোর সুযোগ থাকলে এটা অবশ্যই করা উচিত না। এবং সেই দূরত্বে শান্তিপূর্ণভাবে খেতে থাকা হাতিটাকে একটা গরুর চেয়ে কোনো অংশেই বেশি বিপজ্জনক মনে হচ্ছিল না। আমি তখন ভাবছিলাম এবং এখনো ভাবি যে তার প্রজননঋতুকালীন উন্মত্ততা ইতিমধ্যেই চলে যাচ্ছিল; যেক্ষেত্রে তার মাহুত এসে তাকে ধরার আগ পর্যন্ত সে কেবল নিরীহভাবে ঘুরে বেড়াত। উপরন্তু, তাকে গুলি করার একবিন্দু ইচ্ছাও আমার ছিল না। সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, তাকে কিছুক্ষণ দেখে রাখব যাতে সে আবার হিংস্র হয়ে কিছু না করতে পারে, এবং তারপর বাড়ি চলে যাব।

কিন্তু সেই মুহূর্তে পিছনে ফিরে আমাকে অনুসরণ করে আসা ভিড়ের দিকে তাকাই। ভিড়টা ছিল সুবিশাল, অন্তত দুই হাজার মানুষ এবং প্রতি মুহূর্তে বাড়ন্ত। রাস্তার একটা দীর্ঘ অংশ দুই দিক থেকেই তারা আটকে রেখেছিল। আমি ক্যাটক্যাটে পোশাক-অবয়বের উপরে থাকা হলদে মুখের সমুদ্রের দিকে তাকাই, মুখগুলো এইটুকু মজার প্রত্যাশায় আনন্দ-উত্তেজনায় জ্বলজ্বল করছিল, সবাই নিশ্চিত যে হাতিটা শীঘ্রই গুলিবিদ্ধ হবে। কোনো ভেল্কি দেখাতে উদ্যত জাদুকরকে তারা যেভাবে দেখত আমাকেও সেভাবে দেখছিল। তারা আমাকে পছন্দ করত না, কিন্তু সেই ঐন্দ্রজালিক বন্দুক হাতে থাকায় কিছুক্ষণের জন্য আমি দেখার মতো কিছু একটা হয়ে উঠেছিলাম। এবং হঠাৎ আমি বুঝতে পারলাম যত যাই হোক হাতিটাকে আমার গুলি করতেই হবে। মানুষজন আমার কাছে এটা আশা করছিল এবং আমাকে তা করতেই হতো; আমি অনুভব করতে পারছিলাম যে, তাদের দুই হাজার প্রত্যাশার চাপ আমাকে সামনের দিকে ঠেলছে, অপ্রতিরোধ্যভাবে। এবং ঠিক সেই মুহূর্তেই, হাতে বন্দুক নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায়, আমি প্রথম প্রাচ্যে সাদা মানুষদের আধিপত্যের অন্তঃসারশূন্যতা ও অসারতা উপলব্ধি করি। এই আমি সেখানে, বন্দুক হাতে একজন সাদা মানুষ, নিরস্ত্র স্থানীয়দের জমায়েতের সামনে দাঁড়িয়ে— আপাতদৃষ্টিতে নাটকটির মুখ্যচরিত্র; কিন্তু বাস্তবে আমি ছিলাম কেবল একটা হাস্যকর পুতুল যে পিছনে দাঁড়ানো হলদে মুখগুলোর ইচ্ছানুসারে দোদুল্যমান। সেই মুহূর্তে বুঝতে পেরেছিলাম, যখন সাদারা স্বৈরাচারে পরিণত হয় তখন তারা কেবল নিজেদের স্বাধীনতাই ধ্বংস করে। সে পরিণত হয় এক ধরণের অন্তঃসারশূন্য, ভানধরা সাক্ষী-গোপালে—একটি প্রথাসিদ্ধকৃত সাহেবের অবয়ব। কারণ তার রাজত্বের শর্তই এই যে, সে তার জীবন ব্যয় করবে “স্থানীয়দের” মুগ্ধ করতে এবং সুতরাং প্রত্যেক সংকটের সময়ে তাকে সেটাই করতে হবে যা “স্থানীয়রা” তার থেকে আশা করে। সে একটি মুখোশ পরে এবং তার মুখ সেই মুখোশের রূপ ধারণ করে। হাতিটাকে গুলি করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না আমার। বন্দুক আনতে যখন পাঠিয়েছিলাম তখনই এই কাজের জন্য আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। সাহেবকে সাহেবের মতোই আচরণ করতে হবে; তাকে দৃঢ় হওয়ার ভান ধরতে হবে, নিজের মনকে চিনতে হবে এবং সুনির্দিষ্ট কাজ করতে হবে। এতদূর এসে, বন্দুক হাতে নিয়ে, দুই হাজার ধাবমান মানুষ দ্বারা অনুসৃত হয়ে, তারপর দুর্বলচিত্তে থেমে যাব, কিছুই করব না?— না, সেটা অসম্ভব। সবাই আমাকে নিয়ে হাসবে। এবং আমার সারা জীবন, প্রাচ্যে প্রত্যেক সাদা মানুষের জীবন, ছিল হাসির পাত্র না হওয়ার এক দীর্ঘ সংগ্রাম।

কিন্তু আমি হাতিটাকে গুলি করতে চাইনি। দেখছিলাম সে ঘাসগুচ্ছ হাঁটুতে বাড়ি দিয়ে ঝাড়ছে, সেই দাদিসুলভ উন্মনা ভঙ্গিতে যেমনটা হাতিদের মাঝে দেখা যায়। আমার কাছে মনে হচ্ছিল তাকে গুলি করাটা হবে খুনের সমতুল্য। সেই বয়সে পশুহত্যা নিয়ে আমার মধ্যে কোনো খুঁতখুঁতানি ছিল না, কিন্তু জীবনে কোনোদিন কোনো হাতিকে গুলি করিনি এবং কখনো করতেও চাইনি। (কেন যেন পশুটা যত বড় হয় তাকে মারাটাও তত বেশি খারাপ মনে হয়।) তাছাড়া পশুটার মালিকের ব্যাপারটা তো ছিলই। জীবিতাবস্থায় হাতিটার দাম অন্তত একশ পাউন্ড হতো; মৃতাবস্থায় হয়ত তার মূল্য কেবল তার দাঁতের দামের সমান, অর্থাৎ পাঁচ পাউন্ড। কিন্তু আমাকে দ্রুত কিছু একটা করতে হতো। দেখতে অভিজ্ঞ মনে হয় এমন কিছু বার্মিজ যারা আমরা পৌঁছানোর আগে থেকেই সেখানে ছিল তাদের দিকে ফিরি, এবং জিজ্ঞেস করি হাতিটা এতক্ষণ কেমন আচরণ করছিল। তাদের সবার এক কথা: তাকে তার মতো থাকতে দিলে সে কোনোদিকে ভ্রুক্ষেপও করবে না, কিন্তু বেশি কাছে গেলে হয়ত তেড়ে আসবে।

আমার কী করা উচিত সেটা আমার কাছে পরিষ্কার ছিল। উচিত হাতিটার পঁচিশ গজের মতো কাছে গিয়ে তার আচরণ লক্ষ্য করা। যদি তেড়ে আসে, গুলি করতে পারি; আর যদি ভ্রুক্ষেপ না করে, তবে মাহুত আসার আগ পর্যন্ত তাকে নিজের মতো থাকতে দেয়াটা নিরাপদ। কিন্তু আমি এটাও জানতাম যে আমি তেমন কিছু করতে যাচ্ছি না। আমার বন্দুকের নিশানা ভাল ছিল না এবং সেখানকার মাটি এত নরম ছিল যে প্রতি কদমেই পা দেবে যায়। হাতিটা যদি তেড়ে আসে আর আমার গুলি যদি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়, তবে নিশ্চিত যে স্টিমরোলারের নিচে পড়া একটা ব্যাঙের বেঁচে ফেরার সম্ভাবনা যতটুকু আমারও তাই। কিন্তু তখনও ঠিক আমার চিন্তার প্রধান ব্যাপার নিজের চামড়া বাঁচানো ছিল না, ছিল কেবল সেই অতন্দ্র প্রহরীর মতো হলদে মুখগুলো। কারণ সেই মুহূর্তে, সেই জনারণ্যের চোখের সামনে, আমি ঠিক সাধারণ অর্থে ভীত ছিলাম না, যেটা আমি একা থাকলে হয়ত হতাম। একজন সাদা মানুষের “স্থানীয়দের” সামনে ভয় পাওয়া চলে না; এবং তাই, সাধারণত, সে ভয় পায়ও না। আমার মাথায় একমাত্র চিন্তা ছিল, যদি কোথাও ভুল হয় তবে সেই দুই হাজার বার্মিজ আমাকে ধাওয়া খেতে, ধরা পড়তে, হস্তিপদদলিত হতে এবং একটা দন্তবিকশিত উৎকট মৃতদেহে পরিণত হতে দেখবে, ঠিক সেই পাহাড়ের উপরের ভারতীয়টার মতো। এবং যদি সেটা ঘটে তাহলে খুব সম্ভবত তাদের কেউ কেউ হেসেও উঠবে। তা কক্ষনো হতে পারে না।

বিকল্প ছিল একটাই। আমি কার্তুজগুলো বন্দুকে ঢোকাই এবং আরো ভাল নিশানা পেতে রাস্তায় শুই। ভিড়ের সবাই স্থির হয়ে যায়, এবং একটা গভীর, নিচু, আনন্দের প্রশ্বাস—অনেকটা থিয়েটারে অবশেষে পর্দা উঠতে দেখলে মানুষ যেমন শ্বাস ফেলে—অগণিত কণ্ঠ থেকে নিঃসৃত হয়। তারা শেষ পর্যন্ত বহুলাকাঙ্ক্ষিত মজাটুকু পেতে চলেছে। সেটা একটা সুন্দর জার্মান রাইফেল যা-তে ক্রুশাকৃতির নিশানা-নির্ধারকও ছিল। তখন আমি জানতাম না যে, কোনো হাতিকে মারতে হলে তার এক কর্ণকুহর থেকে অন্য কর্ণকুহর পর্যন্ত একটা রেখা কল্পনা করে সেই বরাবর গুলি করতে হয়। সুতরাং, হাতিটা যেহেতু একপাশ হয়ে ছিল সেহেতু আমার উচিত ছিল সরাসরি তার কর্ণকুহরে নিশানা ঠিক করা, আসলে আমি নিশানা করেছিলাম কানের কয়েক ইঞ্চি সামনে, এই ভেবে যে, মস্তিষ্কটা আরো সামনে হবে।

ট্রিগার চাপার মুহূর্তে আমি শব্দটাও শুনিনি, ধাক্কাটাও টের পাইনি—গুলি লক্ষ্যভেদ করবে বুঝলে সেসব কেউ অনুভব করেও না—কিন্তু আমি ভিড় থেকে উঠে আসা উল্লাসের নারকীয় চিৎকার শুনেছিলাম। কেউ হয়ত ভাববে সেই মুহূর্তে, গুলিটা বন্দুক থেকে হাতি পর্যন্ত যাওয়ার পক্ষেও খুব স্বল্প সময়ে, হাতিটার উপর একটা রহস্যময়, ভয়ংকর পরিবর্তন এসেছে। সে একটু নড়েওনি বা পড়েও যায়নি, কিন্তু তার দেহের প্রতিটি রেখা পাল্টে গিয়েছিল। তাকে হঠাৎ পীড়িত, সংকুচিত, অতিশয় বৃদ্ধ দেখাচ্ছিল, যেন গুলিটার ভীষণ আঘাত তাকে ভূপতিত না করেই পুরোপুরি অসাড় করে দিয়েছে। অবশেষে, যেন একটা দীর্ঘ সময়ের পর—সত্যি বললে, হয়ত মাত্র পাঁচ সেকেন্ড পার হয়েছিল—সে নিস্তেজ হয়ে হাঁটু গেড়ে ঢলে পড়ে। তার মুখ লালাসিক্ত। মনে হলো তার উপর বার্ধক্যের সব জরা ভর করেছে। তখন তাকে কেউ হাজার বছর বয়সীও ভাবতে পারত। আমি আবার সেই একই জায়গায় গুলি করি। দ্বিতীয় গুলিতে সে ধরাশায়ী হয়নি বরং বেপরোয়া ধীরতার সাথে টলায়মান পায়ের উপর ভর করে নুয়ে পড়া মাথা নিয়ে দুর্বলভাবে উঠে দাঁড়ায়। আমি তৃতীয়বারের মতো গুলি করলাম। আর সেই গুলিতেই সে শেষ হয়ে যায়। তাকে দেখেই তার পুরো দেহের ঝাঁকুনি এবং পায়ের সর্বশেষ শক্তিটুকু ক্ষয়ে যাওয়ার তীব্র সন্তাপ স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছিল। কিন্তু পড়ার সময়ও যেন সে একটু উঠে দাঁড়াচ্ছিল; তার পিছনের পা ঢলে পড়ার সময় সে তার শুঁড় আকাশ ছুঁতে চাওয়া গাছেদের মতো ঊর্ধ্বে তুলে ধরেছিল এবং একটা পতনোন্মুখ সুবিশাল পাথরকে যেমন সুউচ্চ মিনারের মতো লাগে তাকে তেমনই লাগছিল। সেই প্রথম এবং শেষবারের মতো সে উচ্চনাদ করে উঠে। এবং তারপর পতন হয় তার, সম্মুখদেহটা আমার দিকে, এবং সে পতনে আমি যেখানে শুয়েছিলাম এমনকি সেখানের মাটিও কেঁপে উঠে।

আমি উঠে দাঁড়াই। বার্মিজরা ইতিমধ্যেই আমাকে ছাড়িয়ে কাঁদা মাড়িয়ে ছুটে যাচ্ছিল। হাতিটা যে আর উঠে দাঁড়াতে পারবে না তা নিশ্চিত ছিল, কিন্তু সে মারা যায়নি। সে ঘর্ঘর শব্দে লম্বা লম্বা দমে সমতালে শ্বাস ফেলছিল, বিরাট ঢিবির মতো তার পার্শ্বদেশটা যন্ত্রণায় উঠছিল আর নামছিল। মুখটা ছিল একদম হাঁ করা—তার ধূসর গোলাপী কণ্ঠকুহরের খুব গভীর পর্যন্ত দেখতে পাচ্ছিলাম। তার মৃত্যুর জন্য অনেকক্ষণ অপেক্ষা করে ছিলাম, কিন্তু তার শ্বাস নেয়ায় কোনো ছন্দপতন ঘটেনি। পরিশেষে বন্দুকের শেষ দুটি গুলি তার হৃৎপিণ্ড যেখানে ভেবেছিলাম সেখানে বিদ্ধ করি। তার দেহ থেকে বের হওয়া ঘন রক্তের প্রবাহ লাল গালিচার মতো দেখাচ্ছিল, কিন্তু তখনো সে মরেনি। গুলি দুটি যখন তার গায়ে লাগে তখন সে এমনকি একটু কাঁপেওনি, যন্ত্রণাপীড়িত শ্বাস-প্রশ্বাস বিরতিহীন চলছিল। সে মারা যাচ্ছিল, খুব ধীরে এবং প্রচণ্ড কষ্টে, কিন্তু আমার থেকে বহুদূরের এমন কোনো জগতে যেখানে এমনকি কোনো গুলিও তার আর কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। আমি অনুভব করছিলাম যে, এই নিদারূণ শব্দের অবসান আমাকে ঘটাতেই হবে। নড়তেও অক্ষম, মরতেও অক্ষম এই প্রকাণ্ড পশুকে সেখানে শুয়ে থাকতে দেখাটা এবং তাকে পুরোপুরি শেষ করতেও না পারাটা ছিল পীড়াদায়ক। নিজের ছোটো বন্দুকটা আনতে পাঠাই এবং গুলির পর গুলি ঢালতে থাকি তার হৃৎপিণ্ডে আর গলায়। তার কোনো প্রভাবই যেন তার উপর পড়ছিল না। ঘড়ির টিকটিক শব্দের মতো সেই যন্ত্রণাপীড়িত শ্বাস অনঢ়ভাবে চলতেই থাকল।

শেষে আমি আর তা নিতে পারছিলাম না এবং চলে আসি। পরে শুনেছিলাম সে মরতে আধা ঘণ্টা সময় নিয়েছিল। আমি থাকাবস্থাতেই বার্মিজরা থালাবাসন নিয়ে আসছিল, এবং শুনেছি বিকেলের মধ্যেই তারা হাতিটার হাড় অবধি সব ছাড়িয়ে নিয়েছিল।

পরবর্তিতে, অবশ্যই, হাতিটার মৃত্যু নিয়ে আলাপ-আলোচনার কোনো শেষ ছিল না। মালিক রেগে আগুন হয়েছিল, কিন্তু সে ছিল নিতান্তই এক ভারতীয় এবং কিছুই করতে পারেনি। তাছাড়া, আইনের দৃষ্টিতে আমি ঠিক কাজটাই করেছিলাম, কারণ মালিক যদি কোনো উন্মত্ত হাতির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে তবে তো তাকে মারতেই হবে, ঠিক একটা উন্মত্ত কুকুরের মতোই। ইউরোপীয়দের মধ্যে এ নিয়ে মতভেদ ছিল। বয়োজ্যেষ্ঠরা বলছিল আমি ঠিকই করেছি, আর কণিষ্ঠরা বলছিল সামান্য এক কুলিকে মারার জন্য একটা হাতিকে গুলি করাটা ধিক্কারজনক, কারণ একটা হাতির মূল্য যেকোনো তুচ্ছ কোরিংগি কুলির চেয়ে বেশি। এবং তারপর কুলিটার মৃত্যুতে খুশিই হয়েছিলাম; এটা আমাকে আইনগত সিদ্ধতা এবং হাতিটাকে মারার জন্য একটা পর্যাপ্ত অজুহাত দিয়েছিল। আমি মাঝেমাঝেই ভাবতাম অন্য কেউ বুঝেছিল কি-না যে, কাজটা আমি কেবলই বোকা হওয়ার হাত থেকে বাঁচার জন্য করেছিলাম।


মন্তব্য

পদব্রজী এর ছবি

প্রথম লাইনে প্রথম শব্দটা আসে নাই, "বার্মার নিম্নাঞ্চলে" হবে, "বার্মার" শব্দটা কেটে গেসে মন খারাপ
-পদব্রজী

হিমু এর ছবি

সম্রাজ্য > সাম্রাজ্য

পদব্রজী এর ছবি

পরের বার বানানের ব্যাপারে আরো সচেতন হয়ে লেখা জমা দেয়ার প্রচেষ্টা থাকবে।

এক লহমা এর ছবি

অসাধারণ গল্প। অনুবাদ ভাল লেগেছে। বানান নিয়ে আর একটু সতর্ক হতে অনুরোধ রইল। পরের পোস্টের জন্য সাগ্রহ অপেক্ষায় থাকলাম।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

পদব্রজী এর ছবি

বানান নিয়ে পরের বার আরো সচেতন থাকবো। আর ধন্যবাদ।

পদব্রজী এর ছবি

ধন্যবাদ।

শিশিরকণা এর ছবি

যেকোন হত্যার বর্ণনা আমাকে ভীষণ পীড়িত করে। অনুবাদ ভালো হয়েছে তার পীড়া বোধ করলাম হাতির মৃত্যুর বর্ণনা পড়তে পড়তে। অনুবাদ আরও ভালো হতে পারত মনে করি।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

পদব্রজী এর ছবি

ধন্যবাদ। আরো ভালো করার চেষ্টা থাকবে পরেরটায়। হাসি

দীপ্ত এর ছবি

অনুবাদ ভালো লেগেছে।

মেঘলা মানুষ এর ছবি

ভালো লেগেছে। অনুবাদের মানের বিষয়ে মন্তব্য করার মত জ্ঞান আমার নেই। ওপরেই অনেকে অনেক পরামর্শ দিয়েছেন।
আমার কথা হল: ধন্যবাদ, আমাদের সাথে অনুবদটা শেয়ার করার জন্য। তা না হলে হয়ত এমন একটা গল্প 'অ-পড়া' হয়ে থেকত সারা জীবন।

শুভেচ্ছা হাসি

তামজিদ রায়হান এর ছবি

ব্যক্তির বিবেচনাবোধ এবং ব্যক্তির উপর সামাজিক প্রত্যাশার চাপ এই দুয়ের দ্বন্দ্ব, গল্পের এই দিকটা আমাকে মুগ্ধ করেছে। আমরা সামাজিক চাপের মুখোমুখি হয়ে অনেক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি স্রেফ সম্মান বাঁচানোর অজুহাতে অথবা নিজের কৃতিত্ব জাহির করার উদ্দেশ্যে। অনেক ধন্যবাদ এরকম একটি গল্প অনুবাদ করে পড়ার সুযোগ করে দেয়ার জন্য।

অতিথি লেখক এর ছবি

ফার্স্ট ইয়ারে একাডেমিক প্রোজ রাইটিং এ ছিল। দারুন লেগেছিল। আপনার অনুবাদ পড়ে আগের সেই অনুভূতি ফিরে এল। ধন্যবাদ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।