মোহাম্মদ আশরাফুলকে যেসব কারনে বাংলাদেশ দলে রাখা জরুরী

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: রবি, ২৩/০১/২০১১ - ১০:১৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বিশ্বকাপ ক্রিকেট ২০১১ তে অংশগ্রহনকারী বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের দল ঘোষিত হয়েছে।খুব স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশ দলে জায়গা পেয়েছেন পরপর দুটি বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন উৎপল শুভ্র কর্তৃক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত স্বাধীনতাউত্তর বাংলাদেশের একমাত্র "বিগ ম্যাচের প্লেয়ার" মোহাম্মদ আশরাফুল।ব্যাপারটি এখানেই শেষ হতে পারতো।কিন্তু হয়নি কিছু সন্দেহপ্রবন অর্বাচীন বাঙ্গালীর জন্য, সব কিছু নিয়ে খুঁতখুঁত করা ছাড়া যাদের সকালে বিছানা থেকে গাত্রোত্থানের পর থেকে রাতে একই বিছানায় গা এলিয়ে দেয়ার মধ্যবর্তী সময়টুকুতে যাদের অন্য কোন কাজ নেই।এসব অর্বাচীনদের থোতা মুখ ভোঁতা করে দেয়ার জন্য কিছু যুক্তি খুঁজে বের করতেই হলো, যার মাধ্যমে অকাট্যভাবে প্রমান করা যাবে মোহাম্মদ আশরাফুলের বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দলে অন্তর্ভুক্তি শিরোধার্য ছিল।নিচে সেই যুক্তিগুলোই এক এক করে উপস্থাপন করা হলো।

১।মোহাম্মদ আশরাফুল বাংলাদেশ দলের একমাত্র স্বীকৃতিপ্রাপ্ত "বিগ ম্যাচের প্লেয়ার"।আর বিশ্বকাপের প্রতিটি ম্যাচ যে বিগ ম্যাচ, তা ছাগলেও জানে, পাগলেও মানে।অতএব মোহাম্মদ আশরাফুলকে বিশ্বকাপের প্রতিটি ম্যাচে খেলাতেই হবে।তা না হলে ঐ "বিগ" শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত "বিগ" ম্যাচের স্নায়ুক্ষয়ী "বিগ" চাপ সামলাতে না পেরে বাংলাদেশ দলের বাদবাকী "লিলিপুট" খেলোয়াড়রা যে মাঠ ছেড়ে পালিয়ে যাবেন না, সে নিশ্চয়তা কেইবা দিতে পারে?

২।আশরাফুল শুধু বিগ ম্যাচের প্লেয়ারই নন, তিনি একজন বিগ হিটারও বটেন।কোন একটি ম্যাচে আশরাফুলকে দেখেছিলাম প্রথম বলেই ছক্কা মেরে পরের বলে আউট হয়ে যেতে।সুতরাং সেদিন তার স্ট্রাইক রেট ছিল ৩০০।এই স্ট্রাইক রেট যদি তিনি বিশ্বকাপে বজায় রাখতে পারেন, তাহলে বাংলাদেশ দলের বিপক্ষে প্রতিপক্ষ যত রানই করুক না কেন দর্শকদের চিন্তার কিছুই নেই।এমনকি প্রতিপক্ষ দল যদি প্রথমে ব্যাট করে ৫০২ রানও করে ফেলে তাতেও চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই, কেননা আশরাফুল যদি ওপেনিং করতে নেমে ১০০ বলে ৩০০ রানের ইনিংস খেলে আউটও হয়ে যান তারপর কি পুরো বাংলাদেশ দল মিলে বাকী ২০০ বলে ২০৩ রান করতে পারবেনা? ১০০ বলে ৩০০ রান করতে আশরাফুলের মোটেই তকলিফ হবার কথা নয়, কেননা ৫০ টি ছক্কা মারলেই তো ৩০০ রান হয়ে যায়, প্রতিটি ছক্কা মারার পর বিশ্রাম করার জন্য ১ টি বল তো হাতে আছেই, নাকি?!!

৩।অনেকে আশরাফুলের স্বল্প উচ্চতাকে "খাটো" চোখে দেখে থাকেন।কিন্তু আশরাফুলের এই স্বল্প উচ্চতাও কিন্তু বাংলাদেশ দলের জন্য আশীর্বাদ হয়ে দেখা দিতে পারে।বিশেষ করে দুটি ক্ষেত্রে এই উচ্চতা খুবই গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখতে পারে।

প্রথমত, বাংলাদেশ দলের বিপক্ষে প্রথম রাউন্ডে দেখা হবে ভারত ও দক্ষিন আফ্রিকার।ভারত দলে আছেন মহামতি জহির খান এবং হরভজন সিংহ, এছাড়াও দক্ষিন আফ্রিকা দলে রয়েছেন ডেল স্টেইন ও তার সহযোগী দ্রুতগতির বোলাররা।খোদা না করুক, এরা যদি তাদের প্রত্যাশিত সুইং বা স্পিন পেয়ে যান? তাহলে দেখা যাবে বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যানেরা ক্যাচ আউটের হাত থেকে রক্ষা পেতে ব্যাটের বদলে পা দিয়ে ব্যাটিং করা শুরু করেছেন এবং এলবিডব্লিউ হয়ে লাইন ধরে প্যাভিলিয়নে ফেরা শুরু করেছেন।এ অবস্থায় বাংলাদেশ দলের রক্ষাকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হতে পারেন কেবল একজনই, ওই আশরাফুল।আশরাফুল এমনিতেই খাটো, তিনি যদি একটু কুঁজো হয়ে বা হাঁটু গেড়ে ব্যাটিং করেন, তাহলে দেখা যাবে প্রতিটি বল তার প্যাডে লাগার বদলে হেলমেটে গিয়ে লাগছে।আম্পায়াররা নিশ্চয়ই এত বড় পাষন্ড নন, যে হেলমেটে লাগা বলেও এলবিডব্লিউ দিয়ে বসবেন!!

দ্বিতীয়ত, আধুনিক একদিনের ক্রিকেটে প্রতিটি ওভারে একটি বাউন্সার দেয়া জায়েয আছে।ওদিকে দক্ষিন আফ্রিকা দলে রয়েছেন মরনে মরকেলের মত পাহাড়সম উচ্চতার পেস বোলাররা, যাদের খুব সাধারন লো একটি বলই আশরাফুলের কাঁধ ছুঁয়ে যাবে।অতএব মরকেলের করা ওভারের বাউন্সার বলটি যে আশরাফুলের মাথার উপর দিয়ে যাবে তাতে অবাক হবার কিছু নেই।এছাড়াও আশরাফুল একটু মাথা নিচু করে ব্যাট করলে ওভারে চার/পাচটি ওয়াইড আদায় করা মোটেই কঠিন কোন কাজ হবেনা।অতএব দেখা যাচ্ছে আশরাফুল একটু মাথা নিচু করলেই ওভারে ৪/৫ রান হয়ে যাচ্ছে, রানের চাকা চালু রাখার উদ্দেশ্যে সামান্য একটি রান করার জন্য ব্যাটসম্যানদের আর ২২ গজ অর্থাৎ ৬৬ ফিট দৌড়াতে হচ্ছেনা ।এই ব্যাবস্থা থাকায় দলের কোন ভালো ব্যাটসম্যান যদি কঠিন বাতে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তিনিও ব্যাটিং করতে পারবেন এবং দলের সুস্থ্য সবল খেলোয়াড়েরা ব্যাটিং এর সময় সঞ্চিত হওয়া এই শক্তি ব্যবহার করে পরবর্তীতে ফিল্ডিং এর সময় পাগলা ঘোড়ার গতিতে দৌড়াতে পারবেন, এমনকি থার্ডম্যানে দাঁড়ানো ফিল্ডার এক দৌড়ে মিডউইকেটে গিয়ে একটি নিশ্চিত বাউন্ডারির হাত থেকে দলকে রক্ষা করতে পারবেন।

৪।সম্প্রতি বাংলাদেশ দলের বোলিং প্রশিক্ষক হিসেবে এসেছেন পন্টুন সাহেব।তিনি নাকি দলের পেস বোলারদের "স্লোয়ার" বল শেখাচ্ছেন।তিনি যদি পেস বোলারদের স্লোয়ার বল শেখাতে পারেন তাহলে আশরাফুল, যে কিনা এমনিতেই স্লো বোলার তাকে নিশ্চয়ই "সুপার স্লোয়ার" বল শেখাতে পারবেন? সুপার স্লোয়ার বলটি এতই ধীরগতির হবে, যা ব্যাটসম্যান শট খেলে ফেলারও ২/৩ সেকেন্ড পরে গিয়ে স্ট্যাম্প ভেঙ্গে দেবে... ব্যাস!! কেল্লা ফতে!!

৫।সর্বোপরি আশরাফুলকে দলে নিলে যে শুধু বাংলাদেশই উপকৃত হবে তাই নয়, অন্যান্য দলও উপকৃত হবে।যেহেতু আশরাফুলের প্রায় প্রতিটি ক্যাচই স্লীপে যায়, তাই প্রতিপক্ষ দল তাদের স্লীপ ফিল্ডারদের সামর্থ পরীক্ষা করার সুযোগ পাবে, ফলশ্রুতিতে প্রতিপক্ষ দলের স্লীপে ফিল্ডিং হবে বিশুদ্ধ পানির মতোই নিখুঁত।

এরকম আরো অনেক কারনই বলা যায়, কিন্তু সমালোচকদের থোতা মুখ ভোঁতা করে দিতে আপাতত এটুকুই যথেষ্ট হবে।এরপরও যদি কোন সমালোচক বেশি তেড়িবেড়ি করেন, তাহলে আরো যুক্তি খুঁজে বের করা যাবে।

পলাশ মুস্তাফিজ


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

অফ যা
মশকারী গুলা যুইতের লাগলো না মন খারাপ

ধৈবত

অতিথি লেখক এর ছবি

আশরাফুলের ব্যাপারস্যাপার... যুইত লাগার কথাও না...

পলাশ মুস্তাফিজ

অনুপম ত্রিবেদি এর ছবি

আমার মনে হয় আরও একটু সময় নিয়ে লেখলে ভালো হতো। লেখাটা মজার হতে হতে আর হয়ে উঠেনি।

একটু বেশি সময় নিয়ে আর একটু গুছিয়ে লিখলেই অনেক কিছু হয়ে যেতো, ভায়া। তবে যুক্তি গুলো মজার।

চালিয়ে যান।

==========================================================
ফ্লিকারফেসবুক500 PX

অতিথি লেখক এর ছবি

আসলেই খুব তাড়াহুড়ো করে লেখা হয়ে গেছে... তাছাড়া নতুন শুরু করেছি।মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

পলাশ মুস্তাফিজ

রেশনুভা এর ছবি

স্থূল মনে হল লেখাটা। তবে এ যাত্রা বেনিফিট অব ডাউট লেখকের পক্ষেই থাকলো।

অতিথি লেখক এর ছবি

শুধু স্থুল নয়, বলুন গাঁজাখুরি।তারপরও বেনিফিট অব ডাউট দেয়ায় ধন্যবাদ।

পলাশ মুস্তাফিজ

মুস্তাফিজ এর ছবি

এই সমালোচনাটা আমার পছন্দ হয়নি।
আশরাফুল কে পছন্দ করিনা, মানে তার ইদানীং কালের খেলা আশরাফুলীয় নয় বলেই। বিশ্বকাপে আশরাফুলের বিকল্প যাকে ভাবা হচ্ছিলো সেই কাপালীর অবস্থাও তথৈবচ, সেই হিসাবে আশরাফুল দলে থাকা আর কাপালী থাকা সমান কথা।

...........................
Every Picture Tells a Story

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনি আশরাফুল সমর্থক হলে তো সমালোচনা ভালো লাগার কথা নয়।আশরাফুলের বদলে কাপালীকে নিলে আমার মনে হয় একটু বেটার হতো, ৮ নাম্বারে ব্যাটিং করার পাশাপাশি বোলিং ফিল্ডিংএও ভালো করতে পারতো।

পলাশ মুস্তাফিজ

মুস্তাফিজ এর ছবি

না, আমি আশরাফুলের সমর্থক না, বা কোন ফুলের সমর্থকও না। আপনার সমালোচনা অনেকটা ব্যক্তি আক্রমনের কাছাকাছি সেটাই বলতে চেয়েছি।

...........................
Every Picture Tells a Story

অতিথি লেখক এর ছবি

আশরাফুলের খেলা দেখলে মেজাজ খারাপ হয়ে যাওয়াটা ব্যক্তি পর্যায়েই পড়ে, সুতরাং সমালোচনাটা ব্যক্তি আক্রমনের কাছাকাছি হয়ে যাওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু মনে হয়নি আমার কাছে।

পলাশ মুস্তাফিজ

মেমনন এর ছবি

একেবারেই স্থূল লেখা।
হুজুগে বাংগালীর হুজুগ দেখি থামতেছেই না।
ভাই, দল ঘোষণা করা হয়ে গেছে, এখন খেলোয়ারদের সমর্থন দ্যান, সে যেই হোক।

অতিথি লেখক এর ছবি

স্থুল লেখা বলতে পারেন, তবে হুজুগ বলার কোন যুক্তি খুঁজে পাচ্ছিনা।এখন পর্যন্ত কাওকে দেখিনি আশরাফুলবিরোধী হুজুগে মেতে উঠতে।

পলাশ মুস্তাফিজ

দ্রোহী এর ছবি

লেখাটা বেশি জমেনি। তবে ৪ নাম্বার পয়েন্টে মজা পাইছি। দেঁতো হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

আসলেই খুব বেশি জমেনি... তবুও কষ্ট করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

পলাশ মুস্তাফিজ

অতিথি লেখক এর ছবি

পড়তে ভালোই লাগছে। ওয়ান টাইম মুভির মত।

বিপ্লবী স্বপ্ন

অতিথি লেখক এর ছবি

ওয়ান টাইম মুভি আবার কি? কোথায় বানায়? চিন্তিত

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

পড়ে মজা লাগলো তবে রসের পাশাপাশি যদি পাঞ্চগুলো আরেকটু মজবুত হতো, রীতিমত জমে যেতো। তিন তারা হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

তিন তিনডা তারা... কম কি? হাততালি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।