আবেগগুলো যখন বিধ্বংসী হয়ে যায়

হাসান মোরশেদ এর ছবি
লিখেছেন হাসান মোরশেদ (তারিখ: মঙ্গল, ১২/০৬/২০০৭ - ৪:৩৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:
আবেগ বড়ো ভালো জিনিস । ইগোটা ও ভালো । আমি যদি ব্যক্তি আমার সম্মানই না রাখতে পারলাম তাহলে কিসের গোত্র,কিসের সমাজ,কিসের বিশ্ব । তবে কথা আছে । আবেগ এবং ইগো'কে ম্যানেজ করাটা মনে হয় ভালো । ভালো এ অর্থে, যেনো শেষ পর্যন্ত আবেগ এবং ইগো দুটোই টিকে থাকে । কোনো কোনো মন্তব্য ধ্বংসাত্নক । তবে মন্তব্য কার কাছ থেকে এসেছে সেটা ও বোধকরি বিবেচ্য । আরিফ জেবতিক কিংবা নজমুল আলবাবের কথা বাদ দিলাম । সচলায়তনের অন্য কেউ যদি,সচলায়তনে আমাকে নিয়ে কোনো নেগেটিভ মন্তব্য করেন-আমি সেটা ভেবে দেখবো, আমি তার ব্যাখ্যা দাবী করবো, আমি জানতে চাইবো কার্যকারন । সামহোয়ারে হলে তা করবোনা। সরাসরি পালটা আঘাত করবো । এই পার্থক্য কেনো? কেনো নয়? এই পার্থক্য আছে বলেই, সামহোয়ার আর সচলায়তন এক নয় বলেই-আমি, আমরা সচলায়তনে । এখানে যে কয়জন আছি আমরা, প্রত্যেকে প্রত্যেকের কাছে পরিস্কার থাকার সুযোগ আছে । উৎস'র মন্তব্য শুভ'র খারাপ লাগতে পারে । উৎস সচলায়তনের যতোটুকু,শুভ ও তো ততটুকুই । সে কারনেই তো শুভ সচলায়তনে । শুভ কি উলটো প্রশ্ন করতে পারতেননা? উৎস'কে চেপে ধরতে পারতেননা? এক উৎস'র মন্তব্যে শুভ সচলায়তন ছেড়ে গেলেন শুভ, বাকী বন্ধুরা যে ডাকছে তাকে এর কোনো মুল্য নেই? শুভ'র বন্ধু হিসেবে তো আমিই আক্রান্তবোধ করছি । নিজের ইগোটাই বড় করে দেখলেন মিয়া, অন্যরা যে কতোটুকু ভালোবেসে আপনাকে ধরে রাখতে চাইছে, তার কানাপয়সা দাম দিচ্ছেন না? আরিফ প্রশ্ন তোলেছে,সহবন্ধুরা কেনো শুভ কে ডিফেন্ড করলোনা? ডিফেন্ড করা হতো, যদি এটা সামহোয়ার হতো । এটা সচলায়তন । এখানে কেউ ছাগু নয় । আমার মতো মনে হয় অন্য সবার স্বাভাবিক প্রত্যাশা ছিল শুভ নিজ থেকে এটার প্রতিবাদ করবেন । এটা না করে তিনি ব্লগ ছেড়ে দিলেন, তার নিজস্ব ব্লগে গিয়ে প্রতিবাদলিপি লিখলেন । সাদিকের হাতে অস্ত্র গেলো এটা নিতে ক্যারিকেচার করার । নজমুল আলবাব মামুকে ও বলি, ব্যক্তিগত ব্যখ্যানের কোনো দরকার নাই মামু । এখানে কেউ কেউ কাউকে কাউকে ব্যক্তিগত ভাবে চিনি ।বাকি সব একজন আরেকজনের লেখা থেকে । আমার লেখা আমাকে যেভাবে চেনাবে,অন্যরা ও আমাকে সেভাবেই চিনবেন । মাহবুব সুমন, ফ্রুলিংক্স এরা যতোই মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লাফাক, তাদের প্রিয় ব্লগার তালিকায় যখন আস্তমেয়ের নাম থাকে, তখন তাদের অবস্থান সন্দেহমুক্ত নয় । রাগইমন পাগলী হতে পারে কিন্তু তার বাবা খুবই বিখ্যাত মুক্তিযোদ্ধা । এই রাগইমন যখন আস্ত কিংবা ত্রিভুজের সাথে ব্যাক্তিগত সখ্যতা দেখায়- তার অবস্থান আমার কাছে ঘোলাটে হয়ে যায় । এমনকি জামাল ভাস্করের বাসায় ত্রিভুজ কি করে দাওয়াত খেতে যায়, সেটা ও আমাকে ভাবায়? ভুলে যাওয়া ভালো নয়, এই আস্তমেয়ে ব্লগের পাতায় লিখেছিলো- গোলাম আজম মহান নেতা' । মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে হাজার হাজার পাতা আমি লিখে যেতে পারি, বিশাল বিশাল সব আবেগ দেখাতে পারি কিন্তু বাস্তব জীবনে যদি আমি নিজেকে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীদের স্পর্শ এড়িয়ে যেতে না পারি- আর কেউ আমার এই অবস্থানের সমালোচনা করে, দায়ভারটা কার ? কথা বললে অনেক বলা যায় । কথা না বাড়িয়ে ও বোঝে নেয়া সম্ভব যদি বোঝার ইচ্ছে থাকে । সচলায়তনে আমরা যারা আছি,তাদের জন্য এই বোঝাটাই জরুরী । ভালো থাকুন সবাই । ***শুভ'কে ব্যক্তিগতভাবে একটা মেইল করেছি কালরাতে । জবাব পাইনি এখনো ।

মন্তব্য

সৌরভ এর ছবি
হাসান মোরশেদ, একই কথা আমার সম্পর্কে বলা হলে, আমিও চলে যেতাম। কোন কথা না বলেই। সবাই আরিফ জেবতিক, হাসান মোরশেদ নন যে, প্রতিবক্তব্য আর প্রতিযুক্তি দিয়ে নিজেকে রক্ষা করবেন। কেউ কেউ শুভ থাকেন। সচলায়তনে থাকার ব্যাপারে আমারও ভেবে দেখতে ইচ্ছে করছে। ------ooo0------ বিবর্ণ আকাশ এবং আমি ..

আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

হাসান মোরশেদ এর ছবি
কি বলবো আর! -------------------------- আমি সত্য না হইলে গুরু সত্য কোনকালে?

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি
আমি হাসানে ভাইয়ের সাথে একমত। এতো সুন্দর লেখার হাত নাই খালি আমার। (এট্টু পিঠ চুলকে দিলাম)
নজমুল আলবাব এর ছবি
কথা বললে অনেক বলা যায় । কথা না বাড়িয়ে ও বোঝে নেয়া সম্ভব যদি বোঝার ইচ্ছে থাকে................. ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
হযবরল এর ছবি
উৎসের লেখাটা আমি পড়েছি। শুভ'র নামটা ও দেখেছিলাম। কিন্তু সত্যি বলতে আজকাল সামহোয়্যারে এত নিক আমি ভাবলাম সেইরকম কেউ একজন। এটা আলী মাহমেদ ভাবি নাই। কারণ শুভ'র গোলাম আযমের বক্তব্য/উক্তি নিয়ে একটা সিরিজ আছে। যেটা আমি পুরো পড়েছি। যুদ্ধ নিয়ে ওড় প্রচুর লিখা। উৎস সম্ভবত ওর সব লেখা পড়েনি।
আরিফ জেবতিক এর ছবি
কী আর বলবো।কিছুই বলার নেই।
শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি
আরিফ, নতুন লেখা দেন। পড়ি। হাসান, ভালো লেখা। সমর্থন করি।

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

আরিফ জেবতিক এর ছবি
বস,আপনি লেখা পড়তে চেয়েছেন ,এতে সম্মানিত বোধ করলাম। আপনাকে ধন্যবাদ।
আড্ডাবাজ এর ছবি
ভাল কথা, পড়ে মনে রাখতে হবে। না হলে, কাজ হবে না।
আরিফ জেবতিক এর ছবি
হাসান মোরশেদের কথার পিঠে কিছু কথা বলব: ১/ত্রিভুজের সাথে খিচুড়ি খেয়ে ফেললে যদি সেটা বিশাল অন্যায় হয়,তাহলে তো মুশকিল।ত্রিভুজের সেই খিচুড়ী খাওয়ার ব্যাপারটার উদ্যোক্তা আমি।আমিই রাগইমনকে ফুসলে ছিলাম ত্রিভুজকে ডাকতে যাতে আমরা তাকে দেখতে পারি।(সেদিন আমি,মাশীদ,প্রজাপতি,জানতে চাই,রাগ ইমন আর কে কে যেন একসাথে আড্ডা দিচ্ছিলাম)জামাল ভাষ্করকে দেখানোর জন্য এই চিড়িয়া আমিই বয়ে নিয়ে গেছি উত্তরা তক্।এখন কথা হলো চিড়িয়া দেখার জন্য চিড়িয়াখানায় যাওয়া যেতে পারে,সেটার জন্য নিজেকেই চিড়িয়া হিসেবে চিহ্নিত করা বোধহয় সঠিক না। ২/(বাকি কথাগুলোর উত্তর আর দেব না।বাকিগুলোতে মোটামুটি সহমতই আছে দেখছি!)
ধুসর গোধূলি এর ছবি
সৌরভ, নিজেদের মধ্যে রাগ কিংবা অভিমানটুকু বজায় রাখার যৌক্তিকতা কতটুকু একটু বিবেচনা করে দেখবেন প্লিজ। মায়ের সাথে ছোটবেলায় অনেক ঝগড়াই হয়েছে, ঘর থেকে বের হয়েও যেতে বলেছে, মুখ দেখতে চায় না বলেছে- এটা মোটামুটি সবারই একটা কমন চিত্র। মায়ের সাথে এধরণের ঝগড়া মোটামুটি সবারই হয়েছে। কিন্তু তখন যে অভিমানটা হয়েছে, যে রাগটা হয়েছে তার কারণে আমরা কতোজন বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলাম সেদিন, কতোজন আর মায়ের আঁচলে ফিরে যাইনি! উৎসের বলা কথাটা নিয়ে শুভ যদি নিজেকে গুটিয়ে ফেলেন তাহলে আমার কিছুই বলার নেই। তাঁর মতো একজন আলী মাহমেদের সামনে দাঁড়িয়ে তার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করা আমার জন্য ধৃষ্টতার শামিল। কিন্তু তাঁর জন্য বাকি সবার মাঝে যে আবেগ-ভালোবাসা রক্ষিত আছে সেটাকে তিনি যখন অস্বীকার করেন তখন অবশ্যই কি কিছু বলার থাকে না! _________________________________ <স্বাক্ষর দিমুনা, পরে জমিজমা সব লেইখা লইলে!>
হিমু এর ছবি
আরিফ ভাইয়ের সাম্প্রতিক পোস্ট পড়ে আমি দুঃখ পেয়েছি শুভর মতোই। তাঁর কণ্ঠে একটা অনুযোগ শুনতে পেয়েছি, তিনি ব্যবহৃত হচ্ছেন। এই উপলব্ধি আমাকে কষ্ট দিলো। সবার প্রতি আমার অনুরোধ, এই তিক্ততার আমরা ইতি টানি।
হযবরল এর ছবি
হ্যাঁ আমরা ইতি টানি। যদিও খারাপ লাগছে শুভ নিশ্চয়ই ভেবে বসে আছে আমি তাকে জামাতী মনে করি। কিছু বলার নেই উনি যদি এরকম মনে করেন। কাউকে ভালবাসলে সেটার জন্য কৈফিয়ত কিম্বা প্রমাণ কোনোটাই দেওয়া যায় না, তাকে সেটা উপলব্ধি করতে হয়।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।