কর্নেল তাহের, খালেদ মোশাররফ-- বিপ্লব,প্রতিবিপ্লবের টুকিটাকি

হাসান মোরশেদ এর ছবি
লিখেছেন হাসান মোরশেদ (তারিখ: সোম, ২১/০৭/২০০৮ - ১০:৩৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

.

বছর খানেক আগে,ঠিক এই শিরোনামেই একটি পোষ্ট দিয়েছিলাম ।
সেই পোষ্টে আমরা কয়েকজন এইসব বিষয় নিয়ে কিছু কথাবার্তা বলেছিলাম ।
যারা কথা বলেছিলাম তাদের কেউ কেউ এখন আর সচলায়তনে লিখছেননা আবার এখন সচলায়তনে লিখছেন তেমন অনেকেই তখন লিখতেন না ।

সে হিসেবে মনে হলো, ঐ আলাপচারীতা এখনো প্রসংগ হারায়নি ।
তাই পুরনো পোষ্ট লিংক হিসেবে দিয়ে দিলাম নিচে । আগ্রহী যারা তারা লিংক ঘুরে লেখাটা পড়তে পারেন , তবে লেখার চেয়ে মন্তব্য প্রতিমন্তব্যগুলোই গুরুত্বপূর্ন হয়ে উঠেছিল ।

৫০ অধিক মন্তব্য, সুতরাং সময় সাপেক্ষ আর সতর্ক মনোযোগ ও আবশ্যক হাসি

একেবারে শেষের দিকে ইংরেজীতে লেখা একজন অতিথির মন্তব্য বিশেষ মনোযোগ আকর্ষন করে ।

কর্নেল তাহের, খালেদ মোশাররফ-- বিপ্লব,প্রতিবিপ্লবের টুকিটাকি


মন্তব্য

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

মন্তব্য এখানেই করি- আর হইলো গিয়া বাংলাদেশের ইতিহাসে নিজের গদির রাস্তা পরিষ্কার রাখনের লাইগা সব ব্যাটায়ই প্রথমে ডুব দিয়া পানি গিলতে চায়। কিন্তু গলায় যখন কৈ মাছ আটকায় তখনই পাবলিকে জানে। জিয়া সাবও নিজের রাস্তা সাফ করতে আর নিরাপদ রাখতে ক্যান্টনমেন্ট পরায় খালি কইরা ফালাইসিলেন। আর যে কতজনে কত রকমের সাজা পাইসে তার ইয়ত্তা নাই। কিন্তু তার প্রকাশ নাই ক্যান? প্রকাশ করলেই রেশন বন্ধ।
কর্নেল তাহের থাকলে তো আর আরামে গদিতে বসা যাইতো না। গদিঅলা সব ব্যাটারেই আলের উপর রাখতো।

ওই যে ছুডুকালে একটা গল্ফ পড়সি। এক রাজ্যের নদীতে অনেক ছুরি মাছ। লোকজন নদী পার হইতে পারে না। রাজা এই বিপদ থাইক্যা উদ্ধারের পথ বাতলাইতে কইলেন। তখন একটা প্রতিবন্ধী পিচ্চি পোলা বুদ্ধি দিলো নদীতে কলাগাছ কাইট্যা কাইট্যা ফালাও। যেই কথা সেই কাজ। ছুরিমাছ কলাগাছে নিজের ছুরি ঢুকাইতেই আটকা পড়লো। আর অ্যামনেই সেই রাজ্যের নদী নিরাপদ হইসিলো। কিন্তু মন্ত্রী রাজারে বুদ্ধি দিয়া কইলো, এই পোলার অনেক বুদ্ধি। বাইচ্যা থাকলে তোমার গদিও দখল করতে পারে। কাজেই তারে শ্যাষ কইরা দ্যাও। দেঁতো হাসি

____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

ফকির ইলিয়াস এর ছবি

সুপ্রিয় হাসান মোরশেদ,
আপনি আমার মনের আগুনে কিছুটা কেরোসিন ঢেলেছেন।
প্রথমত আমি কমরেড তাহেরের পাশে নিমক হারাম জিয়ার ছবি দেখতে চাইনা।
দায় নিয়ে বলতে পারি , আমি জাসদ রাজনীতির মাঠকর্মী ছিলাম।
সিরাজুল আলম খান সহ অনেক তাত্ত্বিক নেতার ''পা চাটা '' ছিলাম আমরা।
সিলেটে ফিরিয়ে নিয়ে যাই আপনাকে। ম আ মুক্তাদির( লন্ডনে প্রয়াত) , শাহ মোহাম্মদ আনসার আলী( সৌদীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত) , আব্দুল হান্নান মুক্তা, মারুফ আহমদ, আব্দুশ শহীদ, গাজী নুরুল কবীর সোহাগ, নজরুল ইসলাম বাসন ( এখন লন্ডন প্রবাসী),
এ রকম অনেক তেজী মুখ।
জিয়া সিলেটে গেলো। জেলা পরিষদ ভবনে নজরুল ইসলাম বাসনের
পিঠে হাত দিয়ে বললো , ''আই নীড ইউ ইয়াং ম্যান।''
গঠিত হয়ে গেলো জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি। বাসন হলেন আহ্বায়ক।
অনেক কিছু ঘটে গেলো । তপন - মুনীর - জুয়েলের লাশের
সাথে বেঈমানী করে অনেকে উপরে উঠতে চাইলো।


হোটেল শাহবানে ছেলেরা ঘেরাও করলো সিরাজুল আলম খান
( দাদা ) কে। ছেলেরা বললো , এই বেইমানীর স্পর্ধা আর দেখতে চাই না। সিলেটের শত শাণিত মুখ তখন এই নীতির মুখে মুতে দিয়ে বিদেশ গামী। আমরা কেনো রক্ত দেবো ???তাহেরের স্বপ্নের সাথে বেঈমানি করে দাদা-রব- সিরাজ-ইনু রা অনেকটাই
বিভ্রান্ত।
এর পরের সব কিছু আপনাদের জানা। অনেকেই আমরা এই দেশ থেকে একটি ব্যাগ কাধে নিয়ে পালিয়ে আসতে বাধ্য হই।
শুধু একটা কথা বলি, ভারতের দূত সমর সেন কে অপহরণ করার
বুদ্ধি দেয়ার জন্যই সিরাজুল দাদার মৃত্যদন্ড দেয়া উচিৎ ছিল।
জাসদের কর্মীরা সেটা করলেই ভালো করতো।
সমাজতন্ত্রের স্বপ্নে কোনো খাদ ছিল না। খাদ ছিল আঁতাতে।
তাহের যা চেয়ে ছিলেন , দাদা সে পথে এগুতে দেন নি।


১৯৯০ এর এক দুপুরে নিউইয়র্কের পন্চম এভিনিউ দিয়ে হাঁটছে
এক সময়ের জাসদকর্মী ফকির ইলিয়াস। হঠাৎ মুখোমুখি এক সফেদ শুভ্র ছোটোখাটো পুরুষ। এর পরের সংলাপ গুলো এরকম
-- হাই, ইউ আর মি খান , রাইট ? ( আমি বলি)
-- ইয়েস , বাট হাও ইউ নো মি ?
-- দাদা কেমন আছেন ?
--ঠিক চিনতে পারছি না।
-- আমি ইলিয়াস , চিনবেন না। মনে নেই এখন আর----
-- কোথায় যেনো ?????
-- বাদ দেন দাদা। একটা প্রশ্ন করতে চাই । একটাই !!!!
-- এই সাম্রাজ্যবাদের দেশে আইসা যে মদ গিলেন, নারীর হাত
ধরে হাটেন , লজ্জা করে না ????
( দাদার হাতে ধরা ছিলো তখন এক বাঙালি ললনা)
-- ( রেগে) হুয়াট ইউ মীন??
-- ( রাগ চলে আসে আমারও) -- আমার মতো হাজার হাজার
ছেলেকে দেশছাড়া করে এখন এখানে আইসা বক্তৃতা দিতে লজ্জা করে না ??? শেম অন ইউ মি সিরাজুল আলম খান ।।।।
বলেই আমি পথ ধরি । তার পর তাকে নিয়ে আম্রিকায় অনেক তথাকথিত গোলটেবিল বৈঠক হয়েছে। আমি সেখানে আর মুতার জন্য ও যাই নাই।
প্রিয় হাসান মোরশেদ , প্লিজ আমাকে ক্ষমা করবেন। আমি অনেক অনাকাংখিত কথা বলে ফেলেছি !!!!!

হাসান মোরশেদ এর ছবি

নজরুল ইসলাম বাসনরা শুনি এখন জামাতঘেঁষা সুশীল, প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটির উঠতি অভিভাবক ।

আর জুয়েল,মুনীর,তপন----এই তিনশহীদের রক্তে শহর সিলেটে সে প্রতিরোধ যুদ্ধ গড়ে উঠেছিল '৮৮ তে, রাজনীতির ঘোরপাকে তা বিভ্রান্ত না হলে ইতিহাস অন্য রকম হতো ।
এই সময়টা আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি । বয়স খুব কম ছিলো কিন্তু এখনো স্মৃতিবিস্মৃত হইনি ।
এখন জামাতীদের বিরুদ্ধে যে সামাজিক প্রতিরোধের কথা বলা হয় সেটা তখনই শুরু হয়েছিল সিলেটে, ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের সাথে মসজিদের মুসল্লীরা ও নেমে এসেছিলো প্রতিরোধে ।

সেই সিলেট কি করে মৌলবাদের ঘাঁটি বলে পরিচিত পেলো-সেই ইতিহাসের স্বাক্ষী আপনারা ও ।

-------------------------------------
"এমন রীতি ও আছে নিষেধ,নির্দেশ ও আদেশের বেলায়-
যারা ভয় পায়না, তাদের প্রতি প্রযোজ্য নয় "

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

ফকির ইলিয়াস এর ছবি

আমি ১৯৭৭ থেকে ১৯৮৯ সময় টার খন্ডচিত্র আঁকতে চেয়েছি।
সমর সেন অপহৃত (ব্যর্থ) হন তারও অনেক আগে।
বাসনই শুধু নয় , এক ধরনের সুবিধাবাদী অনেকেই এখন ডান ঘরানার সেবক।
সুবিধাবদেরই জয় হয়েছে ক্রমশ: সেটা নিশ্চিত বলতে পারি।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

যদি আমার ভুল না হয়,সমর সেনকে অপহরন করার চেষ্টা করা হয়েছিল কর্নেল তাহেরদের গ্রেপ্তারের পর পরই , সেই অপারেশনে কর্নেল তাহেরের দু ভাই ডঃ আনোয়ার ও ইউসুফ( নামটা ঠিক আছে কি?) ও ছিলেন ।

-------------------------------------
"এমন রীতি ও আছে নিষেধ,নির্দেশ ও আদেশের বেলায়-
যারা ভয় পায়না, তাদের প্রতি প্রযোজ্য নয় "

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

ফকির ইলিয়াস এর ছবি

হা , সে অপারেশনে আনোয়ার, ইউসুফ, এবং নেপথ্যে ইনু ও ছিলেন।

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

ইউসুফ ছিলেন কি ?সেই অপহরন প্রচেষ্টায়
শহিদ হয়েছিলেন আসাদ-বাচ্চু-মাসুদ-হারুন
কিন্তু যতদুর জানি
নিষিদ্ধ ঘোষিত জাসদ এর বিপ্লবী কাউনসিল এর জাতীয় কমিটির সিদ্ধান্ত ব্যতিরেকে এই হঠকারী প্রচেষ্টা নেয়া হয় যা প্রকারন্তরে বিপ্লব বিরৌয়াধী জিয়ার সাথে সম্পর্কিত প্রতিক্রিয়াশীলদের হাত কেই শক্তিশালী করে এবং তাহেরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার পথ সুগম করে
এর নেপথ্যে কারা ছিল
দাদা -ইনু আর কারা ?

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************A life unexamined is not worthliving.-Socrates

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

ফকির ইলিয়াস এর ছবি

মূলত দাদা র ই ইন্ধন ছিল । আমার যতদূর মনে পড়ে ,আবু ইউসুফ ও ছিলেন।
কাজী আরেফ সহ আরো অনেকের মতই গুরুত্ব পায় নাই , তখন।

আসাদ এর ছবি

@ফকির ইলিয়াস

সর্বোচ্চ সম্মান জানিয়েই লিখছি, রাগ হয়েননা। নেতার কথায় আদর্শে ঝাপিয়ে পড়ে, পরে যদি ব্যর্থ হয় মানুষ, তাহলে দোষ কী শুধু নেতার? যে ঝাপটা দিলো তার বোধ বিবেচনাকে শূণ্যই হতে হবে! সিরাজের নিউক্লিয়াস সফল হয়েছে; সো হয়েছে। মশাল ব্যর্থ হয়েছে, সো হয়েছে। সব প্রচেষ্টা কী সফল হয়? সমাজতন্ত্রে যখন নাম লিখিয়েছিলেন, খোয়াবার সাহস নিয়েই তো নেমেছিলেন। এতটা ভেঙে পড়ছেন কেন?

জীবনে যা হারিয়েছেন তার জন্য সিরাজের উপর আক্রোশ প্রকাশের নমুনা দেখে খারাপ লাগলো। বিএনপি থেকে বদরুদ্দোজা বের হয়ে যাবার পর মাহীকে পুলিশ ধরে আনলো ক্লাব থেকে। তত্ত্বাবধায়কের সময় মওদুদকে ধরলো মদ রাখার জন্য। খালেদার বাড়ি উদ্ধারের সময় বলা হলো ফ্রিজে মদ আছে। হাসিনার পোস্টার বের হলো মদের গ্লাস হাতে। ঠিক যেরকম পাবলিকরে গরম খাইয়ে দেবার সস্তা টপিক ঐ লোকগুলো ব্যবহার করেছে, জাসদের সাবেক ডাই হার্ড কর্মী দলের ব্যর্থতায় তার নেতার সাথে সেটাই করলো। ঠিক কীভাবে বোঝা যাবে যে জাসদের ডাই হার্ড কর্মীর রুচি সাধারণের চাইতে ভিন্ন! ললনা হাতে ধরা থাকলেই বা কী? সেক্স? সিরাজের হাতে মেয়ে থাকলে সেটা আপনার বুকে কেন আগুন ধরায়? আপনার জীবনে কী নারী আসেনি? আপনি আপনার রাজনৈতিক প্রচেষ্টার ব্যর্থতার শোকে কী আজো কুমার? আপনি নিশ্চিত যে ষাট বছরের বুড়োর হাতে ধরা মেয়েটা ফুর্তির জিনিস? কীভাবে জানলেন? আপনার দাদা যদি সাম্রাজ্যবাদের দেশে গিয়ে বেঠিক করে থাকে আপনি মশাল মার্কা হয়ে কোন মুখে সেখানে গেলেন?

এভাবে সস্তা ডিফেমেশনের মাধ্যমে আক্রোশ তুষ্ট করার চেষ্টা আপনাদের নিজেদের সামষ্টিক ইমেজকেই ক্ষতিগ্রস্ত করবে। একটা মেয়ের সাথে সিরাজকে দেখেই বাকী গল্পটা না বানালেও পারতেন। আপনার গল্পটা পড়ে আমার সাথে সাথে মনে পড়ে গেল ধর্মগাধাদেরই একজনের বলা কথা, যে গাধাদের আপনিও অপছন্দ করেন - তাদের পরাজয় দেখতে চান। জামাতের নিজামি বা মুজাহিদ একবার বলেছিলো প্রীতিলতা না কী পঞ্চপান্ডবদের মত পাঁচ জনের সাথে একসাথে শুয়েছে। আপনার আক্রোশের প্রকাশটা সেই প্রকাশের সমান ঠেকেছে আমার কাছে।

রাগ হয়েননা। আপনার শোক প্রকাশের ভঙ্গিতে যে অসংযম দেখেছি আমি শুধু তাতেই অনাস্থা জানিয়েছি; আপনার প্রজ্ঞা, নিষ্ঠা, ত্যাগের প্রতি না। প্রতিউত্তরের ঝামেলায় না গেলেও চলবে; বাকীটা আপনার মর্জি।

http://www.sachalayatan.com/hasan_murshed/17012

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।