টিনের ক্যানভাস

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: সোম, ০১/০২/২০১৬ - ৭:৪৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

টিনের ক্যানভাসের ওপর এনামেল পেইন্টের আঁচড়। ছবি হিসেবে নিলামে ওঠেনা, হয়তো ঘরেও নয়। নেহায়েত রাস্তার জিনিস তাই পথে পথেই এর প্রদর্শনী। তাতে কিন্তু এই ছবি গুলোর বিশেষ মানহানী ঘটেনি কখনও। রিকশার ছবি যে আবারো আঁকানো শুরু হয়েছে সেটাই খবর। দেশের অন্য শহর বা জেলা গুলোর খবর বিশেষ জানিনা, তবে রাজশাহীতে বছর কয়েক যাবত রিকশা অলঙ্করনের একটা জোয়ার দেখা যাচ্ছে। ব্লগে বা পত্রিকায় রিকশার পুরনো দিনের কথাই আলোচিত হতে দেখেছি। অব্যর্থভাবে প্রায় লেখককেই বলতে শুনি রিকশায় ছবি আঁকানো এখন উঠেই গেছে। রাজশাহীতে রিকশায় রিকশায় এখন দেখা যাচ্ছে নতুন নতুন ছবি। এতসব বিচিত্র বিষয় এসব ছবিতে উঠে আসছে যে বিস্মিতই হতে হয়। বিস্ময়টা এই জন্য যে সত্যিই এক সময় রিকশার অলঙ্করন একরম থেমেই গিয়েছিল। এই রাজশাহীতেই আমাদেরও মনে হয়েছিল রিকশার ছবি হয়তো আর কখনওই আঁকানো হবেনা। কিন্তু ঐতিহ্যের ফিনিক্স পাখিটা যে অনুকুল হাওয়ায় ছাই উড়িয়ে আবার ডানা মেলে দেয় এই কথাটাই আবার মনে করিয়ে দিল রাজশাহীর রিকশার ছবি। হতে পারে ব্যাপারটা শুধু রাজশাহীতেই নয় দেশের অন্যত্রও আরম্ভ হয়ে গেছে কিন্তু সবাই ব্যাপারটা খেয়াল করে উঠতে পারেননি এখনও।

রিকশার ছবি সম্পর্কে ঐতিহ্যের কথাটা আসেই। বিশেষ কুলীন গোত্রের না হলেও এই বিশেষ ধারার শিল্পটির বেড়ে ওঠার, প্রবাহিত হবার একটা ইতিহাস আছেই। অনাদরে কেউ হয়তো সাল-তারিখ লিখে রাখেননি তবুও। রিকশা অলঙ্করনের বিষয়টি বেশ কয়েক দশক ধরেই চলেছে। এই চলার পথে সময়ের সাথে সাথে, জনমানসের রুচী আর চিন্তা-চেতনার পরিবর্তনের সাথেই তাল রেখে এর বিষয়, আত্মপ্রকাশের ধরনেও ভিন্নতা এসেছে। একটা সময় বিলুপ্তির প্রান্তসীমায় গিয়েও টিনের ক্যানভাসে আবার এনামেল পেইন্টের আঁচড় পড়তে শুরু করেছে। রিকশার ছবিকে অনেকেই ফোক আর্টের গোত্রে ফেলেছেন। একটা সময় ছিল যখন গ্রামীন সংস্কৃতিতেই কেবল ফোক আর্টের নিদর্শন খোঁজা হতো। এখন শহুরে জীবনের নানান পর্বে ফোকলোর তার বিষয় খুঁজে পাচ্ছে। জনমানসের সাথে রিকশার ছবির যোগ না থাকলে এই বিশেষ শিল্পধারাটি হয়তো আরো আগেই লোপ পেয়ে যেত।
রিকশার সবচেয়ে প্রাচীন উল্লেখ আমরা পাচ্ছি ১৮৮৭ সালে জাপানে। সে ছিল মানুষে টানা রিকশা। অনেকে বলেন জাপানে রিকশার উদ্ভাবন হয় ১৮৭০ সালের দিকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের জ্বালানী সংকটের সময় এই রিকশাই জাপানে আরো জনপ্রিয় পরিবহনে পরিনত হয়। ১৯৩০ থেকে ৪০ এর দশকের প্রথমার্ধে ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর ও অন্যান্য দক্ষিন-এশীয় দেশেও রিকশার ব্যবহার ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। শোনা যায় ১৯১৯ সালের দিকে মায়ানমার থেকে চট্টগ্রামে প্রথম রিকশার প্রচলন হয়। অবাক করার মত বিষয় হলেও সত্য যে ঢাকায় রিকশার প্রচলন চট্টগ্রাম থেকে হয়নি। ঢাকার রিকশা এসেছিল কোলকাতা থেকে। কোলকাতায় ১৯৩০ সাল থেকেই রিকশার প্রচলন ছিল। নারায়নগঞ্জ ও নেত্রকোনায় পাটের রপ্তানীকারকরা প্রথম নিজেদের জন্য কোলকাতা থেকে কয়েকটা রিকশা কিনে এনে ব্যববহার শুরু করেন। সালটা ছিল ১৯৩৮, আর সে সময় স্থানীয়রা কিছুটা বিস্ময় নিয়েই দেখতো এই অদ্ভুত জন পরিবহনটিকে। সাধারন মানুষের পরিবহন বলতে সে সময় ছিল পালকী, গরু বা ঘোড়ার গাড়ি আর সনাতন নদীমাতৃক দেশের প্রধান অবলম্বন নৌকা। কিন্তু রিকশার প্রচলনই ক্রমে দেশের সর্বত্র প্রসার পেতে শুরু করে।
কবে প্রথম রিকশাকে কারুকাজ দিয়ে সাজানো শুরু হলো তার সঠিক হদিস মেলেনা। তবু অনেকেই আন্দাজ করেন সালটা সম্ভবত ১৯৫০ যখন থেকে রিকশাকে নানা ভাবে সাজানো শুরু হয়। এই সাজানোর একটি মূল বিষয়ই ছিল রিকশার পেছনের টিন শিটের উপর এনামেল পেইন্টে আঁকা নানা রকম ছবি। রিকশার শিল্প নিয়ে গবেষনা করতে গিয়ে জোয়ানা কার্কপ্যাট্রিক বলেন বাংলাদেশে ঢাকা ও রাজশাহীতেই রিকশা আর্টের প্রচলন বেশি ছিল। কুমিল্লা কিংবা চট্টগ্রাম শহরের রিকশায় প্রায় কোন ছবিই থাকতোনা। এই জেলা গুলোর রক্ষনশীল পরিবেশের দরুনই মনে হয় এখানে রিক্সার ছবি প্রসার লাভ করতে পারেনি। রিকশা আর্টের প্রসঙ্গ উঠলেই তাই ঢাকা আর রাজশাহীর প্রসঙ্গ অবধারিত ভাবে এসেই যায়।
ষাটের দশক থেকেই ঢাকার রিকশায় সিনেমার তারকাদের হাতে আঁকা প্রতিকৃতি জনপ্রিয় হতে শুরু করে, সেই সঙ্গে ছিল ধর্মীয় মোটিফও যেমন মিনার সহ মসজিদ বা নামাজরত শিশু। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর পরই দেশাত্মবোধক মোটিফ রিকশার ছবিতে প্রাধান্য পেতে শুরু করে। বঙ্গবন্ধূ শেখ মুজিবর রহমানের ছবির পাশাপাশি চিত্রিত হতে দেখা যেত পাক আর্মিদের নৃশংসতার বিভিন্ন ছবি। কোন কোন রিকশার ছবিতে পাক আর্মির পাশবিকতার পাশেই চিত্রিত হয়েছে বন্দি পাক আর্মিদের মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে দণ্ড প্রাপ্তির ছবিও।যুদ্ধের বিভিন্ন দৃশ্য যেমন ট্যাংক বহর ও বিমানও রিকশার ছবিতে এসেছে। গ্রাম বাংলার শ্যামল-সবুজ ছবির সাথেই আঁকা হতো বহুতল ভবন শোভিত শহরের ছবি। ফুল ও পশু-পাখির ছবিও জনপ্রিয় ছিল যথেষ্ট।শোনা যায় রাজশাহীর রিকশার ছবি গুলোতে একসময় জিরাফ, ক্যাঙ্গারুর মত অপরিচিত প্রাণীর ছবিও দেখা যেত। ১৯৭৭-৭৮ সালের দিকে রিকশার ছবিতে সিনেমার দৃশ্য কিংবা সিনেমার নায়ক-নায়িকাদের চিত্রায়িত করার বিপক্ষে আওয়াজ শোনা যায়। ধর্মীয় মূল্যবোধের ওজুহাতে মানুষ আঁকানোকে সে সময় নিরুৎসাহিত করা হতো। এ সময় পশু-পাখি, প্রাকৃতিক সুন্দর দৃশ্য বা গ্রামীন বাংলার মোটিফই বেশি ব্যবহৃত হতে শুরু করে। রিকশার ছবিতে তবুও চলচিত্রের নায়ক-নায়িকাদের ছবি প্রধান স্থান অধিকার করে ছিল। ধর্মীয় মূল্যবোধের দোহায় বা অন্য ওজর-আপত্তি থাকা সত্ত্বেও সিনেমার নায়ক-নায়িকা ও সিনেমার দৃশ্যের অবাধ বিচরন রিকশার ক্যানভাস থেকে মুছে ফেলা যায়নি।
এ ধারা সম্ভবত ৯০ এর দশক অবধি চলেছে। এক সময়ের মানুষের প্রধান বিনোদনের মাধ্যমই ছিল চলচিত্র। তাই চলচিত্রের দৃশ্য আর নায়ক নায়িকারাই রিকশার ছবিতে আসতে থাকলেন একের পর এক। ঝলমলে রঙের বাহারে রূপালী পর্দার জগত সাধারন মানুষকে হাতছানি দিত রিকশার ছবিতে। সে সময় পরিবারের সমস্ত সদস্যদের নিয়েই সিনেমা হলে যেত সবাই। ছেলে বুড়ো সবারই অবসর বিনোদনের একটা বড় অংশই ছিল চলচিত্র। চলচিত্র সেই সুবাদে রিকশার টিন ক্যানভাস একচেটিয়া ভাবে দখল করে নিয়েছিল অনেক দিন। অন্য ছবিও ছিল তবে সিনেমার দৃশ্যই ছিল রিকশার ছবির প্রাণ। তারপরই হয়তো ৯০এর দশকের শেষ পর্বে কিংবা পরের দশকের আরম্ভের সময় থেকেই রিকশার ছবিতে ভারতীয় চলচিত্রের নায়ক-নায়িকাদের দেখা যেতে শুরু করে। বিশেষ করে রাজশাহীর রিকশার ক্যানভাস ভারতীয় চলচিত্রের শাহরুখ খান, সালমান খান, সঞ্জয় দত্ত, কাজল, কারিনা, ক্যাট্রিনা, রানী মুখার্জী, বিপাশারা দখল করে নেয়। তুলনায় বাংলাদেশের চলচিত্রের তারকাদের ছবি প্রায় দুর্লভই হয়ে ওঠে। দেশের চলচিত্রের শিল্পমানের অবনতি সেই সাথে অতিবানিজ্যিকরনের প্রকোপে বিষিয়ে ওঠে চলচিত্র শিল্পটিই। পরিবারের সাথে উপভোগ করার মত সিনেমা ধীরে ধীরে অপ্রতুল হয়ে উঠলে দর্শক মন থেকেও বাংলাদেশের তখনকার সিনেমা আকর্ষন হারাতে শুরু করে। ভিসিআর আর সিডি-ডিভিডির যুগে এসে সে জায়গাটা দখল করে নেয় ভারতীয় চলচিত্র আর বাংলাদেশের টিভি নাটক। টিভি নাটকের চেয়ে অবশ্য ভারতীয় চলচিত্রের নায়ক-নায়িকারাই রিক্সার ছবির বিষয় হয়ে ওঠে বহুল হারে।
এই সময়েই রিকশা অলঙ্করন শিল্পটিই বিলুপ্তির মুখে এসে দাঁড়িয়েছিল। যান্ত্রিক যানবাহনের দৌরাত্ম্যে প্যাডেল মারা রিকশা পিছিয়ে পড়ছিল। সেই সাথে যুক্ত হয় রিচার্জেবল ব্যাটারী চালিত জনপরিবহন গুলোও তাতেই রিকশার ব্যবসা আরো সংকটের মুখে পড়ে। এই সময় রিকশা মালিকরাও পয়সা খরচ করে রিকশায় ছবি আঁকানোতে উৎসাহী ছিলেননা। নতুন রিকশা তৈরীও হচ্ছিল কম। এই সময়ে নতুন রিকশার গায়ের এখানে সেখানে নিস্প্রাণ দায়সারা গোছের কিছু ফুলের ছবির নক্সা ছাড়া আর কিছুই দেখা যেতনা। পেছনের টিনশিটটা আয়নার মত ঝক ঝক করতো কিন্তু তাতে রঙের পোঁচ পড়তোনা, নিদেন পক্ষে কেউ কেউ রিকশার স্বত্বাধীকারীর নাম লিখে রাখতেন, ব্যাস ওই টুকুই। অবস্থার পরিবর্তন শুরু হয় যখন রিকশাতে বৈদ্যুতিক ব্যাটারী চালিত মোটর লাগানো শুরু হলো। রিকশার কাঠামোতেও পরিবর্তন এসে গেল। কাঠ বাঁশের জায়গায় ধাতব কাঠামো ব্যবহার শুরু হলো। আগে রিক্সার পেছন দিকটা অনেকটা গোলাকার ছিল ফলে ছবির নিচের অংশটা প্রায়ই রিকশার তলার দিকে চলে যেত। নতুন কাঠামোয় রিকশার পেছনটা সমতল আয়তাকার একটা টিনের ক্যানভাস হয়ে উঠলো। যে কোন ছবি আঁকার জন্য যা ছিল আদর্শ জায়গা। রিকশার ব্যবসাও ফিরে আসলো রিকশায় যান্ত্রিক গতি সংযোজনের সাথে সাথেই। সেই সাথেই ফিরে আসতে শুরু করে রিকশার ছবি। ২০১৪-১৫র দিক থেকেই মনে হয় ব্যপারটা শুরু হলো।
লক্ষ্যনীয় বিষয়টি হলো এই নতুনভাবে ছবি আঁকানো শুরু হওয়ার সময় আর ভারতীয় নায়ক-নায়িকারা রিকশার ছবিতে ফিরে এলেননা। এলেননা বাংলাদেশের চিত্রতারকারাও। হয়তো এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলার সময় আসেনি, হয়তো রিকশার ছবির বিবর্তন বিকাশের পর্ব গুলো নিয়ে আরো বিশ্লেষন আরো গবেষনার অবকাশ রয়ে গেছে। নতুন ধারাটি সেই পুরাতন ধারা থেকে একরকম বিচ্ছিন্ন হয়েই জন্ম নিয়েছে। হয়তো একারনেই চলচিত্রের নায়ক-নায়িকারা আর এই নতুন ধারার রিকশার ছবিতে ফিরে আসেনি। এর কারন হয়তো যারা ঠিক রিকশার ছবিই আঁকতেন তারা আর আঁকছিলেননা এবং রিকশার ছবি আঁকার পরম্পরাগত একটা যে ঐতিহ্য চলে আসছিল তাতে ছেদ পড়ে গিয়েছিল। রিকশা অলঙ্করনের শিল্পীরা নিজেরা আঁকতেন আবার শিষ্যদের শেখাতেন, এভাবে ঐতিহ্যটা একটা পূর্বসুরীর সাথে সম্পর্ক রেখে এগিয়ে যেত। যেখানে স্পষ্টতঃ শিল্পী কোন শিষ্য রেখে যাননি সেখানেও দেখা যেত আগের রিকশা শিল্পীর অনুসরনেই নতুন কোন শিল্পী আঁকতে শুরু করেছেন তাতেও প্রবাহটা অবিচ্ছিন্নভাবে এগিয়েছে। কিন্তু ব্যাটারী চালিত মোটর সংযোজিত ধাতব কাঠামোর নতুন রিকশার আগমনের আগে রিকশার ব্যবসায় যে মন্দা দেখা দেয় এবং সেই সময়ে রিকশা অলঙ্করনের কাজটা এমনভাবেই থেমে গিয়েছিল যে এতদিন যাবত রিকশা অলঙ্করনের যে ঐতিহ্যের প্রবাহটা চলমান ছিল তাই গিয়েছিল ছিঁড়ে। পুরনো শিল্পীরা ভেবেছিলেন শিল্পটার সত্যিকার অর্থেই মৃত্যু ঘটে গেছে এবং অন্যরাও আর এ শিল্পের বিষয়ে আশাবাদী ছিলেননা। ফলে নতুন করে রিকশা অলঙ্করনের কাজ যখন আবার শুরু হলো তখন আর সেই পুরনো শিল্পীরা ছিলেননা যেমন তেমনি তাদের ঐতিহ্যটা ধারন করে রেখেছে এমন কেউও বিশেষ অবশিষ্ট ছিলনা। আগের ঐতিহ্যের ধারা থেকে একরকম বিচ্ছিন্ন হয়েই যেন এই নতুন ধারার রিক্সা অলঙ্করনের কাজটা শুরু হলো। আর এই তফাৎটার জন্যই সম্ভবত রিক্সার ছবিতে আর নায়ক-নায়িকাদের দেখা গেলনা। অবশ্য এর মধ্যে জনরুচীর পরিবর্তন, দেশের মানুষের চিত্ত বিনোদনের মেনু থেকে দেশের সিনেমা শিল্পের খসে পড়া এসবও ধরতে হয়।

এই শূণ্যস্থানটা পূরণ করলেন যারা ট্রাকের কাঠামোতে অলঙ্করন করতেন তারা। ট্রাকের ছবি আঁকানোটা চলমানই ছিল। নতুন কাঠামোর রিকশা গুলোয় তাই এই শিল্পীরাই ছবি আঁকতে শুরু করেন। ট্রাকের গায়ে যেমন অলঙ্কার বহুল ডানা মেলে দেওয়া পাখির ছবি আর গ্রাম বাংলার কুড়ে ঘর গুচ্ছের ছবি দেখা যেত তাই প্রথম রিকশার ছবি গুলোর বিষয় হয়ে এলো। সেই সাথে বহুল পরিচিত দুই ধারে গাছের সারির মধ্যে লম্বা হয়ে কালো পিচের রাস্তার ছবিটির কথাও বলা যায়, এই ছবিটা প্রায় ট্রাকের পেছনেই দেখা যেত। ক্রমে অধিক সংখ্যায় এই নতুন রিকশা গুলো রাস্তায় নামতে থাকলে রিকশার ছবিতে কেবল ট্রাকের ছবির অনুকরনের স্থানে সৃজনশীলতা আসতে শুরু করে।
গাছ-গাছালিতে ঘেরা কয়েকটা কুড়ে ঘরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদী এই প্যাটার্নটা সৃজনশীলতার ছোঁয়ায় পরবর্তীতে আরো বিচিত্র হয়ে উঠেছে। নদীতে নৌকা এসেছে, একটা মেঠো পথ ও তাতে গরুরগাড়িরও সংযোজন হয়েছে। নিঃসন্দেহে একই ছবি বারবার আঁকার বিরক্তিকে এড়াতেই গ্রামীন দৃশ্যের মোটিফটি প্রায় রিকশার ক্ষেত্রেই নতুন নতুন আঙ্গিকে উপস্থাপিত হয়েছে। তবে এই নতুন রিকশার অলঙ্করনের শুরুর দিকে ট্রাক অলঙ্করনের প্রভাব যে সক্রিয় ছিল তা অস্বীকার করা যাবেনা। ডানা মেলে দেওয়া ঈগল গোছের পাখির ছবিতেও এই প্রভাব ছিল। দুই সারি গাছের মাঝখানের সাদা দাগ টানা কালো পিচের রাস্তার ছবি ট্রাকের পেছনেই বেশি দেখা যেত কিন্তু রিকশার ছবি হিসেবে ব্যবহৃত হতে হতে এই পিচের রাস্তাটাকে নীল পানির নদীতে রূপান্তরিত হতে দেখি যা দূর দিগন্তে মেঘে ঢাকা পর্বতমালায় গিয়ে মিলেছে। কখনও আবার সেই নদীতে কয়েকটা নৌকাও ভাসিয়ে দিয়েছেন শিল্পী। তবে বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়েছে গ্রাম দৃশ্যের মোটিফটিই। ছাঁচে ঢালা একটা গ্রামের দৃশ্যের অনুকরন দিয়ে শুরু হলেও পরে অসংখ্য ছবিতে এত বৈচিত্র্যময় ভাবে তা এসেছে তা রীতিমত প্রশংসার যোগ্য।
ঘর সাজানোর জন্য ছাপা রঙ্গীন পোষ্টারও নতুন রিকশার ছবির উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। দুই সারি গাছের মাঝে দিগন্তে মিলিয়ে যাওয়া কালো রাস্তার ছবিটিও ট্রাকের গায়ে এরকম পোষ্টারের ছবির অনুকরনেই আঁকা হতো। ময়ুর বা ঝলমলে রঙের কাকাতুয়া বা সবুজ জোড়া টিয়ার ছবিও ঘর সাজানোর পোষ্টার থেকেই এসেছে। ভিনদেশী সুন্দর কটেজের দৃশ্যের পোষ্টার থেকে অনুকরন করা ছবি অনেকাংশে গ্রামবাংলার কুড়ে ঘরের ছবির সাথে মিলেমিশে গেছে রিকশার অলঙ্করনে এসে। মক্কার কাবা শরীফ বা মসজিদে নববীর ছবির উৎসও অনেকাংশেই ছাপানো পোষ্টার বা ক্যালেণ্ডার। রিকশার ছবিতে প্রায়ই এই দুই ধর্মীয় স্থাপনা বিশাল লাল অথবা কচিকলাপাতা রঙের সবুজ পদ্মের উপরে রেখে আঁকা হয়েছে। বিদেশী দামী স্পোর্টসকারের ছবিও পোষ্টারেই জনপ্রিয় ছিল এবং এখনও আছে, বিশেষ করে তরুণ সমাজের কাছে। রিকশার ছবিতেও তা এসেছে। তাজমহলের ছবি, মোনাজাতের ভঙ্গীতে টুপি পরা শিশুর ছবিও ক্যালেণ্ডার বা পোষ্টারের জনপ্রিয় মোটিফ। রিকশার ছবিতে ছাপানো পোষ্টারের ছবির প্রভাব নতুন নয়। একসময়ের মহিলার চেহারা বিশিষ্ট চতুস্পদ বোররাকের ছবিও সে সময়ের ক্যালেণ্ডার ও পোষ্টার থেকেই এসেছিল। এই পোষ্টার গুলো প্রায় রেষ্টুরেন্টেই শোভা পেত। আবার বাংলাদেশের চলচিত্রের নায়ক-নায়িকার ছবিও মূলতঃ সিনেমার পোষ্টার থেকেই রিকশায় এসেছিল। সিনেমার পোষ্টার হোক কিংবা ঘর সাজানোর পোষ্টার সাধারন মানুষের আকাঙ্ক্ষার সাথে এদের যোগ যথেষ্টই পুরনো। সিনেমার ঝলমলে রঙ্গীন ছাপা পোষ্টারের দিকে তন্ময় হয়ে তাকিয়ে থাকা মানুষ সে যুগের মত এ যুগেও দুর্লভ নয়। রিকশার ছবি নিয়ে গবেষনা করতে গিয়ে জোয়ানা কার্কপ্যাট্রিকও বলেছিলেন সাধারন মানুষের মনে নারী, সম্পদশালী জীবন, উন্নত অর্থনৈতিক অবস্থার আকাঙ্ক্ষাই তাদের এই ছবি গুলোর প্রতি আবেদন সৃষ্টি করেছে। পোষ্টারের ছবিও সেই একই দ্যোতনায়ই বিশিষ্ট। রিকশার ছবির সাথেও সাধারন মানুষের মনের যোগটা তাই অস্বীকার করা যায়না।

ট্রাকের অলঙ্করনের অনুকরন হোক বা পোষ্টারের ছবি থেকে অনুসৃত, রিকশার ছবি এখন নিজের পথ নিজেই তৈরী করে নিচ্ছে। গ্রামদৃশ্যের মোটিফটিই বেশিরভাগ রিকশায় ছবি হিসেবে এসেছে এবং এখনও আসছে। প্রথম দিকের একটা নির্দিষ্ট ছাঁচ থেকেই যেন এই ছবি গুলো আঁকা হচ্ছিল। দুটো কুড়ে ঘর আর কিছু গাছপালার আভাস আর পাশেই একটা নদী বা জলাশয়। এই ছবি গুলো প্রথমটা একই ধরনের হতো কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই এই মোটিফের আঙ্গিকে বৈচিত্র্য আসতে শুরু করে। কখনও নদীর দুপাশে কুড়ে ঘর, কখনও ভিন্ন ধরনের রঙে নদীকে বাদ দিয়ে গাছ-গাছালির ভিড়ে কয়েকটা কুড়ে ঘর এই ভাবে সাজানোর ফলে ছবি গুলোকে আর ছাঁচে ঢালা অনুকৃতি বলার কোন উপায় রইলোনা। আগে যেমন একই গ্রামদৃশ্যের ছবি অনেক গুলো রিকশায় দেখা যেত এখন এমন ছবিও বেশি দেখা যাচ্ছে যা একটি রিকশা ছাড়া আর দ্বিতীয় কোন রিক্সায় ব্যবহার করা হয়নি। কখনও আবার শিল্পীরা নিজেদের মত করে গ্রামদৃশ্যের ছবি আঁকতে গিয়ে কুড়েঘরের পেছনের কলাগাছ, বা উঠোনের পাশের কুয়ো থেকে শুরু করে ইতস্তত চরে বেড়ানো হাস মুরগিও বাদ দেননি।
প্রথমটা এই গ্রামদৃশ্যের ছবি ছাড়া রিকশায় আর কিছু আঁকানো হচ্ছিলনা দেখে মনে হতো বাংলাদেশে যেমন হিজাবী ফ্যাশনের মত ধর্মের দিকে ঝুঁকে পড়বার একটা ঝোঁক দেখা যাচ্ছে তার ফলেই হয়তো নায়ক-নায়িকা বা মানুষের ছবি রিক্সায় আসছেনা। ১৯৭৭-৭৮ সালের মতই হয়তো জীবন্ত প্রাণীর ছবি আঁকার উপর যে ধর্মীয় নিষেধাজ্ঞা আছে তাই মেনে চলা হচ্ছে। কিন্তু সে ধারনা ভুল প্রমান করে রিকশার ছবিতে ক্রমেই নানান জীব-জন্তু আর পাখ-পাখালির ছবি আঁকা হতে থাকলো। বাঘ, সিংহের পাশাপাশি জিরাফ, পেঙ্গুইন এসেছে তবে বাঘের ছবি তুলনায় বেশি। পাখির ছবি তুলনায় এসেছে আরো বেশি পরিমানে। টিয়া, কাকাতুয়া, ময়ুর, ঈগল ছাড়াও আলঙ্কারিক এমন কিছু পাখির ছবির মধ্যে শিল্পীর সৃজনশীলতা উচ্ছসিত হয়ে উঠেছে যার অস্তিত্ব হয়তো বাস্তবে খুঁজে পাওয়া ভার। ঈগল তার নখরে ইঁদুর ধরে ডানা মেলে উড়েছে এমন ছবিরই আরেকটা সংস্করনে দেখা যাচ্ছে ঠোঁটে একটা মাছ আর নখরে চেপে ধরা আরেকটা মাছ নিয়ে ঈগল পাখি উড়ছে। একটা ছবিতে পাচ্ছি একটা ময়ুর ঠোঁটে মাছ ধরে রেখেছে। হরিনের ওপর ঝাপিয়ে পড়তে উদ্যত বাঘের ছবিও বেশ কিছু চোখে পড়ে।
ধর্মীয় কোন নিষেধাজ্ঞা যে অন্তত রিকশার ছবিকে বাধাগ্রস্ত করেছে এমনটা মনে হচ্ছেনা এই বিপুল পরিমান পশু পাখির ছবি দেখে। তাছাড়া মানুষের ছবি যে একেবারেই নেই তাও বলা যাবেনা। সিনেমা দৃশ্যের বিচিত্র ভঙ্গীতে নায়ক-নায়িকার ছবি না থাকলেও গ্রামদৃশ্যে লাঙ্গল ঠেলা কৃষক, গরুর গাড়ির চালক, পালকি বেহারা যথেষ্টই দেখা যাচ্ছে। প্রাকৃতিক পরিবেশে একতারা হাতে বাউল আর তার সামনে বেশ কয়েকজন ভক্ত এই ছবি কোন কালে রিকশায় এর আগে দেখেছি বলে মনে পড়েনা। সন্তান কোলে মায়ের ছবিটিও অনন্য। পেছনে দোতলা বাড়ি রেখে হাঁটু গেড়ে সানগ্লাস চোখে এক তরুনের বড় করে আঁকা ছবিটিও উল্লেখ করবার মত। এসব দেখে মনে হয় অন্তত রিক্সার ছবি এখন অবধি হিজাবী ফ্যাশনের প্রভাবে পড়েনি।
ফুলের মোটিফ রিকশার কাঠামোয় এখানে সেখানে বহুল পরিমানে ব্যবহৃত হতে দেখা গেলেও পেছনের টিন ক্যানভাসের মূল ছবি হিসেবে কমই এসেছে। বাস, ট্রেন, জাহাজ, হেলিকপ্টার, নৌকা, ট্রাক, স্পোর্টসকারও ছবির বিষয় হিসেবে অনেক গুলো রিক্সাতেই দেখা যাচ্ছে। সেই সাথেই উল্লেখ করতে হয় লণ্ডনের টাওয়ার ব্রিজ বা গোল্ডেন গেট ব্রিজের ছবি। আমাদের যমুনা ব্রিজের ছবিও রাজশাহীর রিকশায় কম নেই। তাজমহলের ছবি বা সাধারন মসজিদের ছবির সাথেই পাচ্ছি জাতীয় স্মৃতি সৌধের ছবিও। রাজশাহীর আমচত্বরের বিশাল তিন আমের ছবি বা রাজশাহী রেল ষ্টেশনের ছবিও যখন আঁকা হচ্ছে তখন বোঝাই যায় স্থানীয় স্থাপনার প্রতি একরকম গর্ববোধও মানুষের মধ্যে জাগছে।
রিকশার ছবিকে বানিজ্যিক ধারার সাথে ফোকআর্টের একধরনের মিশেল ভেবে নিলে আমরা দেখতে পাবো যুগের বিভিন্ন পর্বে এই শিল্পে গনমানুষের মনই প্রতিফলিত হয়েছে। লোকসাহিত্যবিদরা বিষয়টা নিয়ে গবেষনা করলে নিশ্চয়ই আরো চমকপ্রদ তথ্য আমাদের দিতে পারবেন। তবে আমরাও সাদা চোখে রিকশার আর্টের মধ্যে গনমানুষের হৃদয়ের স্পন্দন টের পাই। রিকশার ছবির ধরনের মধ্যেই সেই সময়ের মানুষের মনের ছবি আঁকা। স্বাধীনতা অর্জনের পর পরই যুদ্ধের নৃশংসতা, ভয়াবহতা যেমন রিকশার ছবিতে এসেছে তেমনি নতুন একটা জাতির সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের আশাবাদও স্পন্দিত হয়েছে সেই সময়ের ছবি গুলোতে। পাক হানাদার বাহিনীর অত্যাচারের দৃশ্য, মুক্তিবাহিনীর প্রতিরোধের দৃশ্য সেই সময়ের তরতাজা স্মৃতির তাড়নাকেই প্রতিফলিত করেছে। আবার বঙ্গবন্ধুর ছবি, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা বা আকাশচুম্বী দালান কোঠায় ভরা আধুনিক শহরের ছবি গুলোও জাতির আশাবাদকেই ধ্বনিত করে তুলেছিল রিকশার ছবিতে।

ব্যাটারী চালিত মোটর সংযোজন রিকশার ব্যবসার সাথে পুনরুজ্জীবিত করে তুললো রিকশার ছবিকেও। কিন্তু এর মধ্যেই লক্ষনীয় কিছু পরিবর্তন ঘটে গেছে জনমানুষের মনে। ভারতীয় বা বাংলাদেশের চলচিত্র আর বিষয় হয়ে ফিরে এলোনা রিকশার ছবিতে। বিনোদনের এই মাধ্যমটি আর গনমানুষের মনে রাজত্ব অটুট রাখতে পারেনি। তার জায়গায় এক ধরনের ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য ভিত্তিক বিচিত্র বিষয়ের আমদানী ঘটতে থাকলো রিকশার ছবিতে। গ্রামবাংলার দৃশ্যের মাধ্যমে মানুষ দেশীয় সুর টিকেই প্রাধান্য দিয়েছে অন্য সব কিছুর চেয়ে। দ্রুত সর্বগ্রাসী নগরায়নের প্রকোপে মানুষ গ্রামের শান্তিপূর্ণ ছবিটিকেই বার বার দেখতে চেয়েছে যেমন তেমনি জাতীয়তাবোধের প্রতীকও করে তুলেছে এই বিষয়টিকে। বিনোদনের তালিকায় ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেল আর ডিসকভারী চ্যানেলের মত তথ্যচিত্র ভিত্তিক টিভি অনুষ্ঠান গুলো যুক্ত হওয়ায় সাধারন মানুষের আগ্রহের পরিধি প্রসারিত হয়ে পড়েছে আরো বেশি জায়গা জুড়ে। সেই সাথে খবরের দেশী বিদেশী চ্যানেল গুলোর অবদানও কম নয়। জিরাফ, পেঙ্গুইন মাত্র নয় ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হুসেইন বা ওসামা বিন লাদেনের মত ব্যক্তিও কিছু কিছু ক্ষেত্রে রিক্সার ছবির বিষয় হয়ে ওঠে। অবশ্য রাজশাহীর রিক্সায় লাদেন বা সাদ্দাম হুসেইনকে দেখা যায়নি সে সময়। একতারা হাতে বাউল বা রিক্সার মালিকের ছেলের বা মালিকের নিজেরই প্রতিকৃতি যেমন ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য ভিত্তিক একটা ধারার ফসল তেমনি আবার জাতীয় বা স্থানীয় স্মৃতি সৌধ, বাঘের ছবির বহুল ব্যবহার, যমুনা সেতুর মত দেশীয় বৃহৎ স্থাপনার জন্য গর্ব বোধ এসবই দ্যোতিত করে জাতি হিসেবে বাংলাদেশের মানুষের আত্ম-বিশ্বাসের পুনরুত্থানকেও।
এই নতুন ধারার রিকশা অলঙ্করনের বিকাশ কোন পথে হবে বা পূর্বতন ঐতিহ্যের সাথে আবার সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা আদৌ হবে কিনা এসব নিয়ে এখনই নিশ্চিত করে বলার মত বিশেষ কিছু নেই। একটা জনসমষ্টির প্রাণের টানেই লোকশিল্পের জন্ম ও বিকাশ হয়। রিকশা অলঙ্করন শিল্পকে লোকশিল্প গোত্রে ফেললে মনে হয়না কারো আপত্তি হবে। সেই রিকশার ছবি যখন আবারো আঁকানো শুরু হয়েছে তখন ভাবতেই হয় বাংলাদেশের মানুষের মনের কাছে এর আবেদন এখনও ফুরিয়ে যায়নি। আর সে কারনে এই শিল্পের বিকাশে আশাবাদ এসেই যায়। আশাবাদ এ কারনেই শক্তিশালী হয়ে ওঠে কারন আঁকা হচ্ছে, ছাপা নয়। রিকশায় মাঝে মাঝেই এমন ছবি দেখা যায় যা হাতে আঁকা নয় বরং টিনের পাতটির ওপর ছাপাখানা থেকে ছাপিয়ে রিকশায় লাগানো হয়েছে। এক সময় মনেও হয়েছিল এই ছাপা ছবির জন্যই ছবি আঁকানোটা থেমেই যাবে। বিশেষ করে ছাপানোর খরচ যখন আগের তুলনায় অনেক কম। কিন্তু বছর দুয়েকের মধ্যেও দেখি হাতে আঁকা ছবির সংখ্যাই বেশি, সে তুলনায় ছাপা ছবির সংখ্যা এখনও নগন্য। টিনের ক্যানভাস এখনও রং-তুলির দখলেই আছে নিস্প্রাণ ছাপানো সাইনবোর্ড হয়ে পড়েনি, এটাও আশার কথা।
লিখেছেন : সোহেল ইমাম

ছবি: 
24/08/2007 - 2:03পূর্বাহ্ন
24/08/2007 - 2:03পূর্বাহ্ন
24/08/2007 - 2:03পূর্বাহ্ন
24/08/2007 - 2:03পূর্বাহ্ন

মন্তব্য

ধ্রুব এর ছবি

চলুক

সোহেল ইমাম এর ছবি

ধন্যবাদ

দেবদ্যুতি এর ছবি

বাহ্!

...............................................................
“আকাশে তো আমি রাখি নাই মোর উড়িবার ইতিহাস”

সোহেল ইমাম এর ছবি

ধন্যবাদ ভাই

maruf এর ছবি

কিছু অজানা জানা হইলো ।

সোহেল ইমাম এর ছবি

ধন্যবাদ

অতিথি লেখক এর ছবি

সুন্দর একটি লেখার জন্য অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে, সোহেল ইমাম। বহু বছর হয়ে গেলো দেশে যাই না। রিকশায় চড়া তো দুরের কথা, দেখাই হয়নি সে বহুকাল। একদিক থেকে সৌভাগ্যই বলতে হবে কেননা বলিউডের নর্তন কুর্দন দেখতে হয়নি। শুনেছি ঢাকায় রিকশা চিত্র নিয়ে আলোকচিত্র প্রদর্শনী হয়েছিলো কোন একটা সময়। জানতে ইচ্ছে করছে সে সম্পর্কে। আগের লেখাটি পড়ে আপনার কাছে জানতে চেয়েছিলাম এই মুহূর্তে রাজশাহীতে জনপ্রিয় রিকশা চিত্রকরের নাম। এবারেও সেই দাবীটি রাখছি। আরেকটি অনুরোধ, নিয়ে চলুন না একবার কোন এক চিত্রকরের বাড়িতে, তার স্টুডিওতে। খুব জানতে ইচ্ছে করছে তাঁদের সম্পর্কে।

--- মোখলেস হোসেন।

সোহেল ইমাম এর ছবি

ধন্যবাদ ভাই, কাজের ফাঁকে ফাঁকে যেখানে পাই রিকশার ছবি দেখলেই ক্যামেরায় তুলে রাখি। খুব বেশি সময় পাইনা তবু রিকশার ছবি নিয়ে কিছু লেখার চেষ্টা করছি যাতে আরো যোগ্য কেউ লিখতে আকৃষ্ট হন। রিকশার ছবিদের শিল্পীদের নিয়েও লেখার ইচ্ছে আছে, একটু সময় পেলেই কাজটা করে ফেলবো। সময় করে ওঠাটাই একটা সমস্যা হয়ে পড়ছে আজকাল।

এক লহমা এর ছবি

আগের বারের মত , এই পোস্ট-ও ভাল লেগেছে। তবে, আর কয়েকটা ছবি আশা করেছিলাম।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সোহেল ইমাম এর ছবি

ধন্যবাদ ভাই, লেখাটা একটু বড় হয়ে গেল বলেই ছবি দিতে একটু ইতস্তত লাগছিল, ছবি আমার সংগ্রহে প্রচুর রয়েছে, ভবিষ্যতে দিতে পারবো আশা করি।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।