প্রথম আলোর 'আপনি আজ্ঞা' কাহার জন্য প্রযোজ্য?

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শুক্র, ২১/০৪/২০১৭ - ৫:০৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আজকের প্রথম আলোর প্রথম পাতার বাম পাশের প্যানেলে সবার উপরে প্যারিস হামলার ছোট্ট একটা খবর।

[url=http://www.prothom-alo.com/durporobash/article/1152726/নির্বাচনের-আগে-ফের-রক্তাক্ত-প্যারিস]অনলাইন লিংক[/url]

এই ছোট্ট খবরটায় মজার একটা ব্যাপার আছে। লালকালীতে দাগ দেওয়া বাক্যগুলো পড়ুন। প্রথম আলো ডেস্ক পুলিশ কর্মকর্তার বেলায় লিখেছে 'নিহত হয়েছেন', 'গুলিবিদ্ধ হয়েছেন'। আর হামলাকারী সন্ত্রাসবাদীর বেলায় লিখেছে 'গুলিতে নিহত হয়েছে'। 'ন' নেই। আপনি আজ্ঞা নেই।

এটাই যে হওয়া উচিত, অপরাধীর বেলায় যে সম্মান জানানো উচিত না, তা প্রথম আলো এতদিন বোঝেনি। গোলাম আজমসহ দন্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধীদেরকে দেদারসে আপনি আজ্ঞা করেছে, চন্দ্রবিন্দু বসিয়ে সম্মান জানিয়েছে। [url=http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/308113/গোলাম-আজম-সিসিইউতে](নমুনা)[/url]

এখনো কি সত্যিই বুঝতে পেরেছে প্রথম আলো? নাকি গোলাম আজম সাঈদীদের খবরে আবার ঠিকই চন্দ্রবিন্দুর হাট বসিয়ে আপনি আজ্ঞা করবে?

[উদাসী পাঠক]

ছবি: 
24/08/2007 - 2:03পূর্বাহ্ন

মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

এই ব্যপারটা আমিও অনেক বার লক্ষ্য করেছি, যেমন "... ধর্ষণ করেন" বা "... খুন করেন" বা "... খুনের পর পুঁতে ফেলেন" ইত্যাদি। জ্বী, আপনি ঠিকই ধরেছেন, আপনি আজ্ঞা এবং চন্দ্রবিন্দুর হাট যথারীতি বসবে। শুধু প্রথম আলোই না, দেশের সব প্রথম সারির পত্রিকাও একই কাজ করে যাবে।

অতিথি লেখক এর ছবি

'ন' থাকা আর না থাকা নিয়ে একটা পুরনো ক্যাচাল আছে। এক দল বলেন, দুরাচারের ক্ষেত্রে 'ন' বাদ। আরেক দল বলেন, তিনি যে দুরাচার তার প্রমাণ কী? আদালতের শেষ পর্যায় পর্যন্ত গিয়ে প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত অন্তে 'ন' অব্যাহত থাকবে। দুই দলের কথায় কমবেশি যুক্তি আছে। কিন্তু আলুপেপার কি এই দুই যুক্তির কোনটা মেনে চলে? উত্তর হচ্ছে 'না'। উদাহরণ দেই। গত ১২ই এপ্রিল মুফতি হান্নানের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। তারও বেশ কিছু দিন আগে সর্বোচ্চ আদালতের সর্বোচ্চ পর্যায়ে অর্থাৎ সুপ্রিম কোর্টের আপীলাত ডিভিশনে হান্নানের ফাঁসির দণ্ড বহাল থাকায় এটা সন্দেহাতীতভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে যে হান্নান দুরাচার। এই ক্ষেত্রে মহামান্য রাষ্ট্রপতির নিকট প্রাণভিক্ষা বিবেচ্য বিষয় না। কারণ, প্রাণভিক্ষা চাইতে গেলে অপরাধ স্বীকার করতে হয়। আমরা জানি, ১২ই এপ্রিলের আগে হান্নান তার কুকীর্তির কথা স্বীকার করে মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়েছিল। অর্থাৎ, হান্নান যে দুরাচার এই ব্যাপারে আর কোন সন্দেহই নেই। কিন্তু দেখুন, ১২ই এপ্রিল প্রকাশিত আলুপেপারের [url=http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/767551/১০১-হত্যার-পেছনে-মুফতি-হান্নান]এই প্রতিবেদনে[/url] হান্নানের ক্ষেত্রে অন্ত 'ন' ও শ্রদ্ধাসূচক সর্বনাম বিদ্যমান। দুরাচার নিরূপণে আলুপেপারের নিজস্ব পছন্দ-অপছন্দ আছে। সেই মোতাবেক তারা যথাস্থানে আপনি-আজ্ঞে করে চন্দ্রবিন্দুর হাট বসিয়ে দেয়। উদ্দিষ্ট ব্যক্তি প্রকৃতপক্ষে দুরাচার কি দুরাচার না সেটা আলুপেপারের বিচার্য বিষয় নয়।

আয়নামতি এর ছবি

গোলামসহ বাকি কসাই বিষয়ে প্রথম আলুর পুরান গীত হলু, 'আমি তোমারই, তোমারই, তোমারই নাম গাই আমার নাম গাও তুমি', কাজেই নিশ্চিত থাকুন, তারা তাদের সামনে পেছনে চন্দ্রবিন্দুসহ আপনি আজ্ঞে করেই লিখে যাবে।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আমাদের নিরপেক্ষতা মানবিকতা ইত্যাদির বহর দেখে মরমে মরে যাই। আমরা চোরকে চোর বলতে পারি না, খুনীকে খুনী বলতে পারি না। যুদ্ধাপরাধীকে বলি রাজনীতিবিদ... সত্যি, আমরা পারিও বটে!

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।