মণিশ রায়ের ভূত জোৎস্নায় ছাদের রেলিংয়ে শুয়ে আকাশের দিকে চেয়ে খুশিতে পা নাচায়…

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: রবি, ০২/০৮/২০১৫ - ৯:১৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সিনেমায় পুরোনো আমলের হিন্দু বাড়ি যেরকম দেখায় সেরকম একটা দোতালা বাড়ি আমাদের। সত্যি সত্যি একবার একটা সিনেমার শুটিং হয়েছিল আমাদের বাড়িতে। আমি তখন খুব ছোট। ক্লাশ ফোরে পড়ি। সেই সিনেমাটাও ছিল একটা হিন্দু জমিদারকে নিয়ে। তখনো অবশ্য আমি জানতাম না, আমাদের বাড়িটা আসলেই একটা “হিন্দু বাড়ি”! আরো পরে জেনেছি, এই বাড়িতেই আমার মা এক সময় ঝিয়ের কাজ করতেন। আমার বাবা এ বাড়ির কেয়ারটেকারের ছিলেন। ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের বছর আমাদের কপাল খুলে যায়। আমার বাবার মনিব শ্রী মণিশ কুমার রায় তার পুরো পরিবারকে ইন্ডিয়াতে পাঠিয়ে বিশ্বস্ত কেয়ারটেকার গোলাম রহমানকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি পাহাড়ায় থেকে যান। গোলাম রহমান আর তার সদ্য বিবাহিত স্ত্রী নিচতলার একটা ঘরে থাকত। সেই যুদ্ধের অনিশ্চিত দিনগুলোতে একদিন মণিশ বাবু হঠাৎ নিরুদ্দেশ হয়ে যান। গোলাম রহমান কোত্থেকে শুনলেন কর্তাবাবু “রায়টে প্রাণ ত্যাগ করেছেন”! সেই ভরা পাকিস্তান আমলে গোলাম রহমানের তারপর থেকে দিন ফিরতে শুরু করে। ছয় বছর পর ফের যখন দুই পাকিস্তানে যুদ্ধ লেগে গেলো তখনি আসলে গোলাম রহমানের প্রকৃত দিন বদলের শুরু। আমার বাবা রাজাকার বা শান্তি কমিটির লোক ছিলেন না। যুদ্ধের বছর তিনি ব্যবসা করেছেন। হিন্দু বাড়িঘর দখল করেছেন।… না, এটাও ভুল বলা হলো, বাবা দখলদারদের কাছ থেকে জলের দামে সেটা কিনে নিয়েছেন শুধু। এসব করতে যেয়ে রাজাকার থেকে শুরু করে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সবাইকেই বখরা দিয়েছেন। তিনি নিজে কোনদিন কোন বাড়ি-ঘর লুট করতে যাননি। কেউ এসে প্রস্তাব দিয়েছে একটা হিন্দু বাড়ি আছে, বাবা গিয়ে তার দখল নিয়েছেন। এর জন্য তাকে কত জায়গায় দেনদরবার করতে হয়েছে। একবার মুক্তিযোদ্ধাদের একটা দল বাবাকে ধরে পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছিল। কয়েক বস্তা চাল-ডাল আর আনাজপাতির বিনিময়ে বাবাকে ছেড়ে দেয়। বাবা হয়ত বুঝাতে পেরেছিলেন তিনি পাকিস্তানের পক্ষে না। কপালটা এত ভাল যে নভেম্বর মাসের দিকে বাবাকে রাজাকার ক্যাম্পেও ধরে নিয়ে গিয়েছিল। সেখানেও ভাল কিছু বখরা দিয়ে ছাড়া পেয়েছিলেন। আজ যে বাবাকে স্বাধীনতা দিবসের দিনে আমাদের পাড়ার ক্লাবের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে নিয়ে যায় এটা রাজাকার ক্যাম্পে ধরে নিয়ে যাবার জন্যই। যদি রাজাকাররা যুদ্ধে জিতে যেতো তাহলেও বাবাকে তাদের স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে ডেকে নিয়ে যেতো মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে ধরে নিয়ে যাবার ঘটনায়। বাবার কপালটা তাই ফাটাফাটি রকমের ভাল। যুদ্ধে যারাই জিতুক বাবা ঠিক তাদের সঙ্গে মিশে যেতে পারতো…।

বাবা-মার সঙ্গমের ফলে যে সন্তান জন্ম নেয়- এই সত্য জেনে বালক বয়েসে যেরকম ধাক্কা খেয়েছিলাম, বাবা-মার প্রতি ঘৃণা জন্মেছিল, ঠিক এক বর্ষার দুপুরে স্বপন আমার মনে প্রথম আমাদের সম্পর্কে একটা ঘৃণা জন্মে দিয়েছিল। আমার পিঠাপিঠি স্বপন, চিলেকোঠায় ওর গবেষণাগার। বাড়ির পুরোনো নষ্ট রেডিও, টর্চ লাইট, ছোট্ট খেলনা মটর, এগুলো দিয়ে স্বপন যন্ত্র বানানোর গবেষণা করতো। ছুটিরদিন দুপুরবেলা স্বপন চিলেকোঠায় চলে যেতো। আমি ছিলাম ওর এসিট্যান্ট। মেঘলা দিন, বাইরে টিপটিপ করে বৃষ্টি হচ্ছে। উঠোনো জল জমেছে। স্বপন একটা লঞ্চ বানাবে, একটা ছোট মটরের মাথায় পাখা লাগানো থাকবে। পেনসিল ব্যাটারীতে জুড়ে দিলেই মটরের পিনে লাগানো টিনের পাখাটা ভন ভন করে ঘুরতে থাকে। এখন একটা পাতলা টিনের নৌকার মত কিছু বানাতে পারলে, আর মটরটা সেটার পিছনে কায়দা মত বসিয়ে দিতে পারলেই তো হয়ে গেলো ইঞ্জিনের নৌকা! পুরোনো একটা টাঙ্ক পড়েছিল চিলেকোঠায়। ভেতরে রাজ্যের পুরোনো বাতিল জিনিস। আমরা দুজন ডালাটা খুলে জিনিসপত্র ঘাটছি। স্বপন তখন হঠাৎ থেমে গিয়ে আমাকে ওর হাতে ধরা একটা পিতলের প্রদীপ দেখিয়ে বলল, এটা কি বলতো? স্বপনের মুখে মিটিমিটি হাসি। টাঙ্কের ভেতর থেকে স্বপন ছোট ছোট পেতলের খেলনা থালা-বাটি বের করে আনলো।

-এ দিয়ে তো মেয়েরা খেলে! বললাম আমি। এগুলো এখানে আসলো কোত্থেকে?

স্বপন বলল, এগুলো খেলনা না গাধা! এগুলো হিন্দুদের পুজায় লাগে।

-হিন্দুদের জিনিস আমাদের বাড়িতে কেন? ভুরু কুঁচকে গেলো আমার।
স্বপন আমার চেয়ে মাত্র এক বছরের বড় হলেও ও আমার চেয়ে অনেক বেশি জানে। ওর পেটে পেটে অনেক কথা। আমরা দুজনেই ক্লাশ এইটে পড়ি, অথচ ও এখনি দিব্যি সিগারেট ধরিয়ে টানতে টানতে স্কুলে যায়! কি অবলীলায় পানের দোকানে গিয়ে সিগারেট চায়! আমি কুঁকড়ে দূরে সরে যাই। আমার খালি ভয় বাড়ির কেউ যদি দেখে ফেলে? স্বপনের এসবে কোন ভ্রুক্ষেপই নেই। আমাদের মা নেই। বড় ভাই কলেজে উঠে নিজের জগত নিয়ে ব্যস্ত। আমাদের শাসন-টাসনে মন নেই। বাবার চোখ এড়াতে পারলেই হলো। ডানপিটে বলে বাবার কাছে প্রচুর মারও খায় স্বপন। বাবা একদিন বেল্ট দিয়ে এমন মারটা মারলো ওকে! কিন্তু দিনকে দিন স্বপন যেন কাউকেই আর পরোয়া করতে চায় না। আমাকে এখন পিতলের একটা ঘন্টা দেখিয়ে বলল, এটা আমাদের বাড়ি তোকে কে বলল? বলেই স্বপন বজ্জাতের মত হাসলো।

-আমাদের না? অবিশ্বাস নিয়ে তাকালাম ওর দিকে। স্বপনকে ঘৃণা হচ্ছিল আমার। আর খুব ভয় হচ্ছিল…

-তুই মণিশ রায়ের নাম শুনেছিস?

-না।

-এটা মণিশ রায়ের বাড়ি। বাবা ওদের দারোয়ান ছিল।

-তোকে এসব কে বলেছে?

-আহ-হা, আমি সব জানি!

হ্যা, এখন আমরা সব জানি। বাচ্চাদের একটা বয়স পর্যন্ত তাদের কাছ থেকে সব কিছু লুকিয়ে রাখা হয়। মনিশ রায়ও সেরকম একটা নাম ছিল। তবে পারিবারিকভাবে মণিশ রায়ের বিষয়টার একটা ব্যাখ্যা আমাদের আছে। বাবা মণিশ রায়ের কাছ থেকে এই বাড়িটা কিনে নিয়েছিলেন…। কিন্তু আমাদের প্রতিবেশী, এলাকাবাসী নিন্দুকরা আড়ালে বলেন, একটা হিন্দু বাড়ি দখল করেছিল বাবা…।

স্বপন মারা যাবার একমাস আগে অনেক চঞ্চল হয়ে উঠেছিল। আর কি রকম পাগলের মত কথা বলত। একদিন আমাকে বলল- মণিশ জ্যাঠা এই বাড়িতেই আছেন-জানিস!

-এই বাড়িতে?

-হুঁ!

-কে বলল?

-রাতের বেলা ছাদে মণিশ জ্যাঠা খড়ম পায়ে পায়চারী করে! আমি নিজের কানে শুনেছি!

-ওটা যে মণিশ জ্যাঠা তোমাকে কে বলল?

-আমি ছাদে উঠে জ্যাঠাকে নিজের চোখে দেখেছি!

ভয়ে আমি ঢোগ গিললাম!

-তুমি মণিশ জ্যাঠার ভূত দেখেছো!

-কিন্তু মণিশ জ্যাঠার ভূতটা কেন এই বাড়ির মধ্যে ঘুরঘুর করবে বলতো? উনি তো রায়টের মধ্যে পড়ে গিয়েছিলেন। মুসলমানরা ওনাকে খুন করেছিল।

-তাহলে এই বাড়িতে কেন?

-সেটাই তো! আমাকে এটা বের করতেই হবে মণিশ জ্যাঠা ভূত হয়ে কেন এই বাড়ির মায়া ছাড়তে পারছেন না…

স্বপন বলার পর থেকে আমিও কোন কোন রাতে ছাদের উপর খড়মের শব্দ শুনতে পেতে শুরু করে দিলাম। যেন কেউ ধীর-শান্তভাবে ছাদের এ মাথা থেকে ও মাথা পায়চারি করছে। আমি ভয়ে কাঁথায় মাথা ঢেকে কুঁকড়ে যাই। স্বপন ওর ঘর থেকে দৌড়ে এসে বলে, ছাদে যাবি?

-নাহ্!

-চল, আড়াল থেকে মণিশ জ্যাঠাকে দেখবি।

-নাহ্!

আমরা তখন এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছি। আমাদের ছাদ থেকে বুড়িগঙ্গা দেখা যায়। অনেককাল আগে ছাদের মধ্যে যে তুলসি মঞ্চটা ছিল, এখন সেটা ক্ষয়ে ক্ষয়ে আমাদের বসবার জায়গা হয়ে গেছে। স্বপন একটা ফটোগ্রাফ দেখালো আমাকে। হলদেটে সাদাকালো একটা ছবি। ধুতি-পাঞ্জাবী পরনে একজন বয়স্ক মানুষ ক্যামেরার দিকে অস্বস্তি নিয়ে চেয়ে আছেন। স্বপন বলল, মণিশ জ্যাঠা।

-তুমি তাকে জ্যাঠা বলো কেন?

-বাবা উনাকে দাদা বলতো যে!

-স্বপন তুমি এসব নিয়ে মাথা ঘামানো ছেড়ে দাও। কি লাভ?

-মাথার মধ্যে একটা রহস্য ঢুকে গেছেরে…। এর কূল-কিনারা না করে আমি শান্তি পাবো না…।

-কিসের রহস্য?

-তোকে এখন কিছু বলবো না। সবটা আগে বের করি, তারপর…

স্বপন মারা যাবার এক সাপ্তাহ আগে চাপা একটা উত্তেজন নিয়ে আমাকে বলল, আমাদের একতলার কোণার ঘরটা সব সময় তালা মারা থাকে নারে?

-হ্যাঁ।

-বাবা ওঘরে একা একা দরজা দিয়ে বসে থাকে কেন?

-আমি কি জানি?

-বাবা যে পীর সাহেরের মুরিদ তিনি সেই ঘরে একদিন জিকির-টিকির করলেন খুব- মনে আছে?

-হুঁ।

-আমার মনে হয় বাবাও এ বাড়িতে মণিশ জ্যাঠাকে দেখতে পায়, শুধু আমরাই না।

মণিশ জ্যাঠাকে যে আমিও দেখতে শুরু করেছি সেটা স্বপন জানে। আমাদের বাড়ির পিছনের বুনো ঝোপঝাড়ে এক মেঘলা দিনের নীলচে সন্ধ্যায় প্রথম মণিশ জ্যাঠাকে দেখতে পাই আমি। যেন বুড়ো মানুষটা অনিচ্ছাকৃত আমার সামনে পড়ে গেছেন-এমনই একটা ভাব, বিব্রত একটা শারীরিক ভঙ্গি করে ঝোপের আড়ালে চলে গেলেন। আমি ভয়ে জমে গিয়েছিলাম। স্বপনকে ঘটনাটা বলতেই স্বপন বলল, জ্যাঠাকে ভয় পাস কেন, উনি কোন ক্ষতি করবেন না। আমি তো উনার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি!

-তোমার মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে! একটা মৃত মানুষের সঙ্গে কথা বলবে?

-উনারকে জিজ্ঞেস করবো, বাবা তাকে খুন করে একতলার কোণার ঘরের মেঝেতে পুতে রাখার সময় আর কে কে সেখানে ছিল! আমার মা কি এসব ঘটনা জানতো? এ ঘটনার দ্বিতীয় সাক্ষি কে?

-বাবা মণিশ জ্যাঠাকে ঘরের মধ্যে খুন করে পুঁতে রেখেছে!

-হ্যাঁ, এই জন্যই মণিশ জ্যাঠা এ বাড়ির মায়া ছাড়তে পারছেন না।

-তোমাকে এসব কে বলল?

-আমি শুনেছি।

-কার কাছে?

-বাবা একতলার ঘরে দরজা বন্ধ করে কার সঙ্গে যেন কথা বলছিল। আমি কান পেতে শুনলাম…

-কার সাথে কথা বলছিল?

-মণিশ জ্যাঠার সাথে…

-তোমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে…

-বাবা গালাগালি করছিল…

-আমি বিশ্বাস করি না…

-বাবা দাঁতে দাঁত চেপে বলছিল, তোকে আবার পুঁতে রাখবো…কেন এই ঘর থেকে বের হলি… কি চাস তুই…

স্বপন আত্মহত্যা করল যেদিন সেদিন বাবা একটুও চোখের পানি ফেলল না। কিন্তু সেদিন থেকেই একদম বুড়ো হয়ে গেলো! সব কিছু থেকে নিজেকে একদম গুটিয়ে নিলেন। কারোর সঙ্গে প্রয়োজন ছাড়া কথা বলাই বন্ধ করে দিলো। স্বপন যে কিছু একটা করতে যাচ্ছে বুঝতে পারছিলাম। ওর চোখ দুটো অস্থিরভাবে সব সময় ঘুরতে দেখতাম। ওর চাউনির মধ্যে একটা বুনো-পাগলাটে দৃষ্টি এসে গিয়েছিল। কিন্তু কখনো আত্মহত্যা করতে পারে ভাবিনি। স্বপন এভাবে চলে যাবার পর আমার জীবনে বড় একটা পরিবর্তন আসে। আমি একদম নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ি। স্বপন আমার ভাই নয়, যেন বন্ধু ছিল। ওর এই অস্বাভাবিক মৃত্যু, এর সঙ্গে আমাদের পারিবারিক অতীতের একটা যোগসূত্র আছে- যা শুধু আমিই জানি- এসব আমাকে অন্যরকম এক বাস্তবতায় নিয়ে ফেলে। মণিশ জ্যাঠাকে সেদিন থেকে আমিও একদম ভয় পাই না। তার খড়মের শব্দ অনেক নির্ঘুম রাতে শুনতে শুনতে রাত ভোর করে দেই। বাড়ির পিছনের ঝোপছঝারে আজো মণিশ জ্যাঠার বিব্রত চাউনি, মিলিয়ে যাওয়া এখন আর কোন গা ছমছমে বিষয় নয়। বরং সিঁড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে প্রায় শুনি বাবা চেঁচাচ্ছেন, শুয়োরের বাচ্চা! একদম একশ হাত মাটির নিচে পুঁতে রাখবো! আর বের হতে পারবি না!...

বাবা একদিন মরে পরে রইলেন চেয়ার মধ্যে। যে কাঠের চেয়ারটায় রোজ বসে থাকতেন বারান্দা, একদিন দেখা গেলো মাথাটা হেলে আছে চেয়ারের কাধে, মুখ দিয়ে ফেনা গড়াচ্ছে…। খুব বড় আয়োজন করে বাবার কুলখানি করলেন বড় ভাই। আমাদের ডালডা আর তেলের কারখানাটা বড় ভাইই চালান। ভাবী আমাদের এখানে থাকতে চান না বলে উত্তরায় ফ্ল্যাট কিনে ভাই-ভাবী সেখানেই থাকেন। এই বাড়িতে এখন আমি একা। পুরো একটা বাড়িতে একা থাকতে আমার একটুও একা লাগে না। কেন লাগে না জানি না। স্বপন যে ঘরটাতে ফাঁস দিয়েছিল সেঘরটা তালা দেয়া থাকে। মাঝে মাঝে খুলে ভেতরে ঢুকি। চেষ্টা করি স্বপনের কোন অস্তিত্ব অনুভব করতে। আজ ২২ বছর স্বপন নেই! মণিশ জ্যাঠার যেমন বয়স আটকে আছে মহাকালের ফ্রেমে, স্বপনও সদ্য যৌবনের চেহারা নিয়ে এ্যালবামে আটকে আছে। কি অদ্ভূত, মণিশ জ্যাঠা এ বাড়ির মায়া আজো কাটাতে পারলেন না কিন্তু স্বপনকে কতদিন প্রত্যাশা করেছি শুধু একবার দেখবো…। কিন্তু স্বপন যে দূর কোন দেশের অধিবাসী। স্বপন চলে গিয়ে আর ফিরে আসেনি…।

এক ছুটিরদিন বিকেলে বড় ভাই এলেন আমার সঙ্গে দেখা করতে। ওর লাল ট্যাক্সিটা গেইটের বাইরে হর্ন দিচ্ছিল। কাজের লোকটা গেইট খুলে দিলো। আমি দোতালার বারান্দায় রেলিংয়ে ভর দিয়ে ওকে আসতে দেখলাম। বারান্দাতে দুজন বসলাম। ও আমার শরীর-স্বাস্থ্যের খবর নিলো। গেল মাসেই হাসপাতাল থেকে ফিরে এসেছি ও সেটা জানে। এটা-সেটা আবল-তাবল নিয়ে আমার কথা বললাম। চা খেলাম। তারপর দুজনেই হাই তুলতে লাগলাম। চলে যাবার আগে হঠাৎ মনে পড়ে গেছে এরকম একটা ভাব করে বড় ভাই বলল, বুঝলি, বাড়িটা একটা কোম্পানিকে দিয়ে দিলাম। ওরা এপার্টমেন্ট করবে এটাকে…।

-কোন বাড়িটা?

-এটাকে। ওদের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে আমরা দুটো করে ফ্ল্যাট পাবো আর…

-এই বাড়ি ভেঙ্গে ফেলবে?

-হ্যা, ভেঙ্গে একদম নতুন আধুনিক ফ্ল্যাটবাড়ি হবে!

-না…

-কি, না?

-এ বাড়ি ভাঙ্গা যাবে না…

-বুড়োদের মত কথা বলছিস দেখি…

-যেমন আছে তেমন থাকতে দাও।

-তুই বললেই হলো!...জানিস কত লাভ হবে আমাদের?

-পুরো বাড়িটাই খুড়ে ফেলবে ওরা?

-তোর কথা আমি কিছুই বুঝতে পারছি না!

আমার মাথার মধ্যে কেউ যেন খড়ম পায়ে অস্থির পায়চারী করছে। মাথার দু’পাশটা টিপে ধরলাম।

-তোর শরীর খারাপ লাগছে? ডাক্তার ডাকবো?

-না, আমি ঠিক আছি। তুমি যাও।

-তুই একটা ফ্ল্যাট পাবি। আর…

-আচ্ছা ঠিক আছে। তুমি যাও।

-আসল কথা বলতেই ভুলে গিয়েছিলাম…

-কিছু বলার লাগবে না। তুমি যা বলবে তাই হবে সে তো আমি জানিই।

-আরে তুই আমাকে দোষ দিচ্ছি নাকি? কি ভাবছিস, ঠকাচ্ছি তোকে? একটা ফ্ল্যাট পাবি আর নগদ…

-প্লিজ ভাইয়া তুমি যাও।

-ঠিক আছে যাচ্ছি, শোন, সামনের মাসে ওরা কাজে হাত দিবে। ততদিন তুই উত্তরায় আমার কাছে গিয়ে থাকবি। যদি যেতে না চাস, তাহলে কাছেই কোথাও বাসা ভাড়া করে দিবো। যতদিন ফ্ল্যাট না হচ্ছে ততদিন সেখানেই থাকবি…।

লোভীটা ভাবছে শুধু এইসব…। আমি জানি আমার কোন রকম আপত্তি আর টিকবে না। আমি আধপাগলা, নেশাটেশা করি…। সবাই ওর কথাই মানবে।

বড় ভাই চলে গেলো। বিকেল পড়ে আসছে। চারদিক ফের নিঃস্তব্ধ। বারান্দায় বসে বসে ভাবছি, এভাবে এই বাড়িতে এই হয়ত শেষবার…।

যে রাতে আমার ঘুম হয় না সেসব রাতে মণিশ জ্যাঠার খড়মের শব্দ ছাদে শোনা যায়। কিন্তু আজ কি হলো? মণিশ জ্যাঠার কোন সাড়াশব্দ নেই! বিছানায় শুয়ে শুয়ে পিঠ ব্যথা হয়ে গেলো। পায়ে সেন্ডেল গলিয়ে সিঁড়ি বেয়ে ছাদে উঠলাম। সাদা জোৎস্নায় পৃথিবী ভেসে যাচ্ছে। এখন আর ছাদ থেকে বুড়িগঙ্গা দেখা যায় না। কিন্তু ঐদিকের ছাদের রেলিংয়ে বিপদজনকভাবে মণিশ জ্যাঠা শুয়ে আকাশের দিকে চেয়ে আছেন। ওর পা নাচছে। বুড়ো আজ খুব খুশি।…

-সুষুপ্ত পাঠক


মন্তব্য

রানা এর ছবি

ঐতিহ্য আঁকড়ে ধরে রাখতে গেলে এই শহরে জীবিতরাও ভুতে পরিণত হয়, হ্যামলেটের পিতার প্রেতের মতো শুধু গজরাতে থাকে- আর রাজ্য চলে যায় প্লট-ফ্ল্যাট বিক্রতাদের হাতে।

সচলে আপনাকে দেখে ভালো লাগলো, পাঠক ভাই।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ রানা। আপনার কাছে ভাল লাগছে মানে অনেক কিছু!

-সুষুপ্ত পাঠক

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

বাহ, এবার জাগ্রত লেখক হয়ে উঠুন! ভাল লাগল। চলুক

কিন্তু, শেষে মণিশ বুড়ো এত অল্পে খুশি হয়ে গেল? নট ফেয়ার!

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ সাক্ষী সত্যানন্দ।

কিন্তু, শেষে মণিশ বুড়ো এত অল্পে খুশি হয়ে গেল? নট ফেয়ার!

বাড়ি ভাঙ্গা মানে খোড়াখুড়ি, আর তাতে ৬৫ সালে মেরে পুতে রাখা মণিশ রায়ের হাড়-কঙ্কাল বেরিয়ে পড়বে। এ হচ্ছে ইতিহাসের সত্য হয়ে উঠা। মণিশ রায় তো খুশি হবেই। গোটা দেশটাই তো একটা বধ্যভূমি! এখনো কত মণিশ রায়রা ইতিহাসের স্বীকৃতির আশায় ভূত হয়ে বেঁচে আছে।।।

-সুষুপ্ত পাঠক

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

হ, ঠিকাছে। আমি একটা বুদ্ধির ঢেঁকি কিনা, তাই এটা মাথায় আসেনি। লইজ্জা লাগে

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

গল্প অনেক ভালো লেগেছে। কল্পনায় যেন বাড়িটা দেখতে পাচ্ছিলাম। চলুক

ফাহমিদুল হান্নান রূপক

শওকত খান এর ছবি

দূর্দান্ত লিখেছেন। ঝরঝরে লেখা। নিয়মিত লিখে যান। আরো অনেক কিছু যোগ হতে পারতো। মনে হচ্ছে দুম করে শেষ হয়ে গেলো।

সুষুপ্ত পাঠক এর ছবি

ধন্যবাদ শওকত হাসি

সুষুপ্ত পাঠক এর ছবি

ধন্যবাদ ফাহমিদুল হান্নান রূপক।

এক লহমা এর ছবি

চমৎকার গল্প। বিষয়, সংলাপ, গল্পের এগিয়ে চলা, পরিণতি - সব কিছু ভালো লেগেছে। ৫ তারায় ৫ তারা চলুক হাসি
পরের গল্পের জন্য সাগ্রহ অপেক্ষায় থাকলাম।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সুষুপ্ত পাঠক এর ছবি

ধন্যবাদ এক লহমা হাসি

সবজান্তা এর ছবি

গল্পটা চমৎকার লাগলো। আপনার গল্প বলার ভঙ্গিটা সুন্দর।

সুষুপ্ত পাঠক এর ছবি

সবজান্তা ধন্যবাদ হাসি

স্পর্শ এর ছবি

অসাধারণ! অনবদ্য... উত্তম জাঝা!


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

সুষুপ্ত পাঠক এর ছবি

স্পর্শ, ধন্যবাদ হাসি

নজমুল আলবাব এর ছবি

ঝরঝরে একটা গল্প পড়া হলো।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ নজমুল আলবাব

-সুষুপ্ত পাঠক

তানিম এহসান এর ছবি

গল্প ভাল লেগেছে। আরও লিখুন।

কিছু মনে করবেন-না, একটা জায়গা মন থেকে নিতে পারলাম না।

একবার মুক্তিযোদ্ধাদের একটা দল বাবাকে ধরে পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছিল। কয়েক বস্তা চাল-ডাল আর আনাজপাতির বিনিময়ে বাবাকে ছেড়ে দেয়।

এই দুইট লাইনের পর গল্প বহুদূর এগিয়েছে কিন্তু লাইনদুটো থেকে বের হতে পারিনি।

বিষয়টা এমন নয় যে, আমি জানি এরকম কোনদিন-ও হয়নি কিংবা একটি-ও ঘটনা ঘটেনি; গল্পকারের নিজস্ব স্বাধীনতা আছে ভাবনা প্রসারের। আমাদের নিজেদের এলাকায় মুক্তিযুদ্ধের দুইবছর পর থেকে এমন ঘটেছে যে কিছু মানুষ বখরা নিয়েছে- নেয়, কেউ না কেউ থাকেই নেয়, নিজের ভেতরের শুভবুদ্ধিটাকে আর ধরে রাখতে পারে না।

কিন্তু, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন কিংবা তার একদম পরপর সময়ে এমন ঘটনার কথা আমি এখন-ও শুনিনি। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে নিজের বাবা-চাচা কিংবা ভাইকে রাজাকারির জন্য মেরে ফেলার ঘটনা আছে প্রচুর; যতগুলো ছেড়ে দেবার ঘটনা পড়েছি, শুনেছি কিংবা জেনেছি তার বেশিরভাগ-ই মানবতার কারণে, কিছু ক্ষেত্রে দ্বিতীয় বার সুযোগ দেয়া হয়েছে শুধরে নেবার জন্য, কোন কোন ক্ষেত্রে ভুল তথ্যের কারণে কিন্তু বখরা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে কাউকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে এই বিষয়টা আসলেই নিতে পারছি না, পারবো না। দ্বিতীয় সুযোগ দেয়ায় কৃতজ্ঞতাবশত তরকারী দিয়ে আসতেই পারে কেউ একজন যেটা এই বাবার বেলায় ঘটবে না। রাজাকারের ক্যাম্প থেকে বখরা নিয়ে ছেড়ে দেয়া স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ছিল। আশা করবো আপনি বিষয়টি নিয়ে ভাববেন।

লিখতে থাকুন, গল্পের নামটা-ও দুর্দান্ত লেগেছে আমার কাছে।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

তানিম এহসান, চমৎকার মন্তব্যটি করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

-সুষুপ্ত পাঠক

অতিথি লেখক এর ছবি

সত্য ঘটনার ছায়া অবলম্বন নয়, গল্পের প্রায় পুরোটাই সত্য বলে মনে হচ্ছে।

রিপন

অতিথি লেখক এর ছবি

ইতিহাস নিয়ে গল্প লিখতে হলে সব সময় মাথায় রাখতে হয় যা লিখছি তা যেন ঐতিহাসিক ভিত্তি থাকে। কারণ কোন একটা ঐতিহাসিক ঘটনা যেখানে উল্লেখ করা হচ্ছে। ধন্যবাদ রিপন।

-সুষুপ্ত পাঠক

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

আপনার লেখার হাত খুব ভালো! খুব তড়তড়িয়ে পড়ে ফেলা যায়!

দুহাত খুলে লিখুন!

গল্পে ৫ তারা!

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনাকেও ধন্যবাদ দুষ্ট বালিকা।

-সুষুপ্ত পাঠক

রানা মেহের এর ছবি

খুব ভালো গল্প। পুরো গল্পের মধ্যে মণিশ রায়ের অতৃপ্তি ছড়িয়ে আছে।

আমি অবশ্য গল্পের নাম দেখে স্যাটায়ার ভেবেছিলাম।

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

অতিথি লেখক এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ জানাই রানা মেহের।

-সুষুপ্ত পাঠক

অতিথি লেখক এর ছবি

অনবদ্য গল্প! মনীশ রায়ের খুশি হওয়াটা অনিবার্য ছিল। আরও লিখুন, বেশি বিরতি দেবেন না যেন হাসি

দেবদ্যুতি

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ দেবদ্যুত

-সুষুপ্ত পাঠক

অতিথি লেখক এর ছবি

নামের বানানটা এমনে লিখলেন? মন খারাপ মন খারাপ

দেবদ্যুতি

অতিথি লেখক এর ছবি

দুঃখিত, এটা টাইপো! নামটা হবে দেবদ্যুতি। হাসি

-সুষুপ্ত পাঠক

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

হয়নি হয়নি... ফেল! ছহীহ বানান হলঃ দেবদুত্যি চাল্লু

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

এক লহমা এর ছবি

এইটাই বাকি ছিল - সাক্ষীর এসে পড়া। হাসি

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

দেঁতো হাসি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

এ নামে (দেবদুত্যি) আমার অভ্যেস আছে কিন্তু, তেমন একটা ধাক্কা লাগল না কো শয়তানী হাসি

দেবদ্যুতি

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

ধাক্কাধাক্কি আবার কিডা কোইরেছে গো মামুর বুটা?

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

সুন্দর ঝরঝরে একটা গল্প লিখেছেন। আরো গল্পের আশায় থাকলাম। তবে তানিম ভাইয়ের সাথে একমত পোষণ করছি।

____________________________

সো এর ছবি

দারুন গল্প।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

দারুণ গল্প। তাহলে আপনি শুধু সুষুপ্ত পাঠকই নন, দারুণ লেখকও। লেখা চলুক।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

সুবোধ অবোধ এর ছবি

বাহ্‌!! দারুণ গল্প। চলুক

গৌতম হালদার এর ছবি

এক নিঃশ্বাসে শেষ করার মতো সরেষ কাহিনী, আর অনবদ্য বর্ণনা।
এমন আরো লেখার জন্য সাগ্রহ অপেক্ষায় থাকলাম।

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

খুব ভালো লাগলো -- মনে হলো শীর্ষেন্দুর লেখা কোনো গল্প পড়ছি!

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।