কর্নেল তাহের,খালেদ মোশাররফ - বিপ্লব, প্রতিবিপ্লবের টুকিটাকি

হাসান মোরশেদ এর ছবি
লিখেছেন হাসান মোরশেদ (তারিখ: সোম, ২৩/০৭/২০০৭ - ৬:৫৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

২১ জুলাই ছিলো ১১ নং সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল আবু তাহের বীরোত্তম এর মৃত্যুদিবস । মৃত্যুদিবস নাকি ফাঁসি দিবস? তাঁকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছিলো জিয়াউর রহমানের সামরিক ট্রাইবুনালের রায়ে ।

সেদিন একটা ছোট্ট পোষ্ট করেছিলাম তাহেরকে শ্রদ্ধা জানিয়ে । সেই সাথে ফুটনোট এও ছিলো, আমি তাহেরের রাজনীতির সমর্থক নই ।
কিন্তু শ্রদ্ধা জানিয়ে ছিলাম,সবসময়ই জানাই তাঁকে আমাদের জন্মযুদ্ধের এক অন্যতম যোদ্ধা হিসেবে । সেই হিসেবেই আমি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করি খালেদ মোশাররফ আর জেনারেল মঞ্জুরের প্রতি ।

জিয়াউর রহমানের প্রতি সেই শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করতে পারিনা- তার ঘাতক পুনর্বাসন,ইচ্ছেকৃত ভাবে জাতীয় পরিচয় নিয়ে সংশয় তৈরী করা,সামরিক শাসনের ধারা সৃষ্টি করা,সেনাবাহিনীর মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করা, এই সব কারনে ।

সেই পোষ্টে অনেকেই মন্তব্য করেছিলেন । কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি একসাথে সবার প্রতি ।
সহব্লগার জামাল ভাস্করের মন্তব্য আরো কিছু ভাবনার সুযোগ তৈরী করে দিয়েছে । ভাস্করের মন্তব্য ছিলোঃ

কর্নেল তাহেরের রাজনৈতিক অবস্থান অনেকেই সমর্থন করেন না বললেন...কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর আওয়ামি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যেই কয়জন লোক দাঁড়াইছিলো তার মধ্যে সিরাজ সিকদার আর এই লোকেরই সদুদ্দেশ্য ছিলো বইলা জানি। তার মধ্যে কর্নেল তাহের ছিলেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সক্রিয় যোদ্ধা।

আওয়ামি লীগ তখন তাগো অজাচার পুরামাত্রায় করতে পারতো না অনেক জায়গায়ই জাসদ কর্মীগো প্রতিরোধের লেইগা।

এই জায়গাটাতে আমি দ্বিধান্বিত । স্বাধীনতার পর যারা বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের ঝান্ডা উড়িয়ে জাসদ গঠন করেছিলেন, তার আগ পর্যন্ত কিন্তু তাদের কারো সমাজতান্ত্রিক ইতিহাস ছিলোনা । বরং তারাই ছিলেন কট্টর মুজিববাদী ।
মুজিববাদী ছাত্রলীগের দুই উপদলঃ একদলে শেখ ফজলুল হক মনি আরেক দলে আসম রব'রা । একই দিনে দুই উপদল সম্মেলন আহবান করে এবং দুইদলই শেখ মুজিবকে প্রধান অতিথির নিমন্ত্রন জানায় । শেখ মুজিব তার ভাগ্নের আতিথ্য গ্রহন করেন ।
জাসদ রাজনীতির ইতিহাসচর্চা আমার উদ্দেশ্য নয় ।

আমার মনে প্রশ্ন জাগে সেদিন যদি শেখ মুজিব তার ভাগ্নেকে রুষ্ট করে রব'দের সম্মেলনে যোগ দিতেন, তাহলে কি জাসদ নামের কোনো রাজনীতির জন্ম হতো ।

হয়তো হতোই । ঠিক সেই সময়টাতে জাসদের প্রয়োজন তৈরী হয়েছিল । প্রশ্ন হলো কাদের জন প্রয়োজনীয়?

স্বাধীনতার পর সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের পরিবেশ বাংলাদেশে গড়ে উঠা শুরু করেছিলোই । অনেক বছর, সেই সময় থেকে নিরাপদ দুরত্ব এসে অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকই কিন্তু দাবী করেন, জাসদ কোনো বিপ্লবী সংগঠন ছিলোনা । ছিলো মুলতঃপ্রতিবিপ্লবী । বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র তো সুদূর পরাহত, এর নিউক্লিয়াসের লোকজন মুলতঃ সমাজতান্ত্রিকঅই ছিলোনা ।
বরং সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের যে স্বাভাবিক সম্ভাবনা ছিলো সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে, সেই সম্ভাবনাকে সমাজতন্ত্রের নামেই কবর দেয়ার জন্য জাসদ ছিলো সি আই এ'র বানানো এক গেম প্ল্যান মাত্র ।

এই রাজনৈতিক বিশ্লেষন সর্বাংশে সত্য কিনা জানিনা কিন্তু ঘটনা পরম্পরায় চিহ্ন পাওয়া যায় ।
সেই অতি বিপ্লবী বৈজ্ঞানিক সমাজতান্ত্রিকদের পরবর্তী চেহারা ছবি কেমন? আসম আব্দুর রব, শাহজাহান সিরাজ,মেজর জলিল এবং অতি অবশ্যই সিরাজুল আলম খান দাদা ভাই ।

এরা ব্যর্থ বিপ্লবী ও নয় । বিপ্লব করে যে ব্যর্থ হয় তাঁর জন্য ও শ্রদ্ধাটুকু থাকে । কিন্তু বিপ্লবকে বিভ্রানত করার জন্য যারা অতি বিপ্লবী সাজে?

যাহোক কথা হচ্ছিলো কর্নেল তাহেরকে নিয়ে ।
আমার জানা যদি ভুল না হয়, কর্নেল তাহের জাসদের নিউক্লিয়াসেরই একজন ছিলেন । জাসদ যদি সিআইএ'র বানানো প্রতিবিপ্লবী সংগঠন হয়ে থাকে, তাহলে তার নিউক্লিয়াসের লোকজনরা অবশ্যি সেটা জানতেন ।
কর্নেল তাহের কি জানতেন তবে? জেনেশুনেই তবে বিপ্লবের নামে প্রতিবিপ্লবে ঠেলে দিতেন সদ্য স্বাধীন দেশের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় তরুনদের?
২১ জুলাই যদি তাঁর ফাঁসী না হতো? মেজর জলিল,রব দের মতো কারাদন্ড হতো? তাহলে জেলখানায় বসে তাঁর নতুন বোধোদয় হতো? বৈজ্ঞানিকে সমাজতন্ত্রের বদলে তখন ইসলামী সমাজতন্ত্রে জাতির মুক্তি খুঁজতেন কিংবা সামরিক শাসকের গৃহপালিত হতেন?

আমার বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করেনা । কিন্তু নিজের সাথে নিজের বিরুদ্ধবাদী আলোচনা এগিয়ে যায় ।

খালেদ মোশাররফ জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে যে অভ্যুত্থান করেছিলেন আমি তাকে সমর্থন করি কিনা? আমি যে কোনো সামরিক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া বিরোধী । কিন্তু ৭৫ এর হত্যাকান্ডের মাধ্যমে যখন প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী ক্ষমতা দখল করে নিয়েছে,ধ্বসে পড়ছে মুক্তিযুদ্ধের সকল অর্জন সেই সময় খালেদ মোশাররফের পালটা অভ্যুত্থানকে আমার কাছে এক মরিয়া হয়ে উঠা দেশপ্রেমিকের শেষ চেষ্টা বলেই মনে হয় ।
জিয়ার সমর্থনে খালেদ মোশাররফের বিরুদ্ধে পালটা অভ্যুত্থান এবং তাঁকে হত্যা করা- কর্নেল তাহের এই ভুমিকা আমার কাছে হঠকারী মনে হয় ।

কৌশলী কমান্ডো,সেক্টর কমান্ডার,চৌকস বিপ্লবী কোন হিসাব করেছিলেন? খালেদ মোশাররফ কে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে বিপ্লব ঘটাবেন এবং সেটা জিয়াউর রহমান কে দিয়ে? যে জিয়া সকল সেক্টর কমান্ডারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী প্রতিক্রিয়াশীল ছিলেন?

এইসব মিশ্র অনুভূতি নিয়েই আমি কর্নেল তাহেরের প্রতি আমার শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করতে দ্বিধাবোধ করিনা ।

***
***
সুমন চৌধুরী'কে বেশ আগেই ভারচাপানো হয়েছিলো এইসব বিষয় নিয়ে লিখার জন্য । আমি রাজনীতির মানুষ না । এইসব লেখায় নিরেট তথ্যসরবরাহ ও করতে পারিনা । রাজনীতিবহির্ভুত একজন সাধারন মানুষের রাজনীতিভাবনা আর কতোটুকুই ঋদ্ধ হতে পারে ।
সুমন চৌধুরী আবারো খোঁচা দিয়ে মনে করালাম ।


মন্তব্য

অপালা এর ছবি

শুনতে আগ্রহী,অপেক্ষায় রইলাম সুন্দর তথ্য নির্ভর আলোচনার।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

ছবিটা হেভি হইছে..
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

হাসান মোরশেদ এর ছবি

আপনার দোস্ত সুমন চৌধুরীরে একটু খোঁচা দেন তো @অপালা বিগাম
-----------------------------------
'পড়ে রইলাম বিধির বামে,ভুল হলো মোর মুল সাধনে'

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

ভাস্কর এর ছবি

জাসদ যে সিআইএ'র গেম প্ল্যান এই তথ্যের সোর্স কি অথেনটিক?

আমি নিজে জাসদীয় রাজনীতির সাথে ছিলাম না। তয় তৎকালীন জাসদের অনেকের সাথেই আমার পরে সক্রিয় রাজনীতির ধারাবাহিকতায় পরিচয় হইছে, বাসদের চার নেতার সকলেই জাসদের স্বর্নযুগের সময় সিদ্ধান্তমূলক নেতা হিসাবেই ছিলেন। তাগো কাছে জাসদকালীন হঠকারী সিদ্ধান্তের কথা শুনছি কিন্তু এই সিআইএ তথ্যটা আওয়ামি কয়েকজন ছাড়া আপনার কাছেই শুনলাম।


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...

ভাস্কর এর ছবি

খালেকুজ্জামান কিম্বা আব্দুল্লাহ সরকার অথবা মুবিনুল হায়দার চৌধুরীরাও তখন জাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন...এর মধ্যে মুবিনুল হায়দার চৌধুরী ছিলেন ভারতের সমমনা পার্টি এসইউসিআই'র সাথেও যুক্ত...পার্টি সংগঠন নিয়া তাগো ভিন্নতা ছিলো...ব্যক্তিগত চর্চ্চার অবকাশ ছিলো...নেতৃত্বের কোন্দল ছিলো...গণবাহিনীর মতো হঠকারী সিদ্ধান্ত ছিলো...কিন্তু সিআইএ'র গেম প্ল্যান একটি বেশি হইয়া গেলো বইলাই মনে হয়।


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...

পুরুজিত এর ছবি

সিরাজ সিকদার সম্পর্কে আরও জানতে চাই, মুক্তিযুদ্ধপূর্ব, যুদ্ধকালীন এবং তার পরের।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

আমার খালু একবার বলেছিলো বাংলাদেশের সমাজতন্ত্রীদের নিয়ে, এরা মস্কোতে বৃষ্টি হলে বাংলাদেশে ছাতা তুলতো। আমার বিবেচনায় কথাটা খুব বেশি সত্য। সমাজতান্ত্রিক অনেক চেতনাই আমাদের মাঝে আপনা থেকে বিদ্যমান। রক্ত আর বিপ্লব দিয়েই আমাদের সবটুকু অর্জন। সমস্যা হল, বাংলাদেশের সমাজতন্ত্রীরা এই সহজাত বিপ্লব সম্পর্কে অচেতন। মার্ক্সের বইয়ে নেই বলে কথা!

দ্রোহী এর ছবি

সমাজতন্ত্র ব্যাপারটা কাগজে কলমে যত অসাধারণ শোনায়, রূঢ় বাস্তবে ঠিক সেইরকম কাজ করে কি? আমার কেন জানি মনে হয় করে না।

কমরেড-বিশ্লেষণ অতি চমৎকার হয়েছে।


কি মাঝি? ডরাইলা?

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

ইশতিয়াক রউফ ও দ্রোহী, সমাজতন্ত্র আদর্শ হিসেবে ভালো বা মন্দ, কার্যকর অথবা না, তা সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রসঙ্গ। হাসান মোরশেদের লেখার বিষয়বস্তুও তা নয়।

তবু আপনাদের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে একটা কথা বলা দরকার মনে করি। ঐতিহাসিকভাবে এ কথা সত্যি যে স্বাধীনতাপরবর্তী বাংলাদেশে সমাজতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষা ছিলো একটি বাস্তবতা। ৭২-এ রচিত বাংলাদেশের সংবিধানে এবং রাষ্ট্রীয় আদর্শ হিসেবে সমাজতন্ত্রের অন্তর্ভুক্তি সেই আকাঙ্ক্ষারই প্রতিফলন ও স্বীকৃতি ছিলো। এ কথা আরো বেশি করে প্রমাণ করে এই বাস্তবতা যে, আওয়ামী লীগের ইতিহাসে সমাজতন্ত্র অনুসরণ বা আনুগত্য না থাকলেও জাতীয় আকাঙ্ক্ষার বাস্তবতা অস্বীকার করা তাদের পক্ষেও সম্ভব হয়নি।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

আমি নিজেও বই পড়েই সমাজতন্ত্রী। বহু রকম স্বপ্ন ভীড় করতো মাথায়, আজও করে। কিন্তু আমাদের সমাজতান্ত্রিক দলগুলোর কাজ-কারবার আমার বোধগম্য হয়নি কখনই। ১৯৭২ ছিল সমাজতন্ত্র কায়েম করার একটি অপূর্ব সুযোগ। তবে, আমাদের জাতীয় চরিত্র অনুযায়ী আমাদের ধাঁচের সমাজতন্ত্র নিয়ে যথেষ্ট গবেষণা প্রকাশ পায় না সমাজতন্ত্রী নেতাদের কথায়। মার্ক্স লিখেছিলেন মিল-কারখানার শ্রমিকদের নিয়ে। লেনিন সেটাকে চাষাদের জন্য মডিফাই করেছিলেন। আমরা আমাদের জাতীয় চরিত্রই জানি না, তার মত করে কোন রকম তন্ত্রই মডিফাই করা দূরের কথা। আমার চোখে জাসদ/বাসদ এই দোষেই দোষী। সেকারণেই বলা।

ভাস্কর এর ছবি

অভি
আমি জানি না আপনে কই পাইলেন মার্ক্স মিল-কারখানার শ্রমিকগো কথা কইছিলো, আর লেনিন সেইটা চাষাতে কনভার্ট করছিলো...কিন্তু ব্যাপারটা আদৌ সেইরম না মনে হয় আমার কাছে। মার্ক্স কইছিলেন শ্রমঘন অঞ্চলেই সেই যুগে বিপ্লব হইবো...তার মানে এই খানে বিপ্লবের প্রধান শরিক হইবো শ্রমিকেরা, আর লেনিনও তার বাইরে ভাবেন নাই। রাশিয়ার বাস্তবতায় তখন পুঁজিবাদই প্রধান শত্রু হইছিলো যেই কারনে। জমিদাররা হইছিলো প্রতিবিপ্লবী।

জাসদ/বাসদরে গণ একটা জেনারালাইজ করা সিদ্ধান্তে ফালাইয়া দিলেন কিন্তু তাগো রাজনৈতিক মূল্যায়ন সম্পর্কে কি আপনের কোন ধারণা আসলেই আছে?

বিপ্লবের রণকৌশল নিয়া আমি এই দুইদলের অবস্থান ঠিক মনে করি। পার্টি সংগঠন কিম্বা আন্তঃদলীয় রাজনীতির কিছু বিষয়...মার্ক্সিস্ট মোরালিটি টাইপ একটা ধারণা নিয়া আমার কিছুটা বিরোধ আছে হয়তো...কিন্তু মধ্যবিত্তসুলভ সমালোচনাও যে তার ডিজার্ভ করে না, সেইটাও মনে হয়। আওয়ামি লীগ যা করছিলো সেইটা হইলো আধাখেচরা জাতীয়করণ...ঐটারে সমাজতান্ত্রিক সংগঠনের লগে গুলাইলে ঠিক জুইতের লাগে না।

৭২ অপূর্ব সময় হইলেও বামপন্থীরা যেমনে হয়রানির শিকার হইছে আওয়ামি আমলে, সেইটা খুব উপাদেয় আছিলো না। শেখ মুজিবের মতোন একজন মানুষ একদিন ঘোষণা দিয়া কইলেন আমি সমাজতন্ত্রে আস্থাশীল, পরদিন থেইকা আমরা তার নেতৃত্বের ছায়াতলে আসলাম...এইরম ভাবনা লেনিনের মতো কইরা বলি...পুঁজিবাদের বামপন্থায় বালসুলভ ব্যাধি নিয়া কখনো রাষ্ট্রীয় চরিত্র পাল্টান সম্ভব হয় না।

বাংলাদেশের প্রথম রাজনৈতিক সন্ত্রাস আওয়ামি গুন্ডা আওরঙ্গ শুরু করছিলো একটা প্রেম ঘটিত কারনে। ক্ষমতার অপব্যবহারের চূড়ান্ত পরিণতি দিছিলো আওয়ামি সন্ত্রাসীরা। তার বিরুদ্ধে বামপন্থীরা দাঁড়াইতে পারে নাই, তার দায় তাগো নিতে হইবো মানি। কিন্তু আওয়ামি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তারা নজুক হইয়া যাইতেছিলো সেইটাও ঐতিহাসিক সত্য।


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

প্রথমত, আমি সমাজতন্ত্রবিরোধী মানুষ নই। এটা পরিষ্কার করে নেই আগে। আমি রাজনীতির খুঁটিনাটি ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে জ্ঞাত নই। ১৯৭২ সালে আমার জন্মও হয়নি। আমি বিশেষ ঘটনাবলি নিয়ে বলতে পারবো না, বলার চেষ্টাও করবো না।

মার্ক্স এবং লেনিনের লেখা পড়ে আমার নিজের মত বলছিলাম। মার্ক্স যা বলেছিলেন, লেনিন তার মূলধারার বাইরে যাননি, কিন্তু রাশিয়ার আলোকে মার্ক্সিস্মকে সংজ্ঞায়িত করেছিলেন। মার্ক্সবাদের শেষ ধাপটি সামন্তবাদী রাশিয়াকে অতিক্রম করতে হয়নি। লেনিনের চিন্তাশক্তির প্রকাশ সেখানেই ছিল। বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলগুলোর কাছে কি আমরা তেমন কিছু পেয়েছি?

সমাজতন্ত্রের সবচেয়ে বড় সৌভাগ্য হল, সমাজতন্ত্রের শিবিরে কখনও মেধার অভাব হয় না। কিন্তু আমাদের দেশে এই মেধা কোন ফল প্রসব করতে পারেনি। গণমানুষের সাথে আমাদের দেশের বামপন্থা কোন নিবিড় সংযোগ স্থাপন করতে পারেনি। না পারার কারণ (আমার মতে), আমাদের বামপন্থিরা বিপজ্জনক রকম 'বুকিশ'। একারণেই এক কালের মাঠকাঁপানো বামপন্থি নেতারা পরবর্তীতে কোন ঘাটের পানি খেতেই বাকি রাখেননি।

সমাজতন্ত্র যে বা যারা কায়েম করেছেন, তারা সবাই সাধারণ মানুষকে সাথে নিয়েই করেছেন। 'আওয়ামি সন্ত্রাসের' চেয়ে অনেক ভয়াবহ শক্তির বিপক্ষে লড়েই করেছেন। আমার চোখে আমাদের দেশের বামপন্থিরা মানুষের ইচ্ছা, মনোভাব, দৃষ্টিভঙ্গি, এবং তাৎক্ষনিক সমস্যাগুলো উপলব্ধি করতে পারেননি সবসময়। আমি বলছি না যে আর কেউ পেরেছে। কেউ পারে তো বামপন্থিদেরই পারা উচিত ছিল। আমার ক্ষোভটা সেখানেই।

ভাস্কর এর ছবি

জাসদের কর্মী বাহিনীর দিকে আঙুল তোলা হইতো যে তারা পড়াশোনা কম করে...বাংলাদেশের বামপন্থীগো বর্তমান অবস্থা নিয়া আলাদা আলোচনা হইলে ভালো হইবো মনে হয়...


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...

ভাস্কর এর ছবি

লেনিন মার্ক্সিজমরে রাশিয়ান আলোকে সংজ্ঞায়িত করছিলেন ব্যাপারটা মনে হয় না ঠিক। মার্ক্সিস্ট মেথোডলজি মাইনা যে কোন জায়গায় যেমনে যা করনের তাই করছিলেন লেনিন...মূলতঃ একটা ক্ষেত্রে লেনিনের নতুন ইন্টারপ্রিটেশন দিতে হইছিলো, সেইটা হইলো পার্টি সংগঠন...কারন এই বিষয়ে আসলে মার্ক্স সাহেবের নিজের খুব বেশি কথা বলা ছিলো না।

বাংলাদেশে বাস্তবিকই ছাতা ধরা পার্টি ছিলো একটা...আরেকটা ছিলো বন্দুক ধরা...কিন্তু এই দুই সংগঠন অনেক বিস্তৃত অবয়ব আর পরিচিতি সত্ত্বেও দেশের বামপন্থি ইতিহাসে পেটি বুর্জোয়া আন্দোলন আর ইনিশিয়েটিভ ছাড়া বেশি দূর কিছু দেখাইতে পারে নাই। সিপিবি আর তার ছাত্র সংগঠন ছাত্র ইউনিয়ন আজ পর্যন্ত তাগো রাষ্ট্র চরিত্রের উপলব্ধি পাল্টায় নাই...সিপিবি এখনো মনে করে দেশে জাতীয় গণতান্ত্রিক আন্দোলন প্রয়োজন, যেই কারনে তারা আওয়ামি লীগরে প্রগতিশীল বুর্জোয়া শক্তি মনে করে। আর ছাত্র ইউনিয়ন মনে করে এখনো ছাত্র গণ সংগঠন কইলে সদস্যরা নির্ভীক চিত্তে যোগদান করবো। ১৯৬৫ সালের ঐ কংগেসের কারন ছিলো সোভিয়েত মুখাপেক্ষী বাস্তবতা, সেই একই বাস্তবতা আর তারা পাল্টাইতে পারেতেছেনা কারন সোভিয়েত তাগো এখন আর কিছু কয় না। কওনের লেইগা কেউ না থাকলে যে নিজেগোই সিদ্ধান্ত নিতে হয়...সেইটাও তারা মনে হয় ভুইলা গেছে বহুত চর্চ্চার ফলে। আর ছাত্র ইউনিয়নের ঐ কৌশল একটা হিপোক্রিট কৌশল সেইটাও সহজে অনুমেয়...একতা বিক্রিতে নাইমা যদি একজন ছাত্র ইউনিয়ন কর্মী কয় আমি স্বাধীন, কোন সংগঠনের ছায়াতলে আমরা নাই...কারো কথায় আমরা চলিনা...সেইটাতো হিপোক্রিসিই...

আর আন্ডারগ্রাউন্ড দলগুলিও একইরম চীনের দেখানো পথে এই খানে সংগঠন চালাইছে...তাগো চেয়ারম্যানই নাকি চীনে থাকতো! যেহেতু চীনে বন্দুক ধইরা শ্রেণী শত্রু খতমের লাইন ছিলো...তাই এই দেশেও শ্রেণী শত্রুগো খতমের লাইনে যাইতে হইবো। উদ্ভট!

কিন্তু বাস্তবতা মাইনা এই দেশের রাষ্ট্র চরিত্র বিশ্লেষণটা প্রথম জাসদই করছিলো। তাগো প্র্যাক্টিসের কারনে ব্যাপারটা ক্যাচাইয়া গেলেও পরবর্তীতে আরো অনেকেই তার ধারবাহিকতায় এই চেষ্টা করছে এবং করতেছে...তয় শুনলাম তলে তলে নাকি অনেক পার্টি এখন মতবাদিক বিতর্কে আছে...শুইনা ভালো লাগছে...

আপনার কথা শুইনা মনে পড়লো এই দেশে একজন লোক আছেন, যিনি বাংলাদেশের পরিস্থিতি বুইঝা মার্ক্সিজম ইন্টারপ্রিটেশনের দায়িত্ব নিছেন...তারে আবার অনেকেই অপছন্দ করে...সেই ফরহাদ মজহাররে নিয়া কি কেউ উল্লসিত হইছে!? আসলে দেশীয় এই মার্ক্সিজম লাগে, সেইটা একটা ধারাবাহিকতায়ই আসে যদি সঠিক মার্ক্সিজম কেউ অনুসরণ করে।

প্রয়োজন আসলে জনঘনিষ্ঠ হওনের...সেইটা কিভাবে সম্ভব সেইটা নিয়া বিতর্ক হইতে পারে। বাসদ গত প্রায় দশ বছর যাবত মধ্যবিত্তের নানা ইস্যূ ভিত্তিক আন্দোলন করতেছে সারাদেশে...এখন এই ইস্যূভিত্তিক আন্দোলন একসময় সিপিবি করছে...এতোসব আন্দোলন কইরা তারা এখন পেটি বুর্জোয়া শ্রেণীর ঘনিষ্ঠ মানুষ। বাসদও সেইদিকেই যাইতেছে। বিকল্প ভাবনের চেষ্টাও দেখছি আমি পার্টিতে...সেইগুলি এইখানে মন্তব্য হিসাবে দিলে আসলে এই পোস্টটারে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করনের দোষে দুষ্ট হমু আরো।

আমি নিজে কোন ইনিশিয়েটিভ নিয়া সেইটারে ম্যাটেরিয়ালাইজ করতে পারি না। তাই রাজনীতি থেইকা দূরে সরছি। পোস্টের ক্ষেত্রেও এক আচরণই খাটে...আপনে উদ্যোগ নিয়া এই আলোচনা অন্য পোস্টে শুরু করলে বাধিত হমু।


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

ভাস্করের ও ইশতিয়াক রউফের মন্তব্য আলোচনা পড়লাম। ভালো লাগছিল আলোচনাটা।

এটা অনস্বীকার্য যে তত্ত্বকে বাস্তবে চালু করতে চাইলে ইন্টারপ্রিটেশনের পেছনে অনেক মেধা খরচ করতে হয়। লেনিনের সেই মেধা ছিল। সবার থাকে না।
ইশতিয়াক রউফের মার্কস-উত্তর সমাজতান্ত্রিক চিন্তা-ভাবনা নিয়ে নিজস্ব পাঠ-পড়াশোনা আছে মনে করছি। যা হয়তো ভালো একটা আলোচনার জন্ম দিতে পারে।
মার্কসের তত্ত্ব কেনো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী বিশ্ব অর্থনীতি বা রাষ্ট্রব্যবস্থার সমস্যাগুলোর কার্যকর উত্তর দিতে পারছিল না। কেন মার্কস-উত্তর চিন্তাধারার জন্ম হলো। তারা মার্কসের কোন মূল ধারণাগুলোকে এড়িয়ে গেলেন এ নিয়ে হয়তো ইশতিয়াক ও ভাস্কর আলাদা করে আলোচনা করতে পারেন।

তবে হাসান মোরশেদের লেখাটা বিষয়ে আরো আলোচনা হওয়া দরকার।

(বলাবাহুল্য, জাসদের সিআইএ কানেকশনটা শুধু প্রতিবিপ্লবের ব্যাখ্যায় খাটে। ল্যাটিন আমেরিকায় এরকম দেখা গেছে। কিন্তু রবের মিটিং-এ শেখ মুজিব গেলেও জাসদের জন্ম হতো। জাসদের জন্মের সাথে ভারতের আর্মি ইন্টিলিজেন্সের যোগ ছিলো।)

-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

হাসান মোরশেদ এর ছবি

আলোচনার ফল্গুধারা ভিন্নখাতে বহমান ।
যাক মুল প্রসংগে আসি ।

জাসদ যে সিআইএ'র গেম প্ল্যান এই তথ্যের সোর্স কি অথেনটিক?

প্রশ্ন রেখেছেন জামাল ভাস্কর ।

না কোন অথেনটিক সোর্স নেই । আগেই বলেছি রাজনৈতিক বিশ্লেষনে অনেকেই এই সন্দেহ পোষন করেন । আমার মতো রাজনীতির কেন্দ্রে না থাকা কিন্তু রাজনীতি দ্বারা প্রভাবিত মানুষের ঘটনা পরম্পরায় ধারনা অর্জন করে ।অথেনটিক সোর্স থেকে তথ্য পাওয়ার সুযোগ কোথায়?

ধারনাটা ঝালিয়ে নেই আরেকটুঃ
মুক্তিযুদ্ধের অভিজ্ঞতায় সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোর প্রতি সর্বসাধারনের তীব্র বিরূপ,সমাজতান্ত্রিক শক্তির প্রতি কৃতজ্ঞতা-বিপ্লব না হোক সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন এগিয়ে নেবার মতো সহায়ক প্রিবেশ নিশ্চিত গড়ে উঠেছিল ৭১ পরবর্তী বাংলাদেশে । অন্ততঃ সাংবিধানিকভাবে সমাজতন্ত্র স্বীকৃতি পেয়েছে,সারাজীবনের বুর্জোয়া শেখ মুজিব সমাজতন্ত্রের কথা বলা শুরু করেছেন,তাজউদ্দিনের মতো বামঘেষা রাজনীতিক অর্থমন্ত্রী,প্রথম বাজেটে তাঁর সমাজতান্ত্রিক ধ্যান ধারনার ছায়া ও পড়েছে,কয়েক দশকের পোড় খাওয়া সমাজতন্ত্রী নেতারা নতুন সরকারের সাথে সহযোগীতার নীতি গ্রহন করেছেন- ঠিক এমন সময় বিপ্লবের ডাক ।

তাও যেই সেই বিপ্লব নয়,একেবারে বৈজ্ঞানিক সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব(কোন কোন সমাজতন্ত্র তাহলে অবৈজ্ঞানিক ও বটে?)। বিপ্লবের ডাক দিলেন কারা? মনি সিং,বরুন রায়,রবি নিয়োগী কিংবা জসিমুদ্দীন মন্ডলের মতো সারাজীবন পোড়খাওয়া কমিউনিষ্ট কেউ? যারা বৃটিশ ও পাকিস্তানী শাসকদের নির্যাতন সয়ে এই অঞ্চলে সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের ভিত্তি গড়ে তুলেছিলেন?

না, তাদের কেউ নয় । বিপ্লবের ডাক দিলেন কয়েকজন তরুন তুর্কী। মাত্র কয়দিন আগেও যারা তুমুল মুজিববাদী । তখনো যারা মুজিবের কৃপাপ্রার্থী! সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের ডাক দিলেন তারা,আদতে যারা নিজেরাই কোন্দিন সমাজতান্ত্রিক ছিলোনা!
তিন বছরে বিপ্লব শেষ! এই তিনবছরে কয়েক হাজার তরুন নিহত,সপরিবারে নিহত শেখ মুজিব । বিপ্লবীরা খালেদ মোশাররফকে হত্যা করে ক্ষমতায় বসালেন জিয়াউর রহমানকে । বিপ্লব নাটকের শেষ পরিনতি ।
জিয়া একজনকে ফাঁসিতে ঝোলালেন । কয়েকজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড । কারাগারে বসে একজন ইসলাম পন্থী হলেন, তাত্বিক গুরু ঘাঁটি গাড়লেন পুঁজিবাদের স্বর্গে,আরেকজন হলেন পরবর্তী সামরিক শাসকের গৃহপালিত ।

তো জাসদের সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব থেকে বাংলাদেশের প্রাপ্তি কি? সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের স্বাভাবিক বিকাশ চিরতরে বন্ধ,ক্ষমতায় জিয়াউর রহমান-সামিরিক প্রতিক্রিয়াশীলতার গোড়াপত্তন ।

মার্কিন সাম্রাজ্যবাদকে থাপ্পর মেরে যে বাংলাদেশের জন্ম সেই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে মার্কিন সি আই এ'র এর বেশী তো কিছু করার দরকার ছিলোনা ।

-----------------------------------
'পড়ে রইলাম বিধির বামে,ভুল হলো মোর মুল সাধনে'

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

এই গুল্লি মন্তব্যের পরে আসলে চুপ থাকলে ভালো হৈতো
...
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

সুমন চৌধুরী এর ছবি

টানা কামলা দিয়া তারপর দুইদিনের ফ্রাংকফুর্ট-ডার্মস্টাডট ট্যুর দিয়া আইসা দেখি এই ঘটনা। কালকে বাসায় আইসা একটু উকি দিয়াই শুইয়া পড়ছিলাম।এই পোস্ট আর চোখে পড়ে নাই। আজকে দুপুরে দেখলাম পোস্টের শেষে আমারে ডাকতাছে হাসান মোরশেদ আর অপালা। দেরীর জন্য সবিশেষ ক্ষমাপ্রার্থী।

কাহিনি হইল রাজনৈতিক মন্তব্যে ডিডাকশানের ব্যবহার খুব বেশী। যেমন ধরা যাক জামাতের সি.আই.এ.কানেকশান। মওদুদীরে বাঁচাইতে সৌদী আরবের মাধ্যমে ১৯৫৩ তে করা লবিং ছাড়া সরাসরি তেমন প্রমাণ নাই। বাকি সবটাই "তাহার এই কর্ম হইতে ইহা বোঝা যায় যে" ফর্মের।আর এই ডিডাকশানের মূলে থাকে অভিজ্ঞতা বিশ্লেষন।

জাসদের নামের সাথে একটা ঐতিহাসিক অস্বস্তি জড়িত। এইটারে অনেকে যুক্তি হিসাবে টানলেও আমি টানি না। আমি প্রশ্ন তুলতে চাই অন্য জায়গায়। সেইটা হইল জাতীয় সমাজতন্ত্র কি বস্তু? উহা দেখতে কেমন খাইতে কেমন? অভিজ্ঞতা যে দিকে নির্দেশ করে সেইটা খুবই ভয়ংকর।

হাসান মোর্শেদ আর শোমচৌ দুইজনের একটা পয়েন্টরে সিনথেসাইজ করা যায় যে শেখ মুজিব রবদের সম্বেলনে যোগ দিলেও লালাজি-টাটাজিরা এই দেশে ফ্যাসিবাদ স্পন্সর করতোই। সেইটা জাসদ না হইয়া অন্য নামেও হইতে পারতো। কিন্তু জাসদ নাম নেওয়াতে তাদের চেহারা একটু বেশীই নগ্ন হইয়া গেছে। সিরাজুল আলম খান-রব-সিরাজ-মেজর জলিলরা ছিল জাসদের উচ্চ পর্যায়ের মূল সংগঠক। এরা বাকিদের সংগঠিত কর‌ছেন। সিরাজুল আলম খানদের সাথে র'এর মাধ্যমে মাড়োয়ারিদের যোগাযোগ হয় মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে। ষাটের দশকের শেষে ছাত্রলীগের উগ্রজাতীয়তাবাদীদের মধ্যে যে র‌্যাডিক্যাল প্রবণতা দেখা যাইতেছিল তার ট্রেন্ড আওয়ামী লীগ ধারণ করতে পারতো না। মুক্তিযুদ্ধের সময় তাই বহুপ্রচেষ্টা চলছে মুক্তিবাহিনিতে বামপন্থীদের যোগদান ঠেকাইতে। বামপন্থীরা সেই সময়ে বহুমতে ছিন্ন-ভিন্ন অবস্থায়। তাদের সেই সময়কার কৃতকর্ম আলাদা আলোচনার বিষয়। তবে বামপন্থীরা রাজনৈতিক ক্ষমতা পাইলে যারা ক্ষতিগ্রস্থ হইতো তারা বামপন্থীদের ভয় পাইতো। তড়িঘড়ি মুক্তিযুদ্ধ শেষ হওয়ায় বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম দ্রুত হইছে। এতে একদিক থিকা আমরা উপকৃত হইছি ঠিকাছে। কিন্তু এর পিছনে সোভিয়েত ইউনিয়ন আর ভারতের অন্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যও অনুমান করা সম্ভব। ভারতের দিক থিকা নকশালদের লোকবল বৃদ্ধি শিরেসংক্রান্তি। আর সোভিয়েত ইউনিয়ন স্ট্যালিন পরবর্তী জমানায় "ক্রেমলিনের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত" কোন বিপ্লবা পরিবর্তন চায় নাই।এমনকি কিউবিরেও শুরুতে তারা মানতে চায় নাই। মোদ্দা কথা র/সিআইএ/কেজিবি এই তিন পক্ষই তখন যেকোন ধরণের বৈপ্লবিক পরিবর্তনের বিপক্ষে ছিল। র/সিআইএ/কেজিবিরে বহুক্ষেত্রেই এখন আর আলাদা করা মুস্কিল। ইতিহাস বিশ্লেষন একটা গতিশীল প্রক্রিয়া। একই ঘটনার ইন্টারপ্রিটেশান ১০ বছর পর বদলাইতে পারে। কিন্তু প্রতিটা ক্ষেত্রেই কি/কেন/কেমনে পয়েন্টগুলাতে আইতে হইবো।

জাসদ ঠিক কি প্রক্রিয়ায় আওয়ামী সন্ত্রাস মোকাবেলা করতাছিল সেইটা একটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। ভাস্করদা দাবী করতেছেন জাসদের কারণে আওয়ামী লীগ অনেক বদকর্ম করতে পারেন নাই। সেই বিষয়টা একটু বিশদভাবে জানা দরকার। আওয়ামী লীগের কোন বদকর্মে জাসদ কিরকম বাধা দিছে এবং তাতে কি ফলাফল আইছে।

এরপর আইতাছে শ্রেণী সংগ্রামের সাথে সম্পর্ক। ছাত্র রাজনীতির ঢিসুম-ঢাসুম ছাড়া শ্রেণী সংগ্রামের সাথে জাসদের সম্পর্ক কতটা ঘনিষ্ঠ ছিল এইটাও জানা দরকার। ভাস্করদা দাবী করতাছেন কিন্তু বাস্তবতা মাইনা এই দেশের রাষ্ট্র চরিত্র বিশ্লেষণটা প্রথম জাসদই করছিলো। সেই বিশ্লেষনটা কি একটু খুইলা কইলে হইতো না? বিষয়টা বোঝা দরকার তো !

আমার নিজের অবস্থান হইলো পৃথীবির অনেক দেশের মতোই বাংলাদেশে বামপন্থী রাজনীতির ছ্যাতরা-ব্যাতরা অবস্থা। চরম-নরম দুই পক্ষই ধরা খাইছে। কি কারণে কেমনে ধরা খাইছের আলোচনায় তারাই আসবে যারা শ্রেণী সংগ্রামের সাথে সম্পৃক্ত এবং সেই সাথে বহু বিপর্যয়ের মুখেও সাংগঠনিক কাঠামো নিয়া দাড়াইয়া থাকতে পারছে। তাতে সিপিবি/ওয়ার্কার্স পার্টি আর গলাকাটা চলছে চলবেরাই আলোচনায় আসে। ন্যাপ-জাসদ আসে না।
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

হাসান মোরশেদ এর ছবি

আপনারে চুপ রাখানো তো আমার উদ্দেশ্য না মঁশিয়ে সুমন চৌধুরী । আলোচনার সুত্রপাত করলাম যদি ও কিন্তু এই সব বিষয়ে আসলে আরো বিস্তারিত জানতে চাই আপনার মারফত । এ বিষয়ে অনেক আগেই দাবী পেশ করে রেখেছিলাম,মনে আছে তো?

জামাল ভাস্কর একটা সুযোগ করে দিলেন । আশা করছি আপনার এই মন্তব্য তাঁর দৃষ্টি এড়াবেনা ।
একটা জমজমাট আলোচনার অপেক্ষায় থাকলাম হাসি

-----------------------------------
'পড়ে রইলাম বিধির বামে,ভুল হলো মোর মুল সাধনে'

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

ভাস্কর এর ছবি

জাসদের সাথে প্রথমে সিআইএ কানেকশন আর পরে আবার ভারতীয় র এর যোগসূত্র বাইর হওনের পর একটা জিনিসই প্রমাণ হয়...দুইটাই হুদাই ঢিল ছোড়া উদাহরণ। অনুমানের উপর ইতিহাস রচনা করনের এই পদ্ধতি বুর্জোয়াগো জনপ্রিয় হাতিয়ার, যার বিরুদ্ধেই যতোদূর জানি মার্ক্সবাদের সংগ্রাম...

দেশ সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের দিকে আগাইয়া গেছে এই টাইপ মন্তব্য আমি জানি না কিসের রেফারেন্সে কইলেন হাসান মোরশেদ, জানি না কিসের রেফারেন্সে শেখ মুজিবের বয়ানে উনি সমাজতন্ত্রের কথা শোনা যাওনের ঘোষণা দিলেন...চার মূলনীতি যখন হয় তখন থেইকাই সমাজতন্ত্র কইতে বাধ্য ছিলেন যদিও, তবুও সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক বিনির্মাণ উনি কি বুঝতেন কে জানে! ঐ বাস্তবতার গোজামিলরে আর যাই কওয়া যাক সমাজতন্ত্র কওন যায় না। একজন লোক সমাজতন্ত্র পছন্দ করে কইলেন বললেই সে সমাজতন্ত্রী হন না বা সেইটার আসলে খুব বেশি গুরুত্বও তৈরী হয় না সমাজতন্ত্রে।

বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের বিষয়টা শুনতে আসলেই খুব খেলো শোনায় মানি। কিন্তু সিপিবির জনপ্রিয় অথচ ছাতা ধরা রাজনীতি ৬৫'এর বিভাজনের মধ্য দিয়া তখন স্পষ্ট। মুক্তি যুদ্ধের পর যখন দেশীয় পুঁজিপতিরা ক্ষমতায় গিয়া লুটপাট করতেছে, তখন আসলে তার বিপরীতে একটা বিজ্ঞাপণি প্রোপাগান্ডার প্রয়োজন ছিলো। অনেক পোড় খাওয়া অভিজ্ঞ নেতাগো নাম কইলেন যাগো ত্যাগ তিতীক্ষা নিয়া কোন সন্দেহ নাই...কিন্তু বিপ্লব খালি ত্যাগ তিতীক্ষা কিম্বা পোড় খাওয়া অভিজ্ঞতা দিয়া হয় না। মার্ক্সবাদ কোন কালেই অভিজ্ঞতাবাদী কোন বিজ্ঞান না, রাশিয়াতে মার্ক্সবাদরে পরিচয় করাইছিলো প্লেখানভ, তার প্রথম সহযোদ্ধা ছিলো ট্রটস্কি তারা কিন্তু বিপ্লব করে নাই। লেনিন যখন বিপ্লবের ডাক দিছিলো তখন কিন্তু ট্রটস্কিরা ঠিক এইরম যুক্তিই করছিলো...সিপিবি যা করছে ৭২/৭৩'এ।

খালেদ মোশাররফের সাথেও র' সংশ্লিষ্টতার গুজব শুনছি। তাই ঐ হত্যাকান্ড নিয়া এইখানে বাড়তি জটিলতা তৈরী করতে চাই না।

জাসদ ঠিক কি প্রক্রিয়ায় আওয়ামী সন্ত্রাস মোকাবেলা করতাছিল সেইটা একটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। ভাস্করদা দাবী করতেছেন জাসদের কারণে আওয়ামী লীগ অনেক বদকর্ম করতে পারেন নাই। সেই বিষয়টা একটু বিশদভাবে জানা দরকার। আওয়ামী লীগের কোন বদকর্মে জাসদ কিরকম বাধা দিছে এবং তাতে কি ফলাফল আইছে।

সুমন এইখানে আসলে কি জানতে চাইলো আমি পরিষ্কার হইলাম না। আওয়ামিগো বদকর্ম নিয়া প্রশ্ন তোলা হইলো নাকি জাসদের প্রতিরোধে...সেইটা পরিষ্কার হওনের প্রয়োজনীয়তাবোধ করি...যদি উদাহরণ দিয়া আগাইতে হয় তাইলে আসলে এইটা খুব বেশি সুখকর ঠেকেনা। আওরঙ্গ গুন্ডারে নেতা বানাইছিলো তখন আওয়ামিরা...তার নির্দেশে যে কতোরম কি হইছে সেইটা মনে হয় ইতিহাসেও সেইটাইমে আইতো না। পত্রিকার উপরে আওয়ামি খবরদারী নিশ্চয়ই ভুইলা যায় নাই কেউ।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধরে একটা জাতীয় গণতান্ত্রিক আন্দোলন হিসাবে চিহ্নিত কইরা জাসদই প্রথম পুঁজিবাদী রাষ্ট্রের কথা কয় সুমন...মুক্তিযুদ্ধ নিয়া আর কার কি ইন্টারপ্রিটেশন আছে সেইটা জানাইলে খুশি হমু।

তয় সুমনের শেষ প্যারাগ্রাফটা হইলো মনের কথা...জাসদ/সিপিবি/কিম্বা আর যে কেউই ধরা খাইতাছে সঠিক শ্রেণী সংগ্রামের প্রশ্নেই। তয় ৭২-৭৭ জাসদরে সমালোচনা কইরা আসলে আওয়ামি দুঃশাসনরে জাস্টিফাই করনের একটা চেষ্টা নিয়মিত হয়...আমি সেই চেষ্টার বিরোধী বইলাই, প্রথম মন্তব্য করছিলাম এই সিক্যুয়েল পোস্টের প্রথমটাতে।

বাংলাদেশের বামপন্থী আন্দোলনের বিকাশমান প্রবণতা ধ্বংস করছে সিপিবি এই কথাও বলতে চাই। নেতাদের নাম অনেক জোরেসোরে কওন যায়...কিন্তু সেইটা ব্যক্তিকেন্দ্রীক রাজনীতিতে অনেক ধর্তব্য কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী শ্রেণী সংগ্রামের রাজনীতিতে তাগো কারো কোন অবদান নাই...


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...

সুমন চৌধুরী এর ছবি

ভাস্করদা মনে হয় চেইতা গেছগা। আমার মন্তব্যে আওয়ামী লীগরে বাঁচানোর ন্যুনতম চেষ্টা ছিল বইলা তো মনে হইতাছে না। সি.পি.বি./ওয়ার্কার্স পার্টির বিষয়ে কইছি ওইটা আলাদা আলোচনার বিষয়। আমার প্রশ্নে ১৯৭২-৭৫ এ আওয়ামী লীগের কোন অপকর্মরে হালাল করার কোন পয়েন্ট তো দেখি না। আমি জিগাইছি জাসদ আসলে আওয়ামী লীগের কোন অপকর্মটা ঠেকাইছে? রাষ্ট্রায়াত্ত্ব কারখানায় লুঠপাট ঠেকাইতে পারছে? চোরাকারবার ঠেকাইতে পারছে? মজুতদারী ঠেকাইতে পারছে? ১৫ আগস্ট রাইতে বা ৩রা নভেম্বর যারা নিহত হইছে তারা বাদে ১৯৭২-৭৫ এর কোন আঙ্গুল ফুইলা কলাগাছের কেশকর্তন করতে পারছে দাদাভাই এর পার্টি? ৭২-৭৫ এ যারা পয়সা বানাইছে তাদের বেশীরভাগই তো টিকা আছে সিনিয়ার চোর হিসাবে।

জাসদ ভাইঙ্গা যারা বাসদ করছে ১৯৭২-৭৫ এর জাসদ বিষয়ক আলাপে তাগো টানিনা। এইটা হইছে মিডিয়ার জন্য। জাসদ কইলেই দাদাভাই,রব,সিরাজ,জলিলরা সামনে আইসা পড়ে। আর ছাত্রলীগের ফ্র্যাকশান থিকা জাসদ বানানোর মূল সংগঠক তারাই আমার জানা ইতিহাস মতে। এই লোকগুলির পরবর্তী ইতিহাস ভালো না। কর্ণেল তাহেরের নামের পাশে এই নামগুলা খাপ খাওয়াইতে কষ্ট হয়।

বলশেভিকদের সাথে জাসদের তুলনা প্রসঙ্গে কিছু কমু না। কারণ বলশেভিকরা জাতীয় সমাজতন্ত্রী ছিলেন না।
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

ভাস্কর এর ছবি

সুমন
আমিও বলশেভিকগো লগে জাসদের তুলনা করি না। কিন্তু হাসান মোরশেদের যুক্তিতে আমার মনে হইছে ঐসময় মনি সিং'রা খুব জাস্টিফায়েড অবস্থানে ছিলেন...ঐ যুক্তির জন্য বলশেভিকগো উদাহরণ টানা।

জাসদের অনেক সংগঠনগত চর্চ্চায় ভুল ছিলো...সদ্য যুদ্ধফেরতা কর্মীবহরে অ্যারোগ্যান্সি ছিলো...কিন্তু তার মধ্যে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের লেবেল লাগানের বিষয়টা আমার কাছে টিপিক্যাল আওয়ামি ক্যারেক্টার লাগে। ব্যক্তিকেন্দ্রীকতার ঝোক জাসদেও ষোলআনা ছিলো...সেইসবের কারনেই বাংলাদেশের প্রথম মতবাদিক বিতর্কের সূচনা কইরা বাসদের অভ্যূদয়...সেইসব ঠিক আছে...কিন্তু আমি কখনোই মনে করি না জাসদ মেধাবী তরুণগো মাথা নষ্ট করনের অ্যাসাইনমেন্ট নিয়া নামছিলো।

আব্দুল্লাহ সরকার ৭৩'এ নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন আওয়ামি বিরোধী অবস্থানে...তার এলাকায় তিনি জননেতাই ছিলেন জাসদের সদস্য হিসাবে। জাসদের একজন প্রধান তাত্ত্বিক নেতা ছিলেন হায়দার ভাই। তিনিই বাসদের অভ্যূদয়কালীন থিসিসটা লিখছিলেন...সর্বহারা শ্রেণীর দলগঠনের সমস্যা প্রসঙ্গে।

জাতীয় সমাজতন্ত্রী তারা ছিলো কেবল নামেই...ব্যাপারটা হাস্যকরই শুনায়...আবারো বলি মুক্তিযুদ্ধ নিয়া প্রথম বিশ্লেষণগত রাজনৈতিক অবস্থান জাসদ'ই নিছিলো। সিপিবির কর্মী মাইরা ফেলনের সপ্তাখানেক পরেও ছাত্র ইউনিয়নের সম্মেলনের প্রধান অতিথি ছিলেন শেখ মুজিব।
এই অঞ্চলের বামপন্থী রাজনীতির যা কিছু কৃতিত্ব সেইসবে যেইরম ভাগ ঠিক সেইরম ব্যর্থতারও দায়ভার নিতে হইবো...কম্যূনিস্ট পার্টি অফ বাংলাদেশরেই।

আমি একটু হয়তো উত্তেজিতও হইয়া গেছিলাম...কিন্তু সেইটা যুক্তির লেইগা না...শেখ মুজিবরে সমাজতন্ত্রের প্রতি সহনশীল চরিত্র বানানের একটা প্রয়াস দেখি মাঝে মাঝে...সেইটা আমার কাছে এক্কেরেই ঠিক মনে হয় না। অহেতুক আবার ইন্টেনশনালও লাগে। আওয়ামি এই চরিত্রের সাথেতো তোমারও পরিচিত থাকনের কথা...


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...

সুমন চৌধুরী এর ছবি

আমি আসলে সি.পি.বি. প্রসংগে যাইতেই চাইতেছিলাম না। কারণ সি.পি.বি. জীবিত। একটা রানিং সংগঠন অতীতের ভুমিকা বিশ্লেষন কইরা পরবর্তী পরিবর্তিত সিদ্ধান্ত নিতে পারে। সেই জায়গায় সি.পি.বি. আছে না নাই বা তারা অতীতে কি করছে না করছে এগুলা আলাদা একটা প্রসংগ।

দাদাভাই এর জাসদ বহুদিন হইলো মারা গেছে। গত দেড় দশকে যারা বাসদের ছাত্র সংগঠন সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টে যোগ দিছিল তারা জাসদীয় চেতনা থিকা যায় নাই। ছাত্রফ্রন্ট অ্যাক্টিভ সংগঠণ হিসাবে পোলাপানরে আকর্ষণ করছে। এখন যদি আমরা জাসদ নিয়া আলোচনা করি সেইটা হবে একটা মৃত সংগঠণ নিয়া আলোচনা। সেইখানে আজকের বাসদ আলোচনায় না আসাই ভালো। ১৯৭২-৭৫ এ সারা পৃথিবীতেই বিপ্লবের ঢেউ চলতেছিল। বিশেষ কইরা কিউবার অভিজ্ঞতা তরুণ প্রজন্মরে ঐতিহাসিকভাবে উস্কাইছে। পশ্চিমবঙ্গে এই ধারার পুরাটাই নকশালরা ধারণ করছে। বাংলাদেশে এরা বিভাজিত হইয়া গেছিল। নকশালদের অনুসারিরা তরুণদের সেইভাবে পায় নাই এইখানে। জাসদ নামক সংগঠন এই অ্যাংরি ইয়াং ম্যানদের বেশীর ভাগরে ধারণ করছে। পরিণতি নকশালদের চাইতে অনেকবেশী খারাপ হইছে। আর সেইটা শ্রেণী সংগ্রাম প্রশ্নেই। আমার বক্তব্যের অর্থ এই না যে জাসদে যোগদানকারীরা সিরাজ সিকদার বা হক-তোয়াহাদের সাথে থাকলে তারা চারুবাবুদের পার্টির সাথে একধরণের ইন্টগ্রেশনে গিয়া কোন বৈপ্লবিক পরিবর্তনের দিকে যাইতে পারতোই। কিন্তু তারা সেই সময় যেই পার্টিতে গিয়া যাদের আহবানে ঢুসঢাস করছে তাদের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের পরবর্তী কর্মকান্ড ১৯৭৫ এর সামরিক অভ্যুত্থানের বেনিফিসিয়ারীদের মতোই। র কিংবা সিআইএর এজেন্টের ডিডাকশান সেইখান থিকাই আসে। তবে এইটাও মনে রাখতে হবে যে এই ধরণের ডাবল ক্রস শুধু জাসদে না সিপিবি/ওয়ার্কার্স পার্টিতেও ছিল এবং সম্ভবত এখনো আছে। জাসদের বিষয়টা ইতিহাস পাঠকের নজরে পড়ার কারণ তার অতিদ্রুত উত্থান আর তার থিকাও দ্রুত পতন।
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

ভাস্কর এর ছবি

আরেকটা প্রসঙ্গ আছে হাসান মোরশেদের পোস্টে...সেইটা হইলো প্রতিবিপ্লব আখ্যা দেওনটা...আমরা যদি কর্নেল তাহেরের অবস্থানরে প্রতিবিপ্লব কই তাইলে বিপ্লব কমু কোনটারে? জাসদের নেতৃত্বে যারা ছিলো তারা সবাই মুক্তিযুদ্ধের সক্রিয় যোদ্ধা। তারমানে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে তারা ছিলো না। তাগো একটাই প্রতিরোধ বা আন্দোলনকামী অবস্থান ছিলো...আওয়ামি দুঃশাসনের বিরুদ্ধে। তারপর খালেদ মোশাররফগো ছোটখাটো সামরিক ক্যু'র বিরুদ্ধে...এখন আওয়ামি রাজনীতি কিম্বা খালেদ মোশাররফের মিলিটারি ক্যু কোনটারে বিপ্লব কওয়া হইতেছে সেইটা আমি বুইঝা উঠতে পারতেছি না।


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...

সুমন চৌধুরী এর ছবি

জিয়াউর রহমানের হাতে ক্ষমতা যাওয়ার ঘটনাটা প্রতিবিপ্লব।
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

অরূপ এর ছবি

এতো দেখি হেভি গুল্লি ছোড়াছুড়ি!
-------------------------------------
রামছাগলের সামনে, খচ্চরের পেছনে আর নিবোর্ধের ধারেকাছে না থাকাই শ্রেয়!

হাসান মোরশেদ এর ছবি

বাহ, এই আলোচনাটাই চাচ্ছিলাম । ভাস্কর কিঞ্চিত উত্তেজিত । এটাও সুলক্ষন । সুমন চৌধুরী তো বরাবর সোজা ব্যাটে বাউন্ডারী ।

যাহোক ভাস্করের প্রতি মন্তব্য থেকে আরো দুটো পয়েন্ট নোটেডঃ-

১। শেখ মুজিব কোনকালেই বামপন্থী নয় । কিন্তু ৭১ এর অভিজ্ঞতা,সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রসমুহের সমর্থন সব কিছু মিলিয়ে ৭১র পরবর্তী বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক রাজনীতির জন্য প্রতিকুল ছিলোনা । সংবিধানে সমাজতন্ত্রের অন্তর্ভুক্তি,ভুল ভাবে হলেও জাতীয়করনের পদক্ষেপ এইসবের সাথে এটা ও মনে রাখা জরুরী আছে ঠিক শেখ মুজিবের শাসনামলেই সমাজতান্ত্রিক রাজনীতির উপর নিষেধাজ্ঞা বাতিল হয় । পাকিস্তান আমলের প্রায় পুরোটাই তো বাংলাদেশে কমিউনিষ্ট রা নিষিদ্ধ ছিলো ।
তারপর ও মেলে নিলাম শেখ মুজিব কোনভাবেই সমাজতন্ত্র বান্ধব ছিলেন না ।
আমার প্রশ্ন হলো তাহলে কট্টর মুজিববাদী সিরাজুল আলম খান,রব-সিরাজরা তাহলে বিপ্লবী সমাজতান্ত্রিক হয়ে গেলো কোন জাদুবলে? কবে থেকে তাদের সমাজতন্ত্রের চর্চা শুরু?
কোন তরিকায় মনি সিং,বরুন রায় এর চেয়ে ও তারা কার্যকর কমিউনিষ্ট?
এই জায়গাটা বড় হাস্যকর হয়ে গেলো ভাস্কর । সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব কোনো গায়েবী ব্যাপার না যে একদিনে গাছ থেকে টুপ করে পড়ে গেলো কিংবা বাহারী বিজ্ঞাপনে বিপ্লব হয়ে গেলো । এটা তো আমার চেয়ে আপনার আরো ভালো জানার কথা ।
সেই আপনি যখন মনি সিং,বরুন রায়দের কয়েকদশকের সংগ্রামকে খেলো করে দিয়ে জাসদের বিজ্ঞাপন মার্কা বিপ্লবকে কার্যকর ঘোষনা দেন-আমি কিঞ্চিত আহত হই বটে । আমার পালটা জানতে আগ্রহ হয়- বিজ্ঞাপনী বিপ্লবে কতোটুকু বিপনন হলো? লভ্যাংশ কার ভাগে কতোটুকু গেলো?

২।
প্রতিবিপ্লব সংক্রান্ত মন্তব্যে সুমন চৌধুরীর কথাটাই সই । জিয়াউর রহমানের ক্ষমতারোহন ছিলো প্রতিবিপ্লব । আর সেই প্রতিবিপ্লবের ট্রোজান হর্স ছিলো জাসদ ।
অথেনটিক সোর্স? ঘটনার পরম্পরা ।
আপনি কি বলেন@ ভাস্কর?
-----------------------------------
'পড়ে রইলাম বিধির বামে,ভুল হলো মোর মুল সাধনে'

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

ভাস্কর এর ছবি

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ আসলে কার বিরুদ্ধে হইছিলো? পাকিস্তান এই দেশে aspect-এ কি ধরনের রাষ্ট্র? এই প্রশ্ন দুইটা জরুরী মনে হইতাছে আমার কাছে। পাকিস্তানরে যদি আমি একটা ঔপনিবেশিক রাষ্ট্র কই তাইলে কি খুব ভুল বলা হয়!? তার বিরুদ্ধে একটা জাতি রাষ্ট্র বাংলাদেশ যদি মুক্তির জন্য যুদ্ধ করে তাইলে সেই আন্দোলনরে কি বলা হইতে পারে? ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় এই আন্দোলনের নাম জাতীয় গণতান্ত্রিক আন্দোলন। জাতীয় গণতান্ত্রিক আন্দোলনরে নেতৃত্ব দিবো খুব স্বাভাবিক ভাবেই দেশীয় বুর্জোয়া শক্তি। আর দেশীয় বুর্জোয়া শক্তির নেতা ছিলেন শেখ মুজিব। তার নেতৃত্ব মাইনা নেয়াতে তেমন অপরাধতো আমি দেখি না! কিন্তু এই বুর্জোয়া শক্তি যে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবো না এইটাও কিন্তু স্বাভাবিক ছিলো।

আর সেই কারনেই আওয়ামি দুঃশাসন যখন শুরু হইলো তার সাথে সাথে জাসদেরও অভ্যূদয়...জাসদ সঠিক দল ছিলোনা এইটা যেরম সত্য...তেমনি সত্য জাসদের অভ্যূদয়। মনি সিংরা অনেক দিন যাবত সমাজতন্ত্রী ছিলেন এই বিবেচনা দিয়া মার্ক্সিজম হয় না মনে হয়...জমিদারতন্ত্র হয়। কারন তারা তখন প্রমাণিত ছাতাধরা শক্তি...

জাসদ তার লাইন বিচ্যূত হইছে...জাসদ হঠকারী সিদ্ধান্ত নিছে এই সব জাইনাও আমি তাগো সিআইএ'র এজেন্ট বলতে পারি না। তাগো ঐ সব ভ্রান্তি নিয়াই কথা বলতে উৎসাহিত হই। লেনিনের উল্লেখ করছেন একবার ইশতিয়াক রউফ...সেই লেনিনের কথা ধইরা বলি...একটা বিপ্লবী দলরে অবশ্যই প্রোপাগান্ডিস্ট হইতে হইবো। এখন সেই বিজ্ঞাপণ ধর্মীতারে কে কেমনে ব্যবহার করে সেইটা হইলো বিবেচনার। জাসদ তখন সিদ্ধান্তে ভুল ছিলো...ব্যক্তিচর্চ্চা সেইখানে প্রধান হইয়া উঠতেছিলো। সব ঠিক আছে বইলাই বলতে হয় জাসদ প্রতিবপ্লবী দল ছিলো না। জাসদরে বড়জোর বলা যায় ভুল পথে বিপ্লবী দল হইয়া উঠনের সংগ্রামে থাকা একটা দল (তাগো এই সংগ্রাম ভুল পথে ছিলো)।

জিয়ার ক্ষমতা দখল যদি প্রতিবিপ্লব হয় তাইলে জাসদ সেই প্রতিবিপ্লবের ট্রোজান হর্স হয় না। জিয়া ছিলো একজন শঠ মানুষ...সে ব্যক্তি সুবিধা আদায় কইরা নিছিলো কর্নেল তাহেরের হঠকারী ভূমিকার থেইকা। এই অঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধ ছাড়া আমি কোন সামাজিক আন্দোলন দেখি না।

শেখ মুজিব কম্যুনিস্ট পার্টির নেতাগো মুক্ত করছিলেন ক্যান সেইটাতো সহজেই অনুমেয়...ছাতার দৌরাত্ম বহুদূর সেইটাতো আমরা জানিই। কিন্তু তাই বইলা তিনি মহান নেতা সেই অবরোহনে আমরা না গেলেই ভালো...শেখ মুজিব জাতীয় নেতা হইতে চাইছেন একসময়...সকল মতাবলম্বীর নেতা হইতে চাইছেন...কিন্তু ৭৩'এই তিনি হইছেন আওয়ামি লীগের নেতা। তার ঐ সবার নেতা হওনের বাসনাতেই তাজুদ্দিন আহমেদ ধরা খাইছিলেন...ইতিহাস তাই কয়।

জাসদের সাথে যারা জড়িত ছিলো তারা অনেকেই ব্যক্তিকেন্দ্রীক মানসিকতা ধারণ করছেন...তারা হঠকারী হইছেন তাই বইলা তাগো প্রতি অশ্রদ্ধা দেখানের মতো খুব কিছু তারা করেন নাই...মনি সিংরাও ছাতার তলে থাইকা একই জিনিষ করছেন আরো সুশীল প্রক্রিয়ায়।


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...

সুমন চৌধুরী এর ছবি

আমার মনে হয় শ্রেণী সংগ্রামের সাথে সম্পর্কের প্রশ্নটা যতবার সাবসাইডেড হইবো ততবার ঝামেলা হইবো। সি.পি.বি-ওয়ার্কার্স পার্টি-সর্বহারা/পূর্ববাংলাদের বিষয়ে আলোচনা করতে গেলে আলাপ শুরু করতে হইবো ৩য় আন্তর্জাতিক থিকা। এই পার্টিগুলার ভাঙচুরের সাথে আন্তর্জাতিক কমিউনিস্ট আন্দোলনের ইতিহাস জড়িত। বিচ্যুতিগুলার সাথেও ঐতিহাসিক টানাপোড়েন জড়িত। অবিভক্ত সিপিআই এর হাত ধইরাই প্রথম ইন্সটিটিউশান অর্থে শ্রেণী সংগঠণ আইছে। শ্রেণী সংগ্রামের দিকে কনসেন্ট্রেশনের প্রসঙ্গটাই আগে ছিল না। ঔপনিবেশিক তত্ত্বাবধানের বাইরে উপমহাদেশের প্রথম পার্টি সি.পি.আই.। ১৯২০ র দশকে যাদের হাত দিয়া পার্টির জন্ম তাদের বেশীরভাগই ডিক্লাসড্ প্রলেটারিয়েট ছিলেন। ভদ্রলোকরাও ছিলেন তবে পার্টি সংগঠণের কঙ্কালটা ভদ্রলোকরা বানায় নাই। বানাইছে মীরাট ষড়যন্ত্র মামলার(১৯২৯-৩১) আসামীরা। সেই সময়ে জেলের ভিতর তাগো প্রভাবে পইড়া অরবিন্দ-বাঘা যতীন-লাল-বাল-পালের অনুসারিরা মার্কসবাদের দিকে আকৃষ্ট হয়। এরা শুরু থিকাই বাড়ি ছাড়া ছিলেন। জনগণের সাথে সরাসরি সম্পর্ক ছিল। সুতরাং অভিজাত পরিবারের সন্তান হওয়া সত্ত্বেও শ্রেণীচ্যুত হইতে তেমন কোন সমস্যা হয় নাই। অর্থাৎ পার্টির প্রথম দুইটা জেনারেশনে শ্রেণী সংগ্রামের সাথে অসম্পর্কিত পেটি-বুর্জোয়া রাজনীতি তত শক্তিশালী ছিল না। অন্তত তাদেরকে তখনো পার্টির মেইনস্ট্রীম বলা যাইতো না। (ডাঙ্গে শুরু থিকাই নিন্দিত ছিলেন)

শ্রেণীচ্যুতির শ্লোগান দিয়া মধ্যবিত্ত সুবিধাবাদ বজায় রাখার বিষয়টা আইছে পার্টি হালাল হওয়ার সময়। ১৯৪০ দশকের শুরু থিকা। তবুও পার্টির নেতৃত্বে একেবারে ১৯৬০ এর শুরু পর্যন্ত শ্রেণীচ্যুতরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিলেন।

(এইখানে একটা বিষয় বইলা রাখি, "শ্রেণীচ্যুতি" বিষয়টা এইখানে উল্লেখ করতেছি শ্রেণী সংগঠন গইড়া ওঠার প্রসঙ্গে আসার জন্য। মেথডলজি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পূর্ববর্তী লেনিনবাদ...যেইটা স্ট্যালিনের নেতৃত্বধীন সোভিয়েত ইউনিয়নরে সমর্থন করে। এইখানে শ্রেণীচ্যুতি অর্থ সোজা কৃষক শ্রমিকদের মধ্যে গিয়া বসবাস করা এবং সংগঠন তৈরী করা।)

অবিভক্ত বাংলার সকল ট্রেড ইউনিয়ন ব্যতিক্রমহীনভাবে সিপিআই এর দখলে ছিল। কৃষকদের মধ্যে সংগঠনও বাড়ছিল খুব দ্রুত। তেভাগা/টঙ্ক আন্দোলন,তেলেঙ্গানা কাকদ্বীপের যুদ্ধ এগুলা ঘটতোই না যদি পার্টির শ্রেণী সংগঠন গইড়া না উঠতো। এইসব আন্দোলন কোথায় কতটা ত্রুটিপূর্ণ ছিল সেইটা অন্য প্রসংগ। কিন্তু কর্পোরেট ইতিহাস যেই বিষয়গুলারে ইরেজ কইরা দিতেছে সেগুলারে সামনে আনা খুব জরুরি।

অবিভক্ত সি.পি.আই. ছাড়া আর কোন শুকরছানা স্পষ্টভাবে দ্বিজাতিতত্ত্বের বিরোধিতা করে নাই। (বঙ্কিম মুখার্জিদের একটা ছোট্ট ফ্র্যাকশান মুসলীম লীগের সাথে আলগা খাতির লাগাইছিল। পার্টিতে তারা সুবিধাবাদী বইলাই চিন্হিত ছিলেন। এই ফ্র্যাকশানরে ফুলাইয়া বড় বানায় কংগ্রেসীরা..পরে সেই সূত্রে আওয়ামী লীগ..অন্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে)দেশভাগের পরে মুসলীম লীগ সরকারের মুখোমুখি শুধু সি.পি.আই.। তারা ভাষা আন্দোলনের কিছু আগ পর্যন্ত সাংগঠণিক ভাবে ভারতভাগ মানে নাই। তেলেঙ্গানায় মাইর খাওয়ার পরে পার্টি ভারত-পাকিস্থানে ভাগ হয়।

প্রচুর অপ্রাসঙ্গীক কথা কইতাছি। বয়স হৈতাছে বুঝতারি। কাহিনি হৈল আওয়ামী লীগের জন্মের আগে থিকা কমিউনিস্টরা পাকিস্থান বিরোধী। পাকিস্থান আমলের ২৩ বছর একমাত্র কমিউনিস্টরাই প্রতিমুহুর্তে বিকলাঙ্গ রাষ্ট্রের মৃত্যু কামনা করছে। কমিউনিস্টদের বাদ দিলে ১৯৫৪/১৯৭০ দুইটাতেই আওয়ামী লীগ রাম ধরা খাইতো। এইকথা স্বয়ং শেখ সাহেব কৈছেন। তার মানে কি? মানে হৈল পার্টির সংগঠণ খুব দূর্বল ছিল না। এবং সেইটা গুডবয়দের ছাত্র ইউনিয়ন না। ক্ষেত মজুর সমিতি আর ট্রেড ইউনিয়ন সেন্টার। ১৯৬৬ তে পার্টি প্রথম দুই টুকরা হওয়ার সময় এই দুইটা শ্রেণী সংগঠন লগে দুই ভাগ হৈছিল। দুইটা ফ্র্যাকশানই শক্তিশালী ছিল।

ভাস্করদা এই ইতিহাস আমার থিকা অনেক অনেক ভালো জানো। এই ভাঙ্গা রেকর্ড এইখানে বাজানোর মূল উদ্দেশ্য হৈল শ্রেণী সংগ্রামের সাথে ঠিক কারা জড়িত ছিলেন সেইটা দেখানো। মস্কোপন্থী পার্টিতে ছাতাপন্থীরা ছিলেন। চীনপন্থীদের পার্টি কয়েক বছরের মধ্যে টুকরা টুকরা হৈয়া গেলগা। দীর্ঘ সংগ্রামে তৈরী করা শ্রেণী সংগঠন গুলা ধ্বংস হবার পিছনে তাদের দুই পক্ষের দায় অস্বীকার করলে ইতিহাস অস্বীকার করা হৈব। সেইটা করি না। কিন্তু সেই সাথে মনে করাইয়া দেই এতো বিপর্যয়ের পরেও যারা ধুইকা ধুইকা টিকা আছে তারা সেই সিপিআই এরই টুকরা টাকরি। সুতরাং এই অঞ্চলে শ্রেণী সংগ্রাম, প্রগতিশীল রাজনীতির কথা উঠলে মূল ধারা বইলা ইতিহাস লেখক তাগোই দেখাইবো। গালি বা প্রস্বস্তি যাই করি না ক্যান ঐ মণি সিং-রণেশদাশগুপ্ত-হক-তোয়াহা-সুখেন্দু দস্তিদারগোই করি।

জাসদ নামক সংগঠণ আলোচনায় আসে শুধুমাত্র শেখ মুজিবর রহমানের শাসনকালের কমেন্ট্রি দেওয়ার সময়। এর বেশী গুরুত্ব দেওয়া সম্ভব না।
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

??? এর ছবি

এইখানেও দুরন্ত আরেকটা আলোচনা। সারাদিনের কনফারেন্স আমারে বহুজিনিস থিকা বঞ্চিত করল মনে হৈতেছে। এই আলোচনায় অবশ্য আমার যোগ করবার তেমন কিছু ছিল না। মুফতে জানলাম অনেক কিছু।

সুমন চৌ-র একটা "অপ্রাসঙ্গিক" ইস্যু নিয়া একটা প্রশ্ন তার কাছে (বিষয়টা আলোচনায় অপ্রাসঙ্গিক কিনা সেই বিচারে আমি যাচ্ছি না, তবে আমার গবেষণায় ভীষণ প্রাসঙ্গিক ও জরুরি)। পার্টির শ্রেণী সংগঠন গড়ে না-উঠলে তেভাগা/তেলেঙ্গানা আন্দোলন সংঘটিত হত না... এরকম একটা কথা আছে কোথাও। আসলেই কি?

সুমন চৌধুরী এর ছবি

আমি স্মৃতিতে থাকা ইতিহাস থেকে মন্তব্য করেছি। প্রমাদ থাকলে শুধরে দিতে পারেন। মাথা পেতে নেব।
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

??? এর ছবি

আমারো রিসেন্টলি জিনিসটা পড়া নাই। সোশিওলজিস্টরা তেভাগা আন্দোলনকে অসংগঠিত কৃষকদের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন হিসাবে বিবেচনা করেন, অন্তত গোড়ার দিক বিবেচনায়। পরে অবশ্য এই আন্দোলন অনেক বেশি সংগঠিত হয়, রাজনৈতিক হয়। পার্টির সংগঠন রিচ করার আগেই তো তেভাগা মুভমেন্ট গ্রামে গ্রামে ছড়ায়া পড়ছিল। নাকি?

সুমন চৌধুরী এর ছবি

হ্যা। তা ঠিক। পার্টি তো আর শ্রেণী সংগ্রাম তৈরী করে না। তার কাজ শ্রেণী সংগ্রামের নেতৃত্বে আইসা তারে একটা পরিণতির দিকে নেয়া। মানে লেনিনবাদীরা সেইরকমই মনে করতেন....
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

??? এর ছবি

হ। ঠিকাছে।

ভাস্কর এর ছবি

কেবল প্রেসক্রিপশন নির্ভরতা আসলে কখনো কোনকিছু দিতে পারে না। সিপিআই এতো বড় সংগঠন, কওন যায় একক সমাজতান্ত্রিক সংগঠন হিসাবে তার যাত্রা শুরু করলেও তার কোন নিজস্ব সৃষ্টিশীল আন্দোলন নাই...শ্রেণী সংগঠন মানে তো বাইরে থেইকা গিয়া আন্দোলন সংগঠিত করা না। বরং ভেতর থেইকাই আন্দোলনের প্রনোদনা তৈরী করা। দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদে যেরম আছে বস্তুর বিকাশে দু্ই দ্বন্দ্বই ভূমিকা রাখে...কিন্তু বস্তুর পরিবর্তনের নির্দেশনা থাকে তার আভ্যন্তরীন দ্বন্দ্বেই।

সিপিআই'র শুরুটাই হইছিলো তৎকালীন সোভিয়েত ভূমিতে। ভারতে সবসময়ই যেই কারনে একটা টানাপোড়েন কাজ করছে। তাগো ছাতা ধরার মনোবৃত্তি সবসময়েই শ্রেণী সংগ্রামরে পিছাইয়া দিছে। পার্টিরে সমালোচনা করার বদলে সারাক্ষণ ডিফেন্ড করনের তাগীদ তৈরী হইছে...এইভাবে অনেক ত্যাগী নেতা-কর্মী বাহিনী তৈরী হইছে, কিন্তু পার্টির শ্রেণী সংগ্রাম খুব একটা আগায় নাই। শ্রেণী সংগঠন হয়তো তৈরী হইছে...কিন্তু শ্রেণীর নেতা তৈরী হয় নাই...টপ ডাউন একটা প্রসেসের ভেতর দিয়াই সব গ্যাছে, কখনোই গণতান্ত্রিক কেন্দ্রীকরণ হয় নাই।

সিপিবির অবদান, তার নেতা-কর্মীদের অবদান যেরম বামপন্থী আন্দোলনের ক্ষেত্র তৈরীতে থাকে...তেমনি এর বিপর্যয়ের দায় তাগো উপরেই বেশিরভাগ বর্তায়। জাসদরে আমি ডিফেন্ড করতেছি না...তাগো ইতিহাস আসলেই শেখ মুজিবের ব্যর্থতার ইতিহাসের পথ ধইরাই আগায়...কিন্তু বাস্তবিকই সিপিবি'র শঠতার জন্যই জাসদের হটকারী আন্দোলনও ৭০ দশকে আলোড়ন তুইলা ফেলে।

শ্রেণী সংগ্রামের পথে বরং চীনপন্থীরা অনেক বেশি সক্রিয় হইয়া উঠে, হক-তোয়াহা-সুখেন্দু দস্তিদাররা বরং আজো টিকা আছে গণমানুষের স্মৃতিপটে।...সোভিয়েতের ছাতার তলে যারা ছিলো তারা ক্রমশঃ ম্রিয়মান হয়।


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...

??? এর ছবি

শ্রেণী সংগঠন মানে তো বাইরে থেইকা গিয়া আন্দোলন সংগঠিত করা না। বরং ভেতর থেইকাই আন্দোলনের প্রনোদনা তৈরী করা।

একমত ভাস্কর। কিন্তু সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনে এইরম নজির কয়টা আছে?

সুমন চৌধুরী এর ছবি

সিপিআই এবং তার টুকরা টাকরির ইতিহাস এবং নানারকম বিচ্যুতি নিয়া আলাদা আলোচনা হইতে পারে। জাসদ প্রসঙ্গের মধ্যে তারে টানতে চাইনা।
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

খুবই ভাল লাগলো পড়ে। কথা হল, এখন কী করা যায়? সব শ্রেণীর রাজনীতিকই তো ভুল করেছেন, পথ হারিয়েছেন। কিন্তু আমার মনে হয় না সাধারণ মানুষের কথা ভেবে বাঙ্গালি কিছু কষ্ট করতে দ্বিধা করবে। পরিবর্তিত বাস্তবতায় এই যুগের ইনক্লুসিভ পলিটিক্স কেমন হওয়া উচিত?

হিমু এর ছবি

এইবার বুঝলাম সমাজতন্ত্রের সমস্যাটা কোথায়!


হাঁটুপানির জলদস্যু

সুমন চৌধুরী এর ছবি

দেঁতো হাসি
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

হাসান মোরশেদ এর ছবি

ব্যাপক । আলোচনা তো দেখি সমাজতন্ত্রের কাছা ধরে টানাটানি শুরু করেছে ।
যাক, তার্কিকদের সসম্মানে মুল আলোচনার সুত্রটা আবার মনে করিয়ে দেইঃ-

জামাল ভাস্কর মনি সিং,বরুন রায়,জসিমুদ্দীন মন্ডলদের ৭১ এর পরবর্তী সময়ের ভুমিকার সমালোচনা করে বললেন- এই ভাবে জমিদারতন্ত্র হয়,সমাজতন্ত্র নয়।নিজের বাপদাদার জমিদারী বিকিয়ে দিয়ে যারা কয়েকদশকের রাষ্ট্রীয় নির্যাতন সহ্য করে এই ভু-খন্ডে সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের ভিত্তি গড়ে তুললেন তাদের কে কেনো জমিদারতান্ত্রিক মনে হলো তার ব্যাখ্যা নিশ্চয়ই জামাল ভাস্করের আছে ।
কথা হচ্ছিলো আসলে জাসদ'কে নিয়ে । ভাস্করের আলোচনায় মনে হচ্ছে মনি সিং'রা যখন ছাতা ধরা হয়ে গেলেন,তখনই বিপ্লবের লাল নিশান উড়িয়ে এলো একদল তরুন বিপ্লবী । তারুন্যের ধর্মে আর বিপ্লবের নেশায় তাদের মাঝে কিছুটা 'এরোগেন্সি হয়তো ছিলো' কিন্তু তাদের বিপ্লবী উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা নিছক আওয়ামী মানসিকতা

সবিনয়ে স্মরন করিয়ে দিয়ে চাই, আমি এই সব তরুন বিপ্লবী, ছাতামাথায় বিপন্ন সমাজতন্ত্রের ত্রাতাদের বিপ্লবের ইতিহাসটাই আসলে জানতে চেয়েছিলাম । কবে থেকে তারা বিপ্লবী হলেন, কতোদিনের জন্য বিপ্লবী ছিলেন? বিপ্লবের পরিনাম কি হলো রাষ্ট্রের কিংবা তাদের ব্যক্তিক জীবনে?
মনি সিং প্রয়াত, জসিম উদ্দীন মন্ডল মরে গেছেন কিনা জানিনা,বরুন রায় এখনো ধুঁকছেন - ছাতা মাথার এই কমিউনিষ্ট গুলো কিন্তু নিজেকে বিকিয়ে দেয়নি ।

বিপরীতে জাসদের বিপ্লবীগন । এক কর্নেল তাহের ছাড়া তো আত্নত্যাগের আর কোনো উদাহরন নেই । বিপ্লব করে কেউ চারু মজুমদার হয় আর কেউ রব-সিরাজ-জলিল-দাদাভাই হয় ।

হুট করে বিপ্লবী হয়ে প্রতিবিপ্লবীদের ক্ষমতায় বসিয়ে বিপ্লব খতম ঘোষনা দিয়ে যারা চলে যায় নিরাপদ প্যারাডাইসে, তাদেরকে যদি জামাল ভাস্করের মতো আদর্শবাদী সমাজতান্ত্রিকের কাছে খাঁটি বিপ্লবী মনে হয়- তাহলে শেষে জীবনানন্দেই আশ্রয় খুঁজি- তিমির হননে গিয়ে আমরাই তিমিরবিলাসী
-----------------------------------
'পড়ে রইলাম বিধির বামে,ভুল হলো মোর মুল সাধনে'

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

সেটাই বক্তব্য ছিল...
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

ভাস্কর এর ছবি

জমিদারী বিকাইয়া ত্যাগ স্বীকার কইরা শারীরিকভাবে জমিদারী ছাইড়া আসলেই জমিদারী চইলা যায় না হাসান মোরশেদ...জমিদারতন্ত্র মানসিকতায়ও থাকে, এই অঞ্চলের কেবল বামপন্থীগো না, সকল রাজনৈতিক নেতৃত্বেরই এই সমস্যা ছিলো এবং আছে...মনে জমিদার হওয়া মানে ব্যক্তিগতভাবে দলের আইকন হওয়ার ডেলিবারেট সংগ্রাম। পার্টিরে বিন্দু ভাইঙ্গা নতুন বিন্দুতে ছড়ানের চেয়ে ব্যক্তিকেন্দ্রীক বানানের প্রচেষ্টা এই অঞ্চলের সকল ইতিহাসেই জাজ্জ্বল্য হইয়া জ্বলে! সুপার হিরোরে পুজা করনের একটা ধারারে অব্যাহত রাখতে দেওয়াটা অপরাধ শ্রেণী সংগ্রামের আন্দোলনে।

আমি বারবার যেই কারনে সিপিবিরে টানি সেইটা বুইঝাই টানি...সুমন যতোই কউক লিভিং অর্গানাইজেশন তবুও টানি...কারন সিপিবি'র ব্যর্থতাই এই অঞ্চলে বাম আন্দোলনরে ইমব্যালেন্স কইরা দিছে। জাসদের তরুণ তুর্কীরা ঠিক অ্যানালিসিস'এ গেলেও ছিলো হটকারী...তাগো নেতৃত্বের একটা অংশের ব্যক্তিচর্চ্চার ঝোক ছিলো...কিন্তু শুধুমাত্র শত্রু চিহ্নিত করতে পারছিলো বইলা দেশের একটা বড় অংশের সমর্থন তারা আদায় করতে পারছিলো।

জাসদরে আমি কখনোই ঠিক বিপ্লবী শক্তি কই নাই...তাগো শত্রু চিহ্নিতকরণটা ঠিক ছিলো বলছি...তাগো ভুল চর্চ্চা ছিলো সেইটা বলছি। তারা ঠিক হইলে তো বাসদের অভ্যূদয় ঘটেনা...


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...

সুমন চৌধুরী এর ছবি

শত্রু চিহ্নিতকরণ বিষয়টার সাথে শ্রেণী বিশ্লেষণ নামক একটা প্রক্রিয়া জড়িত সেইটা কমরেড ভাস্কর নিশ্চয়ই জানেন। পৃথিবীর সকল ঘরানার কমিউনিস্ট দলেরই একটা থিসিস থাকে। তো দাদাভাই এর থিসিসটা যেন কি কি ছিল?
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

ভাস্কর এর ছবি

এই বিষয়টা আমি আগে একবার বইলা আসছি, তবুও আবার বলতেছি কমরেড সুমনের আহ্বানে...জাসদই প্রথম বলে মুক্তিযুদ্ধ একটা জাতীয় গণতান্ত্রিক আন্দোলন...আর এই আন্দোলনের মধ্য দিয়া দেশের শাসনভার দেশীয় বুর্জোয়া শ্রেণীর নিয়ন্ত্রনে আসে। উৎপাদন পদ্ধতি ঐ সময় পুঁজিবাদের দিকে অলরেডি ধাবমান...যদিও অবক্ষয়ী কালের পুঁজিবাদ।

আর তাই দেশের শ্রমিক-কৃষক-খাইটা খাওয়া মানুষের শত্রু দেশীয় বুর্জোয়াগো দল আওয়ামি লীগ।


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...

হাসিব এর ছবি

মনে জমিদার হওয়া মানে ব্যক্তিগতভাবে দলের আইকন হওয়ার ডেলিবারেট সংগ্রাম। ......... । সুপার হিরোরে পুজা করনের একটা ধারারে অব্যাহত রাখতে দেওয়াটা অপরাধ শ্রেণী সংগ্রামের আন্দোলনে।

সহমত । আইকনরে খুটি ধইরা সমস্থ কিছু বিচার করার অভ্যাসটা প্রগতিশীলদের মধ্যে পুরোমাত্রায় বিরাজমান ।


আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে

সুমন চৌধুরী এর ছবি

সিপিআই এর ফ্র্যাকশানগুলার ঐতিহাসিক ব্যর্থতাগুলা দিয়া দাদাভাই এর ফটকামী হালাল করা যায় না। আমি শুরু থিকাই কিন্তু এই পয়েন্টটা হাইলাইট করছি। দাদাভাই ৪২০ এইটা ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত। তিনি কোনভাবেই এতদ্অঞ্চলের শ্রেণী সংগ্রামের কোনধরনের কোন প্রতিনিধিত্ব করেন না।
সিপিবি-ওয়ার্কার্স পার্টির মুখপাত্র হিসাবে তো আমি এই পর্যন্ত কিছু কই নাই? আমার কোর থিসিস হৈল বাংলাদেশের কমিউনিস্ট আন্দোলনের সমস্যা নিয়া আলাপ করতে গেলে সেইখানে জাসদ তালিকায় পড়বে না।
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

আবার উঁকি দিলাম। বিশাল আলোচনা। যাক পরে পড়বো। আপাতত: দুইটা মন্তব্য কপি-পেস্ট।

হাসান মোরশেদ বলেছেন:
বিপরীতে জাসদের বিপ্লবীগন । এক কর্নেল তাহের ছাড়া তো আত্নত্যাগের আর কোনো উদাহরন নেই । বিপ্লব করে কেউ চারু মজুমদার হয় আর কেউ রব-সিরাজ-জলিল-দাদাভাই হয় ।

হুট করে বিপ্লবী হয়ে প্রতিবিপ্লবীদের ক্ষমতায় বসিয়ে বিপ্লব খতম ঘোষনা দিয়ে যারা চলে যায় নিরাপদ প্যারাডাইসে, তাদেরকে যদি জামাল ভাস্করের মতো আদর্শবাদী সমাজতান্ত্রিকের কাছে খাঁটি বিপ্লবী মনে হয়- তাহলে শেষে জীবনানন্দেই আশ্রয় খুঁজি- তিমির হননে গিয়ে আমরাই তিমিরবিলাসী

তবে সুমন চৌধুরীর এই কথাগুলো হলো সারমর্ম:

সিপিআই এর ফ্র্যাকশানগুলার ঐতিহাসিক ব্যর্থতাগুলা দিয়া দাদাভাই এর ফটকামী হালাল করা যায় না।
-----
দাদাভাই ৪২০ এইটা ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত। তিনি কোনভাবেই এতদ্অঞ্চলের শ্রেণী সংগ্রামের কোনধরনের কোন প্রতিনিধিত্ব করেন না।
----
আমার কোর থিসিস হৈল বাংলাদেশের কমিউনিস্ট আন্দোলনের সমস্যা নিয়া আলাপ করতে গেলে সেইখানে জাসদ তালিকায় পড়বে না।

-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

ভাস্কর এর ছবি

বাংলাদেশের কম্যুনিস্ট আন্দোলনের সমস্যা নিয়া একটা রিমার্কেবল থিসিস তৈরী হইছিলো বাসদের অভ্যূদয়ের টাইমে। ঐটার উল্লেখ করতেই হইবো এই অঞ্চলের কম্যূনিস্ট আন্দোলনের সমস্যা নিয়া আন্দোলন করতে গেলে। আর তাতে এমনিতেই জাসদের উল্লেখ চইলা আসবো কমরেড।

আমার মনে হয় ইতিহাস পঠনের আগেই যদি ধইরা নেওয়া হয় তমুক থাকবো তমুক থাকবো না তাতে খুব জুতসই কিছু আউটকাম হয় না। জাসদ হয়তো গুরুত্বপূর্ণ অর্থে নাও থাকতে পারে। কিন্তু জাসদের ইতিহাস বাদ দিয়া এই এলাকার কম্যুনিস্ট আন্দোলনের সমস্যা পরিপূর্ণ হইবো না বইলাই আমি মনে করি। কেবল একটা লোকের ধূর্তামির পিছে নিশ্চয়ই দলে দলে মানুষ যুক্ত হয় নাই।


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...

হাসান মোরশেদ এর ছবি

কমরেড ভাস্করের মতে, জাসদের ক্রেডিবিলিটি এটাই যে, সদ্য স্বাধীন দেশে সমাজতন্ত্রের প্রকৃত শত্রু যে আওয়ামীলীগ এই মহান সত্য তারাই আবিস্কার করেছিলেন ।

এটা নিয়ে ও আমার কোনো আপত্তি নাই । আমি শুধু জানতে চেয়েছিলাম- সমাজতন্ত্রের প্রকৃত শত্রু আবিস্কারের মহান দায়িত্ব পালন করলেন যে বিপ্লবীগন তারা নিজেই তো কট্টর আওয়ামী ছিলেন,কোন ওহী নাজিল হওয়ার মাধ্যমে কিংবা কোন মেরাজের পরে একদিন তারা সমাজতন্ত্রী হয়ে উঠলেন? আর ৪ বছরের মাথায় জিয়াউর রহমান নামক সামরিক দানবকে ক্ষমতায় বসানোর মাধ্যমে বিপ্লব শেষ করলেন?

আমি প্রকৃতই, কমরেড ভাস্করের কাছ থেকে এই প্রনালী ও প্রক্রিয়াগুলো জানতে চেয়েছিলাম ।

অল প্রেইজ টু দ্যাম-কমরেড দাদাভাই এন আদার্স!

-----------------------------------
'পড়ে রইলাম বিধির বামে,ভুল হলো মোর মুল সাধনে'

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

ভাস্কর এর ছবি

আপনার প্রধান প্রশ্নের একটা ব্যখ্যা আমি এর আগে দিয়া আসছি...আপনে নিজেই একটা তথ্য দিছিলেন পাকিস্তানী আমলে কম্যুনিস্ট রাজনীতি নিষিদ্ধ ছিলো...এই সময় বামপন্থীগো একটা বড় অংশই আওয়ামি লীগ আর ন্যাপের ভেতরে থাইকা ওপেন রাজনীতি করতো। তারমধ্যে একটা অংশ মনেই করতো যে আওয়ামি নেতৃত্বেই মুক্তিযুদ্ধ হইতে পারে...আর এই মুক্তিযুদ্ধ হইলো একটা জাতীয় গণতান্ত্রিক আন্দোলন যার মাধ্যমে ঔপনিবেশিক শক্তিরে হটানো সম্ভব।

দাদাভাইয়ের শঠতা নিয়া আমার মনেও কোন দ্বিধা নাই। কিন্তু বামপন্থায় এমনে ব্যক্তির শঠতা দিয়া কোনকিছু দেখনের কোন অবকাশ নাই। একটা আন্দোলন কেবল একজন ব্যক্তির মস্তিষ্কজাত হইয়া রাষ্ট্রক্ষমতায় নাড়া দিয় ফেলে না। জাসদের সময়টারে আমরা হঠকারী বলি...কিছু মানুষের ব্যক্তিস্বার্থের পরিচায়ক বলি। কিন্তু তাতে বিদেশী সংশ্লিষ্টতার ব্যাপারটা আমার কাছে আওয়ামি প্রচারণাই মনে হয়।

জাসদে কিন্তু সুখেন্দু দস্তিদারের সমর্থক একটা বড় অংশই ছিলো, প্রবীন বিপ্লবী মুবিনুল হায়দার চৌধুরী ছিলেন, তরুণ তুর্কী খালেকুজ্জামান কিম্বা আবদুল্লাহ সরকার ছিলেন...সর্বোপরি কর্নেল তাহের ছিলেন...কেবল দাদাভাইরে দিয়া পুরা ব্যাপারটারে তাচ্ছিল্যের চোখে দেখাটা নিয়া আমার অনীহা আছে।


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...

সরঅ এর ছবি

JSD was nothing but a platform of some enthusiastic - proper - 'misguided' 'socialist' (about 10%) and rest 90 % were 'infiltrated activist & agent of RAZKAR-Paki agents

• See the political character- change of the top most & founder leaders of JSD. Their founder President, a Paki army Major (HIPPI & most reactionary in character) M A Jalil, was once a purest Marxist (!), then turned into the veteran Islamic (MOULOBADEE & ISLAMI BIPLOBEE) leader after in late seventies & in early eighties. Their founder General Secretary A S M Rob was "GREHO PALIT" opposition leader of the parliament of Ershad, their founder Joint Secretary Shajahan Siraj was a central minister of recent 4 party JOT of Jamat-BNP and had stolen cores of taka and now left Bangladesh & on run. The founder editor of their party's newspaper, the daily "GONAKANTHA", poet Al Mahmud, was a pure & tainted Marxist! Now he has transformed to a veteran MOULOBADEE & ISLAMI BIPLOBEE & newspaper columnist of Jamat funded-minded-patron daily the "NOYADIGONTA. JSD's founder President of Dhaka City unit was MAULANA Motin (a veteran RAZAKAR of 1971 and later he formed a small party after 1977) and many more founder leaders - workers-supporters have turned 180 degree opposite - from the pledge of establishing purest form of socialism, the Scientific Socialism ("BOIGGANIK SOMAJTONTRO") to a SACHHA MOULOBADEE and big thieves!

• Why Jamat-e-Islami has gave the press & office of the Jamaat's only daily newspaper the SONGRAM to the JSD to publish the GONOKONTHA in 1972?

• Paki-Jamat-Razakar-Muslim League (ML) also have given their full physical-political support to the JSD (that is why JSD & its associate organisation were 'popular' up to 1978, until Paki-Jamat-Razakar-ML group has reformed & made their own bases & address), though JSD's main slogan & goal was "AMADER LOKKHO BOIGGANIK SOMAJTONTRO", completely against the political philosophy(!) of Paki-Jamat-Razakar-ML.

• Does the founder editor (Poet Al Mahmood) of the JSD's newspaper the GONOKONTHA still believes JSD's main political programme "Scientific Socialism" originated by Karl Marx?

• What about the political DIGBAZI of late Dr. Aftab, who was (killed by Jamat killer, to take the revenge of killing of their (ICS) leader Malek in 1970 in Dhaka Race Course ground, though he was an active supporters-think tank of the JOT and was given prize posting of VC of the National University in their Jamat-BNP era). Dr. Aftab Ahmed, who proposed the famous secular slogan, historic "JOY BANGLA" slogan in 1969 and later he proposed to 'change' our national anthem, as it was written by a MALAUN poet?

• Why Jamat Islami worker gathered (stealthily) under the banner of the JSD after 1972, though their leader/worker was killed by ex BCL leaders (Mahbub vai, who then became top leaders of JSD/BSD)?

• Why Jamat Islami leader - worker supported those leader (of JSD) & their party in 1972 to 1977 who had assaulted their main leader Golam Azam in 1970 and who crushed their public meeting at PALTON MOIDAN in 1970?

I know many of this type of NOBBO & RUPANTORIT (modified) "ISLAMI BIPLOBEE" who migrated straight from "BOIGGANIK SOMAJTONTRO" den. (Maj (Hippie) Jalil is the prime example)

Actually 'most' (except few, say about 10% of JSD's original strength in 72-75, Hasanul Haque Inu vai, late Arif vai, Sharif Nurul Ambia vai, Late Khondakar Mazhar vai, Shirin Apa, Mustafa Jabbar vai and some others) of the JSD & its associate organisations were full of those covert Islami-Jamat-BNP political axis supporters (like Major Jalil, A S M Rod, Shajahan Siraj, Poet Al Mahmud, late Dr. Aftab, Abdus Salam (Ex Deputy Mayor of DCC & leader of Ershad JP and now GS of City BNP), Maulana Motin, notorious killer Imdu (of Kaligonj & ex BNP leader & then hanged by Ershad), notorious killer Azam Khan (Now JP leader) and many many more.

Jamat-Shibir still believe that late Ariful vai, A F M Mahbubul Haq vai, Khasru Vai, Mantu Vai, Nazrul vai, and others have brutally killed their (Islami Chatra Sangha) veteran cadre & leader Malek in 1970 near SUHRAWARDY UDDAN (old race course) and also openly assaulted Go Azam & smashed the meeting of Jamat at "Paltan Maidan" of Dhaka

When Jamat-Shibir supporters were disguised in JSD (during 1972 to 1977), then they technically opposed above mentioned leaders (who joined in JSD). They always overtly & covertly opposed Arif vai, Mahbub Vai.

A F M Mahbubul Haq was seriously opposed when he was going to select as BCL JSD President and nominated for VP post of DACSU

That is why they (secretly) did not voted for A F M Mahbubul Haq vai in the DACSU election (informed by the DU teachers who were engaged in the vote counting)

Once "very popular" A F M Mahbubul Haq (now BSD leader and sick and I heard he is now in Canada). It is assumed that he was seriously hit by Jamat-Shibir cadre, to take the revenge, during Jamat-BNP era and he was in coma for many days) has lost his "JAMANAT" in the Parliament election of 1979, in the constituency belong to Dhaka University.

So, you may see many "old" & ex cadre of "BOIGGANIK SOMAJTONTRO" who are now very vocal supporter of Jamat-BNP political axis.

That is why when Jamat-BNP political axis has got their own den (main party) from 1977 onwards, then they (covert Jamat-BNP activist-supporter) started migrating to their original 'den', and then once 'fat' JSD become lean & thin.

Actually all the sensible, rational political scientist/analysts should agree that to recover from the worst socio-political-economic solution situation prevailing after massive LOOT PAT & destruction by Paki during the liberation war of 1971 and after 16th December 1971 by the defeated enemy of Bangladesh ('Muslim Bangla', different SORBOHARA groups) & to some extent, by some corrupt ruling party (Awami League) leaders-workers and by 'misguided' & 'infiltrated RAZKAR-Paki agents' within JSD and by all Jamat-Razakar-Paki minded overt & covert supporters – businessman - civil & Army bureaucrats.

Anu
NZ

--------------------------------------

হিমু এর ছবি

ভাই Anu,

লক্ষ্য করুন।

১. খুব ভালো হয় যদি পরবর্তীতে বাংলায় লেখেন। সচলায়তনে বাংলা ছাড়া দ্বিতীয় ভাষায় লেখা কনটেন্টকে নিরুৎসাহিত করা হয়, যদি তা উদ্ধৃত করা না হয়।

২. এক মন্তব্য/পোস্ট একাধিকবার দেয়ার কোন প্রয়োজন নেই। অতিথিদের ইনপুট মডারেশন পার হয়ে আসে। যদি সে ইনপুট প্রকাশযোগ্য হয়, তা প্রকাশিত হবে, প্রকাশের অযোগ্য হলে মুছে ফেলা হবে, একাধিকবার দিলেও লাভ হবে না।

ধন্যবাদ।


হাঁটুপানির জলদস্যু

মাসুদ সজীব এর ছবি

এমন অসাধারণ আলোচনায় সচল আবার কবে ঋদ্ধ হয়ে উঠবে?

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

চোখের দেখা প্রাণের কথা

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

নজরুল ভাইয়ের "নভেম্বর ১৯৭৫" প্রকাশ ও পাঠোত্তর সময়ে এই পোস্টে আবার আলাপ-আলোচনা-পুনরালোচনা হতে পারে...

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।