রুদাই - প্রথম পর্ব (দুই পর্বে সমাপ্য)

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: রবি, ০৯/০৪/২০১৭ - ৮:১৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এরা মাঝে মাঝেই জানতে চায়, আমি কোথা থেকে এলাম। আমি বলি- একটা ভালভ টেনে, আর সে ভালভটা ছিলো সুতোয় বাঁধা। তখন অবাক বিস্ময়ে সবাই আমার দিকে তাকিয়ে থাকে, ভালভ সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ধারণা নেই এদের, সুতো জিনিসটাও অচেনা। আমি নিজেও বুঝিয়ে বলতে পারিনা, আমার কিছু মনে নেই। এদের কৌতূহল অবশ্য ওই পর্যন্তই, খুব বেশি ঘাটায় না আমাকে। আমিও নিবিষ্ট মনে কাজ করে যাই।

এখানে সবার একটাই কাজ, ছাঁকনদারি করা। আমি ছাড়া আরও একশ একুশ জন ছাঁকনদার রয়েছে এই তল্লাটে। আমরা সোনালি স্রোত থেকে রুদাই সংগ্রহ করি। ছাঁকনদার শব্দটি শুনে মনে হতে পারে আমরা বুঝি সার বেঁধে ছাঁকনি হাতে দাঁড়িয়ে থাকি আর সোনালি স্রোতটা এলেই ঝাঁপিয়ে পড়ি রুদাইয়ের খোঁজে। আসলে তা নয়।

ব্যাপারটা বুঝিয়ে বলি। আমাদের ঘর-বাড়ি-রাস্তা-ঘাট এমনকি আমরা, সব কিছুই সবুজ রঙের একটা আবরণে মোড়ানো। আর সোনালি স্রোতটাও ঠিক তরল নয়, অনেকটা বাষ্পের মতো, তবে বাষ্প নয়। কেউ জানেনা কী এর উৎস। কখনো দীর্ঘক্ষণ, কখনো অল্পক্ষণ, যখন আসে চারিদিক প্লাবিত করে চলে যায়। আমাদের সবুজ তল্লাট ফুলে ফুলে ওঠে রুদাইয়ের ভারে। স্রোত চলে গেলে আটকে পড়া রুদাইগুলো জড়ো করে বড় রাস্তাটার মোড়ে নিয়ে যাই আমরা, পৌঁছে দেই আরেকটা দলের কাছে। এই দলে আছে একুশ জন, সবার গায়েই বাদামি আবরণ, ওরা থাকে বাদামি তল্লাটে, সেখানে আমাদের যেতে মানা। এক দুজন যে চেষ্টা করেনা তা নয়, কোন এক বিচিত্র কারণে রাস্তাটা তাড়া পেরুতে পারেনা।

বাদামিরা আমাদের জন্য খাবার নিয়ে আসে, বিনিময়ে আমরা দেই রুদাই, এটাই নিয়ম। রুদাই দিয়ে ওরা কী করে কে জানে! নিশ্চয়ই খুব গুরুত্বপূর্ণ কিছু, কেননা আমরা কতটুকু খাবার পাবো সেটা নির্ভর করে রুদাইয়ের পরিমাণের উপর। বেশি বেশি রুদাই মানে বেশি বেশি খাবার, আমরা খুব চনমনে থাকি তখন। রুদাই কম হলে খাবারও কমে যায়, তখন খুব অবসন্ন, খুব ন্যাতানো লাগে। বাদামিদের কাছে শুনেছি আসেপাশে এরকম আরও অনেক সবুজ তল্লাট রয়েছে, সবকটি তাদের নিজ নিজ বড় রাস্তা দিয়ে বাদামিদের সাথে সংযুক্ত।

আসা অবধি দেখছি অন্ধকারকে এদের দারুণ ভয়। ব্যাপারটা বোধগম্য, কারণ অন্ধকার আসে সোনালি স্রোতটা পুরোপুরি থেমে গেলে। সোনালি স্রোত নেই তাই রুদাই নেই, আর রুদাই না থাকলে খাবারও নেই। তবে এটাও লক্ষ্য করছি যে একটা দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকার পর স্রোতটা আবার ফিরে আসে ঠিক ঠিক। কখনো থেমে থেমে, কখনো কখনো একটানা অনেকক্ষণ ধরে বয়ে চলে আমাদের তল্লাট জুড়ে। মোটের উপর রুদাইয়ের পরিমাণে আকাশ পাতাল কোন হেরফের হয়না। কিন্তু ভয়টা এতো তীব্র! ঠিক ভয় নয়, ওদের চোখে কেমন যেন একটা আতংক অনুভব করি, জিগ্যেস করলে শিউরে ওঠে। ভাবছি সুযোগ পেলে ফিলকে একবার জিগ্যেস করবো।

ফিল আমাদের সর্দার। খুব গম্ভীর আর চাপা স্বভাবের, কথাবার্তা তেমন একটা বলে না। আমিও ঘাটাইনা, আমার জন্য নিজের ঘরের একটা অংশ ছেড়ে দিয়েছে এতেই আমি কৃতজ্ঞ। এ তল্লাটে, শুধু এতল্লাটেই নয়, সবগুলো সবুজ তল্লাটেই নাকি ঘরের সংখ্যা একশ একুশ। কোন নড়চড় নেই, একশ একুশ জন ছাঁকনদারের জন্য একশ একুশ খানা ঘর।

ছাঁকনদারদের বেশির ভাগই তরুণ, কয়েকজন আছে যারা বয়সে ফিলের কাছাকাছি, এরা এই তল্লাটের আদিতম বাসিন্দা। কোন এক বিচিত্র কারণে আদি বাসিন্দারা খুব চুপচাপ, ফিলের মতোই। তরুণরা ঠিক এর উল্টো, তাদের বকবকানির কোন শেষ নেই। ব্যাতিক্রম কেবল একজন, তার নাম ক্লোরো। সারাক্ষণই কিছু না কিছু একটা ভাবছে। একমাত্র ওরই আমাকে নিয়ে কোন কৌতূহল নেই। আজ রুদাই তুলতে তুলতে ওকে জিগ্যেস করলাম,

“কী এতো ভাবো তুমি?”

উত্তর পাবার আশা না করেই প্রশ্নটা করেছিলাম। আমাকে হকচকিয়ে দিয়ে মুখ খুললো ক্লোরো,

“অনেক কিছু নিয়েই ভাবী, ইদানীং ভাবছি তোমাকে নিয়ে।”
“আমাকে নিয়ে! আমাকে নিয়ে ভাবার কী আছে?”
“অনেক কিছু। প্রথমত, তুমি কে? দ্বিতীয়ত, কোত্থেকে এলে? তৃতীয়ত, কেমন করে এলে?, চতুর্থত, তুমি আমাদের মতো দেখতে, বাদামিদের মতো নও কেন? পঞ্চমত…।”
“দাঁড়াও দাঁড়াও! আমি একজন ছাঁকনদার, কোত্থেকে এসেছি কীভাবে এসেছি বলতে পারবো না। কেবল মনে আছে একটা ভালভ টেনেছিলাম, আর সেটা ছিলো সুতোয় বাঁধা। এখন জানতে চেয়ো না সে ভালভ আর সুতো কী জিনিস, আমার মনে নেই। সবাই তো জানে এই কথা, নতুন করে ভাবার দরকার কী? আচ্ছা, আমি কি কখনো জানতে চেয়েছি তুমি কোত্থেকে এলে?”
“আমি আসতে যাবো কেন! আমি তো এখানেই ছিলাম।”
“বুঝলাম তুমি এখানেই ছিলে, কিন্তু এখানটা আসলো কোথা থেকে শুনি ?”
“ও, তুমি জন্মকথা জানতে চাইছো?”
“তুমি জানো?”

ক্লোরো কোন জবাব না দিয়ে রুদাই তুলতে থাকে, যেন আমার কথা কানেই যায়নি তার।

“কী হলো, কিছু একটা বলবে তো?”
“ভাবছি”

ক্লোরোর ভাবনা আর ফুরোয় না।

সেদিন অন্ধকার নেমে আসার পর ফিলকে জিগ্যেস করলাম,

“ফিল, ক্লোরো একটা কথা বলছিলো।”
“হুম”
“কী কথা জানতে চাইলে না?”
“কী কথা?”

এতো নিরাসক্তি নিয়ে ফিল জবাব দেয় যে আমার আর জিগ্যেস করতে ইচ্ছে করে না। ঘুমিয়ে যাচ্ছিলাম, ফিলের কণ্ঠে চটকা ভাঙলো,

“ক্লোরোর কাছ থেকে দুরে থাকবে তুমি”
“সেকি! কেন?”
“ওর মাথার ঠিক নেই। প্রিংতা আসার পর থেকেই ওর মাথাটা গিয়েছে।”
“প্রিংতা কে?”

ফিল ততক্ষণে ঘুমিয়ে পড়েছে।

প্রিংতা যে কে, নাকি কী, সেটা টের পেলাম সোনালি স্রোতটা ফিরে আসার পর।

স্রোতটা ছিলো কমজোরি, আর আসছিলোও বেশ থেমে থেমে। মোটামুটি অলস একটা সময়। হঠাৎ থরথর করে কেঁপে উঠলো পুরো তল্লাট। হুমড়ি খেয়ে পড়ে যেতে যেতে সামলে নিলাম। বাতাসে একটা বিচ্ছিরি গন্ধ, শুধু বিচ্ছিরি নয়, খুব ঝাঁঝালো আর কেমন যেন ভারি। শ্বাস নিতে রীতিমতো কষ্ট হচ্ছিলো আমার। একটা শব্দ শুনে পেছন ফিরে দেখি জ্ঞান হারিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে ক্লোরো। একই অবস্থা আশেপাশের আরও কয়েকজন তরুণ ছাঁকনদারের। কী হচ্ছে, কী করবো ভাবতে না ভাবতেই ফিল আর অন্য বুড়োরা দৌড়ে এসে আঠালো একটা তরল ছিটিয়ে দিলো আমার দিকে। এটার গন্ধ আরও বিচ্ছিরি, রেগেমেগে কিছু একটা বলতে গিয়ে টের পেলাম শ্বাসকস্টটা আর নেই। আমার হাতে একটা বালতি ধরিয়ে দিয়ে খেঁকিয়ে উঠলো ফিল,

“হা করে দেখছ কী? ছিটিয়ে দাও, সবখানে লেপে দাও ভালো করে। দেরি করলে আর রক্ষে নেই!”

কেন ছিটাবো, রক্ষে নেই কেন, এই মুহূর্তে সে প্রশ্ন করার মতো বুদ্ধু আমি নই। ফিলের কথামতো ছিটাতে শুরু করলাম। ততক্ষণে উঠে দাঁড়িয়েছে ক্লোরো এবং অন্যেরা। চারিদিকে গন্ধের যুদ্ধ চলছে যেন, থেকে থেকে কেঁপে উঠছে আমাদের সবুজ তল্লাট। মাঝে মাঝে মাথার উপর দিয়ে সরসর করে সরে যাচ্ছে হিলহিলে একটা ছায়া। ছায়ার ভেতর থেকেই হঠাৎ বেরিয়ে এলো গোলাপি রঙের একটা মাংসপিণ্ড, তার গায়ে অগুন্তি কাঁটা। বুঝে উঠার আগেই সাতজন ছাঁকনদার সমেত তল্লাটের একটা অংশ কোথায় যেন উধাও হয়ে গেলো। একটু আগেই যেখানে ছিলো তিনটি বাড়ি, সাতজন চেনা মুখ, সেখানে এখন অসীম শূন্যতা।

“তরলটা ছিটিয়ে দাও, নিজেদের গায়ে মাখো, বাড়িতে মাখো, জমিনে মাখো, ছুড়ে দাও লকলকে ওই জিভটার দিকে।”

চিৎকার শুনে তাকিয়ে দেখি আঠার চাঁদরে মোড়া বুড়ো ফিল, যে কিনা সহসা মুখ খোলে না, কথার তুবড়ি ফাটিয়ে নির্দেশ দিয়ে চলেছে। কতক্ষণ চলল এ যুদ্ধ বলতে পারবোনা। কতবার যে শূন্য ফুঁড়ে বেরিয়ে এলো সেই ঘিনঘিনে গোলাপি মাংস পিণ্ডটা, কে জানে! একটা সময় টের পেলাম, যে এসেছিলো সে আর নেই। যেমন শূন্য থেকে উদয় হয়েছিলো, তেমনি মিলিয়ে গিয়েছে শূন্যে। আমাদের চারপাশটা ক্ষতবিক্ষত, এখানে ওখানে উঁকি মারছে জমাট অন্ধকার। তল্লাটের ওই জায়গা গুলো আর নেই, সেই সাথে নেই উনিশ জন ছাঁকনদার। পাশেই স্থাণুর মতো দাঁড়িয়ে রয়েছে ক্লোরো, কী যেন বলছে বিড়বিড় করে। একটা ধাক্কা দিয়ে জিগ্যেস করলাম,

“ওটা কী ছিলো ক্লোরো? কোত্থেকে এলো, আর গেলোই বা কোথায়?”

ক্লোরো নিরুত্তর, রণক্লান্ত আর সবাই নির্জীব হয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে এখানে ওখানে। আমি চিৎকার করে বললাম,

“আমি একটা প্রশ্ন করেছি। কেউ কি জানো, কী হয়ে গেলো এখানে?”
“প্রি - ঙ - তা”

টেনে টেনে এটুকু বলেই আবার থেমে গেলো ক্লোরো।

“প্রিংতা কে? কী?
“প্রিংতা মানে মৃত্যু। আর কিছু জানিনা। শেষবার যখন এসেছিলো তখন সে এতো ভয়ংকর ছিলো না, ওই লকলকে জিব্বাটায় এতো কাঁটাও দেখিনি। তখন তাড়িয়ে দিতে পেরেছিলাম। এবার আরও অনেক শক্তিশালী হয়ে ফিরে এসেছে, আরও অনেক হিংস্র হয়ে।”
“কোথা থেকে আসে?”
“কেউ জানেনা।”
“কেউ জানেনা মানে কী? বুড়োরা নিশ্চয়ই জানে।”
“বুড়োদের কথা বাদ দাও। আজগুবি কিছু গালগল্প ছাড়া এঁদের ঝুলিতে আর কিছুই নেই। এরা কী বলে জানো?”
“কী বলে?”
“অনেক অনেকে আগে অতি ক্ষুদ্র, অকল্পনীয় ক্ষুদ্র একটি বিন্দুর ভেতর ঘুমিয়ে ছিলেন আমাদের প্রথম পিতা, বাড।“
“তারপর?”
“তারপর ঈশ্বর পাঠালেন সোনালি স্রোত, ঘুম ভাঙলো বাডের। ঘুম থেকে উঠে তিনি ধ্যানে নিমগ্ন হলেন, ঈশ্বরের অনুকম্পা প্রার্থনায় কেটে গেলো আরও অনেকে অনেক প্রহর। একদিন স্বর্গের দরজা খুলে গেলো, ঈশ্বর তৃপ্ত হয়েছেন। ওই যে বড় রাস্তার মোড়, যা পেরুনো যায়না, তার পেছনেই নাকি স্বর্গের সেই দরজা। স্বর্গের দূতেরা বয়ে এনেছিলেন ঈশ্বরের উপহার, অমৃত। সেই অমৃতের স্পর্শে ক্রমে ক্রমে পুষ্ট হলেন বাড।”
“বাড এখন কোথায়?”
“কোথায় আবার! বাড ছড়িয়ে আছেন সবখানে।”
“হেঁয়ালি কোরোনা ক্লোরো, তোমার কথার মাথামুণ্ডু কিছুই আমি বুঝতে পারছি না।”
“এই যে সবুজ তল্লাট, এটাই বাড।”
“তাহলে তোমরা, মানে আমরা কারা?”
“আমরা বাডের রক্ষক, তাঁর বংশধর, তাঁরই অংশ। তুমি কি ভেবেছো এই তল্লাটটি জড়? মোটেই নয়। একটা কাজ করো, জমিনে কান পেতে দেখো তো কিছু শুনতে পাও কিনা!”

সব ছাঁকনদারেরা উঠে এসে আমাদের ঘিরে দাঁড়িয়েছে। সবার চোখেই কেমন যেন একটা শূন্য দৃষ্টি, আমার দিকে আঙুল উঁচিয়ে বিড়বিড় করে বলছে, কান পাতো, কান পাতো, কান পাতো………………।

আমি হাঁটু গেঁড়ে বসে উবু হয়ে আমার ডান কানটা ছোঁয়ালাম সবুজ জমিনে। প্রথমটায় ঠিক ধরতে পারিনি, তারপর শুনলাম- একটা মৃদু কোলাহল, যেন অনেক গুলো কণ্ঠ সমস্বরে গুঞ্জন করে কিছু একটা বলছে আমাকে। আমি কান সরিয়ে ক্লোরোর দিকে তাকালাম।

“বাডের আত্মা”

ফিস ফিস করে বললো ক্লোরো। ফিসফিস করে উঠলো সবাই, শত কণ্ঠের মৃদু ফিসফিসানি একটা মন্ত্রের মতো সমস্বরে উচ্চারিত হয়ে যেন ভাসিয়ে নিয়ে গেলো আমাকে। আমি সংবিৎ ফিরে পেয়ে জিগ্যেস করলাম,

“তারপর?”

ক্লোরো ফিলের দিকে তাকিয়ে কী যেন একটা ভাবলো, ফিল তাঁর মাথাটা একটু ঝোঁকাতেই ক্লোরো আবার বলতে শুরু করলো -

“বাডের বৃদ্ধিতে ঈর্ষায় জর্জরিত হলেন হিমগ্ন, তিনি ঈশ্বরের প্রতিদ্বন্দ্বী। বললেন ধ্বংস করে দেবেন সৃষ্টি। ভয়ার্ত বাড ঈশ্বরের কাছে আশ্রয় চাইলেন। ঈশ্বর প্রতিশ্রুতি দিলেন বাডকে তিনি রক্ষা করবেন, বিনিময়ে দিতে হবে নৈবেদ্য। তখন বাডের শরীর থেকে জন্ম নিলো একশ একুশ জন ছাঁকনদার। এই যে আমরা সোনালি স্রোত থেকে রুদাই সংগ্রহ করে বাদামিদের কাছে পৌঁছে দেই, এটা ঈশ্বরের জন্য বাডের সেই নৈবেদ্য।”

“দাঁড়াও দাঁড়াও! তুমি বলতে চাইছো বড় রাস্তার মোড়ের ওই গোমড়ামুখো বাদামিরা সব স্বর্গের দূত?”
“আমি কিছুই বলছি না। এসব ফিল আর অন্য বুড়োদের কথা। তবে বাদামিরা দেবদূত নয়, ওদের যত দৌড় ওই রাস্তাটাতেই। আমরা যেমন রাস্তাটার এপ্রান্ত পেরুতে পারিনা, ওরাও তেমনি আটকে আছে অন্য প্রান্তের সীমানায়। ওদের কাজ কেবল রুদাই পৌঁছে দিয়ে আমাদের জন্য অমৃত বয়ে আনা।”
“আচ্ছা, বলে যাও।”

“তারপর একদিন প্রিংতা এলো হিমগ্নের অভিশাপ বয়ে নিয়ে। আর ঈশ্বর পাঠালেন আঠালো তরল। তুমুল যুদ্ধের পর প্রিংতা বিদায় নিলো বটে, তবে চিরতরে নয়। সে ফিরে ফিরে আসে, আসে আরও শক্তি নিয়ে। ফলাফল তো তুমি জানো, ওই দেখো ছোপ ছোপ অন্ধকার, বাডের ওই অংশগুলো হারিয়ে গিয়েছে। সেই সাথে হারিয়ে গিয়েছে উনিশ জন ছাঁকনদার। ফিল বলে তারা নাকি স্বর্গে গিয়েছে!”
“কিন্তু তোমরা তো একশ একুশ জন ছিলে, একেকজন একেক বয়সী! তার মানে যারা হারিয়ে যায় তাঁদের জায়গায় নতুন কেউ আসে, তাইনা?”
“তা তো আসেই, নইলে একশ একুশ হয় কী করে? তবে আরও একটা ব্যাপার আছে। আমাদের কাজটা যে দারুণ একঘেয়ে তা নিশ্চয়ই মানো? সবাই তো আর সমান নয়, কেউ কেউ একটা সময় অলস হয়ে পড়ে, তখন ভাটা পড়ে নৈবেদ্যে। ঈশ্বর তাঁদের নরকে পাঠিয়ে দেন, তাদের জায়গায় আসে নতুনেরা। কেউ টিকে থেকে ফিলের মতো বুড়ো হয়, কেউ যায় স্বর্গে, কেউ নরকে। সবুজ তল্লাটে নতুন পুরনো সব মিলিয়ে একশ একুশ জন ছাঁকনদার, এর বেশি কখনোই নয়। এটাই ঈশ্বরের বিধান। একমাত্র তুমিই ব্যাতিক্রম, তোমার নম্বর একশ বাইশ। তুমি আমাদের মতো, কিন্তু আমাদের একজন নও। কে তুমি?”

“আমি কে তা জানিনা। কেমন করে কোথা থেকে, কী ভাবে এখানে এলাম মনে নেই। কেবল মনে আছে একটা ভালভ টেনেছিলাম, আর সেটা ছিলো সুতোয় বাঁধা……”
“থামো, থামো! আর বলতে হবেনা।”
“ক্লোরো, এর কি কোন শেষ নেই? মানে এটাই সব?”
“নাহ, এটাই সব নয়। একটা ভবিষৎবাণী রয়েছে। প্রিংতা দিনদিন আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসবে। এবার গিয়েছে উনিশ জন, একে একে যাবে আরও অনেকেই। সবুজ তল্লাট ছেয়ে যাবে ছোপ ছোপ অন্ধকারে। আমরা যেমন প্রিংতার বিরুদ্ধে লড়াই করি, তেমনি ঈশ্বর লড়ে চলেছেন হিমগ্নের সাথে। এই লড়াইয়ে ঈশ্বর হেরে যাবেন। সোনালি স্রোতটা শুকিয়ে আসবে, থেমে যাবে বাডের আত্মার কোলাহল যা তুমি কান পেতে শুনেছো। বিলীন হয়ে যাবে সমস্ত ছাঁকনদার………।”

ক্লোরো তার কথা শেষ করতে পারলো না। ছুটে এসে একটা ধাক্কা দিয়ে তাকে সরিয়ে দিলো ফিল। তাঁর কণ্ঠে সর্দারের কর্তৃত্ব,

“ব্লাসফেমি! ব্লাসফেমি! ছেলেছোকরাদের বাড় বেড়েছে অনেক। কে বলেছে ঈশ্বর হেরে যাবেন? তোমাদের কি ধারণা এটাই তাঁর এক মাত্র সৃষ্টি! আরও অনেক অনেক তল্লাট রয়েছে, অনেক অনেক বাড, অগণিত ছাঁকনদার। ঈশ্বর হেরে যাবেন না। এ জগৎ তাঁর অকল্পনীয় নিরীক্ষার একটা অংশ মাত্র। যা কিছুর সৃষ্টি রয়েছে তা ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে সত্যি। তবে সেটা ঈশ্বরের ইচ্ছাতেই। যারা মন দিয়ে কাজ করবে, যারা টিকে থাকবে শেষের সে দিন পর্যন্ত, তাদের স্থান হবে স্বর্গে। স্থান হবে তাদেরও যারা হারিয়ে গিয়েছে প্রিংতার সাথে। অন্যেরা মরুকগে নরকে মাথা কুটে কুটে। এখন যাও ঢের সময় নষ্ট হয়েছে, যেটুকু পারো রুদাই সংগ্রহ করে রেখে আসো বড় রাস্তাটার মোড়ে। ঈশ্বরের নৈবেদ্যে যেন ভাটা না পড়ে।”

আমি হাত বাড়িয়ে জমিন থেকে ক্লোরোকে টেনে তুললাম, তার মুখে একটা হাসি, অবিশ্বাসীর হাসি।

প্রিংতা আসার পর থেকে আমার মনে মধ্যে একটা ভয় ঢুকে গিয়েছে। এ তল্লাট ছেড়ে পালাতে হবে। কিন্তু কেমন করে পালাবো, যাবো কোথায়! অনেক চেষ্টা করে দেখেছি, যেদিকেই যাই না কেন বারবার ফিরে আসি যেখান থেকে শুরু করেছিলাম সেখানেই। বাকি আছে একটা দিক, বড় রাস্তার মোড়। কিন্তু সে চেষ্টা করে কোন লাভ নেই। মাঝে মাঝে একদুজন পেরুতে চায়, কিন্তু কী এক অলঙ্ঘনীয় বাধা তাদের ছিটকে পাঠিয়ে দেয় এপারে। হয়তো ফিলের কথাই সত্যি, ওপারেই স্বর্গ। চাইলেই কি কেউ স্বর্গে পৌঁছুতে পারে!

সোনালি স্রোতটা ক’দিন ধরে কমজোরি হয়ে পড়েছে আবার, এমন সময়গুলোতেই প্রিংতা ফিরে আসে। আরেকবার তার মুখোমুখি হবার ইচ্ছে কিংবা সাহস, কোনটাই নেই আমার। আমি পালাতে চাই, আজকেই।

ফিল ঘুমিয়ে পড়েছে। খুব সাবধানে পা টিপে টিপে ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে এলাম। চারিদিক জুড়ে নিকষ কালো অন্ধকার, সোনালি স্রোত নেমে আসার আগেই যা করার করতে হবে।

বড় রাস্তার মোড়ে এসে দাঁড়িয়েছি আমি। একবার ভাবলাম ফিরে যাই, কিন্তু পরক্ষনেই মত বদলালাম। ফিরে তো যেতেই হবে, যদি পেরুতে না পারি। চেষ্টা করতে ক্ষতি কী! ভয়ে ভয়ে ডান পা টা বাড়িয়ে দিলাম, উত্তেজনায় দম বন্ধ হয়ে আসছে আমার, এই বুঝি ছিটকে পড়ব পেছন দিকে। তারপর বাম পা টা টেনে আনতেই কী একটা যেন জড়িয়ে ধরলো আমাকে। মনে হচ্ছে কেউ যেন টেনে টেনে আমার শরীর থেকে চামড়াগুলো ছড়িয়ে নিচ্ছে। আতংকে মূর্ছা গেলাম।

কতক্ষণ পড়ে ছিলাম বলতে পারবো না। জ্ঞান ফিরলো পাঁজরের কাছে তীব্র একটা লাথি খেয়ে। চোখ মেলে দেখি খুব গোমড়া দেখতে একজন আমার দিকে তাকিয়ে। আমি কিছু বলার আগেই খেঁকিয়ে উঠলো,

“কাজকর্ম বাদ দিয়ে ঘুমিয়ে আছো দেখছি! তোমার ভাণ্ড কোথায়? রুদাই আনতে যাবার সময় হয়ে এলো খেয়াল নেই? দেখতে পাচ্ছো না সোনালি স্রোত টা কেমন নেতিয়ে এসেছে?”

“কিসের ভাণ্ড! রুদাই কী?
“রুদাই কী!”

গোমড়া মুখো হতভম্ব হয়ে গেলো। আসে পাশে আরও কয়েকটি কণ্ঠস্বর শুনতে পেয়ে মাথা তুলে দেখি আমাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে রয়েছে এক, দুই, তিন- সবসুদ্ধ কুড়ি জন গোমড়া মুখো। প্রথমজনকে সহ একুশ। সবার গায়েই একটা বাদামি আবরণ, যেখানে পড়ে আছি সে জায়গাটাও বাদামি। ডান, বামে, সামনে, পেছনে- যতদূর চোখ যায়, সব কিছুই কেমন একটা বাদামি চাঁদরে মোড়ানো যেন।

প্রথম জন আমার মুখের কাছে একবার এসেই ধাঁ সরে গিয়ে অন্যদের জিগ্যেস করলো,

“এটা কে?”

কুড়িকণ্ঠে একঘেয়ে প্রতিধ্বনি উঠলো,

“এটা কে? এটা কে? এটা………কে?”

প্রথম জন সবাইকে থামিয়ে দিয়ে আমাকে জিগ্যেস করলো,

“অ্যাই, কে তুমি? কোথা থেকে এসেছ?”

আমি কিছুক্ষণ ভাবলাম, তারপর বললাম,

“আমি কে তা জানিনা। কেমন করে কোথা থেকে, কী ভাবে এখানে এলাম মনে নেই। কেবল মনে আছে একটা ভালভ টেনেছিলাম, আর সেটা ছিলো সুতোয় বাঁধা।”

“ভালভ জিনিসটা আবার কী? আর সুতোই বা কি বস্তু?”
“সে আমি বলতে পারবো না। আমার আর কিছু মনে নেই।”

চারিদিক জুড়ে একটা গুঞ্জন উঠলো, আবারও হাত তুলে সবাইকে থামিয়ে দিয়ে প্রথম জন বলল,

“তুমি কে সেটা পরে বোঝা যাবে। এখন নষ্ট করার মতো সময় নেই। অ্যাই, ওকে একটা ভাণ্ড এনে দাও কেউ।”

আমি বুঝে গিয়েছি এ হচ্ছে এখানকার দলপতি।

অল্পক্ষণ নাকি অনেকক্ষণ চললাম তা বলতে পারবো না। হঠাৎ দেখি একটা বড় রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে আমরা। রাস্তার ওপারে যতদূর চোখ যায় কেবল সবুজ আর সবুজ। একটা জায়গায় সবুজ রঙটা কেমন যেন কিলবিল করে নড়ছে। আরেকটু কাছে যেতেই টের পেলাম ওটা একটা মিছিল। মিছিলের সবাই সবুজ কোন আবরণে ছাওয়া, তাদের কয়েকজনের হাতে সবুজ সবুজ কিছু ভাণ্ড।

ভাণ্ডগুলো রাস্তার মোড়ে রেখে একটু পিছিয়ে দাঁড়ালো সবাই। আমাদের দলপতি বিরক্ত হয়ে বলল,

“রুদাই এতো কম কেন হে? তোমরা সব আলসে হয়ে গেলে নাকি?”

সবুজদের ভেতর থেকে বয়স্ক একজন এগিয়ে এসে বললো,

“প্রিংতা আসার পর থেকে আমাদের সংখ্যা কমে গিয়েছে, তাছাড়া তুমিতো জানোই সোনালি স্রোতটা আজকাল আর আগের মতো জোড়ালো নেই। নতুনদের পেয়ে গেলেই আবার সব ঠিক হয়ে যাবে।”

আমাদের দলপতি আরও গোমড়া হয়ে বললো,

“নতুনরা কখন আসবে সেটা নির্ভর করছে ঈশ্বরের মর্জির উপর। কিন্তু তাই বলে নৈবেদ্যে ভাটা পড়লে তো চলবে না! এই নাও তোমাদের অমৃত, যত রুদাই তত অমৃত। এটাই ঈশ্বরের বিধান।”

সবুজ দলটা বিমর্ষ হয়ে চলে যেতে যেতে একজন ঘুরে দাঁড়ালো, আমার দিকে আঙুল তুলে বলল,

“তুমি একশ বাইশ।”

আমাদের দলপতি আমার দিকে তাকিয়ে বললো,

“কী বলে গেলো ও তোমাকে? তুমি একশ বাইশ! এর মানে কী?”

আমি বিড়বিড় করে বললাম,

“মানে কী আমি জানিনা, আমার কিছু মনে নেই।”

দলপতি একটা ক্রুর হাসি হেসে ফিরে চলল, তার পেছন পেছন রুদাই হাতে আমরা। সবসুদ্ধ বাইশ জন, একজন অতিরিক্ত, সেটা আমি।

মানে যে কী তা আমি জানি। ক্লোরো হাত তুলতেই আমার মনে পড়ে গিয়েছে সব। আমি একশ বাইশ। কোন এক বিচিত্র কারণে বড় রাস্তার সেই অদৃশ্য বাঁধাটা পেড়িয়ে বাদামি তল্লাটে ঢুকে যেতে পেরেছি। নম্বর পাল্টে গিয়ে এখন আমি শুধুই বাইশ, আমার রঙটাও আর সবুজ নেই, এখানকার অন্য একুশ জনের মতোই আমি এখন বাদামি।

সবুজরা আমাকে গ্রহণ করেছিলো, বাদামিরা যে করেনি তা ভালো করেই বুঝতে পারছি।

(প্রথম পর্বের সমাপ্তি)


মন্তব্য

উদ্দেশ্যহীন এর ছবি

অথচ বোটানির বইতে কী খটোমটো ভাষায় এগুলো লিখত মন খারাপ

চমৎকার লেখা চলুক

মেঘলা মানুষ এর ছবি

খেয়াল করিনি প্রথমে চিন্তিত

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ মেঘলা মানুষ।
--মোখলেস হোসেন।

অতিথি লেখক এর ছবি

পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ উদ্দেশ্যহীন।

--মোখলেস হোসেন

এক লহমা এর ছবি

চিন্তিত

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ এক লহমা। আপনার চিন্তার অবসান ঘটবে শীঘ্রই।

--মোখলেস হোসেন

অতিথি লেখক এর ছবি

দ্বিতীয় এবং শেষ কিস্তির জন্য কতদিন অপেক্ষা করতে হবে? আপনার আরো লেখা কিন্তু অসমাপ্ত রয়ে গেছে। পাঠককে কষ্টে রাখা কোন ভালো কাজ না কিন্তু। অপেক্ষায় থাকা ছাড়া যেহেতু কোন উপায় নেই, সেহেতু সেটাই করি।

- ইকরাম ফরিদ চৌধুরী

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ ইকরাম ফরিদ চৌধুরী। প্রথম পর্বটা নীড়পাতা থেকে স্বরে গেলেই শেষ পর্ব পাঠিয়ে দেবো। অন্য লেখাগুলো নিয়ে বসবার সময় পাইনি এতোদিন। আশা করছি ধীরে সুস্থে এবার নামিয়ে ফেলতে পারবো। আপনার লেখাটিও এগুচ্ছে ভালোই। সময় করে পড়ে ফেলবো।

---মোখলেস হোসেন

দেবদ্যুতি এর ছবি

এই লেখা অখণ্ড মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে- পড়ে ফেলবো। শুভকামনা

...............................................................
“আকাশে তো আমি রাখি নাই মোর উড়িবার ইতিহাস”

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ দেবদ্যুতি। লেখাটি বড় হয়ে যাওয়াতে এইরকম একটা শঙ্কা আমার ছিলো বটে। সেকারণেই একবারে না দিয়ে দুখণ্ডে দেওয়ার সিধান্ত নিয়েছি।

--মোখলেস হোসেন

সোহেল ইমাম এর ছবি

সিরিজ শুরুর নাম করে অনেকবার ঠকিয়েছেন মোখলেস ভাই, তাই আগেই ভেবে রেখেছি দ্বিতীয় পর্বের আগে মুখই খুলবোনা।

---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার সাথে একটা চালাকি করেছি। মডারেটর দ্বিতীয় পর্বটা প্রকাশ করলে হয়।

----মোখলেস হোসেন।

আয়নামতি এর ছবি

পড়তে ভালো লাগছিল ভাই। বাকিটুকু পড়বার অপেক্ষায় থাকলাম। মন্তব্যসূত্রে জানতে পারলেম সিরিজের নামে আপনি পাঠকানুভূতি(সিরিজ সমাপ্ত না করিয়া) লইয়া ছিনিমিনি করেছেন। আশা করি 'রুদাই' লইয়া তাহা করবেন না। করলে প্রতিবাদে তামা তামা করা হইবেক। অতএব হুশিয়ার সাবধান খাইছে

অতিথি লেখক এর ছবি

খুব ব্যাস্ত একটা সময় যাচ্ছে। লেখা তো পরের কথা, সচলায়তনে এসে অন্যদের লেখা পড়ার সময় পর্যন্ত মিলছে না। তামা তামা হতে চাইনা। পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ আয়নামতি।

---মোখলেস হোসেন

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

আপনার লেখায় ধার আছে। আপনি অনেক দূর যাবেন। আমরা তখন আরো বেশি মুগ্ধতা নিয়ে আপনার লেখা পড়ব।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

অতিথি লেখক এর ছবি

এমন কথা শুনতে দারুণ লাগে। দুরে যেতে অবশ্যই চাই। না যেতে পারলেও কোন দুঃখ থাকবে না। হাঁটতে ভালো লাগে, হাঁটছি, এটাও অনেক আনন্দের। পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

---মোখলেস হোসেন।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।