বর্ণীল বেন্ডিগো

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শনি, ০২/১১/২০১৯ - ৯:৩০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন কিংবা পড়ান তাদের জীবনে একটা সুবিধা হল, সেমিস্টার বিরতিতে খুব একটা চাপ থাকেনা। আর অসুবিধা হল যখন সেমিস্টার থাকে তখন নাভিশ্বাস উঠে যায়। আরেক জাতীয় প্রানী আছে যাদের কিনা দুইটাই করতে হয়। পড়তেও হয়, পড়াতেও হয়। এই জাতীয় প্রানীর নাম হল “ পি এইচ ডী ছাত্র”। সেমিস্টার চলাকালীন সময়ে তাদের নাভিশ্বাস শুধু না, হাপানীর টান উঠে। তাই সেমিস্টারের মাঝখানে কয়েকটা দিন বন্ধ পরলেই মনটা আকুপাকু করে কোথাও থেকে ঘুরে আসতে। দেশের বাইরে সবার‍ই একসাথে বেড়ানোর একটা গ্রুপ থাকে। আত্মীয়হীন প্রবাস জীবনে বন্ধুরাই আত্মীয়, আবার বন্ধুরাই বন্ধু। আমাদের সৌভাগ্য হচ্ছে আমরা ৫-৬ জন বুয়েট থেকে বের হয়ে, ইউনিভারসিটি মালায়া (মালয়শিয়া) তে মাস্টার্স করতে গিয়েছিলাম, আবার সবাই একসাথে অস্ট্রেলিয়া এসেছি পিএইচ ডী করতে। তাই সবাই গত এক যুগ ধরে একসাথে! পার্থক্য শুধু আগে সবাই ব্যাচেলর ছিলাম, এখন সবাই সস্ত্রীক ঘুরতে যাই। এয়ার বি এন বি তে একটা বড়সড় বাসা আগে থেকে সস্তায় বুকিং দিতে পারলে আর কোন চিন্তা নেই। ক্যাঙ্গারুর দেশের এয়ার বি এন বি র বাসা গুলিতে এমনিতেই আরাম আয়েশ আর সময় কাটানোর সব সরঞ্জাম মজুদ থাকে। বিশাল ব্যাকইয়ার্ড, বারবিকিউ, টেবিল টেনিস এসব তো থাকেই, এমনকি কোন কোনটাতে হিটেড সুইমিং পুল থেকে শুরু করে বিলিয়ার্ড পর্যন্ত! সাধারনত যেকোন মোটেলে চাইলেই অতিরিক্ত মানুষ থাকতে পারেনা, এদিক থেকেও এয়ার বি এন বি সুবিধাজনক। কাঁথা বালিশ লেপ তোষকের অভাব নেই, শেষমুহূর্তে ৪-৫ জন ট্যুরে যোগ দিলেও কোন চিন্তা নেই। ঘুরতে গিয়ে গাদাগাদি করে থাকতে না পারলেই বরং শুয়ে শুয়ে গল্প করার আকাঙ্ক্ষাটা অপূর্ণ থেকে যায়, বুয়েটের হল লাইফের হারানো সময়গুলি ফিরে দেখার এমন সুযোগ তো আর হাতছাড়া করা যায়না !

মেলবোর্নের আশেপাশে প্রধান যেই দর্শনীয় স্থানগুলো ছিল, সেগুলো আমাদের কয়েকবার করে দেখা হয়ে গেছে। তাই এবার আশেপাশের বড় উপশহরগুলি দেখা শুরু করেছি। বেন্ডিগো শহরটা মেলবোর্ন থেকে ১৫০ কিমি উত্তর-পশ্চিমে। বসন্তকালে বেন্ডিগোতে টিউলিপ উৎসব হয়। আমার স্ত্রী আগে থেকেই টিউলিপ দেখতে খুব আগ্রহী। তাই বেন্ডিগো যাওয়ার ইচ্ছা আগে থেকেই ছিল। চলতি সেমিস্টারের মাঝখানে যে একসপ্তাহ বন্ধ ছিল (সেপ্টেম্বর ২০১৯) যথারীতি আমি আর অর্প প্রস্তুত। সাধারনত আমরা সব ট্যুরে সস্ত্রীক কমন থাকি। এবার সাথে তাপস ভাই আর রাফি যোগ দিল। সুতরাং সব মিলিয়ে চার পরিবারে ৮ জন। আমি দশ জনের একটা বাসা বুকিং দিলাম। কারন জানি যারা ব্যাস্ত তারা হঠাত করে কাজ ম্যানেজ করে চলেও আসতে পারে! তাপস ভাই আর আমি কি কি দেখার জিনিস আছে তার তালিকা আর কোনটার পর কোনটায় গেলে ভাল হয় তা গুগোল ম্যাপ দেখে পরিকল্পনা করে নিলাম।

২৮ সেপ্টেম্বর শনিবার সকালে আমরা চার পরিবার রওনা হই বেন্ডিগোর উদ্দেশ্যে।গল্প করতে করতে যাব, তাই যার যার গাড়ি না নিয়ে দুইটা গাড়িতে সবাই মিলে চেপে বসেছি। খুব বেশি সময় এর ভ্রমণ না, মোটে ঘন্টা দুয়েক, তারপরেও গল্প করতে করতে গেলে আর একটু ভাগ করে গাড়ি চালালে একেবারেই গায়ে লাগেনা। মেলবোর্নের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন, কিন্তু আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে বেন্ডিগোতে রৌদ্রজ্জল নীলিমার দেখা মিলবে। ঠিক তাই, ঘন্টা খানেক ড্রাইভ করার পরেই অভিমানী মেঘের বিনুনী আর আমাদের বেঁধে রাখতে পারলনা। নীল পাহাড়, সবুজ উপত্যকা আর বিস্তীর্ণ বনভূমির প্রান্তরে সূর্য ঝকমকিয়ে উঠল। সবুজ উপত্যকা ভর্তি সাদা ভেড়া আর কালো গরুগুলো নিশ্চিন্তে ঘাস খাচ্ছে, যেন বিশাল সবুজ চাদরে সাদা কালো ফুটকী। হঠাৎ দিগন্ত বিস্তৃত হলুদ সর্ষে ক্ষেত দেখে আমার স্ত্রী আনন্দে চিৎকার করে উঠল যদি কোনভাবে ক্ষেতের কাছে যাওয়া যায়। আমি সাথে সাথে ফ্রি ওয়ে থেকে এক্সিট নিয়ে নিলাম। চেষ্টা করে দেখা যাক, আমাদের তো আর তাড়া নেই। খানিক যেতেই হলুদের রাজ্য খুঁজে পেলাম। পিছনের গাড়ি ইতোমধ্যে এক্সিট মিস করে সামনে চলে চলে গেছে। ওদের বলা হল গাড়ি ঘুরিয়ে আবার এক্সিট নিয়ে সর্ষে ক্ষেতের কাছাকাছি আসার চেষ্টা করতে। সর্ষেক্ষেতের চারিদিকে কাঁটাতারের বেড়া, কিন্তু রমণীকুলকে থামানো গেলনা। তারা ছবি তোলার জন্য ভিতরে ঢুকে পড়ল। আমরা বাইরে দাঁড়িয়ে রাফির আনার স্যান্ডিউইচগুলোর সদ্গতি করতে করতে তাদের এই অনধিকার প্রবেশের জন্য ভর্ৎসনা করতে লাগলাম!

চিত্র ১ঃ ভ্রমন বিরতিতে আমি আর তাপস ভাই।

সর্ষেক্ষেতে ২০ মিনিট বিরতির পর আবার রওনা হলাম বেন্ডিগোর দিকে। এবার আর কোন থামাথামি নেই। দুপুর বারোটার দিকে বেন্ডিগো শহরে ঢুকে গেলাম। প্রাচীন ইউরোপিয়ান আদলে তৈরি অনেক পুরোনো ঘরবাড়ি চোখে পড়ল। প্রথম গন্তব্য ছিল টিউলিপ উৎসব। কিন্তু যাওয়ার পথে প্রথমেই পড়ল স্যাক্রেড হার্ট ক্যথেড্রাল, যেটার বাংলা করলে দাড়ায় ‘ পবিত্র হৃদয় গির্জা’। এটা এমনিতেও আমাদের দেখার জিনিসের তালিকায় ছিল। এত বড় ক্যাথেড্রাল আমি আগে কখনও দেখিনি, এটা অস্ট্রেলিয়ার তৃতীয় বৃহৎ ক্যথেড্রাল যার নির্মাণ কাজ শুরু হয় ১৮১১ সালে আর শেষ হয় ১৯৭৭ সালে। যেমন বিশাল আকৃতি তেমনি মনোমুগ্ধকর কারুকার্য! পুরোটা এলাকা জুড়ে কেমন শান্তি আর শীতলতা আঁচল বিছিয়ে রেখেছে। ক্যথেড্রালটা যেমন বাইরে সুন্দর, তেমনি ভেতরে। বাইরে চোখ জুড়ানো সব ভাস্কর্য আর ভিতরে অদ্ভুত সুন্দর অসংখ্য ছবি চোখে পড়ার মত। ক্যাথেড্রালের ভিতরের দেয়ালজড়ে যীশুর জন্ম থেকে শুরু করে, ক্রুশবিদ্ধ হওয়া, তারপর আবার অনুসারীদের মাঝে ফিরে আসার ঘটনাগুলোর সব বড় বড় জলরঙ আর তেল রঙ্গের ছবি ঝুলে আছে। যীশুর মূর্তি যে আছে তাতো বলাই বাহুল্য, পিছনের অংশে সিংহাসনের মত একটা চেয়ার চোখে পড়ল, সেটা বিশপের চেয়ার। ক্যাথেড্রালে ঢোকার পরেই একজন স্বেচ্ছাসেবক আমাদের স্বাগতম জানিয়েছিলেন আর জানতে চাইছিলেন আমাদের কোন প্রশ্ন আছে কিনা। আমরা প্রশ্ন করে করে তাকে ব্যাতিব্যাস্ত করে তুললাম। যেমনঃ ক্যাথেড্রাল আর চার্চের মাঝে মৌলিক পার্থক্য কি? বিশপ কিভাবে নির্বাচিত হয়? কতদিন পর পর বিশপ পরিবর্তন হয়? চাইলেই কি বিশপ তার দায়িত্তে ইস্তফা দিতে পারেন কিনা? রোম থেকে পোপের অনুমোদন হয়ে বিশপ নির্বাচনের প্রক্রিয়া কতটা দীর্ঘ ? বিশপ আর ফাদারে পার্থক্য কি? সব বিশপ ই ফাদার কিন্তু সব ফাদার বিশপ নন এমন কোন ব্যাপার আছে কিনা? সপ্তাহে কয়বার এই ক্যাথেড্রালে প্রার্থনা হয়? বেন্ডিগোতে দেখার মত আর কি কি আছে? একসময় সে বললঃ “তোমাদের মত এত কিছু কেউ জানতে চায়না, সবাই ছবি তুলে চলে যায়। তোমাদের আগ্রহ দেখে ভালো লাগল।“ আমরা বললাম “ আমাদের মাঝে ২ জনের মাত্র পি এইচ ডী শেষ হয়েছে আর বাকি দুই জনের এখনও পি এইচ ডী চলতেসে। তাই সব কিছু নিয়েই ঘাটানোটা আমাদের বদভ্যাস, তুমি কিছু মনে করোনা!” ক্যাথেড্রাল দেখতেই ১ ঘন্টা চলে গেল এদিকে আরও অনেক কিছু আছে দেখার,সাথে সাথে খিদেটাও জানান দিচ্ছে। তাই এবার কোন একটা রেস্তোরাঁয় দুপুরের খাবার খেয়ে তারপর আবার ঘোরাঘুরি করা সাব্যস্ত হল।

চিত্র ২ঃ স্যাক্রেড হার্ট ক্যাথেড্রাল

চিত্র ৩ স্যাক্রেড হার্ট ক্যাথেড্রালের সামনে আমরা সবাই

চিত্র ৪ঃ স্যাক্রেড হার্ট ক্যাথেড্রাল

চিত্র ৫ঃ ক্যাথেড্রালের ভেতরের ছবি

চিত্র ৬ঃ ক্যাথেড্রালের ভেতর যীশুর পেইন্টিং

চিত্র ৭ঃ ক্যাথেড্রালের ভেতর যীশুর মূর্তি

ছোট শহরে সুবিধা হল সব একই জায়গায়। যেখানে টিউলিপ উৎসব হচ্ছে, সেখানেই সব রেস্তোরাঁ। ইন্ডিয়ান, চাইনিজ, থাই, টারকিশ, ফাস্টফুড সবই আছে। আমরা টারকিশ রেস্তোরাঁয় (Oya’s Turkish Kitchen) ভরপেট ইস্কেন্দার (মাংশ, ভাত, সালাদ আর টকদই এর একটা প্রিপারেশান) খেয়ে নিলাম। ওহ, আরেকটা কথা বলতে ভুলে গিয়েছিলাম। সুবীর ভাই আমাকে আগেরদিন রাতেই বলে রেখেছিল যে সে আর বৌদি আমাদের সাথে যোগ দেবে, কিন্তু আমি যাতে, কাউকে না বলি। সকাল থেকেই সুবীর ভাই এর সাথে আমার মোবাইলে ক্ষুদেবার্তা আদানপ্রদান হচ্ছিল। তারা আমাদের আরও ৩০ মিনিট আগেই বেন্ডিগো পৌঁছে গিয়েছিল। আমরা সর্ষে ক্ষেত দেখতে গিয়ে দেরী করে ফেলেছি। আমি সুবীর ভাইকে বলেছিলাম টিউলিপ উৎসব যেখানে হচ্ছে সেখানে অপেক্ষা করতে, তারপর সবার সাথে মুখোমুখি দেখা হবে আর সবাই সারপ্রাইজড হবে! হলও তাই, টিঊলিপ উৎসবে ঢুকেই সবার সুবীর ভাইদের সাথে দেখা হল, সবাই অবাক! আমরা জানালাম যে এক্সট্রা ২-৪ জন থাকা কোন ব্যাপারই না, সেভাবেই এয়ার বি এন বি বুকিং করা আছে, সুতরাং আজকে আপনাদের মেলবোর্ন ফিরে যাওয়া হবেনা।

চিত্র ৮ঃ টিউলিপের রাজ্য

চিত্র ৯ঃ টিউলিপের রাজ্য

চিত্র ১০ঃ টিউলিপ চত্বর

চিত্র ১১ঃ টারকিশ রেস্তোরাঁয় খাওয়া ইস্কেন্দার।

টিঊলিপ উৎসব বেন্ডিগোর সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের সাথে নিবিড়ভাবে মিশে আছে। টিঊলিপ এর বাগানটা বেন্ডিগো শহরের ঠিক মাঝখানে বলা চলে, একপাশে আলেকজান্দ্রিয়া ফাউন্টেন আর বেন্ডিগোর ঐতিহ্যবাহী ট্রামের প্রতিকৃতি, অন্যপাশে রানী ভিক্টোরিয়ার মূর্তি আর বেন্ডিগো ভিসিটরস সেন্টার। টিউলিপ বসন্তের শুরুতে খুব কম সময়ের জন্য ফোটে। বন্য টিউলিপ বছরের পর বছর ফোটে কিন্তু চাষ করা টিউলিপ সাধারণত প্রতি বছর নতুন করে লাগাতে হয়। সাধারনত টিউলিপ ভালোবাসার প্রতীক। আবার কোন কোন সংস্কৃতিতে টিউলিপের বর্ণভেদে তা বদলেও যায়, যেমনঃ লাল টিউলিপ ভালোবাসার প্রতীক, বেগুনী টিউলিপ আভিজাত্যের প্রতীক ইত্যাদি। সে যাই হোক, টিঊলিপ দেখতে আসার চেষ্টা বৃথা গেলনা। একসাথে সাড়ে তিন- চার হাজার টিউলিপ দেখার সুযোগ হল। হলুদ, লাল, গোলাপী, কমলা, বেগুনী নানা রঙের আচ্ছাদনে ঢাকা বর্ণীল বেন্ডিগো আর দেশীবিদেশী পর্যটকে মুখর টিউলিপ চত্বর। চত্বরের পাশ দিয়ে খট খট শব্দ তুলে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে পুরোনো কাঠের ট্রাম, ঝিরঝির করে পড়ছে আলেকজান্দ্রিয়া ফাউন্টেনের পানি, আর বাতাসে মাথা দোলাচ্ছে রূপসী টিঊলিপ, সবাই যেন বেন্ডিগোর উৎসবমুখর সংস্কৃতির জীবন্ত স্বাক্ষী।

চিত্র ১২ঃ রানী ভিক্টোরিয়ার মূর্তি

চিত্র ১৩ঃ বেন্ডিগো ভিসিটরস সেন্টার

চিত্র ১৪ঃ বেন্ডিগোর ট্রাম

চিত্র ১৫ঃ আলেকজান্দ্রিয়া ফাউন্টেন

টিউলিপ চত্বরেই দুপুর গড়িয়ে বিকাল হয়ে গেলে এরপর আমরা গেলাম সেদিনের শেষ গন্তব্য লেইক উইরুনাতে। লেক উইরুনা বেন্ডিগোর মুকুটের মণি, অন্তত স্থানীয়রা তা-ই বলে। কারন ১৮৭০ সালের আগ পর্যন্ত এই এলাকা ছিল ধুলায় ধুসরিত কয়লা আর স্বর্ণখনি। ১৮৭০ সালে প্রায় ১৮ হেক্টর জমির উপর এই নয়নাভিরাম লেইক আর লেইকের কোল ঘেঁসে উদ্যান নির্মাণ করা হয়। শহরের কেন্দ্র থেকে মাত্র ৫ মিনিট ড্রাইভ করেই লেইক এ পৌঁছে গেলাম। বসন্তের বিকেল, একটু শীত শীত লাগছিল, একই সাথে পড়ন্ত রোঁদ তখনও কিছুটা উষ্ণতা ছড়াচ্ছিল। লেইক সংলগ্ন সবুজ ঘাসে কিছুক্ষন গড়িয়ে নিয়ে লেইকের পাড়ে মেয়েদেরকে রেখে আমরা বাজার করতে গেলাম। এর আগে যতবার ঘুরতে যাওয়া হয়েছে, রাতে বাসা থেকে আনা খাবার খেয়েছি, ফলে ৪-৫ আইটেম দিয়ে ভুরিভোজ হয়েছে, ঘুরাঘুরির কিছু শক্তি এই গুরুভোজন হজম করতে নষ্ট হয়ে গেছে। এইবার আগে থেকেই সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল যে আমরা হাল্কা কিছু রান্না করব। ডিনারে রাফি খিচুরি-ডিম ভাজি রাঁধবে, আমরা হেল্পার। ডিনার আর পরদিন সকালের নাস্তার জন্য প্রয়োজনীয় রসদ সংগ্রহ করে আমরা লেইক এ ফিরে গেলাম। সেখান থেকে মেয়েদেরকে গাড়িতে তুলে সোজা এয়ার বি এন বি থেকে বুক করা আশ্রয়ে।

চিত্র ১৬ঃ লেইক উইরূনা

চিত্র ১৭ঃলেইক উইরুনাতে আমাদের বানর প্রতিভা প্রদর্শন

ভাড়া করা বাসাটায় ঢুকেই মেয়েরা ঝাপিয়ে পড়ল বাসার কোথায় কি কি আছে আবিষ্কার করতে। আমরা রাতের খাবার তৈরিতে লেগে গেলাম। রাফি আর সুবীর ভাই মাস্টার শেফ। আমি অরপ আর তাপস ভাই শেফের চ্যালা। খিচুড়ি আর ডিম ভাজি রান্না হবে। যেহেতু ডিম ছাড়া খিচুড়ির সাথে আর কিছু নাই, তাই ৩৬ টা ডিম কেনা হয়েছে। আট জন মানুষের জন্য ছত্রিশটা ডিম! তারপরেও আমাদের ধারনা কম পড়ে যাবে, কারন ঘুরতে গেলে সবসময়ই খিদে লাগে বেশি। যাই হোক এত মানুষের খিচুড়ি একসাথে রাঁধতে গিয়ে ভুনা খিচুড়ি একটু নরম হয়ে গেল, কিন্তু স্বাদের কমতি হয়নি, গুরুভোজন এবারও এড়ানো গেলনা। খেয়ে দেয়ে আমরা সবাই মিলে টিভি দেখতে বসেছি। এক এক জন, এক এক জিনিস নিজের মোবাইল থেকে টিভিতে কাস্ট করতে চেষ্টা করছে। জানি কিছুই দেখা হবেনা, আগেও কখনও হয়নি, কারন কেউ হরর দেখতে চাইলে আরেকজন কেউ কমেডি দেখতে চায়, কেউ কমেডি দেখতে চাইলে আরেকজন অ্যাকশন মুভি দেখতে চায়, এতজন বাঙালি একসাথে কবেই বা একমত হতে পেরেছে!অবশ্য মুভি তো হরহামেশাই দেখা হয়, ঘুরতে আসার আরেক প্রধান উদ্দেশ্য হল আড্ডা দেয়া, সেটাই জয়যুক্ত হচ্ছে এবং আগেও হয়েছে। এইসময় স্ত্রী পুত্র নিয়ে জয়নুল আবেদীন উপস্থিত! জয়নুল সেদিনই সকালে ফিনল্যান্ড থেকে কনফারেন্স করে মেলবোর্ন ফিরেছে। দুপরটা বিশ্রাম নিয়ে সে বিকালে রওনা দিয়ে পরিবারসমেত হাজির। সবাই দ্বিতীয় ধাক্কায় সারপ্রাইজড। আটজনের জায়গায় এখন আমরা সাড়ে বার জন। জুনিয়র আবেদীন সবার পায়ে পায়ে দৌড়াচ্ছে। জয়নুলের ফিনল্যান্ড থেকে আনা চকলেটের উপর সবাই ঝাঁপিয়ে পড়ল। আসলে ২-৩ জন মিলে কোথাও ঘুরতে গেলে হয়ত সত্যিকার অবকাশযাপন হয়, প্রকৃতিকে আরও নিগুঢ়ভাবে অনুভব করা যায়, কিন্তু আনন্দ করতে চাইলে বেশি মানুষের কোন বিকল্প নেই, যত হৈ চৈ তত আনন্দ! রাত বারটা পর্যন্ত উনো আর ডাম্ব শারাড খেলেই কাটল। ডাম্ব শারাডে মেয়েরা বিশাল ব্যাবধানে জয়ী, আমরা এমন ভাব করলাম যে আমরা ইচ্ছা করে হেরেছি। আসলে আমরা গাধামি করে হেরেছি।

বাসায় ঢোকার সময়ই দেখেছিলাম বাসার উল্টোদিকে খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের বিশাল কবরস্থান। জুনিয়র আবেদিন কে তার মা-খালাদের সাথে বাসায় রেখে আমরা রাত বারটার পর আমরা বের হলাম ভূত দেখতে! নির্জন রাস্তা, অন্ধকার কবরস্থান, তার উপর কুয়াশা জমাট বেঁধে আছে, আমরা প্রায় আধঘন্টা কবরস্থানের চারিদিকে হাটাহাটি করলাম। ভুত তো দূরে থাক, একটা প্যাঁচাও দেখা গেলনা। এই বৈদ্যুতিক ল্যাম্পপোস্টের আলোতে, পাঁচ জন ভুতের চেয়ে ঢের বিপদজনক প্রানীর (মানুষ) হৈ চৈ এর মাঝে ভূতেদের বয়েই গেছে দেখা দিতে ! হতাশ হয়ে বাসায় ফিরে গিয়ে বসলাম ২৯ খেলতে, আধঘন্টা পর শরীরে আর কুলালোনা, সবাই চিৎপটাং হয়ে ঘুম।

পরদিন সকালে উঠে ডিম ভাজি-পাউরুটির স্যান্ডউইচ আর আগের দিনের বেঁচে যাওয়া খিচুড়ি দিয়ে প্রাতরাশ শেষ করে তাড়াহুড়া করেই বেরোতে হল, কারন সকাল ১০ টার মাঝে চেক আউট করতে হবে। পরদিনের প্রথম গন্তব্য ছিল “দি গ্রেট স্টুপা অফ ইউনিভার্সাল কম্প্যাশান” বৌদ্ধ মঠ, ড্রাইভ করে গেলে আমাদের আস্তানা থেকে ২৫ মিনিটের মত দুরত্তে ছিল। মঠের প্রবেশদ্বারে পৌছনোর আগেই ল্যাভেন্ডার, রোজমেরি, নানা ধরনের ফল আর চেরি ফুলের বাগান আর বাগানের ফাঁকে ফাঁকে ছোট বড় অনেক মূর্তি চোখে পড়ল। এই মঠটা মুলত চায়নার ৬০০ বছরের পুরোনো গ্রেট স্টুপা আফ গিয়ান্টসে এর আদলে এখনও নির্মাণাধীন। পুরোটা নির্মাণ করতে আরও প্রায় ৪০ বছর সময় লাগবে, প্রায় ২ কোটি ডলারের প্রোজেক্ট। এসবই জানতে পারলাম মঠের ভেতরের স্বেচ্ছাসেবকের কাছ থেকে, সে আমাদের গাইড হয়ে মন্দিরটা ঘুরিয়ে দেখালো আর মূর্তিগুলো কার, কি দিয়ে তৈরি আর কোথা থেকে মূর্তি বানানোর উপাদান সংগ্রহ করা হয়েছে তা বর্ণনা করল। বুদ্ধের মূর্তির পাশাপাশি বুদ্ধের পুরুষ অবতার (পাদ্মাসাম্ভাবা) আর নারী অবতারের (তারা) মূর্তিও রয়েছে। তিব্বতিয়ান বৌদ্ধমতে বুদ্ধের নারী অবতারের নাম তারা, যিনি স্বাধীনতা, সফলতা আর অর্জনের দেবী। এই বৌদ্ধমঠে বুদ্ধের নারী অবতারের ২ টি মূর্তি আছে “গ্রীন তারা আর হোয়াইট তারা”। গ্রীন তারা মূর্তিটা কানাডিয়ান জেড পাথরের তৈরি, একই পাথরের একটা লকেট আমাদের গাইডের গলায় ঝোলানো। ভিয়েতনাম থেকে আনা সাদা মার্বেলের তৈরি আরেকটা বিশাল বৌদ্ধ মূর্তি (২ টন ওজন) দেখলাম তার আবার বুকের নিচের অংশ পায়ের সাথে এখনও জোড়া লাগানো হয়নি। এছাড়া আছে তিব্বত থেকে সংগ্রহ করা তলোয়ার আর আর তিব্বতি দৈত্যাকার বাঁশি, আমাদের গাইড সে বাঁশি আবার বাজিয়ে দেখালো, গাইডের যেমন হালকা পাতলা চেহারা, কিভাবে এই বাঁশি বাজানোর দম পেল কে জানে! মঠ থেকে বের হয়ে মঠের বাগানে কিছুক্ষন ফটোসেশন চলল, তারপর পরবর্তী গন্ত্যব্যের দিকে রওনা হলাম। একসাথে ১২.৫ জন মানুষ দ্রুত এক জায়গা দেখা শেষ করে আরেক জায়গায় চলে যাওয়া খুব একটা সহজ না, কিন্তু তারপরেও আমরা মনে হয় দ্রুতই সেটা করতে পেরেছিলাম।

চিত্র ১৮ঃ বুদ্ধমূর্তি আর দৈত্যাকার বাঁশি

চিত্র ১৯ঃ বুদ্ধের পুরুষ অবতার

চিত্র ২০ঃ বুদ্ধের স্ত্রী অবতার

চিত্র ২১ঃ বুদ্ধ মূর্তি আর বাইরের বাগানের কিছু ভাস্কর্য

চিত্র ২২ঃ ২০ টন ওজনের বুদ্ধমূর্তির ঊর্ধ্বাংশ

চিত্র ২৩ঃ ২০ টন ওজনের বুদ্ধমূর্তির নিম্নাংশ

Blowing horn video.mp4

ভিডিও ১ঃ আমাদের গাইড/মন্দিরের স্বেচ্ছাসেবক বাঁশি বাজাচ্ছেন

আমাদের পরবর্তী গন্ত্যব্য ছিল ১৫০ বছরের পুরোনো বেন্ডিগো পটারি। সেই ১৮৫৮ সাল থেকে বেন্ডিগোর কুমোররা এখানে মাটির তৈজসপত্র, মাটির অলংকার, ঘর সাজানোর জিনিস ইত্যাদি তৈরি করে আসছে। পটারিটা বেন্ডিগোর অন্যতম পর্যটক আকর্ষণের জায়গা বলে বর্তমানের অবস্থা দেখলাম বেশ সাজানো গোছানো। ঢোকার মুখেই ছোট একটা দোকান যেখানে পাথর আর পুতি আগুনে গলিয়ে একজন শিল্পী অলংকার তৈরি করছেন আর সবাই ঘিরে রেখে তাঁর নিপুন হাতের কাজ দেখছে। চারিদিকে পাথর আর পুতির বর্ণিল সব অলংকার বিক্রির জন্য রাখা আছে।

চিত্র ২৪ঃ পুতি গলিয়ে অলংকার তৈরি করছেন অলংকার শিল্পী আর কুমোরেরা তৈরি করছেন মাটির জিনিস

সেখান থেকে বের হয়ে ঢুকলাম মুল ভবনে। ঢুকতেই হাতের ডানপাশে একটা ছোট কফি শপ, বামপাশে মাটির জিনিসের দোকান, থরে থরে মাটির আসবাব সাজানো, কোন জিনিসের দামই খুব সস্তা নয়। দোকানের মাঝখানে দেখলাম প্রাচীনকালে যেভাবে বিশাল ঘরের মত উনুনে মাটির জিনিস পোড়ানো হত, সেই চুল্লিটা অক্ষত অবস্থায় সংরক্ষন করা আছে। এককোনায় হাতে আঁকা পেইন্টিঙ্গের দোকান, বেন্ডিগোর স্থানীয় শিল্পীদের আঁকা ছবি বিক্রির জন্য ঝোলানো আছে। ভবনের ভিতর দিকে ঢুকলে মাঝখানে একটু ফাঁকামত জায়গা, যেখানে কুমোররা কাদামাটি থেকে আসবাব তৈরি করছে, সুতরাং স্বচক্ষে ব্যাপারটা দেখার সুযোগ হল। এই ফাঁকা জায়গাটা পেরোলেই আরেকটা বিশাল দোকান যেটাতে সব এন্টিক জিনিস সাজানো। সব জিনিসই যে খুব পুরনো তা নয়, তবে ১৫০-২০০ বছর আগের জিনিসও আছে দেখলাম। পুরো পটারিটা দেখে মনে হল একদিকে যেমন আধুনিক নকশা, মানুষের রুচি, দোকান সাজানোর ভঙ্গি আর প্রযুক্তিকে বরন করে নেয়া হয়েছে, তেমনি পুরনো নকশা আর ঐতিহ্যকেও খুব সফলভাবে পাশাপাশি স্থান দেয়া হয়েছে, একটার জন্য আরেকটার কোন ক্ষতি হয়নি।

চিত্র ২৫ঃ প্রাচীন মাটির জিনিস তৈরির উনুন

চিত্র ২৬ঃ মাটির তৈজসপত্র

বেন্ডিগোর প্রথম দিনটা যেমন রৌদ্রোজ্জ্বল ছিল, পরের দিনটা ততটা রৌদ্রজ্জ্বল ছিল না বটে, কিন্তু থেকে থেকেই সূর্যের দেখা মিলেছে। পটারিতে ঘুরে একটু খিদে খিদে লাগছিল, তাই একপ্রস্থ স্যান্ডউইচ খাওয়া চলল। সেখান থেকে আমরা গেলাম বেন্ডিগো বোটানিক্যাল গার্ডেন। গার্ডেনটা হাঁটা, দৌড়ানো আর বাচ্চাদের খেলার জন্য ভালো। রবিবার বলেই বোধহয় দেখলাম বাচ্চাকাচ্চায় ভর্তি। বাবা-মা রা ছুটির দিনে এদেরকে এখানে খেলতে নিয়ে না আসলে এরা যে ঝামেলা করে তা বেশ বোঝা গেল। আমার স্ত্রী আবার এক অস্ট্রেলিয়ান মহিলার সাথে গল্প জুড়ে দিল, সেই দম্পতিও বাচ্চাদেরকে খেলতে নিয়ে এসেছে। তারা সম্প্রতি বেন্ডিগোতে বাড়ি কিনে দুইজন-ই বেন্ডিগোতে চাকরী নিয়ে চলে এসেছে, আগে মেলবোর্ন থাকত। তারা বলল ঃ এখন আরও অনেক বেশি ফ্রি-টাইম পাওয়া যায়। যখন মেলবোর্নে ছিলাম তখন ট্রেনে অফিসে যেতে আসতেই ১ ঘণ্টা করে ২ ঘন্টা চলে যেত। অস্ট্রেলিয়ানরা কোলাহল থেকে যত পারে দূরে পালায়, বাচ্চাকে দেশের সবচেয়ে ভাল স্কুল/কলেজে পড়ানোর জন্য শহরের কাছে থাকতে হবে, কিংবা মানুষ না দেখলে ভালো লাগেনা এই ব্যাপারগুলো একান্তই আমাদের সম্পত্তি!

চিত্র ২৭ঃ ফ্রোজেন ইয়গরট

বোটানিক্যাল গার্ডেন দেখার পর ক্ষুধায় সবার পেট চোঁ চোঁ। ঠিক হল ইন্ডিয়ান খাবার খাওয়া হবে। সুতরাং আবার সেই টিউলিপ চত্বরের দিকে রওনা দিলাম, যেখানে সব খাবারের দোকান এক জায়গায়। দুর্ভাগ্যবশত সব ইন্ডিয়ান দোকানগুলোই বন্ধ, বিকেলে খুলবে, হয়ত ছোট শহরে বিকেল বা রাতে মানুষ বেশি খেতে আসে, সারাদিন খুলে রাখলে ওদের পোষায়না । অগত্যা আবার সেই টারকিশ দোকান, গতকাল যারা দুপুরে সেখানে খায়নি, তাদের টারকিশ খাবার চেখে দেখার সুযোগ হল। খাওয়া দাওয়ার পর একটা আইস্ক্রিম পার্লারে ঢুকে ফ্রোজেন ইয়োগরট খেলাম। ছোট/ বড় কাপ, কাপের আকৃতির উপর দাম। তিন ফ্লেভারের ফ্রোজেন ইয়োগরট ছিল, স্ট্রবেরী, ব্লুবেরী আর ভ্যানিলা, উপরে গারনিশের জন্য ১০-১৫ রকম টপিং। ওরা খালি কাপ দিয়ে দেয়, এরপর সেলফ সার্ভিস যতখুশি ঠেসে ঠেসে নাও, কেউ কিছু বলবেনা! বেন্ডিগোর ফ্রোজেন ইয়োগরট খুবই মজা ছিল, মেলবোর্নে এমন ফ্রোজেন ইয়োগরট খেয়েছি বলে মনে হলনা। খাওয়া দাওয়া শেষ করতে করতে প্রায় বিকেল হল, মেলবোর্ন ফিরতে হবে, পরদিন থেকে আবার সবার কাজ শুরু। টিউলিপ চত্বর পেছনে রেখে আমরা মেলবোর্নের দিকে গাড়ি ছোটালাম, পেছনে পড়ে রইল বেন্ডিগো, পড়ে রইল রঙ্গিন টিউলিপ আর পুরোনো কাঠের ট্রামের খট খট, খট খট …

ফাইল: 

You are missing some Flash content that should appear here! Perhaps your browser cannot display it, or maybe it did not initialize correctly.


মন্তব্য

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

গুড জব বাবা! লেখা পোস্ট করার আগে স্পেলচেকার দিয়ে আরেক দফা চেক করে নিও। আমার অভিজ্ঞতা বলে একটা বড় অংশ লোকে লম্বা ব্লগ পড়তে অনাগ্রহ বোধ করেন। তাই একটা ভ্রমণ লিখতে গয়ে যদি দেখো বেশি লম্বা হয়ে যাচ্ছে তাহলে সেটাকে একাধিক, স্বতন্ত্র-স্বয়ংসম্পূর্ণ পোস্ট হিসেবে দেবার কথা ভেবে দেখতে পারো। ব্যস্ততা জীবনে থাকবেই, তবু তার ফাঁকে লেখার সময় বের করতে হবে। গ্রাফিন নিয়ে আরও লেখা আশা করছি।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সৌখিন  এর ছবি

ভেঙ্গে ভেঙ্গে লেখার পরামর্শটা ভালো, ধন্যবাদ। স্পেল চেকার ডাউনলোড করব। অনেক কিছু আমি ওয়ার্ড এ বানান ঠিক লিখি। কিন্তু সেটা কপি করে সচলায়তনে ব্লগ লেখার স্থানে পেস্ট করলে আবার পরিবর্তন হয়ে যায়। স্পেল চেকার কি সচলে পেস্ট করার পর ভূল ধরে দিতে পারবে? নাকি কম্পিউটারের ভিতরের সফটওয়্যারকেই শুধু কব্জা করতে পারে?

এক লহমা এর ছবি

তিনদিনের ছুটি পেয়ে তার প্রথম রাত্তিরে এই লম্বা কিন্তু চমৎকার লেখাটা পড়ে ফেলা গেল। লেখা-ছবি দুই-ই ভাল লেগেছে।

এই দল বেঁধে ঘুরতে যাওয়াটা অতি আনন্দের। এইটাই বাকি দিনগুলোর চাপকে সামলে দ্যায়। হাড়ে যখন আরো জোর ছিল, আমরাও এটা করতাম। আপনাদের কর্মকান্ডের বর্ণনা আমাদের দিনগুলোর কাছাকাছিই পেলাম। হাসি যদ্দিন পারেন, চালিয়ে যান। হাততালি

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সৌখিন  এর ছবি

ধন্যবাদ কষ্ট করে পড়ার জন্য। আমাদের এখানকার অগ্রজরাও একই রকম কথাই বলেছেন। চেষ্টা করব চালিয়ে যেতে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।